#রোদ_বৃষ্টির_প্রেম
#Nishi_khatun
#part_25
খান বাড়িতে আজ রোদ বৃষ্টির বউভাত।
পুরোবাড়িতে নানারকম লাইটিং করা।
বৃষ্টি তো ক্রীম কালারের একটা বেনারসি শাড়িতে নিজেকে অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছে।
নিজেই নিজের মন মতো সারা বাড়িতে ঘুরাঘুরি করছে। সবাই তো বৃষ্টির এমন এটিটিউড দেখে অবাক। কোন নতুন বউ এমন বেহায়ার মতো ঘুরতে পারে?
রোদ- বৃষ্টির এমন কান্ডে হতবাক হয়ে গেছে। তবে তার বৃষ্টিকে বলার মতো কোন ভাষা নেই। কারণ সে বৃষ্টিকে ভালোবাসে। তবে বৃষ্টি বিধবা সে কথা শোনার পর থেকে কেন জানি না আগের মতো আপন করে কাছে পেতে ইচ্ছা করছে না। হয়তো বৃষ্টি যদি বিধবা না হতো তাহলে আজকে রোদের জীবনে সব থেকে সুন্দর একটা দিন হতে পারতো। আর চার-পাঁচটা সাধারণ বিবাহিত দম্পতির মতো তাদের বাসরের কাহিনী হতে পাড়ত।
“তবে ঐ যে নসীবে নাই সুখ বিধাতা বুঝি বিমুখ ”
বিহান রিনির বেহালদশা করে রাখছে।
কিন্তু কেনো? কিসের জন্য তা রিনির অজানা।
এদিকে মিস্টার খান বিহানের সাথে যোগাযোগ করে। তাকে বলে,”আমাদের বাড়িতে রোদ- বৃষ্টির বউভাতের আয়োজন করা হয়েছে। তুমি আর রিনি যদি আসতে! তাহলে আমাদের সকল আত্মীয়-স্বজনদের সাথে তোমাক পরিচয় করিয়ে দেওয়া যেত।”
বিহান- দুঃখীত আমার পক্ষ আপনার দাওয়া কবুল করা সম্ভব নয়! তবে হ্যা একদিন সময় করে রিনিকে সাথে করে নিয়ে যাবো।
মিস্টার খান- বাবা তোমার কি কোন সমস্যা? যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে মেয়েটাকে নিয়ে আসলে খুব খুশি হবো।
বিহান- হ্যাঁ সমস্যা তো আছে। সমস্যা ছাড়া এই পৃথীবিতে কোন মানুষের বসবাস হয় না।
মিস্টার খান- কি সমস্যা জানতে পারি?
বিহান -আমার বাবা অসুস্থ! আর তাছাড়া আমি গ্রামের বাড়িতে এসেছি এখানে কিছুদিন থাকবো। আপনার বাড়িতে যেমন বিয়ের পরের অনুষ্ঠান হচ্ছে আমাদের বাড়িতেও অনুষ্ঠান। আপনাদের মতো বড় জাঁকজমক ভাবে না হলেও সাধারণ গ্রামীণ নিয়মে হবে। আশা করি এতে আপনার কোন আপত্তি নেই?
মিস্টার খান- না না বাবা আমার কোন সমস্যা নেই। আমার মেয়ের সব ভুল গুলো মাফ করে তাকে যে তুমি মেনে নিয়েছ এইটাই আমার বড় পাওনা।
বিহান – জ্বি ধন্যবাদ! আপনাদের সবার দাওয়াত রইলো। একদিন সময় করে আমাদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসবেন।
মিস্টার খান-ইন শা আল্লাহ যাবো।
রিনির সামনে বিহান সম্পন্ন কথা গুলো বলে।
রিনি তেড়েমেরে বিহানের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,”এই সার মিথ্যা কেন বললেন আমার বাবার কাছে? আপনাদের বাড়িতে কোথায় বউভাতের অনুষ্ঠান হচ্ছে? হুদায় কামে আপনার জন্য এই গভীর গ্রামে এসে পড়েছি। এ দিকে ঐ বৃষ্টি ডায়নি আমার ভাইয়ের ঘাড়ে এসে বসে পড়ছে। ”
কথা গুলো বলে থামার সাথে সাথে রিনির গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয় তার শাশুড়ি মা।
নিজের গালে হাত দিয়ে শাশুড়ির দিকে হতবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
শাশুড়ি মা- তোমাকে না বলছিলাম আমার বাড়ির কাজের মেয়ে হয়ে থাকতে। তাহলে কোন সাহসে আমার ছেলের সামনে গলার ভলিউম বাড়িয়ে কথা বলো? দ্বিতীয় বার যদি কখনো বিহানের সাথে তর্কে জড়াতে দেখি তাহলে তোমার খবর আছে এই বলে দিলাম।
রিনি তার কথায় মাথা দু দিকে ঝাঁকিয়ে সম্মিত প্রকাশ করে। রিনিকে রান্নাঘরে যেতে আদেশ করতেই নে প্রস্থান করে। এদিকে গ্রামের কিছু মহিলা বিহানদের বাড়িতে প্রবেশ করে।
-ও বিহানের মা শুনলাম বিহান আইছে!
_জ্বি, বিহান বাড়িতে আসছে।
-ছেলে তো বিয়েে উপযুক্ত হয়ে গেছে এবার ছেলের বিয়েটা দাও। যদি বলো আমরা ভালো মেয়ের সন্ধান দিতে পারি।
_জ্বি! ছেলের বিয়ে ত দিতেই হবে। তবে এখুনি বিয়ের ঝামেলা করতে চাই-ছি না। ওর বাবার শরীরটা একটু ভালে হলে তখন বিয়ের তোরজোড় শুরু করবো।
-তাহলে বিহানের এঙ্গেজমেন্ট করে রাখো এখন।কিছুদিন পর না হয় সময় সুযোগ হলে বিয়েটা দিয়ে দিও।
_আচ্ছা আমি তাহলে বিহানের বাবার সাথে কথা বলে জানাবো আপনাদের।
রান্না ঘর থেকে সবটা রিনি শুনে বলে কি সাংঘাতিক মহিলা রে বাবা। আমি থাকতেও ছেলের দ্বিতীয় বিয়ে দিবে। দাঁড়ান দিচ্ছি বিয়ে।
রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে হুট করে সবার সামনে চলে আসে তা। রিনিকে দেখে বিহানের মা বলে,”এই হচ্ছে আমাদের বাড়ির নয়তু কাজের মেয়ে। বিহানের বাবার দেখাশোনা করার জন্য শহর থেকে নিয়ে আসা হয়ছে!”
রিনির এমন ভাবে অপমানিত হবে এটা মোটেই আশা করে নি।
রিনি কিছু বলার আগে সব মহিলারা নিজেদের বাড়িতে চলে যায়।
এদিকে বৃষ্টি নিজের রুমে এসে রোদ কে জড়িয়ে ধরে বলে “আচ্ছা আপনি আমার থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেনো?”
রোদ- জানি না! আপনি আমার কাছে আসলে আমার বিরক্তিকর লাগে।
বৃষ্টি দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,”জানি,জানি সব জানি!”
রোদ- কি জানেন?
বৃষ্টি- আস্তে করে ফিসফিস করে বলে,” এই যে আমি আপনার কাছে আসলে আপনি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেন না। আমাকে আপন করে নিতে ইচ্ছা করে। কিন্তু….
রোদ- কিন্তু কি?
বৃষ্টি- এই কিন্তুর উওর টা আমার থেকে আপনি বেশি ভালো জানেন।
রোদ- হেয়ালি রাখেন। এই সব হেয়ালি মোটেই পছন্দ না আমার।
বৃষ্টি- আচ্ছা সমস্যা নেই। দ্রুত নিচে চলুন সবাই এসেছে আমাদের ফাংশনে। তাদের সবার সাথে পরিচিত হবার একটা বেচার আছে তো।
এরপর রোদ আর কথা না বাড়িয়ে দ্রুত রেডি হয়ে বৃষ্টির সাথে নিচে নেমে আসে।
রোদের ইচ্ছা করছিল না সবার সাথে বৃষ্টির পরিচয় করিয়ে দিতে। তারপরেও অনিচ্ছা শর্তেও মিথ্যা হাসি মুখে সকলের সাথে কথা বলছে।
বৃষ্টি রোদের হাত জড়িয়ে ধরে সবাই কে সালাম দিয়ে সুন্দর ভাবে কথা বলে। এদিকে নানারকম মানুষের আনাগোনা তে খান বাড়ি মুখোরিত হয়ে যায়।
এসবের মাঝে হুট করে বৃষ্টি উধাও হয়ে যায়।
(ভুল ত্রুটি গুলো বলবেন। গল্পটা কি পছন্দ হচ্ছে না?)
চলবে….