#Marriage_With_Benefits
#Part_37
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
বাবা।আমার না খুব খারাপ লাগছে।কেনো জানি মনে হচ্ছে আভি আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে।
আমি বাবার পায়ের কাছে বসে কান্না করছি।
বাবা।আভি তো শুধু ব্যবসার কাজে বাহিরে গেছে তাই না?কিন্তু তবুও আমার ওকে ছাড়া একটু ভালো লাগছে না।বাবা আপনি তো জানেন আমি আভিকে কতো ভালোবাসি।আমি তো আমার সব কথা আপনাকে বলি।আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন পরে আপনার ছেলে ইচ্ছা মত বকা দিবেন।আমাকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য।
।
।
বাবাকে নিয়ে রুমে এসে উনাকে খাইয়ে আমি বাহিরে চলে গেলাম আর সাথে করে আয়ুশ কেও নিলাম।যাতে করে কোনো সমস্যা না হয়।এমনি এমনি তো আর কেউ আমাকে কোনো ঔষুধের ইনফরমেশন দিবে না।
শহরের বড়ো বড় ফার্মেসিতে গিয়েও কিছু ইনফরমেশন পেলাম না।আয়ুশ এর জোরাজুরিতে এইটুকু ইনফরমেশন পেলাম যে এই ঔষুধ ডক্টরের পারমিশন ছাড়া নেওয়া যায় না।এইটা একটা বিদেশী ঔষুধ যেটা শুধু কোনো সাধারণ মানুষ আনতে পারে না।এখন আমাদের এখন ভালো ডক্টর খুঁজতে হবে যার থেকে আমি এই ইনফরমেশন নিতে পারবো।
আয়ুশ তুমি কি কোনো ভালো ডক্টরের সন্ধান দিতে পারবে আমাকে?(আমি)
ভাবী।আমার পরিচিত তেমন ভালো ডক্টর নেই।তবে দাদু আর ভাইয়ের থাকতে পারে।(আয়ুশ)
দাদুকে এখন জানানো ঠিক হবে না উনি খুব টেনশন করবে আর এই বয়সে টেনশন করা উনার পক্ষে ঠিক না।আর আভি ব্যবসার কাজে বাহিরে গেছে এই জন্য আমি কাল রাতেই কিছু বলিনি ও টেনশন করবে বলে। না হলে ওই কিছু একটা করতে পারতো।কিন্তু এখন কি করা যায়?পরিচিত ডক্টর ছাড়া তো কেউ আমাকে এমনি এমনি সাহায্য করবে না।(আমি খুব চিন্তিত হয়ে)
একজন আছে তোমাকে সাহায্য করতে পারে।(আয়ুশ)
কে?(আমি অবাক হয়ে)
কলি আন্টি আর জিসান আঙ্কেল।কলি আন্টি তো বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতো।উনার পরিচিত ডক্টর থাকতে পারে।আর আমি তো এই শুনেছি জিসান আংকেলের বোনের ছেলে জয় ও একজন ডক্টর।(আয়ুশ)
আরে বাহ!আমার দেবর মশাই কতো ইন্টেলিজেন্ট একদম তার ভাবির মতো।দোয়া করি খুব ভালো একটা বউ পাও।
বলেই আয়ুশকে নিয়ে খান মেনশানে গেলাম।
আয়ুশ আমার কথায় শুধু একটা মুচকি হাসি দিলো।
।
।
জয়কে কেনো দরকার তোর?(জিসান ভ্রু কুঁচকে)
পরেই আমি সব কিছু খুলে বললাম বাবা আর মাকে।
এইটা তো চিন্তার বিষয়।তাহলে আমি আজই জয়কে ফোন করে বলি দেশে ফিরতে।(কলি)
হুম।(আমি)
পরেই মা জয়কে ফোন করে দেশে আসতে বললো।
ভালো খবর!(কলি)
কি মা?(আমি অবাক হয়ে)
জয় নাকি আজকের রাতের ফ্লাইটেই দেশে ফিরবে।ওর আসতে আসতে কালকে।(কলি)
আরে বাহ!এইটা খুব ভালো খবর।(আমি)
এখন তোমার চিন্তা তো দূর হলো ভাবী?(আয়ুশ)
না এখনও হয় নি।বাবা আমার তোমার আরেকটা সাহায্য করতে হবে।(আমি)
আরে বলে ফেল।(জিসান)
বাবা।আমাকে আদি বাবার নার্সের ইনফরমেশন লাগবে।আমার কেনো যেনো মনে হচ্ছে উনি মানুষটা ভালো না।তুমি একটু দেখবে?(আমি)
আচ্ছা।তোর ইনফরমেশন তুই পেয়ে যাবি।(বাবা)
পরেই বাবা আর মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
।
।
বাসায় এসেই খাবার দাবার খেয়ে সবাই যে যার ঘরে ঘুমাতে যাবো তখনই চোখ গেলো ঘড়ির দিকে বারোটা বাজতে চললো কিন্তু এখনও আরশি বাসায় আসলো না।মেয়েটার জন্য চিন্তা হচ্ছে।এতো দিন তো দশটার আগেই বাসায় থাকতো কিন্তু এখন কি হলো ওর?
চাচী মা।চাচী মা(আমি ঈশানি চাচীর রুমে দরজায় টোকা দিয়ে)
কি হলো? দিনে তো শান্তি মতো বাঁচতে দাও না এখন কি রাতেও শান্তি মত ঘুমাতেও দিবে না।(ঈশানি)
আপনি কি মা?আপনার মেয়ে একটা এখনও বাসার বাহিরে আর সে দিকে আপনার একটু চিন্তাও নেই।আপনি কি করে পারেন নিশ্চিতে ঘুমাতে?(আমি রেগে)
আমার মেয়ে আমার চিন্তা।তোমার এতো করার দরকার নেই।
বলেই ঈশানি চাচী রুমের দরজা বন্ধ করতে যাবেন তখনই আমি দরজা ধরে বললাম
আপনার মেয়ে হতে পারে কিন্তু ও এই বাড়ির মেয়েও।আর আমি এই বাড়ির বউ।যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি বলছে আরশি কোথায়?ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনাকে শান্তিতে ঘুমাতে দিবো না আর আপনি জানেন আমি যা বলি তাই করি।(আমি)
আরশি ওর এক ফ্রেন্ডের বাসায় গেছে।তার নাকি আজ জন্মদিন।(ঈশানি)
অ্যাড্রেস দিন।(আমি)
কেনো দিবো?ও আমাকে বলে গেছে আর আমিও তোদের চিনি ওরা অনেক বড়লোক তোমার মত ভিক্ষারি না।(ঈশানি)
আহ্।আস্থা যখন চাইছে দিয়ে দাওনা এড্রেসটা।(রোহান)
তুমি চুপ থাকো।তোমার না ঘুমে ধরছে ঘুমাও।(ঈশানি)
আপনি চুপ থাকুন।আমাকে অ্যাড্রেস দিবেন কি না?বলুন।আমি আপনার কথায় বিশ্বাস করি না।আমি নিজে গিয়ে দেখবো যদি মনে হয় ওই বাড়িতে ওর থাকা সেফ তাহলে ও ওই বাড়িতে থাকবে।আর যদি আমার মনে না হয় তাহলে টেনে হেঁচড়ে আমি ওকে নিয়ে আসবো।এখন দিবেন কি না?(আমি চিৎকার করে)
পরেই ঈশানি আমার সাথে না পেরে অ্যাড্রেসটা দিতে বাধ্য হলো।
একা গেলে চলবে না।কাউকে সাথে নিয়ে যেতে হবে কাকে নিতে যাবো?আয়ুশ?হা ওকেই নিয়ে যাই।
আয়ুশ আয়ুশ!(আমি আয়ুশ এর দরজায় টোকা দিয়ে)
ভাবী?(আভি চোখ কচলাতে কচলাতে)
আয়ুশ আরশি এখনও বাড়ি ফিরেনি।(আমি)
কি বললে?ওই মেয়ে আবার দেরি করে ফেরা শুরু করে দিয়েছে।(আয়ুশ)
ও নাকি ওর কোন এক ফ্রেন্ডের বাসায় আছে।আমার কেনো জানি সন্দেহ হচ্ছে।তুমি একটু যাবে আমার সাথে?(আমি)
আচ্ছা।চলো ভাবী।
বলেই আয়ুশ আর আমি আয়ুশ এর গাড়ি দিয়ে সেই ফ্রেন্ডের বাসায় গেলাম।
কিন্তু সেখানে কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না।তবে সেখানে গিয়ে আমরা জানতে পারি ওরা নাকি ক্লাবে গিয়েছে।সেখানেই নাকি বার্থডে পার্টি।আমার টেনশন আরো বেড়ে গেল।
আয়ুশ।তাড়াতাড়ি চালাও।(আমি)
ভাবী।তুমি চিন্তা করো না।বেশিক্ষণ লাগবে না।(আয়ুশ)
এখন আমার মনে হচ্ছে দরকারের সময় সত্যিই রাস্তা ফুরায় না।মেয়েটা একা আছে।কিছু হলে কি হবে?দিনকাল যা পড়ছে যদি খারাপ কিছু হয় সামলাতে পারবে না।আর এই রাস্তা যেনো আজ আমার সাথে আরি পেতে বসে আছে যে আজ শেষ হবেই না।টেনশনে যে মানুষের মনে খারাপ ভাবনা আসে তা এখন স্পষ্ট। আমার মনেও অনেক খারাপ ভাবনা আসছে।শুধু উপরওয়ালার কাছে এইটুকু দোয়া আমরা যাতে খারাপ কিছু হাওয়ার আগেই পৌঁছাতে পারি।
ভাবী পৌঁছে গেছি।(আয়ুশ)
চলো চলো।দেখি।(আমি)
তুমি যাও।আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি।(আয়ুশ)
আচ্ছা।তাহলে তুমি এসো।
বলেই আমি ঢুকতে যাবো তখনই আমাকে তাড়া আটকালো।
কি হলো তুমি ডুকো নি কেনো?(আয়ুশ)
পার্টনার ছাড়া ঢুকতে দিচ্ছে না।(আমি)
উনি আমার পার্টনার।এখন তো ঢুকতে পারবো?(আয়ুশ)
জ্বি।
।
।
ভিতরে
আয়ুশ ওর ফ্রেন্ড কোনটা?(আমি)
দাড়াও খুঁজে দেখছি।(আয়ুশ)
পরেই আমি আর আয়ুশ মিলে আরশি আর ওর ফ্রেন্ডকে খুঁজতে শুরু করলাম।কি অবস্থা?মত খেয়ে একেকটা মাতাল হয়ে নাচানাচি করছে।এদের পরিবার কি এইসব জানে?জানলে কি একটা অবস্থা হবে এদের?আরশি এই জঘন্য জায়গাতে এসেছে?না জানি মেয়েটার কি অবস্থা!একবার পাই পার্টি বের করবো।
ভাবী।পেয়েছি আরশির ফ্রেন্ডকে!(আয়ুশ)
কোথায়?(আমি)
ওই যে দেখো মদ গিলছে।(আয়ুশ)
আমি আর আয়ুশ মেয়েটার কাছে গেলাম
এই মেয়ে আরশি কোথায়?(আমি)
আরশি কোথায় তা জেনে আপনি কি করবেন?(খুব রুডলি মেয়েটা উত্তর দিল)
এই তোমাকে যেটা জিজ্ঞেস করছি তার উত্তর দেও।(আয়ুশ রাগী গলায়)
দেবো না।কি করবেন?মারবেন?ছেলে হয়ে মেয়ের গায়ে হাত তুলবেন?(মেয়েটা আর ওর বাকি বন্ধুরা হাসতে হাসতে)
আমি সোজা মেয়েটার গালে কষে একটা চড় বসিয়ে দিলাম।
মেয়েটা তাল সামলাতে না পেরে পরে গেলো।ওর বন্ধুরা আমাকে ধরতে আসবে তখনই আয়ুশ ওদের দিকে ভয়ংকর ভাবে তাকালো আর ওরা পিছু হটে গেলো।
আমি মেয়েটার কাছে গিয়ে ওকে টেনে তুলে বললাম
যদি আরেকটা থাপ্পড় না খেতে চাও।ভালোয় ভালোয় বলো আরশি কোথায়?
মেয়েটাও অনেক বেয়াদব ও আমাকে আরশি কোথায় না বলে সিকিউরিটি সিকিউরিটি বলে চিৎকার করতে শুরু করলো
আমার মাথা আবার খারাপ হয়ে গেলো আর সাথে সাথেই আবার একটা কষে থাপ্পড় মারলাম।কিন্তু এইবার পড়ার আগেই ধরে ফেললাম।
সিকিউরিটির ভয় আমাকে দেখাতে এসো না।এখন বলো আরশি কোথায়?নাকি আরো কত গুলো খাবে?
এইবারের চড়টা খুব ভালো ভাবেই লেগেছে মেয়েটার ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছে।চোখ দিয়ে পানি পড়ছে মেয়েটা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললো
আরশি আমার ভাইয়ের সাথে উপরের একটা রুমে আছে।
ও তোমার ভাইয়ার সাথে রুমে কেনো?(আয়ুশ)
আমার ভাই ওকে প্রপোজ করছিলো। ও না করে দিয়েছে আর তা আমার ভাইয়ের ইগোতে খুব লেগেছে।তাই তার প্রতিশোধ নিতেই আরশিকে আজ নেশা করিয়ে ওর সাথে রাত কাটাবে বলে প্ল্যান করেছে।(মেয়েটা)
কে প্ল্যান করেছে?(আমি)
আমি আমার ভাই আর আমাদের সব বন্ধুরা।(মেয়েটা কাদতে কাদতে)
অফিসার আপনারা তো শুনলেই।এখন একে গ্রেফতার করুন প্লীজ।(আয়ুশ)
আর এই নিন।এতে ওর বলা সব কিছু রেকর্ড করা আছে।প্রমাণ হিসেবে।(আমি)
আচ্ছা। কনেস্টবল ওদের নিয়ে যাও।আমি উনাদের সাথে গিয়ে আসল কালপ্রিটকে ধরে নিয়ে আসি।(অফিসার)
ওকে।স্যার
বলেই উনারা ওদের ধরে নিয়ে গেল।
আমি আয়ুশ আর অফিসার আর বাকি পুলিশ উপরে গেলাম।
আরশি প্লিজ নিজের কিছু হতে দিও না।(আমি মনে মনে)
আই অ্যাম সরি বোন।তোকে ভালো করে রক্ষা করতে পারলাম না।(আয়ুশ মনে মনে)
আয়ুশ দরজা ভেঙ্গে ফেলো।(আমি)
আয়ুশ দরজা ভাঙতেই আরশি এসে আয়ুশকে জড়িয়ে ধরলো।
ভাই তুই এসেছিস?ওরা আমার সাথে খারাপ কিছু করার চেষ্টা করছিলো।(আরশি কান্না করতে করতে)
আরশির জামা কাপড় প্রায় ছেরা। গালে থাপ্পড়ের দাগ দেখা যাচ্ছে।কপালের সাইড ফুলে গেছে চুল গুলো এলোমেলো।কিন্তু ভাগ্য ভালো এখনও ওকে কিছুই করেনি আমরা ঠিক সময়ই এসেছি।আয়ুশ ওর পরনের জেকেটটা আরশিকে পরিয়ে দিলো।
পরেই পুলিশ ওই ছেলে আর ওর বন্ধুদের ধরে নিয়ে গেলো।সকালে গিয়ে আয়ুশ বাকি কাজ গুলো সেরে দিয়ে আসবে যাতে ওরা কঠিন শাস্তি পায়।আমি,,আয়ুশ আর আরশি এখনও সেই রুমেই আছি।আমার আরশির অবস্থার কথা ভাবতেই হাত পা কাপছে আমি যেনো এখনই দাড়িয়ে থাকা থেকে পড়ে যাবো।দাড়িয়ে থাকার কোনো শক্তিই আমার নেই তাই আমি ঠপ করে মাথায় হাত বিছানায় বসে পড়লাম।
আস্থা তুমি ঠিক আছো?(আয়ুশ)
আয়ুশ।আজ কি হতে পারত তুমি ভাবতে পারছো?(আমি কাপতে কাপতে)
আয়ুশ আরশির দিকে তাকালো আরশি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে।আমার ওর এই মাথা নিচু একটু সহ্য হলো না।গিয়েই ঠাস করে ওর গালে কষে একটা চড় মারলাম।
এই জন্যই তোমাকে বলেছিলাম। শালীনতা বজায় রেখে চলতে।কথা যদি তুমি একটু শুনতে তাহলে আজ এই দিন তোমাকে দেখতে হতো না।তোমার কি মনে হয় ছোটো ছোটো কাপড়ে পরে তুমি নিজেকে কুল ভাবো আসলে কি বলতো তোমার মত ফুল আমি জীবনেও দেখি নি। আরে নিজের ভালো তো পাগলেও বুঝে কিন্তু আফসোস তুমি বুঝলে না।আর তোমাকে আমি বুঝাতেও পারলাম না।নিজের কথা না ভাবতে পারো নিজের পরিবারের কথা ভাবো।তোমার মা যে তোমাকে এতো স্বাধীনতা দিয়েছে সে যদি তোমার এই অবস্থা দেখে তখন তার কেমন লাগবে।আর তোমার এই আদরের ভাই(আয়ুশকে টেনে সামনে এনে) আর আভি ওরা যখন নিজের আদরের ছোটো বোনের ক্ষত বিক্ষত শরীর দেখতো তখন ওদের কেমন লাগতো বলো?আর তোমার বাবা উনার আদরের মেয়ের,,উনার রাজকুমারীকে ওই অবস্থায় সহ্য করতে পারতো?আর সবচেয়ে বড় কথা হলো তোমার দাদু,,ওই লোকটাকে তো তোমরা ভাইবোন বলেই রেখেছো শান্তিতে থাকতে দিবে না।একজন ঘৃণা করে(আভি) আরেক জন ধারের কাছেও যায় না(আয়ুশ) আর তুমি,,তুমি তো মনে হয় উনাকে কোনো দিন দাদু বলোইনি।কিন্তু উনি তোমাদের কতো কেয়ার করে শুনবা?আজ অফিসার,, উনি পাঠিয়েছেন যাতে আমাদের তোমাকে খুঁজতে সমস্যা না হয়।তোমাদের জন্য উনাদের মন কাদে আর এই জন্যই উনি এসএমএস করে আমাকে অফিসার আসবে আর তাদের নিয়ে কাজ করতে বলেছে।কারণ উনি জানতো আমরা ওদের সাথে একা নাও পারতে পারি।উনার আমাদের খেয়ালও ছিলো।কিন্তু আফসোস তোমরা কখনও ওই বুড়ো মানুষটাকে বুঝবা না।
কথা গুলো বলতে বলতে আমি হাপিয়ে উঠলাম।
কেনো বুঝবো আমরা?উনি কেনো আড়াল থেকে সাহায্য করবে আমাদের?উনি চাইলেই তো এসে তোমার মত থাপড় দিয়ে বুঝিয়ে দিতে পারে।যখন মার শাসন করার দরকার ছিল তখন কেনো উনি আমাকে শাসন করে নি?কেনো উনি আমাকে বকা দিলো না?আর তুমি ভাইদের কথা বলছো!ওরা তো ওদের নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়েই টানাপোড়নে ছিলো আমার জন্য ওদের ভালোবাসা? হাসিও না আমাকে(তাচ্ছিল্য করে)।আর বাবা?উনি তো মার উপর একটা কথাও বলতো না।রাজকুমারী বলেছিলে না আমাকে?রাজার বাড়িতে কেউ জন্মালেই রাজকুমারী হয় না?ভালোবাসা লাগে!জিজ্ঞেস করো তো এদের কখনও আমার প্রাপ্য ভালোবাসাটুকু আমাকে দিয়েছে কিনা?আর এদের কি বলবো?আমার মা দিয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করো তো?
বলেই আরশি কাদতে শুরু করলো।
।
।#Marriage_With_Benefits
#Part_38(#Surprise_Part_1)
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আমি ওর কথা গুলো খুব মনোযোগ সহকারে শুনলাম।আরশির কথা গুলোও ভুল না।ছেলেমেয়েদের ভালোবাসার সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন।কিন্তু এই জন্য আমি দাদু,,আভি,,আয়ুশ,,চাচা,,চাচী কাউকে দায়ী করতে পারি না।কারণ সবাই যার যার পরিস্থিতে আটকে ছিল।আসলে এই পরিবারের সবার সম্পর্কই ছিন্নভিন্ন।কেউ ছিলো না ওদের সম্পর্ক গুছিয়ে দেওয়ায় মতো কিন্তু আর না যেহেতু আমি এসেছে সবার সম্পর্ক সাজিয়ে দিয়ার দায়িত্ব আমার।
আমি আরশির মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম
সবাই সবার পরিস্থিতির মধ্যে বাধা ছিলো।তবে যা ছিলো তা ছিলো অতীত।এখন যা হবে ভবিষ্যত।অতীত কালো ছিলো তার দায়িত্ব যেমন সবার তেমন ভবিষ্যত যেনো সুন্দর হয় তার দায়িত্বও সবার নিতে হবে।আর এই জন্য রাগ,অভিমান,,জিদ সব ভুলে ভালোবাসতে হবে।
তোমাকে আমি ভালোবাসতে পারবো না(আরশি নাক ফুলিয়ে)
আরশি কি বলছিস?(আয়ুশ রাগ দেখিয়ে)
ঠিকই বলছি।(আরশি)
আমি কি জানতে পারি কেনো?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
কারণ তুমি আগে কেনো আমার জীবনে আসলে না।
বলেই আরশি আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি অবাক হয়ে গেলাম।
পরেই ও আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করলো
তুমি যদি আমাদের জীবনে এতো আগে আসতে তাহলে আমাদের এলোমেলো সম্পর্ক গুলো ঠিক হয়ে যেতো।আর আমি তোমাকে কিন্তু এক শর্তেই ভালোবাসতে পারবো।(আরশি জড়িয়ে ধরেই)
কি শর্ত?(আমি অবাক হয়ে)
তুমি কোনো দিন আমাকে আর আমাদের পরিবারকে ছেড়ে যেতে পারবে না।(আরশি)
হুম।যাবো না।খুশি?
আমি আরশির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে।
অনেক খুশি!(আরশি)
বাহ!ভাবীর ভালোবাসায় এখন ভাগ বসানোর লোক এসে পড়েছে।আচ্ছা আমি কি ভাগ পাবো?(আয়ুশ)
যা।ভাগ আমি কাউকে ভাগ দিবো না।(আরশি হাত দিয়ে আয়ুশ কে সরিয়ে)
তাই নাকি শাকচুন্নি।
বলেই আয়ুশ আরশির মাথায় থাপ্পড় মারলো।আর আমাকে টেনে ওর কাছে নিয়ে আসলো।
পরেই আরশি ছাড় বলে চিৎকার করে টেনে আমাকে ওর কাছে নিয়ে গেলো,,
এইভাবে দুইভাই বোন আমাকে নিয়ে অনেকক্ষণ টানাটানি করতে শুরু করলো।
আরে অনেক হয়েছে।এইভাবে আমাকে নিয়ে টানাটানি করলে তোমার আভি ভাইয়া কিন্তু কিছুই ভাগে পাবে না।(আমি)
ওকে দিলে তো!তুমি শুধু আমাদের ও আসলে ওকে ভাগ দিবই না।(আরশি আর আয়ুশ এক সাথে)
হইছে হইছে।এখন চলো।রাত দুটো বাজে আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।আর তোমার(আরশি) ক্ষত গুলোকে পরিস্কার করে মেডিসিন লাগাতে হবে।(আমি)
আমার জীবনের সব ক্ষত গুলোকে ভরতেই তো তোমার আগমন।(আরশি)
আমি মুচকি হাসি দিলাম।পরেই আমরা বাসায় চলে আসলাম।আরশি আমার সাথেই ঘুমালো।আভি না আসা পর্যন্ত ও নাকি আমার সাথেই থাকবে।আসার পর ক্ষত গুলো পরিস্কার করে মেডিসিন লাগিয়ে দিলাম।এখন ও ঘুমাচ্ছে।আমি জেগে আছি।আজ একটা স্পেশাল দিন আজ আমার আর আভির বিয়ের ছয় মাস পূর্ণ হলো।ভাবলাম আভিকে একটা ফোন দেই।
আভিকে অনেক বার ফোন দিলাম।কিন্তু ওর রিং বেজে যাচ্ছে ও ধরছে।হয়তো ঘুমাচ্ছে।কিন্তু এত কিসের ঘুম এইদিকে আমার ওকে ছাড়া ঘুম আসছেই না আর উনি নাক ডেকে ঘুমাবেন।থাক হয়তো উনি অনেক ক্লান্ত।তবে আর একবার দিয়ে দেখি যদি এইবার ধরে,,,
রিং বাজার অনেকক্ষন পর ধরলো
আভি!কেমন আছো?অনেক মিস করছি তোমাকে?তুমিও কি আমাকে মিস করছো?(আমি অনেক উৎসাহ নিয়ে)
আমি ভালো আছি।বার বার ফোন করো না।আমি অনেক বেস্ত দরকার হলে আমিই ফোন করবো।
বলেই আভি ফোনটা কেটে দিলো।
আমার খুব খারাপ লাগলো।হতে পারে ও অনেক বেস্ত কিন্তু তবুও একটু ভালো করে কথা তো বলতে পারতো।আমি কেমন আছি একবার জিজ্ঞেসও করলো না।আভি কি হয়েছে তোমার?(আমি মনে মনে)
এই সব কথা ভাবতেই চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরলো।আগেই যেই আমি এতো কষ্ট করলেও চোখ দিয়ে পানি পড়তো না আর আজ সেই আমি আজ কান্না করছি তাও ছোট্ট একটা অবহেলায়।ভালোবাসার মানুষের ছোট্ট অবহেলা যে কতো কষ্ট দেয় বুঝতে পারলাম।
।
।
সকালে আযানের আওয়াজ শুনেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো।আসলে সারারাত ভালো ঘুমই হয় নি।মনটাও খারাপ তাই ভাবলাম নামাজ দিয়ে দিন শুরু করি।আমি ওয়াশ রুম থেকে ওযু করে বের হয়েই আরশি উঠলো।
ভাবী আমিও নামাজ পড়বো।(আরশি)
হুম। পরো।(আমি)
পরেই আমি আর আরশি নামাজ পড়ে নিলাম।আমি সকাল সকাল নিয়ম অনুযায়ী বাবাকে নিয়ে হাঁটতে বের হলাম।আজ আরশিও আছে আমার সাথে।বাবা,,আমি আর আরশি পুকুরের কাছে যেতেই দেখি সেখানে আগে থেকেই দাদু বসে আছে আর আরিফ দাড়িয়ে আছে।
দাদু।শুভ সকাল।(আমি)
শুভ সকাল।ওরে বাবা সাথে কে?(দাদু আরশিকে দেখে চমকে গেলো)
আরমান স্যার।আপনার একটা মাত্র নাতনী চিনেন না।অবশ্য চিনবেন কি করে?উত্তরের হাওয়া দক্ষিণ দিয়ে বইয়ে কি আর আবহাওয়ায় আবাস পাওয়া যায়(আরিফ)
আরিফ আঙ্কেল।আপনি আরেকটা কথা বললে ধাক্কা দিয়ে কিন্তু পানিতে ফেলে দিবো।(আরশি কোমরে হাত দিয়ে)
এখন বুঝা যাচ্ছে।উনি আরশি চৌধূরী।(আরিফ)
আ আ। ভাবী কিছু বলবে আরিফ আঙ্কেলকে?(আরশি কাদো কাদো)
ওরে বাবা।আস্থা পাস্তা থেকে আস্থা ভাবী হয়ে গেলো।ছোটো মামনি এতো শক এক দিনে খেলে বদহজম হবে।(আরিফ)
আরিফ আঙ্কেল।
বলেই আরশি আরিফ আঙ্কেলকে ধরার চেষ্টা করলো।
আর আরিফও দৌড়।
আমি আর দাদু পুকুর পাড়ে বসে বসে হাসছি।
বাহ!আমাকে ছেড়েই কি সুন্দর ছোঁয়াছুয়ী খেলা হচ্ছে?এইটা কিন্তু ঠিক না।(আয়ুশ)
ওরে ওরে।বাংলার আরেক নবাব কোথা থেকে আসলো।(দাদু অবাক হয়ে)
দেখো দাদু।চৌধূরী মানেই নবাব।(আয়ুশ ভাব নিয়ে)
আস্থা আমার হাপানি শুরু হয়ে গেলো।ও কি বলছে কিছু বুঝতে পারছো?(দাদু নেকামি করে)
দাদু,,,(আয়ুশ নাক ফুলিয়ে)
ওরে বাবা। ষাড় ক্ষেপে গেছে।
বলেই দাদু উঠে আস্তে আস্তে দৌড় দিলো।
দাদু দাড়াও।এটা তোমার দৌড়ানোর বয়স না।(আয়ুশ দাদুর পিছু পিছু ধাওয়া করতে লাগলো)
আরে ব্যাটা।কি বুঝবি?আমি এখনও আগের মতই দৌড়া দৌড়ি করতে পারি।তোর দাদীকে পটানোর সময় কতো দৌড় খাইছি।(দাদু)
কিহ!দাদু তুমি এমন ছিলে?(আরশি হাসতে হাসতে)
তোদের কি মনে হয়?আমার সময় আমিও ছিলাম।(দাদু ভাব নিয়ে)
চলো সবাই ছুঁয়াছুঁই খেলি।দাদু তুমিও চলো।নাকি এখন আর আরেক মতো নেই?(আরশি টিটকারি করে)
কি মনে হয়?সব কয়টা হারিয়ে ছাড়বো।(দাদু)
পরেই সবাই ছুঁয়াছুঁই খেলছে।
আমি এতো ক্ষন ওদের কান্ড দেখছিলাম আর হাসছিলাম। কতো বছর পর তাদের সম্পর্ক এমন হলো।সম্পর্কের মধ্যে সব চেয়ে প্রয়োজন কথা বলা।মন খুলে কথা বলা।যতক্ষণ পর্যন্ত না কথা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত সম্পর্ক ঠিক হয় না।সব রাগ,,অভিমান কথার মাধ্যমে ঠিক হয়ে যায়!আজ এই হাসি খুশি পরিবার তার প্রমাণ।
ভাবী আসো তুমিও খেলবে।(আরশি)
আসছি।বাবা আমি আর আপনিও গিয়ে খেলি।
বলেই উঠতে যাবো তখনই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো।
ভাবী।ঠিক আছো?(আয়ুশ)
হ্যা।আমি একদম ঠিক আছি।বসা থেকে উঠলাম তো তাই মাথা ঘুরে গেল।(আমি)
ওহ।আচ্ছা।(আরশি)
চলো খেলি।
বলেই আমি আর বাবা দুইজন মিলে ওদের যোগ দিলাম।কিছুক্ষণ আমি বাবার হুইলচেয়ার নিয়ে দৌড়াই তো কিছুক্ষন আরিফ আর আয়ুশ।
সবাই কি সুন্দর হাসিমুখে দিন কাটাচ্ছে!এই খুশিতে যেনো কারো নজর না লাগে।
অনেক হয়েছে খেলা।এখন চলো।(দাদু)
কেনো দাদু?তোমার জোশ ফুস।(আরশি হাসতে হাসতে)
আরে তোরা ক্লান্ত বলে বলছি নাহলে আমার শরীরে এখনও শক্তি আছে।(দাদু হাপাতে হাপাতে)
স্যার।আপনিই কিন্তু বলেছেন মিথ্যা কথা বলতে নেই।আর আপনিই মিথ্যা কথা বলছে।হাপাতে হাপাতে কথা বের হচ্ছে না মুখ থেকে আর আপনার নাকি শরীরে এখনও শক্তি আছে।(আরিফ)
হতচ্ছাড়া আরিফ।তোকে সত্যবাদী হতে কে বলছে?(দাদু আরিফের কান ধরে)
সরি স্যার স্যার সরি তো।(আরিফ)
আমি,আয়ুশ আর আরশি মিলে দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাসছি তখনই আবার মাথা ঘুরিয়ে পরে যেতে লাগলাম।কিন্তু সাথে সাথেই আয়ুশ ধরে ফেললো।
ভাবী।তুমি ঠিক আছো?কি হলো তুমি খালি মাথা ঘুরিয়ে পড়লে যে?(আরশি চিন্তিত হয়ে)
মনে হয় শরীরটা ক্লান্ত।(আমি)
কালকে ভালো করে রেস্ট নেও নি তো তাই মনে হয় এমন মনে হচ্ছে।(আয়ুশ)
এই জন্যই তো বলছি।এখন খেলা বন্ধ করে রেস্ট নাও।(দাদু)
হুম।(আমি)
।
।
খাবার দাবার শেষ করে আমি বিশ্রাম নিতে গেলাম।ইদানিং শরীরটা ভীষণ খারাপ লাগে।খাবার খেতেও মন চায় না।যা খেয়েছি তাও কিছুক্ষণ আগে বমি করে ফেলে আসলাম।ভাবছি গিয়ে ডক্টর দেখাবো।কালকে বাবাকে(পালিত) হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে চেক আপ এর জন্য তখন নিজে গিয়েও ডক্টর দেখিয়ে আসবো।
এইসব ভাবতে ভাবতে যে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম খেয়ালই করিনি।আমার ঘুম ভাঙ্গলো আয়ুশ এর ডাক শুনে।
ভাবী।তুমি কি ঘুমাচ্ছো?(আয়ুশ দরজায় টোকা দিতে দিতে)
না আয়ুশ দাড়াও আসছি।
বলেই বেড থেকে উঠে দরজার খুলেই দেখলাম।আয়ুশ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
এই কি হয়েছে?(আমি চিন্তিত হয়ে)
আসলে জিসান আঙ্কেল আর কলি আঙ্কেল আমাকে ফোন দিয়ে বললো উনারা নাকি তোমাকে ফোন দিয়ে পাচ্ছে না।(আয়ুশ)
ওহ।ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমিয়ে ছিলাম তো তাই মনে হয় পাচ্ছিলো না।(আমি)
তাহলে উনাদের একটা কল দাও।কলি আন্টি কিন্তু পাগল হয়ে গেছে তোমাকে না পেয়ে।আমাকে ফোন দিয়ে বললো তোমার খবর নিতে।আর বললো কি যেনো জরুরি খবর আছে।(আয়ুশ)
আচ্ছা।তুমি ভিতরে আসো।আমি ফোন দিচ্ছি।(আমি)
আচ্ছা।ভাবী।
বলেই আয়ুশ ভিতরে ঢুকলো।আমি দরজা হালকা করে চাপিয়ে দিলাম।
আমি মাকে কল দিবো বলে ফোনটা নিতেই দেখি মার 50 তার উপর কল।উনার টেনশন যে কত হচ্ছে তা আমি খুব ভালোই বুঝতে পারছি।
আসু তুই কই ছিলি এতক্ষন? জানিস কতো চিন্তা হচ্ছিলো তোর জন্য।(কলি)
মা।আমি ঠিক আছি।তুমি শান্ত হও।আমি ঘুমিয়ে ছিলাম বলে ধরতে পারি নি।(আমি)
তুই ঠিক আছিস তো?অসময়ে ঘুমাচ্ছিলি কেনো?(মা চিন্তিত হয়ে)
মার গলার এমনই শুনায় তাই না?যখন উনারা চিন্তিত হয় সন্তানের জন্য।খুব ভালো লাগছে আমার জন্যও কেউ চিন্তা করে ভেবে।(আমি মনে মনে)
কি হলো মা?তোর শরীর কি অনেক খারাপ?(কলি)
না।মা আমি ঠিক আছি।এমনি একটু ঘুম পাচ্ছিলো তো!(আমি)
আরে মেয়েটাকে আসলো কথা তো বলতে দাও(জিসান)
দূর।কিসের আসল নকল কথা!আমার মেয়ে অসুস্থ।(কলি জিসানকে ঝাড়ি দিয়ে)
মা।আমি ঠিক আছি।এখন বাবা কি বলতে চায় শুনি।(আমি)
তোমরা বাবা মেয়ে যা খুশি করো।
বলেই কলি জিসানকে ফোনটা দিলো।
হ্যা মা?(জিসান)
হ্যা বাবা বলো কি আসল কথা?(আমি ফোন লাউস্পিকারে দিয়ে যাতে আয়ুশ ও শুনতে পারে)
তুই যেই নার্সের কথা বলেছিলি ওই নার্স খুব সন্দেহজনক।কারণ যেই তুই বলেছিলি ওর মার অসুস্থ্যতার জন্য ওর আসতে দেরি হয়েছে ওইটা সম্পূর্ন মিথ্যা কথা।ওর বাবা মা বা পরিবারের কেউই এই শহরে থাকে না তারা সবাই গ্রামে থাকে।ওই দিন ও একটা পার্সেল আনতে গিয়েছিলো যার জন্য ওর লেট হয়েছিলো।(বাবা)
হয়তো ওই পার্সেলটাই ওষুধ।যেটা ও পাল্টেছে।(আয়ুশ)
হুম।আমারও তাই মনে হয়।(আমি)
আসু।আমরা আরো খবর নিয়ে জানতে পারি ওই পার্সেল নাকি অনেক বছর ধরেই আনা হয়।যেই লোক পাঠায় সেই লোক এক কিন্তু যেই লোকগুলোর কাছে পাঠায় তারা ভিন্ন।আর এই পার্সেলটা বিদেশ থেকে আসে।কোনো ব্যাক্তি পাঠায়।কোনো সংস্থা না বা কোনো কোম্পানি না।(বাবা)
ওই লোকটাই বাবাকে এই ওষুধ দিচ্ছিলো।যাতে বাবা সুস্থ না হতে পারে।আর এই প্রসেসটা অনেক বছর ধরেই চলছে আমাদের আড়ালে।বাবা তুমি কি আমাকে ওই ব্যক্তির ইনফরমেশন দিতে পারবে?(আমি)
সরি মা।কিন্তু ওই ব্যক্তির কোনো ইনফরমেশন আমরা পাইনি।আর ওই নার্সই বলতে পারবে।(বাবা)
আচ্ছা।আমি নার্সকে দেখছি।(আমি)
আসু। জয় আজ সকালে ল্যান্ড করেছে।উনি তোদের বাসায় সন্ধ্যায় যাবে।(জিসান)
ডক্টর জয় কি আমাদের বাসা চিনে?(আমি)
আমি গিয়ে গেটে দিয়ে আসবো।তুই কিন্তু থাকিস।(জিসান)
তুমি ভিতরে আসবে না?(আমি)
নাহ।ওই বাড়িতে আমার ডুকা নিষিদ্ধ।(বাবা)
কেনো?(আমি অবাক হয়ে)
কিছু কথা না বলাই থাক।(বাবা)
আচ্ছা তাহলে বাবা আমি রাখি।
বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।
খুব বড়ো খেল খেলা হচ্ছে ভাবী!(আয়ুশ)
কিন্তু এত ভালো প্ল্যানটা বানালো কে?এতো ঘৃণা কার মধ্যে হতে পারে?উনি চাইলেই বাবাকে মারতে পারতো কিন্তু উনি তা করে নি।উনি বাবাকে মৃত্যু থেকে বেশী কষ্ট দিতে চেয়েছে।কিন্তু কেনো করছে উনি এইসব?আর কি কি করেছে উনি?কি কি করবে?যে এতো প্লানিং করতে পারে সে আরো ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করতে পারে।(আমি)
ভাবী।তোমার হাত পা কাপছে।(আয়ুশ)
হুম।আয়ুশ তুমি নার্সের খোঁজ করো।আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।(আমি)
আমি ফ্রেশ হয়ে আয়নাতে নিজের দিকে তাকিয়ে আছি। ভবিষ্যত যেনো আমার অনিশ্চিত।যদি উনি আমার আর আভির মাঝখানে কোনো সমস্যা তৈরি করে তখন আমি কি করবো?আমার আর আভির পরিণতি যদি আমার শশুর শাশুড়ির মতো হয় তাহলে?আমার এখন মনে হচ্ছে আভির মা আর বাবাকে ওই ব্যাক্তিই আলাদা করছে।আর দাদুর উপর সব দোষ চাপিয়ে দিয়েছে।না আমাকে এই ব্যাপারে দাদুর সাথেও কথা বলতে হবে।আমি একা কিছু করতে পারবো না। আমার আর আভির সম্পর্ক বাঁচাতে দাদুর সাহায্যও লাগবে আমার।
।
।
চলবে,,,
আজকের পর্ব পরে বুঝতেই পারছেন কি সারপ্রাইজ আসতে চলছে?কালকে সম্পূর্ণ সারপ্রাইজ পাবেন।🤗 তবুও guess করুন কি হতে সারপ্রইজটা?🤔🤔
চলবে,,,
Part 36