ভালোবাস কি আমায় পর্ব ১৪+১৫

#ভালোবাস কি আমায়🍁
#Part_14
#Writer #Saima Islam Mariam❤️
.
🍁🍁
.

নিলয় মাটিতে লুটিয়ে পরার পর ফাহাদ দৌড়ে নিলয়ের কাছে আসে। রাফি, মায়া,রেহান তিনজন অবাক নিলয় এটা কি করলো!

— এই ভাইয়া এটা তুই কি করলি?(নিলয় কে জড়িয়ে ধরে)

— ভাই যে অন্যায় টা করেছিস সেটা ঠিক করিসনি!(কাঁপা কন্ঠে)

— মায়া,রেহান,রাফি ৩জনি নিলয়ের কাছে বসে। নিলয়ের শরীর রক্ত দিয়ে ভিজে গেছে

— প্লিজ নিলয় আপনি কথা বলবেন না(মায়া)

— মায়া বেবী আই এম রিয়েলি সরি.. আমার জন্য তোমার আর রেহানের মাঝে অনেক ভুল বোঝা বুঝি হয়েছে! সরি মায়া বেবী ফর গিভ মি।

নিলয় সেন্সলেস হয়ে যায়। মায়া এইবার কেঁদে দেয়।ফাহাদ, রাফি,রেহান মিলে নিলয় কে হসপিটাল নিয়ে যায়।

#In the Hospital

ফাহাদ ডক্টর কে ডাকতে ডাকতে হসপিটালে ঢুকে।একজন ডক্টর এগিয়ে আসে।

— ওহ মাই গড! নিলয় আহমেদ এর এই সিচুয়েশন হলো কিভাবে?(ডক্টর)

— ডক্টর আঙ্কেল ভাইয়া কে প্লিজ বাঁচান( ফাহাদ)

— ফাহাদ কাম ডাউন আমি নিলয় কে দেখছি ওকে।

দেন ডক্টর নিলয় কে ওটি তে নিয়ে যায়
!
ডক্টর নিলয়দের পরিচিত
!

ফাহান ধপ করে ফ্লোরে বসে যায়। রেহান এগিয়ে এসে ফাহাদের কাঁদে হাত রাখে। ফাহাদ রেহানের দিকে তাকায়

— সরি দোস্ত। আমাকে ক্ষমা করে দে।আমার ভাইয়া কে বাঁচিয়ে দে প্লিজ! আমি মানছি আমি অন্যায় করেছি।

ফাহাদ নিলয়ের জন্য পাগলের মতো কাঁন্না করে। ফাহাদ নিলয় দুই ভাই একে অপর কে নিজেদের থেকে বেশি ভালোবাসে।

রাফি,রেহান ফাহাদ কে শান্তনা দেয়। মায়া তাদের থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে, রেহান রাফি কে দেখতেছে আর ভাবতেছে কি থেকে কি হয়ে গেলো।

কিছুক্ষণ পর ডক্টর ওটি থেকে বেরিয়ে আসে….ফাহাদ দৌড়ে ডক্টর এর কাছে, ডক্টর মুখ কালো হয়ে দেখে ফাহাদ ডক্টর কে আস্ক করে

— ডক্টর আঙ্কেল আমার ভাইয়া কেমন আছে?

— ফাহাদ! নিলয়ের বডি থেকে প্রচুর ব্লাড বেরিয়ে গেছে।ওর ব্লাডের প্রয়োজন এন্ড এনি কস্ট না হলে আমরা নিলয় কে বাঁচাতে পারবো না!

— ডক্টর আঙ্কেল আমার ভাওয়ার ব্লাডগ্রুপ সেম!

ডক্টর একজন নার্সকে ডেকে বলে ফাহাদকে ব্লাড ডোনেট রুমে নিয়ে যেতে

#৩ঘণ্টা পর

ডক্টর ওটি থেকে বেড়িয়ে সবাই কে বলে

— অপারেশন সাকসেসফুল ।নিলয় এখন আউট অফ ডেঞ্জারাস কিছুক্ষণ পর কেবিনে শিপট করা হবে

— থ্যাংকইউ সো মাচ ডক্টর আঙ্কেল(ফাহাদ)

— আমাকে থ্যাংক্স জানানোর প্রয়োজন নেই…এটা আমমার ডিউটি (ফাহাদের মাথায় হাত রেখে)

কিছুক্ষণ পর নিলয়কে কেবিনে শিপট করা হয়

সবাই মিলে কেবিনে যায়। প্রায় ২ঘন্টা পর নিলয়ের সেন্স আসে। ফাহাদ নিলয়ের পাশে বসে হাত ধরে কাঁন্না করে। নিলয় ফাহাদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেই।

— ভাইয়া আই এম সরি। সব কিছু আমার জন্য হয়েছে। একচুয়ালি আমি কিছু বুঝে উঠতে পারি নি। ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করে দে!

নিলয় ফাহাদের হাত থেকে নিজের হাত টা ছাড়িয়ে নেই।

মায়া এসে নিলয়ের পাশে দাঁড়ায়।

— এখন কেমন ফিল করছেন?(মায়া)

—বেটার ফিল হচ্ছে(নিলয়)

মায়া, রাফি,রেহান কিছুক্ষণ থেকে রাত ৯টায় বাসায় চলে যায়। ফাহাদ নিলয়ের কাছে থেকে যায়
!
!
মায়া, বাসায় এসে নিজের রুমে চলে যায়।রেহান অনেক বার মায়ার সাথে কথা বলতে চাই মায়া কথা বলেনি…… গাড়িতেও রেহান মায়া কে নানান কথা বলে কিন্তু কোনো কথা বলে নি

… মায়া রুমে এসে শাওয়ার নেয়। শাওয়ার নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়। সোফায় বসে রাতের আকাশ দেখে…… আকাশ দেখতে দেখতে কখন সোফায় বসে ঘুমিয়ে পরে মায়া নিজেও জানে না!

# পরের দিন সকালে

মায়া,রেহান,নিলিমা,রিফাত,রিফতি সবাই মিলে ব্রেকফাস্ট করে

ব্রেকফাস্ট শেষ করে মায়া নিজের রুমে চলে যায়।

একটা সাদা থ্রি-পিস পড়ে,চোখে হাল্কা কাজল, চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে রেডি হয়ে নেয়। নিলয় কে দেখতে যাবে বলে। মায়া নেশা কে ও বলে ওর সাথে যাওয়ার জন্য।

মায়া নিজে নেমে আসে।রেহান মায়াকে বেরোতে দেখে আস্ক করে।
— মায়া তুই কি কোথায় যাচ্ছিস?

— দেখতেই তো পাচ্ছে।এটা আবার আস্ক করা লাগে নাকি?

— কোথায় যাচ্ছিস?

— নিলয় যে দেখিতে যাচ্ছি।আর কিছু আস্ক করার আছে? যাদি থাকে তাহলে করে ফেলেন

— আমিও তোর সাথে যাবো।তুই ৫মিনিট ওয়েট কর আমি রেডি হয়ে আসছি!

— তার কোনো প্রয়োজন নেই।আমার সাথে নেশা যাবে।ধন্যবাদ

মায়া একটা শুকনো হাসি দিয়ে বেরিয়ে যায়। বাসায় থেকে বেরিয়ে দেখে নেশা বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দেন মায়া আর নেশা একটা রিকশা করে হসপিটালের উদ্দেশ্য চলে যায়….মাঝ রাস্তায় রিকশা দাঁড় করায়। একটা ফুলের তোড়া কিনে নেয়।

#In the hospital

মায়া, নেশা নিলয়ের কেবিনের সামনে দাঁড়ায়,, দরজায় নক করে।
— ভিতরে আসবো?(মায়া)

ফাহাদ মায়াকে ভিতরে আসতে বলে।

মায়া আর নেশা ভিতরে গিয়ে দেখে ফাহাদ এখনো কাঁন্না করতেছে নিলয় অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে আছে…
#ভালোবাস কি আমায়🍁
#Part_15
#Writer _Saima_Islam_Mariam❤️
.
🍁🍁
.

— নিলয় ফুলের তোড়াটা নেন এটা আপনার জন্য। মায়া ফুলের তোড়াটা নিলয়ের দিকে এগিয়ে দেয়…. নিলয় হাসি মুখে ফুলে তোড়াটা নেয়

— কেমন আছেন নিলয় ভাইয়া(নেশা)

— ফাইন…তুমি?

—জ্বী ভালো

মায়া ফাহাদের দিকে তাকিয়ে দেখে সে এখনো নিলয়ের দিকে তাকিয়ে কান্না করতেছে। মায়া বোঝতে পারে ফাহাদ নিলয় কে খুব ভালবাসে! তাই সে ফাহাদের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। ফাহাদ মায়া কে তার পাশে দেখে

— মায়া প্লিজ আমাক মাফ করে দাও। আমি যা করেছি তার জন্য আমি শাস্তি পেয়ে গেছি। ভাইয়া আমার সাথে কথা বলছে আমার উপর রাগ করে খাবার খাচ্ছে না মেডিসিন ও নিচ্ছে না।

— ভাইয়া আপনি আমার সাথে একটু বাহিরে চলুন। আপনার সাথে কিছু কথা আছে (মায়া)

মায়া ফাহাদ কে নিয়ে বাহিরে চলে যায়। নেশা নিলয়ের পাশে বসে থাকে। নেশা নিলয় কে মুখ গুমড়া করে শুয়ে থাকতে দেখে…. নিলয় কে শুয়া তগেকে উঠিয়ে একটা বালিশের সাথে হেলান দিয়ে বাসায়। নেশা নিলয় কে একেক বার একেক কথা বলে হাসায়

অন্যদিকে মায়া ফাহাদ কে কেবিন থেকে বেরিয়ে একটু দূরে গিয়ে একটা বেঞ্চে বসে।

— ফাহাদ ভাইয়া হিংসা একটা ভয়ংকর জিনিস… যা কিনা একটা মানুষ কে পুরো পুড়ি ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। আপনি যে রাফি আর রেহান ভাইয়া কে হিংসে কিরে এতো কিছু করলেন তাতে আপনার কি লাভ হলো। লাভের পরিবর্তে আপনি যাকে আপনার থেকে বেশি ভালবাসেন তাকে আপনি হারিয়ে ফেলতে বসে ছিলেন। জীবনে নিজের ভালবাসার মানুষ গুলো কে নিয়ে চলতে গেলে,এইসব রাগ,হিংসে বিধ্বেস থেকে বিরত থাকুন দেখবেন এই দুনিয়াতে আপনি খুব সুখী মানুষ

মায়ার সব কথা গুলো ফাহাদ মাথা নিচু করে শুনেছে

— আই হোপ আমার কথা গুলো মানে আমি আপনাকে বোঝাতে পেরেছি

— ফাহাদ মাথা উঠিয়ে মায়ার দিকে তাকায়।ফাহাদের চোখ দুইটা চোখের পানি দিয়ে ভিজে গেছে। ফাহাদের মায়া কে কিছু বলার নেই।

— মায়ার প্রশ্নের উত্তরে শুধু মাথা নাড়িয়ে হুম বলে

— আচ্ছা চলুন নিলয় ভাইয়া কাছে যায়,ওইখানে নেশা আর ওনি একা আছে।

মায়া আর ফাহাদ কেবিনে যায়। কেবিনে গিয়ে দেখে নেশা নিলয় কে জুক্স শুনাচ্ছে আর নিলয় হাসছে। ফাহাদ নিজের ভাইয়ের হাসি দেখে নিজেও হেসে দেয়…… মায়া নিলয়ের কাছে গিয়ে চোখ রাঙিয়ে বলে

— কি ব্যাপার আপনি খাবার খাননি কেনো আর মেডিসিন নেননি কেনো

— নিলয় মায়ার কথা শুনে কাঁচুমাচু করে বলে। না এমনি খাই নি।

— খাবার খেয়ে নিবেন আর মেডিসিন নিয়ে নিবেন। আমি এখন যাচ্ছি, বাসায় গিয়ে কল দিবো তখন যাতে শুনি আপনি খেয়ে নিয়েছেন।

মায়া নিলয় কে কথা গুলো বলে,,,,, নেশা কে বলে তার সাথে যাওয়ার জন্য

— মায়া নিলয় ভাইয়ার কাছে আরো কিচ্ছুক্ষণ থাকি তুই বরং যা। আর এমনিতে এখন আমাকে বাসায় গিয়ে বসে থাকতে হবে তার চেয়ে আমি এখানে নিলয় ভাইয়ার সাথে থাকি।(নেশা)

মায়া ভ্রু কুঁচকে নেশা দিকে তাকায়। তারপর একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়।

— ফাহাদ ভাইয়া আপনিও বরং বাসায় যান,বাসায় গিয়ে ফ্রশ হয়ে আসুন আমি নিলয় ভাইয়া কাছে আছি।

ফাহাদ ও চলে যায়।

— তুমি গেলে না কেনো( ভ্রু কুঁচকে)

— নেশা নিলয় কে কিছু না বলে। নিলয় কে খাইয়ে দেয়।

#খান ভিলা

মায়া বাসায় এসে দেখে রেহান বাসার সব কিছু ভাংচুর করতেছে। মায়া সব কিছু না দেখার ভান করলো। নিজের রুমে চলে যায়।

# ১৫দিন পর

নেশার সেবায় নিলয় এখন অনেকটা সুস্থ। ফাহাদ ও নিজের ভুল বোঝতে পারে। অন্য দিকে মায়া রেহান কে প্রতিনিয়ত ইগ্নোর করে যাচ্ছে। রেহান যতো মায়ার সাথে কথা বলে যায় মায়া ততবারি রেহান কে এড়িয়ে যায়।

#সকাল ১০টা

মায়া নিজের রুমে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। মেঘ গুলো কালো হয়ে আছে যে কোনো মুহূর্তে বৃষ্টি নামবে। মায়। আপন মনে কালো মেঘের ছোটাছুটি দেখছে……. হঠাৎ মায়ার মোবাইল বেজে উঠে,,,,মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে রাফি কল করেছে। মায়া কল রিসিভ করতেছে। অপরপ্রান্ত থেকে রাফি হেসে ভেসে আসে।

— কি ব্যাপার রাফি? (মায়া)

রাফি নিজের হাসি থামিয়ে জানায় তার আর আনিতার কোল আলো করে একটা ফুটফুটে মেয়ে এসেছে

— কথা টা শুনে মায়ার খুশিতে লাফিয়ে উঠে।

রাফি কল কেটে দৌড়ে নিচে খালামনির কাছে, সে খানে সবাই ছিলো মায়া সবাই কে জানাই আনিতার মেয়ে হয়েছে আর সে মিমি। মায়ার হাসি দেখে রেহানও মনেনে মনে হাসে, আজ অনেক দিন পর মায়া হাসতেছে।

#কেটে যায় আরো ৫টা দিন

আজ রাফির আর আনিতার মেয়ের নাম করণ অনুষ্ঠান। সবাই এসেছে। ফাহাদ,নিলয়,নেশা,রেহান,লিজা,মিথিলা,রেহানের বাবা মা,বোন।সাথে মায়ার বাবা মা ও এসেছে

মায়া আরিশা কে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আনিতা আর রাফির মেয়ের নাম করণে নাম রাখা হয়েছে আরিশা।

আজ অনেকদিন পর সবাই এক সাথে হয়েছে। অনেক দিন পর মায়া মুখে হাসি ফুটে উঠেছে….

রাতে সবাই খাওয়া দাওয়া করে যে যার বাসায় চলে যায়।

মায়ার বাবা মা আজকে রেহানদের বাসায় এসেছে। সকালেই চলে যাবে।

সবাই বাসায় চলে আসে।

রাত ৩টায় মায়া ছাদে আসে। আজকে মায়ার মন অনেক ফুরফুরে। হাসি মুখে আকাশের ছাদ দেখেছে। মায়া আচমকা তার পাশে কাউকে অনুভব করে। পাশ ফিরে তাকাতে দেখে রেহান তার দিকে তাকিয়ে আছে

মায়া উঠে চলে যেতে নিলে।রেহান মায়ার হাত ধরে ফেলে।

— আপনি আমার হাত ধরেছেন কেনো?

— তোর হাত ধরতে বারণ আছে নাকি?

— এমা আপনি এটা কি বলছেন। আমার মতো একটা ক্যারেক্টারললেস মেয়ের হাত ধরা আপনাকে ঠিক মানায় না।

— মায়া!!!

—হুম

— মায়া আমি ওইদিন কথা গুলো বলতে চাইনি। ওই কথা গুলো অভিমান করে বলেছি। তুই কেনো সেটা বুঝিস না বলতো

— নাহ! আমি কিছু বুঝি না

মায়া রেহানের হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিজের রুমে চলে যায়। রেহান একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ছাদে বসে থাকে।

#পরের দিন

মায়া নিজের সব জিনিস পত্র একটা লাগেজে গুছিয়ে নিচে আসে।তার বাবা মা ও সোফায় বসে তার জন্য অপেক্ষা করতেছে।

মায়ার হাতে লাগেজ দেখে খালামনি আস্ক করে

— মায়া তোমার হাতে লাগেজ কেনো?

— খালামনি আমি কয়দিন নিজের বাসায় গিয়ে মাম্মি পাপ্পার কাছে থাকবো…

চলবে….
[লেখায় ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🙏]
চলবে…
(লেখায় ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🙏)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here