A_Destination_Wedding part 8+9

#A_Destination_Wedding
#Part_8
#Writer_Airin_Boshunia(Rose Queen)

ইভা কাঁপা কাঁপা গলায় বলতে শুরু করলো…….

ইভা:আমি আজ যে কথাগুলো বলছি তাতে হয়তো তোরা আমার উপর রেগে যাবি।কারণ তোদেরকে এই কথাগুলো আমার আরো অনেক আগেই বলা উচিত ছিলো।হ্যা,আরিয়ান আমাকে বলেছিল যে ওও আয়রাকে ভালোবাসে।কিন্তু এইটা আমি মেনে নিতে পারিনি।আচ্ছা তোরাই বলতো কেউ কি কখনো পারে তার ভালোবাসার মানুষের মুখে অন্য কারো কথা শুনতে।আমিও পারিনি আরিয়ানের মুখে আয়রাকে ভালোবাসার কথা শুনে নিজেকে আটকাতে।তোরা আমাকে গত দুই বছর আগে বলেছিলিস নাহ যে আমি কেন কান্না করেছিলাম?কারণটা এইটায় ছিল।আমি যে আরিয়ানের প্রতি দুর্বল তা আমি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলাম।কিন্তু আমি যে ওকে ভালোবাসি সেইটা আমি দুই বছর আগে জানতে পারি।কারণ আমি ওর মুখে অন্য কারো কথা শুনলে সহ্য করতে পারিনা।আমার খুব কান্না পায়।আমার মনে হয় আমার বুকে কেউ ছুড়ি চালাচ্ছে।রক্তক্ষরণ হয় আমার মনে।আর এই জন্য আমি কোনোদিন আয়রাকে দায়ী করিনি।কারণ আমি ওকে অনেকভাবে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে ওও আরিয়ানকে পছন্দ করে কিনা।কিন্তু আয়রার উত্তর সব সময় না ই এসেছে।তাই আমি একদিক থেকে নিশ্চিন্ত ছিলাম।তবে আমার ভয় ছিলো একটায়,আরিয়ান যে আয়রাকে ভালোবাসে।তবে কি আমি ওকে কখনোই নিজের করে পাবো নাহ?আজ আমার সেই ভাবনাটায় সত্যি হলো!(বলেই কান্নায় ভেংয়ে পরলো)

এর মাঝেই একজন নার্স এসে বললো,আরিয়ানের জ্ঞান ফিরেছে।আমি আর কোনোকিছু না বলে ইভার হাত ধরে চলে গেলাম আরিয়ানের কাছে।বাকি সবাই আমার পেছন পেছন আসলো।আমি ইভাকে আরিয়ানের সামনে দাড় করিয়ে সবাইকে চুপ থাকতে বলে আমি বলতে শুরু করলাম…..

আমি:আমি আজ যা যা বলবো সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনবি।আর আজ আমার কথা সবাইকে মানতে হবে।এইটা আমার অনুরোধ,আদেশ সব!
আরিয়ান,প্রথমেই তোকে বলি…
তুই আমাকে ভালোবাসিস তা একবার আমাকে বলতে পারতি।কিন্তু তুই সেইটা করিসনি।আমি মানছি ভালোবাসা অন্যায় না।তবে তা আমাকে একবার বলতে পারতিস।আচ্ছা সেইসব বাদ দিলাম।তবে আমাকে এইটা বল তো,তোর জীবনের কি কোনো মূল্য নাই যে তুই এইভাবে কোনো কিছু না ভেবেই নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলি।তোকে কিন্তু আমি এতোটাও নির্বোধ ভাবিনি।আসলেই তুই একটা গাঁধা।

আচ্ছা এখন আসি ইভার কথায়,ইভা আরিয়ানকে ভালোবাসে।এই কথাটা সে আমাদের সবার খেকে এতোগুলো দিন ধরে লুকিয়ে রেখেছে।এই ইভা আমরা নাকি তোর বেস্টফ্রেন্ড।এই তার নমুনা?বাহরে বাহ।আজ তোরা দুইজন আমাকে বুঝিয়ে দিলি আমি তোদের কেউ না।

এখন সেই মহামূল্যবান কথাটা আমি বলবো,যা সবাইকেই মানতে হবে।কথাটা হলো,আরিয়ান ইভাকে বিয়ে করবে তাও সাত দিনের মধ্যে।ওদের ফ্যামিলিকে মানানোর দ্বায়িত্ব আমার।তবে আরিয়ানকে একমাত্র ইভাকেই বিয়ে করতে হবে!

আরিয়ান:অসম্ভব!আমি তোকে ভালোবাসি আয়রা তাই আমি তোকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে তো দূর কল্পনাও করতে পারিনা।(কাঠ কাঠ গলায়)
আমি:তুই ইভাকেই বিয়ে করবি।ধরে নে এইটা তোর ভালোবাসার পরিক্ষা।আর তুই তো জানিস ভালোবেসে কাউকে না পেলে কতটা কষ্ট হয়।তাই তুই যে কষ্টটা পেয়েছিস সেইটা ইভাকে পেতে দিসনা প্লিজ(হাত জোর করে)
আরিয়ান:তুই এইসব কি বলছিস আয়রা?আমি তোকে ছাড়া,,,
আমি:ব্যাস।আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল।হয় তুই ইভাকে বিয়ে করবি নয়ত আমার সাথে তোর সব সম্পর্ক এখানেই শেষ।

এই বলে আমি বেরিয়ে আসতে নিবো তখনই আরিয়ান বলে উঠলো,,,

আরিয়ান:বেশ!আমি রাজি।তবে আমি জানিনা যে ওকে আমি স্ত্রীর অধিকার দিতে পারবো কিনা!

এই কথা শুনে সবার মুখেই হাসি ফুটে উঠলো।তবে শেষের কথাটা শুনে সবাই একটু চিন্তিত হয়ে পরলো।

ইভা:বেশ তো।তোকে আমার ভালোবাসতে হবেনা।আমার ভালোবাসা দিয়েই নাহয় তোকে আমি আপন করে নিবো।(লজ্জামাখা মুখ করে)
আমি:এইতো আমার ইভা রাণী একদম ঠিক কথা বলেছে।আচ্ছা এইবার ওদের দুজনকে একটু স্পেস দাও সবাই।চলো আমরা বাইরে যায়।
এই বলেই আমরা সবাই ইভাকে আরিয়ানের কাছে রেখে বেরিয়ে আসলাম।

আদিয়াত:আরেহ আয়রা,তুমি তো জিনিয়াস।মাত্র কিছু মুহূর্তের মধ্যেই এতো বড় একটা প্রবলেম সল্ভ করে ফেললে।ওয়াও!গ্রেট!
আমি:এইটা আমার দ্বায়িত্ব ছিল আদিয়াত।তাই পালন করেছি শুধু।
আরুশ:আসলেই ইউ আর জিনিয়াস।
আমি আরুশের কথায় শুধু হাসলাম।এর মাঝেই ইভা বেরিয়া আসলো।মুখে এক তৃপ্তির হাসি।আবার কিছুটা চিন্তিত ও লাগছে।যাইহোক,এখন আমাকে দুই ফ্যামিলিকে রাজি করাতে হবে।
সাদাফ:আচ্ছা সব তো বুঝলাম।বাট আরিয়ানকে কবে ছাড়া হবে?আর আংকেল,আন্টি এইসব জানে?
আয়মান:মনে হয় না জানে।কারণ জানলে তারা অবশ্যই আসতো।
আমি:এই শোন,এইসব ব্যাপারে ওনাদের আর বলার দরকার নাই।এতে সমস্যা বেড়ে যাবে।
ঝিনুক:হুম,তুই ঠিকই বলেছিস।
ঐশি:ওকে রিলিজ কবে দিবে?
সাদাফ:আমি ডক্টরের সাথে কথা বলে আসছি!(এই বলেই সাদাফ চলে গেলো)

আমরা সবাই করিডোরে বসে সাদাফের আসার অপেক্ষা করতে লাগলাম।কিছুক্ষণ পরে সাদাফ এসে জানালো,আরিয়ানকে আজই নিয়ে যাওয়া যাবে।তবে ওর শরীর খুবই দুর্বল।তাই সাত দিন একদম বেড রেস্ট এ থাকতে হবে।আরিয়ানাকে ওর বাসায় নিয়ে যেয়ে আন্টিদের কিছু একটা বুঝিয়ে আমাদেরকেই ম্যানেজ করতে হবে।

ঐশি:আচ্ছা সে আমরা কিছু একটা বলে ম্যানেজ করে নিবো।এখন চল,ওকে নিয়ে আমরা ওর বাসায় যায়।
আমি:হুম,চল।আর সাদাফ,আয়মান তোরা হসপিটালের বাকি সব ফর্মালিটিগুলো ফিলআপ করে আয়।
আয়মান:ওকে

এরপর আমরা সবাই আরিয়ানাকে নিয়ে গাড়িতে বসালাম।বেচারা মুখ ভার করে বসে আছে।একটু মন খারাপ হলেও ক্ষতি কি তাতে।আমি জানি ইভা ঠিকই আরিয়ানাকে ওর ভালোবাসা দিয়ে ওকে ভালোবাসতে বাধ্য করবে।করবেই!
#A_Destination_Wedding
#Part_9
#Writer_Airin_Boshunia(Rose Queen)

দশদিন পর…..

আজ ইভাদের পুরো বাড়ি আলোয় ঝলমল করছে।ঝলমল তো করারই কথা।ইভা ইসলামের বিয়ে বলে কথা।উমমমমম,একটু ভুল বললাম।কথাটা হবে ইভা ইসলাম আর আরিয়ান চৌধুরীর বিয়ে বলে কথা।হ্যাঁ আপনারা সবাই ঠিকই ধরেছেন আজ ইভা আরিয়ানের শুভ পরিণয়।

(কি রিডার্স আপনারা এটাই ভাবছেন তো যে ওদের বিয়ে মানে?এত তাড়াতাড়ি কিভাবে সম্ভব?আমি তো আগেই বলেছিলাম যে 7 দিনের মধ্যে বিয়ে হবে।তবে যেহেতু আরিয়ান অসুস্থ ছিল এজন্য আর তিনদিন পিছিয়ে বিয়েটা দশদিনের দিনে হচ্ছে।
তবে হ্যা ইভা আর আরিয়ানের পরিবারকে বোঝাতে আমাকে অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে।কিন্তু আমি যেহেতু কথা দিয়েছি তো আমাকে তো আমার কথা রাখতেই হবে।তাই শত চেষ্টা করে হলেও আজ ইভা আর আরিয়ানের বিয়েটা দিতে আমি সক্ষম হয়েছি।তো চলুন ওদের বিয়ের মঞ্চে যাওয়া যাক।)

আমি:কিরে ইভা রাণী,তুই তো দেখছি লজ্জায় একদম লাল হয়ে যাচ্ছিস।(টিটকারি করে)
ইভা:ধ্যাত,কি যে বলিস নাহ তুই(লজ্জামাখা মুখে)
ঐশি:ধ্যাত কি হুম?আয়রু তো ঠিকই বলেছে।(হেসে)
ঝিনুক:হ্যা তো আমাদের ইভাকে আজ একদম পরি লাগছে।হ্যায়,নজর না লাগে(ঢং করে)

(সত্যি আজ ইভাকে লাল লেহেঙ্গা পরে খুব সুন্দর লাগছে।পুরো লেহেংগাটাই গোল্ডেন কালার স্টোন দিয়ে কাজ করা।তাছাড়া পুরো শরীরে ভারী গহনা।টিকলির সাথে খুব সুন্দর একটা গোল্ডেন কালার মুকুট পরা।গর্জিয়াস মেকআপ লুক।ঠোঁটে লাল টকটকে লিপস্টিক।সব মিলিয়ে আজ ইভাকে সত্যিই রাণী লাগছে।আজ আরিয়ান ওর প্রেমে পড়বেই পড়বে হুম।)

এর মধ্যে বরপক্ষরা সবাই চলে আসলো।বলে রাখা ভালো,আয়মান আর সাদাফ বরপক্ষের সাথেই এসেছে।

আমি:এই ইভু,দেখ দেখ আরিয়ানকে কতো কিউট লাগছে।হায়,কারো নজর না লেগে যায়।
ইভা:আমি আয়রার কথা শুনে সামনে তাকিয়ে একদম হা হয়ে গেছি।আজ আরিয়ানকে দেখে আমি মনে হয় শেষই হয়ে যাবো।ইসসস আমার হবু বরটাকে কি কিউট লাগছে।পুরোই ক্রাশিত আমি।আজ আরিয়ান লাল শেরওয়ানি পরেছে যার গায়ে সোনালী কালার স্টোনের কাজ করা।পায়ে নাগরাই জুতো।মাথার সিল্কি চুলগুলো উরছে।কিন্তু বেচারা বর আমার মুখটা বাংলার পাঁচ এর মতো করে রেখেছে।তবে এইটা ব্যাপার না।আমিও ইভা।দেখি মি.আরিয়ান আমাকে কতদিন ভালো না বেসে থাকতে পারে।ভেবেই মুচকি হাসলাম।
আহিয়া:ওই ওই মুখ বন্ধ কর।নয়লে মশা ঢুকে যাবে মুখে।(বলেই আমরা সবাই হাসতে লাগলাম)

আমি হাসতে হাসতেই বললাম সবাইকে,,,,
আমি:আব্বে গাধীর দল,,তারাতারি ওখানে চল।নয়তো গেট ধরা আর হবে নাহ।চল তারাতারি।

বলেই আমরা ইভাকে স্টেজ এ রেখে নেমে পরলাম।আর গেট এ গিয়ে দাড়ালাম।

আমি:এই যে সুপ্রিয় বরযাত্রী।ভেতরে তো যাবেনই।তার আগে আমাদেরকে খুব বেশি নাহ,মাত্র ২০হাজার টাকা দিয়ে দিন।

আমার কথা শুনে সবাই বেহুশ হওয়ার অবস্থা।তা দেখে হাসিতে আমাদের গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা।

আরিয়ানের এক কাজিনের নাম অভি।ওও আমাকে বললো,,,

অভি:কি বেয়ানসাব।আমাদের ফকির বানাবেন নাকি?
ঐশি:একদিন ফকির হলে কিচ্ছু হবে না বেয়াইসাব।

পাশ থেকে আরিয়ানের আরেক কাজিন ফুয়াদ বলে উঠলো,,,

ফুয়াদ:সে নাহয় আমাদের এতো সুন্দর সুন্দর বেয়াইনদের জন্য ফকির হলাম।কিন্তু তার বদলে আমরা কি পাবো?
ঝিনুক:আরে সবুর করুন বেয়াই আমার।আপনাদের জন্য স্পেশাল সবকিছু ওয়েট করছে।

পাশ থেকে সাদাফ বলে উঠলো,,

সাদাফ:তা কি সেই স্পেশাল সব বেয়াইনসাব?
ঝিনুক:তা তো ভেতরে গেলেই দেখতে পারবেন।
ঐশি:তো দিন আমাদের টাকা।তারপর ভেতরে যান।

এরপর আরো অনেক কিছু বলার পর আমাদের পনেরো হাজার টাকা দিয়ে সবাই ভেতরে ঢুকলো।কিপটার দল বিশ হাজার টাকা না দিয়ে পনেরো হাজার দিছে হুহহহহহহ।বাট আসল মজা তো ভেতরে অপেক্ষা করছে।হাহাহাহা হাহাহাহা(আমি মনে মনে এইসব ভেবেই হাসছি)

আমি:এই শোন তোরা,ওদের বসতে দে।তারপর আসল কাজ শুরু(বলেই আমরা সবাই হাসলাম,যাকে বলে ডেভিল স্মাইল)

ওদের সবাইকে আমরা বসতে দিয়ে যেই স্টেজ এ তাকালাম অমনি আমি দেখলাম আরিয়াম এক মনে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।এক মনে শুধু আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার কেমন জানি অস্বস্তি হচ্ছে।আমি আর কোনো দিকে না তাকিয়ে নিজের কাজ করতে লাগলাম।

আমি:এই যে বেয়াইসাবরা নিন শরবত খান।একে একে আমার হাত থেকে অভি আর ফুয়াদ নিল।ঐশির হাত থেকে আয়াজ নিলো।(বলে রাখা ভালো আয়াজও আছে এই বিয়েতে।আফটার অল ওও আমাদের সবার বন্ধু বলে কথা)

এরপর ঝিনুকের থেকে সাদাফ নিলো।আহিয়ার থেকে আয়মান নিলো।এইভাবে সবাই নিয়ে শরবতটা মুখে দিয়েই একেকজন আচ্ছা মতো চিল্লাতে শুরু করলো।আর তা দেখে আমরা হাসতে হাসতেই গরাগরি খাওয়ার মতো অবস্থা।

আসলে আমরা যে শরবত বানিয়েছি তার উপকরণ গুলো হলোঃপানি,মরিচ,হলুদ,লবন,নিম পাতা,লেবু আর করলার রস।আর এইসব খেয়েই সবাই কুপোকাত।

আয়াজ:আমি ঝালের চোটে লাফাতে শুরু করেছি।কিন্তু ঐশিকে দেখে আমার চোখ আটকে গেল।কারণ আজ ওকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে নীল শাড়িতে।অবশ্য আজ সব মেয়েরাই নীল শাড়ি পরেছে।এইটায় আজকের সবার ড্রেস কোড।আর আমরা ছেলেরা নীল পান্জাবি পরেছি।আমার চোখে আজ ঐশিকেই সব থেকে বেশি সুন্দরী লাগছে।রেশমি চুলগুলো কোমর অবধি ছড়িয়ে আছে।ভারি মেকওভার।তার উপর হালকা কিছু অর্নামেন্টস।আমার এতোসব ভাবনার মাঝেই কেউ আমার সামনে মিষ্টি তুলে ধরলো।তাকিয়ে দেখি ঐশি নিজেই মিষ্টি আমার মুখের সামনে নিয়ে আছে।আমি ওর দিকে তাকালেই ইশারায় বললো মিষ্টি টা খেয়ে নিতে।আমারো ঝালে অবস্থা শেষ।তাই চট করে মিষ্টি টা খেয়ে নিলাম।

ঐশি:আমি যখন হাসতে হাসতে আয়াজের দিকে তাকালাম তখন দেখলাম বেচারার ঝালে চোখ মুখ সব লাল হয়ে গেছে।আজ ওকে দেখে আমি এমনিতেই ক্রাশ খায়ছি।তাই বেচারাকে দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো।তাই একটা মিষ্টি নিয়ে ওর সামনে ধরলাম।আর সেও গুড বয়ের মতো খেয়ে নিলো।

অন্যদিকে সাদাফ আর ঝিনুক,,,

সাদাফ তো রিতিমতো তিতা খেয়ে লাফালাফি শুরু করছে।আর তা দেখে ঝিনুক হাসতে হাসতে শেষ।সাদাফ তো এইটা দেখে পারেনা ঝিনুককে তুলে আছাড় মারতে।বেচারি ঝিনুক হাসি থামাতেই পারছে না।এরপর হুট করেই সাদাফ ঝিনুককে একটানে কাছে টেনে নিয়ে বলে,”এই হাসির প্রতিশোধ তে আমি নিবোই”এই বলেই ডেভিল স্মাইল দিয়ে মিষ্টি কিছু খেতে যায় সাদাফ।আর ঝিনুক,সে তো হাবলার মতো চেয়ে আছে সাদাফের যাওয়ার পানে।

আয়মান আর আহিয়া তো রিতিমতো যুদ্ধ করে ফেলছে।কারণ আহিয়া আয়মানকে হলুদ মেশানো শরবত খাইয়েছে।বেচারা আয়মানের অবস্থা শেষ।অনেক কষ্টে পানি,মিষ্টি,হেনতেন খেয়ে একটু শান্ত হয়ছে।

বাকিগুলোর অবস্থাও শোচনীয়।আমি এক ভদ্র মেয়ে এগুলো শুধু দেখছি আর হাসছি।এর মধ্যেই খবর এলো বিয়ে পরানো শুরু হয়ে গেছে।তাই আমরা সবাই গেলাম বিয়ের ঐদিকে।সেখানে গিয়ে দেখি আরিয়ান চুপ করে বসে আছে।কবুল বলছেই নাহ।তা দেখে বেচারী ইভা তো কেঁদে দিবে এমন অবস্থা।হঠাৎই আরিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে এক নিঃশ্বাসে কবুল বলে দিলো।ওর চোখে আমি প্রচুর অভিমান দেখেছি আমার জন্য।কিন্তু আমি জানি,ইভা ই আরিয়ানের জন্য পারফেক্ট।এইসব ভাবতে ভাবতেই ইভাও কবুল বলে দিলো।অবশেষে আরিয়ান আর ইভার বিয়ে সুসম্পন্ন হলো।তা দেখে আমি একটা স্বস্তির নিশ্বাস আর তৃপ্তির হাসি দিলাম।

বিদায়ের সময় ইভা আমাদেরকে জরিয়ে অনেক কাঁদছিল।আর আমাকে জরিয়ে ধরে সবচেয়ে বেশি কেঁদেছে।আমি নাকি ওর ভালোবাসা ওকে উপহার দিয়েছি।এজন্য ওও আমার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবে।পাগলি মেয়ে একটা।যাইহোক বিয়ের সব কিছু মিটিয়ে আমি বাড়িতে চলে এলাম।এর মধ্যেই আদিয়াত আমাকে কল দিয়ে কথা বলেছে।দেন আমি ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম দিলাম।বড্ড টায়ার্ড আমি!

বাসর ঘরে………

ইভা:সেই কখন থেকে আমি ওয়েট করছি আরিয়ান মহারাজের জন্য।কিন্তু তার আসার কোনো নামই নেই।রাত এখন ২টা।আমি সেই ১০টা থেকে ওর জন্য অপেক্ষা করছি।এখন আমার আরিয়ানের উপর খুব রাগ হচ্ছে।শালা ফাজিল,আমাকে সেই কখন থেকে অপেক্ষা করাচ্ছে।

এর মধ্যেই আমি দরজা খোলার আওয়াজে তাকিয়ে দেখি আরিয়ান এসেছে।এইটা দেখে আমি উঠে গিয়ে যেইনা আরিয়ানাকে সালাম করবো ওমনি ওও সরে গেলো।

আরিয়ান:দেখ ইভা তুই কখনো আমার থেকে স্ত্রীর অধিকার আশা করিস না।কারণ আমি এখনো আয়রাকেই ভালোবাসি।আমি এই বিয়েটা করেছি শুধুমাত্র আয়রার কথা রাখতে।তাই তুই আমার থেকে দূরে থাক।এইটায় তোর জন্য মঙ্গল হবে।

এই বলেই আরিয়ান একটা বালিশ নিয়ে সোফায় গেলো ঘুমাতে।

আর এদিকে আমার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে।আমার কত স্বপ্ন ছিলো আমার বাসর রাত নিয়ে।কিন্তু আমার ভাগ্য আজ আমাকে এ কোথায় এনে দাড় করালো?তবে আর যাইহোক,আরিয়ান শুধুই আমার।তাই ওর পুরো অস্তিত্ব জুড়ে শুধু আমিই থাকবো।তার জন্য আমাকে যা করতে হয় আমি তাই করবো!

এই বলে চোখ মুছে আমিও ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় শুয়ে পরলাম।

চলবে?????
চলবে?????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here