অদ্ভুত সুখানুভূতি পর্ব ৮

#অদ্ভুত_সুখানুভূতি
#সাদিয়া_আহমেদ_রোজ
#পর্ব_০৮

মেঘ রোজকে কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিলো। তারপর ফ্যানের পাওয়ার বাড়িয়ে রোজের কাছে আসলো,,

মেঘ : লাইট অফ করবো?
রোজ : নাহ।

মেঘ : আচ্ছা। এখনো ভয় লাগছে.? আমি সোফায় যাবো?
রোজ : নাহ।

মেঘ : তুমি কাঁপছো কেন.? আমাকে ভয় পাওয়ার দরকার নেই আমি আর তোমাকে বকবো না। আচ্ছা এসব বাদ দাও আমরা বরং আমাদের বেবির নাম ঠিক করি,,

রোজ : কিহ..??
মেঘ : এভাবে চমকে লাভ নেই। এখন না হোক পরে তো হবে। আমরা আগে থেকেই নাম ঠিক করে রাখবো। আমার তো টুইন মেয়ে বেবি পছন্দ।

রোজ : হি হি। আমারও তো। আমার তো একটা নামও পছন্দ “মৌ”। আমার এক মেয়ের নাম মৌ হবে।

মেঘ : তোমার মানে.? বলো আমাদের মেয়ের নাম মৌ হবে।তাহলে নাম দুইটা আমি বলি.?

রোজ : ভালো নাম বলবেন। যদি উল্টা পাল্টা হয় তাহলে আপনাকে মেরে ভুত বানিয়ে দিবো

মেঘ : আরে শুনবে তো আগে। আমাদের মেয়ের নাম হবে *রোদেলা আহমেদ মুন * আর * রিধিমা আহমেদ মৌ *। সুন্দর নাহ..?

রোজ : হ্যা কিউট আছে। তবে যদি ছেলে হয়.?
মেঘ : মেয়েই হবে। তবে মায়ের মতো এতো তেজি আর জেদি না। আমার মতো মিষ্টি কিউট হবে

রোজ : আপনি কিউট..? হা হা। নিজেকে আয়নায় দেখেছেন..? আমাকে বেবিরা কি বলবে জানেন? “মামনি ইংরেজরা এই সাদা মেঘরোদ্দুর কে এদেশে ছেড়ে গেছে কেন.? নিতে কি ভুলে গেছে.? আমরা টিকিট কেটে ওকে পাঠিয়ে দেই? ”

মেঘ : মোটেই না আমার মেয়েরা আমাকে সাপোর্ট করবে। আর আমি সাদা মেঘরোদ্দুর হলে তুমি লাল না গোলাপী গোলাপী

রোজ : গোলাপী কি.?
মেঘ : জানি না। তবে আমার মেয়েরা আমাকে ছাড়া কিছু বুঝবে না হুহ।

রোজ : বললেই হলো.? ওরা
মেঘ : তুমি প্রচুর ঝগড়ুটে। তোমার সাথে কথায় পারবো না তাই গুড নাইট। ওয়েট আমার গুড নাইট কিস কোথায়.?

রোজ : ওটা বাচ্চারা চায়। আপনি এতো বড় হয়ে চাচ্ছেন,, লোকে জানলে হাসবে।

মেঘ : ঘরের কথা পর জানবে কিভাবে.? তুমি কি বলে বেড়াবা.? চুপচাপ আমার হক আমাকে দাও নাহলে কিন্তু জোর করে আদায় করে নিবো।

রোজ : গুড নাইট। ঘুমালাম আমি। ওসব দিতে পারবো না হাহ। আর লাইট অফ করতে চাইলে করতে পারেন,, ভয় লাগবে না আর।

রোজকে শান্ত আর স্বাভাবিক দেখে মেঘ লাইট অফ করে সিলিং বরাবর তাকিয়ে শুয়ে পড়লো। মিনিট দশেক পর খেয়াল করলো রোজ আস্তে আস্তে ওর দিকে এগোচ্ছে। মেঘ আগের মতোই চুপচাপ শুয়ে আছে। রোজ মেঘের হাতের ফাঁকা অংশ দিয়ে ঢুকে মেঘের বুকের ওপর উঠে মেঘের কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,,

রোজ : শুনছেন.?
মেঘ : হুম।

রোজ : ভালোবাসি,,, ভালোবাসি আপনাকে।

মেঘের গালে ঠোট ছুঁইয়ে বাধ্য মেয়ের মতো সরে যেতে লাগলো রোজ। কিন্তু মেঘ তার আগেই রোজকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে রোজের কপালে ঠোট ছোঁয়ালো। তারপর একহাতে রোজকে জরিয়ে ধরে আরেক হাত দিয়ে ওর মাথায় বিলি কেটে দিতে লাগলো।

মেঘ : ভালোবাসি,, আমার পাগলি টাকে। এবার ঘুমাও না হলে অসুস্থ হয়ে যাবে।

রোজ : আচ্ছা আমি যদি মরে যাই আপনি আবার বিয়ে করবেন তাইনা.? তাকেও কপালে কিস করবেন… এভাবে জরিয়ে ধরবেন.?

মেঘ : উহু। কারন তুমি যেখানে থাকবে না মেঘও সেখানে থাকবে না।আর আমি তোমার জায়গায় আর কাওকে কখনো বসাতে পারবো না। আমার মনে শুধু রোজের বাস। সেখানে আর কেউ জায়গা পাবে না।

রোজ : আপনি একটু বেশিই সুন্দর। সব মেয়েরা শুধু আপনার পেছনে ঘোরে। আপনার চোখ ঠোটের ওপর নজর দেয়। ভালো লাগে না আমার। সেদিন সাঞ্জানা আপুকে টাইট দিয়ে যখন ক্লাসে যাচ্ছিলাম তখন মেঘলা বলছিলো আপনার ঠোট নাকি শুধু ওর জন্য। খুব রাগ হচ্ছিলো আমার।

মেঘ : আমার রোজ এতো হিংসুটে আগে জানতাম না তো।আমি তো ভেবেছি রোজ বোকাসোকা, বকবক করা বাচাল একটা মেয়ে।

রোজ : আমি বাচাল.? ছাড়ুন ছাড়ুন আমাকে।
মেঘ : ছাড়বো কেন.? আমার বউ আমি যা খুশি করতে পারি।তোমার কথায় আমি আমার বউকে কেন ছেড়ে দিবো।

রোজ : ওই মেঘলার কাছে যান।ও অনেক ভালো মেয়ে। আমি তো হিংসুটে।

মেঘ : শুধু হিংসুটে.? বাচ্চাও বটে..
রোজ : আমি বাচ্চা? একটু আগে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছিলো কে.? আপনাকে দেখে তো হাসি পাচ্ছিলো আমার

মেঘ : তবে রে

মেঘ রোজকে সুড়সুড়ি দিতে লাগলো,, রোজ খিলখিল করে হাসছে। আর ছোটাছুটি করছে। রাত ১১টা পর্যন্ত শয়তানি করে ঘুমালো দুজন।

সকালে মেঘরোজ কলেজে চলে আসে। মেঘকে পিয়াল নিজের এজেন্সিতে ডাকে। রোজের সমস্ত কথা আজ মেঘকে জানাবে।

মেঘ : আংকেল তুমি তো কখনো রোজের কথা বলোই নি। আলিজাকে চিনেছি কিন্তু।

পিয়াল : আজ তোমাকে সব বলবো। আমার বোন পাপড়ি। যখন রোজের জন্ম হয় তখন ব্লিডিং এর জন্য মারা যায় পাপড়ি। সেদিন থেকে কুশান রোজকে ভুল বুঝে রোজের ওপর একের পর এক অন্যায় করেছে। রোজ তখন পাঁচ বছরের বাচ্চা একটা মেয়ে। বাড়ির সবাই সেদিন কুশানের নিউ অফিসের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলো। শুধু ইরা, রোজ, আর রোজের বড় চাচ্চুরা ছিলো। কিন্তু সেদিন বিকালে ইরার বন্ধু কুহু ইরাকে কল করে ওদের বাড়ির পেছনের গেস্ট হাউজে আসতে বলে। ইরা রোজকে নিয়ে সেখানে যায় কিন্তু কুহুকে পায়নি।

ইরা বাড়ির ভেতরে ঢোকে। রোজ বাইরের ফুলগাছগুলোতে পানি দিতে লাগে। হঠাৎ ইরার গলা শুনতে পেয়ে রোজ ইরার কাছে ছুটে যায়। আর দেখে একটা ছেলে ইরার সাথে নোয়রামি করার চেষ্টা করছে। রোজ চিৎকার দিতে যাবে এমন সময় কেউ রোজের মাথায় কিছু দিয়ে আঘাত করে ওর মুখ চেপে ধরে। অস্পষ্ট ভাবে সবকিছুই দেখে রোজ।

বিকালে সবাই ইরার লাশ পায়। ইরার পেটে ছুরির জখম। রোজ বাইরে পড়ে আছে। রোজের দাদি সম্পূর্ন দোষটা রোজের ওপর চাঁপিয়ে দেয়। আসলে ওর দাদি রোজকে কখনই ভালো নজরে দেখেনি।

রোজকে নানা ভাবে মানসিক অত্যাচার করতো ওরা। এসব দেখে আমি রোজকে নিজের কাছে নিয়ে আসি। রোজ একটা ট্রমার মধ্যে আছে,, অন্ধকার দেখলেই ও চিৎকার করতে শুরু করে। সেন্সলেস হয়ে যায়। ওকে আমি আমাদের সমস্ত ট্রেনিং দিয়েছি। ও চায় নিজের নয় দেশের কাজ করতে। তবে তার আগে ওর প্রতিশোধ। আশা করি এইটুকুতেই সব বুঝতে পারবে।অতীত নিয়ে আমিও বেশি নাড়াচাড়া করতে চাইনা।

মেঘ : কুহু কে.?
পিয়াল : সাঞ্জানার বড় আপু।

মেঘ অবাক হয়ে পিয়ালের দিকে তাকায়।

পিয়াল : তোমাকে এগুলো বলার কারন রোজ নিজের হুশে নেই। রোজ নিজের রাগ আর জেদ কে প্রশ্রয় দিচ্ছে। তোমার দায়িত্ব রোজকে সামলানো।রোজের কাজে সাহায্য করা। রোজকে ঠিকবেঠিক বোঝানো। রোজকে সঠিক পথ দেখানো।

মেঘ : বুঝতে পেরেছি সব।

কলেজের মাঠে বসে বই নাড়াচাড়া করছে রোজ। কিছুটা দূরে সাঞ্জানাদের টিম। কিন্তু অদ্ভুত আর ভাবার বিষয় এটা যে সাঞ্জানা রা রোজ কেন.? কারোর সাথেই এখন আর খারাপ ব্যবহার করে না। সবার সাথে হাসি-খুশি ব্যবহার করে।

মেঘ কলেজে এসেই রোজের কাছে যায়। মেঘের দেখাদেখি সাঞ্জানারাও রোজের পাশে এসে বসে। রোজ ভ্রু কুচকে মেঘের দিকে তাকিয়ে উঠে যেতে লাগলো।

সাথি : আমরা এসেছি বলে চলে যাচ্ছো.?

রোজ : তোমরা কে যে তোমাদের দেখে চলে যাবো.? তাছাড়া তোমাদের সাথে তো আমার এমন সম্পর্কও না যে বসে আড্ডা দিবো।

মেঘ : তাহলে কি আমার জন্য উঠে যাচ্ছো.?

সাঞ্জানা : তোমাকে একটা কথা বলতে চাই রোজ। আমরা ইচ্ছা করে তোমাকে ঝামেলায় ফেলি না। সবটা কুহু আপুর কথামতো করেছি। সকালে জানলাম তুমি মেঘের বউ তাই আর অপেক্ষা করতে চাচ্ছি না। বড় বোন হিসাবে হলেও আমাদের মাফ করে দাও।

সারা : হ্যা রোজ। কুহু আপু শুধু দেখতে চেয়েছিলো তুমি ইরা আপুর চলে যাওয়ার পর ঠিক কেমন

রোজ : বাহহহ। তো কুহু আপু নেক্সট কি আমাকে টার্গেট করতে চাও..?? যদি তেমনই চিন্তা ভাবনা থাকে তাহলে বলে দিচ্ছি আমি বুবুন নই আমি রোজ। তোমাদের জন্য বুবুনকে হারিয়েছি আছি। আমি তোমাদের কিছুতেই ছাড়বো না,, আর মেঘরোদ্দুর আপনি চাইলে ওনাদের সাপোর্ট করতে পারেন তবে আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করবেন না।

কুহু : রোজ

রোজ সামনের দিকে হাটতে শুরু করলো। মেঘ কুহুকে ইশারায় থামতে বলে।

মেঘ : ও মেন্টালি ডিপ্রেসড আপু। তুমি কেন সেদিনের পুরো ঘটনা জানাচ্ছো না.? কেন বলছো না সেদিন কি হয়েছিলো।

কুহু : ( কিভাবে বলবো মেঘ.? সত্যিটা বললে যে ওরা সাঞ্জানার সাথে। নিজের বোনের ক্ষতি চাইবো কিভাবে.? রোজ যদি আমাকে মেরে শান্তি পায় তাহলে সেটাই ভালো। ) জানি না আমি।

কুহুও উঠে চলে গেলো। সাঞ্জানারা একে ওপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করছে।

মেঘ : কুহু আপু বলতে চাচ্ছে না কেন.?

সাঞ্জানা : আমি তোর ফোন পেয়েই আপুকে জিজ্ঞেস করেছি ইভেন আমরা সবাই জিজ্ঞেস করেছি আপু তবুও কিছু বলেনি।

সারা : আমার মনে হয় ব্যাপারটা কমপ্লিকেটেড। এদিকে রোজও ভীষন রেগে আছে। আমার ভয় করছে অনেক। রোজকে তো জানি ও তিল পরিমাণ ছাড় দেবার মেয়ে না। আর সেখানে ওর বুবুনের সাথে ঘটে যাওয়া এই অন্যায় কিভাবে মানবে.?

সাথি : তুই রোজকে বোঝা মেঘ। দরকার পরলে আমরা তোকে সাহায্য করবো।

মেঘ : তোরা আলিজা নিভি নীলয় আর আরাভকে ডেকে আন। আমি রোজের হোস্টেলে যাচ্ছি।

সাথি : ওখানে তো ছেলেরা এলাউড না।
মেঘ : সে ব্যবস্থা আমি করছি।



হসপিটালে চিন্তিত মুখ করে নিজের কেবিনে বসে ফাইল দেখছে সম্রাট। এমন সময় একজন নার্স ছুটে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো

নার্স : ১১২ নম্বর বেডের পেসেন্টের অবস্থা অনেক ক্রিটিক্যাল স্যার। অক্সিজেন নিতে পারছে না সিনিওর ডক্টর কিছু টেস্ট করাতে দিয়েছিলো

সম্রাট : রিপোর্ট..?? কি রিপোর্ট এসেছে.?

নার্স : পেসেন্টের একটা কিডনি টোটালি ড্যামেজ। স্যার বলেছেন। ওনার চোখের অবস্থাও ভালো না ইমিডিয়েটলি অপারেশন করাতে হবে।

সম্রাট ছুটে কেবিনে আসলো। বেডে শুয়ে আছে সুমি। সুমির হাত দুটো অসম্ভব কাঁপছে।সম্রাট দ্রুত পায়ে গিয়ে অক্সিজেন মাস্ক ঠিক করে অক্সিজেনের রেট দেখতে লাগলো।

সম্রাট : সুমি সুমি শুনতে পাচ্ছো.? কিচ্ছু হবে না তোমার। তুমি ভালো হয়ে যাবে। আগের মতো হয়ে যাবে। ( এখন চোখ আর কিডনি কোথায় পাবো.? ) নার্স আপনি এখুনি খোজ নিন ডোনার পেলেই আমাকে জানাবেন।

হঠাৎ আরেকজন নার্স ছুটে এসে বললো
– স্যার ডোনার পাওয়া গেছে। আপনি আলতাফ স্যারকে বলে দিন। আমরা ওটি রেডি করছি।

সম্রাট আলতাফকে অপারেশন করার জন্য বলে দিয়ে সুমির পাশে বসলো। সুমির হাত নিজের হাতের ভাজে রেখে ওর মাথায় হাত বোলাতে লাগে।



সুমির অপারেশন সাক্সেসফুল হওয়ার পর সম্রাটের কেবিনে একটা চিঠি পায় সম্রাট। চিঠিটা খুলতেই সম্রাটের মুখ কালো হয়ে যায়।

সম্রাট,,

নিজের সবটা দিয়ে তোমাকে ভালোবেসেছিলাম। জানি তোমাকে আমি কখনোই পাবো না কারন তুমি সুমিকে ভালোবাসো। তোমার সবটা জুরে একটা মেয়েই বিচরণ করে আর সেটা হলো সুমি। সুমির যেদিন এক্সিডেন্ট হয় সেদিন আমি ওর পাশেই ছিলাম। হয়তো পারতাম ওকে বাঁচাতে কিন্তু কিছুক্ষনের জন্য আমার ভেতরের মনুষ্যত্ব টা মরে গেছিলো,, তোমাকে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা আমাকে আষ্টেপিষ্ঠে জরিয়ে রেখেছিলো। আমি দাড়িয়ে থেকেই সুমির এক্সিডেন্ট হতে দেখি কিন্তু সুমির রক্ত আমাকে শান্তি পেতে দেয়নি।যতবার চোখ বুঝেছি ততবার সুমির রক্তাক্ত চেহারা চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। এই একটা বছর আমি এই অপরাধ বোধে মরেও বেঁচে ছিলাম। কিন্তু এসব থেকে আমি মুক্তি চাই। সুমির জন্য কিছু করতে চাই,, সব টেষ্ট করিয়ে রেখেছি। ডোনার হিসাবে ফর্ম ফিল আপও করে এসেছি। আমার মৃত্যুর পর আমার চোখ আর কিডনি ওকে দিয়ে দিও। নার্সকে আমি চিঠিটা দিয়ে গেলাম ভালো থেকো তোমরা।পারলে আমাকে মাফ করে দিও। আর নীলয়কে দেখে রেখো। আমি আর মামারা ছাড়া যে ওর কেউ নেই।

ইতি
মেহেক

সম্রাট তৎক্ষনাৎ সিসি টিভি ফুটেজ দেখে নার্সকে ডাকে।

সম্রাট : চিঠিটা আপনি রেখেছেন এখানে.? যে দিয়েছে সে কোথায়.?

নার্স : স্যার ওই ম্যাডাম আমাকে চিঠি দিয়ে চলে গেছিলো। নিচে গিয়ে ডোনারে ফর্ম ফিল আপ করেছে। আমি নিজে তাকে সাহায্য করেছি আসলে কাঁদছিলো অনেক। তারপর বাইরে চলে গেলো। মিনিট দশেক পর কিছু মানুষ ওনার ডেডবডি নিয়ে আসে। এক্সিডেন্ট কেস। ওনার সাথে ১১২বেডের পেসেন্টের মিল ছিলো তাই ওনার কিডনি আর চোখই ট্রান্সফার করা হয়েছে। কিন্তু কেন স্যার..??

সম্রাট : বডি কোথায়.?
নার্স : মর্গে। পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে।

সম্রাটের চোখ গড়িয়ে কয়েক ফোটা পানি পড়লো। নার্স অবাক হয়ে চেয়ে আছে। সম্রাট কোনো দিকে না চেয়ে মর্গের দিকে দৌড়াতে লাগলো। হসপিটালের সমস্ত স্টাফ চেয়ে আছে। মেহেকের বডির পাশে এসে মুখের ওপর থেকে কাপড় সড়ালো সম্রাট,, সারামুখে রক্ত লেপ্টে আছে।

সম্রাট : তুমি আমার বন্ধু হয়ে এমনটা কেন করলে মেহেক.? কেন নিজের জীবনটা এভাবে শেষ করলে.? কেন.? কেন আমার কাছে এসে বলোনি। তুমি তো আমার কাছে সবকিছু শেয়ার করতে তাহলে এটা লুকালে কেন.? জেদের কারনে.? শুধু তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছি বলে.? প্রেমিকা বা বউ হিসাবে ভালোবাসতে পারবো না বলেছিলাম কিন্তু তার পরিবর্তে বন্ধুত্বের হাতও তো বাড়িয়েছিলাম। তুমি কেন সে হাতটা ধরলে না.? নীলয়ের কথাটাও একবার ভাবলে না.?

নার্স : স্যার বডিটা.?

সম্রাট : আমার পরিচিত। আমি বাড়ি নিয়ে যাবো মেহেককে। এম্বুলেন্স রেডি করুন।

চলবে.?

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here