real love পর্ব ৮

#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
part:08
.
.
হঠাৎ দরজায় নক করায় আমি ভয় পেয়ে চোখ খুললাম।উনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি নিরালায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছেন।আমি ওঠার চেষ্টা করলাম।উনি আরো জোরে চেপে ধরলেন।আমি যত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি উনি ঠিক ততটাই জোরে চেপে ধরছেন।যতবার উনি এই কাজটা করলেন ততবারই আমি কেপেঁ কেপেঁ উঠলাম।
.
আবার দরজায় নক করল।দরজার বাহির থেকে নাফিসার গলার আওয়াজ ভেসে এলো।ও জোরে জোরে আমাদের উদ্দেশ্য করে বলছে,
– আপু,ভাইয়াকে আম্মু ফ্রেশ হতে বললো।লান্স রেডি।
ছি!এতক্ষণ দরজা লাগানো দেখে নাফিসা কি ভাবছে!ওর সামনে যেতেই তো লজ্জা লাগবে।
.
আমি উনাকে আস্তে করে বললাম,
– ছাড়ুন,আম্মু ডাকছে।ফ্রেশ হতে বললো আপনাকে।
– ফ্রেশ ই তো হচ্ছি।
আমি অবাক হয়ে বললাম,
– মানে?
উনি মাথা উচু করে বললেন,
– কিছু না।……বলেই আবার উনি আমার ঘাড়ে মুখ গুঁজতে নিলেই আমি একটু সরে গিয়ে বললাম,
– আপনার পাঁচমিনিট অলরেডী শেষ।এখন ছাড়ুন।
– ওহ্!সিরিয়াসলি!আমি তো ভেবেছিলাম এখনও চারমিনিট বাকি আছে।
– উফ্!অলওয়েজ ফান!দেখি সড়ুন।
বলেই আমি উঠে বসলাম।উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে চিৎ হয়ে দুইহাত দুইপাশে ছড়িয়ে শুয়ে রইলেন।আমি উনার দিকে তাকাতেই উনি হাসলেন।
.
আমি চুপচাপ দরজার কাছে এসে দরজা খুললাম।দরজার বাহিরে কাউকে দেখতে পেলাম না।আমি দরজা পুরোপুরি না লাগিয়ে সামান্য চাপিয়ে দিয়ে উনার পাশে এসে বসলাম।উনি এভাবে আমাকে ফিরে আসতে দেখে অবাক হয়ে বললেন,
– আবার ঘুমানোর প্লান করছো নাকি?
আমি উনার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– কোনো ইচ্ছা নেই।
তারপর উঠে চলে আসলাম।আসার সময় টাওয়ালটা উনার বুকের উপর ছুঁড়ে দিয়ে আসলাম।
.
নাফিসা দেখলাম আম্মুকে সাহায্য করছে।ইস্!নিজের মা বোনের কাছে কি লজ্জায় ই না ফেললেন উনি!যেখানে এই মুহূর্তে আম্মুকে আমার সাহায্য করার কথা,সেখানে নাফিসা সাহায্য করছে।আমি এখন ওদের সামনে মুখ দেখাবো কি করে?
.
আমি কোনোরকমে আস্তে আস্তে আম্মুর পাশে গিয়ে দাড়িয়ে জোরে জোরে বললাম,
– সেই কখন ওয়াশরুমে গেছেন।এখনও বের হওয়ারই নাম নেই।রুমের দরজা লাগিয়ে আমাকে বিছানায় বসিয়ে রেখে বললেন”একটু বসো,আমি একটু ওয়াশরুম থেকে ঘুরে আসি।সেই যে ঢুকলেন তারপর আর বের হচ্ছিলেন না দেখে আমি চুপচাপ চলে আসলাম।
আমার কথা শুনে আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
– মানে?পেট খারাপ হলো নাকি?
আম্মুর কথা শুনে আমি সামান্য কেশে জবাব দিলাম,
– হবে হয়তোবা।
আমি আর কোনো কথা না বাড়িয়ে ডাইনিং এ এসে নাফিসাকে সরিয়ে দিয়ে আমি ডাইনিংটা টুকটাক গোছালাম।আগে থেকেই অবশ্য গোছানো ছিলো।তারপরও একটু হাত লাগালাম যেনো সামান্য ক্রেডিটটা আমিও পাই।।উনাকে বাইরে আসতে দেখে আমি আস্তে করে কিচেনে ঢুকে পরলাম।আম্মুকে বললাম”উনি ফ্রেশ হয়েছে।তাড়তাড়ি খেতে দাও।”আমার কথা শুনে আম্মু ডাইনিং এ চলে গেলো।আমি চুপচাপ কিচেনে দাড়িয়ে থেকে উনাদের কথোপকথন শুনছিলাম।
.
আম্মু ইফাজকে বসতে বলে বললো,
– ইফাজ!এক গ্লাস স্যালাইন পানি দিবো?
হঠাৎ করে আম্মুর এরকম কথা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।কথাটা শোনার সাথে সাথে আমি জিহ্বায় কামঁড় দিলাম।
এই কথাটা শোনার পর উনার চেহারার কি রিয়েকশন হলো সেটা দেখতে পেলাম না।শুধু শুনতে পেলাম,
– স্যালাইন পানি কেনো আন্টি?
– হিয়া যে বললো তোমার পেট খারাপ নাকি?
ইস্!লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে।”যেই বুদ্ধিতে বাচিঁ,সেই বুদ্ধিতেই মরি”টাইপের অবস্থা হয়েছে এখন আমার।
ইফাজ আম্মুকে জিঙ্গেস করলো,
– হিয়া কই?
– ও তো কিচেনে।
– আর আঙ্কেল?
– রুমে।তুমি বসো আমি ডেকে আনছি।
– হুম।
.
আম্মু আব্বুকে ডাকতে গেলো।নাফিসা কিচেনে এসে বললো,
– ভাইয়া ডাকছে।
– কেনো?
– আমি জানি?
– চল।
নাফিসার সাথে আমিও ডাইনিং এ চলে আসলাম।উনি বসে ছিলো।আমাকে দেখেই পাশের চেয়ার টান দিয়ে বললো,
– বসো,তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠো।টাইম নেই একটু পরই বের হতে হবে।
আমার সাথে নাফিসাকেও বসতে বললো।নাফিসা যেয়ে ইফাজের অন্য পাশের চেয়ারটাতে বসে ইফাজের সাথে গল্প জুড়ে দিলো।আমি সেখান থেকে রুমে চলে আসতে নিলেই আব্বু আম্মুর সম্মুখীন হলাম।আম্মু আমাকে রুমে যাওয়া দেখে বললো,
– তুই কোথায় যাচ্ছিস?তুইও বোস।একসাথে খাবি।
– ক্ষিধে নেই।তোমরা খেয়ে নাও।
– গোসলও তো মনে হয় করিস নি।যা গোসলটা সেরে আয়।পরে তুই আর আমি একসাথে খাবো।
– হুম।
বলেই আমি রুমে চলে আসলাম।কিছুক্ষণ হাটাহাটি করার পর আলমারি থেকে ড্রেস বের করে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।
.
পনেরো মিনিট পর ওয়াশরুম থেকে বের হলাম।রুমে নাফিসাকে বসে থাকতে দেখে জিঙ্গেস করলাম,
– কিরে তুই এখানে? সবার লান্স করা শেষ?
– হুম।
– উনি এখন কি করে?
নাফিসা ঢং করে বললো,
– তোমার উনি এখন আব্বুর সাথে বসে বসে গল্প করছে আর টিভিতে নিউজ দেখছে।
ওর এরকম ঢং করে কথা বলা দেখে আমি টাওয়ালটা ওর মুখের উপর ঢিল মেরে আম্মুর কাছে চলে আসলাম।
আম্মু ডাইনিং এর সব পরিষ্কার করছিলো।আমাকে দেখেই বললো,
– তাড়াতাড়ি বোস।ইফাজ নাকি এখনই চলে যাবে?
– হুম,তখন তো সেটাই বললো।
– বিকেলের দিকে রওনা দিলে ভালো হতো না?
– আমি কি জানি?উনাকে বলো।
– আচ্ছা থাক।ও যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে।বোস।
– হুম।
.
খাওয়ার সময় আমি আর আম্মু টুকটাক কথা বললাম।আম্মু আমাকে শিখিয়ে শিখিয়ে দিলো কিভাবে সবার সাথে কথা বলতে হবে।কোনটা ভালো,কোনটা মন্দ।এটা করবি না,সেটা করবি না।সবসময় ইফাজের সাথে থাকবি।হাসিমুখে সবার সাথে কথা বলবি।
আম্মুর কথাগুলো আমার কান ঠিকই শুনছিলো কিন্তু আমার মন ছিলো অন্যদিকে।আমি কোনোরকমে খেয়ে উঠে আসলাম।আমার গলা দিয়ে খাবার অনেক কষ্টে ঢুকাচ্ছিলাম আজ।
.
রুমে আসার সময় দেখলাম আব্বু ইফাজ কেউ ড্রয়িংরুমে নেই।আব্বুর রুমের সামনে যেয়ে সামান্য উঁকি দিয়ে যাস্ট দেখে আসলাম আব্বু কি করে?আব্বু ফ্লোরের উপর আজকের পুরো পেপার বিছিয়ে সেটা পড়ছিলো।আব্বুর কাজই এইটা।পেপার নাকি আব্বু হাতে ভাজঁ করে নিয়ে পড়তে পারে না।ওভাবে পড়তে নাকি আব্বুর বিরক্ত লাগে।
.
আমি আমার রুমে এসে দেখলাম ইফাজ আর নাফিসা বসে বসে গল্প করছে।আমি ওদের দেখিনি এরকম একটা ভাব নিয়ে আলমারি থেকে একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে চলে আসলাম।আসার সময় নাফিসা অবশ্য বলেছিলো,
– আপু বোস,গল্প করি।
“আমার টাইম নেই” বলে আমি রুম থেকে চলে আসি।
আম্মুর কাছে এসে বললাম,
– আম্মু,আমি পাশের বাংলোর শফিক আন্টির কাছে যাচ্ছি।আন্টি অনেক সুন্দর করে সাজাতে পারে।ওখানে ইফাজকে একটু পর পাঠিয়ে দিবে।ওখান থেকে সরাসরি ইফাজের সাথে চলে যাবো।তাই এখন তোমার আর আব্বুর কাছ থেকে একেবারে বিদায় নিতে এসেছি।
আম্মু তো আমার কথা শুনে থ্।আম্মু সামান্য চিৎকার দিয়ে কিছু কথা শুনালো।যেই চিৎকারটা শুধু আমার আর আম্মুর কানেই ঢুকলো।অনেক
বুঝানোর পর আম্মু বললো,
– যা,দেখ তোর আব্বু কি বলে?
– হুম,যাচ্ছি।…বলে সেখান থেকে চলে আসলাম।
আমি কিছুদূর আসার পর ভাবলাম,এভাবে আব্বু কখনোই যেতে দেবে না।থাক,উনার সাথে একবারেই বের হই।
.
আমি আমার রুমে এসে শপিং ব্যাগটা সোফার উপর রেখে বিছানায় আধশোয়া অবস্থায় শুয়ে পরলাম।এমন ভাব করলাম যে আমাকে দেখে মনে হবে আমি এখন রেস্ট করবো।
আমাকে এভাবে শুতে দেখে ইফাজ বলে উঠলো,
– কি ব্যাপার?এখন ঘুমাবা নাকি?তাড়াতাড়ি রেডি হও।তোমার জন্যই ওয়েট করছি।
ইয়েস্!আমি এটাই চাচ্ছিলাম যে উনি নিজে থেকে আমাকে তাড়াতাড়ি রেডি হতে বলুক।আমি বললে তো সবাই ভাববে আমার তোড় সইছে না।
.
আমি মুখে ঢং করে বিরক্তি ভাব ফুটিয়ে তুলে বললাম,
– এখনই?
উনি বললেন,
– হুম,তাড়াতাড়ি করো।এদিকে লেট করলে ওদিকে যেতে যেতে অনেক রাত হয়ে যাবে।
নাফিসা বললো,
– ভাইয়া,আর একটু থাকেন না।আমার কেমন যেনো মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে আপুকে একবারে নিয়ে চলে যাবেন আজ।
ইফাজ বললো,
– তুমিও চলো।একসাথে অনেক মজা করবো।
– আব্বু ঠ্যাং ভেঙ্গে দেবে।কয়েকদিন আগেই বিয়ে খেয়ে আসলাম।পড়াশোনার কত লজ হইছে।এখন আবার ঘুরতে যাবো শুনলে ঘরে আটকে রাখবে।
.
আমি ইফাজের সামনে যেয়ে বললাম,
– আমি রেডি।চলুন বের হই।
উনি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললেন,
– এই ড্রেসেই?
– হুম,কেনো?
– না,কিছু না।চলো।
.
আমি উনাকে নিয়ে ড্রইংরুমে আসলাম।পেছন পেছন নাফিসাও আসলো।আব্বু আম্মুকে ডেকে আমাদের বিদায় দিতে বললাম।আম্মু তো আমাকে এই অবস্থায় দেখে বললো,
– ড্রেসটা অন্তত চেন্জ করতি।
– লাগবে না।এটাই ঠিক আছে।
আমার এরকম কেয়ারলেস দেখে আম্মু প্রচুর রেগে গেলো কিন্তু মুখে হাসি হাসি ভাব ফুটিয়ে তুললো।
.
আসার সময় ইফাজ আম্মুকে সালাম করলো।আব্বুকে জড়িয়ে ধরলো।নাফিসার সাথে হ্যান্ডশ্যাক করে বললো”আসি বস্”।নাফিসা হেসে উত্তর দিলো”আবার আসবেন”।
আসার সময় নাফিসা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আম্মুও দেখি জড়িয়ে ধরলো।আব্বু মাথায় হাত দিয়ে আদর করলো।আহ্!সবাই এরকম বিহেভ করছে,মনে হচ্ছে আমাকে চিরকালের জন্য বিদায় দিচ্ছে।
.
আব্বু আমাদের সাথেই নিচ পর্যন্ত আসলো।আমার হঠাৎ মনে পড়লো একটা জিনিস ভুলে রেখে এসেছি।
আমি দৌড়ে আমার রুমে যেয়ে শপিং ব্যাগটা নিয়ে আবার দৌড়ে চলে আসলাম।হঠাৎ করে এরকম বাসায় ব্যাক করাতে আম্মু নাফিসা দুজনই অবাক হয়ে জিঙ্গেস করলো”কি হয়েছে?”
আমি “কিছু হয়নি” বলে চলে আসলাম।
আব্বু ইফাজও একই প্রশ্ন করলো।আমি শপিং ব্যাগটা দেখিয়ে বললাম”এটা আনতে ভুলে গেছিলাম।”
আব্বু বললো”কি এরমধ্যে?”
আমি “কিছু না” বলে গাড়ীতে বসলাম।
ইফাজও গাড়িতে উঠে বসলো।তারপর আব্বু আমাদের বিদায় দিয়ে বাসায় গেলো।
.
উনি গাড়ি স্টার্ট দিলেন।আমি বললাম,
– সামনের বাংলোতে গাড়িটা থামাবেন।
উনি আমার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– কেনো?
– এমনি।
উনি আর কিছু জিঙ্গেস না করে সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করলেন।
.
বাংলোর কাছাকাছি আসতেই উনি গাড়ি থামালেন।আমি উনাকে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলাম।
.
বাংলোর কাছে যেয়ে কলিংবেল বাজালাম।কলিংবেল বাজার কিছুক্ষণ পরই আন্টি মেইন ডোর খুললেন।হঠাৎ এভাবে আমাকে দেখে তিনি চমকে গেলেন।আমাকে জড়িয়ে ধরে কয়েকবার চুমো খেলেন।ইফাজের দিকে তাকিয়ে জিঙ্গেস করলেন,
– কে?
আমি হাসি হাসি মুখে উত্তর দিলাম,
– তোমার মেয়েজামাই।
কথাটা বলেই আমি উনার দিকে তাকালাম।উনি চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে তারপর আন্টির দিকে তাকিয়ে সালাম দিলেন।
আন্টি সালামের উত্তর নিয়ে আমাদের ভেতরে নিয়ে গিয়ে বললেন,
– বসো তোমরা।আমি একটু আসছি।
আমি আন্টির হাত টেনে ধরে বললাম,
– আন্টি প্লিজ,আমরা বেশিক্ষণ ওয়েট করতে পারবো না।আমি একটা ইম্পরট্যান্ট কাজের জন্য তোমার কাছে এসেছি।
– মানে?কি কাজ?
– তোমার রুমে চলো,তারপর বলছি।
– কোনো সমস্যা?
আমি আর কোনো উত্তর না দিয়ে আন্টিকে নিয়ে সোজা আন্টির রুমে চলে আসলাম।আসার সময় ইফাজকে বসতে বলে চলে আসলাম।
আমি শপিং ব্যাগ থেকে জামদানি শাড়ীটা বের করে আন্টির হাতে দিয়ে বললাম,
– তাড়াতাড়ি পরিয়ে দাও।
আন্টিতো আমার এরকম কান্ড দেখে রীতিমতো অবাক।অবাক হয়েই বললেন,
– তোর মাকে বললেই তো পরিয়ে দিতো।
– আম্মুকে বলতে লজ্জা করে।আর বাসায় আব্বুও ছিলো।বেশি কথা বলে সময় নষ্ট করো না।একদম টাইম নেই।
– আচ্ছা, ওয়াশরুম থেকে বাকি জিনিসগুলো পরে আয় আমি শাড়িটা পরিয়ে দিচ্ছি।
.
আমি ওয়াশরুম গিয়ে পাচঁমিনিটে সবকিছু পরে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দ্রুত আন্টির সামনে দড়ালাম।আন্টি শাড়ির আচঁলটা আমার কাধে রেখে পুরো শাড়িটা সুন্দর করে পরিয়ে দিলো।আন্টি শাড়িটা এতো সুন্দর করে পরালো যে মনে হচ্ছে তার মেয়েকে আজ স্বামীর সাথে শ্বশুরবাড়ি পাঠাচ্ছে।
.
শাড়ি পরানো শেষে আন্টি আয়নার সামনে দাড় করালো।
আমি নিজেকে দেখে নিজেই অবাক হচ্ছি।এত্ত সুন্দর লাগছে আমাকে!প্রথমদিনের থেকে আজ বেশি সুন্দর লাগছে!ভীষন লজ্জা লাগছে! এই অবস্থায় উনার সামনে যাবো কিভাবে! উনি তো এভাবে দেখলে রীতিমতো চমকে যাবেন!
আন্টি পাশে দাড়িয়ে আমাকে দেখে মুচকি মুচকি হাসছেন।আমি আন্টির এরকম হাসি দেখে লজ্জায় নিচের দিকে তাকালাম।
হাসি হাসি মুখে বললেন,
– কিরে?লজ্জা লাগছে খুব?
আমি মাথা নাড়িয়ে”হ্যা”বললাম।আন্টি আমাকে আচঁমোকা জড়িয়ে ধরে বললেন,
– লজ্জা পাওয়ার কিচ্ছু নেই।ওর কাছে গেলে সব লজ্জা চলে যাবে।
আমাকে আন্টিকে ছেড়ে বললাম,
– না আন্টি, ওর কাছাকাছি গেলে আমার আরো বেশি লজ্জা করে।
– ওলে বাবালে…..বলেই আন্টি আমার থুতনীতে ধরে চুমো খেলেন।
.
আন্টি আমার হাত ধরে বললো,
– চল,এখন দেরি হচ্ছে না?
আমি বুকে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে বললাম,
– হুম,চল।
.
আন্টির রুম থেকে বের হলেই ড্রয়িংরুমের পুরোটুকু দেখা যায়।
আমি রুম থেকে বের হয়েই উনাকে দেখতে পেলাম।উনি সোফায় হেলান দিয়ে পা দুটো টান টান করে লম্বা করে বসে বসে ফোন টিপছিলেন।
আন্টি আমার হাত ধরে উনার সামনে নিয়ে যেতেই উনি ফোন থেকে চোখ তুলে তাকালেন!
হঠাৎ উনার হাত থেকে ফোনটা সোফায় পড়ে গেলো!এভাবে আমাকে দেখে উনি চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে সোফা ছেড়ে উঠে দাড়ালেন!
উনার দাড়ানো দেখে আমি শেষ!
আমি উনার থেকে চোখ ফিরিয়ে নিচের দিকে তাকালাম।
হঠাৎ আন্টি আমাকে ছেড়ে দিয়ে ইফাজকে বললেন,
– অনেক লজ্জা পাচ্ছিলো।কোনোরকমে নিয়ে এলাম।
উনি হ্যান্ডওয়াচের দিকে তাকিয়ে আন্টিকে বললেন,
– আজ তাহলে আসি আন্টি।অনেক লেট হয়ে গেছে।……কথাটা বলেই উনি শক্ত করে আমার হাত ধরলেন।আমি স্পষ্ট অনুভব করছি উনার হাত কাঁপছে।
উনি ফোনটা পকেটে রেখে আন্টিকে সালাম দিয়ে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন।আমিও আন্টিকে বিদায় জানিয়ে চলে এলাম।
উনি আমাকে গাড়িতে বসিয়ে নিজে গাড়িতে বসলেন।আমি লজ্জায় কুকঁড়ে যাচ্ছি।শাড়ির আচঁলের কোনা ধরে টানাটানি করছি।
হঠাৎ উনি আমাকে টান দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।এমনভাবে ধরেছেন যে উনার সম্পূর্ণ শরীরের ভার আমার উপর।কিন্তু আমার সম্পুর্ণ শরীরের ভার উনার দুইহাতের উপর।
.
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here