#অজানা_তুমি
#রুবাইতা_রুহি (ছদ্ননাম)
#পর্ব -২৭
ড্রয়ার থেকে কিছু ছবি পেলাম।ভ্রু কুঁচকে সেগুলোকে হাতে নিতেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো।আয়রানের ছোট বেলার ছবি।একটা ডায়েপার পড়া ছবি দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠলাম।পিচ্চি থাকতেও কিরকম কিউট ছিলেন।ওনার চুলগুলো একদম স্ট্রেট ছিলো এখনও আছে।একটার পর একটা ছবি আনতেই ওনার পাশে ঠিক হুবুহু একজন ছেলেকে দেখতে পেলাম।এ কি আশ্চর্য?দেখতে পুরো একইরকম।সেইম হাইট,সেইম ফেইস,সেইম বডি লেন্থ কোনোকিছুই আলাদা চোখে পড়ছে না।তাহলে কি ওনার জমজ ভাই আছে?এছাড়া ওনার মা-বাবা কোথায়?আসার পর থেকে তো একবারও দেখলাম না।কিন্তু ওনার জমজ ভাই থাকলেও সে এখন কোথায়?হয়তো এখানে থাকে না।দাদুকে কি একবার জিগ্যেস করবো?হ্যা উনি নিশ্চই জানেন।
-“দাদুউউউউউউউ!”
তখনই দাদু কাথা হাতে দৌড়ে এলেন।এমনভাবে এলেন যেনো কোনো বিপদে হয়েছে।
দাদু -“কিরে?এভাবে হঠাৎ চিল্লিয়ে উঠলি কেন?পড়ে গেছিলি?নাকি ভয় পেয়েছিছস কিছু দেখে?বল কি হয়েছে।”
বলতে বলতে আমার হাত মুখ পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন।ওনার এতো যত্ন আর উত্তেজনা দেখে চোখে পানি চলে এলো।যাই হোক যেটার জন্য ডাকলাম।সেটা জিগ্যেস করেই ফেলি।দাদির হাত দুটো আকড়ে ধরে বললাম
-“আরে দাদু আমার কিছুই হয়নি।আমি শুধু কিছু জিনিস জানার জন্য তোমাকে ডাকলাম।এতো ঘাবড়ে যেয়ো না।কুল দাদু!কুললল!”
দাদু -“দুষ্টু মেয়ে।যেভাবে চিল্লিয়ে উঠলি যে কেউ ভয় পাবে।”
-“হেই!হেই!কি হয়েছে?এভাবে চিৎকার করলো কে?নুরিপাথর!”
বলতে বলতে আয়রান দৌড়ে সিড়ি থেকে নামলো।হাতে লেপটপ নিয়েই দৌড়ে নেমে এসেছে।মাই গড!আমার গলার আওয়াজ এতো দূর পর্যন্ত যায়?যে সবাই দৌড়ে এলো?আয়রান আমাকে আর দাদিকে ড্রয়িংরুমে রুমে দেখে দৌড়ে এসে বললো
-“দাদু কি হয়েছে?কে এভাবে চিৎকার করলো?”
দাদু- “আরে এতো চিন্তুা করিস না।নাতবউ ডেকেছিলো আমাকে।”
আয়রান -“কিহ?এতো জোরব কেউ চিৎকার করে?আমি তো ভয়ই পেয়ে গেছিলাম।ঠিক আছো তুমি?কোথায় লাগে নি তো?”
-“আরে তোমরা সবাই থামো।কিচ্ছু হয়নি আমার।আমি দাদুকে ডেকেছি আপনি কেনো নেমে এলেন?”
আয়রান ল্যাপটপ টাকে কোলে নিয়ে সোফায় ধপ করে বসে পড়লো যেন অনেক বড় একটা আতংক থেকে মুক্তি পেয়েছে।
দাদি -“তুই আবার এই টেলটপ কোলে নিয়ে বসেছিস?এটা ছাড়া দুনিয়ার আর কিছু বুঝিস না?”
আয়রান -“দাদু কতোবার বললো ওইটা টেলটপ না ল্যাপটপ!ল্যাএএটপ!বুঝেছো?”
দাদি -“আমার বোঝা লাগবে না।তুই ওইটা কোল থেকে নামা!জলদি নামা!”
আয়রান -“দাদি এটার সাথে তোমার এতো কিসের শত্রুতা?”
দাদি -“তুই নামাবি?নাকি ধরে আছাড় মারবো?কোনটা?”
আয়রাস বিরক্ত হয়ে রেখে দিলো।আর ততক্ষণে এক পলক আবার ছবিগুলো দেখা শেষ আমার।আমি এখন চঠজলদি দাদিকে জিগ্যেস করলাম
– “দাদু এই ছেলেটা কে?এটা তো আয়রান তাই না?ওর পাশে ওটা কে?দেখতে তো একদম একইরকম।”
দাদু ছবিটা নিলো।নিয়ে ছবিতে কিছুক্ষণ কাপাকাপি হাতে ছবিগুলোতে হাত বুলিয়ে ধরা কন্ঠে বললো
-“এটা আমার আরেকটা নাতি।দেখো কতো দুস্টু ছিলো মনে পড়লে এখনো হাসি পায়।জানো আমার সাদা সাদা চুল ধরে বলতো “দাদু তোমাকে দেখতে একদম এলিজাবেথের মতো।তার চুলগুলোও তো সাদা” তখন কি বলতো বুঝতাম না।তবুও দুষ্টুটার মিষ্টি মিষ্টি কথায় হেসে উঠতাম।সারা বাড়িতে গাড়ি নিয়ে টইটই করতো।খুব ভালোবাসতো আমাকে।সারাদিন আমার চুলগুলোকে নিয়ে গবেষণা করতো।কিন্তু!সে এখন আর আমাকে এলিজাবেথের সাথে তুলনা করে না।কোথায় যেনো হারিয়ে গেছে।এই বুড়িটাকে তার আর মনে পড়ে না রে!”
বলে চোখর জল ফেলতে লাগলেন।আমার কি এটা জিগ্যেস করা ভুল হয়েছে?ওনাকে কি আমি আঘাত দিয়ে ফেললাম?তঁবে জানতেও ইচ্ছা করছে।কে এই ছেলে?ঘুরে আয়রানের দিকে তাকিয়ে দেখি থমথমে মুখে অন্যমনস্ক হয়ে বসে আছে।চোখ দুটো একদম স্থীর।দাদি ছবিগুলোতে হাত বুলিয়ে চুমু খাচ্ছে।একটা ছবিতে নুরানি,আয়রান আর ওই ছেলেটাও আছে।
-“দাদি ওই ছেলেটা আসলে কে?”
-“দাদি তুমি যাও।ওকে আমি বলছি সবকিছু।”
দাদি চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলো।আয়রান আমার হাত থেকে ছবিগুলো নিয়ে
বললো
-“এই ছেলেটা কে?এটাই তো তোমার প্রশ্ন?তাহলে শোনো এটা আমার জমজ ভাই।”
যেটা ভেবেছিলাম ঠিক সেটাই হলো।
-“তাহলে উনি কোথায়?নাম কি ওনার?আসার পর থেকে তো একবারও দেখি নি।”
-“জা
তখনই আয়রানের ফোন আসলো।বুঝি না সব মুভিতে দেখি সবথেকে আসল জায়গাই সব সময় ফোন আসে।বাস্তবেও তো তাই মনে হচ্ছে!কল আসার আর কোনো সময় পেলো না?৫মিনিট পর দিলে কি হতো?ধুর ভালোই লাগে না।আয়রান “১মিনিট” বলে চলে গেলো।আমি ছবিগুলো হাতে নিয়ে দাড়িয়ে রইলাম।উনি ৫মিনিট পর এসে বললো
-“সরি রুহি আমাকে একটু অফিসে যেতে হবে।জরুরি একটা ফাইল আটকে আছে।তুমি বসো আমি বিকালের দিকেই চলে আসবো।”
বলে আমার গালদুটো টেনে সফ্টলি হাগ করে বেরিয়ে গেলো।আর আমি ব্লাশিং হতে লাগলাম।উনি জরিয়ে ধরলেই খুব ভালো লাগে।বুকের ভিতর এক ধরণের প্রশান্তি বয়ে যায়।কিন্তু আমার তো জানা হলো না।তঁবে এটা জানার প্রতি আমার এতো আগ্রহ বারছে কেন?বুঝতে পারছি না।যাই হোক উনি আসলে জেনে নেবো।কালকে থেকে কলেজে যেতে হবে।ওনারা কি সেটা এলাউ করবেন?করলে ওই বাসা থেকে বই গুলো আনতে হবে।সামনেই তো পরিক্ষা।আর মাত্র দুই কি তিনমাস বাকি।বইগুলো হয়তো ওভাবেই পড়ে আছে।একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ছবিগুলো রেখে দিলাম ড্রয়ারে।
#অজানা_তুমি
#রুবাইতা_রুহি (ছদ্ননাম)
#পর্ব -২৮
আমি আর দাদু পিঠা বানাচ্ছি।বানাচ্ছি বলতে শুধু দাদিই বানাচ্ছে।আমি পাশে বসে বসে দেখছি।আয়রান এখনো এলো না।প্রায় দুপুর ২টা বাজতে চললো।দাদি বসে বসে তেলের পিঠা ভাজচ্ছেন।তারপর সাজের পিঠা,পুলি পিঠা,ভাপা পিঠা আরো কত কি।উনি নাকি প্রায়ই নিজের মনের শান্তির জন্য পিঠা বানান।কেউ খাক আর না খাক তবুও তিনি বানান।উনি আমাকে অনেকবার এখান থেকে সরতে বলেছেন।আমার নাকি তেলের ছিটা লাগবে।কিন্তু আমি তো আমিই।
দাদি -“নে তো একটু খেয়ে দেখ কেমন হয়েছে?”
বলে একটা তেলের পিঠা একটু ছিঁড়ে ফু দিয়ে আমার মুখে পুড়ে দিলেন।
-“হুমম দাদু সত্যি অসাধারণ হয়েছে।কি বলবো!জাস্ট ওয়াও!”
দাদু – “সত্যি ভালো হয়েছে?জানিস তোর মতো করে কেউ আমার পিঠার প্রশংসা করে না।আমার তো একটা এরকমই নাতবউ দরকার ছিলো।জানিস সারাদিন বাসায় একা একা থাকতে হয়।কথার বলার মতো কেউ থাকে না।আয়রান চলে যায় অফিসে আর নুরানি চলে যায় কলেজে।দুইজন আসে প্রায় রাত করে তখন তো আর কথা বলার সময় থাকে না তাদের ক্লান্ত থাকে।খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে যায়।আর আমি বসে থাকি।এখন আর একা থাকতে হবে না তুই আছিস না?আমরা দুইজন অনেক কিছু করবো,অনেক মজা করবো ঠিক আছে?আমার বানানো পিঠা কেউ খেতো না।শেষে পাশের বাড়ির ওদের দিয়ে দিতাম।নইলে ভিক্ষুক আসতো তাদের কে সব দিয়ে দিতাম।এখন তুই আর আমি খেয়ে শেষ করবো।আয়রান,নুরানি খেলে খাবে না খেলে না খাবে।চল!”
ডাইনিং টেবিলে বসে বসে পিঠা খেয়েই যাচ্ছি খেয়েই যাচ্ছি।জীবনে হয়তো এরকম এতো পিঠা খাই নি।পেট মনে হয়ে ফেটেই যাবে।দাদুও খাচ্ছে আর নানান কথা বলছে আমার সাথে।মনে হচ্ছে এতোদিনের বুকে চেপে রাখা কথাগুলো এখন ওনার প্রত্যেকটা শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে বেরিয়ে আসছে।আমিও মুচকি হেসে সবকথা হজম করছি।কি আর করবেন?বয়স তো কম হয় নি।ওনারও তো একটু মন খুলে কথা বলার অধিকার আছে।কিন্তু বলবেনই বা কার সাথে?যাই হোক।
দাদি -“কিরে?তুই কিছু বলছিস না কেন?আমার এই বকবকানি তে বিরক্ত হচ্ছিস তাই না?
-“এই না না দাদু।তুমি ভুল বুঝছো।তুমি বলো।”
দাদি -“আচ্ছা শোন!”
-“দাদু একটা প্রশ্ন করি?রাগ করবে না তো?”
দাদি -“আরে রাগ করবো কেন?বল শুনি।”
-“দাদু তুমি যদি কিছু মনে না করো আমি কালকে থেকে কলেজ যেতে পারি?”
দাদি -“আরে এই কথাটা তো ভুলেই গেছিলাম।আমিও তোকে বলতাম।এটা জিগ্যেস করার মতো কিছুই নেই।তুমি যাবি।লেখাপড়া কমপ্লিট করবি।যদি কোনো শখ থাকে সেটাও সম্পূর্ণ করবি।আমরা সব সময় তোর পাশে থাকবো।”
আমি খুশিতে অশ্রুসিক্ত চোখে দাদুকে জরিয়ে ধরলাম।সত্যি আমি খুব ভাগ্যবতি।নিজের দাদুর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।খুব কষ্ট হচ্ছে।দাদুও আমাকে দুই হাতে আঁকড়ে ধরে বললো -“ওরে আমার নাতবউরে এতো ভালোবাসা আমি কোথায় রাখি?আচ্ছা শোন তুই রুমে গিয়ে একটু রেস্ট নে।আমি একটু বাড়ির পাশের বাগান থেকে কিছু ফল নিয়ে আছি।বাগানটায় অনেক ময়লা,আগাছা জমে আছে ওগুলো পরিষ্কার করি আসি।”
-“দাদু এগুলো তুমি করো?তোমার কষ্ট হয় না?
দাদু -“না রে কষ্ট হবে কেন?আমার করতে ভালো লাগে।নিজের হাতে করি।অনেক সৃতি আছে যে ওই বাগানে।আচ্ছা তুই যা।”
-“আচ্ছা।”
নিজের রুমে চলে এলাম।ফোনটা বিছানার উপর পড়ে আছে।আমি গিয়ে ফোনটা হাতে নিলাম।তখনই কল এলো।স্ক্রিনে “আয়রন ম্যান” নাম দেখে মুচকি হাসলাম।যাক ওনার মনে পড়েছে তাহলে!কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ধরলাম।
-“হেই নুরিপাথরররর!”
-“হুম বলুন।”
-“মিস করছি তোমাকে!”
-“এহ ঢং!”
-“ঢং না গো সুন্দরি।সত্যি কথা বলছি।আর একটু সময় বিকেলেই চলে আসবো।এসে রোমেন্স করবো আমরা!”
-“ইশশশশ!থামুন প্লিজ!”
-“কেনো গো লজ্জা পাচ্ছো?”
-“লজ্জা কেনো পাবো?”
-“ওহো এখনো পাও নি?তাহলে তো আরো একটু বলতেই হয়!”
-“না না থামুন।লজ্জা পেয়েছি অনেক লজ্জা পেয়েছি।প্লিজজ!”
-“না তোমার কোনো কথা শুনছি না!”
-“কল কেটে দেবো।”
-“আমি আবার দেবো।”
-“আমি আবার কেটে দেবো।”
-“আমি আবার কল দিবো না ধরলে সোজা বাসায় এসে তোমার ঘাড় বাকা করবো।”
-“ঘাট হয়েছে আমার আরো বলবো না।হুহ!”
-“এই তো। শোনো তোমাকে ছন্দে ছন্দে একটা প্রপোজ করি শুনবে?”
-“বাহ ছন্দে ছন্দে প্রপোজ?দেখি শোনান!”
-” উত্তর কিন্তু হ্যা হতে হবে।”
-“আচ্ছা আগে শুনি তো!”
-“ওও সুন্দরি ললিতা
তুমি কি হবে আমার সেনোরিটা?”
-“ওরে বাবা!”
-“উত্তর বলো!”
-“বলবো না!”
-“বলোওওও!”
-“হ্যা!”
-“হায়!আমি শেষ।আজকে বাসায় আসি তারপর দেখাবো।”
-“কি?”
-“সেটা আসার পর দেখো?”
-“হুম!”
-“আচ্ছা শোনো রাখি একটু কাজ আছে।”
-“আচ্ছা বাই বাই!”
কল কেটে গেলো।মুখের হাসিটা আরও চওড়া হলো।ওনার সাথে কথা বলতে এতো কেনো ভালো লাগে?প্রথমে বুঝতাম উনি হয়তো অনেক রাগি কিন্তু এখন দেখি উল্টো।”
বিকালে
ছাদে রেলিং এর উপর এক পাশ হয়ে বসে আছি।দাদু নিচে টিভি দেখছে।নুরানি ফ্রেন্ডস নিয়ে ঘুরতে গেছে।আয়রান এখনো আসে নি।আমাকে বলেছিলো যেতে।কিন্তু আমি ওদের সাথে গিয়ে কি করবো?ওরা ফ্রেন্ডরা ফ্রেন্ডরা যাবে মাঝখানে আমাকে এলিয়েন এলিয়েন মনে হবে।তাই না করে দিয়েছি।ভাবছি আমার আগের বাসাটাতে গিয়ে বই-খাতা সব আনবো।যদিও দাদু বলেছে আবার কিনে দেবে কিন্তু আমার তো আছে গিয়ে আনলেই হয়।খালি খালি কেনার কি দরকার?ভাবছি এখন বের হবো।হুম।রেলিং থেকে নেমে দৌড় দিলাম রুমে।গিয়ে যেরকমটা ছিলাম সেরকমই চুলগুলো কে বাধলাম।তারপর দাদুর কাছে গেলাম।
-“দাদু আমি একটু বের হবো!”
দাদি -“কোথায় যাবি?”
-“এই দাদু একটু কাজ আছে।”
দাদি -“আচ্ছা যা।তবে গাড়ি নিয়ে যা।রাকিবকে বল ড্রাইভ করতে।আর তাড়াতাড়ি আসবি।ফোন নিয়ে যা।”
-“আচ্ছা আচ্ছা।এতো চিন্তা করো না।দাদু একটু শোনো!আয়রান আসলে ওকে বলো চিন্তা না করতে।একটু সামলে নিও!”
দাদি -“আচ্ছা আচ্ছা রে বাবা!চিন্তা করিস না।”
বেরিয়ে গেলাম।দেখলাম রাকিব চাচা বসে বসে ঘুমাচ্ছে গাড়িতে।আমি গিয়ে ডাক দিতেই উঠে পড়লো।গাড়িতে উঠে বসলাম।
-“আংকেল চলো।”
রাকিব -“হ্যা মামনি স্টার্ট করছি।”
গাড়িটা শহর থেকে বেরিয়ে আবার ঢুকলো সেই নির্জন রাস্তায়।পাকা রাস্তার দুইপাশে জঙ্গল।বিকাল থাকলেও গাছপালার জোরে সূর্যের আলো নিচ পর্যন্ত পৌছাতে পারছে না। এখানেই কতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে আমার সাথে ভাবতেই গা শিউড়ে উঠছে।চলে এলাম সেই আকাবাকা পথে আর সেই ব্রিজের মাঝাামাঝি রাস্তায়।
রাকিব -“মামনি এটা কোথায় আনলে?এখানে তো শুধু জঙ্গল।”
-“আংকেল আমি তো আগে এখানেই থাকতাম।”
রাকিব -“এখানে কেনো মামনি?”
-“সেই অনেক কারণ আছে।এখন বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে।আংকেল সামনের ওই সাদা দুইতলা বিল্ডিংয়ের সামনে নামাও তো।
গাড়ি থামলো।নেমে পড়লাম।রাকিব আংকেলকে কিছুক্ষণ ওয়েইট করতে বলে সিড়ি বেয়ে উঠতে লাগলাম।বাড়িওয়ালার দরজায় তালা দেখে শান্তির নিশ্বাস ফেললাম।যাক কাজটা সহজ হয়ে গেছে।নিজের বাসার দরজার সামনে এসে ঠেলে ঢুকতেই অবাক হয়ে গেলাম।ফার্নিচার যেটুকু ছিলো সব নিয়ে গেছে।শুধু একটা টেবিলের উপর আমার কয়েকটা খাতা,বই আর একটা ভাঙা চশমা রয়ে গেছে।বাহ সবই লুটে নিয়েছে।আমি গিয়ে বই খাতাগুলো হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।জামা-কাপড় যা ছিলো সেগুলোও নিয়ে গেছে মনে হয়।হায়রে লোভ!পুরোণ জামা-কাপড় ও ছাড়লো না।হঠাৎ চোখ পড়লো টেবিলের নিচে পড়ে থাকা আয়রানের গিফট বক্সটার উপর।এটা দিয়ে আর কি করবো?গিফটদাতাই তো এখন আমার কাছে আছে।তবুও নিলাম যত্নসহকারে।ভিতরে কয়েকটা চকলেট ছিলো। সেগুলোও নেই।সারারুম ধুলোতে,মাকড়শাদের জালে ভরা।কেমন একটা গুমোট পরিবেশ।গুম গুম করে মৃদু শব্দ হচ্ছে।রাস্তার ব্রিজের সাইডে রাকিব আংকেলকে না দেখে চিন্তায় পড়ে গেলাম।গাড়ি তো এখানেই আছে।হয়তো কোথাও একটু এমারজেন্সিতে গেছে।আচমকা ঝোপ ঝাড়ের ভিতরে কিছু লড়ে উঠতেই ঘাবড়ে গেলাম।এক পা বাড়িয়ে যেতেই ধপ করে কোনো গভীর গুহায় পড়ে গেলাম মনে হলো।
_____চলবে_____
ক্ষমা করে দেবেন।আসলে বাধ্য হয়েই তাড়াতাড়ি শেষ করতে হচ্ছে।এর জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী🙏।
____চলবে_____