King_in_the_city_of_Mafia পর্ব ২৩+২৪

#King_in_the_city_of_Mafia
#Yanur_Akter_Eanya
#Part-23+24
আজ হাড়িয়েছি, কাল খুঁজবো,,
আজ পাইনি, কাল পাবো,
আজ হেরেছি, কাল জিতবো।
আমি আবার ফিরে আসবো,
ঠিক তোমার মনের মত।
শীতল ছাদে দুই হাত রেলিং ওপর দিয়ে আকাশ প্রানে তাকিয়ে আছে।বারবার সৃতিচারণ করছে সেই কাল রাতটার কথা।শীতল অধিকারে সাথে আরাভ কাছে গেলোও মেনে নেয়নি তাকে।বরং দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

-; আপনাকে খুব গভীরতমভাবে চাওয়াটা কি ভুল ছিল আরাভ।কেনো ফিরিয়ে দিলেন আমায়।আমি আপনাকে আপন করে পেতে চেয়ে ছিলাম।কিন্তু আপনি আমায় একসেপ্ট করেনি।
জোড় করে এতদিন ভালোবেসে ছোট ছোট আদরে ভরিয়ে দিতেন।আর এখন আমার দিকে ফিরেও তাকান না।

-;আরাভ আপনি তো আগে আমাকে খুব ভালোবাসতেন।কিন্তু এখন আপনি বদলে গেছেন। বদলে যাওয়ার কারণ টা কি ওই এলিজা গ্লোবাল নাকি এর পিছনে অন্য কিছু।
সময় সাথে সাথে ভালোবাসাটা কি পুরোনো হ’য়ে যায়।ভালোবাসা শুকনো পাতার ভাঁজে লুকিয়ে অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যায়।
আপনার ভালোবাসা না পাওয়ার আগুনে আমি জ্বলছি।দিন কে দিন বড্ড বেহায়া হয়ে পড়ছি।নিজের কাছে নিজেকে অসহায় লাগে।

আরাভ নিজেকে স্ট্রং রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।হাইওয়ে রাস্তায় নিজ গাড়ি ঢ্রেকির ওপর মাথা দিয়ে শুইয়ে আকাশ প্রানে তাকিয়ে আছে আরাভ।হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে চুইয়ে চুইয়ে।শীতল কে বাসায় রেখে আসার পর থেকে আরাভ এখানেই রয়েছে বাসায় যায়নি।আজ আকাশ প্রানে তাকিয়ে থেকেই ছোট নিঃশ্বাস ফেলে দম নিয়ে চোখ বুঁজার সাথে সাথে শীতলের আঁখি ভেজা নয়ন স্পষ্ট ফুটে উঠে।
মনে পড়ে যায় কাল রাতেই সেই মূহুতের কথা।
—-

শীতল উত্তপ্ত নিঃশ্বাসের প্রতিটি শব্দের আরাভ কে খায়েল করতে ব্যাকুল ছিল।শীতল আরাভ কে পাওয়ার জন্য এক মায়াজাল বুনে ছিলো।যা আরাভের শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।উন্মাদের মতো আরাভ কে পাওয়ার চেষ্টা করছে শীতল। কিন্তু আরাভের থেকে বিন্দু মাত্র সাড়া পাইনি শীতল৷ আরাভ বুকে মাথা রেখে ডুকরে কেঁদে উঠেছিল শীতল।শীতল চোখেরজল আরাভের বুকটাকে ক্ষত বিক্ষত বেশি করছিলো।প্রেয়সীকে আঘাত করতে চায়নি তবু আঘাত করেছিলো তাই থাকতে পারেনি আরাভ সেখানে থেকে চলে আসে।শীতল কাঁদতে কাঁদতে কখন ঘুমিয়ে গেছে জানা নেই।

“যখন অদ্যম যাওয়া ইচ্ছে অপূর্ণ থেকে যায় তখন মানুষের মধ্যে কষ্ট নামের শব্দ যোগ হয়।”

শীতলের মনেও যে কষ্টের পাহাড় জমেছে। সেটাতো শুধু আরাভের জন্য।আরাভের একটু সান্নিধ্যে পাওয়ার জন্য মেয়েটা জটপট করছে।যখন আরাভ কে নিজের করে পায়নি তখন ডুকরে কেঁদে স্বামীর বুকে আশ্রয় নেয়।

শীতলের বলা কথাগুলো ছিলো এমন,

-‘ আপনি কেন এমন করছেন আরাভ? কেন আমাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছেন? যখন আমি আপনাকে আমার জীবনে চাইনি তখন আপনি আমাকে জোড় করে কাছে নিয়ে এসেছেন।যখন আমি নিজে থেকে এসেছি আপনার কাছে ধরা দিতে তখন আপনি আমায় দূরে সরিয়ে দিচ্ছেন কেনো?এই খেলা কেনো খেলচ্ছেন আমার সাথে?আমি যে আর পারছি না। আপনার অবহেলা আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে আরাভ।লেখনীতে ইয়ানুর আক্তার ইনায়া।আর কতো দিন চলবে এইরকম বলবেন আমায়?প্লিজ আরাভ আজ আমাকে এভাবে ফিরিয়ে দিবেন না।আমি সত্যি নিজেকে আপনার রঙে রাঙাতে চাই।আমাদের সূচনা কি এখান থেকে শুরু হলে খুব কি ক্ষতি হবে।

একটা গাড় নিশ্বাস ছেড়ে আরাভ প্রশ্ন করে “ভালোবাস আমায়”।

তখনও শীতল অপলকভাবে তাকিয়ে ছিলো আরাভের প্রানে। শীতলের এই চুপ থাকায় আরাভ মুখে মুচকি হাসি ফুটে।আরাভ ভালো করে জানে শীতল তাকে ভালোবাসে না।দুইদিন অবহেলা এমন পাগলামি করছে।আরাভ যখন নিরবতা সাথে রাতের শহর কে দেখতে ব্যাস্ত ছিলো।তখন মিষ্টি একটা সুর কানে ভেসে আসে তার মায়াবিনী মুখ দিয়ে,

-;”ভালোবাসি” হুম ভালোবাসি আমি আমার স্বামী কে।

সেই মুধু মাখা চারটি শব্দ উচ্চারণ করেছে শীতল।হুম…ভালোবাসি.. শব্দটা বলেছে তার মায়াবিনী।আরাভ হ্রদয়ে মাতাল হাওয়া বয়ে গেলো।কানে বারবার প্রতিধব্বনি হতে লাগলো ভালোবাসি কথাটা।শীতলের একটা বলা শব্দ আরাভে কানে ঝংকার মতো শব্দ তুলেছে।আরাভ ওষ্ঠদ্বয়ে এক চিলতে হাসির দেখা মিলে।

শীতলে অধৈর্যতা আচরণে কারণে আজ আরাভ শীতলকে কি নামে আখ্যায়িত করবে জানা নেই। শীতল আরাভ কে ভালোবাসে এটা শুনতে যতটা ভালো লেগেছে।কিন্তু মনের মধ্যে বিষাদের ছায়া রয়ে গেছে।আরাভের এখন মনে হয়,শীতল আজ তাকে ভালোবেসে কাছে টানছে না।একটু অবহেলা পেতেই এমন আচরণ করছে মেয়েটা।কিন্তু এখন পরিস্থিতি সামলাবে কি করে আরাভ?আরাভের মনের সন্দেহ দূর করতে একটু টাইম দিতে চেয়ে ছিলো শীতলকে।কোনো তাড়াহুড়ো ছিলো না।তাই তো ঠান্ডা মাথায় ফিরিয়ে দিয়ে ছিলো নিজের বিবাহিত বধূ কে।

বিছানায় শুয়ে বুকে টেনে শীতলের মাথায় হাত বুলিয়ে আরাভ বলল,

তুমি বলছো তুমি আমাকে ভালোবাসো।আমাকে ভালোবেসে আমার সান্নিদ্য পেতে চাইছো।কিন্তু আমি যদি বলি আমার অবহেলা নিজের ইচ্ছে বিরুদ্ধে আমার সান্নিধ্যে পাওয়ার ব্যাকুলতা বায়না করছো?
স্বামী তার স্ত্রী কাছে যখন খুশি তখনই যেতে পারে।কিন্তু এতে স্ত্রী সহমত প্রয়োজন।দুইজন সহমতে মিলন হলে সেখানে ভালোবাসা বাড়ে।একজন সহমত নেই।আরেকজন জোড় করে কাছে টানলে ভালোবাসা নয় বিচ্ছেদের কারণ হয়।

আরাভ শীতল কে বিছানা রেখে উঠে লাইট অন করলো।আলোতে শীতলের দিকে চোখ পড়তেই চমকে গেলো আরাভ।শীতল চোখ দুটো কাদতে কাদতে লাল হয়ে গিয়েছে।পা থেকে মাথা অবদি অদ্ভুত ভাবে শিউরে ওঠলো তার। প্রচন্ড খারাপ লাগলো। সেই সাথে মায়াও কাজ করলো মেয়েটার জন্য। আরাভ এতটুকু বুঝতে পারছে মানসিক ভাবে হোক আর শারীরিক ভাবে হোক। মানুষ নিজের চাহিদাটুকু আদায় করার জন্য মরিয়া উঠলে তাকে সামলানোর সম্ভব হয় না।একজন স্ত্রী নিজে থেকে স্বামীকে টানছে একটু সান্নিধ্যে জন্য।যখন স্বামীর থেকে স্ত্রী রেসপন্স না পায় তখন স্ত্রী ছটপট করে মরণ জন্তনা বাড়ে।আজ সেই দহন জ্বলছে শীতল।
আজ যদি শীতল আরাভকে ভালোবেসে তার কাছে ধরা দিতো তাহলে সেটা আনন্দিত সাথে গ্রহন করতো।

আরাভ শীতলের কাছে গিয়ে হাত বাড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নিলো।শীতল পুরো শরীর ঘেমে একাকার অবস্থা। কপালের ঘাম বেয়ে পড়ছে। নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে৷শীতলের অশ্রু বর্ষণ চোখের আকুলতা ভরা আরাভ বুকে গাঢ় হচ্ছে।

শীতল কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে তার দিকে ঝুঁকে গিয়ে কপালে আলতো ভাবে ওষ্ঠ ছোঁয়ালো আরাভ। শীতল চোখে চোখ রেখে আরাভ বললো,

-‘ আ’ম সরি শীতল।আমি তোমাকে হার্ট করতে চাইনি।তোমাকে আঘাত করার কোনো ইচ্ছে আমার ছিলো না। প্রাপ্তিটা যেখানে সীমাহীন তুচ্ছ এই আবদার করাটা সেখানে বড্ড নগন্য।

শীতল আরাভের প্রানে তাকিয়ে আছে কি বলতে চায় আরাভ।কোন কথাই বুঝতে পারলো না শীতল শুধু আরাভের মুখ প্রানে ডেব ডেব করে তাকিয়ে রইল৷ কিন্তু আরাভ যখন তার থেকে সরে যাচ্ছিলো তখন চমকে গিয়ে আরাভের কাঁধ খামচে ধরলো। অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আকুতি ভরা কন্ঠে বললো,

-‘ আমি আপনার স্ত্রী আমি আপনাকে আমার কাছে চাইতেই পারি। শুরুটা যাই হোক শেষটায় আমি শুধু আপনাকেই চাই আমার করে পেতে। আপনি আমায় ফিরিয়ে দেবেন না। আমি আর ফিরে যেতে চাইনা৷ আপনি আমায় দূরে সরাবেন না। প্লিজ আরাভ একসেপ্ট মী, প্লিজ।

কথাগুলো বলতে বলতেই মাথা ওঠিয়ে আরাভ কপালে কপাল ঠেকিয়ে ওষ্ঠদ্বয়ে চুমু খেলো শীতল। আরাভ গাঢ় করে একটি চুমু খেয়ে শীতলকে সরিয়ে দিয়ে বিছানা থেকে ওঠে রুম থেকেও বেরিয়ে গেলো।শীতল স্তব্ধ হয়ে বিছানায় শুয়ে রইলো। দু’চোখ বেয়ে অশ্রুধারা বইতে লাগলো।

।।

।।

ফজরের আজানের ধ্বনি কানে বাজতেই ঘুম ভেঙে গেলো শীতলের৷ আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো আরাভ নেই।সে বিছানার মাঝ বরাবর বালিশ বিহীন ঘুমিয়ে ছিলো। তখনি রাতের কথা মনে পড়ে৷ বুক ফেটে কান্না আসতে চায়৷ রাতেও কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে শীতল।আরাভ কেন তার সঙ্গে এমন করছে? এমনটা’তো করার কথা ছিল না।শীতল তো ধরে নিয়েছিলো আরাভ কে কাছে টেনে নিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। সব আগের মতো হয়ে যাবে।দু’হাতে মাথা চেপে ধরে অনেকটা সময় বসে রইলো শীতল। যখন মনে পড়লো আরাভ ঘরে ফিরেনি তখন বিছানা থেকে উঠে বাহিরে বের হয়ে আসলো।কিন্তু কোথাও বাড়ি আসে পাশে আরাভ কে খুঁজে পাইনি শীতল।চোখ দুটো আবার পানিতে ভরে উঠে গেইটের সাথে মাথা ঠেকিয়ে বসে পড়লো।

-;আরাভববব!চিতকার করে কেঁদে উঠলো শীতল।

প্রতিক্ষণে পড়ে মনে তোমার কথা,
তোমার জন্য আমার এতো ব্যাকুলতা।
হারিয়ে যাই ভাবনার সাগরে তোমায় ভেবে।
মনের ঘরে স্বপ্ন সাজাই তোমায় নিয়ে।
কেনো থাকো আমায় ছেঁড়ে দূরে দূরে,
আমিতো পারিনা এক মুহূর্ত থাকতে তোমায় ভুলে।
তুমি হীনা নিঃশ্ব লাগে নিজেকে।
শুন্যতা আসে নেমে এই হৃদয় জুড়ে।

কোথায় আছো তুমি? প্লিজ ফিরে আসোও।তোমার তিশা আজ অন্য কারো সাথে আকদা করেছে।যে
তোমার বঁধু হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছিলো সে এখন অন্য কারো আমানত হয়ে গেছে।কি করবো বলো তুমি?বাবা এত বড় অসুখ ধরা পড়ল তার ওপরের কিছুদিন আগে অপারেশন হয়েছে।বাবা মা কে আর কষ্ট দিতে পারছি না আমি।তাই নিজের ভালোবাসা কে গলা টিপে মেরে অন্য কারো আমানত হলাম।আমাদের ভালোবাসা আঁধারে নলকূপের মাঝে হারিয়ে ফেলেছি আমি। তোমাকে আমার করে আর কোনোদিন পাওয়া হবে না আর্দশ।তুমি যে হারিয়ে গেছো নীল আকাশের তাঁরা মাঝে।

Lag Ja Gale Ki Phir
ye Hasin Raat Ho Na Ho
shayad Phir Is Janam Mein
mulakat Ho Na Ho……..
lag ja gale a a aahh hhh hhh

hum Ko Mili Hai Aaj
ye Ghadiya Naseeb Se
je Bhar Ke Dekh Leejiye
hamako Kareeb Se
phir Apke Naseeb Mein
ye Baat Ho Na Ho
shayad phir Is Janaam Mein
mulakaat Ho Na Ho

lag Ja Gale

pas Aiye Ki Ham Nahin
ayenge Baar Baar
bahen Gale Mein Daal Ke
ham Ro Le Zaar-Zaar
ankhoon Se Phir Ye
pyaar Ki Barsaat Ho Na Ho
shayad Phir Is Janam Mein
mulakat Ho Na Ho

তিশার চোখের পানি সবার থেকে লুকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা ব্যর্থত।কারণ তিশা লুকিয়ে কাদাঁ আর কারো চোখে না পড়লেও তিশা হবু বর মিষ্টার অর্নব রায়জাদা চোখে ধরা পড়ে।তিশার মা বাবা মেয়ের বিয়ে জন্য আনন্দ মনে সব করে যাচ্ছে।কিন্তু মেয়েটা এই বিয়ে তে সুখি হবে কি না জানা নেই। ভালো বর,ভালো ঘর হলে কখনো সুখিই হওয়া যায় না। বিয়ের মতো পবিএ বন্ধ আবদ্ধ হতে গেলে দুই রিদয়ের আত্মা মিলন থাকতে হয়।সংসারের সুখ শান্তি বয়ে আনে স্বামী স্ত্রী পবিত্র সম্পর্কে মাধ্যমে। আবার ফাটল ধরে স্বামী স্ত্রী বিচ্ছেদ কারণে।একটি পরিবার পূর্ণ হয় ভালোবাসা মায়ার বাঁধনে। ভালোবাসার কারণে একে অপরকে সম্পর্ক অটুট হয়।বিশ্বাস, ভরসা,ভালোবাসা, দায়িত্ব, কর্তব্য,অধিকারে প্রতিষ্ঠিত হয় পরিবারের সঙ্গে।

বিয়ের মতো পবিত্র বন্ধ আবদ্ধ হওয়ার সময় সব মেয়ের মাঝে থাকে খুশীর উল্লাস লজ্জা মিশ্রিত লাল টুকটুকে মুখখানি।প্রিয়কে আপন করে পাবার আনন্দ থাকে অতুলনীয়।মেয়েদের সেই আনন্দ লাজে রাঙায় মুখখানি তিশার মধ্যে একটু পায়নি অর্নব।অর্ণবের এখনো স্পষ্ট মনে আছে যখন তাদের আকদ হচ্ছিল। তখন তিশার মুখে হাসি নয় বিষাদের ছায়া দেখেছিল।

অর্ণবের মনে এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।তিশার চোখের পানি কেনো তার কারণ অর্ণব কাছে অজানা নয়।

তিশা আর অর্ণব আকদ হওয়ার আগেই সব সত্যি জানানো হয়েছে তাকে।আর সেটা তিশা নিজেই জানিয়েছে।

তিশা মিথ্যে আশা বা স্বপ্ন কাউকে দেখাতে চায় না তাই সময় থাকতে সব সত্যি জানানো হয়েছে।হয়ত তিশা কষ্ট হবে এসব সাথে মানিয়ে নিতে। তবু আস্তে আস্তে সবটা ঠিক হয়ে যাবে।একবার বিয়েটা হোক শুধু তারপরে অর্ণব তিশা কে আবার আগের মতো হাসি খুশি রুপে ফিরিয়ে আনবে।

তিশা জীবনে হয়তো আর্দশ কে এনে দিতে পারবে না।কিন্তু তিশা একটা সুন্দর স্বাভাবিক জীবন দিতে পারবে অর্ণব।বিয়ে আগ মূহুর্তে যদি আর্দশ ফিরে আসে।আর তিশা আর্দশ জন্য না বলে বিয়ে ভেঙে দেয়।অর্ণব বাধা দিবে না বরং হাসি মুখে বিদায় দিবে ভালোবাসার মানুষটাকে।কারণ “ভোগে নয় ত্যাগে প্রকৃতিত সুখ”। আর যদি আর্দশ না ফিরে তাহলে তিশা আর অর্ণব বাঁধা পড়বে বিবাহিত নতুন অধ্যায়ে।

অর্ণব সব চিন্তা বাদ দিয়ে তিশার দিকে এগিয়ে গিয়ে
হাঁটু মুড়ে বসে তিশার মুখটা নিজের হাতের মাঝে নিলো।বুড়ো দুই আঙুলের মাধ্যমে চোখের পানি মুছে দিয়ে বসা থেকে দাঁড় করিয়ে ছাঁদের দোলনায় বসালো।নিজের পকেট থেকে রুমাল বের করে তিশা হাতে দিলো চোখের পানিটুকু মুছতে।

তিশা বিনাবাক্যে রুমালটা নিয়ে নিজের চোখের পানি মুছে নিলো।শুনশান নিরবতা কিছু সময় পার করার পর অর্ণব জিহবা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে জিজ্ঞেস করে তিশাকে,

-;খুব ভালোবাসো আর্দশ কে?

অর্ণব কথায় আবার তিশার চোখ টলমল করে উঠে।ঠোঁট কামড়ে অর্ণব তাকিয়ে আছে তিশার প্রানে।কি উওর দেয় তা দেখার জন্য?

দোলনায় বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলে,

-;হুম।আমি খুব ভালোবাসি আমার আর্দশকে।নিজের থেকে বেশি খুব ভালোবাসি।এতটা ভালো হয়তো আমি আর কাউকে ভাসতে পারবো না।এমন কি আমার মনে ওর জন্য যেই সুপ্ত ভালোবাসা রয়েছে তা সারাজীবন রয়েছে যাবে মনের গহীনে।

-;যদি তোমার আর্দশ কোনোদিন ফিরে আসে।তখন কি তুমি ফিরবে তার কাছে?অর্নব তাকিয়ে আছে। এই প্রশ্নটা করার পর তিশার মুখে খুশীর ঝলক ফুটে উঠেছে। তিশার উজ্জল হওয়া মুখটায় বলে দিচ্ছে।সে কতটা খুশী হবে তার আর্দশ ফিরে আসলে।অর্নব আরো কোনো প্রশ্ন করেনি।তিশার অগোছালো কিছু অবাধ্য চুল সামনে এসে পড়েছে। সেগুলো গুছিয়ে কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে পা বাড়াল নিচের দিকে যাওয়ার জন্য। কি মনে করে আবার তিশার দিকে ফিরে তাকাল।তিশার মাথা হাত দিয়ে বলো।বিয়ে আগ মূহুর্ত পর্যন্ত তোমার হাতে সময় আছে তিশা।হ্যা,তিশা আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মোনাজাতে কেঁদে তোমার আর্দশকে ভিক্ষা চাও।লেখনীতে ইয়ানুর আক্তার ইনায়া।বিয়ে আগ মূহুর্তে আর্দশ ফিরে আসলে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিবো তোমার আর তোমার আর্দশের। আর যদি না ফিরে তাহলে তোমার সাথে আমার বিয়েতো হবেই সাথে সাথে তুমি নতুন অধ্যায় পা রাখবে সেখানে তোমার আর্দশ কোনো জায়গায় হবে না।সেখানে তোমার একটা পরিচয় থাকবে তুমি মিসেস তিশা রায়জাদা হয়ে থাকবে।কারো প্রেমিকা কিংবা গালফ্রেন্ড হয়ে নয় একজন স্ত্রী হিসেবে।
কথাগুলো বলে একটু দাড়ালো না চলে গেলো অর্ণব।তিশা পাথরের মতো দাঁড়িয়ে ছিলো সেখানে ধপ করে বসে পড়লো।তারমানে অর্নব তাকে বিয়ে হওয়ার আগেই একটা সুযোগ দিয়েছে।কিন্তু আর্দশ।ওহ তো কোনোদিন ফিরবে না তিশার কাছে কি হবে এবার। তিশা মনে মনে চাইছে আর্দশ ফিরুক তাঁকে নিয়ে যাক দূর অজানায়।আকাশ প্রানে তাকিয়ে মনে মনে বলছে,

আল্লাহ তুমি আমার আর্দশকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেওয়।আমার বাঁচার নতুন দিশা খুঁজে দেওয়।আমিও ভালো থাকতে চাই। আমি আর পাচঁটা মেয়ে মতো নরমাল লাইফ চাই।আমিও বাঁচতে চাই আল্লাহ।আমাকে তুমি পথ দেখাও।

-;গাড়ি ড্রাইভ করছে অর্ণব।আজ বাদে কাল যার সাথে বিয়ে সেই মানুষটা ভালো নেই।হবু বউয়ের চোখে পানি অন্য কারো জন্য সেটা মানতে সত্যি কষ্ট হয়।তবু তিশাকে সময় দিয়েছে অর্ণব।আর্দশ ফিরে আসলে তিশাকে তুলে দিবে নিজের হাতে।আর যদি আর্দশ না ফিরে তাহলে সারাজীবনের জন্য অর্নবের হয়ে যাবে তিশা।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here