#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৭
,
,
,
,
,
দাঁড়িয়ে আছি নবদম্পত্তির সামনে দুইজন কে পাশে দেখে বুকের ভিতর চিনচিন ব্যাথা করলেও দুইজন কে একসাথে হাসিখুশি দেখে কেন যেনো ব্যাথা টাকে পাত্তা দিতে ইচ্ছা করছেনা। নীল রাঙা কাপড়ে গোল্ডেন সুতোর কাজ করা পোশাকে দুইজন কে বড্ড মানিয়েছে।দুইজন সবার মধ্যেমণি হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই মহূর্তে।
আমার চোখ বেয়ে এক ফোটা অশ্রু বের হতেই সাথে সাথে সেটা মুছে দিলাম যদি কেউ এই অশ্রু কোণা দেখে ফেলে তবে কেয়ামত ঘটে যাবে আমি পিছনে ঘুরতে যাবো এমন সময় বড় আব্বু আমার হাত ধরে নিলেন আমি করুন চোখে তাকালাম
তিনি নরম গলায় আমার দিকে আকুতি ভরা নয়নে তাকিয়ে বলে উঠলেন
;কই যাস মা।
;বড় আব্বু তুমি তো যানোই আমার বন্ধ জায়গায় দম আটকে আসে তাই বাহিরে যাচ্ছিলাম
;আমাকে বুঝাচ্ছিস। উপরে খোলা আকাশ এতো বড় জায়গা বন্ধ জায়গা কই পেলি রে মা
;জানিনা বড় আব্বু কিন্তু পারছিনা যে আমি নিশ্বাস নিতে। মনে হচ্ছে গলা টা কেউ দুই হাত দিয়ে আকড়ে রেখেছে এই খানে আর কিছু মহূর্তে থাকলে আমি মারা যাবো।।
বড় আব্বুকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সেখান থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসলাম । একটা বার যদি পিছনে তাকাতাম তাহলে হয়তো দেখতে পেতাম সে করুন চেহারা সে চোখের একরোখা আবদার অপরাধবোধ
;মাফ করে দিস রে মা পারলে এই বুড়ো টাকে ক্ষমা করিস নিজের ছেলের খুশিটা দেখতে যেয়ে আমার ভাইয়ের শেষ আমানত টা কে ভেংগে রেখে দিলাম।
হঠাৎ উনার ঘাড়ে কারো স্পর্শ পেয়ে পিছনে তাকাতেই দেখেন আসফি দাঁড়িয়ে আছে। তিনি হয়তো তাকেই নিজের শেষ সম্বল ভাবলেন তাইতো দেরি না করে ছেলেকে জরায় ধরলেন।
আসফি দীর্ঘশ্বাস ফেললো সে জানে তার বাবার উপর দিয়ে অপরাধ বোধ এর ঝড় বেয়ে যাচ্ছে।
;শান্ত হও বাবা বসো এখানে
একটা চেয়ার এগিয়ে দিলেন সাথে এক গ্লাস পানি।তিনি বসলেন ঠিক কিন্তু পানিটা গ্রহণ করলেন না উনার গলা শুকায়ে কাঠ তবুও যেনো পানি পান তার দ্বারা অসম্ভব একটা ব্যাপার মনে হচ্ছে।
আসফি ভাইয়া উনার পাশে বসলেন। তিনি তখন ও হাতে পানির গ্লাস ধরে রেখেছে।যেনো তিনি যানেন বড় আব্বুর প্রয়োজন হবেই পানি টুকু
হঠাৎ বড় আব্বু কেমন স্তব্ধ হয়ে গেলেন যেনো কোন রোবট হঠাৎ টিয়া পাখির ন্যায় মনে হলো কারো শিক্ষানো বানি আওরাচ্ছেন
;ঠিক ৬ মাসের ছিলো। একদম পুতুল এর ন্যায় ফুটফুটে কন্যা। যাকে এক ঝলক দেখলেই প্রান জুরিয়ে যেতো।চোখ দুইটাও ছিলো অদ্ভুদ সৌন্দর্য তে ভরপুর। আমি বাচ্চা কোলে নিতে ভয় পেতাম তোকে বা আলিফ কেও কোন দিন কোলে নি নাই এমন কি ছায়া কেও না। কিন্তু সর্বপ্রথম কাউকে কোলে নিয়েছিলাম সেদিন কাপা হাতে তুলে নিয়েছিলাম ভাইয়ের হাত থেকে এই পুতুল টাকে।ভাই বলেছিলো আমার পরি টাকে আগলে রাখতে। যেনো কোন দিন কষ্ট না পায় ওই সৌন্দর্যে ভরপুর চোখে যেনো কোন দিন পানি না আসতে দি তাকে যেনো রাজরানী করে রাখি আমার রাজ্যের আমি ঠিক সে ভাবেই আদরেই মানুষ করেছিলাম এমনকি তোর মা ও আমি মনে করেছিলাম আমি হয়তো আমার ভাইয়ের দেওয়া কথা রাখতে পেরেছি কিন্তু নাহ আমি ভুল ছিলাম আমার ভাইয়ের শেষ কথা গুলো রাখা সম্ভব হয়নি পারিনি ওই চোখ জোড়ায় শুধু হাসির অশ্রু ধরে রাখতে ওই চোখে এখন নিজের মৃত্যু কামনা নিজের প্রিয় মানুষ টিকে অন্যকারো সাথে দেখার তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করছে।আমার মেয়েটা ভালো নেই রে আমার মেয়েটা ভালো নেই
আসফি ভাই আলতো হাতে মুছে দিলেন বড় আব্বুর চোখের পানি
;কথা দিচ্ছি বাবা তোমার মেয়ে আবার হাসবে।তার চোখে শুধু মাত্র হাসির অশ্রুই দেখবা এটা এই আসফি তাজ চৌধুরীর প্রমিজ
বড় আব্বু এবার পানিটা পান করলেন যেনো এই কথাটাই উনার গলার কাটা নামানোর ঔষধ ছিলো।
________
একটা ফাকা মাঠে বেঞ্চিতে বসে দূর ওই আকাশের তারা গুনছিলাম। মাঠ টা হলের পাশে ছিলো বলে এখানে এসে বসেছে।হুট করে ব্রেঞ্চিতে হালকা কম্পন সৃষ্টি হতেই পাশে তাকালাম আসফি ভাইয়া পাশেই বসে আছে
;আসভি ভাইয়া এবার আর জোর করেন না পারবোনা আর ওদের মুখোমুখি হতে আমার সহ্য হচ্ছেনা আসফি ভাই।নিজেকে যে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে।কষ্টে বুকটাই অসম্ভব ব্যাথায় জর্জরিত করে রেখেছে।
;একটা গল্প শুনবি আরু।
উনার মুখে আরু শুনে উনার দিকে তাকালাম উনি সহজে আমাকে এই নামে ডাকে না তাহলে আজকে। আমার প্রশ্নের মাঝেই তিনি বলা শুরু করলেন হয়তো তিনি আমার নিশ্চুপ থাকাকে সম্মতি হিসেবে নিয়েছেন।
;দশম শ্রেনীর একজন ছাত্র মাত্র এসএসসি পাশ করে ফিরেছিলো বাসায়। বাসাতে এসেই তার দেখা হয়েছিলো ছোট এক পুতুলের সাথে হয়তো তখন সে ক্লাস থ্রীতে অধ্যায়ন রত ছিলো।দুই পাশে দুই ঝুটি করে লাল ফ্রোক পরে ঘুরে বেরাছিলো।সে ছাত্র টার কি হলো তার জানা নেই হুট করে যেয়ে মেয়েটার ঝুটি ধরে দিলো টান ছোট পরিটা কিউট করে ঠোঁট উলটে কান্না করে দিলো।
আমি উনার কথায় ফিক করে হেসে দিলাম উনিও হাসলেন আমার হাসি দেখে নিস্তব্ধে।
;তার প্রধান কাজ হয়ে উঠেছিলো ওই ছোট পুতুল টাকে উতক্ত করা। পুতুল টাও তাকে দেখলে ভয়ে পালাতো। সেটাতে অবশ্যই সে ইঞ্জয় ই করতো।পুতুল টার ডাগোর ডাগোর চোখ গোলাপের ন্যায় ঠোঁট দুইটা যখন ফুলাতো তখন প্রচন্ড আদুরে লাগতো।
আমার এবার গল্পটার প্রতি অজান্তেই ইন্টারেস্ট আসতে লাগলো সেটা বুঝতে পেরে আসফি ভাইয়া হাসলেন হুট করে আমার ভাবনার বাহিরের এক কান্ড ঘটালেন ব্রেঞ্চের উপর পা তুলে শুয়ে পড়লেন সারা শরীর জুড়ে অদ্ভুদ শিহরণ বয়ে গেলো বড্ড ইচ্ছা করলো তাকে সরায় দিতে কিন্তু তার আগেই আসফি ভাইয়া পুনরায় বলতে শুরু করলো
;ধীরে ধীরে সে বড় হতে থাকলো আগে কার ন্যায় মায়া থাকলেও তার চেহারায় তখন ছিলো আলাদা মাধুর্যতা। কারন তখন সে ছিলো ১৪ বছরের কিশোরী। ধীরে ধীরে মনের মাঝে জেগে উঠলো তার প্রতি অদ্ভুত অনূভুতি যাকে তখন নাম দিতে না পারলেও পরে ঠিক সে অনূভুতির নামকরণ হয়ে গেলো “ভালোবাসা” ছোট একটা শব্দ কিন্তু এর মাঝেই যেনো ছিলো অনেক অনূভুতির সমাহার।
;তারপরে
;এতো অধীর আগ্রহ গল্পটা শুনার
; হাম হাম বলেন না কি হলো।
;ছেলেটার ভালোবাসা বারতে থাকলো সুদূর থেকে বার বার ছুটে আসতো মেয়েটার কাছে আড়াল থেকে দেখে চোখের তৃষ্ণা মিটিয়ে চলে যেতো পাগল প্রায় অবস্থা হয়ে গেছিলো তার।
;ছেলেটা মেয়েটাকে জানায় নি তার মনের কথা
; নাহ ছেলেটা ভয় পেতো যদি পরিটা তাকে ভুল বুঝে দূরে সরায় দেয় তাই সে চেয়েছিলো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে একবারে তার হাত চাইবে বিয়ের জন্য।
;পেরেছিলো ছেলেটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে পেয়েছিলো সে মেয়েটাকে।
;হুম হয়েছিলো সে প্রতিষ্ঠিত। যেদিন জব অফার পেয়েছিলো সেদিন ই ছুটে গেছিলো তার কাছে তাকে নিজের করে নিতে একেবারে জন্য তখন সে মেয়েটা ছিলো ১৭ বছরের কিশোরী।কিন্তু ছেলেটা জানতো না যে মেয়ে তার মনে ততোক্ষণে লিখে ফেলেছে কারো নাম লিখে দিয়েছিলো নিজের প্রথম ভালোবাসা অন্য কারো নামে।
আমার চোখ দুইটা এবার ঝাপসা হয়ে গেছিলো না জানি কতোটা কষ্ট ভোগ করেছে ছেলেটা। ৩ বছরের ভালোবাসার এই পরিনতি মানতে আমার এতো কষ্ট হয়েছে না জানি তার কতোটা কষ্ট হয়েছিলো।আমার চোখ থেকে অশ্রু বের হতেই ঠান্ডা হাতের স্পর্শ গালে এসে ঠেকে
;ছেলেটা ভেংগে পরেছিলো নিজের ভালোবায়ায়ার চোখে অন্য কারো জন্য ভালোবাসা যেনো তাকে ঝাঝড়া করে দিচ্ছিলো ২ টা মাস নানান ভাবে মেয়েটার সাথে হম্ভিদম্ভি করেছে যেটার জন্য মেয়েটা তাকে তিতা করলা অব্দি বলতো। কিন্তু বলেনা ভাগ্যতে যে থাকে সেই তাকে পায় অবশেষে ছেলেটাও পেয়েছে তার শ্যমময়ী কে খালি এখন অপেক্ষা তাকে জানানোর যে তাকে ঠিক কতোটা ভালোবাসে
আমি অবাক নয়নে তাকালাম আসফি ভাইয়ার দিকে।ভাইয়ার দৃষ্টি তখন আকাশের তারা গুলোর দিকে চাদের আলো এসে খেলা করছে আসফি ভাইয়ার মুখটাই।
#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৮
,
,
,
,
,
অনেক অপেক্ষার অবসানের পরে ওটির লাইট ওফ হলো। আধার যেনো নিজের নিশ্বাস ফিরে পেলো।অজানা এক ভয় তাকে গ্রাস করছে ধীরে ধীরে। ডাক্তার বেরিয়ে আসতেই আধার অধীর আগ্রহ নিয়ে তাদের দিকে ছুটে গেলো যেমন কোন অনেক দিনের পিপাসু ব্যাক্তি দেখা পেয়েছে এক বিন্দু পানির
;ডক্টর মা মাই ওয়াইফ
;সি ইজ ওলরাইট নাও বাট উনার এখনো জ্ঞান ফিরেনি।
ডাক্তার আধারের পিঠে চাপড় দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।আধার সেখানেই হাটু গেড়ে বসে পরে কেদে দেয়।এই অনুভূতি তার সহ্য হচ্ছেনা আর না ঘুমন্ত পাখিটাকে তার সহ্য হচ্ছে তার পাখিটা তো প্রানচ্ছল ছিলো সব সময় উড়ে বেরাতে পছন্দ করতো।
ছায়া আপুর এক্সিডেন্ট হয়েছে শুনে সবাই হস্পিটালে ছুটে আসি। রেসেপশনের মেয়েটার কাছে রুম নাম্বার যেনে সবাই কেবিনের সামনে পৌছে গেলাম। কেবিনের সামনে রক্তাক্ত শার্ট পরিহিত উস্কখুস্ক চুল নিয়ে বসা যুবোক কে দেখে আমাদের কারো আর বুঝতে বাকি রইলোনা সেই হয়তো ছায়া আপুকে নিয়ে এসেছে।কিন্তু উনার চেহারায় এই অস্থিরতা এই বিষন্নতার কারণ বুঝতে পারলাম না কেউ।
বড় আব্বু এগিয়ে গেলেন বসে থাকা যুবোকটির নিকট
;আমার মেয়েকে কই পেয়েছো বাবা
আধার কিছু বলতে পারলোনা তার গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছেনা। চোখ জোড়া অসম্ভব রকমের লাল হয়ে আছে।হুট করে সবাইকে অবাক করে জড়িয়ে ধরলো সে বড় আব্বুকে।
;আমি পারিনি পাখিকে আগলে রাখতে হাজারো ক্ষত তে বিক্ষত করে ফেলেছি আমার জন্য আমার পাগলীটার এই অবস্থা।কি করে ওকে ছাড়া বাচবো ওকে ছাড়া আমার নিশ্বাস ও যে আমার সাথে বেঈমানী করা শুরু করে দেয়।
আমি কেন কেউ বুঝলাম না উনার এমন ব্যাবহারের মানে।কি বলছেন তিনি কে এই পাখি।কিসের সূত্র তার সাথে ছায়া আপুর। উনাকে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই উনি জ্ঞান হারালেন। উনাকে রাখা হলো ছায়া আপুর কেবিনের পাশে সব ডাক্তার বাকী পেশেন্টদের রেখে উনাকে ট্রিট করতে শুরু করলেন।
সবাই অবাক হয়ে গেলো কে এই ছেলে যার জন্য সবাই এতো ডেস্পারেট হয়ে উঠলো।আসফি ভাইয়া আর আলিফ ভাইয়া এবার একটা ওয়ার্ডবয় এর কাছে গেলেন
;কে এই লোক উনার বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন
;আপনি ওনাকে চিনেন না উনি হলেন আধার আধার চৌধুরী। এই এলাকার পুলিশ। যেমন শান্ত উনার চেহারা তার চেয়ে কঠোর উনি অপরাধীদের সাথে। চেহারায় যেমন মাধুর্যতা তেজ ঠিক কাজের প্রতি ততোটাই সিনসিয়ার।আর এই হস্পিটাল উনার বাবার। উনি এই পৃথিবীতে আর নেই।
সবাই উনার পরিচয় শুনে স্তব্ধ আসফি ভাইয়ার চেহারা দেখে স্পষ্ট তিনি উনাকে চিনেনা চিনবেই বা কি করে তিনি তো ঢাকাতেই নিজের জীবন পারি দেন। ঘুরতে আসলে কেউ তো আর পুলিশের সাথে পরিচয় করে না। কিন্তু আমরা সবাই এই লোকটার সাথে পরিচিত না হলেও এই নামটা বেশ শুনা হয়েছে।কিন্তু উনার সাথে যে ছায়া আপুর কোন সম্পর্ক আছে তা এখনো উজ্জ। আধার ছায়ার #প্রেমালঘ্ন কি শুরু হতে চলেছে নাকি শেষ হতে যাচ্ছে বুঝা গেলোনা।
দেখতে দেখতে কেটে গেলো ২টা দিন। ছায়া আপু এখন সুস্থ।তাকে বাড়িতে আনা হয়েছে।আধার ভাইয়াও আছে আমাদের সাথে কোন ভাবেই উনাকে বাসায় পাঠানো সম্ভব হয়নি হস্পিটালেও তিনি একই ভাবে ছায়া আপুর কেবিনের সামনে বসে ছিলো। কিন্তু আমাদের সবাইকে একটা জিনিস ই ভাবিয়ে তুলেছে সেটা হলো ছায়া আপুর চুপ থাকা।তিনি না আধার ভাইয়ার থাকায় কোন বিরক্তি প্রকাশ করেছে আর নাহবুনার থাকায় কোন উৎসাহ।যেনো তার থাকা না থাকা উনাকে কোন প্রকার ইফেক্ট করেনা
________
আমি ছাদে গেছিলাম কিছুক্ষন খোলা বাতাসে নিশ্বাস নেওয়ার জন্য ছায়া আপুর পাশে আফরা ভাবি আর ছোট আম্মু আছে।আধার ভাইয়ার সাথে আলিফ ভাইয়া আর বড় আব্বু গল্প করছে।
আমি ছাদে উঠতেই বিশ্রি একটা গন্ধ নাকে বারি খেলো আপনমনেই হাত টা চলে গেলো নাকে। জঘন্য গন্ধে গা গুলিয়ে এলো।সামনে তাকিয়ে দেখি আসফি ভাই নিজের ঠোঁটের মাঝে সিগারেট ধরে রেখেছে।হঠাৎ মনে পরে গেলো সেদিন কার সে গাওয়া গান টা আসলে আসফি ভাইয়ার ঠোঁটের মাঝ থেকে যখন ধোয়া গুলো বের হচ্ছে তখন মহূর্তটা দেখতে ভালোই লাগছে অদ্ভুত এক আর্ট লাগছে।
;এখানে কি করছিস আরু
উনার রাশ ভারী গম্ভীর কন্ঠ শুনে কেপে উঠলাম কই এর আগেও গম্ভির গলা শুনেছি কিন্তু কোন দিন এমন লাগে নি আজকে গলায় অন্য রকম কিছু ছিলো।আচ্ছা উনি কি কান্না করেছিলেন। কিন্তু কেনো কি ভেবে উনার কাছে যেয়ে উনার হাত থেকে সিগারেট টেনে নিতেই উনি রাগী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন।
;এই সবের মানে কি সাহস বেশি বেরে গেছে দুই দিন ভালো করে কথা বলা শুরু করেছি তাই বলে মাথায় উঠে গেছিস
উনার রাগী কন্ঠে বলা তিক্ত কথা শুনে কেন যেনো খারাপ লাগলোনা বরং মনে হলো উনি উনার রাগের মাঝে লুকিয়ে রেখেছেন কষ্টের পাহাড়।কিসের এই কষ্ট। কাপা কাপা হাত রাখলাম উনার গালে।তিনি চোখ ত্যাড়া করে তাকালেন আমি সাথে সাথে হাত সরায়ে সেখান থেকে যেতে নিলেই তিনি টান দিয়ে নিজের বুকে নিয়ে একদম মিশিয়ে নিলেন। আজকে উনার জড়ায় ধরার মাঝে ছিলো আলাদা উদাসীনতার ছোয়া।কিসের এই কষ্ট কেন উনি এতো ব্যাথিত।।
;কি হয়েছে আপনার। আপনি কি কোন বিষয় নিয়ে আপসেট
;আমি এতো খারাপ কেন রে বলতে পারবি
;মানে কি বলছেন এগুলো
;দেখনা আমার বোন টা ভিতরে ভিতরে গুমরে মরছিলো আর আমি কি না টের ও পায়নি উলটা ওর হাসি মুখ দেখে ভেবে নিতাম সে ভালো আছে।
;এখানে আপনার দোষ নেই। আমরা তো সবটা সময় উনার সাথে থাকি আমরাই টের পায়নি সেখানে আপনি কি করে বুঝবেন।।
আমার কথা উনি কতোটুকু শুনেছন জানিনা কিন্তু উমার বাহু থেকে রক্ষা আমার হলোনা।হঠাৎ বুঝতে পারলাম ঘাড়ে পানির ফোটা। আমি সাথে সাথে উনার বুক থেকে মাথা তুললাম। উনার চোখ জোড়া মুছায় দিয়ে উনার মুখ উপরে তুললাম।উনার অশ্রু শিক্ত নয়নে আটকে গেলো আমার আখি তার চোখটাও কেমন যেনো স্থির ছিলো।উনার এই স্থির চোখ টা আমার শান্ত মন কে হঠাৎ করে অশান্ত করে তুললো।
হঠাৎ উনার অধরের ছোয়া আমার অধরে পেতেই উনার থেকে দূরে সরে আসলাম।নিজের ঠোঁটে হাত দিয়ে সেখান থেকে দৌড়ে চলে আসলাম। কি হয়ে গেলো এটা এক্সেডেন্টলি হলেও আমি আমার ভালোবাসার ভাগ কি করে দিয়ে দিলাম উনাকে কি করে পারলাম নিজের ভালোবাসার সাথে এই ভাবে অন্যায় করতে। ওয়াসরুমে যেয়ে ঠোঁট জোড়া মুছতে যেয়েও কেন যেনো হাত গেলোনা ঠোট অব্দি হাত জোড়া কাপছে ভিষন ভাবে।
;এই প্রথম তোমাকে এতো গভীর ভাবে ছুয়েছি শ্যামাঙ্গিনী। জানি এই সময় তোমার মস্তিষ্কে অপরাধ বোঢে জর্জরিত কিন্তু তোমার মন আর আখি দুইটাতেই এখন আমার ছোয়াই আবেগাপ্লুত। আজকে যে ছোয়াই তোমার মাঝে অপরাধ বোধ জাগাছে একদিন এই ছোয়া পাওয়ার জন্য তুমি ছোটফোট করবে শ্যামাঙ্গিনী। এটা তোমার খারুশ হিটলারে ওয়াদা।
(নিজের ঠোঁটে আঙুল স্পর্শ করে বুকের মাঝে জরায় ধরলো সে হাত। গাল আর কান হঠাৎ করে হয়ে উঠলো লাল।)
সন্ধ্যা নামার এই লগ্নে ছুয়ে দিয়েছে সূর্য ডোবার আলো আসফি কে আর একই আলো জানালা দিয়ে এসে পরছে আয়রা নামক কান্না রত আসফির শ্যামাঙ্গিনীর উপর।
চলবে!