King_in_the_city_of_Mafia পর্ব শেষ

#King_in_the_city_of_Mafia
#Yanur_Akter_Eanya
#Part-25+Last part
আল্লাহ তুমি আমার আর্দশকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেওয়।আমার বাঁচার নতুন দিশা খুঁজে দেওয়।আমিও ভালো থাকতে চাই। আমি আর পাচঁটা মেয়ে মতো নরমাল লাইফ চাই।আমিও বাঁচতে চাই আল্লাহ।আমাকে তুমি পথ দেখাও।

-;গাড়ি ড্রাইভ করছে অর্ণব।আজ বাদে কাল যার সাথে বিয়ে সেই মানুষটা ভালো নেই।হবু বউয়ের চোখে পানি অন্য কারো জন্য সেটা মানতে সত্যি কষ্ট হয়।তবু তিশাকে সময় দিয়েছে অর্ণব।আর্দশ ফিরে আসলে তিশাকে তুলে দিবে নিজের হাতে।আর যদি আর্দশ না ফিরে তাহলে সারাজীবনের জন্য অর্নবের হয়ে যাবে তিশা।

ইস্ক মোহাব্বত প্রেয়ার জন্য শহীদ অম্মর হয়েছে। শিরিন,ফরহাদ,লাইলি, মজনু, আনার কলি,সেলিম,পার্বতী, দেবদাস এদের মতো শহীদ আরো অনেকে হয়েছে। যা কিছু পুরোনো ইতিহাসে কাগজে খতাই রয়েছে আর কিছু হারিয়ে গেছে স্মৃতি পাতায়।

—-
আজ তিশার গায়ে হলুদ🍁
হলুদ শাড়ি গাদা ফুলের গহনায় রাঙানো হয়েছে তিশার শরীর।তিশা মোমের পুতুল মতো বসে আছে।একে একে সবাই এসে রায়জাদা অর্নব বাড়ি থেকে গায়ে হলুদ আসা তিশার শরীরে ছুয়ে দিচ্ছে।

হলুদ ছোয়া পর্ব শেষ হলে গোসল করানো হয়। তখনও তিশা চুপ ছিল।নতুন শাড়ি পড়িয়ে তিশার কে ঘরে রেখে সবাই চলে যাওয়ার পর তিশা কান্না ভেঙে পড়ে। মনের ভিতরটা বড্ড খসখস করছে তিশার সাথে খারাপ কিছু হবে না তো।


শীতলের সামনে কান ধরে উঠবস করছে আরাভ।শীতল তাকিয়েও দেখচ্ছে না।আরাভ মুখ ফুটে কিছু বলতে গেলেই চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে থাকে শীতল।শীতল ফেইস দেখে আরাভ ঢোক গিলে। ভুল তো আরাভ করেছে যে সে ভুল নয় মস্ত বড়ো ভুল।সেইদিনের ওহি ঘটনার পর আরাভ চট্টগ্রাম চলে গিয়েছিল বাসায় ফিরেনি পাক্কা এক মাস পর ফিরে এসেছে আরাভ।এতদিন শীতল রেগে আর কথা বলেনি আরাভের সাথে।আজ আরাভ এসে শীতলের রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ।

-;আই এম সরি বউ।আর ভুল করবো না।এবার শেষ চান্স দেওয়।এটা লাস্ট এন্ড ফাইনাল চান্স।প্লিজ ফর গিফ মী বউ।এই যে দেখো কান ধরেছি আর করবো না।

-;ওহি অসভ্য, ফাজিল এটা আমার কান। আমার কান ধরে সরি বলছো নিজের কান ধরো।

আরাভ কথা বলতে বলতে শীতলের কান ধরে বসেছে।শীতল বলায় সাথে সাথে নিজের কানে আবার হাত দিলো।

-;ওহ সরি। এবার তো মাফ করো।রাতের বেলা ছাঁদে এনে টর্চার করছো তা ওহ আবার একমাত্র ওনলি হাসবেন্ড কে।আল্লাহ তো পাপ দিবে তোমাকে মাই জান।

শীতল কিছুটা ভেবে বলো ওকে মাফ করতে পারি তবে এক শর্তে?

-;কী শর্ত? তাড়াতাড়ি বলো মশা কিস করে তো আমাকে লাল বানিয়ে ফেলছে।

-;কি?

-; কি না জি। দেখো মিসেস কি করেছো আমার হাল?তোমার হাসবেন্ড তাদের পেয়ারা হয়ে গেছে।শুধু তোমার হতে পারল না।

-;হুম আজ রাতে আমার সাথে ডিনার করতে হবে তাও আবার বাহিরে।বলো রাজি যাওয়ার জন্য।

-;ওকে ওকে আমি রাজি!

-;হুম।যা-ও মাফ করলাম।

আরাভ রেডি হয়ে গাড়ির সাথে এলান দিয়ে স্টার্ন হয়ে দাড়িয়ে রইল শীতলের অপেক্ষা।

নীল, সাদা কম্বোনিকশনে শাড়ীটার সাথে মিলিয়ে ছোট্ট সাদা পাথরের হালকা অর্নামেন্টস আর সাজ দিলো।ঠোঁটে গাঢ়ো লাল লিপস্টিক আর চোখে কাজল লাগিয়ে নিজেকে আয়নায় দেখে নিলো শীতল।জুতো পরে হাতে পার্স নিয়ে নেমে এলো শীতল।

শীতল,আরাভ আজ ডিনার ডেটে যাচ্ছে। আরাভ ওয়াইট শার্ট এর সাথে কমপ্লিট ব্ল্যাক স্যুট পরেছে।আজ ওর মায়াবিনী কে জানাবে ওর হৃদয়ের কথা।
শুধু তাই নয়,এতদিন চট্টগ্রামে কেনো ছিল? কি কারণ ছিলো সেটা জানাবে শীতলকে?আর্দশ খুনি কারা? তা সবটা জানাবে শীতল কে প্রমানসহ আরাভ!আজ সেই সময়টা চলে এসেছে শীতলের সব সত্যিটা জানার।

আরাভের পিছু পিছু শীতল বেরিয়ে পড়লো উদ্দেশ্য আজ ডিনার একসাথে করবে।নিজেদের গন্তব্যে পৌছঁছে আরাভ শীতল। ডেকোরেশন বিভিন্ন খাবার আইটেম, জুস সব চেক করানো হয়েছে।আরাভের কথা মতো সবটাই সাজানো হয়েছে।ওদের জন্য আলাদা জায়গায় বুক করা ২য় তলায় সেখানে কেউ আসতে পারবে না।কেউ আসতে চাইলেও পারমিশন লাগবে। আরাভকে ফলো করতে করতে শীতল ভেতরে ঢুকে চারদিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হলো।সত্যি ডেকরেশনটা দারুন হয়েছে।৷
লাইটিং করা,ডিনার টেবিল সাজানো।পুরো আলোয় ঝলমল করছে।আজ আরাভ নিজের সাথে কোনো বর্ডিগার্ড আনেনি।

শীতল কে ডিনার টেবিলের চেয়ারে বসালো আরাভ।সাভেন্ট এসে খাবার সার্ভ করতে নিলে শীতল তাকে চলে যেতে বলে সামনে থেকে।শীতল বসে থেকে প্লেটে খাবার বেড়ে দিতে বলো আরাভ কে।চারদিকে সিগ্ধতায়ময়ী হয়ে উঠেছে।খুব সুন্দর একটা রোমান্টিক গান বাজানো হচ্ছে। আরাভ নিজের জন্য খাবার বেড়ে নিতে গেলে শীতল বাঁধা দেয়।আরাভ মুখ ফুটে কিছু বলতে নিলে শীতল চামচে করে খাবার তুলে আরাভ মুখের সামনে ধরে।শীতল এমন আচরণে আরাভ খুশী হয়ে মুচকি হেসে খাবার মুখে তুলে নেয়।আরাভও শীতলকে নিজের হাতে খাওয়া।এভাবেই একে অপরকে খাইয়ে খাবার পর্ব শেষ করে।

-;আ’ম সরি শীতল।বলে উঠে আরাভ।

-;আরাভ মুখ ফুটে আরো কিছু বলতে চাইলে শীতল আরাভের মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে দিলো।
শীতল আরাভের বুকে মাথা রেখে বলো,

-;আজ কোনো কথা বলোনা আরাভ।আমাকে তোমার বুকে একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখো প্লিজ।শীতলের চোখ জোড়া টলমল করছে।শীতল কে দুই হাতের বাঁধনে বুকে শক্ত করে জড়িয়ে রাখলো আরাভ।তারপর বলতে লাগলো,

-;আরাভ আমি যদি কখন ভুল করি। তুমি কি আমাকে মাফ করবে আরাভ?

আরাভ শীতল কে বুকের মাঝে শক্ত করে জড়িয়ে রেখে শীতলের কপালে ওষ্ঠদ্বয় ছুয়ে বলো,

-; ভালোবাসি তোমায় শীতল।খুব ভালোবাসি তোমায়।আমি জানি তুমি যেনে বুঝে ভুল করার মেয়ে তুমি নও। আর যদি ভুল করে ফেলো তাহলে সেটা সময় পরিস্থিতি শিকার হয়ে।শীতল কখন নিজের অজান্তেই ভুল কর না।তুমি যাকে ভুল বুঝে শাস্তি দিতে চাইছো।সে আসলে দোষী কিনা সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে।বিনাদোষে কাউকে শাস্তি তুমি দিবে না।

-;শীতল ছলছল চোখে আরাভ কে কিছু বলতে গিয়েও গলায় কথা আঁটকে গেলো।হাজার চেষ্টা করেও শীতল আজ ব্যার্থ।তবু আজ শীতল বলবে।

আরাভের বুক থেকে শীতল মাথা উঠিয়ে হাত ধরে নিয়ে আসে কাপল ড্যান্সের জন্য।দুইজনই কাপল ডান্স করছে।

Tumhe apna banane ka junoon
Sar pe hai, kab se hai……..

আরাভের পায়ের পাতা ওপর পা রেখে শীতল আরাভের গলা জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু দিলো।

আজকে আরাভের কাছে শীতলের ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগলেও তবে ভালো লাগছে।আগের মতো আপন করার জন্য মরিয়া হবে না তো শীতল। অবশ্য আজ আরাভ কে পাওয়া জন্য মরিয়া হলেও আরাভ শীতলকে বাঁধা দিবে না একটু না।বরং আপন করে নিবে নিজের প্রেয়সী কে।
আরাভের হাত শাড়ী ভেদ করে শীতলের সাদা কোমড় জড়িয়ে ধরেছে।আরাভের হাত শীতলের কোমড়ের মাঝে চলাচল করছে।আরাভ ছোয়া বারবার কেপেঁ উঠছে শীতল।শীতলের গলায় মুখ ডুবায় আরাভ।আরাভের কোট খামচে ধরে ওর কাঁধে চোখ বুজে মুখ গুঁজে দেয় শীতল।

হঠাৎ কিছু চোখের সামনে ভেসে উঠায় কেঁপে উঠে চোখ মেলে তাকায় শীতল।আরাভ থেকে দূরে সরে গিয়ে তর তরে কাপেঁ শীতল।কাপাকাপা গলায় বলে উঠে,

-; আমি বাসায় যাবো।আমাকে বাসায় নিয়ে চলুন আরাভ।

-;আরাভ কিছু বলতে চাইলে তা শুনতে নারাজ শীতল।তাই বাধ্য হয়ে রওনা হলো বাসায় যাওয়ার জন্য।বাসায় সামনে গাড়ি থামতে শীতল গাড়ি থেকে বের হয়ে শাড়ি আঁচল শক্ত করে ধরে উপরে চলে যায়।আরাভ শীতলের বিহেভিয়ার অবাক হচ্ছে।কি হলো শীতলের?

আরাভ গাড়ি প্রাক করে বাসায় ঢুকতে চমকে গেলো।শীতল নিজের ড্রেস চেঞ্জ করে ঘুমানোর জন্য ফ্রেশ হয়ে নাইট ড্রেস পরিধান করেছে।আরাভ হাতের ঘড়িটা খুলে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমের গেলো। চোখে পানি ঝাপটা দিয়ে আয়না দিকে তাকিয়ে ভাবছে।কি হয়েছে শীতলের?এমন অদ্ভুত আচরণ কেনো করছে?জিজ্ঞেস করতে হবে।

আরাভ ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসতে দেখল শীতল বেলকনিতে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।শীতল কাঁধে হাত রাখতেই কেমন মায়াবী দৃষ্টি নিয়ে তাকালো।

আজ যদি কিছু চাই আপনার কাছে দিবেন আমায়।আরাভ চেয়ে আছে শীতলের মুখ প্রানে।কি বলতে চায় শীতল?

শীতল আরাভের খুব কাছে এসে বলো,
-;আজ আমি আমার স্বামী কে চাই।আমার বেঁচে থাকার নতুন আসা চাই।দিন না আমায় আজ আমার স্বামীকে।একটু ভালোবাসা দিবেন আমায় নাকি সবটাই ওহি এলিজা জন্য বরাদ্দ।

-;শীতল তুমমমমি…. আরাভ কে বাকি কথা শেষ করতে দেয়নি শীতল। তার আগেই আরাভের ঠোঁটের মাঝে নিজের ঠোঁট মিশিয়ে দিল।আরাভ সাথে সাথে নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করে দুই হাত দিয়ে শীতলের কোমর আঁকড়ে ধরলো।

আরাভ কে পাওয়ার জন্য কেমন ছটপট করছে শীতল।আরাভ আজ শীতল কে ইগনোর করেনি সবটা মেনে নিয়েছে।শীতল শরীর থেকে আসা মিষ্টি বডি স্মেল পাচ্ছে আরাভ খুব কাছে থেকে।

২মিনিট পর শীতল আরাভ কে ছেড়ে দিলো।শীতল কেমন নেশাভরা নজরে তাকিয়ে আছে।
-;আরাভ শীতল কে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেল। খাটে শুয়িয়ে দিয়ে বলল,
-;শীতল আমি তোমাকে আপন করে নিতে চাই কিন্তু এভাবে না।তোমাকে কিছু বলতে চাই। কেনো সেইদিন ফিরিয়ে দিয়েছি তোমায়?আমমম…

– ;প্লিজ আরাভ! এখন থাকনা সেসব কথা!

-;কিন্তু

-;আর কোনো কিন্তু নয়।আজ যদি তুমি আমায় সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছো।তাহলে আমি আজ নিজেকেই শেষ করে ফেলবো।শীতল কথাটা বলেই কেঁদে দিলো।

-;শীতল কি বলছো তুমি? পাগল হয়ে গেছো।শীতল মুখে হাত দিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে!আরাভ কোনোভাবে শান্ত করতে না পেরে।মনেমনে ঠিক করলো যা হবে দেখা যাবে। আজ আর কষ্ট দিবে না শীতলকে।বরং আপন করে নিবে।

-;আরাভ শীতলের উপর নিজের শরীরের ভর ছেরে দিল।শীতলের দুই গাল নিজের দুই হাতের মাঝে নিয়ে নিলো আরাভ।শীতলের ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁট জোড়ার মাঝে নিয়ে শুষে নিতে থাকলো।
আজ আরাভ ফিরাবে না শীতলকে আপন করে নিবে গভীরতমভাবে শীতলের পরনের নাইট ড্রেসটা খুলে ফেলে দিলো।আজ ভালো খারাপ ভুলে গিয়ে একে অপরের মাঝে একাকার হয়ে গেলো ওরা।আজ নেই মানা আর নেই কোন দুরুত্ব।সব দুরত্বের অবসান ঘটিয়ে আজ একান্তভাবে শীতলকে আপন করে নিলো আরাভ।তাদের ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে নিজেদের বিলিয়ে দিলো একে অপরের মাঝে।

—–

রাতের আঁধারে শহর মুছে নতুন সূর্য উদয় হয়ে আলোকিত করেছে গোটা শহর গ্রাম কে।

সকালে হতে চোখ খুলে নিজেকে আরাভের বাহু ডোরে বন্দি পেলো শীতল।আরাভের সাথে লেপ্টে থাকা অবস্থায় পেয়ে শীতলের মুখ লজ্জা লাল হয়ে গেছে। ভালবাসার মানুষ টা কে নিজের করে পেয়ে খুব খুশী শীতল।

শীতল আরাভ দিকে মুগ্ধ নজরে তাকিয়ে আছে। আরাভ একটু নড়েচড়ে উঠায় ভয় পেয়ে বুকে কাপড় টেনে ঊঠে বসলো শীতল।আরাভ একটু নড়েচড়ে ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছে।শীতল মুচকি হেসে আরাভের কপালের সামনে আসা ছোট ছোট চুলগুলোকে নিজের হাতে সুন্দর করে গুজিয়ে দিয়ে গায়ে চাদর পেচিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে।

আজ তিশার বিয়ে🍁

গায়ে তার গহনা, লাল বেনারসি শাড়ি জড়ানো।তিশার গায়ের পোশাক,গহনা অর্নব বাড়ি থেকে এসেছে।

সবাই বলে, একটি মেয়েকে বধূসাজেই সব থেকে বেশি সুন্দর লাগে।সে খাটো হোক কিংবা লম্বা।বিয়ের সাজেই নাকি নারী পরিপূর্ণতা পায়।কিন্তু তিশা আতো কি পরিপূর্ণতা পেয়েছে।তিশা মুখটা কালো আধারে ছায়া ঘেরা।ভালোবাসা মানুষ টা পাশে নেই। বর সাজে যেখানে আর্দশ থাকার কথা সেখানে অর্নব রয়েছে। কিছুখন আগেই জানতে পারলো।বর সাজে অর্নব এসে উপস্থিত হয়েছে।নিচে বিয়ের কলমা পাঠ কবুল কাজ অলরেডি শুরু হয়ে গেছে।সেটা তাকে জানিয়ে গেলো খালারা। বিয়ের কনে তার রুমে বসে।কাজি সাহেব তার কাজ শেষ করে তিশার রুমে পৌছালো।বাড়ির আদুরে দুলালি আজ কবুল বলে অন্য কারো হবে।মা, বাবা রাজ কন্যা নিজের পুরোনো বাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়িতে পা দিবে।সব কষ্ট বুকের মধ্যে চাপা দিয়ে এক বুক কষ্ট নিয়ে কবুল বলতে গিয়ে শরীরটা কেঁপে উঠলো। আজ এই কবুল বলে সে হয়ে যাবে কারো বাড়ির পুএ বঁধু কারো ঘরের বউ!এই কবুল আজ বলে আর্দশকে হারাবে সারাজীবনের জন্য।কবুল মাধ্যমে অন্য কারো হয়ে যাওয়া!কি করবে তিশা?নিজের সাথে এক প্রকার লড়াই চলছে।তবু যে আজ তিশাকে কবুল বলতে হবে।

তিশার বুকটা ফেটে যাচ্ছে!মুখ দিয়ে কবুল শব্দটি বলতে গিয়ে,বারবার থেমে যাচ্ছে।কস্ট হচ্ছে বিষণ কষ্ট হচ্ছে।নিজের অনুভূতির সময় একটি মেয়েই জানে তারা কেমন খারাপ লাগা শুরু হয়।তবু সব ভালো লাগা খারাপ লাগা কে পিছনে ফেলে। মা, বাবা কথা মনে করে চোখ বুঁজে কবুল বলে দিলো।তিনবার কবুল বলার পর সবার মুখ থেকে শুনা গেলো আলহামদুলিল্লাহ। আজ থেকে তোমরা স্বামী,স্ত্রী হলে।পবিত্র বন্ধন অটুট থাকুক আমিন।তিশার কাছে সবার কথা কেমন যেনো বিষের মতো লাগল।আঁখিজোড়া তার এখনও বন্ধ।
চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে।

শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়েই গেলো।তিশার আর আর্দশ ভালোবাসা অসমাপ্ত রয়ে গেলো সারাজীবনের জন্য।বাঁধা পরল নতুন সম্পর্কে এক নতুন রঙিন সুতোয়।

অপরদিকে, আরাভ শীতল ঘুরতে বেড় হয়েছে।তারা এখন বর্তমানে আছে।১৮০০ফুট উঁচু একটা পাহাড়ে।আর এই পাহাড়ে দাঁড়িয়ে শীতের রাতে কুয়াশায় আচ্ছন্ন এক নতুন ধরণী চোখে পড়বে।আবার রাত শেষে,সূর্যের সোনালী রংয়ে মোড়ানো সবুজ পাহাড়,যেনো এই রং পুরো পাহাড়কে সোনায় মুড়িয়ে রাখে।এই উঁচু পাহাড়ে দাঁড়িয়ে থাকলে কিছুক্ষণ ,হঠাৎ আসা মৌসুমি হাওয়া মাখিয়ে দিয়ে যাবে সর্ব তনুতে।আবার বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা নামতেই নৈর্সগিক নিরবতা বিরাজ করে পাহাড়ের চারপাশে।প্রকৃতির অপরুপ লীলাভূমি দেখতে চাইলে,সাজেক এসে একবার হলেও ঘুরে যাওয়া যায়।

সাজেক ভ্যালি রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত। এটি মিজোরাম সীমান্তের উত্তরে অবস্থিত সর্ববৃহৎ একটি ইউনিয়ন। এর আয়তন প্রায় ৭০২ বর্গকিলোমিটার। সাজেক ভ্যালির উত্তর-দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা ও লংগদু এবং পূর্ব-পশ্চিমে ভারতের মিজোরাম ও খাগড়াছড়ি অবস্থিত। রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা হয়ে সাজেক ভ্যালি পৌঁছাতে হয়। তবে রাঙ্গামাটি হয়ে যেতে চাইলে নৌপথে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে কাপ্তাই হয়ে হাঁটাপথে সাজেক পৌঁছাতে হবে।
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা হয়ে সাজেক যেতে চাইলে এর দূরত্ব হবে ৪৫-৫০ কিলোমিটার।

১৮০০ফুট উঁচু একটা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে যখন আরাভ ওহি দিনের না বলা কথাগুলো বলার জন্য শীতলের দিকে ঘুরে তাকালো। তখনি একটা বুলেট এসে লাগে আরাভ ঠিক বুকের বা পাশটাতে।গুলিটা কে করেছে দেখা’র জন্য সামনে তাকাতেই চমকে গেলো।আরাভ মুখ দিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বল,শীতল তুমি আমামমম….বাকি কথাগুলো বলার আগেই আবার একটা গুলি বর্ষণ করে একই জায়গায় শীতল।আরাভ মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না। নিজের ভালোবাসার মানুষটার এমন বিহেভিয়ার কারণটা মানতে পারছে না। কাল পর্যন্ত যে মেয়েটা তাকে আপন করার জন্য পাগল ছিল।সে কিনা আজ এতটা বদলে গেলো। কিন্তু কেনো?কি দোষে এত বড় শাস্তি দিলো শীতল?কি অপরাধ ছিলো আরাভের?আরাভ টলমল চোখে তাকিয়ে স্পষ্ট দেখতে পেলো শীতল চোখে পানি নয়।এক বুক ঘৃনার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!শীতল কে কিছু বলার আগেই দূর থেকে আরেকটা নিশানা লাগলো আরাভের বুকে।আরাভ নিজেকে আর সামলাতে পারলো না ঢলে পড়লো পাহাড়ে মাটির ওপর। নিভু নিভু চোখে যখন তাকালো তখন দেখতে পেলো আরমান মির্জা, জগৎ রায় সাথে সেই মুখোশ পরে থাকা অজানা শএু।তৃতীয় গুলিটা জগৎ রায় করেছে আরাভের বুকে।

-; কি মিষ্টার ইয়াংম্যান কেমন লাগছে? বলেছিলাম না।তোমাকে হঠাৎ বেস্ট সারপ্রাইজ দিয়ে চমকে দিবো।তা কেমন লাগছে? নিশ্চয় শান্তি লাগছে একটু পর তো তুমি সারাজীবন জন্য ঘুমাবে এই ধরিনীর বুকে।সো গুড বায়।ওপারে ভালো থেকো।

-;চল মামনি আমাদের কাজ শেষ।বাকিটা আমাদের লোকই করে দিবে।জগৎ রায় কে চোখের ইশারা আরমান মির্জা কিছু বলে বাকাঁ হেসে শীতলকে নিয়ে চলে যেতে নিলে আরাভ শীতল হাত ধরে বলো,

-;প্লিজ ওদের সাথে যে ওহ না শীতল। সামনে বিপদ অপেক্ষা করছে।আমার কথা শুনো প্লিজ। আরমান মির্জা আরাভের বুকে লাদি মারলো।আরাভ ছিটকে পড়লো অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে কারণে শরীর দূর্বল হয়ে পড়েছে।আরমান মির্জা আরাভের হাত থেকে শীতল হাত ছুটিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে।শীতল একটিবারও ফিরে তাকাইনি।

হঠাৎ আরাভ বলে উঠলোও,

ঝরা ফুলের পাপড়ি কিছু ভালোবাসা
জীবন টাকে রঙ্গীন করে দেয়।
কিছু ভালোবাসা জীবনের সব ভালোবাসা কেড়ে নেয়|
কিছু স্বপ্ন দু ঠোটে হাসি ফোটায়
আর কিছু স্বপ্ন দু চোখে অশ্রু ঝড়ায়|
স্বপ্নের বাস্তবতা বহুদুর!
কিছু ভুল জীবনের সব ভুল গুলো শুধ রিয়ে দেয়
আর কিছু ভুল জীবনে চলার পথটাকে নষ্ট করে দেয়।

তোমাকে ভালোবেসে আমি করেনি তো কোনো ভুল?আজ কি কারণে ভুল বুঝে তুমি আঘাত করলে জানি না?তবে যেই দিন তোমার ভুল ভাঙ্গবে।সেই দিন বড্ড দেড়ি হয়ে যাবে শীতল।তখন আমি নাই এই দুনিয়ায়তে।

আরমান মির্জা সঙ্গে চলে গেছে শীতল।আরাভ তাকিয়ে আছে দূর দিগন্তে পথে নিজের আপন মানুষটাকে শেষ দেখার জন্য।কিন্তু সেটা হলো না।জগৎ রায় লবনাক্ত চাবুক দিয়ে আঘাত করছে একে পর এক আরাভের শরীরে।

আরাভ মা বলে গনবিদারিত চিতকার করছে।তাতে জগৎ রায় মনে আরাভ জন্য মায়া কাজ না করলেও আরাভ চিতকারে শান্তি পাচ্ছে বেশ।এক একটা চিতকাত কলিজা কাপিঁয়ে দিচ্ছে। আরাভ কে রক্তাক্ত করে জগৎ রায় তৃপ্তি পাচ্ছে। তৃতীয় ব্যাক্তি আরাভের কোনো সারা শব্দ না পেয়ে পা দিয়ে সোজা করে দেখলো আরাভ নিশ্বাস নিচ্ছে না।হয়তো চাবুক আঘাত সয্য করতে না পেরে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে। জগৎ রায় আর তৃতীয় জন আরাভের লাশটা সেই উঁচু পাহাড় থেকে খাদে ফেলে দিলো।এবার তাদের কাজে কেউ বাঁধা দেওয়ার মতো নেই।নিজের কার্যসিদ্ধি হাসিল করতে পারবে।এই রাজ্যের King_in_the_city_of_Mafia আরাভের জায়গা এখন তারা দখল করে পাপাচার অনাচার শুরু করবে।তাদের পথে কাটাঁ উপরে ফেলেছে।জগৎ রায় তৃতীয় ব্যাক্তির সাথে হাত মিলিয়ে চলে গেলো রাজ্য কায়েম করতে।

(সমাপ্ত)

১ম খন্ড শেষ করা হয়েছে।২য় খন্ড নিয়ে ফিরব পরে। একটু দেড়ি হবে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে আসবো এবার। King_in_the_city_of_Mafia.তে কি হয় দেখতে থাকুন।সব রহস্য জট ২য় খন্ডে প্রকাশ করা হবে।

ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here