#Love_Treatment
Part- 33
Writer- Tanzin Islam Ishika
।
রাত ২ টা বাজে,,
চারদিকে নিস্তব্ধতা,, পুরো শহর এখন ঘুমের রাজ্যে বিভর,,, শুধু একজনের চোখে যে এই ঘুমের রাজ্য বিভর করতে পারে নি,,,, সে আর কেউ না তান্নাজ,, তান্নাজ নিচে বসে খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে,,, আর তার চোখ দিয়ে অজস্র পানি গড়িতে পরছে,, সেই ব্যক্তিটির প্রত্যেক কথা তার কানে বাজতাসে,, হা কিছু খুন আগেই অজানা ব্যক্তিটি আবার ফোন করেছিল,,, আজ তার কথা গুলো তীরের মত বিধেছে বুকে,,,
কিছুক্ষণ আগে,,
তান্নাজ অফিস থেকে এসে সদ্য মাত্র শাওয়ার নিয়ে বের হয়েছিল,, তখনই ফোনটা বেজে উঠে,, যে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে আননোং নাম্বার,, তার,আর বুঝতে দেরি নি কে ফোন করেছে তাকে,,, সে ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ফোন কেটে যায়,, আবার ফোন আসে,, তান্নাজ এইবার বেশ বিরক্তিকর ভাব নিয়ে ফোনটা তুলে,,,
।
তান্নাজঃ কি সমস্যা কি আপনার,, কত বার বলবো আপনাকে যে আমায় ফোন করবেন না,,, তাহলে কেন ফোন করেছেন,,,
।
লোকটিঃ কুল মিস তান্নাজ কুল,, আপনি এত হাইপার হচ্ছেন কেন,, নিজেকে একটু শান্ত রাখুন,,
।
তান্নাজ নিজেকে শান্ত করে বলে,,
তান্নাজঃ কিসের জন্য ফোন করেছেন তা বলেন,,
।
লোকটিঃ আপনি কেমন নারী বলুন তহ,, নিজের স্বামীর সব দোষ দেখেও না দেখার ভ্যান করছেন,,সে যে অন্য নারীকে নিয়ে এখন ব্যস্ত,, নিজের স্ত্রীকে রেখে সে অন্য কাউরো সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে,, আপনি কি বুঝেন না যে নিশম আপনার থেকে এখন অতেষ্ট হয়ে গিয়েছে,, সে এখন আর চায় না আপনাকে,, তাও কেন আপনি তার কাছে এখনও পরে আছেন,,, আর যাই হক নিজের আত্মসম্মানকে তহ বাচান,, নিজের আত্মসম্মান কেন তার কাছে বিলীন করে দিচ্ছেন যে কি না তার মর্মই বুঝে না,,
।
তান্নাজঃ বাস,,, অনেক বলেছেন আর না,, আপনি কে হা,, কে হন আপনি আমার যে এইসব কথা বলছেন,,, আমি কোথায় থাকবো,, কি করবো তা নিয়ে আপনি কেন এত মাথা ঘামাচ্ছেন,, আর আমার লাইফেই বা কেন এত নাক গলাচ্ছেন,, কি চাই আপনার,,
।
লোকটিঃ আমি আগেও বলছি এখনও বলছি আমি আপনার শুভকাংখিক,, আপনার ভালো চাই আমি,, তাই তহ বার বার আপনাকে কল করে বিরক্ত করি,, আমি চাই না আপনি কষ্ট পান,,কিন্তু আপনি তহ সব বুঝতেই নারাজ,,, আপনি এখন এইখানে কষ্ট পাচ্ছেন আর সেইখানে আপনার হাসবেন্ড অন্য এক জনের সাথে কথা বলতে ব্যস্ত,, বিশ্বাস না করলে যে দেখুন সে ফোনে কথা বলছে কিনা,,
।
তান্নাজ কিছু না ভেবে বাইরে উঁকি মেরে দেখে নিশম সত্যি ডাইনিং এ বসে কাউরো সাথে কথা বলছে,, তখনই সেই লোকটি আবার বলে উঠে,,
।
লোকটিঃ কি বিশ্বাস হলো তহ,, আপনি কার জন্য পরে আছেন যার কাছে আপনার কোন দামই নেই,, এখনও সময় আছে চলে যান তার লাইফ থেকে,, তাতে দুইজনই খুশি হবেন,,,
।
তান্নাজঃ কথা বলতাসে তাতে কি প্রমান হয় শুনি,, মানুষ কি কথা ছাড়া থাকবে নাকি,,, আমিও তহ আপনার সাথে কথা বলছি তাতে কি,,,
।
লোকটিঃ সে আপনাকে ঠকাচ্ছে আর আপনিও ঠকচ্ছেন,,, আরেহ কেন বুঝতে চাইতাসেন না,, নিশম শুধু মাত্র আপনাকে ইউস করেছে,, আর কিছুই না,, এর আগেও আপনাকে প্রমান দিয়েছি,, তারপর নিজের ভালোর জন্যি আপনি দূরেও চলে গিয়েছিলেন,, তহ এখন যখন সব চোখের সামনে দেখছেন তাহলে কেন যাচ্ছেন না,, নিশম শুধু আপনাকে টিস্যুর মত ইউস করছে,, আর কিছুই না,,তার শুধু কিছু সময়ের জন্য কাউকে প্রয়োজন ছিল যতদিন না সামিরা আসে,,, এখন যখন সে এসে পরেছে তখন আপনার দরকারও ফুরিয়ে এসেছে,,,আপনি,,,
।
টুট টুট টুট
।
তান্নাজ কিছু না বলে ফোন কেটে দেয়,, আর দরজা অফ করে নিচে বসে পরে,,
।
বর্তমানে,,
তান্নাজ যে পারছে না আর সইতে,,, তান্নাজ বুঝতে পারছে না সে কি করবে,,, আজ বড় অসহায় লাগছে তাকে,, আচ্ছা লোকটা কি সত্যি বলছে যে নিশম তাকে শুধু টিস্যুর মত ইউস করছে,, নাকি না,, সে তার হিসাব মিলাচ্ছে,,, নিশম তাকে অবহেলা করলেও তার উপর কখনো আচড় পরতে দেই নি,, কিন্তু তার কথা গুলি যে আচড় হিসেবে কাজ করেছে,,, সে এতদিনে সামিরা আর নিশমকে দেখেছে,, তাদের চলাফেরাও দেখেছে,, তাদের চালচলন ও দেখেছে,, কিন্তু সে বুঝতে পারছে না তা কি শুধু বন্ধুত্ব নাকি অন্য কিছু,, সে সামিরার চোখে নিশমের জন্য বন্ধুত্বের থেকে বেশি কিছু দেখেছে,, কিন্তু সে নিশমকে বুঝতে পারছে না,, নিশমের চোখের ভাষা যে সে বুঝতে পারছে না,,
তান্নাজ যা জানতে চেয়েছিল তাতে সে এতটুকু জানতে পেরেছে যে নিশম আর যাই হক সামিরার প্রতি এতটা উইক না,, কিন্তু তাও তার বুঝতে কষ্ট হচ্ছে যে নিশমের কি আদো সামিরার জন্য কোন ফিলিংস আছে কিনা,, তাদের এক সাথে চলাফেরা কেন যেন তান্নাজের মনে আঘাত করে,, কিন্তু সে যে নিরুপায়,, তাকে যে এইসব সহ্য করতেই হবে,,, কেননা সে যে এখন পুরোপুরি ভাবে তার ফলাফল পায় নি,,,
তান্নাজ এখন আর কিছু ভাবতে চায় না,, কিছু না,, সে একটু শান্তি চায়,,, কিন্তু তার মনে যে এক অশান্তির ঝড় বয়ে যাচ্ছে,, যাকে সে চেও থামাতে পারছে না,,,
এক সময় তান্নাজ সেইভাবেই ঘুমিয়ে পরে,,,
দেখতে দেখতে প্রায় ১ সপ্তাহ কেটে যায়,,
এই এক সপ্তাহে নিশম আর তান্নাজের মধ্যে কিছু ঠিক হয় নি বরং সব আরও এলোমেলো হয়েছে,, নিশম আর তান্নাজের মাঝে বেশ দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে,, নিজের না চাওয়া সত্তেও অনেকটা দূরত্ব এসে পরেছে তাদের মধ্যে,,, নিশমের অবহেলা,, তার কঠোর কঠোর কথা,, তার রাগ,, তান্নাজের প্রতি অনিহা সব চুপচাপ সহ্য করেছে সে,, এই কয়দিনে তান্নাজের মুখ থেকে সেই আগের লাবন্য হারিয়ে গিয়েছে,, আগের থেকে অনেকটা শুকিয়ে গিয়েছে,, চোখের নিচে কালি পরে গিয়েছে,, এখন সে তেমন হাসে না,, সব সব গোমড়া মুখ করে রাখে,,,খাবারও ঠিক মত খায় না,, তার উপর তান্নাজের শরীর খারাপ যাচ্ছে,, শরীর অনেক উয়িক হয়ে গিয়েছে,, খালি মাথা চক্কোর দেয়,, এক কথায় তান্নাজ ভালো নেই,, আর এইদিকে নিশম সেও তার জানের এই অবস্থা সহ্য করতে পারছে না,, সে তান্নাজের কাছে ছুটে যেতে চাইলেও পারে না,, এইভাবেই চলছে তাদের জীবন,,, কিন্তু এক তুমুল ঝড় যে তাদের দিকে আসতে চলেছে,,, যা কিনা তাদের জীবনকে পুরো তচনচ করে দিয়ে ছাড়খাড় করে দিয়ে যাবে,,, হয়তো এই ঝড়ে তারা আবার এক হবে নয়ত চিরতরের জন্য বিচ্ছিন্ন,, কে জানে তাদের জীবন এখন কোন মড়ে এসে দাড়াবে,,,
।
।#Love_Treatment
Part- 34
Writer- Tanzin Islam Ishika
।
।
সেইদিন অফিসে,,,
তান্নাজ নিজের কেবিনে কাজ করছিল,, এমন সময় কেবিনের বাইরে নিশমের চেচানোর আওয়াজ শুনা গেল,, সে চিৎকার করে তান্নাজকে ডাকছে,,, তান্নাজ তারাতারি কেবিন থেকে বের হয়ে নিশমের সামনে গিয়ে দাড়ায়,,পাশে সামিরাও আছে,, নিশন তার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, যেন এখনই তাকে কাচা চিবিয়ে খাবে,,, তান্নাজ ভয়ে কাচুমাচু হয়ে আছে,,সে নিশিমের দিকে তাকাতেই নিশম তার মুখের উপর কিছু ফাইলে ছুড়ে মারে,,, আর চিৎকার দিয়ে বলে,,
।
নিশমঃ কি করেছ এইটা তুমি,, ডু হ্যাভ এনি সেন্স,,
।
তান্নাজঃ কি করেছি আমি,,,
।
নিশমঃ কি করো নি তা বলো,, তোমাকে মি. রহমানকে কিছু ফাইল দিতে বলেছিলাম,, আর তুমি কিনা তাকে অন্য কোম্পানির ফাইল পাঠিয়ে বসেছো,, তুমি জানো সে আমাদের কোম্পানির জন্য কত বড় ট্রেন্ডার অফার কিরেছিল,,, আজ তোমার জন্য তিনি সে অফার ফিরিয়ে নিয়েছে,,, কত বড় লস হয়েছে জানো তুমি,, ডু ইউ হ্যাভ এনি আইডিয়া,,, মন কথায় থাকে তোমার,,, ইউ ইডিয়ট,, ( নিশম আবার কাজ নিয়ে একটু বেশি সিরিয়াস থাকে এন্ড কাজের প্রতি কোন টাইপের অবহেলা লাইক করে না,, আর তান্নাজ যেহুতু ভুল করেছে তাই নিশম এমন রিয়েক্ট করছে,, আর কিছুই না,,)
।
সামিরাঃ অহো বেবি কাম ডাউন,, এই গ্যরাইম্মা ভুত কি বুঝবে এইসব,,, যতসব যোগ্যতা নেই এসে পরে কাজ করতে,,, এদের যে কে কাজে রাখে,, তুমি আজই ওকে কোম্পানি থেকে বের করে দাও,,, এই সব মেয়ে খালি বড় লোকী ছেলেদের ফাসাতে পারে আর কিছু না,,, এইসব মেয়েদের শিক্ষায় এমন,,,
।
তান্নাজঃ ম্যাম মুখ সামলিয়ে কথা বলবেন,, আমার শিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলার অধিকার আপনার নেই,, আর আমার যথেষ্ট যোগ্যতা আছে কাজ করার,, আমি জানি না এইটা কিভাবে হলো,, আমি তহ ঠিক ফাইলেই,,
।
তান্নাজ কে বলতে না দিয়ে,,,
।
নিশমঃ স্টোপ ইট,, নো মোর ওয়ার্ডস,,এক তহ ভুল করেছো তার উপর মুখে মুখে তর্ক করছো,, ইউ আর ফাইয়ার্ড,, তোমাকে এখনই এই চাকরি থেকে বের করা হলো,,
।
তান্নাজঃ কিন্তু স্যার,,
।
নিশমঃ কোন কথা না যাও এইখান থেকে,,,
এই বলে নিশম তার কেবিনে চলে গেল,, সাথে সামিরাও,,সবাই তান্নাজের দিকে তাকিয়ে আছে,, তান্নাজ সেখানে ঠাই ভাবে দাড়িয়ে আছে,, সে বুঝতাসে কি থেকে কি হয়ে গেল৷ সে তহ ঠিক ফাইলই দিয়েছিল,, তাহলে,, সে কাগজ গুলো হাতে নিয়ে,, সে বুঝতে পারছে না এইসব কিভাবে হলো,, তখন মিতু এসে বলে,,
।
মিতুঃ দেখ কোথাও হয়তো ভুল হচ্ছে,, তুই গিয়ে ভাইয়ার সাথে কথা বল,, এখন রেগে আছে তাই যা নয় তাই বলে ফেলেছে,, তুই তার,কেবিনে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় কথা বল,, এখন যাইস না,, পরে যা,, এখন মাথা গরম আছে,, একটু ঠান্ডা হক তারপর যা,, তুই তোর কেবিনে গিয়ে বস আমি তোর জন্য কফি আনছি,,
।
তান্নাজঃ হুম,,
তান্নাজ নিজের কেবিনে গিয়ে চেয়ারে বসে হেড ডাউন করে থাকে,, তখন লিজা আর রিয়াজ আসে তার কেবিনে,, লিজা তান্নাজকে বলে,,,
।
লিজাঃ দেখ কি থেকে হয়ে গেল,,, যাকে কিনা স্যার আগে নিজের কেবিন থেকে বেরই হতে দিত,, সব সময় স্যারের সাথে রাখত,, আজ তাকে কিনা সে ফিরেও তাকায় না,, উল্টা এই অফিস থেকেই বের করে দিয়েছে,, কি বাই করার,, বড় লোকরা এমনই হয়,, কয়দিন এর সাথে তহ কয়দিন তার সাথে,,, যখন যাকে মনে ধরে,,, এতদিন তোকে মনে ধরেছিল তাই তোকে পাশে রেখেছে,, এখন যখন মন ভরে গেছে তখন টিস্যুর মত ছুড়ে ফেলে দিল,,,
।
তান্নাজ মাথা তুলে লিজার দিকে তাকিয়ে বলে,,
।
তান্নাজঃ কি বলতে চাচ্ছো তুমি,,
।
লিজাঃ এমন ভাব করে লাভ নেই যে তুমি কিছুই বুঝো না,, তোমার সাথে স্যারের অবৈধ সম্পর্ক ছিল তা আমি জানি,, সেইদিন আমি নিজ চোখে তোদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখেছি,, নিজের রুপ দেখিয়ে তহ স্যারকে নিজের আয়েত্ত্ব করেছিলে,, কিন্তু কত দিন পারলে শুনি,,, তা তহ মনে হয় অনেক টাকায় লুটে খেয়েছো তার,, কিন্তু এখন মনে হয় স্যারের তোমার প্রতি ইন্টারেস্ট কমে গিয়েছে,, তোমাকে এখন তা ভালো লাগে না,, লাগবেই বা কেন,, তার বান্ধুবি এসে পরেছে না,, তুমি কই আর সে কই,,, তহ স্যার কি এখন সোনা রেখে রুপার পিছে দৌড়াবে নাকি,, তোমাকে সে টিস্যুর মত ইউস করেছে বুঝলা,,
।
তান্নাজঃ বাসসস,, অনেক বলেছো,, তুমি জানো আমি কে,, আর কাকে কি বলছো,,,
।
লিজাঃ জানার কি আসে তুই হচ্ছিস একটা নষ্টা মেয়ে যে কিনা টাকার জন্য নিজের দেহ দিতে দিমত প্রকাশ করে না,,,
।
তান্নাজঃ চুপ একদম চুপ,,,
।
লিজাঃ কি সত্যি শুনতে কষ্ট হচ্ছে তাই না,,,
।
রিয়াজঃ আহা লিজা,, তুমি এমন ভাবে বলছো কেন,, দেখনা তান্নাজ এখন একা হয়ে গিয়েছে,, স্যার তহ এখন তার দিকে ফিরে তাকায় না,, তার উপর চাকরি থেকেও বের করে দিয়েছে,, এখন তহ তার কাউকে প্রয়োজন,, একা একটা মেয়ে কি করে এমব অসহায় ভাবে থাকবে বল,, তান্নাজ তুমি টেনশম করো না,, আমি আছি তহ,, তোমার সব কিছু খেয়াল আমি রাখব,, হয়তো স্যারের মত সব কিছু দিতে পারবো না,, কিন্তু যতটুকু পারবো দেওয়ার চেষ্টা করবো,, তার বদলে তুমি স্যারকে যেভাবে খুশি করেছ সেই ভাবেই আমাকে খুশি করলেই চলবে বুঝলে,,
।
তান্নাজ এইসব জঘন্য কথা সহ্য করতে না পেরে রিয়াজকে নিজের শরীরের সর্বচ্চো শক্তি দিতে রিয়াজের গালে একটা থাপ্পড় মারে,,, আর চিল্লিয়ে বলে,,
।
তান্নাজঃ তোর সাহস কিভাবে হল আমাকে এই রকম কু প্রস্তাব দেওয়ার,,, নিশম জানলে যে তোর কি অবস্থা করবে তা তুই স্বপ্নেও ভাবতে পারবি না,,
।
রিয়াজঃ তোর এত বড় সাহস,, তুই আমায় থাপ্পড় মারিস,, কিসের দেমাক এত তোর,, নিজে তহ বসের সাথে নষ্টি ফষ্টি মরে বেরাস আর আমরা বললেই দোষ,, আমার মধ্যে কি নাই বল,, টাকার চিন্তা করছিস তহ বল কত টাকা লাগবে তোর,,
।
তান্নাজঃ তোর মত ছোট লোকের সাথে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাধে বুঝলি,, আমি এখনই নিশমকে গিয়ে বলছি,, তখন তোর কি যে অবস্থা করবে তা তুই কল্পনাও করতে পারবি না,,,
এই বলে তান্নাজ যেতে নিলে লিজা তার চুলের মুঠি ধরে বলে,,,
।
লিজাঃ যা না যা,, দেখিস স্যার তোর দিকে ফিরেও তাকাবে না,,, তোর কথা শুনা দূরের কথা,, যা না গিয়ে বল কি বলবি,, যা
।
এই বলে তান্নাজকে ছেড়ে দেয়,, আর তান্নাজ নিশমের কেবিনের দিকে ছুটে যায়,,,
।
এইদিকে,,
নিশম কেবিনে মাথায় হাত দিয়ে বসে ছিল আর সামিরা তার সাথে কথা বলছিল,, সামিরা নিশমকে নিজের দিকে ঘুরায়,, তারপর তাকে মাথা ঠান্ডা করতে বলে,,, সে নিশমের পাশ দিয়ে পানির গ্লাস নিতে গেলে তার চুল নিশমের শার্টের সাথে বেজে যায়,,সামিরা তা ছাড়ানোর ট্রায় করতে থাকে৷ যেহেতু সামিরা নিশমের সামনে ছিল,, আর এমন ভাবে দাড়িয়ে ছিল যে কেউ বাইরে থেকে কেবিনে ঢুকলে মনে করবে য্ব নিশম তাকে কিস করছে,,, আর তান্নাজ সেই সময় রুমে নক না করে ঢুকে পরে,, আর সেও এইটা দেখে বুঝে যে নিশম সামিরাকে কিস করছে,, এইটা দেখে যেন তার পায়ের নিচের থেকে জমিন সরে গেল,, সে তার চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছে না,,সে আদো সত্য দেখছে কিনা,,তান্নাজ নিজেকে ঠিক রাখতে পারছে না৷,, সে যা দেখেছে তার পর সেইখানে দাড়িতে থাকা দায়,,সে আর এক মুহূর্ত না দারিয়ে দৌড়ে অফিসের বাইরে চলে গেল,,
তান্নাজ চলে যাওয়ার পর মিতু হাপাতে হাপাতে নিশমের রুমে আসে,, আর বলতে থাকে
।
মিতুঃ ভাইয়া,,
।
মিতুর আওয়াজ শুনে সামিরা তারাতারি সরে আসতে চায়,, কিন্তু চুল আটকিয়ে যাওয়ায় আবার আটকিয়ে যায়,, সে তারাতারি তা ছাড়িয়ে নিয়ে সরে আসে,, তার দেখে মিতু কিছুটা বুঝতে পারে তান্নাজ কেন এইভাবে দৌড়ে চলে গেল,,
।
সামিরাঃ কি তোমাদের প্রবলেমটা কি,, উইডাইট পারমিশন বসের কেবিনে ঢুকে আসো,, সভ্যতা বলতে কিছু নেই,,
।
নিশমঃ সামিরা চুপ,, কি হয়েছে মিতু,,,
।
মিতুঃ ভাইয়া,,, তান্নাজ,, হাপানোর কারনে বলতে পারছে না,,
।
নিশমঃ মিতু যাও তহ এখন এইখান থেকে,,, আমি তান্নাজের সম্পর্কে এখন কোন কথাই শুনতে চাই না,,, চলে যাও,,
।
মিতুঃ ভাইয়া আমার কথাটা শুনুন,,
।
নিশমঃ প্লিজ যাও তহ,, পরে কথা বলবো এই নিয়ে,,
।
মিতুঃ ভাইয়া পরে অনেক বেশি দেরি হয়ে যাবে,, এখন যদি আমার কথা না শুনেন তাহলে চির দিনের জন্য তান্নাজকে হারাবেন,,,
।
নিশমঃ মানে কি বলতে চাইছো তুমি,,,
।
তারপর মিতু সব খুলে বলে,, যখন লিজা আর রিয়াজ তাকে হেরাস করছিল তখন সে রুমের বাইরে ছিল,, সে সব শুনছিল,, যখন তান্নাজ নিশমের রুমে আসতে নেয় তখন মিতুও তার পিছে পিছে আসে,,, আসার সময় দেখে তান্নাজ কাদতে কাদতে অফিসের বাইরে চলে গেল,, তাই সে তারাতারি নিশিমের কাছে আসে,,, নিশম এইসব কিছু শুনে তার মাথায় যেন আগুন ধরে যায়,, পায়ের রক্ত মাথা উঠে যায়,, রক্ত সব টকবক করতে থাকে,,, সে আর কিছু না বলে কেবিনের বাইরে চলে আসে,, আর জোরে জোরে রিয়াজ আর লিজাকে ডাক দেয়,,, তারা তারাতারি নিশমের সামনে আসে,, নিশম রিয়াজের সামনে গিয়ে তাকে স্বজরে একটা থাপ্পড় মারে,, আর তার উপর ঝাপিয়ে পরে,, তাকে এবড়ো থেবড়ো মারতে থাকে,, আর চিৎকার করে বলতে থাকে,,,
।
নিশমঃ তোর সাহস কিভাবে হলো আমার ওয়াইফের সাথে মিসবিহ্যাভ করার,,, আমার ওয়াইফের দিকে বাজে দৃষ্টি তাকানোর,, আমার জানকে কষ্ট দেওয়ার,,,তোকে তহ নিজ হাতে শেষ করে ফেলব,, আমি আজ তোকে জিন্দায় কবর দিব,,,
।
তখন লিজা এসে তাকে থামানোর ট্রাই করতে আসলে তাকে কসে একটা থাপ্পড় দেয়,, সবাই এইসব দেখে ভয়ে ফ্রিসড হয়ে যায়,, কেউ সাহস পাচ্ছে না নিশমেত সামনে আসার,,, রিয়াজ অনেক কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে বলে,,
।
রিয়াজঃ স্যার কি করছেন,,আমার দোষ কি,, আর কে বাই আপনার ওয়াইফ,, আমি তহ আপনার ওয়াইফকে চিনিই না,, আর আপনি যে বিয়ে করেছেন তা আজ জানলাম,,
।
নিশম তখন তাকে মারতে মারতে বলে,,
।
নিশমঃ তান্নাজ আমার ওয়াইফ,, যাকে তুই বাজে দৃষ্টিতে দেখিস,, বাজে প্রোপসার দিয়েছিস,, আমার জানে দিকে হাত বারিয়েছিস,, আমার জানের দিকে,,, কি জানি বলেছিলিস,, ওই রাস্তার মেয়ে তাই না,,, তোকে যদি আজ আমি রাস্তার ধুলা না খাওয়াইছি,,,,
।
এই কথা শুনে অফিসের সবাই অবাকের উপর অবাক হয়ে যায়,, আর তখন লিজা বলে,,,
।
লিজাঃ তান্নাজ আপনার ওয়াইফ,,, তা কিভাবে সম্ভব,,,
।
নিশমঃ হা হা ওই আমার ওয়াইফ,, যাকে তোরা মিলে হ্যারাস করেছিস,,আমার ওর পবিত্র সম্পর্ককে তোরা বাজে নজরে দেখিস,,, তাকে যা নয় তা বলেছিস,, তোদের তহ ছাড়বো না,,
এই বলে নিশম রিয়াজকে ছেড়ে লিজা এর কাছে আসতে নিলেই লিজা আর রিয়াজ দুইজনেই নিশমের পা জরিয়ে ধরে,, আর বলে,,
।
রিয়াজঃ স্যার মাফ করে দেন,, আমরা জানতাম না তান্নাজ আপনার ওয়াইফ,, যদি জানতাম এমন কখনো করতাম না,,, স্যার মাফ করে দেন,,
।
নিশম লাথি মেরে রিয়াজকে সরিয়ে বলে,,
।
নিশমঃ তোকে ক্ষমা করা মানে পুরো নারী জাতিকে অসম্মান করা,, যে নারী জাতিকে সম্মান করতে পারে না সে একজন নরপশু,, আরেহ ভুলে যাস না তোকে জন্মও একজন নারীই দিয়েছে,,, আজ তুই সেই নারীজাতির উপর বাজে নজর দিয়েছিস,,, তাও আবার আমার জানের উপর,,, তোকে তহ আমি জানে মেরে ফেলব,,,
এই বলে নিশম এগুতে নিলে হৃদয় এসে নিশমকে থামায়,, মিতু নিশমকে এইসব বলার পর হৃদয়কে ফোন দেয় আর সব খুলে বলে আর তাকে তারাতারি আসতে বলে,, কারন সে এখন একা এইসব হেন্ডেল করতে পারবে না,,, হৃদয় এসে নিশমকে ধরে আর বলে,,
হৃদয়ঃ কুল ডাউন নিশম,, এইভাবে মাথা গরম করলে চলবে না,, ওদের শাস্তির জন্য আইন আসে,, আর আমি পুলিশ কে ইনফর্ম করে দিয়েছি তারা আসতাসে,, তুমি এখন আগে তারাতারি তান্নাজের কাছে যাও,,,
।
মিতুঃ হা ভাইয়া,, আর ওই আপনাকে ভুল বুঝে চলে গিয়েছে,, আপনাকে ওই অবস্থায় দেখে আমি নিশ্চিত ও ভুল বুঝেছে,, আপনি প্লিজ ওর কাছে জান,, ওই এখন পুরোপুরি ভেংগে পরেছে,, ওকে এখন আপনাকে প্রয়োজন,, প্লিজ ভাইয়া আমি এখন ওর কাছে জান,, অলেক অবহেলা করেছেন,, আজ যদি আপনি ওকে কাছে টেনে না নেন হয়তো সারাজীবনের জন্য হারাবেন,,, আমি জানি এইসব করতে আমি আপনাকে বলেছিলাম,, কেননা তান্নাজ অতিরিক্ত করে ফেলেছিল আপনার সাথে,, তাই ওকে সায়েস্তা করা দরকার ছিল,, ওকে বুঝানোর দরকার ছিল ভালবাসার মানুষকে দুরে ঠেলে দিলে কি হয়,, ওকে জেলাস ফিল করাতে চেয়েছিলাম,,,কিন্তু এর মাঝে যে এইসব হয়ে যাবে বুঝি নি,, আপনি প্লিজ দ্রুত ওর কাছে জান,,
।
নিশমঃ অনেক অবহেলা করে ফেলেছি আর না,,, একটু অতিরিক্ত করে ফেলেছি,, কেন যে আমি এমন করতে গেলাম,, কেন,,
।
হৃদয়ঃ এইসব পরেও ভাবা যাবে আগে তুমি তান্নাজের কাছে যাও,,,
।
নিশম আর দেরি না করে বেরিয়ে যায়,, তার কিছুক্ষণ পরেই পুলিশ এসে লিজা আর রিয়াজকে নিয়ে যায়,, কাউকে মেন্টালি হ্যারাসের অপরাধে,,,
।
।
চলবে,,