The_Terrible_LoverLover part 30

#The_Terrible_Lover
#অদ্রিতা_জান্নাত
#পর্ব__৩০

একটা কালো রঙের গাড়ি পার্ক করে গাড়ি থেকে নামলো আরিহান ৷ আজ ও সিলেটে এসেছে ৷ আসতে চাচ্ছিলো না কিন্তু এমন একটা অবস্থা যে না এসেও পারলো না ৷ ওর মন ওকে এখানে টেনে নিয়ে এসেছে আজ ৷ গাড়ি লক করে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলো আরিহান ৷ সকালবেলা নিধি ওকে বাচ্চা দুটোর ছবি দিয়ে গিয়েছে ৷ সেই ছবিটা নিয়ে বেরিয়ে পরেছিল সিলেটের উদ্দেশ্যে ৷

কিছুটা পথ হেঁটে যেতেই দেখতে পেলো সামনে একটা সাইনবোর্ডে বড় করে লিখা “রূপনগর” ৷ আরিহান সেটা দেখে সেই রাস্তা বরাবর হাঁটতে লাগলো ৷ পকেট থেকে ছবিটা বের করে সামনের কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো যে ওদের বাড়িটা কোনদিকে” ৷ প্রথম প্রথম দুই একজন চিনতে পারেনি ৷ আরিহান আরেকটু সামনে গিয়ে আরেকটা লোককে এই কথাটা জিজ্ঞেস করলে লোকটা একবার ছবির দিকে তাকিয়ে আবার আরিহানের দিকে তাকিয়ে বললো,,,,,

— সেটা জেনে আপনি কি করবেন? এখানে তো আগে কখনো দেখি নি আপনাকে ৷

আরিহান : আমি আজই নতুন এসেছি ৷ একটু বলবেন? ওদের সাথে দেখা করবো ৷

— চিনেন ওদেরকে? চিনলে তো বাড়ি চিনার কথা ৷

আরিহান : আমি দূর থেকে এসেছি ওদের সাথে দেখা করবো বলে ৷ ইট’স আর্জেন্ট ৷ প্লিজ একটু বলবেন ৷

— আচ্ছা এই রাস্তা ধরে সোজা চলে যান ৷ তারপর ডান দিকের একটা মোড়ের সামনেই একটা বাড়ি পাইবেন ৷ ওইখানেই থাকে ওরা ৷

আরিহান : ধন্যবাদ ভাইয়া ৷

লোকটা হেসে চলে গেল ৷ আরিহান লোকটার বলা পথ ধরে এগিয়ে গেল ৷ বাড়িটার কাছে এসে গেইটে নক করার কিছুক্ষন পর রাতুল এসে বললো,,,,,

রাতুল : জ্বী কিছু বলবেন?

আরিহান : আব…হ্যাঁ ভিতরে গিয়ে কথা বলি?

রাতুল : আচ্ছা আসুন ৷

আরিহান ভিতরে ঢুকলে রাতুল ওকে একটা চেয়ারে বসতে বললো ৷ আরিহান সেখানে বসলে রাতুল ওর পাশে বসে বললো,,,,,,

রাতুল : এবার বলুন ৷ কি বলবেন?

আরিহান : আসলে আমি এখানে দুইজনের সাথে দেখা করতে এসেছি ৷

রাতুল : ঠিক বুঝলাম না ৷

আরিহান : দেখুন ভুল বুঝবেন না আমাকে ৷ আমি কোনো খারাপ কিছু ভেবে আসি নি এখানে ৷ বিশ্বাস করতে পারেন আমাকে ৷ আপনাদের বাড়িতে দুটো বাচ্চা মেয়ে আছে না?

রাতুল : হ্যাঁ কিন্তু কেন? কোনো সমস্যা?

আরিহান : না না ৷ ওদেরকে একটু নিয়ে আসবেন? দেখা করেই চলে যাবো ৷ ভয় পাবেন না আমি কিছুই করবো নাহ ৷

রাতুল : আচ্ছা একটু বসুন আমি আসছি ৷

বলেই রাতুল উঠে বাড়ির ভিতরে চলে গেল ৷ আরিহান আশপাশটা একটু দেখতে লাগল ৷ একটা অদ্ভুত ফিলিংস অনুভব করছে ৷ কিন্তু সেটা কি বুঝতে পারছে না ৷ রাতুল কেয়া আর আরিয়াকে আরিহানের সামনে নিয়ে এলো ৷ ওরা আরিহানের দিকে তাকিয়ে রইল ৷ ছবিতে যেরকমটা দেখেছে তার থেকেও হাজারগুন দেখতে সুন্দর লাগছে ওদেরকে আরিহানের কাছে ৷ এতোটা মায়াবী কি কেউ হয় আদো!! আরিহান মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো,,,,,,

আরিহান : আসো? এদিকে আসো ৷

ওরা দুইজন একে অপরের দিকে তাকিয়ে রাতুলের দিকে তাকালো ৷ রাতুল ইশারা করে যেতে বললো ওদেরকে ৷ দুজন হাত ধরে চুপটি করে আরিহানের কাছে চলে গেল ৷ আরিহান ওদের দুজনকেই কোলে নিয়ে বললো,,,,,,,

আরিহান : ভয় পাচ্ছো আমাকে?

ওরা কিছুই বললো না ৷ ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইল আরিহানের দিকে ৷ আরিহান মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল ৷ এই চাহনিতে ওদেরকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে ৷ দুজনের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,,,,,,

আরিহান : ভয় পেও না ৷ আমাকে ওই আন্টিটা পাঠিয়েছে ৷ ওই যে কাল তোমাদের সাথে একটা আন্টি কথা বলেছিল না?

আরিয়া : ওই ভালো আন্টিটা?

আরিহান হেসে বললো,,,,,

আরিহান : হ্যাঁ ওই আন্টিটাই ৷

কেয়া : তাহলে ওই আন্টিটা আসে নি কেন?

আরিহান : ওই আন্টিটার একটা কাজ পরে গিয়েছে তো তাই ৷ এখন তোমরা কি আমার সঙ্গে কথা বলবে না?

কেয়া : না বলবো তো ৷ কিন্তু মাম্মা বলেছে অপরিচিত কারো সাথে কথা বলতে না ৷

আরিয়া : হ্যাঁ মাম্মা তাহলে আমাদের সাথে রাগ করে কথা বলে না ৷ তাই আমরাও প্রমিজ দিয়েছি কারো সাথে কথা বলবো না ৷

আরিহান : তাই? কিন্তু আমি তো তোমাদের চিনি ৷ আর তোমরা তো ওই আন্টিটাকে চিনো তাই না? ওই আন্টিটার ভাইয়া আমি ৷ তো একটু একটু পরিচিত তো তাই না? তারপরেও আরো পরিচিত হয়ে নিব কেমন? তোমাদের মাম্মার সাথেও পরিচিত হবো ৷ সে আর রাগ করবে না তোমাদের সাথে ৷

কেয়া : আচ্ছা ৷ তুমিও অনেক ভালো আঙ্কেল ৷

আরিহান : আচ্ছা তো তোমাদের মাম্মা কোথায়? পরিচিত হয়ে তারপর কথা বলি নাকি?

আরিয়া : মাম্মা তো স্কুলে গিয়েছে ৷

আরিহান : তোমাদের মাম্মা পড়ালেখা করে?

কেয়া : না বাচ্চাদের পড়ায় ৷

আরিহান : ওহ তো কখন আসবে?

কেয়া : সেটা তো জানিনা ৷

বলেই কেয়া আর আরিয়া রাতুলের দিকে তাকালো ৷ রাতুল ওদের তাকানো দেখে বুঝতে পেরে বললো,,,,,

রাতুল : এসে পরার কথা ৷ এসে পরবে কিছুক্ষনের মধ্যে হয়তো ৷

আরিহান : ওহ আচ্ছা আপনারা এখানে কে কে থাকেন?

রাতুল : এই তো আমি, আমার স্ত্রী আর আমার বোন, তার বাচ্চা দুটো ৷

আরিহান : আর কেউ থাকে না?

রাতুল : না ৷

আরিহান : ওদের বাবা?

রাতুল কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরিয়া বললো,,,,

আরিয়া : পাপা তো শহরে থাকে ৷ মাম্মা বলেছে কাল আমরা শহরে যাবো ৷ আর পাপার কাছেও যাবো ৷

আরিহান : ওহ কাল যাবে? তোমরা তোমাদের পাপাকে দেখো নি কখনো?

দুজনেই চুপ করে মাথা দুলালো যার অর্থ ‘না’ ৷ মায়ায় পরে যাচ্ছে আরিহান এই বাচ্চা দুটোর ৷ ছাড়তেই ইচ্ছা করছে না ওর ৷ সারাজীবন এভাবেই বুকে আগলে রাখতে ইচ্ছা করছে ৷ কাশফিয়ার জন্য ওর বুকে যেই কষ্টটা হতো সেই কষ্টটা বাচ্চা দুটো দূর করে দিচ্ছে ৷ আরো শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে রইলো ৷ ছলছল করছে ওর চোখ ৷ ছয় বছর আগের অনুভূতি আজ আবার হচ্ছে ওর মনের ভেতর ৷ ছয় বছর আগের যেই অনুভূতিটা ছিল কাশফিয়ার জন্য আর আজ সেই একই অনুভূতিটা দুটো অচেনা বাচ্চা মেয়েদের জন্য ৷ সত্যি কি অচেনা? নাকি গভীর কোনো সূত্র আছে এর মধ্যে!!

বেশ কিছুক্ষন সবাই চুপ করে রইল ৷ কেয়া আর আরিয়া আরিহানের বুকে মাথা দিয়ে চুপটি করে বসে রইল ৷ ওরাও যেন শান্তি পাচ্ছে এতে ৷ সুখ পাচ্ছে ৷ অচেনা একজনকে খুব চেনা কেউ মনে হচ্ছে ৷ আরিহান ওদেরকে জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আছে ৷ কিছুক্ষন চুপ করে থেকে ওদেরকে সরিয়ে পাশের চেয়ারে বসিয়ে দিল ৷ পকেট থেকে পাঁচটা বড় বড় চকলেটের প্যাকেট বের করল ৷ এই চকলেটটা কাশফিয়ার খুব পচ্ছন্দের ছিল ৷ কখনো সেভাবে আরিহানকে বলে নি ও তবুও আরিহান বুঝেছে ৷ ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসার জিনিস না বুঝলে আর কে বুঝবে?

কাশফিয়ার প্রিয় জিনিস আজ অন্য কাউকে দিচ্ছে ৷ ব্যাপারটা ওর কাছে হাস্যকর লাগছে ৷ কিন্তু ও যদি জানতো যে কাশফিয়ার দুটো অংশকেই ও ওর ভালোবাসার জিনিস দিচ্ছে ৷ কতটা খুশি হতো!! খুশি হতো নাকি অবাক হতো? হয়তো দুটোই ৷ চকলেটের মধ্যে থেকে দুইটা কেয়া আর দুইটা আরিয়ার হাতে দিল ৷ আর একটা চকলেট আলাদা ভাবে দুজনের দিকেই এগিয়ে দিয়ে বললো,,,,,

আরিহান : এটা রাখো ৷ তোমাদের মাম্মা আসলে তাকে দিও?

আরিয়া : তুমি নিজেই দিও ৷ মাম্মা চলে আসবে ৷

কেয়া : হুম ৷ তারপর বলো যাতে আমাদের সাথে কথা বলে ৷ রাগ না করে ৷

আরিহান : আচ্ছা কিন্তু কখন আসবে? অনেকক্ষন তো হয়ে গেল ৷ আমি তো বেশি দেরি করতে পারবো না ৷ চলে যেতে হবে আবার ৷

কেয়া : আজ থেকে যাও না!!

আরিহান : আমার তো অনেক কাজ তাই চাইলেও পারবো না ৷ এখন তো আমাকে যেতেই হবে ৷

আরিয়া : চলে যাবে আঙ্কেল?

আরিহানের মনটাও খারাপ হয়ে গেল ৷ এতক্ষন ওদের সাথে থেকে ওরও যেতে ইচ্ছা করছে না ৷ কিন্তু পরিস্থিটাই এরকম ৷ ও যদি আরো থাকতে চায় তাহলে ওদের মামা মামি সবাই সন্দেহ করবে ওকে ৷ খারাপ না হয়েও খারাপ ভাববে ৷ শুধু শুধু মায়া বাড়িয়ে লাভ কি? ওরা তো আর ওর কেউ না ৷ শুধুই মনের ভুল আরিহানের কাছে ৷ সত্যি কি মনের ভুল? আজ আবার কারো মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে আরিহান না চাইতেও ৷ তবুও এটাকে বেশি দূর গড়াতে দিবে না ও ৷

বাচ্চা দুটোর কপালে গভীর ভাবে দুটো চুমু দিলো আরিহান ৷ কেয়া আর আরিয়াও আরিহানের দুগালে দুটো চুমু দিলো ৷ ওদের মাথা হাত বুলিয়ে হালকাভাবে একটু জড়িয়ে নিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো ৷ রাতুলের কাছে গিয়ে পকেট থেকে একটা কার্ড বের করে রাতুলের হাতে দিয়ে বললো,,,,,,

আরিহান : কোনো দরকার হলে আমাকে ফোন দিয়ে বলতে পারেন ৷ এখানে আমার ফোন নাম্বার রয়েছে ৷

রাতুল : তার কোনো দরকার নেই ৷ এটা…

আরিহান : আপনার কাছে রাখুন প্লিজ ৷ দরকার হলে বলবেন ৷ আর বাচ্চা দুটোর খেয়াল রাখবেন ৷

রাতুল : হুম সেটা তো অবশ্যই ৷

আরিহান : আজ আসি ৷ ভাগ্যে থাকলে আবার দেখা হবে ৷

রাতুল আর কিছু বললো না ৷ হয়তো এটাই চাইছিল যে আরিহান চলে যাক ৷ কারণ অপরিচিতদের বিশ্বাস করতে নেই যদিও সবাই এক না তবুও ৷ ভদ্রতার খাতিরে চুপ করে ছিল ৷ খারাপ হলেও সবার সাথে বেয়াদবি তো আর করা যায় না ৷ আরিহান কেয়া আর আরিয়ার দিকে তাকিয়ে ওদেরকে টাটা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল ৷ কেয়া আর আরিয়া চুপচাপ বাড়ির বাহিরের দিকে তাকিয়ে রইল ৷

_______________________

তাড়াতাড়ি রাস্তা দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে হেঁটে চলেছে কাশফিয়া ৷ আজকে বাড়িতে তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে চেয়েছিল ও ৷ কিন্তু তাড়াতাড়ি কিছুই হলো না উল্টো আরো দেরি হয়ে গেল ৷ “ইশ কত দেরি হয় গেল ৷ না জানি মেয়ে দুইটা কি করছে” মনে মনে এসব বলে বলে আফসোস করছে আর হেঁটে যাচ্ছে ৷ কিছুক্ষনপর বাড়ির গেইটের সামনে আসতে দাঁড়িয়ে পরলো ও ৷

কিছু একটার জন্য ওর মনটা ব্যাকুল হয়ে রয়েছে ৷ বাড়ির সামনে আসতেই একটা পরিচিত স্মেল ওর নাকে বারি খেয়ে চলে গেল ৷ খুব পরিচিত এই স্মেলটা চিনে ও কিন্তু মনে করতে পারছে না ৷ মনে করার চেষ্টা করলে আবার মাথায় চাপ পরে ৷ তাই চেষ্টাও করতে পারছে না ৷ বাড়ির আশেপাশে তাকাতেই দেখলো একটা ছেলে হেঁটে চলে যাচ্ছে ৷ ছেলেটার পিছনের দিকটা দেখতে পাচ্ছে ও ৷ খুব চেনা মনে হচ্ছে ৷ ওর চোখ ছলছল করছে ৷ চেনা মনে হচ্ছে ওর কিন্তু চিনতে পারছে না ৷

পরক্ষনেই ভাবলো এখানকার অনেকজনকেই তো চিনে হয়তো তাদের মধ্যেই একজন হবে ৷ শুধু শুধু দাঁড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করে লাভ কি? তাই আর না দাঁড়িয়ে গেইটের ভিতরে যেতে পা বাড়ালো ও ৷

‘আরিহানের মনে হচ্ছে কেউ ওকে গভীর ভাবে দেখছে ৷ তাই ও পিছনে ঘুরে তাকালো ৷ দেখে একটা মেয়ে গেইটের ভিতরে ঢুকে বাড়ির ভিতরে চলে গেল ৷ এতোটাও ভালো ভাবে দেখতে পায় নি ও ৷ তবুও মনের কোণে নিভে থাকা একটা আশার আলো জ্বলে উঠলো ৷ ও জানে না সেটা কেন? বাড়ির ভিতরে কে ঢুকেছে সেটা দেখার জন্য সামনে আগাতেই আরিহানের ফোনটা বেজে উঠলো ৷ আখি ফোন দিয়েছে ৷ ফোনটা রিসিভ করে কথা বলতে বলতে উল্টো দিকে হাঁটতে লাগল আরিহান ৷

দুজন দুদিকে চলে গেল ৷

★★★
ভাবলেসহীনভাবে বাড়িতে ঢুকলো কাশফিয়া ৷ মনটা অস্থির হয়ে আছে ওর ৷ ব্যাকুল হয়ে আছে ৷ রুমে যেতে নিলেই কাশফিয়া লিজাকে ডেকে বললো,,,,,

কাশফিয়া : কেউ কি এসেছিল?

লিজা : হুম ৷ একটা ছেলে এসেছিল ৷

কাশফিয়া : কিসের জন্য?

লিজা : কেয়া আর আরিয়ার সঙ্গে দেখা করতে ৷

কাশফিয়া : দেখা করতে দিয়েছো? চিনো তাকে?

লিজা : না আপু চিনি না ৷ ছেলেটা ভালো ছিল অনেক ৷ দূর থেকে এসেছে ওদের সাথে দেখা করতে ৷ কিন্তু কেন সেটা জানি না ৷ ওদেরকে আবার কিছু বলো না ৷ আমরা ছিলাম তো ৷

কাশফিয়া : হুম খেয়েছে ওরা?

লিজা : হুম খেয়েছে তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে নাও ৷

কাশফিয়া ‘হুম’ বলে ভিতরে চলে গেল ৷ ওর কাধের ব্যাগটা টেবিলে রেখে বিছানায় আরিয়া আর কেয়ার সামনে বসলো ৷ ওরা একবার কাশফিয়ার দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে রইল ৷ অন্যদিন হলে দৌঁড়ে এসে মাম্মা বলে জড়িয়ে ধরতো কিন্তু আজ চুপচাপ ৷ মেয়েদেরকে চুপচাপ ভাবে বসে থাকতে দেখে নিজেই কাছে টেনে নিলো ৷ তারপর বললো,,,,,,,

কাশফিয়া : কি হয়েছে আমার বেবিদের? এতো চুপচাপ কেন তারা? মাম্মা তো কিছুই বলে নি তাদের ৷

কেয়া আর আরিয়া এখনো চুপ করে রইলো ৷ আরিয়া ওদের চকলেট গুলো রেখে কাশফিয়ার একটা চকলেট এগিয়ে দিল ওর দিকে ৷ কাশফিয়া সেটা হাতে নিয়ে বললো,,,,,,

কাশফিয়া : মাম্মার সাথে কথা বলবে না?

আরিয়া : এই চকলেট টা তোমার ৷ ওই আঙ্কেলটা তোমাকে দিয়েছে ৷

কেয়া : আমাদেরও দিয়েছে ৷ নিতে চাই নি, তবুও দিয়েছে ৷ প্লিজ রাগ করো না ৷

কাশফিয়া চকলেট টার দিকে একবার তাকিয়ে ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে হেসে বললো,,,,,,

কাশফিয়া : আচ্ছা সোনা রাগ করবো না ৷ তোমাদের সাথে তোমাদের মামু আর মামিমনি ছিল দেখে কিছু বললাম না আমি ৷ তবে একা একা কখনোই এরকম কারো সঙ্গে কথা বলবে না ৷

আরিয়া : আচ্ছা মাম্মা জানো আঙ্কেলটা না অনেক ভালো ৷ অনেএএএএক আদর করেছে আমাদের ৷

কেয়া : হ্যাঁ ঠিক বলেছিস ৷ মাম্মা ওই আঙ্কেলটাকে একটু ফোন করো না প্লিজ ৷ প্লিজ প্লিজ প্লিজ একটু ৷

কাশফিয়া : তাকে এভাবে ডিস্টার্ব করা মোটেও উচিত না মা ৷ তাছাড়াও তার নাম্বার তো নেই আমার কাছে না?

কেয়া গালে হাত দিয়ে বসে ভাবতে লাগলো কি করবে? তখনি আরিয়া চিল্লিয়ে বললো,,,,,,

আরিয়া : পেয়েছি? ওই… মামুর হাতে আঙ্কেল কিসের কার্ড দিয়েছিল রে?

কেয়া : হুম তাই তো দাঁড়া দেখছি ৷

বলে কেয়া এক দৌঁড়ে গেল আবার এক দৌঁড়ে চলে এলো সাথে নিয়ে এলো ওই কার্ডটা ৷ ওটা কাশফিয়ার হাতে দিয়ে বললো,,,,,,,

কেয়া : মাম্মা দেখো তো এখানে কিছু পাও কি না?

কাশফিয়া কার্ডটা হাতে নিলো ৷ ওদের দিকে একবার তাকিয়ে কার্ডটার দিকে তাকালো ৷ একটা নাম্বার দেয়া আছে ৷ আর সেই নাম্বারের উপরে লিখা ‘আরিহান আহমেদ’ ৷ নামটাও চেনা চেনা লাগছে ওর কিন্তু চিনতে পারছে না ৷ হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো ৷ নামটা দেখে ওর নিজেকে ছন্নছাড়া মনে হচ্ছে ৷ কিছু একটা মনে আসতে চাইছে বারবার কিন্তু পারছে না ৷ সবকিছু যেন এলেমেলো হয়ে যাচ্ছে ৷

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here