#মনের_গভীরে_তুমি❤
#পর্ব_০৮
#M_Marufa_Yasmin
টিপ অবাক হয়ে বলল ..
—“কিন্তু মিরা দি আমি তো চিকেন দিয়নি।
—“shut up nonsense এগুলো তুমি করোনি তো কে করেছে?আমি কি আমার খাবারে চিকেন মিশিয়েছি?
—“মিরা দি আমি সেটা বলিনি ।কিন্তু আমি সত্যিই বলছি আমি দিয়নি।
—“just shut up OK ! তুমি ইচ্ছে করে এসব করেছ তাই তো ।
আরাভ কিছু একটা ভেবে বলল, ,,,,
—“মিরা ও ইচ্ছে করে করেনি হয়তো ভুল করে হয়ে গেছে ।
টিপ অবাক হয়ে বলল …
—“কিন্তু আমি, ,,,,,
আরাভ টিপ কে থামিয়ে দিয়ে বলল
—” টিপ তোমার রেস্টের দরকার যাও রুমে যাও।
টিপ রেগে চলে যায়।
কেয়া শয়তানি হাসি দিয়ে বলল ,,,,,
—” এই মেয়ের পেটে পেটে শয়তানি।
মিরা নেকামো করে বলল
—” আরাভ আমার খুব শরীর খারাপ করছে তুমি একটু আমাকে রুমে দিয়ে আসবে ।
—“ওকে এসো ।
মিরা আরাভের হাত ধরতে এলে ইশরা বলে উঠে ।
—“মিরা দি আমি তোমাকে দিয়ে আসছি দা এর এখনো খাওয়া হয়নি চলো এসো তুমি আমার সাথে ।
মিরা ঠোঁটের কোণে মিথ্যা হাসি দিয়ে হ্যা বলল
খেয়ে আরাভ রুমে যায়। রুমে গিয়ে দেখে টিপ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। চাঁদের দিকে মুখ করে আছে ।
আরাভ গিয়ে বলল, ,,,,
—“টিপ চলো খেয়ে নেবে ।
টিপ এক ভাবেই দাঁড়িয়ে বলল
—“আমার খিদে নেয় ।খাবো না ।
—“টিপ প্লিজ খাবে চলো ।
—“বললাম তো খিদে নেয়।আপনি যান শুয়ে পড়ুন ।
আরাভ পেছন থেকে টিপের হাত ধরে বলল
—“টিপ চলো খাবে ।
টিপের নিজের দিকে আরাভ ঘুরিয়ে দেখে টিপের চোখে পানি।আরাভ অস্থির হয়ে বলল ..
—“টিপ তুমি কাঁদছ? এই টিপ কাঁদছো কেনো ?কি হয়েছে?
—“কিছু না ।
টিপ এড়িয়ে যেতে চাই কিন্তু আরাভ টিপের হাত ধরে আটকে নেয়।
—“আমি তোমাকে ওপরে চলে আসতে বললাম বলে কষ্ট পেয়েছ বুঝি?
—“আমি সবাই কে বললাম আমি সুপে চিকেন দিয়নি তাও কেও বিশ্বাস করলো না এমন কি আপনি ও বললেন আমি নাকি ভুল করে দিয়েছি ।কিন্তু আমি তো জানি আমি দিয়নি।
—” বিশ্বাস করেছি তো এসো খাবে।না খেয়ে থাকতে হয় না ।
আরাভ টিপ কে বিছানায় বসায় । তারপর খাবার টা আনে ।খাবার এনে টিপের পাশে বসে।এক হাতে টিপের চোখের জল মুছিয়ে নিজে হাতে খাইয়ে দিল ।
—“এই রকম করে আর কাঁদবে না ওকে ।
টিপ লক্ষী মেয়ের মতো খেয়ে সোফায় ঘুমাতে যায়।আরাভ এসে বলল
—“টিপ তুমি বিছানায় যাও আমি এখানে ঘুমাচ্ছি।
—“কিন্তু ,,,,
—“না কোনো কিন্তু না যাও শুয়ে পড়ো।
টিপ গিয়ে শুয়ে পড়ে ।আরাভ সোফায় শুয়ে আছে কপালে এক হাত রেখে ।
আর মনে মনে ভাবছে।
—” টিপ এর কান্না দেখে আমার মনটা কেনো এমন করছিল।?বুকটা কেমন করছিল।কেনো এমন হচ্ছে আমার আমি কি ওকে, ,,,,,না না এটা হতে পারে না ।
আরাভ ঘুমিয়ে যায় ।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আরাভ দেখে টিপ নাই। ও ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় গিয়ে দেখে টিপ রান্না ঘরে আছে ।আরাভ গিয়ে টেবিলে বসে.
টেবিলে আরাভ কেয়া মিরা আর তার মা ইশরাত চৌধুরী বসে আছেন ।
ইশরা আর আবির কাল হোস্টেল চলে গেছে।
আরাভের বাবা কিছুদিনের জন্য দেশের বাইরে গেছেন। টিপ সবাই কে খেতে দিচ্ছে ।সবাই চুপচাপ আছে। টিপ মিরার কাছে যেই চা দিতে যায়।ওমনি মিরা পা বাড়িয়ে টিপ কে ফেলে দেয়।টিপ পরে যেতে নেয় কিন্তু আরাভ ধরে ফেলে।চা টা মীরার গায়ে গিয়ে পড়ে ।
মীরা উঠে চেঁচিয়ে ওঠে ………
—“omg আমার ড্রেসটা খারাপ হয়ে গেল টিপ তুমি দেখে চলতে পারো না বলতো ।দেখো কি করে দিলে ।
—“মিরা দি তোমার পায়ের সাথে লেগেই তো …
মিরা টিপ কে থামিয়ে দিয়ে বললো…..
—“চুপ করো আমার পায়ের সাথে লেগে পড়ে গেলে তাহলে আমার পায়ে কেনো লাগলো না ।
—“সরি আমি বুঝতে পারিনি ।
—“ওকে তুমি আমার সাথে এসো ।
—“ঠিক আছে মিরা দি ।
মিরার সাথে যায় টিপ ।
মিরা ড্রেসটা চেঞ্জ করে টিপ বলল পরিষ্কার করে দিতে ।টিপ ড্রেসটা নিয়ে পরিস্কার করতে চলে যায়। সন্ধ্যা বেলা সবাই সোফায় বসে আছে।
টিপ রান্না ঘরে।মীরা ওপর থেকে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে নিচে এলো।আর বলল
—“টিপ তুমি আমার এত দামি ড্রেসটার কি অবস্থা করেছ ?জানো এটার দাম কত তোমাকে শুধু বলেছিলাম এটা পরিষ্কার করে দেবে কিন্তু তুমি কি করলে সাদা ড্রেস টাই লাল রঙ লাগিয়ে দিলে।
আরাভ নিজের রুমে ছিল ।রুম থেকে মীরার চেঁচামেচি শুনে নিচে এসে বলল ….
—“কি হয়েছে এত চেঁচামেচি করছ কেনো?
মীরা নেকামো করে বলল …
—“দেখো না আরাভ টিপ আমার ড্রেসটার
কি অবস্থা করেছে ।
—” ওকে তুমি শান্ত হও ।যাও নিজের রুমে যাও আমি তোমাকে অন্য একটা ড্রেস কিনে দেবো ʼওকে ।
মীরা ওপরে চলে যায় ।আরাভ টিপের কাছে গিয়ে বলল…
—” কি হয়েছে তোমার এইসব করছো কেনো প্রবলেমটা কি তোমার টিপ ও আমাদের অতিথি ওর সম্মান করা আমাদের কর্তব্য আর তুমি কি করছ, ,,,,,,,just disgusting
বলে চলে গেল ।টিপ ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকলো ।
রাতে দুজনে আর কোনো কথা বলেনি।পরেরদিন সকালে আরাভ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে টিপ কে বলল
—“টিপ আমার ব্যাগটা গুছিয়ে দাও
—“কেনো কোথায় যাবেন?
—“কাজের জন্য আমাকে কয়দিন এর জন্য
লন্ডন যেতে হবে কয়দিন পর চলে আসব ।
—“কালকে বললেন না তো।
—“আসলে কাল রাতেই জানতে পারলাম।আর তুমি ও ঘুমিয়ে গিয়েছিলে তাই ।
—“ওকে
টিপ আরাভের দরকারি সব জিনিস গুছিয়ে টলিতে ভরে দিল ।আরাভ আর টিপ এক সাথে নীচে গেলো আরাভ সবাই কে বলে বিদায় নিল।টিপের খুব মন খারাপ কেনো সেটা নিজেও বুঝতে পারছে না ।
এর মধ্যে দুই তিন কেটে গেলো কেয়া মিরা আর ইশরাত চৌধুরী টিপ কে একা পেয়ে অনেক অত্যাচার করেছে।সন্ধ্যা বেলায় টিপ বারান্দায় বসে আছে।তখনই ফোনে টু টু করে ম্যাসেজ ঢুকল টিপ ফোনটা হাতে তুলে ম্যাসেজ টা সিন করে দেখল আরাভ
—“কি করছো?
টিপ রিপ্লাই দিল
—“কিছু না ।আপনি?
—“আমি এই কাজ শেষ করে এলাম।কালকে India ফিরছি তোমার জন্য কি নেবো ?
—“আমার কিছু লাগবে না আপনি সাবধানে আসুন ।
—“ওকে রাখি এখন ।
—“হুম।
কথা বলে ফোনটা রেখে দেয়।
তখনই মিরা টিপের রুমে আসে ।
—“টিপ কি করছো?
টিপ পেছন ফিরে বলল
—“মিরা দি তুমি এসো এখানে ।
মিরা গিয়ে টিপের পাশে বসল
—“তোমাকে একা কথা বলতে এসেছি ।
—“কি কথা বলো ।
—“টিপ আমি জানি তোমার আর আরাভের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেয় ভালোবাসার ।শুধু এই বিয়েটার জন্য তোমরা এক সাথে আছো ।বিশ্বাস করো আমি আরাভ কে ছাড়া বাঁচব না।তোমার পায়ে পড়ি টিপ প্লিজ আমার আরাভ কে ফিরিয়ে দাও ।
টিপের চোখ ছলছল করে উঠল ।
বুকটা ফেটে যাচ্ছে চেঁচিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।টিপ কিছুক্ষন মূর্তির মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে বলল
—“ঠিক আছে আমি তোমার আর স্যার এর
জীবন থেকে চলে যাবো ।
মীরা মিথ্যা চোখের পানি গুলো মুছে বলল
—“সত্যিই বলছো তুমি ।
—“হুম ।
—“কিন্তু তুমি আরাভ কে রাজি করাবে প্লিজ যেনো ও আমাকে বিয়ে করে ।
—“আমি কেনো বলব?
—“কারন আরাভ তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে আমাকে বিয়ে করতে রাজি হবে না ।
তুমি ওকে রাজি করাবে প্লিজ ।
—“ঠিক আছে ।
মিরা চলে যায়।টিপ দরজা লাগিয়ে।ছুটে বিছানায় এসে মুখে বালিশ চেপে কাঁদতে লাগল।অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কেনো সেটা বুঝতে পারছে না ।ভালোবাসা এমনই। নিজের অজান্তেই হয়ে যায়।ভালোবাসা সত্যিই কাঁদায়।টিপ আর আরাভ দুজন দুজনকেই ভালোবাসে কিন্তু দুজনেই জানে না।
ভালোবাসা কখন কি ভাবে কার সাথে হয়ে যায় ।এটা কেও বুঝতেই পারে না ।
না জানি টিপের কপালে কি আছে ।
*
*
*
*
বাকি
(