#গল্পঃ_ভালোবাসতে_বারণ💔
#লেখাঃ_মেহেদী_হাসান_রিয়াদ💔
#পর্বঃ__১২
— কি বলতে আসছো তুমি? সরি? নাকি আমায় এই অবস্থায় ফেলে অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে বিয়ের আগেই হানিমুনে চলে গিয়েছো ওইটা?
— প্লিজ আমার কথাটা একটু শুনো,,,,,,,
— তুমি আমায় অনেক ঠকিয়েছো আদিত্য চৌধুরি। দিনের পর দিন তুমি আমার ফিলিংস নিয়ে খেলেছো। কিন্তু আর নয় মি. আদিত্য চৌধুরি। আমি ভালো আছি অনেক শুখেই আছি আমি। আমায় একটু শান্তিতে থাকতে দাও। তুমি চলে যাও প্লিজ।
— শুভ্রতা,,,,,
— আদিত্য প্লিজ, গেট-আউট ফ্রম মাই হোম। প্লিজ হাত জোর করে বলছি, একটু শান্তিতে থাকতে দাও আমায়। তোমার প্রতি আমার কোনো অভিজোগ নেই, সুখে থাকো ওই মেয়েটি কে নিয়ে। বেচে আছি তো আমি। এক মিনিট, ওইদিন মারতে পারোনি দেখে কি আজ নিজ হাতে মারতে আসছো?
— কিসব বলছো তুমি শুভ্রতা????
— আমি আর কিছু শুনতে চাইনা। জদি গোমার ইচ্ছে থাকে তাহলে এখনই আমায় নিজ হাতে মেরে ইচ্ছে পূরণ করে নাও। আমরা সাধারন মানুষ। তোমাদের মতো বিশাল অট্টালিকা নেই আমাদের। কিন্তু বেচে থাকতে পারবো কোনো রকম। প্লিজ একটু শান্তি দাও আমায়।
— আমার কথাটা তো,,,,,,,
— আর কোনো কথা বলে, আমাদের মা বাচ্চার মৃত্যুর কারন তুমি হইওনা। গেট আউট আদিত্য। আর কখনো আসবে না আমার সামনে।
শুভ্রতার মুখে মৃত্যুর খবর শুনে আর কিছু বলার সাহস পাচ্ছেনা সে। এই একটা কথার কারনেই নিজেকে করে নিয়েছে শুভ্রতার থেকে অনেক দুরে।
ধিরে পায়ে হেটে ওই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় আদিত্য। দুই হাটু মাটিতে ফেলে কেদে যাচ্ছে শুভ্রতা। তার পাসে সে দুই কাধে হাত রাখে বেসে বৃষ্টি।
— কাদিস না আপু, শক্ত হও। নিজেকে এতোটা দুর্বল ভাবলে চলবে না। কারণ একটা পরিত্যক্ত লোহাও দিন দিন আঘাত পেলে ধরালো অস্র হয়ে উঠে।
,
,
,
সন্ধা পেরিয়ে এলো। ছাদে এদিক ওদিক পায়চারি করছে রকি। মনে হানা দিচ্ছে হাজারও প্রশ্ন। তৃষ্নাকে কি উত্তর দিবে সে? শুভ্রতা জদি বেচে যায়? ব্যাপারটা যদি আদিত্যের কান অব্দি পৌছে যায়? তাহলে তৃষ্নাকে কি কখনোই নিজের করতে চাইবে?
এই কয়েকদিন ধরে বাসাটা কেমন ফাকা ফাকা লাগছে। সাগর ও তার মা বসে আছে খাবার টেবিলে। বৃষ্টিকে যেনো এই কয়দিনে খুব মানিয়ে নিছে তাদের মাঝে।
— কি রে সাগর, বৃষ্টিকে আনতে জাবি না?
— বাবার বাড়িতে গেলো, কিছুদিন তাদের সাথে সময় কাটাক। এতে মনটা ও হালকা হবে তার।
— হুম, তা ঠিক। কিন্তু তাকে ছারা বাসাটাও কেমন ফাকা ফাকা লাগছে। শুনলাম শুভি ও নাকি বেড়িয়ে আসলো। বুঝলাম না, মুখ দেখায় কি করে সবার কাছে?
— বাদ দাও মা, ওর কথা শুনতেও রাজিননা আমি। ওর মতো মেয়ে আমার লাইফে আসেনি এতে আরো নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে আমার। আল্লাহ্ যা করে তা ভালোর জন্যই করে।
,
,
,
বারান্দায় বসে আছে আদিত্য। রাগ প্রায় গভির হতে চলল। চার দিকে ঝি ঝি পোকার ডাক। ফোনটা তুলে নিয়ে রিদের নাম্বারে একটা ফোন দিলো সে। শুভ্রতার ব্যাপারে পুরুটা খুলে বললো তাকে।
— আচ্ছা ভাইয়া। তুমি চিন্তা করোনা। আমি যে তোমার ভাই সেটা ও জানেই না। অতএব আমি মিট করতে চাইলে ও নিশ্চই আসবে। ওর নাম্বারটা দাওতো ভাইয়া।
— আচ্ছাআমি টেক্সট করে দিচ্ছি।
— হুম ভাইয়া আমি সব সময় তোমাদের পাসে আছি। তোমরা একটা ভুলের জন্য আমায় পর করে দিলেও আমি কিন্তু তোমাদের সেই আগের মতোই ভালোবাসি।
— এমন বলিস না। কেনো তোকে আমি পর ভাববো। দেখ বাবাকে আমি রাজি অনেক বুঝানোর চেস্টা করছি। কিন্তু বাবা তোর উপর অভিমানটা একটু বেশিই করেছে।
— হুম ভাইয়া। সম্পর্কটা শুরু করেছিলাম সকলের অভিশাপ নিয়ে। তাই হয়তো বেশিদিন সুখ সইলোনা কপালে। যদি সম্পর্কটা শুরু করতাম সকলের দোয়া নিয়ে, তাহলে হয়তো ও আজও আমার হাতটি ধরে পাসে থাকতো। মাঝে মাঝে আফসোস হয়, ওই এক্সিডেন্টে ওর সাথে আমিও চলে গেলাম না কেনো?
— এই জন্যই তোকে আমি ফোন দিতে চাইনা। অতিত মনে উঠতেই অল্পতেই ইমোশনাল হয়ে যাস। কেনো বুঝিস না, একটা অধ্যায় শেষ মানেই জীবন শেষ নয়। নিশ্চই জীবনের প্রথম অধ্যায়ের পর রয়েছে দ্বিতীয় অধ্যায়। ওইসব নিয়ে একটু কম ভাবিস বুঝলি?
— হুম ভাইয়া চেষ্টা করি সব সময়।
,
,
,
সোফায় বসে আছে রকি, তৃষ্না ও তার বাবা।
অভিমানি কন্ঠে তৃষ্না বলে উঠে,
— তুমি আমায় কথা দিয়েছিলে ভাইয়া। আমার চাওয়া কখনো অপূর্ন রাখবে না। আর আজ কি না আমার একটা চাওয়াই আমার হাতে এনে দিতে পারছো না?
পাস থেকে তার বাবা বলে উঠে,
— তুই বললে আমি তোর জন্য হাজারও ছেলের লাইন লাগাতে পারি। কেনো এক ঘেয়ি হয়ে একটা জেদ ধরে বসে আছিস?
তার মাঝে রকি বলে উঠে,
— শুনো বাবা, তৃষ্না চাইছে আমি তা পূরণ করবো। আর তুমি তো জানো। রকি কিছু আপসে না পেলে ছিনিয়ে নিতে বাধ্য হয়। প্রথমে আমার জানতে হবে ওইদিন শুভ্রতাকে বাচিয়েছিলো কে?
— শুনলাম ওই এলাকায় নাকি, আজমলের ত্যাজ্য ছেলে রিদ থাকে। শুনলাম ওখানে নাকি সবাই রিদকে কম বেশ চিনে।
— শুনো বাবা, ওইসব পাতি মাস্তাকে গোনার টাইম এই রকির নেই। জদি রিদ ই এর পেছনে কারন হয় তাহলে ওই সব পাতি মাস্তানকে এক তুড়িতে উড়িয়ে দিতেও আমার মুল্যবান সময় নষ্ট হবে না।
,
,
,
একটা রেস্টুরেন্টে বোরকা পরে বসে আছে শুভ্রতা। একটু পরই ওখানে এসে বসলো রিদ।
— আপনি ই শুভ্রতা রাইট?
— হুম ভাইয়া, কেমন আছেন?
— মোটামুটি, ওইদিন এভাবে কাওকে না জানিয়ে,,,,,
— আমি এইসব নিয়ে কিছু বলতে চাইছিনা ভাইয়া।
— আচ্ছা,
তারপর পুরুটা বিষয় শুভ্রতাকে খুলে বললো রিদ।
— আপনি কিছু না জেনেই ভাইয়াকে ভুল বুঝছেন। ভাইয়া আপনাকে একা ফেলে যায়নি। ভাইয়াকে বাধ্য করা হয়েছে। আর ভাইয়া আমায় সব বলেছে। না হলে আমি কখনোই ওইদিন আপনার বিপদের বিষয়টা জানতাম না।
— প্লিজ ভাইয়া আমি এখন উঠি। আর কিছু শুনতে চাচ্ছিনা। প্লিজ।
ওখান থেকে উঠে সোজা বাইরে চলে যায় শুভ্রতা,,,
হটাৎই একটা গাড়ি এসে ওখান থেকে তুলে নেয় শুভ্রতাকে। হটাৎই এমন হয়ে যাওয়ার রিদকে ডাকার বা ইশারা করার একধম সময় পেলোনা সে।
ওদিকে রিদ এখনো বসে আছে ভিতরে। শুভ্রতা কি এতটাই অভিমান করলো তার উপর? যে সবটা জানার পরেও এভাবে উঠে চলে গেলো? আচ্ছা আমি কি তার মনের ভুল বুঝাবুঝিটা কিছু হাল্কা করতে পেরেছি?
গাড়ি চলছে প্রচন্ড গতিতে। ভেতবে হাত পা ছোরাছুরি করার চেষ্টা করলেও কোনো লাভ হচ্ছেনা। আর এই অবস্থায় জোর করাটাও কষ্টকর। কেনো বার বার এমন হচ্ছে তার সাথে? তারতো এখন চিৎকার দিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে আমি বাচতে চাই, একটু শান্তিতে।
To be continue……..
বিঃদ্রঃ ছোট হওয়ার জন্য সরি। লিখার সময় পাইনি একধম। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরুধ রইলো।