King_in_the_city_of_Mafia পর্ব ২২

King_in_the_city_of_Mafia
#Yanur_Akter_Eanya
#Part-22
আরাভ এলিজা গ্লোবাল নিয়ে নিজের গাড়িতে উঠে পড়লো।শীতল জ্বলজ্বলে চোখে আরাভের যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো।বুকটা থেকে থেকে কেঁপে উঠছে শীতল বুকটা কেনো এত ব্যাথা করছে কিসের টানে।

ড্রাইভার শীতল কে বলল ম্যাডাম যাবেন না?ড্রাইভারের কথায় শীতল ঘোর কাঁটলো।আরাভের দিকে আরেকবার তাকিয়ে শীতল গাড়িতে ঢুকে বসলো।শীতল ঘরে পৌছে প্যাকেট গুলো নিয়ে দৌড়ে রুমে চল গেলো। দরজা বন্ধ করে বিছানায় প্যাকেটগুলো ছুড়ে মেরে দরজা সাথে পিঠ ঠেকিয়ে কেঁদে উঠলো শীতল।আরাভ বাহুতে কেনো ওহি মেয়ে থাকবে কেনো?কেনো?

ভালোবাসা মানুষটা পাশে অন্য কাউকে দেখে মেনে নিতে পারছে না শীতল। কি করে বোঝাবে আরাভ কে অন্য কারো সাথে সয্য হয় না।কেনো বুকটা মরুভূমির বালির মতো খাঁ খাঁ করছে এটা কিসের দহন?

দুজন মানুষের হৃদয়কে জোর খাটিয়ে যেমন এক করা যায় না তেমন আলাদা করাও যায় না। এর অনেক বড় উদাহরণ কিন্তু শীতল আর আরাভ। জোর করে যেমন ভালোবাসা তৈরি করা যায় না তেমনি জোর করে ভালোবাসা নিঃশ্বেষও করা যায় না। তাই ওদের কে ওদের হাল পরিস্থিতির ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।

যদি ভালোবাসা থাকে তাহলে দুইজন মিলন হবে। আর যদি ভালোবাসা না থাকে তাহলে দুইজন দুই নদীর অসংখ্য ঢেউ স্রোতে হারাবে।

-;আরাভ এলিজা কে নিয়ে অনেকটা দূরে চলে এসেছে।গাড়ি থামিয়ে এলিজা কে টেনে বের করলো।

এলিজা কোনো কথা না শুনেই দুই গালে থাপ্পড় লাগিয়ে দিল।গলায় টিপে গাড়ির সাথে লাগিয়ে দাঁত কটমট করে বলে উঠলোও,

-;তোর বিন্দু মাএ লজ্জা নেই না।এতবার বলার পর তুই সেই একি ভুল আবার করলি?মরা জন্য তোর ডানা গজিয়েছে।মরার এত শখ হয়েছে।তোকে একদম প্রাণে মেরে দিবো।তোকে মেরে যদি জ্যান্ত কবর না দিয়েছি তো আমার নাম আরাভ খান না।

—–

শীতল ক্লাশে বসে আছে।আজ কাল আরাভ ওকে ইগনোর করে।ভীষন খারাপ লাগে মন বিষন্নতা ভরে উঠে।লোকটা এমন কেন?শীতল কে নাকি আরাভ ভালোবাসে তাহলে হঠাৎ কেনো বদলে গেলো?তার এই বদলে যাওয়া শীতল মানতে পারছে না।

আর ঐ মেয়েকে কি জেনো নাম এলিজা না কেলিজা।তাকে ডার্লিং বেবি বলল। কাঁদতে মন চাইছে শীতলের।কাল রাতে একটু ও ঘুম হয়নি ওর।চোখজোড়া কাঁদো কাঁদো হয়ে আসে শীতলের।ক্লাশ শেষে বেরিয়ে আসে শীতল।
সোজা বাসার পথে রওনা হয়। বাসায় এসে শান্তি পাচ্ছে না লোকটা ওর সাথে কথা বলে না।আচ্ছা শীতল না হয় তাকে পছন্দ করে না। কিন্তু লোকটা শীতল কে পছন্দ করে। আর পাগলের মতো ভালোবাসতো তাহলে হঠাৎ বদলে গেলো কেনো?আগের মতো আদর করে কাছে ডাকে না।
কাদঁতে কাদঁতে বিছানায় সুয়ে পড়ে।

রেস্টটুরেন্ট এসেছে শীতল আর তার বন্ধুগন।মন খারাপ কাটাঁনো জন্য মূলত এখানে আসা।কিন্তু এখানে এসে আরেক জটকা গেলো।শীতল থেকে একটু দূরে আরাভ এলিজা সাথে বসে একই টেবিলে খাবার খাচ্ছে।আর একে অপরের চোখে ভালোবাসার আদান- প্রদান করছে।শীতল আরাভ আর এলিজা দিকে তাকিয়ে নিজেদের বসার টেবিলের নিচে ঢুকে যায়।শীতল টেবিল তলা থেকে মাথা বের করে ডেবডেব করে তাকিয়ে থাকে ওদের প্রানে।ঘরে বউ রেখে এসব করছে আরাভ।শীতল টেবিল থেকে বের হয়ে আরাভের দিকে এগোতে যাবে তখনই এলিজা আরাভকে জড়িয়ে ওর গালে চুমু দিলো।শীতলের চোখ ভিজে গেলো।শীতল এই অবস্থা দেখে বন্ধুরা সবাই মিটমিটিয়ে হেসে উঠল।আর দিপু হাসি থামিয়ে গলা ফাটিয়ে গান ধরলো।

বন্ধু যখন বৌ লইয়া
আমার বাড়ির সামনে দিয়া
রঙ্গ কইরা হাঁইটা যায় ফাঁইটা যায়
বুকটা ফাঁইটা যায়।

কাঁদো কন্ঠে শীতল সবার দিকে তাকিয়ে দেখে সবাই হাসছে।দিপু গান শুনে হাসি রোলটা বেশি পড়ে যার কারণে দিপু ওপরে রেগে উওম মাওম মারতে শুরু করে শীতল।শীতল নিজের রাগ কমাতে না পেড়ে মাথা চুল টান দিয়ে ছিড়ার প্রতিযোগিতা নামে।

-;আআআআঅাঅা!

হঠাৎ কারো চিতকারে চোখ মেলে শীতল তাকিয়ে দেখে বিছানা শুয়ে আরাভের মাথার চুল ছিঁড়ছে।
সাথে সাথে চুল ছেড়ে দেয়।তার মানে শীতল এতখন স্বপ্ন দেখছিলো।আর স্বপ্নে দিপু মনে করে যার চুল টানছিল সে আর কেউ নয় বরং আরাভ।

-;কে বলেছিল আমাকে এমন জল্লাদ মেয়ে কে বিয়ে করতে?আমার মাথাটা বোধ আর নেই এতখন মনে হয় পটল তুলছে।

শীতল আরাভ দিকে বিস্ময় চোখে তাকিয়ে আছে।
আরাভ রাগী চোখে তাকিয়ে বলো! কি হচ্ছে এসব?দেখো কি করেছে তুমি আমার চুল কে পটল তুলতে পাঠালে।উফফ তুমি কি এখন আমাকে শান্তি মতো ঘুমাতে দিবে না।শীতলের কোনো কথা না শুনে আরাভ শীতল কে ইগনোর করে সোফায় শুয়ে পড়লো।

আরাভ বিছানা থেকে উঠে সোফায় শুয়ে পড়তে দেখে নিঃশব্দে কাঁদতে থাকে শীতল।এভাবে বেশ কয়েকটাদিন চলে গেলো।আরাভ শীতল কে সামনে রেখেই দিন রাত এলিজা সাথে ফোনে প্রেম আলাপন করতো।শীতল চুপচাপ মন খারাপ করে বসে থাকতো।ওকে আরাভের ভালো লাগবে নাকি?ভালো লাগবে এলিজা গ্লোবাল মতো মিনি স্কার্ট পড়া মেয়েদের।সেদিন আরাভের নম্বরে কল করতেই কল রিসিভ করে।

-;হ্যালো আসসালামু আলাইকুম অপরপাশ থেকে কেউ বলল।

-;ওয়ালাইকুম আসসালাম।আপনি কে বলছেন?জিজ্ঞেস করে শীতল।

-যাকে কল দিলেন তিনি আমার বস।বলে উঠে অপরপাশ।

-ওহ আচ্ছা। ওনি কই আই মিন আপনাদের আরাভ স্যার কই??জিজ্ঞেস করে শীতল।

-বস তো এলিজা সাথে অফিস রুমে কি জানি করে।দরজা বন্ধ।বলে উঠে অপরপাশ।

-দরজা বন্ধ করে?কিছুটা অবাক হয় শীতল।আপনাদের স্যার কে ফোনটা দিন।বলুন শীতল কল করেছে।

-কি বলেন এসব ম্যাডাম?স্যার আমাকে দেখলে রেগে যাবে।ভিতর ঢুকার পারমিশন নেই।ভিতরে কি না কি দেখতে হবে।আর স্যার ডিস্টার্বড হলে বকা দিবে।এমন কি আমার চাকরিটা চলে যেতে পারে।পরে কল দিয়ে স্যার সাথে কথা বলে নিবেন। কল কেঁটে দিলো অপরপাশ থেকে।

শীতল ফোন সামনে এনে মুখে হাত চেঁপে কেঁদে দিলো।এত কষ্ট কেনো দিচ্ছেন আরাভ?কি করেছি আমি?আপনার এই ইগনোর আমাকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না।প্লিজ ফিরে আসুন না আগের আরাভ হয়ে। আমার আপনাকে আগে মতো দেখতে বড্ড ইচ্ছে করে।

🍁🍁🍁🍁

-; চোখের পানি মুছে শীতল সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাগ, অভিমান, অভিযোগের ঝামেলা চুকিয়ে এবার সংসারে মন দেবে। ভালোবেসে আপন করে নেবে এই ঘর সংসার এবং সংসারের মানুষটাকেও।

.
রাত দশটা ডিনার শেষে বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসে ফোনে গেমস খেলছে আরাভ। তখন বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো শীতল। আড়চোখে শীতল কে দেখামাত্রই চোখ কপালে ওঠে গেলো আরাভের৷ এটারই ভয় পাচ্ছিলো সে। সারাদিনের পরিস্থিতিতে যতোটা পারে ধারণা করে নিয়েছিলো৷ এবার একদম সিওর হয়ে গেলো। কিন্তু এমন করলে তার সব প্ল্যান যে ভেস্তে যাবে।

নিঃশ্বাস ভারি হয়ে গেলো আরাভের চোখ বন্ধ করে কয়েকদফা শ্বাস ছেড়ে। ফোন অফ করে চুপচাপ চোখ বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পড়লো। কিছু সময়ের ব্যবধানে লাল শর্ট মিনি স্কার্ট পরিহিতা মেয়েটা লাইট অফ করে ড্রিম লাইট অন করে আরাভের পাশে গিয়ে বসলো শীতল।আরাভের কাঁধে আলতো হাত ছুঁইয়ে “আরাভ” বলে ডাকতেই আরাভ চোখ বুজে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো

,

-;ঘুমিয়ে পড়ো শীতল।

শীতল প্রচন্ড অস্থির হয়ে আরাভ কে তার দিকে ফেরালো৷ ড্রিম লাইটের আলোতে আবেদনময়ী লাগছে আরাভের মায়াবিনী কে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে আরাভ।

সেই সাথে শীতল প্রতিটি ঘন নিঃশ্বাসের তীব্র আঘাত পড়ছে আরাভ মুখের ওপর। প্রচন্ড অস্থিরতার সঙ্গে ওঠে বসলো আরাভ। সে সুযোগে শীতলও তার দিকে এগিয়ে এসে চোখ বন্ধ করে আরাভ বুকে মাথা গুঁজে এক নিঃশ্বাসে বললো,

-;আমি আপনাকে আজ খুব গভীরতমভাবে চাইছি আরাভ। আপনি আমায় ফেরাতে পারবে না।আমি আজ আপনাকে আপন করে পেতে যাই। একসেপ্ট করে নিবেন তো আমায়। জোড় করে এতদিন ভালোবেসে ছোট ছোট আদরে ভরিয়ে দিতেন।আর এখন আমার দিকে ফিরেও তাকান না।আপনি তো বলতেন আমাকে নাকি খুব ভালোবাসেন।এই আপনার ভালোবাসা।এখন আমাকে আগের মতো সময় দেন না।আগের মতো কাছে টেনে নেন না।আমাকে এখন আর ভালো লাগে না।আমি অপেক্ষা থাকি আপনি সেই আগের মতো এসে জোড় করে আমাকে আপনার কাছে টেনে নিবেন ভরিয়ে দিবেন আপনার ভালোবাসায়।

কথাটি বলেই মাথা তুলে আবেশে আচ্ছন্ন চোখ তে তাকিয়ে এগিয়ে গিয়ে আরাভের কপালে চুমু খেলো।এই প্রথম নিজে থেকে আরাভ কাছে এসেছে শীতল।আজ নিজের স্বামীর কাছে নিজেকে স্বপে দিতে এসেছে।

আরাভ মুখ ফুটে কিছু বলতে নিলেই শীতল শাহাদাৎ এক আঙুলে মাধ্যমে আরাভ ওষ্ঠজোড়া চেপে ধরে সে অবস্থায়ই নিজ ওষ্ঠ দিয়ে ছুয়ে দিলো শাহাদাৎ আঙুলে চাপা ওষ্ঠদ্বয়ে।

চলবে…..

😞কি করবো পর্ব তো থামচ্ছে না পর্বগুলো বেড়ে যাচ্ছে।কেউ একটু বকা দেওয় আমায়।লাস্ট পাঠ লিখতে বসে আবার কেটে এখন একটা পোস্ট দিলাম।
পর্বগুলো আরেকটু বেড়ে গেলো।এরজন্য রেগে গেছো সবাই। দুইদিন ধরে লাস্ট পাঠের কথা বলে লাস্ট পাঠ দিচ্ছি না।
যার পেটে যা আছে মুখ দিয়ে তা বের করে বলে দিতে পারো।মাইন্ড করবো না😔।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here