real love পর্ব ৫৫

#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
Part: 55
.
.
উনি খাবার এনে ডাইনিং-এ রেখে রুমে চলে এলেন।তুলিকে বললেন আজ তুলির তেমন কোনো কাজ নেই সো তুলির আজ ছুটি।তুলি চলে গেলো।আমি,ইয়াশ আর উনি একসাথে ব্রেকফাস্ট করে ইয়াশকে উনার সাথে স্কুলে পাঠিয়ে দিলাম!দু’জনকে বিদায় দিয়ে মেইনডোর লাগিয়ে দিলাম আমি সোজা রুমে এসে শুঁয়ে পরলাম!ফোনটা হাতে নিয়ে ওপেন করতেই উনার ছবি স্ক্রিনে ভেঁসে উঠলো!আমি টুপ করে একটা চুঁমু খেয়ে নিলাম!আমার দিকে তাকিয়ে হাসছেন উনি!কি সুন্দর লাগছে উনাকে!একধ্যানে তাকিয়ে আছি উনার ছবির দিকে!
.
হঠাৎ কোমড়ে কারোর স্পর্শ পেতেই কেঁপে উঠলাম!কোমড় ভেদ করে পেটে হাত রাখতেই লাফ দিয়ে উঠে বসলাম!পাশে তাকাতেই দেখলাম উনি দুষ্টুমি ভরা চাহনী নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন!আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
– আপনি?যাননি?ইয়াশ কোথায়?
উনি আমাকে একটানে শুঁইয়ে দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– ইয়াশের ড্রাইভারকে কালরাতেই ইনফর্ম করা হয়েছিলো এখন থেকে উনি এসে ইয়াশকে স্কুলে নিয়ে যাবে,নিয়ে আসবে!আমি তো ইয়াশকে যাস্ট গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসলাম!
– আপনার অফিস নেই?
– উহু!
উনি চুলে মুখ গুঁজে বললেন,
– পেটের দাগগুলো এখনো দেখো নি?
উনার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
– কিসের দাগ?
– দেখো….
আমি দ্রুত উঠে উনার হাত সরিয়ে পেটের দিকে তাকাতেই দেখলাম লিপস্টিক দিয়ে ছোট ছোট করে লাভ আঁকা!আমি ভ্রুঁ কুঁচকে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– এইকাজ কখন করলেন?
উনি আবার আমাকে শুঁইয়ে দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– কালরাতেই করেছিলাম!যখন ঘুমিয়ে পরেছিলে তোমাকে আমার রুমে নিয়ে যেয়ে সারারাত এইকাজ করেছি!আরো অনেক কিছুই করেছি বলা যাবে না!
বলেই উনি কাঁশি দিলেন!আমার ঘাড়ের পাশের গলায় চুঁমু দিয়ে দিয়ে বললেন,
– সকালের দিকে ইয়াশের কাছে শুঁইয়ে দিয়ে খাবার আনতে বেরিয়ে গিয়েছিলাম!
আপনি দাঁত কটমট করে বললাম,
– আপনি যে একেবারে হাই লেভেলের একটা অসভ্য ছেলে,এটা কি আপনি জানেন?
আমার কথা শুনে উনি শরীর কাঁপিয়ে হেসে উঠলেন!হাসতে হাসতে বললেন,
– তুমি যে সেই হাই লেভেলের অসভ্য ছেলেটার ওয়াইফ!সেটা কি তুমি জানো?
উনার কথা শুনে আমি উনার হাতে মারতে মারতে বললাম,
– দেখি ছাড়ুন….ছাড়ুন বলছি!
– উহুম!
উনি আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমাকে উনার দিকে ঘুরালেন!উনার একহাত আমার গালে রেখে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে আমার ঠোঁটে স্লাইড করতে করতে ঠোঁটজোড়া নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলেন!
.
অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পর উনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে লিপস্টিকের দাঁগ উঠানোর চেষ্টা করলাম!উনি এসে আমার সামনে হাঁটুগেড়ে বসে বললেন,
– আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি….তুমি হাত সরাও!
– আমি পারবো!
– আমিও তো পারবো!
বলেই উনি আমার দুইহাত শাড়ির আঁচল দিয়ে পেছনে বেধে নিজে পরিষ্কার করার জন্য উঠেপড়ে লাগলেন!পাঁচমিনিটের কাজ উনি পনেরো মিনিট ধরে করলেন!সাথে বাহানা দেখালেন বাবুরা ব্যাথা পাবে বলে সময় নিয়ে আস্তে আস্তে পরিষ্কার করছেন!শেষ হওয়ার পর আমার হাতের বাঁধন খুলে দিয়ে কোলে তুলে নিলেন!ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে বেডে শুঁইয়ে দিয়ে বারান্দা থেকে একটা টাওয়াল এনে মুঁছে দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে শুঁয়ে পরলেন!উনার গাল আমার ঠোঁট বরাবর!আমি ছোট্ট করে একটা কামড় দিলাম!সাথে সাথেই উনি চোখ খুলে অবাক চোখে আমার দিকে তাকালেন!আমি লজ্জায় অন্যদিকে তাকালাম!উনি আমার গাল ধরে উনার দিকে ঘুরিয়ে বললেন,
– কি করলে এটা?
আমি চোখ বন্ধ করে বললাম,
– পানিশম্যান্ট!
আমার কথা শুনে উনি অন্যগাল এগিয়ে দিয়ে বললেন,
– এই গালেও দাও!
– উহু!
– কেনো?
– ব্যাথা পাবেন!
– ইশ্…..ব্যাথা পাবেন!পাবো না ব্যাথা….দাও!
আমি উনার গালে কামড় না দিয়ে উনার গলায় দুইটা কামড় দিয়ে একটা চুঁমু দিলাম!আমার কান্ড দেখে উনি অবাক হয়ে পরক্ষণেই কিউট একটা হাসি দিয়ে উনার খোঁচা খোঁচা দাড়িওয়ালা গাল আমার গালে ঘঁষে দিলেন!
আমি “আহ্!” বলে চিৎকার দিয়ে গালে হাত দিলাম!উনি সাথে সাথেই আমার গালে চুঁমু দিয়ে “সরি!সরি!আর হবে না!” বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন!
.
.
দশটার দিকে বসে বসে টিভি দেখছিলাম!উনি আমার কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে শুঁয়ে ছিলেন!হঠাৎ উনার ফোন বাঁজতেই উনি চোখ না খুলে বললেন,
– টিয়াপাখি!দেখো তো কে?
আমি উনার প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করে স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম নাফিসা কল করেছে!আমি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম নাম্বারটার দিকে!হঠাৎ এইসময় নাফিসা?
আমি লাউডে দিয়ে রিসিভ করে উনার কানে ধরে বললাম “নাফিসা!”
উনি বললেন,
– হুম বলো!
– ভাইয়া!আমি কিন্তু এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না!জানেন….খবরটা শোনার পর আজ সারারাত ঘুমাতে পারি নি!আব্বু-আম্মুর টেনশনে!আব্বু তো বিয়ে দিতেই চায় নি এতো আগে!এখন যদি শোনে আপু অলরেডি প্রেগন্যান্ট…ওহ্ মাই গড!!!কি হবে ভাবতে পারছেন?
নাফিসার কথা শুনে আমি বড়সড় একটা ঢোক গিললাম!সাথে সাথেই হেঁচকি উঠলো!আমি ফোন রেখে উনাকে বিছানায় শুঁইয়ে দিয়ে দ্রুত ডাইনিং-এ এসে ঢকঢক করে পুরো একগ্লাস পানি একনিশ্বাসে শেষ করলাম!মাথার মধ্যে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে উনি শুধু শুধু কেনো নাফিসাকে বিষয়টা জানাতে গেলেন?পেট পাতলা মেয়ে!একবার মুখ ফসকে আম্মুর সামনে বলে দিলেই শেষ!!!
.
আমি বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে রুমে আসলাম!উনি চার হাত-পা চারদিকে ছড়িয়ে বুকের উপর ফোন রেখে নাফিসার সাথে কথা বলছেন!আমি যেয়ে পাশে বসে উনার বুকের উপর থেকে ফোনটা নিয়ে কানে ধরে মিনতিস্বরে বললাম,
– বোন আমার….আব্বু-আম্মুকে বলিস না,প্লিজ!
নাফিসা অবাক কন্ঠে বললো,
– আপু!কেমন আছো?
আমি শুকনো গলায় বললাম,
– আলহামদুলিল্লাহ্ আছি!
– ইশ্…..তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে!
– দেখাদেখি পরে করিস!আগে কথা দে আব্বু-আম্মুকে জানাবি না কথাটা?
আমার কথা শুনে নাফিসা ভাঙ্গা গলায় বললো,
– আপু….কাজটা একদম ঠিক করিস নি!আন্টি-আঙ্কেল আব্বু-আম্মুকে কথা দিয়েছিলো তোর অনার্স কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত এই সবকিছু বাদ!আব্বু-আম্মু তোকে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়েছে শুধুমাত্র ইয়াশের জন্য!আব্বু জানতে পারলে বুঝতে পারছিস তো কি হবে?দুই ফ্যামিলির মধ্যে একটা ঝামেলার সৃষ্টি হবে!আব্বুকে তো তুই চিনিস কতটা স্ট্রিক্ট!এইসব নাহয় বাদ-ই দিলাম!তুই নিজের দিকে একটু তাকা,কি আছে তোর সাথে?এটলিষ্ট একটা বছর তো অয়েট করে নিজেকে ওইভাবে প্রস্তুত করে বেবি নিতে পারতি!এতো টেনশন নিয়ে তুই কেমনে আছিস?ছোটবেলায় তো একটু টেনশন করলেই অজ্ঞান হয়ে যেতি!এইচএসসি রেজাল্টের আগের রাতেও তো টেনশন করতে করতে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলি!ভুলে গেলি সব?
নাফিসার কথাগুলো শুনে আমি কান্নাজড়িত কন্ঠে বললাম,
– চুপ কর!তোর কাছে একটাই রিকোয়েস্ট আব্বু-আম্মুকে প্লিজ বলিস না!তোর হাতে পায়ে ধরি….প্লিজ বলিস না!
আমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলাম!পাশ থেকে উনি জড়িয়ে ধরে আমার কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে নাফিসাকে বললেন,
– হিয়া কান্না করছে!পরে ব্যাক করছি…এখন রাখি!
বলেই ফোন কেটে ঢিল মেরে বেডের অপজিটে ফেলে দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে উনার বুকের সাথে একদম মিশিয়ে ফেললেন!আমি উনার পিঠের শার্ট খাঁমচে ধরে কান্নাজড়িত কন্ঠে বললাম,
– নাফিসাকে কেনো জানিয়েছেন?
উনি আমার পিঠে শান্তনাস্বরূপ হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
– পরে বলি….আগে একটু শান্ত হও!
– ও’কে না জানালেই কি চলছিলো না?
– একজনকে জানিয়ে রাখা এইমুহূর্তে খুব প্রয়োজন ছিলো!নাফিসা ছাড়া আমার আর কারোর কথাই মাথায় আসে নি!নিজের বোনটাও তো আমার বিপক্ষে দাড়িয়ে!উফ্…প্লিজ এভাবে কান্না করো না!কান্না থামাও!
– আমাকে মেরে ফেলুন…..কিচ্ছু ভালো লাগছে না আমার!বাবুদের কথা ভাবলে বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে কিন্তু ফ্যামিলির কথা ভাবলে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করে!
– হিয়া!
উনি চিৎকার দিয়ে উঠলেন!
.
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here