#অবশেষে_তুমি (পর্ব ১২)
#Mohua_Afrin_Mim
·
·
·
অর্ণব বললো….
অর্ণবঃ শুনতে চাও কি হয়েছে!!
মিমঃ হ্যা বলেন।।
আজকে আমি শুনবোই কি লুকাচ্ছে উনি আমার থেকে।। আর কি এমন কারণ আছে।।(মনে মনে)
অর্ণব বলা শুরু করলো—-
তিন বছর আগের কথা তখন আমি অনার্স ৪র্থ বর্ষে পড়তাম আর নিসা অনার্স ১ম বর্ষে।
Flashback……..
কলেজে ঢুকতেই কারো সাথে সজোরে ধাক্কা খেলাম।। টাল সামলাতে না পেরে আমার সামনেরজন পরে যাচ্ছিলো তখনি আমি তাকে কোমর পেচিয়ে ধরে ফেলি।।
ঠিক তখনি সামনেরজন বলা শুরু করলো— “কেরে এটা আমাকে এইভাবে ধাক্কা দিলি।। চোখে যখন দেখতে পাস না তাহলে কলেজে আসিস কেনো।। গিয়ে চোখের ডাক্তার দেখা।। শালা কানা, অন্ধ, কুম্ভভূত কোথাকার।।” এক শ্বাসেই কথাগুলো বললো নিসা।। আর অর্ণব নিসার দিকে এক ধ্যানে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।।
অর্ণবঃ এই যে মিস আপনি নিজে অন্ধ হয়ে আমাকে বকছেন।। আপনি অন্ধ আর গিয়ে চোখের ডাক্তার দেখান।। আর আমাকে কি বললেন কুম্ভভূত।। আমি যদি কুম্ভভূত হই তাহলে আপনি পেত্নি।।
কথাগুলো বলেই অর্ণব নিসাকে ছেড়ে নিচে ফেলে দিতে নিলে নিসা বললো
নিসাঃ এই কি করছেন।। আমাকে ফেলে দিচ্ছেন কেনো!!
তখনি অর্ণব নিসার হাতটা ধরে ফেললো আর বললো
অর্ণবঃ আমি না চোখে দেখি না আপনাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিচ্ছি।। তাহলে আপনাকে বাঁচিয়ে কি লাভ হলো।। ফেলেই দেই।।
নিসাঃ ফেলে দিবেন না প্লিজ।।
অর্ণব নিসাকে ধরে দাড় করালো।।
এবার রেগে গিয়ে কিছু বলতে যাবো তার আগেই ফারিয়া এসে বলা শুরু করলো
ফারিয়াঃ আরে অর্ণব ভাইয়া আপনি এখানে।। কেমন আছেন!!
নিসাঃ তুই কি চিনিস নাকি এই ব্যাটাকে!! (আস্তে করে বললাম)
ফারিয়াঃ উনি হচ্ছেন অর্ণব চৌধুরী।। আমাদের সবার সিনিয়র ভাইয়া।।
অর্ণবঃ হ্যা ভালো আছি।। কিন্তু এই মেয়েটা কে!! আর এখানে কি করছে??
ফারিয়াঃ ভাইয়া ও হলো আমার ফ্রেন্ড নিসা।। আমাদের কলেজে নতুন এডমিশন নিয়েছে।। অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে।।
অর্ণবঃ ওহ্।। তো এতো বকবক করে কেনো বাচালের মতো।। কম কথা বলতে পারে না নাকি!!
এবার আমার মেজাজ এতো খারাপ হলো যে রাগে যেনো আমার মাথায় আগুন ধরে গেলো।। তাই উনাকে কিছু বলতে যাবো তার আগেই ফারিয়া আমার হাত শক্ত করে ধরে বলে
ফারিয়াঃ আচ্ছা তাহলে ভাইয়া আসি।।
অর্ণবঃ ঠিক আছে।।
ফারিয়া আমাকে হেচকা টান দিতে দিতে নিয়ে একটা গাছের নিচে দাড়ালো।। এদিকে আমি রাগে গজগজ করছি আর ফারিয়ার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।।
নিসাঃ তুই আমাকে ওইখানে কিছু বলতে না দিয়ে এইভাবে নিয়ে এলি কেনো??
ফারিয়াঃ আর নইতো কি করতাম!! তোর কি বেশি মরার সখ হইছিলো নাকি!!
নিসাঃ কেনো??
ফারিয়াঃ তুই জানিস না উনি কে।। উনি এই কলেজের সিনিয়র আর কলেজের একজন বড় মাপের মানুষ।। সব মেয়ের ক্রাশ উনি।। কিন্তু ভাইয়া কাওকে পাত্তা দেয় না।। কারো দিকে তাকায়ও না।। আর তুই কিনা উনার সাথে ঝগড়া করছিলি।। তোকে যদি এখন কিছু করতো তাহলে কি তুই বাঁচতে পারতি।। ভাগ্যিস আমি এই কলেজে আগে থেকে পরতাম বলে ভাইয়াকে চিনি আর তোকে বাঁচাতে পারলাম।।
নিসাঃ হুম।।ছেলেটা আসলেই ক্রাশ খাওয়ার মতো যে কেউ দেখলেই ক্রাশ খাবে।। না না এইসব আমি কি ভাবছি ওই কুম্ভভূতটার উপর আমি ক্রাশ খাবো।। কখনোই না।। (মনে মনে)
ফারিয়াঃ তুই ভাইয়ার কাছে সরি বলবি।।
নিসাঃ কি!! আমি বলব সরি উনাকে!! তোর কি মাথা ঠিক আছে।। আমি কখনোই উনার কাছে সরি বলতে পারবো না।।
ফাইয়াঃ না তোকে বলতেই হবে।। তোর উপর যদি রেগে থাকে আর পরে যদি তোকে কিছু বলে।।
নিসাঃ ঠিক আছে।। দেখা যাবে।।
আজকের দিনটাই খারাপ।। আজকে প্রথম কলেজ ভাবলাম মজা করবো।। তা না সব আনন্দই শেষ হয়ে গেলো ওই ব্যাটার জন্য।। শালা কুম্ভভূত কোথাকার।।
ফারিয়াঃ হয়েছে হয়েছে আর গালি দিতে হবে না।। চল ক্লাসে যাই।।
নিসাঃ চল।।
এদিকে অর্ণব নিসাকে দেখার পর থেকে ওকে ভুলতেই পারছে না।। ফারহানকে বলছে
অর্ণবঃ দোস্ত দেখেছিস মেয়েটাকে।। কি সুন্দর।। মেয়েটাকে তো আমি ভুলতেই পারছিনা।। ওকে আমার চাই যেভাবেই হোক।।
ফারহানঃ আমি কি ভুল শুনছি নাতো!! অর্ণব কাউকে পছন্দ করে।। যে ছেলে নাকি কলেজের সব মেয়ের ক্রাশ।। যে ছেলেকে দেখলে সব মেয়ে পছন্দ করে ফেলে সেখানে সেই ছেলে কাউকে পাত্তা দেয় না।। সেই ছেলে নাকি এই মেয়েকে পছন্দ করেছে।।
অর্ণবঃ মজা করিস না তো।। আমি সিরিয়াস।। এই মেয়েকে আমি সত্যিই পছন্দ করে ফেলেছি।। At any cost এই মেয়েকে আমার চাই চাই।।
.
.
.
.
.
অর্ণব বাসায় আসার পর থেকে নিসাকে ভুলতেই পারছে না।। সব সময় নিসার কথা মনে করেই যাচ্ছে।। রাতে ঘুমাতেও পারেনি ঠিক মতো।।
পরেরদিন কলেজে আসলাম ফারিয়ার সাথে।। কলেজে ঢুকেই দেখি অর্ণব বসে আছে উনার ফ্রেন্ডদের সাথে।।উনাকে দেখে ফারিয়া বললো
ফারিয়াঃ দোস্ত এটাই সুযোগ ভাইয়ার কাছে সরি বলার।।
নিসাঃ কি বলছিস তুই এসব!! আমি বলতে পারবো না উনাকে সরি।।
ফারিয়াঃ দেখ জিদ করিস না।। সরি বলার জন্য মেনে যা।। চল আমি তোকে নিয়ে যাচ্ছি ভাইয়ার কাছে।।
অর্ণবের কাছে গিয়ে বললাম
নিসাঃ ভাইয়া শুনছেন!!
অর্ণবঃ হ্যা বলো।।
নিসাঃ আসলে কালকের জন্য সরি।। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।। আসলে আপনাকে কালকে এতো কিছু বলা উচিত হয়নি।।
অর্ণবঃ হুহ্।। তুমি বলছো সরি!! আর আমি তোমার সরি মেনে নেবো!! ভাবলে কি করে!!
এবার আমার মেজাজ চরম সিমানায় পৌঁছে গিয়েছে।। আমি বললাম……….
·
·
·
চলবে……………………..