#এই_রাত_তোমার_আমার
#সানজিদা_ইসলাম
#৩য়_পর্ব
(পেইজের রিচ অনেক কমে গেছে বেশি বেশি করে লাইক কমেন্ট করো)
ফিমার সাথে কথা বলার পর মাহিয়াত অফিসে চলে যায় কিন্তু বারবার তার মাথায় ফিমার বলা শেষ কথাটা ঘুরপাক খেতে থাকে। কাজে কিছুতেই মন বসাতে পারলো না তাই আগে আগেই বাসায় চলে যায় আরেকবার চেষ্টা করবে তার মাকে আর নুহাকে বোঝাতে। তাদের একটা সিদ্ধান্ত চারজন মানুষের জীবনে একটা অস্বাভাবিক পরিবর্তন এনে দেবে যা সে কিছুতেই চায় না।সে তার ভালোবাসাকে হারাতে চায় না আর না চায় ফিমা নামক মেয়েটাকে কষ্ট দিতে।
কলিং বেল চাপতেই কাজের মেয়ে দরজা খুলে দিল।সে ছোফায় বসে এদিক সেদিক তাকিয়ে জুতা মুজা খুলতে লাগলো। প্রতিদিন সে ঘরে ফিরলে প্রথমেই নুহা এক গ্লাস ঠান্ডা পানি এগিয়ে দেয়।আর তা দিয়েই মাহিয়াতের সারাদিনের ক্লান্তি এক নিমিষেই দূর হয়ে যায় কিন্তু আজে এতক্ষণ হয়ে গেলো ঘরে এসেছে অথচ পানি দেয়ার নাম নেই।এর মধ্যে তার মা হাতে করে পানির গ্লাস নিয়ে আসলো সে পানিটুকু খেয়ে তার রুমে চলে গেলো কিন্তু রুম একদম ফাকা নুহা কোথাও নেই সে বারান্দায় চেক করলো সেখানেও নেই হয়তো ছাদে ভেবে সে আমারি থেকে টিশার্ট আর আর ট্রাউজার নিতে গিয়ে দেখল নুহার কাপড়-চোপড় আলমারিতে আর নেই নিচে তার লাকেজটাও নেই।সে হাত থেকে কাপড় ফেলে তৎক্ষণাৎ তার মায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
—মা নুহা কোথায়?
—আমি কি জানি বিকেলে দেখলাম কাপড় চোপড় নিয়ে বাইরে চলে গেলো আমাকে কি বলে গেছে নাকি?
মাহিয়াত ঘরে চলে গেলো তারপর ফোন হাতে নিয়ে নুহার নম্বরে ডায়েল করলো প্রথমে দুইবার রিং হওয়ার পরে কেউ ফোন রিসিভ করলো না তৃতীয় বারের সময় নুহা ফোন রিসিভ করলো,
—হ্যালো মাহি বলো।
—হ্যালো,নুহা কই তুমি? বারবার ফোন দিচ্ছি ফোন রিসিভ করছিলে না কেনো?
—আমি আমাদের বাসায় চলে এসেছি মাহি আর ওয়াশরুমে ছিলাম তাই ফোন ধরতে পারিনি।
—আমাদের বাসায় মানে?তুমি বাবার বাসায় যাবে আমাকে বলে যাবা না?আর এখন তুমি বাসায় কেনো গেলে তোমার সাথে আমার দরকারি কথা ছিল,
—রিলেক্স মাহি এত প্যানিক হচ্ছো কেনো? দুইদিন পরে যাওয়া দুইদিন আগে যাওয়া তো একই কথা।তাই আগেই চলে এসেছি।
—দুই দিন আগে যাওয়ার পরে যাবে একই কথা মানে কই যাবা তুমি?
—সরি মাহি আমি তোমাকে না জানি একটা ডিসিশন নিয়ে নিয়েছি যতদিন পর্যন্ত তোমাদের বাচ্চা না হবে আই মিন ও মেয়ে তোমার ঘরে থাকবে ততদিন পর্যন্ত আমি আমার বাবার বাসায় থাকবো।এন্ড আমার একটা কথা রেখো প্লিজ ঐ মেয়েকে বিয়ে করে আমাদের বেডরুমে রেখো না অন্য যে কোনো রুমে রেখো প্লিজ।কথা গুলো বলার সময় নুহার গলা ধরে আসছিলো।
—এগুলো কেমন কথা নুহা আমি তোমাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো এতোদিন?প্লিজ ফিরে এসো।আর আমি কোনো বিয়ে টিয়ে করব না।চাইনা আমার কোনো বাচ্চা তুমি প্লিজ ফিরে এসো আমরা দুজন মিলে মা কে বোঝাবো। আমার কিছু চাইনা শুধু তোমাকে চাই। তুমি শুধু আমাকে সাপোর্ট করো তাহলেই হবে। দরকার হলে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাব মা যখন তার ভুল বুঝতে পারবে তখন ঠিক ফিরে আসবো।আরো নানান কথা দ্বারা নুহাকে কনভেন্স করতে লাগলো ফিরে আসার জন্য মাকে বোঝানোর জন্য কিন্তু কোনো ভাবেই ফিরে আসতে রাজি না।আর সে যদি বিয়ে করতে না চায় তাহলে নুহা তাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে বলে ফোন রেখে দিল।মাহিয়াত তবুও তার জেদের কাছে হার মানলো না বরং তার মাকে বোঝাতে গেলো কিন্তু সেখানেও সে ব্যর্থ হলো তার মা তাকে যে কোনো উপায়ে বিয়ে দিয়েই ছাড়বে তার নাতি-নাতনি চাই চাই এই মেয়ে পছন্দ না হলে অন্য মেয়ে দেখবে। সে উল্টো মাহিয়াতকে বোঝাতে শুরু করলো।রাগে জেদে সে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো রাতেও কিছু খেলো না।
এদিকে ফোন কেটে দিয়ে নুহা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। তার যেমন ইচ্ছে করে মা ডাক শুনতে ঠিক তেমনি তার মাহিও ইচ্ছে করে বাবা ডাক শুনতে। সে মুখে স্বীকার না করলেও নুহা জানে মাহি বাচ্চাদের কত ভালবাসে এইতো নুহা যখন প্রেগনেন্ট ছিল কতই না পাগলামি করেছিল সে। চোখে মুখে একটা প্রাপ্তির ঝালক দেখেছিল কিন্তু আজকাল আর সেই খুশি সেই ঝলক তার চোখে দেখা যায় না। তার বিনিময়ে থাকে হতাশা আর ক্লান্ত চোখের হাঁসি মা নুহাকে খুব পোড়ায় ভিতরটা ঝাঁঝরা করে দেয়।আর তার শাশুড়ি তো ঠিকই বলেছেন তার ভুলের শাস্তি মাহি কেনো পাবে?সে কেনো বাবা ডাক থেকে বঞ্চিত হবে?এর মধ্যেই নুহার মা নয়ন এসে ঘরে ঢুকল মেয়েকে কান্না করতে দেখে হতভম্ব হয়ে তার কাছে গেলো দুপুরে কেমন হঠাৎ করেই চলে এসেছে তখনি তার খটকা লেগেছিল নিশ্চই কিছু হয়েছে নাইলে নুহা কখনো একা বাড়িতে আসে না।আর আসলেও খুব কম কাপড় নিয়ে আসে তারপর দেখি থেকে চলে যায় কিন্তু এবার মেয়ের সাথে করে দুটো লাগেজ নিয়ে এসেছে আর মাহিয়াতও আসে নি।সে অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করল,
—কি হয়েছে নুহা মা এমন কাঁদছিস কেনো?মাহিয়াত কিছু বলেছে?ঝগড়া হয়েছে তোদের?আর হলেও এতে এতো কাঁদার কি আছে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে এরকম টুকটাক ঝগড়া হয় এতে ভালোবাসা বাড়ে। দেখবি রাগ পরে গেলে ঠিক চলে আসবে। এবার কান্না থামা।চুপ কর চুপ কর বলছি আমাকে বল কি সমস্যা দরকার হলে আমি ওর সাথে কথা বলবো।
—মাহির মা মাহিকে বাচ্চার জন্য আবার বিয়ে দেবে মা।আমি কোনো দিন মাহিকে বাবা ডাক শুনতে পাড়বো না মা। আমি কোনো দিন মা হতে পারবো না?।আমি অক্ষম মা আমি অক্ষম,তাই আমি চলে এসেছি।বলে আবার তার মা কে ধরে কান্না করে দিলো।
মেয়ের কথা শুনে নয়নের মাথায় বাজ পড়লো,
—কি বলছিস নুহা এগুলো?মাহি বিয়ে আর তুই কখনো মা হতে পারবি না এসবের মানে কি? আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
আসলে নুহা যে ঐ এক্সিডেন্ট এর ফলে কোনদিন মা হতে পারবেনা তা মাহিয়াত কাউকে জানাইনি এমনকি নুহাকেও না কিন্তু ভুল বশত সে ডাক্তরের কথা শুনে নেয়। কিন্তু মাহিয়াত তাকে ওয়াদা করায় যেনো এ কথা সে কাওকে না বলে।
নুহা তার মা কে সব কিছু খুলে বলে।আর সব শুনে সে রেগে যায়। দরকার হলে সে মেয়ের ডিভোর্স দেয়াবে তাও সতীনের সংসার করতে দেবে না। আর মাহিয়াতইবা কেমন স্ত্রী থাকা অবস্থায় সে মায়ের কথায় ঢং ঢং করে নাচতে নাচতে বিয়ে করে নিবে? শুধু বাচ্চার জন্য। বাচ্চা কি এডোপ্ট করা যেতো না।আরো নানান কথা বলতে থাকে মাহিয়াতকে।নুহার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায় তার মাহিকে কেউ কিছু বলুক তা তার সহ্য হয় না,
—চুপ করো মা যা জানো না তা নিয়ে কথা বলবে না।আজ মাহিয়াত খারাপ হয়ে গেলো? কেনো নিজের সন্তানের জন্য আবার বিয়ে করছে বলে? তাহলে বাবাকে কি বলবে?যে তার সুন্দরী স্ত্রী আর সন্তান থাকা সত্ত্বেও আবার তোমাকে বিয়ে করে ঘরে তুলেছে?সেও তো খারাপ তাহলে এক কাজ করো তুমিও তাকে ডিভোর্স দিয়ে দাও। আমার স্বামী শুধু এক বছরের জন্য বিয়ে করছে বাচ্চা হলেই তাকে ছেড়ে দেবে তাও আমি মানতে পারছি না তুমি আমার মা হয়ে মানতে পারছো না কিন্তু তোমরা তোমরা সাতাশ বছর যাবত একজন মানুষকে এমন ভাবে কষ্ট দিয়ে এসেছো তুমি তোমার স্বামীর ভগ দিতে রাজি নও তোমার মেয়ে স্বামীর ভাগ দিবে তাতেও ঘোর আপত্তি অথচ নিজে দিব্যি অন্যের স্বামীর ভাগ নিয়ে বসে আছো। তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছ নিজেদের চোখের সামনে রেখে প্রতিনিয়ত তাকে রক্তাক্ত করেছো। আর আজকে নিজের মেয়ের উপর পরেছে বলে কষ্ট হচ্ছে? তাহলে ভাবো বড় মায়ের কত কষ্ট। সে এতগুলো বছর কত কষ্ট সহ্য করে এসেছে। আরে আমার কি মনে হয় জানো এই সবকিছু তোমাদের পাপের ফল একটা মানুষকে এমন কষ্ট দেওয়ার ফল যা আমি ভোগ করছি। তোমাদের পাপের সাজা আল্লাহ আমাকে দিচ্ছে।বলে আবার কেঁদে উঠলো, তারপর আবার নিজেকে শান্ত করে বলে উঠলো,
—আমার নজরে মাহিকে যে মেয়ে টাকার জন্য বিয়ে করতে যাচ্ছে সে যতটা খারাপ তুমি তার চেয়ে হাজার গুণ খারাপ।আর তোমার স্বামীকে আজকে আমার বাবা বলতেও ঘৃণা হচ্ছে নিজেরই নিজেকে ঘৃণা লাগছে এই ভেবে আমি তোমাদের সন্তান। আরে আমার স্বামী তো বিয়েই করতে চাচ্ছে না আমি নিজে জোর করে তাকে দিয়ে দিচ্ছি আমি অক্ষম সে তো না তাহলে সে কেনো শাস্তি পাবে। তোমাদের পাপের সাজা তো শুধু আমার ঘাড়ে পড়া উচিত।তাই নয় কি?
মেয়ের কথা শুনে নয়ন স্তব্ধ হয়ে গেল নিজের মেয়ের মুখে এইসব কথা সে জীবনেও কল্পনা করতে পারেনি। আসলেই কি সে এতটা দোষী? তার পাপের সাজা কি সত্যিই তার মেয়ে পাচ্ছে? আর অন্য দিকে পর্দার আড়ালে দাঁড়ানো মানব মূর্তি কোনরকম দেয়াল ঘেঁষে ঘেঁষে নিজের ঘরে গিয়ে বসল। এসেছিল মেয়েকে দেখতে তার খোঁজ খবর নিতে কিন্তু মেয়ে তাকে তার পাপের হিসাব খাতা ধরিয়ে দিলো।এর বোঝা অনেক সে নিতে পারছে না বড্ড কষ্ট হচ্ছে তার। বুকের বা পাশটায় হঠাৎ ব্যাথা করছে।
শহরের ফুটপাত দিয়ে হাঁটছে মাহিয়াত।এই শহর এই পরিবেশ বেশ অচেনা লাগছে তার কাছে। চেনা মানুষ গুলো বদলে যাচ্ছে পৃথিবীটা কোনো গোলক ধাঁধার থাকে কম মনে হচ্ছে না।কি করবে সে?কার কাছে সাহায্য চাইবে?কে তাকে একটু শান্তি দিবে?যখন ঘরের মানুষই অশান্তির কারণ হয়ে যায় তখন ঘরকে আর ঘর মনে হয় না।
কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে দেখতে পেল সে নুহাদের বাড়ির সামনে পৌঁছে গেছে। অচেতন মন ঘোরের মাঝেও জেনো ভালোবাসার মানুষটিকে হাতরে বেড়ায়।একটু সুখ একটু শান্তির লোভে। পকেট থেকে ফোনটা বের করে নুহাকে ফোন করলো মাহিয়াত,
রাত তখন একটা বেজে তিরিশ মিনিট নুহার চোখে ঘুম নেই অনেকক্ষণ কান্না করার পর চোখ জ্বালা করছে ঘুমানোর জন্য চোখ বন্ধ করতে পারছে না হঠাৎ তার ফোনের রিং টোন বেজে উঠলো স্ক্রিনে ভেসে উঠলো,My love সে ফোন রিসিভ করে কানে দিলো,
—হ্যালো,
—একটু নিচে আসবে কি? তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে।
নুহা সময় ব্যয় না করে দ্রুত নিচে নেমে এলো মনে মনে সে হাজার বার চাইছিল মাহিয়াত যেন তার বাড়িতে আসে তাহলেই সে বুঝতে পারবে তার মাহি তাকে সত্যিই ভালোবাসে আর তাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না।সে নিচে নেমে দেখলো মাহিয়াত সত্যি দাঁড়িয়ে আছে চুলগুলো এলোমেলো চেহারায় ক্লান্তির ছাপ এখনো অফিসের পোশাক পরা খুব বিধ্বস্ত লাগছে তাকে।নুহা সময় ব্যয় না করে দৌড়ে গিয়ে তার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো।মাহিয়াত পরে যেতে যেতে নিজেকে সামলে পরম আবেশে নুহাকে জরিয়ে ধরলো। কিছুক্ষণ এভাবেই নিরবে কেটে দুটো তৃষ্ণার্ত মন কিছুক্ষণের জন্য মনে শান্ত হলো।নুহার কপালে চুমু দিয়ে মাহিয়াত দুই হাত দিয়ে তার মুখ আগলে ধরে বললো,
—আমাকে ছাড়া থাকতে পার না তাহলে চেষ্টা কেনো করছো? নিজেও কষ্ট পাচ্ছ আমাকে কষ্ট দিচ্ছ। ফিরে চলো।
—তোমাকে নিজের চোখের সামনে অন্য মেয়ের সাথে সংসার করতে দেখতে পারবো না আমি মাহি। আমাকে মাফ করো।
—কেনো জেদ করছো? আমি বিয়ে করবো না।আমি চাইনা আমাদের সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন হোক।আর শুধু আমাদের কথা না যে মেয়েটার সাথে বিয়ে হবে তার জীবনেও একটা পরিবর্তন আসবে।একটা বাজে স্বপ্নের মত তাকে এই অতীত তারা করবে। প্লিজ নুহা বাড়ি ফিরে চলো নয়তো চলো আমরা দূরে কোথাও চলে যাই।
—সেটা সম্ভব নয় মাহি আমি বাচ্চা চাই তোমার সন্তানের মা হতে চাই হোক না সেটা অন্য কারো গর্ভে। কিন্তু সন্তান তো তোমার হবে।আর দয়া করে ঐ মেয়ের কথা আমার সামনে বলবে না এটাই যেন শেষ হয়। যে মেয়েটা টাকার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারে তার আবার কিসের অনুভূতি। কোনো কিছুই হবে না এক বছরের ব্যাপার মাত্র শুধু তুমি বদলে না গেলেই চলবে।
—তুমি বুঝতে পারছো না নুহা…
—শুশশশশ…আর একটাও কথা নয় এ ব্যপারে আমি কিছু শুনতে চাই না।দেখতে দেখতে দিন কেটে যাবে মনে করবে আমি বেড়াতে এসেছি তাহলেই দেখবে আর কষ্ট হবে না। আমাকে ছুঁয়ে কথা দাও এরপর থেকে এক বছর পর্যন্ত ঐ বাড়ির বা ঐ মেয়ের কথা আমাকে বলবে না। আমাদের ভুবনে অন্য কাউকে আনবে না। এখানে শুধু তুমি আর আমি থাকবো অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তি না।বলে তাকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ দিলো না সামন্য উঁচু হয়ে মাহিয়াতের ঠোঁট আকড়ে ধরলো নুহার ঠোঁটের স্পর্শে মাহিয়াতও উন্মাদ হয়ে গেলো দুই হাতে নুহার কোমর আকড়ে ধরে তার সুবিধা মতো উঁচু করে নিলো। তারা দুজনেই স্থান কাল ভুলে একে অপরে ভালোবাসা শুষে নিতে ব্যস্ত হয়ে পরলো।দূর থেকে নাইটগার্ডের বাঁশির আওয়াজ শুনে দুজনের ঘোর ভাঙলো আর একে অপরের থেকে কিছুটা দূরে সরে গেল। তারপর একে অপরের দিকে তাকিয়ে হেসে দিল।নুহা মাহিয়াতের হাত ধরে বাড়িতে নিয়ে যেতে লাগলো,
—আরে আরে কই নিয়ে যাচ্ছো?
—কেনো তোমার শশুর বাড়ি,
—এত রাতে গেলে কে কি মনে করবে?
—কে কি মনে করবে তা পরের বিষয় আমার আরো আদর নেওয়া বাকি তাই চুপচাপ ঘরে এসো আর এমনিতেও কেউ জেগে নেই।
অগত্যা মাহিয়াতও তার পিছু পিছু গেলো,প্রয়সীর ভালোবাসার জন্য যে সে ব্যাকুল থাকে সবসময় তার ভালোবাসাকে প্রত্যাখ্যান করার সাধ্য যে তার নেই
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফিমা ঝটপট রেডি হয়ে গেলো। মাসের আজকে দুই তারিখ পাঁচ তারিখে বেতন দিবে এখন কোচিংয়ে যাওয়া বন্ধ করা মানে পুরো মাসের বেতন ছেড়ে দেওয়া।দুই দিন বসে না থেকে ক্লাশ করালে পুরো বেতন হাতে পেয়ে যাবে। শুধু শুধু এতগুলো টাকা হাতছাড়া করে কি লাভ তাই দেরি না করে ফাহিকে বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো কিছু দূরে ইয়াসির কে দেখে ফিমা জমে গেলো কেমন জানি পাগল পাগল লাগছে তাকে ফিমা চোখ সরিয়ে হাঁটা ধরলো সে ভেবেছে ইয়াসির বোধহয় এমনি এসেছে কিন্তু তার ধারনা ভুল করে দিয়ে ইয়াসিফ তাকে ডাক দিলো কিন্তু সে ভুলেও থামল না তাড়াতাড়ি পা চালালো কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ইয়াসের তার পথ আগলে দাঁড়ালো…
চলবে…