#নিরু❤
পর্ব-০৬
writer- #shanta_islam
আমি অনেক ভীতু প্রকৃতির একটা মেয়ে,, তবুও মনে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে বারান্দায় গেলাম। বারান্দায় আলো নেই বললেও চলে অনেকটা অন্ধকার। তবুও একটু সামনে এগিয়ে দেখতে যাই বিষয়টা কি! এতো রাতে কিসের শব্দ হলো,,হঠাৎ টের পেলাম কেও পেছন থেকে আমার চোখ বেধে ফেললো,,যেই চিৎকার করতে যাবো সাথে সাথে আমার মুখে একটা কস্টিপ পেচিয়ে দেয়। আল্লাহই জানে আজ আমার সাথে কি হতে চলেছে। আজকে তোর রক্ষা নেই নিরু। অনেক চেস্টা করছি নিজেকে ছাড়ানোর কিন্তু কিছুতেই পারছি না। হাত পা ছোড়াছুড়ি শুরু করার সাথে সাথেই কেও আমাকে কোলে তুলে নিলো। মনে হয় আমাকে বারান্দা থেকে ফেলে দিয়ে মারবে। খুব কান্না পাচ্ছে আমার,,এতো অল্প বয়সেই মরতে যাচ্ছি। এখনো বিয়েটাও করা হলো না। কি দোস করেছি আমি। কেনো কেও আমার সাথে এমনটা করবে। আমি তো কখনো কারো ক্ষতি করিনি। তাহলে কেনোই বা আমার সাথে এসব হচ্ছে। সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি হয়তো এখনি উপর থেকে খাবো এক আছাড় কিন্তু এখনো তো কেও আমাকে ফেললো না। মানুষটা চায় কি আমার কাছ থেকে। ওহ নো কিডন্যাপারও তো হতে পারে। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করো। কিছুক্ষণ পর আমার চোখটা খুলে দেওয়া হলো। চারদিকে তাকিয়ে দেখি আমি ছাদে দাড়িয়ে আছি। চোখ খুলে দিলেও মুখটা খুলে দেওয়া হয়নি। হঠাৎ পিছন থেকে কেও আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার কাধে তার মাথা রাখে। মনে হয় সেই জ্বীনটা আমার গাড় মটকাতে এসেছে তাই তো ছাদে নিয়ে এসেছে। কিডন্যাপার হলে জীবনো ছাদে নিয়ে আসতো না। এটা নির্ঘাত অদৃশ্য কোনো শক্তির কাজ। আল্লাহ রক্ষা করো। যত দোয়া দুরুত জানতাম মনে মনে সব গুলো পড়া শুরু করে দিলাম। চিৎকার যে দিবো তারো কোনো উপায় নেই। ঘাড়টা মনে হয় এখনি মটকে দিবে তাই পিছনে আর তাকালাম না চোখটা বন্ধ করে ভিতরে ভিতরে আয়াতুল কুসরি বেশি বেশি করে পাঠ করতে লাগলাম। ইস কেনো যে দাদির কথা বিশ্বাস করলাম না। এর জন্যই বলে সর্বদা গুরুজনদের কথা মেনে চলতে হয়। আমার ঘাড়ে সেই শীতল ঠোঁটের ছোয়া পেলাম। ভিতরে ভিষণ ভয় করছে। কিন্তু তার ঠোঁটের ছোয়ায় বার বার কেপে উঠছি। তার গরম নিশ্বাস আমার ঘাড়ে পড়ছে উফ পাগল করে তুলছে আমাকে। ভিতর দিয়ে মনে হচ্ছে ভূমিকম্প বয়ে যাচ্ছে। এই স্পর্শ এই ঘ্রাণ সবই যে আমার চেনা। কেনো জানি মনে হচ্ছে সে আবির ভাই। কিন্তু ভয়ে কিছু বলতে পারছি না। কিভাবেই বা বলবো মুখে যে কস্টিপ লাগানো। যদি কস্টিপটা না থাকতো তাহলে হয়তো জিজ্ঞেস করেই ফেলতাম আবির ভাই আপনি আমার সাথে কেনো এমনটা করেন। সে আমার হাত দুটো শক্ত করে আগলে ধরে। না আর সইতে পারলাম না। শরীরের যত শক্তি আছে সর্বোচ্চ দিয়ে দেই এক ধাক্কা। ধাক্কা খেয়ে সে পড়ে যায়। অন্ধকারে কিছুই দেখতে পারছি না। একটু সামনে যেয়েই অল্প চাদের আলোয় তাকিয়ে দেখি কালো আকারের কারো ছায়া। আল্লাহ গো এটা তাহলে ভুত,,,,,,
-নিরু নিরু এই নিরু আর কতো ঘুমাবি। বিয়ে বাড়িতে এই মেয়ে মরনের ঘুম ঘুমাচ্ছে।
মার ডাক শুনে তাড়াহুড়ো করে উঠে পরি,,,
– লাইলাহা ইল্লালাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ,,লাইলাহা ইল্লালাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ,,লাইলাহা ইল্লালাহ,,,
মা- এই তোর কি হয়েছে। ঘুম থেকে উঠেই আল্লাহর নাম।
আমি চারদিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখি আমি আমার রুমে আছি। মা আমার কানের সামনে ক্যানক্যান করিছে। তারমানে ওটা স্বপ্ন ছিলো। জোরে একটা নিশ্বাস ছাড়লাম। আল্লাহ রক্ষা করেছে স্বপ্ন ছিলো বাস্তব না।
– কিরে উঠ নাহলে দিলাম এক।
নিরু- অহ উঠছি তো এতো ভ্যানভ্যান করো কেন? বিরক্তি নিয়ে কথাটা বললাম। সাথে সাথে দাদি রুমে ডুকেই তার পুরানো দরখো বাংলা ছায়াছবির ডায়লগ ছারিলো।
দাদি- ডেমনি মাইয়া একটা। দেখো না এখন ঢং করে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে তাই তো বলি এইডারে বিয়া দেও নিরুর মা এইডারে বিয়া দেও।
বিয়ের কথা শুনে আশা কোথা থেকে ছুটে এসে কটমট করতে করতে দাদির কথা কেটে বলে।
আশা- ওই সকিনা খালি বড়গুলারেই চোখে দেখো। আর আমার যে বিয়ার বয়স পার হইয়া যাইতাসে তা দেখো না। আশা দাদিকে বিদ্রাপ করে কথাটা বলে।
দাদি- দেখসো নিরুর মা দেখসো। মাইয়াডা কি পাকা পাকসে। তোরে রে দাড়া।
দাদি আশাকে লাঠি দিয়ে মারতে গেলেই আশা দেয় এক দৌড়।
চলবে,,,,