dangerous crazy lover পর্ব ৩

#Dangerous_Crazy_Lover_💓.
#Sumaiya_Moni “.
#Part-3.

ওরা তিন জন ঠিক একি ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। রাফিন ওদের সামনে এসে ভাব নিয়ে বলতে লাগলো।

রাফিন: এই যে ভূতের রানী রা আমাকে একটা কিস দেও ? বেশি না ২০টাকা দেবো?…..[ মুড নিয়ে বললো ]

আরিয়া,লিলি,রাইমা চুপ করে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। রাফিনের কথা শুনে আরিয়ার ভিশন রাগ হচ্ছে ।

রাফিন: আরে এতো লজ্জা পাবার কী আছে? দেও না একটা কিস?

আরিয়া রাগী কন্ঠে ভূতের মত ফোসফোস আওয়াজ করে বললো।

আরিয়া: কিস চাই তোর?

রাফিন: বয়রা নাকি একটা কথা কয়বার বলা লাগে হ্যাঁ? কতক্ষন ধরে বলতেছি একটা কিস দিতে আর এখন বলে কিস চাই তোর। কিস দে শালিরা….[ কিছুটা ধমকের স্বুরে বললো ]

আরিয়া : এই নে তোর কিস……।

বলেই ওর সর্ব শক্তি দিয়ে রাফিনের গালে ” ঠাস” করে চড় বসিয়ে দিল । চড়ের মাএা এতটা জোরে ছিল যার কারনে রাফিন কাত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। রাফিন মাটিতে পড়ে যাবার সাথে সাথে আরিয়া রাফিনের গায়ের উপর চড়ে বসে। পিছনে রাফিনের বন্ধুরা ঘটনার আকসিকতায় ওরা নিজেরাই কিছু বঝতে পারছে না। বোকার মত রাফিনের দিকে তাকিয়ে আছে।

আরিয়া রাফিনের বুকের উপর চড়ে বসে রাফিনের শার্টের কলার জোরে চেপে ধরে রাফিন কে জোরে জোরে ঝাকাতে লাগলো। ঝাকির কারনে রাফিন পাকাতে বার বার মাথায় বারি খাচ্ছে ।

আরিয়া: কিস চাই তোর তাই না দাঁড়া তোকে আজ এমন কিস দেবো।

রাগি+গম্ভীর কন্ঠে কথা গুলো বলে শার্টের কলার ধরে ইচ্ছা মত চড় ধপা ধপ রাফির গালে চালাচ্ছে। রাফিনের বন্ধু রা এই দৃশ্য দেখে ভয়তে কাচুকামু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে । ওরা ভালো করেই বুঝতে পেরেছে ওরা তিন জন মানুষ না ভূত। অনেক ক্ষন চড় দেবার পর আরিয়া রাফিনের শার্টের কলার ধরে ঝাকাতে ঝাকাতেই বললো।

আরিয়া: রাস্তায় মেয়েদের বাজে কথা বলবি?আর টিচ করবি ? খারাপ নজরে দেখবি বল….?

রাফিন চড় খেয়ে নাজেহাল অবস্থা তার উপর ঝাকানি খেয়ে ছ্যারাব্যারা+করুন অবস্থা হয়ে যায় ওর। ভয়ে ভয়ে কাপা কাপা কন্ঠে বললো।

রাফিন: না না ভূ…ভূত আফা….আর কোনো দিন রাস্তায় মেয়েদের টিচ করমু না। খারাপ নজরে তাকামু না। দয়া করে এবারের মত ছেড়ে দেন?

আরিয়া: মনে থাকবে?…..[ ঝাঝাল কন্ঠে ]

রাফিন: হ…হ…হ…ভূত আফা…।

এবার আরিয়া ঘাড় ঘুরিয়ে সামনে থাকা রাফিনের বন্ধুদের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। এবাবে তাকাতে দেখে রাফিনের বন্ধুরা এক একটা খিচ্ছা দৌড়….। না যানি ওদের ও এমন হাল করে না দেয় এই ভয়ে। আরিয়া রাফিনের গায়ের উপর থেকে উঠে দাঁড়ায়। রাগী কন্ঠে হাতের ইশারা দিয়ে দেখিয়ে বললো।

আরিয়া: এখান থেকে এক দৌড়ে চলে জাবি। পিছনের দিকে ঘুরে তাকালে ঘাড় মটকে দেবো।

রাফিন কথাটা শুনা মাএই ওর বন্ধুদের মত খিচ্ছা এক দৌড় । ভয়তে সাহস করে পিছনের দিকে ঘুরে তাকাল না। লিলি ও রাইমা এক জন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে হো হো করে হেসে দেয়। আরিয়া ওর ডান হাত বাম হাত দিয়ে ধরে মচড়াতে লাগলো। লিলি হাসি থামিয়ে বললো।

লিলি: এই ছিল তোর মনে আরিয়া…[ বলেই হাসতে লাগলো ]

রাইমা: সেই সকালের প্রতিশোদ এখন নিলি বাহ্!…[ হেসে ]

আরিয়া: হ্যাঁ! ওরা প্রতিদিন মেয়েদের সাথে বাজে ব্যবহার করে। আর আজকে আমাদের সাথে করেছে। তাই জনমের মত শিক্ষা দিয়ে দিলাম। ওহ! হাতে ব্যাথা পেয়েছি মারাক্ত ভাবে।

লিলি: চড় গুলো তো বেশ জোরে জোরে দিয়েছিলি। তাই হাতে ব্যাথা পেয়েছিস ।

আরিয়া: হ্যাঁ! বেশ না বল অনেক জোরে দিয়েছি। ইশশশশ এরকম একটা চড় যদি ওই আমসত্ত্বাটা কে দিতে পারতাম।

রাইমা ও লিলি আরিয়ার দিকে কিছুটা রাগী চোখে তাকিয়ে আছে । আরিয়া ওদের চেহারা দেখে বুঝে যায় এই কথাটা শুনে ওরা কিছুটা রাগ করেছে।

আরিয়া: আমি বুঝি না ওই আমসত্ত্বা টার কথা বলয়ে তোদের এতো জ্বলে কেন? ভালোটালো বাসিস নাকি তোরা?

লিলি: ভালোবাসলে তোর কী?

রাইমা: তুই এবাবে আর বলবি না। বিদ্যুত কে আমার ভালো লাগে।

আরিয়া: তো যা না গিয়ে বিস্কুটের গলায় ঝুলে পড় ।….[ বিরক্তি নিয়ে ]

রাইমা: পারলে ঠিকি পড়তাম।

আরিয়া: পারবি না যখন তখন বলিস কেন? শালা একটা ক্রিমিনাল।

লিলি: ব্যাস থাম…এখন বাসায় চল । আমার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে ।

আরিয়া: হু চল….।

ওরা তিন জন বাসার দিকে হাঁটা ধরলো। যে যার বাসায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। এত বড় কান্ড করে এসেছে সেটা ওদের পরিবারের কেউ টের পায় নি।

এবার আছি আসল কথায়। ওই বখাটে ছেলে কজন প্রতিদিন রাস্তায় মেয়েদের দেখলে আজে বাজে কথা বলে এবং খারাপ দৃষ্টিতে তাকায়। এটা ওদের রোজ কার রুটিন। আজকে আরিয়া,লিলি,রাইমা কলেজ থেকে ফিরার পথে বখাটে ছেলে কয়জন ওদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এবং কু নজরে তাকায় । লিলি,রাইমা এটা মেনে নিতে পারলেও আরিয়া নিতে পারে নি। তাই আরিয়া ভূত সেজে ওদের কে উচিত শিক্ষা দিয়েছে।

সকালে…

ক্লাস বসে আছে ওরা তিন জন । আরিয়া স্যারের ছবি আঁকতে ব্যস্ত। স্যার পড়ার বিষয় কথা বলছে সেটা আরিয়ার কানেই যাচ্ছে না। আরিয়া ওর মত করে স্যারের ছবি এঁকেই যাচ্ছে। আরিয়া ছবি আঁকা শেষ করে পিছনের দিকে ঘুরে কেয়া ও তানজিলা নামের মেয়ে দুটু কে ডাক দিয়ে খাতাটা ওদের সামনে ধরলো। কেয়া ও তানজিলা খাতাতে আঁকা স্যারের ছবিটা দেখেই উঁচু স্বরে হো হো করে হেসে দিল। কেয়া ও তানজিলার হাসির শব্দ সবাই শুনতে পেয়েছে। স্যার সহো সব ছাএ-ছাএী রা কেয়া ও তানজিলার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করে হেসে উঠার কারনটা বুঝার চেষ্টা করছে সবাই। আরিয়া সবার দিকে তাকিয়ে দেখে সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে । তাই আস্তে করে খাতাটা ব্যাগের ভিতরে ঢুকিয়ে রেখে ভিজা বিড়ালের মত বসে থাকে। মনে হচ্ছে আরিয়া কিছুই করে নি।

স্যার রাগী গলায় কেয়া ও তানজিলা কে ডাক দিয়ে দাঁড়াতে বলে। কেয়া ও তানজিলার এতক্ষন পর হুস আসে ওরা কী করেছে। চুপ চাপ দাঁড়িয়ে যায়। স্যার ওদের হাসির কারন জিজ্ঞেস করলে কেয়া আরিয়ার দিকে দেখিলে বলে ওর আঁকা সেই ছবিটার কথা। স্যার এবার আরিয়া কে ডাক দিয়ে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলে আরিয়া বলে দেই ও কিছুই দেখাই নি। এমন ভাবে বলে আরিয়া যেটা স্যার বিশ্বাস করে ন্যায়। কেয়া ও তানজিলা অবাক হয়ে গেছে। খাড়ার উপরে ডাহা মিথ্যা কথা কিভাবে বললো আরিয়া এটাই ভাবছে। স্যার ওদের কে ক্লাসের বাহিরে কান ধরে দাঁড় করায়। স্যার ওদের দু জন কে বলে দেয় সব ক্লাস শেষ হওয়া আগ পর্যন্ত ওদের কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে । আরিয়া এটা শুনে মনে মনে ডেবিল মার্কা হাসি দেয়। লিলি ও রাইমার চোখ স্থির আরিয়ার উপর।

ক্লাস শেষ…

আরিয়া ক্লাসের বাহিরে বের হয়ে কেয়া ও তানজিলার উদ্দেশ্যে বললো।

আরিয়া: আমার সাথে পাঙ্গা নিলে একদম করুন হাল করে দিবো। আজকে তো ক্লাসের বাহিরে দাঁড় করিয়েছি পরের বার মাঠে কান ধরে দাঁড় করাবো হুহহহ…..[ বলেই ভাব নিয়ে চলে যায় ]

কেয়া ও তানজিলা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আরিয়ার যাওয়ার দিকে।
কেয়া ও তানজিলা আরিয়া‌,লিলি,রাইমার নামে অন্য মেয়েদের কাছে আজে বাজে কথা বলেছিল। আর এর কারন হচ্ছে ওরা তিন জন কলেজের টপার। এটা ওদের দু জনের সহ্য হয় নি। তার জন্য ওদের বদনাম গেয়ে ভেড়াত। আরিয়া এটা জানতে পারে অন্য ছাএীদের কাছ থেকে । তাই ওদের সবার সামনে এবাবে অপমান করে।
আরিয়া,লিলি,রাইমা ক্যান্টিনে গিয়ে বসলো।
.
.
.
.
.
কোর্ট থেকে হাস্যজ্জল চেহারা নিয়ে বের হচ্ছে বিদ্যুত । আজকের কেসটাও জিতে গিয়েছে । খান সাহেব ধন্যবাদ বলে বিদ্যুতের সাথে হাত মিলালো। বিদ্যুত খান সাহেবের সাথে কিছুক্ষন কথা বলে গাড়িতে উঠে বসলো। অপর পাশে বসা ছিল রবিন। মুখ গোমড়া করে বসে আসে। ১০ বছর থেকে এবাবে সত্যকে দামাচাপা দিয়ে মিথ্যে কে জিতিয়ে আসছে বিদ্যুত । সেটা রবিন মুখ বুঝে দেখে যাচ্ছে। মুখ বুঝে দেখা ছাড়া রবিনের যে আর কিছুই করার নেই । বিদ্যুত লেপটপ নিয়ে ব্যস্ত। রবিন বিদ্যুতের দিকে করুন চোখে তাকিয়ে আছে । বিদ্যুত ঠিক বুঝতে পেরেছে রবিন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। বিদ্যুত কিছুটা রাগী ভাব নিয়ে বলে উঠলো।

বিদ্যুত: এনি থিংক ওরং?

হঠাৎ বিদ্যুতের এমন প্রশ্নে রবিন হকচকিয়ে উঠে বললো।

রবিন: না না স্যার ।

বিদ্যুত: গুড….!

কিছুক্ষন পর বাসায় পৌঁছে যায় বিদ্যুত । লেপটপ বিছানার উপর রেখে ফ্রেশ হবার জন্য ওয়াশরুমে চলে যায়।
.
.
.
.
.
বিকালে…

লিলি,রাইমা আরিয়া দের বাসায় আসে। আরিয়া লিলি ও রাইম কে নিয়ে শপিং করার জন্য শপিং মলে যায়।
আরিয়া কিছুক্ষন এটা ওটা দেখার পর একটা টপ হাতে নিয়ে বললো।

আরিয়া: তোরা দু জন এখানে দাঁড়া আমি চেঞ্জিং রুমে গিয়ে টপটা পড়ে দেখে আসি কেমন।

লিলি: তাড়াতারি আসিস কিন্ত?

আরিয়া: ওকে:

আরিয়া চেঞ্জিং রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে টপটা পাশের চেয়ারে রেখে ফোন রেব করে অন্য সিম ফোনে ঢুকিয়ে বিদ্যুতের নাম্বারে কল দেয়। আরিয়ার বুকের মধ্যে ধুক ধুক করছে। হালকা ভয় অনুভব করছে আরিয়া। তারপর ও প্রতিশোদ না নিয়ে দমে যাবে না আরিয়া। একবার কল কেটে যাবার পর । আরিয়া আবার কল দেয়। এবার ফোন রিসিভ করেছে। আরিয়া নিজেকে সান্ত করে জোরে জোরে বলে উঠলো।

আরিয়া: বিস্কুট আমসত্ত্বা চানাচুরের বাচ্চা…….থাবরাইয়া থাবরাইয়া করমু আলু ভর্তা। শালা তুই একটা কালা হাতি,কালা গোড়া,কালা মশা,কালা কুত্তা,কালা গরু,কালা বাদুর,কালা বিড়াল,কালা জুতা,কালা চশমা…..কালায় কালায় কালো কিত তুই……….[ এক নিঃশ্বাসে বলেই ঠাস করে ফোন কেঁট দিল ]

তাড়াতারি করে ফোন থেকে সিমটা বের করে ভেঙে ময়লার বালতিতে ফেলে দিল। আরিয়া এবার বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো। বুকের মধ্যে ধুকপুকানি কিছুটা কমে গেছে। নিজেকে যথেষ্ট সান্ত করে জামাটা নিয়ে বের হল চেঞ্জিং রুম থেকে।

আরিয়া: লিলি,রাইমা তাড়াতারি আয় আমার সাথে।….[ বলেই হাঁটা ধরলো ]

লিলি: আরে দাঁড়া কোথায় যাচ্ছিস?

আরিয়া: আমার পিছন পিছন আয় কথা কম বল।

রাইমা: জাবিটা কোথায়? কিছুই তো কিনলি না।

আরিয়া ওদের কথায় পাওা না নিয়ে শপিং মলের বাহিরে চলে এলো। আরিয়ার সাথে সাথে লিলি ও রাইমা বাহিরে চলে এলো। আরিয়া একটা কফি শপের ভিতরে ঢুকলো।
একটা টেবিলে গিয়ে বসে পড়লো আরিয়া । লিলি ও রাইমা আরিয়ার অপর পাশের দুই চেয়ারে বসে পড়লো।

লিলি: আরিয়া কী হয়েছে বলবি তো নাকি?

রাইমা: কিছু বলছিস না কেন?

আরিয়া: বিদ্যুত কে কল দিয়ে ছিলাম চেঞ্জিং রুমে বসে ।

এই কথা শুনেই ওরা হা করে তাকিয়ে আছে আরিয়ার দিকে ।
.
.
.
.
.
বিদ্যুত হাউজ……

বিদ্যুত কফি খাচ্ছে আর লেপটপ অন করে কাজ করছে। হুট করে ফোন বেজে উঠাতে ফোনের স্ক্রীনে তাকিয়ে দেখে অচেনা নাম্বার তাই ফোন রিসিভ না করে আবার ও কাজে মন দিল। পরের বার ফোন বেজে উঠাতে বিরক্তি নিয়ে রিসিভ করে লাউড স্পিকারে দিল। অপর পাশ থেকে মেয়েলি কন্ঠে গালা গালি শুনে বিদ্যুত অবাক হয়ে যায় । মন দিয়ে মেয়েটির গালি গুলো শুনতে লাগলো। প্রথম প্রচন্ড রাগ হয় বিদ্যুতের । তারপর যখন মেয়েটি গালা গালি শেষ করে ফোন কেঁটে দেয় তখন বিদ্যুত গভির চিন্তায় মগ্ন হয়ে যায়। মেয়েটির গালির গতি অনেক ফাস্ট ছিল তাই বিদ্যুত ঠিক বুঝতে পারেনি। চোখ বন্ধ করে মেয়েটির গালা গালি গুলো সাজাতে লাগলো। হুট করেই হো হো করে উঁচু স্বরে হেসে উঠলো বিদ্যুত । রুমের চার পাশে বিদ্যুতের হাসির দ্বন্দ্বী দেয়ালের এপাশ ওপাশ বারি খাচ্ছে। হাসি থামিয়ে বিদ্যুত একা একা বলতে লাগলো।

বিদ্যুত: হেই ক্রেজি গার্ল….তুমি আমার নামটি এভাবে সাজিয়েছ। তোমাকে তো আমি খুঁজে বের করবোই।…….[ বাকা হেসে ] রবিন…..রবিন……।

রবিন নিচের রুম থেকে বিদ্যুতের ডাক শুনে উপরে চলে আসে।

রবিন: জ্বী স্যার বলুন।

বিদ্যুত: লাস্ট ডায়াল কলে একটা নাম্বার আছে। এটার লোকেশন ট্রেস করে আমাকে জানাও।

রবিন: ওকে স্যার ।

রবিন চলে যেতে নিলে বিদ্যুত থামিয়ে দেয়।

বিদ্যুত: আর শোনো………।
.
.
.
.
.
.
লিলি: ত..তুই বিদ্যুত কে আবার কল দিয়েছিলি।….[ অবাক হয়ে ]

রাইমা: কেনো কল দিয়েছিলি?

আরিয়া: প্রেম আলাপ করতে।

লিলি: দেখ আরিয়া যা করেছিস করে ফেলেছিস…এখন আর পাগলামি করিস না। বিদ্যুত যদি একবার জানতে পারে ওকে কল দিয়ে বিরক্ত করা মেয়েটি তুই ,তাহলে তুই শেষ?

আরিয়া: ওই চুপ থাক…আমি ওই আমসত্ত্বা টামসত্ত্বা কে ভয় পাইনা।

রাইমা: সত্যি ভয় পাশ না।…….

আরিয়া:…… [ কেডা বলছে ভয় পাই না। ভয়তো পাই-মনে মনে ] না না আমি ভয় টয় পাই না।

লিলি: তোর চেহারা দেখে তো মনে হচ্ছে তুই খুব ভয় পেয়ে আছিস?

আরিয়া: সময়ের সাথে সাথে তুই ও কানা হয়ে গেছিস। তাই ভুল দেখছিস।

রাইমা: আচ্ছা এখান থেকে চল এখন।

আরিয়া: হুমমমম।

ওরা কফি শপ থেকে বাসায় চলে আসে। বাসায় আসার পথে সেই বখাটে ছেলে কজনকে দেখতে পায়। এখন ওরা আর কোনো মেয়ে কে ডিস্টার্ব করে না এবং বাজে কথাও বলে না। উচিত শিক্ষা হয়েছে ওদের।

পরের দিন….

আরিয়া পাপ্পিকে বিস্কুট খাওয়াচ্ছিল। পাপ্পি কিছুক্ষন বিস্কুট খেয়ে আরিয়ার কাছ থেকে মারিয়ার রুমে চলে যায়। ঠিক সেই সময় আরিয়ার রুমে লিলি ও রাইমা প্রবেশ করে। লিলি বিছানায় বসেই আরিয়ার হাতের বিস্কুটের প্যাকেট টা থাবা দিয়ে নিয়ে বলে।

লিলি: একা একা খাচ্ছিস…দিয়ে খেতে হয় জানিস না….[ বলেই একটা বিস্কুট বের করে খেতে লাগলো ]

রাইমা: আরিয়ার বাচ্চা বুঝে না। কিছুই বুঝে না।…..[ বিস্কুট খেতে খেতে বললো ]

আরিয়া: আসলেই রে আমি কিছুই বুঝি না। তোরাই সব বুঝিস তাই তো আমার পাপ্পির বিস্কুট খাচ্ছিস। খা বেশি করে খা,মন ভরে খা,পেট ভরে খা,সাথে আঙ্কেল দের নাম ভুলিয়ে খা।

লিলি ও রাইমা আরিয়া মুখে পাপ্পির বিস্কুট কথাটা শুনেই থু থু করে সব বিস্কুট মুখ থেকে ফেলে দিল। দৌড়ে ওয়াক ওয়াক করতে করতে ওয়াশরুমে চলে গেল।

আরিয়া ওদের অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। লিলি ও রাইমা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আরিয়ার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে ।

আরিয়া: ব্রেকিং নিইজ শেষ পর্যন্ত খুদা মিটাতে দুই যুবতি মেয়ে কুকুরের বিস্কুট খেয়ে তাদের খুদা মেটাল…আজকের গরম গরম তাজা মজার খবর।…..[ হেসে ]

লিলি: আরিয়া…….[ রেগে ]

রাইমা: কাজটা ঠিক করলি না।……[ রেগে ]

আরিয়া: ওই আমি একবার ও বলছি আমার পাপ্পির বিস্কুট খা তোরা? আমার হাত থেকে ধুম করে থাবা দিয়ে নিয়ে পটপট করে খেয়ে গিলে ফেলেছিস। এতে আমার দোষ কোথায়?

রাইমা: তুই বলিস নি কেন এটা তোর পাপ্পির বিস্কুট ?

আরিয়া: বলার সুজুগ দিয়েছিস? তার আগেই তো গপাগপ খাচ্ছিলি।

লিলি: তোর দোষ সব।

আরিয়া: আচ্ছা আচ্ছা বস এখানে। আর রাগিস না।তোদের একটা কবিতা শুনাই আমি লিখছি। ভাবছি এই কবিতাটা আমি পেপারে দেবো।

লিলি: কী কবিতা বল তো শুনি?

রাইমা: বল।

আরিয়া: ওকে……..

একটা ছাগল ছানার বড্ড পানি তেষ্টা পেয়েছে
ছাগল ছানাটি এদিক সেদিক পানি খুঁজছে
এদিক সেদিক পানি খুঁজছে,এদিক সেদিন
পানি খুঁজছে। হঠাৎ পুকুর পাড়ে গিয়ে পানি
খেয়ে বাসায় চলে গেছে………..

আরিয়া: সেই না কবিতাটা?…..[ হেসে ]

লিলি: ওরে আল্লাহ্…… রাইমা আমারে ধর আমার মাথা ঘুরাইতাছে।……[ মাথায় হাত দিয়ে ]

রাইমা: তুই আমারে ধর আমার বমি বমি লাগতাছে…..[ গলায় হাত দিয়ে ]

আরিয়া: বাহ্! তোরা আমার কবিতা শুনে প্যারানেট হয়ে গেছিস?

রাইমা: প্যারানেট কী?…..[ ভ্রু কুঁচকে ]

আরিয়া: আরে প্রেগন্যান্ট । প্যারানেট এটার নিকনাম দিছি…।

লিলি: ও আল্লাহ্…. আল্লাহ্ গো….কই তুমি?….[ উপরের দিকে তাকিয়ে ]

রাইমা ধপাশ করে বিছানায় শুয়ে পড়লো। আরিয়া মাথা চুলকাতে লাগলো।
.
.
.
.
বিদ্যুত রাসেল খান এর বাড়িতে এসেছে। রাসেল খানের বাড়িতে আজ বড় করে পার্টির আয়োজন করা হয়েছে । বিদ্যুতের গাড়ি এসে থামলো রাসেল খানের বাড়ির সামনে। বিদ্যুত ও রবিন গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো। রাসেল খান বিদ্যুত কে দেখে এগিয়ে এসে বললো।

রাসেল খান: ওয়েলকাম! বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরী…. ওয়েলকাম।

বিদ্যুত রাসের খানের সামনে এসে হ্যান্ডশেক করলো।রাসেন খান বিদ্যুত কে ভিতরে নিয়ে গেল।
একটা টেবিলে দু জন বসে আলাপ করতে লাগলো।

রাসেল খান: বিদ্যুত তোমাকে আবারও ধন্যবাদ । আমার কেসটা তুমি জিতিয়ে দিয়েছো তার জন্য ।

বিদ্যুত: বিদ্যুত বিদ্যুৎ এর মতই কাজ করে। হেড়ে যাওয়া বিদ্যুতের রুটিনে নেই!……[ বাকা হেসে বললো ]

রাসেল খান: I Like Your Attitude…..কি খাবে বল?

বিদ্যুত: ড্রিঙ্ক….।

রাসেল খান: ওয়েটার ড্রিঙ্ক দেও এই টেবিলে?

আবার ও কথার মাঝে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। হুট করেই বিদ্যুতের ফোন বেজে উঠে। বিদ্যুত কথার মাঝে খেয়াল করে নি যে ওর ফোন বাজছে। কিছুক্ষন পর আবার ফোন বেজে উঠলো। এবার বিদ্যুত ফোনের দিকে তাকিয়ে অচেনা নাম্বার দেখে বাকা হাসি দিল। বিদ্যুত রাসেল খানের উদ্দেশ্য করে বললো।

বিদ্যুত: জাস্ট এ মিনিট…..।

রাসেল খান: সিউর…।

বিদ্যুত পার্টি থেকে করিডোরে যাবার সময় রবিন কে ইশারা করে কিছু একটা বলে চলে আসে। ফোন রিসিভ করে কানে ধরার সাথে সাথে অপর পাশ থেকে বলা কথা গুলো শুনে বিদ্যুত মুচকি হাসলো। ফোন কেঁটে দেবার পর বিদ্যুত কান থেকে ফোন সরিয়ে বাকা হেসে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে । তারপর করিডর থেকে পার্টিতে চলে যায়।

এদিকে আরিয়া কোচিং সেন্টারে এসেছে। সাথে লিলি ও রাইমা আছে । স্যারের আসতে দেরি হচ্ছে দেখে আরিয়া লিলি ও রাইমা কে বলে ছাদে চলে আসে। ছাদে এসেই বিদ্যুতের নাম্বারে কল দেয়। প্রথম বার ধরে নি। আরিয়া বিরক্তি নিয়ে দ্বিতীয় বার কল দেয়। এবার বিদ্যুত ফোন ধরার সাথে সাথে আরিয়া ঝাড়তে শুরু করে।
.
.
.
.
.
.
Continue To….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here