#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ২১
,
,
,
,
,
—কি করছিস রে বউ
—আমার দেওয়া কষ্ট গুলোর ব্যাথা মুছে দেওয়ার সামান্য প্রচেষ্টা
—কে বললো এগুলো আমাকে কষ্ট দিচ্ছে
—বুঝি আমি
—ভুল বুঝিস রে বউ আমার তোর দেওয়া এইসব চিহ্ন আমাকে পিরা দেয়না বরং এগুলো আমাকে সে মধুর সয়ের কথা মনে করায় দেয় যে সময় টুকু সম্পূর্ণ রুপে তুই আমার হয়ে গেছিলি একান্তই আমার সে সময় টুকুর যে সময়ে শুধু তোর মনে না তোর সারা শরীর জুরে আমার ছোয়া জুড়ে দিয়েছি।তোকে একেবারে আমার করে নিয়েছি তুই এখন চাইলেও আমার থেকে দূরে যেতে পারবিনা
—আপনার থেকে দূরে যাওয়ার কথা ভাবতেই যে আমার নিশ্বাস অব্দি বন্ধ হয়ে আসতে চায়। কি করবে যায় আপনার থেকে দূরে। আপনি আমার সে প্রিয়জন যে আমার আপন হওয়ার আগেই প্রিয় হয়ে উঠেছিলো।
—তাহলে কি করে।পারলি আমার থেকে দূরে যাওয়ার চিন্তা মাথায় নিয়ে আসতে একটা বার ভাবিস নি তুই বিহনে এই পাষান টার কি অবস্থা হবে। নাকি তুই সত্যি আমাকে পাষাণ ভাবিস যে হাজারো কষ্টে আমার কিছুই যায় আসবেনা রে
—ছোট বেলা থেকে বাড়ির কেউ না বললেও বাহিরের মানুষ অপয়া অলক্ষি নানান কিছু বলতো আমার জন্য নাকি আমার আব্বু আম্মু দূরে আমার জন্য নাকি তারা আলাদা আমার বাবা মারা গেছে আমি নাকি এই বাড়িটাকেও খেয়ে ফেলবো। প্রথম প্রথম বুঝতাম না এগুলোর মানে কিন্তু বড় হলাম ধীরে ধীরে বুঝতে শিক্ষলাম তখন একা একা গুমরে মরতাম কথা গুলো রাতে ঘুমাতে দিতোনা তখন বড় আম্মু আমাকে জড়ায় ধরে বুকে নিয়ে ঘুম পারাতো। ছোট থেকে বড় আম্মু আমাকে কোন দিন মায়ের অভাব হতে দেয়নি আর না বড় আব্বু বাবার কমতি।কিন্তু সেদিন কার কথাটা তে এক মহূর্তের জন্য মনে হয়েছিলো যে বাহিরের মানুষ গুলো হয়তো সত্যি বলতো আমি যে পরিবারে যাবো সে পরিবার ভেংগে দিবো।চায়নি যে বড় আম্মুর চোখে আমার জন্য আকাশ সমান ভালোবাসা দেখেছিলাম সে বড় আম্মুর চোখে নিজের জন্য রাগ ঘৃণা দোষী হিসেবে দেখতে।মরে যাবো আমি
আমার কান্নার আওয়াজ শুনে হাত মুঠ করে ফেললেন আসফি ভাই্ আমার দিকে ফিরে শক্ত করে বুকে জরায় ধরলো হাতে থাকা সিগারেট টাতে টান দিয়ে ধোয়া উড়াতে লাগলো আমাকে জরায় ধরা অবস্থাতেই।
—বুকটার ভিতরে অসম্ভব ব্যাথা হচ্ছেরে শ্যামাঙ্গিনী। তোর চোখের পানি যে আমাকে শান্ত থাকতে দিচ্ছেনা।তোর এই চোখের পানি যে আমার রাতের ঘুম হারাম করে দেয়।তোর ঠোঁটের কোনের হাসিটা যদি আমার শক্তি হয় তাহলে যে তোর এই চোখের পানি আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এই ভাবে আমাকে দুর্বল করে দিস না রে।তোকে যে শাস্তি দেওয়া এখনো বাকি আছে এই ভাবে দুর্বল করে দিলে কিভাবে শাস্তি দি বল
আমি শক্ত জরায় ধরলাম উনাকে।পা টা একটু উচু করে উনার গলায় নিজের ঠোঁট ছোয়ালাম।উনার বাধন আরও দৃঢ় হলো। হাতে থাকা সিগারেট টা ফেলে দিয়ে দুই হাত দিয়ে শক্ত করে আগলে নিলো।আমি আরও নিবিড় ভাবে উনার লোমশ বুকে নাক ডুবালাম
—লাভ হবেনা শ্যামাঙ্গিনী শাস্তি তোমাকে যে পেতেই হবে। আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবার শাস্তি নিজেকে আশ্রিতা বলার শাস্তি আমার শ্যামাঙ্গিনীর চোখে অশ্রুর মেলা বসানোর শাস্তি।এনার রেহাই তোমাকে কেউ দিতে পারবেনা
—সব শাস্তি মাথা পেতে নিলাম।কিন্তু দিন শেষে আপনার এই মায়াভরা মুখটাই আমি হাসি দেখতে চায়। আপনার চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখতে চায়।হাজারো শাস্তি ভুলিয়ে দিবে সেই ঔষধ হিসেবে আপনার ঠোঁটের ছোয়া চায়
চাদের আলো এসে পড়ছে আমাদের উপরে। সে চাদের আলোকে সাক্ষি রেখে আমার ওষ্ঠদ্বয় নিজের ওষ্ঠের ভাজে পুরে নিলেন। মেতে উঠলেন ঠোঁট নিয়ে খেলতে।।।
_______
—বাবা আসতে পারি
ম্যগজিন পড়ছিলেন বিছানায় বসে থেকে রায়হান রহমান আরিফার বাবা। মেয়ের কন্ঠ শুনে সামনে তাকালেন।
—আয় মা তুই কবে থেকে আমার ঘরে আসার জন্য অনুমতি নেওয়া শুরু করলি
আরিফা কোন রকম পা তুলে এগুলেন তার বাবার দিকে।বাবার চেয়ারের কাছে বসে বাবার কোলে মাথা রাখলো রায়হান রহমান ও হেসে মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন। কতো বড় হয়ে গেছে তার মেয়েটা। এখনো উনার মনে আছে শুভ্র তোয়ালেতে জড়িয়ে নার্স একটা ছোট পরিকে তাদের কোলে দিয়েছিলেন। যেনো তার কোলে আসতো জান্নাত চলে এসেছিলো এতোটা খুশি হয়েছিলেন তিনি।পরম।আদরের সাথে বড় করেছেন তিনি তার মেয়েকে।কিন্তু বড় হতে হতে অদৃশ্য এক দুরুত্ব তৈরি হয়ে গেছে।
—কি হয়েছে মা। মন খারাপ
—বাবা আমাকে একটা কথা বলবা
—হুম মা বল
—মামী মার এই অবস্থার জন্য কি আমি দায়ী
—কি বলছিস এই সব
—বলোনা বাবা আমি যে পারছিনা উনার ঘৃণা সহ্য করতে আমার যে নিশ্বাস যে বন্ধ হয়ে আসে।যখনি উনার চোখের দিকে তাকায় সে চোখে নিজেকে অপরাধী হিসেবে দেখতে যে আমার কষ্ট হয় বাবা আমি নিতে পারছিনা আর এই মানসিক যন্ত্রণা আরহাম ভাইয়াকে যে ভিষন ভালোবাসি আমি।
রায়হান সাহেবের বুকটা ধ্বক করে উঠলো। তিনি যে অতীত যে রহস্য লুকিয়ে রেখেছিলেন সেটা যে এই ভাবে তার মেয়েকে যন্ত্রণা দিবে উনি ভাবেন নি।
—ভালোবাসিস আরহামকে
—উনি আমাকে ঘৃণা করে বাবা এতোটা ঘৃণা যতোটা হয়তো মৃতুর আগ অব্দি শেষ করতে পারবোনা আমি
—হুস এই ঘৃণা তোর জন্য না রে মা এই ঘৃণা আমার জন্য রে আমি ভাবিনি আমার পাপ তোকে এই ভাবে যন্ত্রণা দিবে।
আরিফার গলা শুকিয়ে আসছে তার মস্তিষ্ক তাকে জানান দিচ্ছে যে কোন এক বড় রহস্য তার সামনে উম্মচন হতে চলেছে। আর সেটা তাকে ঠিক কতোটা কষ্ট দিবে আগামীকালে তার ধারণা অব্দি নাই তার।
—তোর মাম আমি শেয়ারে একটা বিজনেস স্টার্ট করেছিলাম এদিকে ভাইয়া আর মেঝোভাইয়ার সাথে আলাদা বিজনেস তো ছিলোই।ভালোই চলছিলো তোর মামা ও রাজশাহীতেই থাকতো বিজনেস এর জন্য সেদিন রাত ১২ টার দিকে তোর মামী কল দেয় উনার লেভার পেন উঠেছিলো এদিকে আলিফ ছায়া আসফি ৩ জনেই ছোট সেজন্য বড় ভাবি মেঝো ভাবি তখন ৬মাসের গর্ভবতী তাই সে,যেতে পারেনা। আর বাচ্চা আর ভাবিদের থুয়ে ভাইয়াদের যেতে নিষেধ করি রাতের বেলা ভারি বর্ষণের ভিতরে তোর মামা আমি আর তোর মা বের হয়।কিন্তু মাঝ রাস্তাই যেতেই তোর আম্মুর পেট ব্যাথা শুরু হয় প্রেগন্যান্সির ৭মাস চলায় লিভার প্যান উঠার কথা ছিলোনা। তোর মা কে দেখার জন্য পিছনে তাকায় আর এর মাঝেই একটা ট্রাক এসে বারি খায় আমাদের গাড়ির সাথে। অন দা স্পট তোর মামা মারা যায় আর তোর মায়ের মিসক্যারেজ হয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তচাপের কারণে তোর মায়ের মা হওয়ার সম্ভবনা নাই হয়ে যায়।এদিকে তোর মামীর সাথে ছিলো ছোট আরহাম ৪ বছরের তোর মামীকে দেরিতে হস্পিটালে ভর্তি করানোর কারণে বাচ্চা গর্ভেই মারা যায়। এদিকে স্বামি হারানোর শোক ওদিকে গর্ভের সন্তান এতোটাই কাতর হয়ে যায় যে স্ট্রোক করে বসে। ধীরে ধীরে পঙ্গু হয়ে যায়।
—তাহলে আমি
—২ বছর পরে আল্লাহ মুখ তুলে তাকায় আর তোর মায়ের গর্ভ জুরে তুই আসিস আলো করে।কিন্তু এদিকে আরহামের মায়ের অবস্থার অবনতি হতে থাকে।তোর মা তোর মামীর কাছেই থাকতো কিন্তু তুই তোর মায়ের ভালোবাসা পেতি কিন্তু আরহাম পেতোনা ধীরে ধীরে ছোট মনটাই তোর উপর হিংসা করা শুরু করে।সুযোগ পেলেই তোকে ব্যাথা দিতো এদিকে তোর মামী সুস্থ হয়ে উঠে বিজনেস এর হাল ধরে উনি সমস্ত ব্যবসা ঢাকায় সিফট করে নেয় আমিও সাহায্য করি তারপরে ধীরে ধীরে যখন তোর মামী সমস্তটা নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসে তখন আমি সেটা সম্পূর্ণ আরহাম আর উনার নামে করে দি।
—আরহাম ভাইয়া জানে এক্সিডেন্টের কথা
—হ্যা। কিন্তু সে এটা জানেনা যে তোর মায়ের সে রাতে মিসক্যারেজ হয়েছিলো সে মনে করে তোর জন্য আমি গাড়ি তাড়াতাড়ি চালাচ্ছিলাম সব ধ্যান ছিলো তোদের উপর সেজন্য এক্সিডেন্টে হয়েছে।
—উনার ঘৃণা জায়েজ আছে বাবা। উনার ঘৃণা জায়েজ আছে।
—মা রে আমার কথাটা শুন একবার
আরিফার তারা বাবার করুন ডাক উপেক্ষা করে আটকে নেয় নিজেকে তার রুমে এদিকে তার মা দরজায় দ্বাড়িয়ে চোখের পানি ফেলতে শুরু করে।তিনি মনে মনে ঠিক করে নেয় কালকেই যাবেন তিনি তার ভাইয়ের বউয়ের কাছে।দরকার পরলে উনার পা অব্দি ধরবে কিন্তু নিজের এতো কষ্টের এতো মানতের পরে পাওয়া মেয়েটাকে গুমরে মরতে কোন ভাবেই দিবেনা।
চলবে!#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২২
,
,
,
,
,
সাত সকাল বেলা বাড়ির দরজার সামনে নিজের স্বামির বোন কে দেখে অবাক হোন মিসেস জামান(আরিফার মামী)
—আপা আপনি এখানে
মিসেস জামানের অবাক হওয়া কন্ঠ শুনে মুচকি হাসেন মিসেস রহমান।তিনি জানতেন উনার আগমনে চমকে যাবেন উনার একমাত্র ভাইয়ের বউ।
—কেনো আপা আসতে পারিনা বুঝি
—এমা তা হবে কেন আসেন আসেন। আরিফা মা আসে নাই
আরিফার নামটা শুনতেই মিসেস রহমানের বুকটা ধ্বক করে উঠে। ২ দিন হয়ে গেলো মেয়ে তার ঘড় থেকে বের হয় না।দরজা খোলা থাকে ঠিক কিন্তু বাহিরে বের হয়ে আসেনা আদৌ কিছু খায় কি না উবার যানা নেই এক প্রকার হার মেনেই আজ দাড়িয়েছেন উনি নিজের ভাইয়ের বাড়ির চৌকাঠে। এক বিন্দু আলোর ভরসাই।
—ভাবি আজ আপনার কাছে আঁচল ফেলে কিছু চাইতে এসেছি
স্বামির বোনের চোখের পানিটা যেনো উনার সহ্য হলোনা স্বামি থাকুক বা না থাকুক সর্বদা ছোট বোনের ন্যায় দেখে এসেছেন উনি উনার ননোদ কে আজকে সে ননোদের এই আকুতি ভরা কন্ঠ এই চোখের বেদনার অশ্রু যে উনাকে পাগল ন্যায় করে দিচ্ছে।
—কি হয়েছে খুলে বলো আমাকে
—আমার কোল জুড়ে আসা ছোট সে সোনাপরিটাকে পেতে কতোটা দোয়া করেছি শত শত মানতের ফল সে।তার কিছু হলে মরে যাবো আমি আপা
উনার হাত পায়ে ইতিমধ্যে কাপুনি ধরে গেছে।চোখ জোড়ে বিনা বাধায় গরিয়ে যাচ্ছে অশ্রু ধারা।সাথে এক এক করে খুলে বলছে সব ঘটে যাওয়া কথা। মিসেস জামান হতবাক হয়ে যায় তিনি ঘুনক্ষরেও টের পান নাই ছোট আরহাম এবং বড় আরহাম এর এই রকম ঘৃণিত মন ভাব।
দরজার পাশে দাঁড়িয়ে রাগে ফুসছে আরহাম।সে চায়নি এই সব তার মা জানুক তাই তো সেদিন আরিফার সাথে দেখা করতে গেছিলো যাতে সে আর ওর জীবনে না আসে। একেবারে ম্যাটার ক্লোজ করেই তো ফিরেছিলো চায় নি সে তার জীবনে আরিফা নামক কোন ব্যাক্তির ছায়া।সেদিন সব টা খুলে বলেছিলো কতোটা ঘৃণা করে সব তাহলে কেনো আজকে তার এসেছে।আরহামের মনে আরও এক বার জেগে উঠলো ঘৃণার বীজ
বড্ড অদ্ভুদ এই ঘৃণা নামক জিনিস টা।ভালোবাসা এক সময় ফিকা পরে গেলেও ঘৃণা জিনিস টা সবসময় তাজা থাকে বার বার নতুন কোন কারণ খুজেই নেই ঘৃণাটাকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।এই ঘৃণা ততোদিন অব্দি শেষ হয়না যতোদিন না অব্দি একজন সম্পূর্ন্য নিশ্ব হয়ে যায়। দেখা যাক কে এই ঘৃণার খেলায় আগে শেষ হয়।নাকি ভালোবাসার নতুন কোন লঘ্ন শুরু হবে নাকি শুরু হওয়াফ আগেই একটা ফুল ঝড়ে যাবে।।।
_______
রহমান বাসা আজকে ফুলে ফুলে সজ্জিত। আজকে যে বাড়ির ছোট মেয়ের গায়ে হলুদ। সাথে বড় ছেলের ও।
আরিফাকে হলুদের শাড়ি পড়িয়ে ফুলের গহনা দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছে তার দুই ভাবি। অপসরী থেকে কোন দিক থেকে যেনো কম লাগছেনা কিন্তু ঠোঁটের কোনে হাসি তার বিলীন। বাবা মায়ের কথা মতো বিয়ে তো করছে কিন্তু সে জানেনা কে সে মানুষ টা যার সাথে সে কাটাতে যাচ্ছে তার সম্পূর্ণ জীবনটা আদৌ কি পারবে সে অন্য কাউকে নিজের জীবনের অংশ করে তুলতে পারবে কি নিজের বুক পাজরে লুকিয়ে থাকা মানুষ টাকে আজীবনের জন্য মাটি চাপা দিতে। ভাবনার মাঝেই ছোট ভাবির কথাই ধ্যান ভাংগে আরিফার
—তুমিও তৈরি হয়ে নেও আয়রা
—আমি তৈরি হয়ে কি করবো ভাবি
—তোমার ননদের হলুদ সন্ধ্যা
—সাথে আমার স্বামির ও হলুদ সন্ধ্যা ভাবি কিন্তু আফসোস এর বিষয় কি জানো বউ টা আমি না। (হালকা হেসে)থাকো দেখে আসি জামাই তৈরি হয়েছে কি না। তুমি আরিফাকে নিয়ে নিচে যাও
রুমে পা রাখতেই দম টা আটকে আসলো জেনো সেদিন রাতের কথা রেখেছে আসফি ভাই।তার থেকে দূরে সরে যাওয়ার এতোটা কঠিন শাস্তি দিবে যানা ছিলোনা আমার। কিন্তু উনি আমার কথা টাও রেখেছে দিন শেষে উনার চোখে আমার জন্য সে ভালোবাসায় দেখতে পায় উনার বুকের বাম পাজরে সে ঠায় টা এখনো আছে।
আমার চোখের সামনে হলুদ পাঞ্জাবী পরে দাঁড়িয়ে আছে চোখের কোনে থাকা অশ্রু কোণা মুছে ফেললাম জানিনা উনি করবেন কি না এই বিয়ে। আমি আলতো পায়ে এগিয়ে গেলাম উনার নিকটে। বিছানার উপরে থাকা কোটি টা হাতে তুলে নিয়ে উনার পিছনে গিয়ে দাড়ালাম। উনি সেটা দেখে চুল থেকে হাত নামিয়ে নিলেন আমার দিকে ফিরে গেলেন। আমি হালকা হেসে উনার হাত কোটির হাতে ঢুকানো শুরু করলাম। চোখ জোড়া উনার বুকের দিকে আবদ্ধ থাকলেও স্পষ্ট টের পাচ্ছি উনার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যা নিবদ্ধ আমার উপরে।
—রেডি হোস নি যে
—শরীর টা ভালো লাগছেনা একটা ঘুম প্রোয়জন
—সারাদিন একা হাতে সব সামলাতে শুরু করলে তো এমনটাই হবে দুই দিন থেকে দেখছি একা হাতে সবটা করছিস এই দুর্বল শরীর নিয়ে।নিজের যত্ন কে নিবে যে না শরীর। তার উপরে চোখের নুচেও কালো দাগ বসে গেছে।
আমি হাসলাম উনার গম্ভির স্বরে চিন্তা করার কথা শুনে।হাত দিয়ে ঠিক করে দিতে লাগলাম উনার চুল গুলো।
—স্বামির বিয়ে বলে কথা কোন ত্রুটি থাকলে কি চলবে হাজার হোক ছেলে পক্ষ একটা আলাদা সম্মান আছেনা। কি করে নিজের স্বামির নাক কাটা দিতে পারি।
এরই মাঝে হৈ-হুল্লোড় আওয়াজ কানে এসে লাগলো কণে এসে পৌঁছেছে।হ্যা আসফি ভাই আর উনার বউ অর্থ্যাৎ মারিয়া তাবাসসুম এর বিয়ে ঢাকা থেকেই হবে শুধু আরিফার গায়ে হলুদ আলাদা হবে।
—আপনার বউ এসে গেছে জনাব। তৈরি তো নিজের অপসরীকে দেখার জন্য।
—তুই তৈরি তো আমার শরীরে অন্য কারো নামের হলুদ ছোয়ানোর জন্য।
তৈরি হয়ে নে৷
—আমি যাবোনা আসফি ভাই।
—তোর কাছে অনুমতি চায় নি আমি।যা
এতোটা নিষ্ঠুর না হলে কি হতোনা আসফি ভাই।আপনি কি বুঝেন না এই যন্ত্রনা কতোটা যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত একটু একটু করে বিষ গিলতে যে ভিষণ কষ্ট হয় আমার।রোজ রোজ আগুনে পুরানোর চেয়ে একে বারে মেরে ফেলা টা শ্রেয় না
কথা গুলো মনে মনে বললেও মুখে আনা সম্ভব হলোনা গলা থেকে যে আওয়াজ টা বের হচ্ছেনা আমার। কোন রকম শাওয়ার শেষ করে শাড়ির সাথে পড়ার জন্য যা যা প্রয়োজন পরে বাহিরে বেরিয়ে এলাম আমি ভেবেছিলাম হয়তো আসফি ভাইয়া নিচে চলে গেছেন কিন্তু আমার ধারণাকে ভুল প্রমান করে বিছানায় বসে এক ধ্যানে ফোন চালাচ্ছেন উনি।গায়ে পেচানো ওর্ণা টা ঠিক করে কাবার্ড থেকে শাড়ি বের করে পিছনে ঘুরতে নিলেই টান লেগে খুলে যায় ওর্ণা। পিছনে তাকিয়ে দেখি আসফি ভাইয়া মুঠ করে ধরে ওর্নার অংশ। উনি আমার কোমর পেচিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসতেই চোখ বুজে নিলাম চোখ জোড়া বেয়ে গড়িয়ে পড়লো অশ্রু। মুছার মতো শক্তিটাও পেলাম না তার আগেই ঘাড়ে আসফি নামক নিষ্ঠুর ব্যাক্তির কোমল ঠোঁটের ছোয়া শিউরে তুললো আমাকে।
শাড়ি পড়ানো শেষে ডয়ার থেকে ফুলের সেট বের করলেন অবাক হলাম আমি।কখন কিনলেন উনি এগুলো।তিনি পড়াতে নিলেই আমি বাধা দিলাম মানলেন না নিজেই নিজের মতো করে তৈরি করে নিলেন আমাকে কোমড়ে ফুলের বিছা পড়িয়েই টেনে নিলেন আমাকে উনার সন্নিকটে।
—জানিনা আমার বউকে অপসরী লাগছে কি না জানিনা তাকে রুপে কতোটা মহনিয় লাগছে।কিন্তু আমার বউকে শ্যামাপরী লাগছে যার সৌন্দর্য সামনে এই ফুল গুলোও যেনো লজ্জা পেয়ে গেছে।তাই তো তাকে হিংসা করার জন্য একদম মানিয়ে গেছে তার সাথে।এই শ্যামাঙ্গিনীকে অপসরী তো তখন লাগবে যখন তার শরীর জুড়ে থাকবে এই নিষ্ঠুর ব্যাক্তির নামের হলুদ। আর তাকে হলুদ রাঙ্গাবেও যে এই নিষ্ঠুর পুরুষ। তৈরি তো আমার রং এ নিজেকে রাঙ্গানোর জন্য।
মাথাটা এলিয়ে দিলাম উনার কাধে। উনি হাসলেন আমার ভিজা চুল গুলো ঘাড় থেকে সরিয়ে সেখানে উনার ঠোঁট ছোয়াতেই মুঠ করে ধরলাম উনার পাঞ্জাবীর অংশ।
চলবে!