Love warning পর্ব ১১

#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction🔥
#Part_11(বোনাস পার্ট)
#ফারজানা

“আমার আপু ম্যাসেজ দিয়েছে”

“ওহহ আচ্ছা।আপু বুঝি তোমায় মিথ্যুক নাম্বার ওয়ান আর বদের হাড্ডি বলে?”

“ম মানে?”

“কি ভেবেছো আমি দেখি নাই। তোমার পিছনে দেখো”

শিশির ওর পিছনে তাকিয়ে দেখে আয়নায় তখন আমতা আমতা করে বললো…..

“ও আমার ভাবী হয়”

“ভাবী বুঝি জানে মন হয়। আবার তো বলছে তুমি ধোঁকা দিচ্ছো। তুমি নাকি মিথ্যা কথা বলছো ভালোবাসার দাম দিচ্ছো না এইগুলো বুঝি ভাবী বলে মিস বকবক?”

“এখনি এত অবিশ্বাস নেন আপনি ফোন চেক করুন আর দেখুন কে ম্যাসেজ দিয়েছে নিন ফোন”

শিশির প্রবণের দিকে ফোন এগিয়ে দিয়ে বললো সাথে বাচ্চাদের মতো কান্না…..

“দূর আমি হয়তো ভুল ভাবছি যদি অন্য কেউ হতো তাহলে কি আর আমার হাতে ফোন দিতো আর বলতো দেখার জন্য। হয়তো সত্যিই ওর ভাবী এইসব বলছে। আমি ও দেখছি এখন অর্ণবের মতো হয়ে যাচ্ছি। অর্ণব ঠিকই বলে প্রেমে পড়লে নিজের ভালোবাসা নিয়ে ভয় থাকে যদি হারিয়ে যায় তখন নাকি মাথা ঠিক থাকে না এখন দেখছিলাম তা সত্যি”(মনে মনে)

“এই যে স্যার কি হলো দেখুন ফোন”

“নাহ দরকার নাই। তাছাড়া তোমার প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস আছে । আর তোমার মতো পিচ্ছি মেয়ে এইসব করবে না”

“হিহিহিহি চান্দু তুমি তো আজও এই শিশির কে চিনো না আমার মতো হতে হলে বহুবার জন্মগ্রহণ করতে হবে হিহিহিহি”(মনে মনে)

“শিশির একটা প্রশ্ন ছিলো?”

“হুম বলে ফেলুন”

“তোমার ভাবির নিক নেম জানে মন কেনো দিলে আর কিসের ধোঁকা দিয়েছো আবার ভালোবাসা কিসের ভালোবাসা?”

“যাহ বাবা এইটা এখনও মনে রাখছে কি যে বলি(মনে মনে) আসলে হয়েছে কি আমার ভাবী আমাদের সবার জান তাই আমি ভালোবেসে জানে মন বলি। আর ধোঁকা বলতে আমার ভাবির সাথে দেখা করার কথা ছিলো ভাইয়া কে নিয়ে কিছু কথা বলার জন্য। ভালোবাসা হলো ভাইয়ার সাথে ভাবির ঝগড়া হয়েছে আমাকে বলছে মীমাংসা করতে তাই এইভাবে ম্যাসেজ দিয়েছে বুঝছেন মিস্টার স্যার”

“হুম বুঝছি”

প্রবণ মন থেকে চাচ্ছে কথাগুলো বিশ্বাস করতে বাট তবু ও ওর মনে খটকা লাগছে এখন আবার শিশির কে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে রাগ করবে তাই বলতে পারছে না……

“যাই উঠে ফ্রেশ হই আমার পেটে আবার বিলাতি ইদুর ঘুরাঘুরি করছে”

প্রবণ শিশিরের কথায় হেসে দিলো আর ভেবেও নিলো শিশির সত্যি কথায় বলছে কেননা এই রকম বাচ্চা স্বভাবের মেয়ে কি আর মিথ্যা বলতে পারে…..

শিশির বিছানা থেকে উঠতে যাবে ব্লানকেটে পা আটকিয়ে প্রবণের উপরে পরে গেলো। আর এইদিকে প্রবণ ভাবতে ভাবতে কিছু বুঝার আগেই উল্টো দিকে খাটে পরে গেলো।

শিশির পা থেকে ব্লানকেট সরাতে ব্যস্ত আর এইদিকে প্রবণ শিশির কে দেখতে ব্যস্ত। শিশির পা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করছে বার বার ও ছোট চুল গুলো মুখে এসে পড়ছে হাত দিয়ে বার বার সরাতে গিয়ে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে। অবশেষে সরাতে পারলো ব্লানকেট । যখন উঠতে যাবে প্রবণ খপ করে ধরে ফেললো। শিশির উঠতে যেয়েও আবার পড়ে গেলো। শিশিরের মুখ এসে প্রবণের মুখে বারী খেলো……

“কি করছেন কি ছাড়েন ”

“কেনো এইভাবে ভালো লাগছে না?”

“নাহ আমার লজ্জা করছে। আপনি তো দেখছি এক নম্বরের লুচু স্যার। লজ্জা করে না ছাত্রীকে এইভাবে টাচ্ করতে আপনার নামে আমি মামলা করবো”

“হুম করো আমি ও বলবো আমি আমার বউকে জড়িয়ে ধরেছি তাতে তোমার কি”

“বউ মানে কিসের বউ কবে বউ কখন বউ?”

“দূর কি থেকে কি বলে ফেললাম অর্ণব অনেকবার করে বলেছে যে এইসব না বলি”(মনে মনে)

“এই যে মিস্টার স্যার কি হলো কথা বলছেন না কেনো?”

“নাহ ভাবছি”

“কি”

“এই যে আমাদের খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করা উচিৎ কতদিন আর সিঙ্গেল থাকবো বলো এখন তো মিঙ্গেল হবার বয়স হয়ে গেছে”

“আপনার মতো হাতিকে কে বিয়ে করবে”

“আমি হাতি আমাকে হাতির মতো দেখতে জানো আমার জন্য কত কত মেয়ের বাবারা মেয়ের বিয়ে দিবে বলে অপেক্ষা করছে আর তুমি কিনা আমায় হাতি বলছো। নিজে কি হুম তেলাপোকা এই জন্যইতো আমার মত জিম করা বডিকে হাতি বলছো”

“আমার এইসব জিম করা বডি ভালো লাগে না। আমার কাছে চিকন ছেলে ভালো লাগে। কোনো শার্ট বা গেঞ্জি পড়লে হাত লেগে না থাকে”

“কেনো তোমার চিকন ছেলে পছন্দ কেনো?”

“কারণ যদি রাগ উঠে তাহলে যেনো বলতে পারি ‘তোমাকে এখনি ফু দিয়ে উরিয়ে দিবো’ বেশি বকবক করলে বা ঝগড়া করলে”

“ওই তুমি উঠো তো তোমার সাথে কথা বললে বা থাকলে খুব শীগ্রই আমার পাবনা যেতে হবে। কেনো যে তোমার প্রেমে পড়লাম আল্লাহ জানে”

“হিহিহিহি দিজ ইজ জাস্ট ট্রেইলার , বাট ‘পিকচার আবি ভি বাকি হ্যায়’ হাহাহা”

মনে মনে বিশ্ব জয়ের হাসি দিয়ে বললো শিশির…….

🌿🌿🌿

” কি রে সামু কি করছিস?”

সামিয়া পিছনে তাকিয়ে দেখে ওর কাজিন শুভ্র এসেছে…..

“আরেহ ভাইয়া তুই এখন কোনো দরকার আছে কি?”

“একটা প্রবলেম হয়ে গেছে”

“কি প্রবলেম?”

“আমাদের যাওয়ার ডেইট……”

“কি হলো ভাইয়া বল প্লিজ টেনশন হচ্ছে”

“আমাদের বাংলাদেশে যাওয়ার ডেইট একদিন আগে হয়ে গেছে হাহাহা”

“ওয়াও এইটা তো ভালো খবর। শুন ভাইয়া আমরা অর্ণব আর প্রবণ কে বলবো না। একদিন আগে গিয়ে ওদের সারপ্রাইজ দিবো ঠিক আছে”

“ওকে”

“ভাইয়া তোর এত তাড়া কিসের রে বাংলাদেশ যাওয়া?”

“তুই তো জানিস তোকে তো বলে ছিলাম আমার এক মায়াবিনী আছে বাংলাদেশ এত কাজের জন্য যেতে পারি নাই কিন্তু দুইদিন পর যাবো আর গিয়ে আমার মায়াবিনী কে চমকে দিবো”

“সাথে প্রপোজ ও করে ফেলবি”

“তা আর বলতে ”

“হিহিহিহি পরে একদিন দুই বিয়ে হবে আর যদি প্রবণ বিয়ে করে তাহলে তিনটি বিয়ে কি মজায় না হবে কিন্তু ভাইয়া তুই তো তোর মায়াবিনী কে চিনিস না?”

” চিনবো কিভাবে ওনি তো ওনার সাথে ওনার বোন+ ফ্রেন্ডের ছবি দিয়েছে এখন এর মধ্য কে মায়াবিনী আর কে শালী জানি না”

“তুই বলতে পারলি না তোর মায়াবিনী কে বলতে যে সে কোনটা?”

“বলেছি কিন্তু ও বলেছে ভালোবেসে তার মায়াবিনী কে চিনার জন্য তাইতো আমি আমার ভালোবাসা দিয়ে আমার মায়াবিনী কে ঠিকই চিনে ফেলবো”

“বাহ বাহ”

হাত তালি দিয়ে বললো সামিয়া শুভ্রর কথা শুনে।

🌺🌺

।।।

।।।

।।।

।।।

“আমার পরান যাহা চায় তুমি তাই, তুমি তাই গাে।
তােমা ছাড়া আর এ জগতে মাের কেহ নাই, কিছু নাই গাে ॥
তুমি সুখ যদি নাহি পাও, যাও সুখের সন্ধানে যাও—
আমি তােমারে পেয়েছি হৃদয়মাঝে, আর কিছু নাহি চাই গাে ॥”

তিতি দোলনায় দোল খাচ্ছে আর গান গাইছে……

“বাহ বাহ কি প্রেম। প্রেমের গান তো দেখছি মুখে লেগেই আছে তোর”

তিতি শিশিরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বললো…..

“তোর জিবনে যেদিন প্রেম ভালোবাসা আসবে সেইদিন তুইও বুঝবি আর সেদিনও তুইও গাইবি ভালোবাসার গান”

“আমার জীবনে প্রেম আসবে কি এসে গেছে তো। তনোয়ের সাথে তো আমি প্রেম করছি”

“তোর মনে কি তনয়ের জন্য কোনো ফিলিংস আসে?”

“ফিলিংস টিলিং বুঝি না শুধু জানি পছন্দ করি”

“হুম। যেদিন বুঝবি ওইদিন জানাবি আমায়”

“ওকে। ওই আজকে তো বাসায় যাবো তাই না?”

ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করলো শিশির…..

“হুম কেনো তোর কি আরো থাকার ইচ্ছা আছে?”

“হুম। স্বাধীন তো বাসায়…..”

শিশির বলার আগেই অর্ণব আর প্রবণ বলতে শুরু করলো……

“স্বাধীন এখন নিজেই স্বাধীন হওয়ার রাস্তায়। ও আর তোমাকে বিরক্ত করার ভুল জীবনেও করবে না”

“দুই ভিলেন গিয়ে কাজ সেরে এসেছে”

তিতি শিশির কে বললো……

“খুন করেছেন নাকি হাত পা ভেঙ্গেছেন?”

শিশির বললো তখন প্রবণ বললো…..

“এখনও জীবিত আছে কিন্তু হসপিটাল থেকে এত সহজে ছাড়া পাবে না”

প্রবণের কথা শুনে শিশির ভয় পেয়ে যায়। ওর চোখে তনয়ের মুখ ভাসতে থাকে……

“এত পাকনামি করে লাভ নাই কিছুদিন এই স্যারের কথামত শুনি পরে একদিন সময় বুঝে উরাল দিবো”(মনে মনে ভাবছে)

“এই মিস বকবক কি ভাবছো?

“উহু কিছু না”

“গুড”

ওদিন শিশির আর তিতি কে নিয়ে কিছুক্ষণ ঘুরে অর্ণব আর প্রবণ বাসায় ড্রপ করে দিচ্ছে……

অর্ণব আর তিতি সামনে প্রবণ আর শিশির পিছনে….

অর্ণব গাড়ি চালাচ্ছে আর এক হাত দিয়ে তিতি কে জড়িয়ে ধরে আছে।

“তোমার ফ্রেন্ডের থেকে কিছু শিখো”

“কি শিখবো?”

“সামনে তাকিয়ে দেখো”

শিশির সামনে তাকিয়ে দেখে অর্ণব আর তিতি কি সুন্দর কথা বলছে হাসছে তিতি অর্ণবের হাত জড়িয়ে ধরে আছে।

প্রবণ কি বুঝাতে চেয়েছে শিশির বুঝতে পারলো। লজ্জায় ও বিভিন্ন রঙের ধরন হলো।

“এইভাবে বসে থাকতে থাকতে বোরিং লাগছে। তুমি বরং যাও আমি অন্য গাড়িতে আসছি তোমার সাথে থাকলে আরো বোরিং লাগবে”

প্রবণের এই কথা শিশিরের মন খারাপ হয়ে গেলো।

“আপনি চলে যাবেন?”

কান্না মাখা চোখে…

“তাহলে কি এইভাবে বসে থাকবো”

“যাবেন না প্লিজ। এই দেখুন আমি আপনার হাত জড়িয়ে ধরেছি”

শিশির তিতির মতো জড়িয়ে ধরলো। তিতি আর অর্ণব শিশিরের কথা শুনে হাসছে কিন্তু বুঝতে দিচ্ছে না।

“হইছে এখন দরদ দেখাতে হবে না”

“স্যার প্লিজ যাবেন না। আমি সব কথা শুনবো তো বলছি”

“আচ্ছা যাবো না”

প্রবণ মনে মনে হাসলো সামনে অর্ণব কে চোখ টিপ দিলো সাথে অর্ণব ও…….

চলবে……

বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আজ একটা বোনাস পার্ট দিলাম অনেকে বলছেন প্রবণ শিশিরের কাহিনী দেওয়ার জন্য তাই দিলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here