King_in_the_city_of_Mafia পর্ব ২১

King_in_the_city_of_Mafia
#Yanur_Akter_Eanya
#Part -21
নিজেকে সামলে দরজা খুলতে তিশা মা কান্না ভেঙে পড়লেন।

-;তিশা.. তিশা জলতি চল।তোর বাবা যেনো কেমন করছে?
-;মায়ের কথায় ভয় পেয়ে যায় তিশা। আর এক মিনিট দাঁড়িয়ে না থেকে মায়ের ঘরে দৌড়ে যায়।বাবা অবস্থা খারাপ দেখে আর সময় নষ্ট না করে হাসাপাতালে জন্য বেড়িয়ে পড়ে।হাসাপাতালে বাহিরে মা কান্না ভেঙে পড়েছে।তিশা ভয় পাচ্ছে বাবার কিছু হবে না তো।

কাঁপাকাপা হাতে ফোন বের করে দিপুকে সবটা জানায় এবং হাসাপাতালে আসতে বলে।দিপু আর কোনো সময় ব্যয় না করে রওনা হয় হাসপাতালে উদ্দেশ্য।

২দিন পর..সকল টেস্ট রিপোর্ট আর এক্সরে গুলো ভালো মতো পর্যবেক্ষন করে ডক্টর জানালো
ওনার হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে।

মা, দিপু তিশা শকট হলো হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে।

তিশা ধুপ করে ফ্লোরে বসে পড়লো।নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। কোথাও না কোথাও এই সমস্যা জন্য নিজেও দায়ি। আজ বাবা এই পরিস্থিতি শুধু মাএ তিশার জন্য সেটা তিশা মানতে পারছে না।
যদি বাবার কিছু হয়ে যায় তাহলে নিজেকে কখনো মাফ করতে পারবে না।

ডক্টর আরো জানালো ইমেডিয়েটলি রিং পরাতে হবে।না হলে সব কিছু হাতের বাহিরে চলে গেলে কিছুই করার থাকবে না তাদের।

তিশা ডক্টর কে যতদ্রুত সম্ভব অপারেশন শুরু করতে বলো।বাবা কে নিয়ে আর কোনো রিক্রস নিতে চায় না।

—-আরাভ সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে চারদিন পর বাংলাদেশে ফিরে যাবে।আরহাম জ্ঞান ফিরেছে এখন কিছুটা সুস্থ।নীলিমা আরহাম কে সাথে নিয়েই বাংলাদেশে পৌঁছে যাবে আরাভ।

কয়েক দিন পর……

তিশার বাবা অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। তাকে কেবিনে দেওয়া হয়েছে।তিশার মা আতিকা তালুকদার বসে আছে। তিশার বাবা জনাব তৌহিদ তালুকদার কাছে।

তিশা কে কেবিন আসতে দেখে তৌহিদ তালুকদার মলিন হাসলেন।বাবার এমন হাসির কারণ বুঝতে পারে তিশা।চোখের পানি মুছে মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে বাবার হাতটা ধরে পাশে বসে পড়লো।লেখনীতি ইয়ানুর আক্তার ইনায়া।

-;এখন কেমন লাগছে বাবা?

-;ভালো লাগছে কিছুটা মা।

-;সামনে আরো ভালো লাগবে বাবা।তুমি একবার সুস্থ হয়ে উঠ।তারপরে আমাদের বাড়িতে আমরা ফিরে যাবো।

-;তিশা বাবার চোখের কোনে পানি সেটা কেনো তিশা বুঝে।তিশা একটা ছোট নিশ্বাস ফেলে বলতে শুরু করলো।
বাবা নামের বটগাছের ছায়াটা আমাদের মাথার ওপর আছে বলে আমরা ভালো আছি।বাবা নামের বটগাছ না থাকলে যে আমরা সন্তানরা বেঁচে থেকে অনা আদরের অবহেলা মরে যেতাম।

****

ডোন্ট ওয়ারি বাবা।এবার তুমি আমার এবং আমাদের লাইফে দ্বিতীয়বার ফিরে এসেছ।সেটা আমি কিছুতে আর হারাতে চাই না।তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তোমরা যা বলবে আমি তাই শুনবো।তোমাদের সুখেই আমার সুখ।তোমরা যার সাথে আমার বিয়ে দিতে চাও।তার সাথে আমি বিয়ে করবো।এবার আর না হবে সেটা হ্যা হবে।
শুধু মাএ তুমি সুস্থ হয়ে নেওয়। প্রমিজ তোমাদের কথা অবাধ্য তোমাদের মেয়ে আর হবে না।
তিশা কথাগুলো বলে আর এক মুহূর্তে জন্য দাঁড়াল না।ভাইয়ের ওপর মা বাবা দায়িত্ব দিয়ে বের হয়ে আসে অন্ধকার রাতে রাস্তায়।কি করবে তিশা নিজের সুখের জন্য বাবা মাকে আর কষ্ট দিতে পারছিলো না।তাই তো নিজের সুখ কে কবর দিয়ে দিলো।আদর্শ কে নিজের করে হয়তো এই জম্মে পাওয়া হলো না।লেখনীতে ইয়ানুর আক্তার ইনায়া। তিশা আর আর্দশ ভালোবাসা এখানে অসমাপ্ত থেকে গেলো চিরকাল মতো।

—তিন দিন পর বাংলাদেশে এসে পৌছালো আরাভ,আরহাম,নীলিমা।গাড়িতে বসে আরাভ ভাবছে তার মায়াবিনী কথা। কেমন আছে তার মায়াবিনী? কতদিন কথা হয় না দুইজন তো অনেকটা দূরে সরে ছিলো।কিন্তু এখন সামনাসামনি দেখা হবে।ভাবতেই মুখে হাসি ফুটে আরাভের।

খান মেনশনে ঠিক টাইমে এসে পৌছালো আরাভ, আরহাম,নীলিমা। শীতল দৌড়ে সিড়ি বেয়ে নেমে আসলো। আরাভ সাথে নিজের ভাই পাশে একটা মেয়েকে দেখে কপাল কুঁচকে এলো। এই মেয়েটা আবার কে?আরাভের কি হয়?গালফ্রেন্ড নয়তো।নানা কথায় মাথা আসছে শীতলে সেইসব কথা বাদ দিয়ে এগিয়ে এলো আরহাম কে জড়িয়ে ধরলো।আরাভ চেয়ে আছে।বউ ভাইকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। আর পাশে বেচারা স্বামী রয়েছে সেই দিকে হুস নেই।আরাভ মুখ ঘুড়িয়ে সোজা নিজের রুমে চলে গেলোও। ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে ঢুকার আগে চিল্লিয়ে বল তার কফি যেনো ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে হাতের কাছে পায়।আরাভ এমন কান্ডে শীতল মুখ টিপে হেসে উঠল।

শীতল আরহাম সাথে কথা বলে জানতে পারল নীলিমা তার ভাইয়ের বউ।ওদের রুমে দিয়ে এসে নিজের হাতে কফি নিয়ে ওপরে সিড়ি বেয়ে নিজের রুমে এসে খাটে পা জুলিয়ে বসলো।

ওয়াশরুম থেকে পানি পড়ার শব্দ পাচ্ছে শীতল।
আরাভ ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখল তার মায়াবিনী তার জন্য অপেক্ষা করছে।আরাভ শীতল কে ইগনোর করে কফিটা কাপে চুমুক দিলো।কফিটা মুখে দিতেই প্রশান্তি ফিরে এলো। সত্যি তার অর্ধাঙ্গিনী হাতে জাদু আছে। মানতেই হবে বউ তার কফিটা অসাধারণ বানায়।

কফিটা শেষ করে নিজেকে রেডি করে বের হতে নিলে কিছু একটা মনে করে।সামনে ফিরে শীতল কে বল। আজ রাতে রেডি হয়ে থাকতে কোথাও যাবে।

—দিন আলোয় সরে গিয়ে রাতের তারায় সিগ্ধ করছে মায়াবিনী মুখ।গায়ে তার কালো শাড়ি। নাকে,গলায়,হাতে সাদা পাথর তৈরি অলঙ্কার। সৌন্দর্য যেনো আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরাভ মুগ্ধ চোখে দেখে যাচ্ছে অর্ধাঙ্গিনী কে।শীতল গাল ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে ওর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল তেমায় দারুণ লাগছে।শীতল এবার কিছুটা লজ্জা পেয়ে মাথা নোয়ায়।শীতলকে পাশে সিটে বসিয়ে নিজেও পাশের সিটে বসে পড়লো।শীতল অভিমান সরে গিয়ে একরাশ লজ্জা ভর করেছে ওর চোখের পাতায়।আরাভ গাড়ি ড্রাইভ করছে আর শীতল কে দেখছে আড়চোখে।গালদুটো এতেটাই লাল হয়ে আছে যে গোলাপ ফুল ও ইর্ষান্বিত হবে।

গাড়ি থামলো বসুন্ধরা একটা শপিংমলের সামনে।শীতল নিয়ে শপিং মলে ঢুকে গেলো আরাভ।শীতল জন্য কিছু গাউন স্যালোয়ার কামিজ টপস, কিছু গয়না আর চকলেট কিনে দিলো।শীতল নাকচ করলে তা শুনতে নারাজ আরাভ।শপিং শেষ করে দুইজন ডিনারে জন্য একটা রেস্টটুরেন্ট এলো।রেস্টুটুরেন্টটা দারুণ এখানে সব ধরনের খাবার আইটেম পাওয়া যায়।সবচেয়ে সুস্বাদু চা তৈরি হয় এখানে।এটা চা পাগল যারা তাদের জন্য খুব পছন্দের জায়গায়।বিভিন্ন চা তৈরি হয় এখানে।রেস্টুরেন্ট নাম রাখা হয়েছে “মাটির বাড় চা”!চা জন্য এটা স্পেশাল জায়গায়।চা দিয়ে আজকাল প্রপোজ করলে মন্দ হবে না।অবশ্য চা খাওয়া বাঙালিদের কথাই নেই।চা পাগলি যারা তারা অনায়াসে এখানে আসতে রাজি হবে।দুজন হালকা খাওয়া দাওয়া করে বের হতেই শীতল সামনেই সর্ট স্কার্ট আর টপস পরিহিত এক মেয়ে আরাভকে এসে জড়িয়ে ধরলো।

শীতল চমকে উঠে।এটাতো সেই মেয়েটা যার সাথে আরাভ কনিষ্ঠ মুহূর্তে কিছু দৃশ্য ওর হাতে এসে ছিলো।

-;আরাভ বেবি কেমন আছো তুমি?কই ছিলে এতোদিন?ন্যাকা কান্না করে বলল এলিজা গ্লোবাল।

-;আরাভ চমকে গিয়ে শীতলের দিকে তাকায়।শীতল নাক ফুঁলিয়ে এলিজা গ্লোবাল আর আরাভ কে দেখছে।

আরাভ শীতলের নাক মুখ কুঁচকে যেতে দেখে বুঝতে পারলো তার বিবিজান রেগে যাচ্ছে । সেই রাগে ঘি টালতে আরেকটু রাগিয়ে দিলো।

-;ওহ এলু ডার্লিং ভালো আছি আমি। তুমি কেমন আছো?

-;ভালো না।তুমি আমার সাথে আগের মতো কথাই বলো না। আমাকে সময় দেওয় না।।খুব কষ্ট হয়েছে আমার।ন্যাকা কান্না করে বলল এলিজা গ্লোবাল।

-;শয়তান মেয়ে তোকে তো আমি কাচাঁ চিবিয়ে খাবো।আমার বউ এর সামনে আমার ইজ্জতে ফালুদা করছি?((বেশ রেগে মনেমনে কথাগুলো বল।))

-;সরি বেবি আর হবেনা।বলে কাকে যেন কল দিলো আরাভ।

কিছুসময় পর আরাভের ড্রাইভার এলো।আরাভ এবার এলিজা গ্লোবাল কে ছেড়ে শীতল কে বলল তুমি আমার ড্রাইভারের সাথে চলে যাও।আমি ওকে আই মিন এলিজা গ্লোবাল মানে আমার এলু কে নিয়ে ঘুরতে যাবো।শীতল এবার কেঁদেই দিবে এমন একটা ভাব।লেখনীতে ইয়ানুর আক্তার ইনায়া।

আরাভ এলিজা গ্লোবাল নিয়ে নিজের গাড়িতে উঠে পড়লো।শীতল জ্বলজ্বলে চোখে আরাভের যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো।বুকটা থেকে থেকে কেঁপে উঠছে শীতল বুকটা কেনো এত ব্যাথা করছে কিসের টানে।

ড্রাইভার শীতল কে বলল ম্যাডাম যাবেন না?ড্রাইভারের কথায় শীতল ঘোর কাঁটলো।আরাভের দিকে আরেকবার তাকিয়ে শীতল গাড়িতে ঢুকে বসলো।শীতল ঘরে পৌছে প্যাকেট গুলো নিয়ে দৌড়ে রুমে চল গেলো। দরজা বন্ধ করে বিছানায় প্যাকেটগুলো ছুড়ে মেরে দরজা সাথে পিঠ ঠেকিয়ে কেঁদে উঠলো শীতল।আরাভ বাহুতে কেনো ওহি মেয়ে থাকবে কেনো?কেনো?

ভালোবাসা মানুষটা পাশে অন্য কাউকে দেখে মেনে নিতে পারছে না শীতল। কি করে বোঝাবে আরাভ কে অন্য কারো সাথে সয্য হয় না।কেনো বুকটা মরুভূমির বালির মতো খাঁ খাঁ করছে এটা কিসের দহন।

চলবে…

ভুলক্রটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই।

#King_in_the_city_of_Mafia
আরো দুটো পাঠ হবে। তাই তিনটা একসাথে না দিয়ে এখন একটা পাঠ দিলাম। বাকি দুটো একসাথে দিবো।যেহেতু লাস্ট মুহূর্তে আছি তাই লিখায় একটু টাইম নিয়ে গুজিয়ে লিখতে চাই।এরজন কেউ বক না প্লিজ। আর হ্যা লাস্ট পাঠে যেহেতু বলেছি ধামাকা হবে।সেটা সত্যি হবে।এখন লাস্ট পাঠ পরে আপনাদের কি রিয়াকশন কি হবে জানি না।তবে আমি যেমন ভেবেছি সেভাবেই লিখবো।আরেকটা কথা আমার গল্প প্রথম স্যাড এন্ডিং হলে ও পরে কিন্তু হ্যাপি এন্ডিং হয় তাই সবাই একটু থৈয্য নিয়ে পড়ুন।ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা করবো খারাপ টা নয়।

ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here