Love warning পর্ব ২২

#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction🔥
#Part_22(রোমান্টিক🙈)
#ফারজানা

“আমিও। এখন চলো পরে কেউ দেখে ফেলবে”

“হুম চলো…”

অর্ণব বাইক চালাচ্ছে তিতি অর্ণবের ঘাড়ে মাথা রেখে এক হাত দিয়ে অর্ণব কে জড়িয়ে ধরে আছে……

“এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলো তো , যদি পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলোতো?”

“তুমি বলো”

“গানটা খুব সুন্দর তাই না?”

“হুম খুব সুন্দর”

“আমার মনে হয় কি জানো এই গানটা আমাদের দুজনের জন্যই তৈরি হয়েছে”

“কেনো আমাদের জন্য কেনো?”

“এই দেখো কি সুন্দর রাত পুরো আকাশে তারা জ্বলজ্বল করছে আর মিষ্টি বড় চাঁদ। আমি আর তুমি একসাথে লং ড্রাইভে যাচ্ছি সাথে এই সুন্দর চাঁদ ও যাচ্ছে এই বিশাল তারা ভরা আকাশও যাচ্ছে মিষ্টি মিষ্টি বাতাস বইছে আহা কি সুন্দর রোমান্টিক পরিবেশ সাথে এই গান খুব ভালোই জমেছে তাই না এই জন্যই বলছি এই গানটা আমাদের জন্য গায়ক লিখেছেন”

“বাহ বাহ কি রোমান্টিক মানুষ তুমি। এত রোমান্টিক কথা কই পাও নাকি ইমরান হাশমির মুভি ফলো করো ?”

“নাহ রে পাগলি। তুমি পাশে থাকলে কাওকে ফলো করতে হয় না রোমান্টিক কথা এমনি এমনি মুখে চলে আসে”

“এইটা ভালো। যদি ফলো করতে তোমাকে এক্ষনি বাইক থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতাম।”

“কি ডেঞ্জারাস গার্ল ”

“তোমার মত সাইকো কে ঠিক করার জন্যই এমন ডেঞ্জারাস একটু আকটু হতে হয় বুঝতে পারছেন লাভার বয়”

“তাতো অবশ্যই”

অর্ণব তিতি দুইজন কথা বলছে। অর্ণব বাইক চালাচ্ছে তিতি গান গাইছে।

।।

।।

।।

।।

“সাদা শাড়ীর বদলে কালো শাড়ি আনছি শিট। কি যে করি”

আঙ্গুল কামড়িয়ে বলছে শিশির।

“ওহহ নো আমি তো এখনও বিয়া করি নাই আর জামাই ও মরে নাই তাহলে সাদা শাড়ি পড়বো কেনো ভাগ্যিস কালো শাড়ি আনছি। তাড়াতাড়ি শাড়িটা পরে নেই”

শিশির কালো শাড়ি জামার উপরে পড়লো। চুল গুলো ছেড়ে দিলো। পুরো মুখে কালো মেকাপ দিলো। পায়ে ঘুঙুর পড়লো।

“ইসসসসসস টিপ আনতে ভুলে গেছি কি যে করি”

তখন ওর প্রবণের বাড়ির পিছনে রক্তজবা ফুল দেখতে পেলো…..

“স্যার কি ভালো আমার জন্য কত কিছু আগে থেকেই রেডি করে রেখেছে এই জন্যই তো এত ভালোবাসি স্যার”

শিশির রক্তজবা ফুল গাছ থেকে তুলে লাল রং বের করে কালো মেকআপের উপর লাগালো। বড় করে টিপ দিলো। ঠোঁটে দিলো কিছুটা। চুলেও দিলো সাথে সাদা মেকআপ। পুরো রেডি হয়ে ফোনে নিজের কয়েকটা পিক তুললো……

“আল্লাহ নিজের পিক নিজে থেকেই আহত হয়ে যাচ্ছি অন্য কেউ দেখলে তো নিহিত হবেই কি সাজ দিলাম। এখন সত্যিকারের ভুত থাকলে আমায় দেখে দৌড় দিতো হিহিহিহি”

শিশির এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর খুঁজ নিচ্ছে প্রবণের রুম কোনটা।

“ওই রুমটায় দেখছি এখন লাইট অফ হয়েছে তারমানে ওইটা স্যারের রুম। কিন্তু যাবো কিভাবে ওইখানে আমি?”

গালে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো। তখন ওর নজর পড়লো একটা আম গাছের উপর……

“ভাগ্যিস ছোট বেলায় গাছে উঠতে পারতাম আজ এই জন্যই এত বড় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চলেছি। বজ্জাত স্যার আমায় কষ্ট দেওয়া তাই না দেখুন আজ এই কষ্টের প্রতিশোধ কিভাবে নেই”

শিশির শাড়ির আঁচল বেঁধে আম গাছে উঠলো। সাথে কিছু পাথর নিয়ে। প্রবণের রুমের জানালা বরাবর পাথর ছুড়ে মারলো……

“হিহিহিহি পেত্নী এসেছে তোর ঘাড় মঠকাবে কই রে প্রবণ তুই সাহস থাকলে সামনে আয়”

কাগজ দিয়ে মাইক বানিয়ে ডাকছে প্রবণকে……

প্রবণের কোনো সাড়া শব্দ পেলো না তাই আবারো পাথর ছুড়ে মারলো শিশির…..

এইবারের পাথর গিয়ে পড়লো প্রবণের পেটের উপর। পাথর ছোট থাকায় বেশি লাগলো না। প্রবণ মাত্র চোখ বন্ধ করে ঘুমাতে যাচ্ছিলো তখন এই পাথর। চোখ খুলে দেখে কি যেনো শব্দ আসছে……

“এই কে পাথর ছুড়ে মারছিস কে ওইখানে?”

“হিহিহিহি তোর পিন্ডি চটকাতে আসছি আমি হিহিহিহি”

প্রবণ ভয় পেয়ে যায়। শিশির কে দেখে প্রথম চিনতে পারে নাই প্রবণ।

“আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি ভুত রাণী আমায় মারবেন কেনো?”

“খবরদার ভুত রাণী বলবি না আমি পেত্নী রাণী হিহিহিহি”

“উপস সরি পেত্নী রাণী। বলুন আমি কি করেছি আমার অন্যায় কি?”

“তোর খুব বড় অন্যায়। তুই শিশির নামের এক মেয়েকে কষ্ট দিচ্ছিস। তুই জানিস না ওই বাচ্চা মেয়েটা তোকে খুব ভালোবাসে?”

“ও তো কোনোদিন বলে নাই যে ও আমায় ভালোবাসে”

“গাধা জানিস না মেয়েরা মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না আব ভাব দেখে বুঝে নিতে হয়”

“ওই মেয়ের লজ্জা নাই পেত্নী রাণী ও যদি আমায় ভালোবাসতো তাহলে বলে দিতো”

“শালা তোর মুখে পঁচা ডিম”

“কি হলো পেত্নী রাণী কথা বলছেন না কেনো?”

“আমি এত কিছু বুঝি না বাপু। ওই মেয়ে আমায় অনেক কান্নাকাটি করে বলেছে ও নাকি তোকে খুব ভালোবাসে তাই তো আমি আজ আসলাম। তানাহলে কি আমি আমার এত মূল্যবান সময় নষ্ট করতাম”

“আমার কি করতে হবে পেত্নী রাণী?”

“তুই আগামীকাল গিয়ে কলেজের মাঠে প্রপোজ করবি ওই মেয়ে কে”

“আমি করবো কেনো ও করতে পারে না”

“নাহ তুই প্রপোজ করবি এইটাই ফাইনাল ওকে”

“ওকে।।। পেত্নীরা কি ইংলিশ বলতে পারে। হয়তো পারে এখন তো সব ডিজিটাল এই পেত্নীও মনে হয় ডিজিটাল পেত্নী”

প্রবণ এইসব ভাবছে তখনি ওর নজর পরে শিশিরের পায়ের দিকে।

“মুখ কালো পা ফর্সা পায়ে আবার রিং হাতে দেখছি ঘড়ি। তারমানে ওনি যে সে পেত্নী না একদম ডিজিটাল পেত্নী। দাড়াও তুমি আমি আসছি পেত্নী রাণী”

এতক্ষণ শিশির আর প্রবণ কথা বলছিলো। প্রবণ ওর রুমের জানালা থেকেই কথা বলছিলো। ও শিশিরের পায়ের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে দৌড়ে নিচে যেতে লাগলো…..

“কি হলো স্যার দৌড় দিলো কেনো? আমায় চিনে ফেললো নাকি যাই বাবা নেমে পরি আর পালাই”

শিশির তাড়াহুড়া করে গাছ থেকে নামতে যাচ্ছিলো তখন হাত ফসকে গাছের ডাল ছেড়ে দেয় আর পরে যায়…..

শিশির নিচে পড়লো না। তার আগেই প্রবণ ধরে ফেলে…..

“কি গো পেত্নী রাণী এক্ষনি যদি না ধরতাম পরে গিয়ে তো হাত পা ভাঙতে”

“আমি পেত্নী রাণী আমার হাত পা ভাঙ্গে না”

“ওহহ আচ্ছা তাহলে ছেড়ে দেই”

প্রবণ শিশিরকে ছেড়ে দেয় আর শিশির পরে যায়…..

“ওহহ আল্লাহ আমার কোমড় শেষ ”

“তুমি না ব্যাথা পাও না তাহলে….”

“ওই যান তো আপনি এইখান থেকে আমি বাসায় যাচ্ছি”

“ওমা এ গো আপনি তো…”

“ইসসসসসস বুঝে ফেললো কি যে করি”

“এত ভাবতে হবে না উঠুন”

প্রবণ ওর হাত বাড়িয়ে দিলো শিশির হাত ধরে উঠলো…..

“তো মিস বকবক তুমি এত রাতে এইখানে তাও এই সাজে”

“আমার কষ্ট হচ্ছিলো আপনি আমার সাথে কথা বলছেন না কেনো তাই”

“তার জন্য তুমি এত রাতে একা চলে আসবে। এখন যদি কিছু হয়ে যেতো”

“আপনি আছেন না একাই একশো”

“এইগুলো মুভিতে হয় বাস্তবে না। আর এইরকম ভুল কোনোদিন করবে না ওকে”

“হুম”

শিশির তার ব্যাগ নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে লাগলো…..

“ওই এইভাবে বাসায় গেলে মানুষ ভয় পাবে।কোনো গাড়িও পাবে না। এখন এই কালি রং পরিষ্কার করো আমি ড্রপ করে দিবো নে”

“হুম”

প্রবণ শিশির কে ওর রুমে নিয়ে যায় আর বলে ফ্রেশ হওয়ার জন্য…..

।।

।।।

।।

।।

“তিতি চা খাবে”

“হুম ।”

” আমি প্রবণ আর শুভ্র আগে প্রায় লং ড্রাইভে যেতাম তখন অবশ্যই ছোট ছিলাম। আজ থেকে সাত আট বছর আগে টং দোকানে বসে তিন বন্ধু কতই না সময় কাটাতাম। খুব ভালো ছিলো ওই সময় গুলো। বড্ড মিস করি। শুভ্র চলে যাওয়ার পর আমি আর প্রবণ আসতাম এইখানে আর তখন একটা গান শুনতাম ‘ কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই আজ আর নেই’ খুব ভালো লাগতো গানটা”

“হুম বুঝছি এখন যান গিয়ে চা আনুন”

অর্ণব বাইক থেকে নেমে দুই কাপ চা আনলো…..

“জানো অর্ণব এই চা গুলো খেতে খুব ভালো লাগে। একদম মালাই চা আর ঘ্রাণটা তো বেশি জোস”

“চলো ওইখানে একটা নদী আছে বাইক ওইখানে রেখে তুমি আমি ওইখানে গিয়ে বসি”

“হুম চলো….”

তিতি অর্ণব একসাথে বসলো। অর্ণব তার এক হাতে তিতি কে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরলো। তিতি অর্ণবের এক কাঁধে তার মাথাটা রাখলো।

” জানো তিতি পৃথিবীতে তিনজন মানুষকে খুব বেশি ভালোবাসা উচিত।একজন হলো -যে তোমাকে জন্ম দিয়েছে আর। দ্বিতীয় জন হলো বাবা যে তোমার মাথার ছায়া হয়ে সব সময় পাশে থাকে আর তৃতীয়জন হলো-যাকে পাওয়ার জন্য তোমার জন্ম হয়েছে।”

“হুম। বাবা মা হলো তো জীবনের সবচেয়ে বড় মূল্যবান দুইজন ব্যাক্তি। আর ভালোবাসার মানুষ হলো মূল্যবান উপহার। ”

“হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে অনেক দূরে যেখানে রয়েছে তোমার ভালোবাসার সূখের নীড়। আর সেই নীড়ে কাটিয়ে দিতে চাই শত জনম। আমি কল্পনার সাগরে ভেসে চলে যাবো, যাবো তোমার হৃদয় সৈকতে, হারিয়ে যাবো ভালোবাসার এক দেশে। যেখানে আমাদের মাঝে বাধা হয়ে কেউ আসবে না তিতির পাখি”

“খুব ঘুম পাচ্ছে চলো বাসায় যাই”

“তোমার এই এক সমস্যা যখন একটু ভালো মুডে থাকি তখনি তোমার কোনো না কোনো সমস্যা হয়। ”

“কি করবো ঘুম আসলে কি আমার দোষ?”

“চোখের দোষ দেখো আজ এই চোখের কি শাস্তি দেই”

“মাম মানে কি করবে?”

“ভয় পেও না দেখো কি করি”

অর্ণব ভালোবাসার পরশ একে দিলো তিতির চোখ জোড়ায়……

“তুমি যেনো কি বলবে তিতির পাখি?”

“আগে তোমার কথাটা বলো পরে বলছি। আমি চাই না আমার কথা শুনে তোমার কষ্ট হোক রাগ হোক। তাই তোমার কথা শুনে আমি বলছি”

“ওকে যা হুকুম মহারাণী……”

।।

।।

।।

।।

“এই শিশির ছারো সুড়সুড়ি লাগছে হাহা শিশির”

“তো বলছি চুপচাপ দাড়ান”

“তুমি দাঁড়াতে দিলে তো দাঁড়াবো ”

“আমি জাস্ট আপনার হাইট মাপছি এত হাইপার হওয়ার কি আছে”

“তোমাকে তো বলছি আগে”

“তাহলে আমাকে পিচ্ছি কোন কারণে বলেন”

“আর বলবো না এখন সরো। এত দেখছি পুরুষ নির্যাতন। ”

“হাহাহা”

“ওই হাসবে না। আজ দেশে পুরুষ নির্যাতনের কোনো কেস নাই বলে তোমরা মেয়েরা খুব সহজে বেঁচে যাও দাড়াও একবার পুরুষ প্রধানমন্ত্রী আসুক তখন আমাদের ও দিন আসবে”

“ওই আশায় বসে থাকেন হুহহহহহ”

“সবার আগে তোমাকে জেলে দিবো আমি দেখে নিও”

“কি বললেন”…….

প্রবণ কে সুড়সুড়ি দিতে লাগলো। প্রবণ খাটের উপর পড়ে গেলো সাথে শিশির ও। শিশিরের কোনো হুস নাই ও ওর মতো সুরসুরি দিচ্ছে। প্রবণ শিশিরের থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। শিশিরের গালে কিস করে ফেললো। শিশির সুড়সুড়ি দেওয়া বাদ দিয়ে উঠে বসে পরলো। আর গালে হাত দিয়ে বসে রইলো……

চলবে…….

বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here