The_Terrible_Lover part 21

#The_Terrible_Lover
#অদ্রিতা_জান্নাত
#পর্ব__২১

“I love you. আমি আপনাকে ভালোবাসি ৷ অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি আরিহান ৷”

“সত্যি? সত্যি বলছো তুমি?”

“হুম একদম সত্যি ৷ বিশ্বাস হচ্ছে না?”

হঠাৎ করেই আরিহান আমাকে কোলে তুলে নিয়ে পুরো রুম জুড়ে ঘুরাতে লাগলেন ৷ আর বললেন,,,,,

“আজ আমি অনেক খুশি, অনেক, অনেক, অনেক ৷”

“আস্তে আরিহান পরে যাবো আমি,,,,,,”

সাথে সাথে ছেড়ে দিলেন আর আমি নিচে পরে গেলাম,,,,,

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

চোখ মেলে তাকালাম ৷ ধরফরিয়ে উঠে বসলাম ৷ আশেপাশে তাকিয়ে দেখি রুমে ছিলাম আর ঘুমিয়ে ছিলাম আমি ৷ তাহলে কি স্বপ্ন ছিল এটা? কিন্তু এরকম স্বপ্ন আমি কেন দেখলাম? পাশে তাকাতেই দেখি আরিহান আমার হাত তার বুকে নিয়ে ঘুমাচ্ছেন ৷ উফ মারাত্মক সুন্দর লাগছে ৷

হাতটা আস্তে করে ছাড়িয়ে নিতে চাইলাম কিন্তু উনি আরো শক্ত করে ধরলেন ৷ এমনিতেই এই হাতটা ব্যাথায় নাড়াতেও পারছি না ৷ আর এরকম শক্ত করে ধরায় ব্যথাও পাচ্ছি অনেকটা ৷ তাই আর ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম না ৷ চুপ করে ওনার দিকে ঘুরে শুয়ে পরলাম ৷ ওনার মুখে এক অদ্ভুত মায়া রয়েছে ৷ যেটা আমাকে বারবার টানছে ৷

আজ এরকম একটা স্বপ্ন কেন দেখলাম আমি? আমি তো ভালোবাসি না ওনাকে ৷ এটাও বলতে পারছি না ৷ ভালোবাসি কি ভালোবাসি না সেটা আমি নিজেও জানিনা ৷ তো কি করা উচিত আমার? এরিমধ্যে হঠাৎ করে আমার ফোনটা বেজে উঠলো ৷ কোনো রকমে উঠে বসে হাতড়ে ফোনটা নিলাম ৷ রিসিভ করে বললাম,,,,

কাশফিয়া : হ্যালো কে?

— কাশফি মা আমার কেমন আছিস?

কাশফিয়া : ওহ আম্মু আমি ভালো আছি ৷ তোমরা?

আম্মু : আছি রে মা ৷ তুই সত্যি ভালো আছিস তো?

কাশফিয়া : হুম ভালো আছি ৷ আব্বু কোথায়? কেমন আছে?

আম্মু : মা রে একবার আসবি দেখা করতে? তোর আব্বুর আবার বুকে ব্যথা উঠেছিল ৷ আমি একা কি করব বল? এখন তো সায়ানও নেই ৷ মালিহাকে বলে ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম ৷

কাশফিয়া : সায়ান এখনো কি তোমাদের কাছে ফিরে নি?

আম্মু : এখানে আসে নি ৷ তোর ফুপ্পির কাছে গিয়েছে কি না জানিনা ৷ একবার আসবি? তোর আব্বু তোকে খুঁজছে বারবার ৷ কাল রাতে জ্বর এসেছিল রে ৷ জ্বরের ঘোরে তোর নামই বারবার নিচ্ছিল ৷

মুখ চেপে কান্না আটকানোর চেষ্টা করলাম ৷ আমার বাবা মা আমাকে একদিন না দেখলে অস্বস্থির হয়ে যায় ৷ আর এতদিন তাদের থেকে দূরে আমি? আমাকে চুপ থাকতে দেখে আম্মু আবার বললো,,,,

আম্মু : যেই ছেলেটার সাথে বিয়ে হয়েছে তোর, তাকেও মেনে নিব আমরা কিন্তু তবুও আমাদের এতো দূর করে দিস না ৷ চলে আয় না ৷

কাশফিয়া : আম্মু ভেঙ্গে পরো না প্লিজ ৷ আমার হাত পা বাঁধা ৷ আমার যে কিছু করার নেই ৷ চাইলেই যেতে পারবো না আমি ৷ প্লিজ বোঝো ৷

আম্মু : তোর আব্বুর অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে ৷ একটু আয় মা চোখের দেখা অন্তত দেখি ৷ ভুলে গেছিস না?

কাশফিয়া : না তোমাদের কি করে ভুলি আমি? যদি পারতাম দৌঁড়ে চলে যেতাম ৷ কতদিন তোমার কোলে মাথা রাখিনা বলো? কতদিন আব্বুর হাত ধরে সারা বাড়ি ঘুরি না বলো? কিন্তু আমি কিছু করতে পারবো না ৷ আমার পক্ষে যাওয়া অসম্ভব ৷

আম্মু : ছেলেটা বুঝি তোকে আসতে দিবে না? আচ্ছা থাক ৷ মরে গেলে অন্তত লাশটা দেখে যাস ৷ আর খেয়াল রাখিস নিজের ৷ ভালো থাকিস ৷

বলেই ফোনটা কেটে দিল আম্মু ৷ একটা কথাই মাথায় ঘুরচ্ছে শুধু ‘মরে গেলে অন্তত লাশটা দেখে যাস’ ৷ শব্দ করে কেঁদে দিলাম আমি ৷ কখনো ভাবি নি আমার জন্য আমার মা বাবা এতোটা কষ্ট পাবে ৷ আরিহানকে কীভাবে বলবো আমি? আমার মা বাবার নাম করলে তো উনি আবার রেগে যাবেন ৷ কি করব আমি?

— কাদছো কেন?

পাশে তাকিয়ে দেখি আরিহান শুয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন ৷ আমি মাথা নাড়িয়ে না করলাম ৷ উনি উঠে বসে আমাকে তার দিকে ঘুরালেন ৷ চোখের পানিটা মুছিয়ে দিয়ে বললেন,,,,

আরিহান : আমি এতোটাও নিষ্ঠুর নই ৷ যতোটা তুমি ভাবছো ৷

আমি বুঝলাম না ওনার কথা ৷ উনি ঠিক কি বলতে চাইছেন?

আরিহান : তোমাদের সব কথা শুনেছি আমি ৷

কাশফিয়া : আপনি না ঘুমিয়ে ছিলেন?

আরিহান : আমার ঘুম এতোটাও গভীর না ৷ যে তুমি হাত টানলেও আমি ঘুমাবো আবার ফোন আসার শব্দেও ঘুমিয়ে থাকবো ৷

কাশফিয়া : তাহলে ঘুমের নাটক করছিলেন কেন?

আরিহান : দেখতে চাইছিলাম তুমি কি করো ৷ কিন্তু তুমি যে কেঁদে দিবে কে জানতো?

কাশফিয়া : আমার কষ্ট হচ্ছে আর আপনি মজা করছেন?

আরিহান : আরে না এমনি বললাম ৷ ফ্রেশ হয়ে আসো খেয়ে ওষুধ খেতে হবে তো নাকি? আর চিন্তা করো না আমি কাল নিজে তোমার বাবা মায়ের কাছে নিয়ে যাবো ৷

কাশফিয়া : কাল? আজ নয় কেন?

আরিহান : কারণ তোমার হাতে ব্যথা ৷ এটা দেখলে আমার শ্বশুড় শ্বাশুড়ি আমাকে বলবে যে আমি তাদের মেয়েকে মারি ৷ তাই আজকের দিনটা যাক ৷ ওষুধ খেয়ে আর মলম দিলে ব্যথাটা আরো কমে যাবে তাই বুঝেছো?

কাশফিয়া : হুম ৷

আরিহান : যাও ফ্রেশ হয়ে আসো ৷ খাবার নিয়ে আসছি আমি ৷

বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন ৷ আমি ফ্রেশ হয়ে আসলে উনি খাইয়ে ওষুধ খাইয়ে দিলেন ৷ হাতেও মলম লাগিয়ে দিলেন ৷

_____________________

পা টিপে টিপে রুম থেকে বের হলাম ৷ আস্তে আস্তে নিচে গিয়ে গেস্ট রুমের দিকে গেলাম ৷ যেখানে আরিহানের মা আর আফিয়াকে থাকতে দেয়া হয়েছে ৷ আরিহানের মা গিয়েছে কিচেনে ৷ তার উপর নজর রাখছে আখি ৷ আর নিধি আফিয়াকে নিয়ে বাগানে গিয়েছে আমার কথা অনুযায়ী ৷ আখিকে বলে আমি একটা প্লাস্টিকের টিকটিকি এনেছি যেটা আমার হাতে ৷ দেখতে একটুও নকল মনে হয় না পুরো আসল লাগে ৷

আরিহান অফিসে গিয়েছেন ৷ এই সুযোগেই এখানে এসেছি আমি ৷ হাতে ব্যথা আগের থেকে অনেকটাই কমেছে ৷ দরজা খুলে রুমে ঢুকে চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিলাম ৷ চোখ গেলো একটা বইয়ের দিকে ৷ বেডের সাইডে টি টেবিলে বইটা রাখা আছে ৷ আর তার উপরে একটা চশমা ৷ দেখে মনে হলো বইটাই আমার সব কাজ করে দিবে ৷ এখানে যেহেতু বই রেখেছে সেহেতু নিশ্চয়ই পরতেই রেখেছে ৷

আমি সামনে এগিয়ে বইটা হাতে নিয়ে মাঝখানে বইয়ের ভেতর সেই প্লাস্টিকের টিকটিকিটা রেখে দিলাম ৷ তারপর যেমন ছিল তেমন ভাবেই রেখে রুমের বাহিরে চলে এলাম ৷ কিছুক্ষনপর আরিহানের মা রুমে ঢুকলেন ৷ আর আমি বাহিরে দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে তাকে দেখতে লাগলাম ৷ কিছুক্ষন পর আখি এসে বললো,,,,

আখি : কি হয়েছে? কি হয়েছে?

কাশফিয়া : হুশশশ…চুপ করো আর দেখো কি হয় ৷

আরিহানের মায়ের হাতের চায়ের কাপটা বইটার পাশে রেখে প্রথমে বিছানায় আয়েশ করে বসলেন ৷ তারপর বইটার উপর থেকে চশমাটা নিয়ে চোখে দিলেন ৷ চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে একটা চুমুক দিলেন ৷ কাপটা বাম হাতে নিয়ে পাশ থেকে বইটা নিয়ে খুললেন ৷ আর ওনার সামনে ওই পেইজটাই পরেছে যেখানে টিকিটিকিটা ছিল ৷ টিকটিকিটা দেখে ভয়ে লাফিয়ে উঠলেন উনি ৷

তার হাতে যে চায়ের কাপ ছিল সেটা হয়তো ভুলে গিয়েছিলেন ৷ তাই লাফিয়ে পরার সাথে সাথে পুরো চা টাও পরলো ওনার গায়ে ৷ আরো লাফিয়ে উঠলেন ৷ আমরা বাহিরে দাঁড়িয়ে মুখ চেপে ধরে হেসে যাচ্ছি তার কথা শুনে ৷ উনি বলছেন,,,,,,,

— আল্লাহ এটা কি? বাবাগো বাবা বাঁচাও বাঁচাও ৷ মরে গেলাম গো মরে গেলাম ৷ পুড়ে গেলাম গো পুড়ে গেলাম ৷ জ্বলে গেলাম গো জ্বলে গেলাম ৷ আহ…

আর কিছু শুনতে পেলাম না ৷ তাড়াতাড়ি রুমে চলে এলাম ৷ কারণ উনি যে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছেন তাতে সবাই চলে আসবে আর আমাদের দেখে ফেললে সমস্যা হবে ৷ রুমে এসে কিছুটা হেসে নিলাম ৷ এতোক্ষন হাসি চেপে রেখেছিলাম ৷ কিন্তু ওনার গায়েও তো চা পরেছে ৷ আমি তো শুধু ভয় দেখাতে টিকটিকিটা রেখেছিলাম ৷ কে জানতো চা টাও তার উপর পরবে?

আখি : বেশ হয়েছে ৷ ঠিক হয়েছে ৷ এবার বুঝুক মজা ৷ তোমার যেমন জ্বালা হয়েছিল এখন ওনারও হবে ৷

কাশফিয়া : আমি তো ভাবি নি চা টা ওনার গায়ে পরবে ৷ আমি তো শুধু ভয় দেখাতে চেয়েছিলাম ৷ কি হলো এগুলা?

আখি : তুমি খুশি হও নি? উনি তো ইচ্ছা করে করেছিল ৷ আমরা তো তাও করিনি ৷

কাশফিয়া : তবুও….

আখি : আচ্ছা নিচে চলো তো?

কাশফিয়া : কেন?

আখি : আরে দেখি ওই মহিলাটি কি করছেন চলো তো?

আমাকে আখি নিচে নিয়ে গেলো ৷ নিচে এসে দেখি এখানে সবাই আছে ৷ আরিহানের মায়ের গায়ে গরম চা পরেছে ৷ তাই উনি সবাইকে ডাক্তার ডাকতে বলছেন ৷ কিন্তু কেউই তাদের জায়গা থেকে নরছে না ৷ মানে ওনার কথা শুনছে না ৷ তা নিয়ে আরিহানের মা বারবার সবাইকে ধমক দিচ্ছে তবুও কেউ যাচ্ছে না শুধু আফিয়া ছাড়া ৷ আরিহানের মা আমাকে দেখে বললো,,,

— এই মেয়ে ডাক্তারকে ফোন করো ৷ দেখছোনা?

কাশফিয়া : ডাক্তারের নাম্বার তো নেই আমার কাছে ৷ তো শ্বাশুড়িমা কাল তো আমারও এই অবস্থা হয়েছিল দেখেছেন না আপনার ছেলে আমার জন্য কত কিছু করলো? তো আপনার এই অবস্থায় আপনার জন্য কিছু করছে না আপনার ছেলে ভাবা যায়?

— আরিহান বাসায় নেই দেখছো না? থাকলে নিশ্চয়ই করতো ৷

কাশফিয়া : নিশ্চয়ই? তারমানে আপনি শিউর নন ৷

— শিউর ও ওর মায়ের জন্য সব করতে পারবে ৷

— পুরোটাই ভুল ৷ কিছুই করতাম না আমি আপনার জন্য ৷

পিছন থেকে আরিহান বলতে বলতে বাড়ির ভিতরে ঢুকলো ৷ আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললেন,,,,,,

আরিহান : আপনি নিজে কি করেছিলেন? যে আমি আপনার জন্য সব করতে পারবো? মায়ের কোনো দায়িত্ব তো পালন করেন নি আপনি ৷ তাহলে আমি কেন সন্তানের দায়িত্ব পালন করবো? আপনার কিছু হলেও আমার যায় আসে না ৷ কিছু না হলেও যায় আসে না ৷ এখন হয়তো অন্যের ব্যথাটা বুঝতে পারছেন তাইনা? আপনি যেমন মানুষ অন্য সবাইও মানুষ ৷ এটাতে যেমন আপনার কষ্ট হচ্ছে তেমন আর সবারই কষ্ট হবে যেমনটা কাশফিয়ার হয়েছিল ৷

— আরিহান আমি…

আরিহান : ব্যস আর কিছু শুনতে চাইনা আমি ৷ কোনো এক্সপ্লেইনের দরকার নেই আমার ৷ শুধু এটুকুই বলি আমি কি সত্যি আপনার ছেলে? যার কষ্ট দেখে আপনার এক ফোটাও কষ্ট হয় না ৷ আপনি কি সত্যি আমার মা যাকে আমি ছোটবেলায় দেখেছিলাম ৷ তখনকার আর এখনকার মধ্যে পুরো আকাশ পাতাল পার্থক্য ৷ আমি কি এতোটা অবহেলা পাওয়ারই যোগ্য ছিলাম?

আর কিছু না বলে আরিহান সোজা উপরে চলে গেলেন ৷ আমি আরিহানের মায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,,

কাশফিয়া : শ্বাশুড়িমা সরি আন্টি আমি না আপনার মতো কাউকে আজ অবধি কখনোই দেখি নি ৷ কি করে পারলেন এতোটা বছর আরিহানকে একা ফেলে থাকতে ৷ কষ্ট হয়নি আপনার? কিন্তু জানেন আপনার ছেলের কষ্ট হয়েছে ৷ অনেক কষ্ট পেয়েছেন উনি ৷ একজন মাকে ছাড়া তার সন্তান যে কতটা অসহায় সেটা কি জানেন না? আমি ওনাকে আপনার জন্য চোখের পানি ফেলতে দেখেছি ৷ উনি আপনার সঙ্গে অভিমান করে আছেন ৷ যেই অভিমান থেকে উনি আপনার সঙ্গে রুড বিহেভ করেন ৷ আপনার ছেলে আপনার উচিত তাকে সঙ্গ দেয়া ৷ ওনার মনে এখন যেই অভিমানটা রয়েছে সেটা কীভাবে ভাঙ্গবেন আপনি জানেন ৷ আমার কথাগুলোকে লেকচার বা জ্ঞান মনে করবেন না প্লিজ ৷ আরিহানের কষ্টটা আমি নিজ চোখে দেখেছি ৷ আর চাইনা উনি কোনো কারণে কষ্ট পাক ৷ কারণ ওনার কষ্টটা সহ্য হয় না আমার ৷ প্লিজ আন্টি নিজের ছেলের ব্যপারে এটুকু বুঝুন ৷

বলেই উপরে চলে এলাম ৷ আর বাদবাকিরাও চলে গেল ৷ শুধু আরিহানের বাবা আরিহানের মায়ের উদ্দেশ্যে বললেন,,,,,,,

— ছোট থেকেই আমার ছেলেটা তোমার জন্য কষ্ট পেয়েছে ৷ যেটা তুমি বুঝেও না বুঝার ভান করেছো ৷ আর কষ্ট দিও না ছেলেটাকে ৷ একটু ভালো থাকতে দাও ৷ রেহাই দাও আমার ছেলেটাকে ৷ রেহাই দাও ৷ বাঁচতে দাও এবার ৷

আরিহানের বাবাও চলে গেলেন ৷ শুধু রইলেন আরিহানের মা আর আফিয়া ৷ আরিহানের মা আজ মাথা নিচু করে চুপচাপ তাদের কথা শুনচ্ছিলেন ৷ সবাই চলে যাওয়ার পর উনি আফিয়ার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আফিয়ার হাত ধরে বলতে লাগলেন,,,,

— আমি কি সত্যি কোনো ভুল করেছি? হ্যাঁ আমি জেদের বসে তোকে নিয়ে দেশের বাহিরে চলে গিয়েছিলাম ৷ আরিহানকে তো আরিহানের বাবা আগেই নিতে না করে দিয়েছিল ৷ আমি তো চেয়েছিলাম নিতে ৷ কিন্তু পারিনি ৷ রোজ আরিহানকে ফোন দিতাম ৷ কিন্তু ও কথা বলতো না ৷ যখন বলতো তখন যা নয় তাই বলতো ৷ তবুও আমি নিজেকে শক্ত করে ওকে বুঝাতাম কিন্তু ও বুঝতো না ৷ আমার ছেলেটা ছোট থেকেই কষ্ট পেয়েছে আমার জন্য? আমি কষ্ট দিয়েছি আমার ছেলেটাকে? আমি ওই মেয়েটাকে আমার ছেলের কাছে ধারেও সহ্য করতে পারি না ৷ তাই ওকে তাড়াতে চেয়েছিলাম ৷ এতেও আমার ছেলেটা কষ্ট পাবে ৷ আমি আসলেই নিজের ছেলের দিকটা ভাবি নি ৷ অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি ৷ অনেক!!

____________________

আমি রুমে এসে দেখি আরিহান বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছেন ৷ চুপচাপ ওনার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম ৷ আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার আকাশের দিকে তাকালেন ৷ আমি জোরে একটা শ্বাস নিয়ে বললাম,,,

কাশফিয়া : আমার কিছু কথা আছে আপনার সাথে ৷ অযথা রেগে যাবেন না প্লিজ ৷

আরিহান : বলো ৷

কাশফিয়া : কষ্ট সবার জীবনেই থাকে ৷ আপনার জীবনেও আছে সেটা আপনার মাকে নিয়ে ৷ আপনাদের মা ছেলের সম্পর্কটা ঠিক করে ফেলুন না প্লিজ ৷ এতোবছরের জমানো সব অভিমান গুলোকে ভেঙ্গে ফেলুন প্লিজ ৷

আরিহান : কেন বলছো এসব?

কাশফিয়া : কারণ আমি আপনাদের সবাইকে একসাথে দেখতে চাই ৷ আপনাদের সব সম্পর্কগুলোকে সুন্দর আর পরিপূর্ণ দেখতে চাই ৷ আপনাদের মধ্যে আপনারা সব সম্পর্ক ঠিক করে নিন ৷

আরিহান আমার দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললেন,,,,,

আরিহান : আর আমাদের সম্পর্ক? এটাও কি ঠিক করে নিতে বলছো তুমি?

আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম ৷ আরিহান আমার উত্তরের আশায় অসহায় চোখে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে ৷ কিন্তু আমি তার এই প্রশ্নের কি উত্তর দিব? এখন কীভাবে কি বলবো,,,,,,?

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here