#গল্প – এলি-ম্যান (৪র্থ #পর্ব)
রাস্তার শেষ প্রান্তে ব্রীজের উপরে দাঁড়িয়ে আছে কালো পোশাকে আবৃত এক অপরিচিত ব্যক্তি। সালাহউদ্দিন দূর থেকে নিজের ছোট পিস্তল হাতে নিশানা করল সেদিকে। কিন্তু কিভাবে যেন লোকটা বুঝতে পারল পিছনে কেউ একজন আছে। সে আস্তে আস্তে পিছনে ঘুরে সালাহউদ্দিনের দিকে তাকিয়ে হো হো করে হাসতে লাগলো। সালাহউদ্দিনও অপরিচিত লোকটির চোখের দিকে তাকিয়ে থ-হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
মানুষের চোখের মনির চারপাশ সাদা রঙের হয়ে থাকে। কিন্তু ঐ লোকটির চোখের মনির চারপাশ সবুজ রঙের। কাঁচের মতো স্বচ্ছ সবুজ রঙের চোখ। অসাধারণ মায়াময় চোখের দিকে তাকালে যে কেউ তার প্রতি মায়া অনুভব করবে। কিন্তু সালাহউদ্দিন মোটেও সেই মায়ায় জড়িয়ে পড়ল না। সে তার সাদা রঙের সিরিঞ্জ গান বের করে তাক করল তার দিকে। অপরিচিত লোকটি একটা বাঁকা হাসি দিয়ে পিছনের দিকে হাঁটতে লাগল। সালাহউদ্দিনও সামনে এগিয়ে যেতে লাগল। ব্রীজের রেলিংয়ের কাছে যেতেই লোকটি একবার নদীর দিকে তাকালো। আবার সালাহউদ্দিন-এর তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে দিল। সালাহউদ্দিন বুঝে গেল তার মতিঘতি ভালো না। সে পিস্তল তাক করল লোকটার হাতের বাজুতে। ট্রিগার টিপতেই লোকটি উল্টো একটা ডিগবাজি দিয়ে নদীতে পড়ে গেল। সালাহউদ্দিন ধুর ধুর বলতে বলতে পিস্তলটা নিজের রানের সাথে বাড়ি দিতে লাগল।
নিজের প্রথম যাত্রাতেই অসফল হয়ে লজ্জিত হয় সে। ধীর পায়ে হাঁটতে থাকে স্টিফেন সাহেবের কারখানার দিকে।
সিসি টিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ রুমের দ্বায়িত্বে আছেন তুষার এবং রিজভী। তুষারের নজরে আসল একটা অপরিচিত ব্যাক্তির দেখা পাওয়া যাচ্ছে রাস্তায়। একাকী রাস্তায় আনমনে হাঁটছে সে। তার প্যান্টের পিছনে কোমড় আর ব্যাল্টের চিপায় পিস্তলের মতোই কিছু একটা রাখা আছে। সে দ্রুত পুলিশ কন্ট্রোল রুমে কল দিয়ে বিষয়টি অবহিত করল। তুষার যেই জায়গার ফুটেজ দেখেছে তার কয়েক মিটার দুরেই খুন হয়েছিল মেয়েটি। তাই এই জায়গার উপরে একটু বিশেষ নজরদারি আছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশের দুইটা গাড়ি রওনা হয়ে গেল সেখানের উদ্দেশ্যে। গাড়ি দু’টো কাছে আসতেই সালাহউদ্দিনের কানে গাড়ির শব্দ আসল। সে এখুনি পুলিশি ঝামেলা চায় না। আর তার নিজের ডিজাইন করা পিস্তলটাও তাদের দেখাতে চায় না। সে দ্রুত নিজের পিস্তলটা হাতে নিল। আর জ্যাকেটের আড়ালে নিয়ে সেটার সব পার্ট আলাদা করে ফেলল। আলাদা আলাদা সব গুলো পার্ট পকেটে ঢুকিয়ে নিল। আর বুলেট হিসেবে ব্যবহার করা সুচ গুলো পায়ের তলা আর জুতার চিপায় রেখে দিল খুব সতর্কতার সাথে। সে জানে যে আশেপাশে হয়তো সিসি টিভি ক্যামেরা আছে। তাই সে লুকিয়ে লুকিয়ে সাবধানে সব গুলো জিনিস রাখল। যাতে কেউ আন্দাজ করতে না পারে যে, সে কিছু আড়াল করছে।
সালাহউদ্দিন কাজ সেরে সোজা হয়ে হাঁটা দিতেই পুলিশের গাড়ি দু’টো তার পথ আগলে ধরল। পিছনের দরজা খুলে কয়েকজন বের হয়েই সোজা পিস্তল তাক করল সালাহউদ্দিন এর দিকে। আর সামনের দরজা খুলে ২ জন লোক বের হয়ে এলো মেটাল ট্যাস্টার হাতে নিয়ে। সালাহউদ্দিন এর সামনে এসে দাঁড়িয়েই প্রশ্ন করল।
‘ কে আপনি! আপনি তো এই শহরের না।’
সালাহউদ্দিন মাথার বাদামী টুপিটা সরিয়ে বলল, ‘ মূলত আমি এই শহরের না। তবে আমাকে এখানে দাওয়াত করা হয়েছে। সম্মানিত স্টিফেন সাহেব আমাকে দাওয়াত করেছেন। তাই আমি এসেছি ওনার সাথে দেখা করতে।’
‘ ওহ্, তাহলে ওনার বাসায় না গিয়ে এখানে কি করছেন?’
‘ আমি দেখা করেছি ওনার সাথে বেশ কিছুদিন থাকবো। ওনার সাথে কাজ করব। আর একটু বাইরের অবস্থা দেখতে বেরিয়েছি।’
‘ আপনি যে স্টিফেন সাহেবের কাছেই এসেছেন তার কোন প্রুফ আছে সাথে? ‘
‘ অবশ্যই, আপনারা চাইলে আমার টিকেট বুকিং হিস্ট্রি চেক করতে পারেন। সেটা যেহেতু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার তবে এখন চাইলে ওনার সাথে তোলা কিছু ছবি অবশ্য দেখতে পারেন।’
‘ অবশ্যই তা দেখতে চাইব। দেখাতে পারেন আপনি।’
সালাহউদ্দিন প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে পুলিশ অফিসারকে দেখায়। স্টিফেন সাহেবের সাথে তোলা বেশ কয়েকটা ছবিই সে ওনাদের দেখায়। পুলিশ কর্মকর্তা নিজের মাথা নেড়ে মোবাইল ফেরত দিয়ে বলে। স্বাগতম আপনাকে আশাকরি ভ্রমণে আনন্দ পাবেন। কিন্তু আমরা অত্যন্ত দুঃখীত যে আপনাকে আমরা একটু তল্লাশি করব।
সালাহউদ্দিন নিজের ভ্রু কুঁচকে বলে,
‘ কেন! আমি তো আপনাদের প্রমান দিলামই। তবুও আপনারা চেক করবেন? এটা কি স্টিফেন সাহেবকে অপমান করা নয়? ‘
‘ আসলে আমাদের কাছে আইন সবার জন্যই একই রকম। আজকে আপনাকে চেক না করলে কালকে অন্য একজন আপনার মতো পরিচয় দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পায়তারা করবে। তাই আপনি চেকিংয়ে বাঁধা দিবেন না আশাকরি।’
সালাহউদ্দিন পরিবেশ বুঝে একটা লম্বা হাসি দিয়ে বলল।
‘ জ্বি অবশ্যই। কেন নয়! ধন্যবাদ আপনাদেরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য। আপনারা চেক করতে পারেন, এটা আপনাদের দ্বায়িত্ব। ‘
সালাহউদ্দিন ভালো করেই জানে কিভাবে একজন লোকের ব্রেন ওয়াশ করতে হয়। তাই সে হাসতে হাসতে এমন ভাবে কথা বলল যেন সে পুলিশের এই কাজে খুবই খুশি হয়েছে। তার সাথে এমন কিছুই নেই যার জন্য সে মামলা খেতে পারে। পুলিশও ভাবলো তার সাথে অবৈধ কিছুই নেই। তবুও নিয়ম রক্ষার তাগিদে মেটাল ট্যাস্টার কে মাথা থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত দুই বার উঠানামা করিয়ে নিল। সালাহউদ্দিন শুধু মনে মনে ভাবছিল যদি পায়ের পাতা পর্যন্ত যায় তবেই তো বুলেট গুলোর সিগনাল দিবে। কিন্তু পুলিশের তার উপরে বেশি সন্দেহ না থাকায় হাঁটুর নিচ পর্যন্ত নিয়েই কার্য সম্পাদন করল।
সালাহউদ্দিন হাসতে হাসতে রওনা দিল স্টিফেন সাহেবের গবেষণাগারের উদ্দেশ্যে।
রাত্রি প্রায় ২ টা বাজে,
সালাহউদ্দিন স্টিফেন সাহেবের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। স্টিফেন সাহেবের সেদিকে কোন লক্ষ নেই। তিনি মদ্যপান করেই চলেছেন। বেশ কয়েক গ্লাস খাওয়ার পরে মাথা ঝাঁকি দিয়ে মাতাল ভাবটা কমিয়ে নিয়ে বললেন,
— ‘ তা ডিটেকটিভ সাহেবের কি খবর! কাজ কতোটুকু হলো? ‘
— ‘ পেয়ে তো গিয়েছিলাম। কিন্তু একটুর জন্য ফস্কে বেরিয়ে গেল। আমার ধারণা ছিল না যে সে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
— ‘ অহ নো, তোমাকে এই বিষয়টি বলে দেওয়া উচিত ছিল। সে প্রথমবার পুলিশের হাত থেকেও এভাবেই পালিয়েছে।
— ‘ আগে বলবেন তো! তবে তো আর আমি এই সুযোগটা দিই না। ‘
— ‘ হয়েছে থাক এ বিষয়। আরেকদিন হবে এতো তাড়াহুড়োর কিছুই নেই। তা বলো এবার দিন কাল কেমন যাচ্ছে।’
— ‘ দিন কাল আর কেমন যাবে! আপনার এখানে এসে প্রথমেই কিনা আপনার রোবটের হাতে থাপ্পড় খেলাম। আমিও রাগের মাথায় উল্টো থাপ্পড় দিতে নিয়েছিলাম। পরে ভাবলাম এর তো কোন অনুভূতিই নেই। থাপ্পড় দিয়ে শুধু শুধু নিজেই ব্যাথা পাবো। ‘
— ‘ হা হা হা, রোবটের হাতের থাপ্পড়! ‘
— ‘ হ্যাঁ স্যার, ভাগ্য ভালো বেশি জোরে লাগেনি। তবে তো দাঁত পড়ে যেতো। ‘
— ‘ বেঁচে গেলে তবে। তা তোমার বিয়ের কি খবর! বউকে নিয়ে আসলেই তো পারতে। ‘
— ‘ না স্যার, এখনো বিয়ে করা হয়নি। আর হলেও ওকে নিয়ে আসতাম না। বিপদে পড়তে চাই না। এমনিতেই পরিবার হারিয়েছি সেই ছোট বেলায়। এখন আবার প্রেয়সীকে হারাতে চাই না।’
— ‘ তা অবশ্যই ঠিক বলেছ। দেখো আমি কি সুন্দর ভাবে চলছি পরিবারহীন। এই মদের বোতলই এখন আমার পরিবার। থাক বাদ দাও ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছি।’
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিজের বেদনাদায়ক অতীতের কথা এড়িয়ে গেলেন স্টিফেন সাহেব। মদের বোতলটা ঢিল মেরে দুরে ফেলে দিলেন। সালাহউদ্দিন-এর হাত ধরে নিজের তৈরি রোবট গুলো দেখাতে নিয়ে গেলেন আন্দর মহলের বিশেষ রুমের দিকে।
রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে একটা লাল রঙের সুইচ টিপতেই দরজার ভিতর থেকে একটা স্টিলের রড বেরিয়ে এলো। স্টিলের মাথায় স্বচ্ছ কাঁচ চকচক করছে। সেটা এসে প্রথমে স্টিফেন সাহেবের চোখ বরাবর থামল। তারপর একটা সুক্ষ আলো বেরিয়ে আসল সেটা থেকে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই স্টিলের দরজাটা মাঝখান থেকে ভাগ হয়ে দুই দিকে চলে গেল। স্টিফেন সাহেব ভিতরে ঢুকতেই দরজাটা আবার লেগে গেল। অনুরূপ ভাবে সালাহউদ্দিন-এর চোখেও আলো ফেলল। ২ সেকেন্ডের মধ্যেই আবারও দরজা খুলে গেল। সালাহউদ্দিনও ভিতরে ঢুকে গেল রোবট দেখতে।
লেখকের iD- #সালাহউদ্দিন_তারিক (salahuddin.tarik)
দরজাটা বেশ মোটা এবং ফাঁপা স্টিল দিয়ে তৈরি। লিফটের দরজার মতো অনেকটা। দরজার ভিতরের ফাইবারের সংযোগেই চলে সেই আই-স্ক্যানারটা। যেটার মাথায় লাগানো ক্ষুদ্র ক্যামেরাটা চোখের রেটিনা স্ক্যান করে লোকদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়। মুহুর্তের মধ্যেই সেই স্ক্যান রিপোর্ট জমা হয়ে যায় কম্পিউটারে। বর্তমান সময়ে সবার জাতীয় পরিচয় পত্রে চোখের রেটিনার রিপোর্ট থাকে। আর সেই রিপোর্ট সহ ইন্টারন্যাশনাল সার্ভারে সবার আইডেন্টিটি তথা সনাক্তকরণ পরিচয় এন্ট্রি করা আছে। এজন্য পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে কারো চোখের রেটিনার রিপোর্ট ডিটেইলস দিয়ে নেটে সার্চ করলে তার আইডি কার্ডে থাকা সব পরিচয় জানা যায়। এতে করে খুব সহজেই একজন লোক সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া যায়। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সাইটেই এসব পাওয়া যায়। আর সেই সাইট গুলোতে প্রবেশের অনুমতিও সবার নেই।
তাই স্টিফেন সাহেব নিজের রোবট গুলোর নিরাপত্তা দিতে এই বিশেষ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেম তৈরি করেছেন।
রুমের ভিতরে অসংখ্য রোবট তৈরি করে রাখা হয়েছে। শুধু এদের ভিতরে ডাটা এন্ট্রি করা বাকি রয়েছে। সালাহউদ্দিন এক সাথে এতো গুলা রোবট আবারও অনেকদিন পরে দেখল। কিন্তু এবারের রোবট গুলোর ধরন থেকে আশ্চার্য হয়ে গেল সে। হা করে তাকিয়ে রইল রোবট গুলোর দিকে। প্রতিটি রোবটই দেখতে প্রায় মানুষের মতো। সালাহউদ্দিন’কে অবাক হতে দেখে স্টিফেন সাহেব নিজেই বলল,
— ‘ অবাক হওয়ার কিছুই নেই এদের উপরে সিন্থেটিক ব্যবহার করেছি। সিন্থেটিক দিয়েই চেহারা তৈরি করেছি। অবশ্য এই কাজটা অন্য শিল্পীরা করেছে। এদের এভাবে তৈরীর পিছনের কারণ জানো? ‘
— ‘ না বল্লে কিভাবে জানবো? ‘
— ‘ এদের মধ্যে আমি মানুষের মতোই অনুভূতি দিব। এরা অনেকটা মানুষের মতো বুঝতে সক্ষম হবে। ভুলেও আর তোমাকে থাপ্পড় দিবে না মিকির মতো।’
বলেই হাসতে লাগলেন স্টিফেন সাহেব।
আসলে “মিকি” হলো স্টিফেন সাহেবের বিশেষ রোবট। যে সারাদিন ওনার রুমেই থাকে। এটা ওটা কাজ করে দেয়। আজকে সালাহউদ্দিন একটা মজা করতে গিয়ে ওকে বলে ফেলেছিল। ‘ তুই আমাকে থাপ্পড় দিতে পারবি।’
এতেই কাজ হয়ে গেল। সে বুঝতে পারল না যে সালাহউদ্দিন মজা করেছে। সে সত্যি সত্যিই সালাহউদ্দিনকে থাপ্পড় লাগিয়ে দিয়েছে। তবে তার হাতে প্লাস্টিক আর রাবারের আবরণ দেওয়া ছিল বলে সালাহউদ্দিন-এর দাঁত পড়েনি। “মিকি” প্রায়ই এমন ভুল করে। এজন্যই স্টিফেন সাহেব ঐ বিশেষ ধরনের রোবট তৈরি করছেন। যাতে করে তারা দুষ্টামি, রাগ, অভিমান কিছুটা হলেও বুঝতে পারে। হুটহাট করে থাপ্পড় না মেরে দেয়। যদিও কিছু দিন আগেও স্টিফেন সাহেব এই রোবটের তোখড় বিরোধী ছিল। ওনার মতে, যদি রোবটেরা তাদের অনুভূতির ফলে এটা বুঝে যায় যে ওদের আমরা কেবল ইউজ করছি। তবে হয়তো ওরা এক সময় বেঁকে বসতে পারে। কিন্তু বাধ্য হয়েই উনি এখন এই কাজ করেছেন। এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা পরবর্তী গল্পে করব। আপাদত বর্তমান গল্পে মনোযোগ দেই।
মনে রাখবেন আপনি যদিও ২০২০ সালে বসে থেকে এই লেখা পড়ছেন। তবে আমি কিন্তু এই লেখা ২০৪৮ তে লিখতেছি। কিন্তু এটা কিভাবে লিখছি তা জানতে চেয়ে সময় নষ্ট করবেন না। বরং গল্প অনুভব করতে থাকুন। এতেই মঙ্গল নিহিত, আমরা আবার গল্পে ফিরে যাই।
সালাহউদ্দিন বিমানে এসেছে। তাই নিজের তীর ধনুক সাথে আনতে পারেনি। বহু কষ্টে শুধু পিস্তলটা এনেছে। বুলেট এখানে এসে বানিয়ে নিয়েছে। পিস্তল সম্পূর্ণ প্লাস্টিকের তৈরি। তবে সামান্য কয়েকটি স্প্রিং আছে কেবল। এজন্যই মেটাল ট্যাস্টারে এই পিস্তল ধরা পড়ে না। আর পিস্তলটি এমন ভাবে তৈরি যেটার সব পার্ট সহজেই আলাদা করে নেওয়া যায়। এই পিস্তল সম্পর্কে বিস্তারিত পরবর্তীতে জানাবো।
সালাহউদ্দিন আপন মনে পিস্তলটা আবার লাগাতে ব্যস্ত। কাজ শেষ হতেই একটা বুলেটও লাগিয়ে নিল। এমন সময়ের স্টিফেন সাহেবের পোষা কুকুরটা তার রুমে এসে ঢুকল। সালাহউদ্দিন কি যেন ভেবে একটা বাঁকা হাসি দিল। আর পিস্তলটা তাক করে সোজা কুকুরটার গায়ে একটা গুলি করে দিল। সাথে সাথেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল কুকুরটি। দরজায় দাঁড়িয়ে নিজের কুকুরের এই দশা দেখে ভয়ানক দৃষ্টিতে সালাহউদ্দিন-এর দিকে তাকিয়ে রইল স্টিফেন সাহেব। ওনার প্রিয় কুকুরের এই দশা তিনি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারলেন না ।
( চলবে ইনশা আল্লাহ) ( অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ)
গল্প – #এলি_ম্যান – (৪র্থ পর্ব )
© #লেখক – সালাহউদ্দিন তারিক ( জুনিয়র মুগলি )
.
#