এই রাত তোমার আমার পর্ব ২

#এই_রাত_তোমার_আমার
#সানজিদা_ইসলাম
#২য়_পর্ব

লাগেজে নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আর কাপড় গুছিয়ে রাখছে নুহা। তার ঘরটাকে ভালোভাবে দেখে নিচ্ছে। কিছু দিন পর তার এই ঘর এই সংসার এমনকি তার স্বামীও অন্য কারো হয়ে যাবে ভাবতেই হু হু করে কেঁদে উঠলো সে।

আল্লাহ কেন তাকে অক্ষম বানালো কেনো তার সন্তান তার কাছ থেকে কেরে নিলো এমন না হলে তো তাকে তার স্বামীর ভাগ তার ভালোবাসার ভাগ দিতে হতো না হোক না সাময়িকের জন্য কিন্তু তবুও এক বছর কম সময় না। একজন মানুষ কে ভালোবাসার জন্য এই সময়টুকু অনেক। ভালোবাসার জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় না ভালোবাসার জন্য এক মূহুর্তই যথেষ্ট।তবে কি সে তার স্বামীকে হারিয়ে ফেলবে? চোখের আড়াল হলে মনের আড়াল হবে না তো?

না না সে কি ভাবছে তার মাহি তাকে অনেক ভালোবাসে সে কখনোই ঐ মেয়েকে ভালোবাসবে না কিন্তু সে তো ঐ মেয়ের সাথে রাত কাটাবে তাকে ছোবে ভালোবাসবে তখন কিভাবে সহ্য করবে সে?আর মাহিকে বিশ্বাস করলেও ঐ মেয়েকে বিশ্বাস করা যাবে না। যে মেয়ে টাকার জন্য একজন বিবাহিত পুরুষ কে বিয়ে করে সে আর কতটুকুই ভালো হবে। আর মাহি যদি তার মায়ায় পরে যায় তখন কি হবে?

ওফফ আর ভাবতে পারছেনা সে সব কিছু এলোমেলো লাগছে মনে হচ্ছে এদিন দেখার আগে মরে যাওয়া ভালো ছিল।এখন যে সে কিছুই করতে পারবেনা কারণ সে নিজে তার মাহিকে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য ফোর্স করেছে। এইবার সে বুঝতে পারলো তার বড় মায়ের কত কষ্ট কত কিছু সহ্য করতে হয় তাকে। তার স্বামী তো এক বছরের জন্য বিয়ে করছে তাই এত কষ্ট হচ্ছে তার আর তার বড়মা সাতাশ বছর যাবত এসব সহ্য করে আসছে।সে তো এখনো ঐ মেয়েকে চোখে দেখেনি আর না দেখবে।কিন্তু তার বড় মা তার বাবা আর মাকে সাতাশ বছর যাবত নিজের চোখের সামনে দেখছে। তার না জানি কত কষ্ট সহ্য করতে হয়।

আল্লাহ বোধহয় তার বাবা মায়ের পাপের শাস্তি তার মাধ্যমে দিচ্ছে। তার বাবা আর বড় মায়ের বিয়ে হয়েছিল পারিবারিক ভাবেই উনি দেখতে খুবই সুন্দর ছিলো কিন্তু অল্প শিক্ষিত আর গ্রামের মেয়ে হওয়ায় তার সৌন্দর্য তার বাবার সামনে ফিকে পরে গেলো।তারপর বিয়ের তিন বছরের মধ্যেই সে আবার বিয়ে করলো নুহার মাকে যে ছিল তার বাবার কলিগ। পরবর্তীতে তার বড় মাকে নিয়ে যেতে চাইলে সে নিষেধ করে দেয় যাওয়ার জন্য।কারণ তার মতে মেয়েদের একবারই বিয়ে হয় আর সে তার স্বামী সংসার ছেড়ে কোথাও যাবে না বলে সাফ সাফ জানিয়ে দেয়।এতে তার বাবাও মনে মনে খুব খুশি হয় ভালোবাসা না থাকলেও তার মায়ায় আটকে ছিল তার বাবা। তাই তাকেও হারাতে চায়নি। কিন্তু তার এমন সিদ্ধান্তে নুহার মা ঘোর আপত্তি করলো কিন্তু তার বাবার হুংকারের কাছে তার কথা টিকলো না।ফলে একই বাড়িতে সংসার আলাদা হলো বড় মা তার ছেলেকে নিয়ে গেষ্ট রুমে শিফ্ট হলো।আর মা বাবা তাদের বেড রুমে।বড় মার প্রতি বাবার দায়িত্ব শুধু টাকা দেয়া পর্যন্ত ছিল এর বেশি তার মায়ের জন্য কিছুই করতে পারতো।আর না তার কোনো চাহিদা থাকতো ঈদে সবার জন্য কাপড় আনলে সবচেয়ে কম দামের শাড়িটা বড় মায়ের ভাগ্যে পড়তো তবুও সে খুশি মনে তা গ্রহণ করতো। কিন্তু অজানা কারনে বড় মায়ের ছেলে তার বাবাকে পছন্দ করতো না। সেই ছোট বয়স থেকেই তার কোলো উঠতে চাইতো না। তার দেয়া কিছু নিতো না আর বড় হতে হতে সে তার বাবাকে ঘৃণা করতে লাগলো এখনো সে প্রতিদিন তার মাকে তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে বলে কিন্তু সে নাছর বান্দা কোনো ভাবেই তার সংসার ছেড়ে যাবে না।তাই তাকেও বাধ্য হয়ে মায়ের সাথেই থাকতে হয়। তাকে কে বোঝাবে এটা তার সংসার না সে বাড়ির সবার কাছেই আগাছা যাকে ফেলে দিতে পারলেই সবাই বাঁচে। সে বাড়ির কারো সাথে কথা বলে না। বাবার টাকাও নেয় না।নিজে উপার্জন করে তা খরচ করে।

মানুষ প্রতিশোধ নিতে ভূলে গেলেও প্রকৃতি হয়তো কখনো প্রতিশোধ নিতে ভূলে না। প্রকৃতি যে এই ভাবে শুধে আসলে তার বাবা মায়ের পাওনাটা তাকে ধরিয়ে দিবে তা সে কল্পনা ও করিনি।আর এতে তারই বা দোষ কোথায়?সে কেনো শাস্তি পাবে?

বাইরে থেকে নুহার কর্মকাণ্ড দেখছে তার শাশুড়ি।তারও কষ্ট হচ্ছে মেয়েটার জন্য কিন্তু সে নিরুপায় তার ছেলে তার চোখের সামনে নির্বংশ হয়ে যাবে তা সে বেঁচে থাকতে কখনোই সম্ভব না।আর তার ছেলের তো দোষ নেই তাহলে সে কেনো বাবা ডাক শোনা থেকে বঞ্চিত থাকবে। দোষ যেহেতু তার স্ত্রীর তাহলে এই সামান্য কষ্ট তো তাকে সহ্য করতেই হবে। সন্তান পালক আনলে কি আর আসল বাবা মা হওয়া যায় আপন রক্ত আপনই হয় আর পর পরই।




-আমি আমার স্ত্রী নুহাকে অনেক ভালোবাসি।ওকে ছাড়া আমার জীবনে অন্য নারীর কথা কল্পনাও করতে পারি না। ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম আমরা কিন্তু মা শুরু থেকেই ওকে মেনে নেয়নি। তারও কিছু ফ্যামিলিগত কারণ আছে।মাকে স্বাভাবিক করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে আমাদের। আমি একমাত্র ছেলে তাই তারও হয়তো কিছু ইচ্ছে ছিল আমার বিয়ে নিয়ে তা পূরণ হয়নি তাই রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক ছিল। তারপরও নুহা মেনে নিয়েছে কিন্তু বিপত্তি ঘটলো তখন যখন নুহা বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় প্রেগনেন্ট হলো। ঘরে খুশির বন্যা বয়ে গেলো। কিন্তু আল্লাহ বোধহয় অন্য কিছুই চাইছিল।তাই একদিন অসাবধানতাবশত সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মিসক্যারেজ হয়ে গেল আর সাথে সাথে মা হওয়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেললো। তবুও বাচ্চা হওয়া না হওয়া নিয়ে আমার কোনো আফসোস ছিল না নুহা ঠিক আছে এই আমার কাছে অনেক। চাইলেই আমরা বাচ্চা দত্তক নিতে পারবো। কিন্তু নুহা খুব ভেঙে পড়লো সারাদিন কান্না কাটি করতো অনেক কষ্টে ওকে শান্ত করলাম ওকে বোঝালাম।মা তখনো এই খবর জানতো না আমি জানাইনি। কিন্তু কয়েকমাস আগে সে কনো ভাবে বিষয়টা জেনে যায় আর ঝামেলা শুরু করে দেয়। আমাকে আবার বিয়ে করতে বলে সে সব আরো অনেক কাহিনী পরে একদিন বলবো।মা আমার সাথে অভিমান করে ছোট বোনের বাড়িতে চলে যায় আর সেখানেই হয়তো আপনার সাথে দেখা হয় আর আপনাকে আমার সাথে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।

-তারপর আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি সরাসরি মানা করে দেই আর আমার স্ত্রীও কিন্তু না জানি মা তাকে এমন কি বলেছে যার কারণে সেও এখন উঠে-পড়ে লেগেছে আমার বিয়ে দেয়ার জন্য।তারা দুজন রীতিমতো ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে করাচ্ছে তা না হলে নুহা আমাকে ডিভোর্স দেয়ার হুমকি দিয়েছে।আর বাকিটা তো আপনি জানেনই।

বলে সে সামনে রাখা গ্লাসের বরফ ঠাণ্ডা পানি সম্পূর্ণ শেষ করলো,

-আর একটা কথা আপনাকে বলে দেই কন্ট্রাকে উল্লেখ আছে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার সাথে সাথে আমাদের মধ্যকার সব সম্পর্কের সামাপ্তি ঘটবে।এর পর আমরা একে অপরকে চিনি না। আপনি বাচ্চাকে নিজের বলে দাবি করতে পারবেন না বা অধিকার খাটাতে পারবেন না।কথাটা কি ক্লিয়ার? দেখুন ভালো ভাবে কন্টাক্ট টা পড়ে তারপর বুঝে শুনে ডিসিশন নিন। আপনার হাতে এখনো সময় আছে।

মাহিয়াত এতগুলো কথা বলতো না। কিন্তু সে যখন ফিমাকে কাগজটা হাতে দিয়েছিল সাথে সাথে সে লক্ষ্য করেছিল ফিমার চোখে পানি।সে যখন মায়ের কাছে শুনেছে মেয়ে ডিভোর্সি তখনি তার প্রতি মাহিয়াতের একটা বিতৃষ্ণা চলে এসেছিল।সে ভেবে রেখেছিলো মেয়েটার হয়তো চরিত্রে সমস্যা আছে নয়তো এই রকম একটা প্রস্তাবে রাজী হয় কিভাবে তাও আবার টাকার জন্য। কিন্তু এখন বিষয়টা অন্য কিছু মনে হচ্ছে।ফিমা হয়তো নিজের ইচ্ছায় রাজী হয়নি তাকে জোর করা হচ্ছে বা কোনো কারণে হয়তো সে বিয়েটা করতে বাধ্য হচ্ছে। সেই সাতপাঁচ না ভেবে প্রশ্ন করে বসলো,

-আচ্ছা আপনি কিছু মনে না করলে আপনার ডিভোর্সের কারণটা জানতে পারি।আর আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে না আপনি সেচ্ছায় বিয়ে করছেন আমার তো মনে হচ্ছে আপনাকে জোর বা বাধ্য করা হচ্ছে বিয়ের জন্য।আর যদি তাই হয় তাহলে আপনি কেনো রাজী হলেন?কি এমন আপনার দূর্বলতা আমাকে বলবেন প্লিজ? আমি আপনাকে সাহায্য করবো।

-নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারো সাথে রাত কাটাতে দেখেছেন?আমি দেখেছি আমার স্বামীকে নিজের আপন ভাইয়ের বউয়ের সাথে রাত কাটাতে।বাইরে খারাপ কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়তে,জনস্মুক্ষে একজন পতিতাকে বিয়ে করতে আর সব কিছু না হয় বাদই দিলাম কিন্তু এই সব কিছু দেখার পরে কি আপনিও আমার মায়ের মত আমাকে সব কিছু সহ্য করা উচিত ছিল আর একটু ধৈর্য্য ধারণ করা উচিত ছিল বলবেন? বিশ্বাস করুন সব মেনেই নিয়েছিলাম কিন্তু যখন সে আমার সামনে একজন পতিতা কে বিয়ে করলো তখনি ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে যায় আর রাগের মাথায় তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেই।

-কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে তাকে তালাক না দেয়া উচিত ছিল তাহলে হয়তো আজ আমাকে এত নিচু একটা পরিস্থিতিতে পরতে হতো না কারো স্বামীর উপর ভাগ বসাতে হতো না আর না টাকার জন্য নিজেকে বিক্রি করতে হতো। সত্যি বলতে আজ কাল নিজেকে কোনো বস্তুর থেকে কম মনে হয় না।যে যখন চাচ্ছে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে, সারাদিন যা নয় তা বলে যাচ্ছে আর শেষ পর্যন্ত আমাকে বিক্রিও করে দিচ্ছে।

-প্লিজ বারবার বিক্রি বিক্রি করে নিজেকে ছোট করবেন না। এখানে আপনার কোনো দোষ নেই আর না আপনার বাবা মায়ের দোষ আছে তারাতো চাচ্ছে তাদের মেয়েকে একটু ভালো জায়গায় বিয়ে দিতে আর টাকার অফার আমার মা করেছে আপনার বাবা মা চায়নি।আসল দোষ টা আমার আমি বিয়েটার মধ্যে এই চুক্তি যোগ করেছি।আমি আপনাকে সারাজীবন নিজের কাছে রাখতে পারবো না আমি আমার স্ত্রী কে ভালোবাসি তাই আপনাকে মেনে নেয়া সম্ভব না। কিন্তু আমাদের ডিভোর্সের পর আপনি যেনো কিছু করতে পারে সাবলম্বী হতে পারেন তাই এই টাকার অফার এ ছাড়া আর কিছুই না।

মাহিয়াতের কথা শুনে ফিমা একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো,

-তাই যদি হয় তাহলে আমার অনুমতি নেয়া হলো না কেনো? একবার আমার ভালো থাকার কথাটা চিন্তা করলো না কেনো? আমার ইচ্ছে অনিচ্ছা আমার অনুভূতি কোনো কিছুর দাম নেই কেনো?বলে একটা দম নিলো সে,

-বাদ দিন সেসব কথা আমি আপনাকে যে প্রশ্ন গুলো করতাম তার উত্তর আমি পেয়ে গেছি আর আপনার ডিলের কাগজেও সই করে দিয়েছি তাই আমার মনে হয় এখন আমার যাওয়া উচিৎ।আর হ্যা একটা কথা বলতেই হয় আপনার ভালোবাসার মানুষটি আপনার দ্বারা একটা অসহনীয় কষ্ট পেতে যাচ্ছে। এখানো সময় আছে নিজের মা কে বোঝান।আসি।

বলে আর এক মিনিট ও দাঁড়ালো না সে মূহুর্তের মধ্যেই দৃষ্টি সীমার বাইরে চলে গেলো।টিবিলে তার জন্য আনা ধোঁয়া ওঠানো কফিটা পরে রইলো অবহেলায়‌।

মাহিয়াতের সাথে দেখা করে ফিমা আসে পাশে একটা নির্জন জায়গায় বসে এতক্ষণ পর্যন্ত ধরে রাখা অশ্রু বিসর্জন দিয়ে বাড়ি ফিরলো সন্ধ্যা নাগাদ।ঘরে ঢুকতেই প্রথমে তার মায়ের মুখোমুখি হলো,

-কোথা ছিলি তুই। দুপুর থেকে ঘরে নেই।এই তোর মাথায় কি বুদ্ধি নেই নাকি সবে মাত্র বিয়ে ঠিক হয়েছে ওমনি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলি? মঙ্গল অমঙ্গল বলেও তো একটা কথা আছে নাকি?জানিস না বিয়ে পাকা হলে মেয়েদের ঘর থেকে বেরুতে হয় না।

-আমি মাহিয়াত বাবুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম মা অন্য কোথাও না।প্লিজ একটু চুপ করো আমি প্রচুর ক্লান্ত।

-মাহিয়াতের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলি মানে?তুই উল্টো পাল্টা কিছু বলিসনি তো?দেখ ফিমা এই বিয়ে যদি না হয় তাহলে তুই আমার মরা মুখ দেখবি বলে রাখলাম।

ফিমা তার মায়ের কথার প্রেক্ষিতে আর কিছু বলল না চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ল, এমনকি রাতেও খাবার খেতে এলো না তাই তার মা নিজে এলো হাতে খাবার নিয়ে,

-ফিমা উঠ মা খেয়ে নে।আসার পর থেকে কিছু মুখে দেসনি।

-খেতে ইচ্ছে করছে না মা নি যাও,

-বললেই হলো? খেতে ইচ্ছে করছে না।না ইচ্ছে করলেও খেতে হবে উঠ উঠ বলছি,

-আমার ইচ্ছে অনিচ্ছের দাম কখনোই তোমার কাছে ছিলো না মা আর না আছে সেটা আমার আগেই বোঝা উচিৎ ছিল,তুমি ভাত রেখে যাও আমি খেয়ে নেবো।

ফাহিমা তার মেয়ের অভিমান বুঝতে পারলো, খাবার টা টেবিলে রেখে তার মাথায় বিলি কেটে দিতে দিতে বললো,

-তুই আমাদের সাথে রাগ করেছিস আমরা তোকে আবার বিয়ে দিচ্ছি বলে?আমরাই বা কি করবো বল প্রতিদিন মানুষের কথা শুনতে সবাই তোকে যা নয় তাই বলে ফাহিমেরও বিয়ের বয়স হয়েছে কিন্তু কোথাও ভালো মেয়ে পাচ্ছি না আর ফাহিও তো বড় হচ্ছে কিছু দিন পর ওর বিয়ে হবে কিন্তু ঘরে ডিবোর্সী বোন আছে শুনলে কে দেবে আমাদের ঘরে মেয়ে কোনো ভদ্র পরিবার কি ফাহিকে বিয়ে করবে করবে না।

-তাই বলে আমাকে এমন একটা ঘরে বিয়ে দেবে মা যেখানে আগে থেকেই লোকটার একজন স্ত্রী আছে?তাও কেনো?সামান্য কিছু টাকার জন্য।

-টাকার জন্য আমরা তোকে বিয়ে দিচ্ছি না মা।তোরা যা‌ উপার্জন করিস তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে যাবে। কিন্তু হ্যা এটা ঠিক তারা টাকা দিলে তোর বাবার ব্যবসাটা একটু বাড়বে পরিবারটা সচ্ছলতার মুখ দেখবে। তোকে সেখানে বিয়ে দেয়ার কারণ হচ্ছে তুই সেখানে খুব ভালো থাকবি কোনো কিছুর অভাব থাকবে না। ছেলের মাত্র একটা বোন কোনো ঝামেলা নেই শুধু শাশুড়িরকে আর জামাইকে হাত করবি তাহলে দেখবি পুরো সংসার তোর হাতের মুঠোয়। আর একবার জামাই তোর নিয়ন্ত্রণে চলে এলে ঐ মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে দিতে বলবি তাহলে আর ঝামেলাই থাকবেনা। শুনেছি বাচ্চা না হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই মেয়ে বাড়িতে ফিরবে না তাহলে তোর হাতে অনেক সময় এই সময়টাকে কাজে লাগাবি দেখবি আজকে যা তোর কাছে ভুল মনে হচ্ছে তখন তা সঠিক মনে হবে আমার কথা মিলিয়ে নিস।বলে সে চলে গেলো,

ফিমার বলতে ইচ্ছে করলো।আবারো তুমি শুধু টাকার সুখটাই দেখলে মানুষের কথাকে গুরুত্ব দিলে কিন্তু একবারও আমার মনের সুখের কথা চিন্তা করলে না।আরে টাকা তো ইয়াসিরের কাছেও ছিল অভাবে তো সেও রাখেনি তাহলে তার কাছে থাকাই ভালো ছিল। অন্তত্য কারো বোঝা হয়ে থাকতো না। নিজের মেয়ের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করছো অথচ অন্য মেয়ের ঘর ভাঙতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছো। হায়রে মানব মন কতই না বিচিত্র তুমি?

কিন্তু মুখে কিছুই বললো না কথা বলতে ইচ্ছে করছে তার তাই না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লো।

এদিকে মাহিয়াত কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতেই মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো…

চলবে…

পেইজের রিচ অনেক কমে গেছে বেশি বেশি লাইক কমেন্ট করো গো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here