#গহন_রাতে_শ্রাবণধারা
লেখাঃ সুমাইয়া আক্তার মনি
পর্ব_১১
রাহা’র কথাশুনে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে তিশা। চেঁচিয়ে বলে,
আমি ঝগড়া বাঁধাই মানে কি? আমি কখন আম্মাকে বললাম ঝগড়া করতে?
রাহা বলে, এখন মনে নাই? মনে পরছেনা তাইনা?
সারাক্ষণ বানিয়ে বানিয়ে আম্মাকে উশলিয়ে দিচ্ছো, এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে আম্মা আমার সাথে এমন করে। তোমার লাভ কি তিশা এসবে?
তিশা ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললো,
তোমার সুখ আমার ভাল্লাগেনা। বুঝোনা তুমি?
তিশার কথায় সম্পুর্ন বাকরুদ্ধ হয়ে যায় রাহা। অবাক হয়ে তিশাকে বললো,
আমি কি কখনো তোমার পাকা ধানে মই দিছিলাম? না-কি তোমার কাটা গায়ে লবণের ছিটে দিয়েছিলাম? কোনটা করেছি তিশা? যার জন্য এত হিংস্রতা তোমার।
আমার কাছ থেকে সবকিছু কেড়ে নিয়ে শান্তি হয়নি তোমার? এখন কথা শুনাচ্ছো আবার?
তিশার কথা শুনে খানিকটা অবাক হয়ে যায় রাহা। ধীরভাবে বলে,
আমি কখন কেড়ে নিলাম? কি নিয়েছি?
রাহা’র কথা শুনে চুপ হয়ে যায় তিশা। কোনো উত্তর না দিয়ে সামনে থেকে চলে যায়। রাহা নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। তাসলিমা বেগম উঠোন থেকে বিরবির করতে করতে ঘরে উঠেন। রাহা’কে কথা শুনায় আবারো, জবাবে রাহা কিছু বলেনা।
রোহান কল দিয়েছে অনেকবার রাহা’কে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে তাসলিমা বেগমকে কল দেয়। তাসলিমা বেগম ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললো,
তোর বউরে দিয়া মাইর খাইয়ে শান্তি হবি তুই? না-কি আবার বিচার দিছে কোনো!
তাসলিমা বেগমের এমন কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারেনা রোহান। তাসলিমা বেগম বললেন,
এই সংসারে আমি থাকমু না। হয়তো তোর বউ থাকবে, নয়তো আমি থাকমু। এই মাইয়ার লগে এক ছাদের নিচে থাকমুনা আমি। বাইরে সারাক্ষণ পোলাগো লগে হাত ধইরা, গায়ে পইরা কথা কইবে আর আমি কিছু কইলেই ধমক দেয়, মাইরের কথা কয়। এমন মাইয়া আনছো আমারে মাইর খাওয়াইতে?
তাসলিমা বেগম এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বললেন রোহানকে।
রোহান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার মা? রাহা এমন মেয়ে নয়, তাছাড়া ধমকের কথা তো বিশ্বাস করাই যায়না।
তাসলিমা বেগম চেঁচিয়ে বললেন,
ওই মাইয়ার লইজ্ঞা আমারে মিথ্যুক কও? এমন চোখ ফুটানো মাইয়ার লইজ্ঞা এত টান তোর?
রোহান জোরে শব্দ করে বললো,
তিশা এসব বলে বলে উশলিয়ে দিচ্ছে তোমায়?
তাসলিমা বেগম বললেন,
একদম তিশারে টানবিনা। তোর বউর দোষ যা তা তো কমুই। তিশারে টানো ক্যা।
রোহান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
রাহা কেমন মেয়ে তাও ভাল জানা আছে আমার। ওর ব্যাপারে কে না কে মিথ্যা বলে যাচ্ছে আর তুমি নাচছো?
তাসলিমা বেগম চেঁচিয়ে বললেন,
রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে পোলাগো হাত ধইররা কথা কয়, যেদিন ঢাকা গেছো ওইদিনও খারাইয়া কথা কইছে। এই ভাল মাইয়ার লক্ষণ? আমার তিশা হাজারগুণে ভাল আছে। ভাল মাইয়াগো তো মনে ধরেনা, এইসব চোখ ফুটানো মাইয়াগো লইজ্ঞা।
রোহান হাত মুঠোয় করে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
মা! এমন কোনো কথা বলবানা যার জন্য আমার মুখ থেকে খারাপ কথা বের হয়। তিশার জন্য এত দরদ তোমার? দেখা যাবে।
তাসলিমা বেগম বললেন,
ওই মাইয়ার লইজ্ঞা এই কথাও কইলি আমারে! বাবা। দশ মাস দশ দিন কষ্ট কইরা পেটে ধরছি তোরে এই কথার লইজ্ঞা?
রোহান কিছু না বলে কল কেটে দিলো।
বেশ কিছুক্ষণ পরে রোহানকে কল দেয় রাহা। কয়েকবার রিং হওয়ার পরে রিসিভ করে রোহান। ধীর কণ্ঠে বলে,
কি হয়েছে ঘরে?
রাহা থতমত খেয়ে বলে,
তেমন কিছুনা।
রোহান রেগে উচ্চস্বরে বলে,
এত সমস্যা কি বাড়িতে? শান্তিতে থাকতে পারবোনা? সারাদিন খাটুনি করার পরেও একটু শান্তি পাবো না?
রোহানের রাগ এই প্রথম শুনে রাহা। অনেকটা ধীরভাবে বলে,
আমি তোমার কাছে বিচার দিয়েছিলাম কখন? আম্মা বলছে, আমি নাকি বিচার দেই কিছু হলেই তাই এভাবে করছেন।
তখনি তাসলিমা বেগম এসে বলেন,
আবারো নালিশ দাও। দে নালিশ, আমার ঘরে থাকো। তোগো ঘরে আমি থাকিনা।
রাহা বললো,
আম্মা এখানে নালিশের কিছুই হয়নি।
তাসলিমা বেগম উচ্চস্বরে চেঁচিয়ে অনেক কথা শুনালেন রাহাকে।
এদিকে ফোনে রোহান রেগে যাচ্ছে। রাহা কিছু না বলে কল কেটে দেয়।
মাহতাব খন্দকার কিছু না খেয়ে শুয়ে আছে। তাসলিমা বেগম কথা বলেন নি। তিনিও না খেয়ে শুয়ে আছেন। রাহা কয়েকবার ডাকছে, কিন্তু বারবার ব্যর্থ হয়ে নিজেও না খেয়ে আছে। তিশা খেয়ে তুহিনকে কল দেয়।
ঘুম ঘুম চোখে তুহিন বলে,
এত রাতে কল দিয়েছো কেন? কোন দরকার আছে?
তিশা রেগে বললো,
এখনি এত রাত মনে হচ্ছে? মাত্র ১০ টা বাজে। আগে তো ১২ টা অব্দি কথা বলতে পারতা। এখন এত রাত হলো?
তুহিন বললো,
এত ভাষণ না দিয়ে বল, কল দিছো কেন?
মেয়ে দেখতে গিয়েছিলে কেন?
তিশার কথার জবাবে তুহিন হেসে বললো,
– আমি বিয়ে করবো তাই গিয়েছিলাম।
– মানে?
– মানে স্পষ্ট তিশা। বিয়ে করবো আমি।
– তাইলে আমার সাথে সম্পর্ক করলা কেন? তখন মনে ছিল না?
– আমার সাথে সম্পর্ক থাকাকালীন অন্য ছেলেদের সাথে সম্পর্ক করার সময়ে তোর মনে ছিল না?
তুহিনের কথা শুনে থতমত খেয়ে তিশা বলে,
– আমি কার সাথে সম্পর্ক করছি?
– তোরে ডিটেইলস দিতে হবে? তাইলে শোন ; স্কুল, কলেজ মিলিয়ে ৪-৫ টা ছেলের সাথে একসাথে কেমনে এত পারো? কয়টা ছেলের সাথে শুইছো তুই?
তুহিনের কথায় তিশা রেগে বললো,
– এসব কি বলছো? মাথা খারাপ তোমার?
– তোর জন্য মাথা খারাপ হইছে। মেয়ে হয়ে এতকিছু পারলে আমি বিয়া করতে কৈফিয়ত নেবো কেন?
– রায়হান বলছে সবকিছু?
– রায়হান তোর কি লাগে? না-কি রায়হানের লগেও লাইন করো।
– আগে বলো রায়হান বলছে সবকিছু? রায়হানের সাথে আমার কিছু নাই, ও তো রাহার জন্য আমার সাথে এমন করে। তাছাড়া কিছু না।
তিশার কথাশুনে তুহিন চুপ হয়ে গেল। রায়হানও কি খেলছে ওর সাথে?
তুহিনকে চুপ থাকতে দেখে তিশা বললো,
সত্যিই তুমি বিয়া করবা?
তিশার কথায় কোনো জবাব না দিয়ে কল কেটে দেয় তুহিন।
রায়হানকে এই ক’দিনে যা যা বলছে সবকিছু আবার সবাইকে বলে দিবে না তো! মা-বাবা জানতে পারলেই তো কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। চিন্তায় পরে যায় তুহিন।
_____
রাস্তায় দেখা হয় রায়হানের সাথে তুহিনের। রাস্তার পাশে বসে বসে সিগারেটে টান দেয় দু’জনেই। একসময়ে তুহিন জিজ্ঞেস করে, ডাবল গেম খেলছিস নাকি? ছোট ভাই।
তুহিনের কথা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় রায়হান।
– বুঝলাম না ভাই।
– এই যে আমার কাছে তিশা আর তিশার কাছে রাহা। ব্যাপার কি?
তুহিনের কথায় রায়হান ঘাবড়ে গেল। রায়হান বললো,
– রাহা! সে তো তিশার ভাইয়ের বউ হয়। মানে ওর ভাবী হয়।
– সেটাই তো। তিশার ভাবীর জন্য ওর সাথে কথা বলবি কেন?
– তিশা বলছে?
– তিশার সাথে কথা বললে ও বলে রায়হান কিছু বলছে কিনা। আর তোর সাথে কথা বললে তুই জিজ্ঞেস করো তিশা বলছে কিনা। ব্যাপার কি?
-তেমন কিছু না। জানোই তো তিশা মেয়েটা ধানাইপানাই করে বেশি। তাছাড়া আর কিছুই না ভাই। কথাটি বলেই রায়হান কাজের বাহানা দিয়ে উঠে গেল।
______
দক্ষিণ পাশে মানুষের চলাচল খুব কম দেখা যায়। দক্ষিণের ঘাট বাঁধানো পুকুরে ঝাঁক বেঁধে অনেকেই গোসল করে। এই গরমে পুকুরে গোসল করলে অনেকে শান্তি পায়, এমনকি টিউবওয়েলে মানুষের ভিড় জমলে পুকুরে দেখা যায় অনেককে। সম্পর্কে রাহা’র চাচাতো ‘জা’ হয় রোহানের চাচাতো ভাইয়ের বউ। তাঁর সাথে পুকুরে গোসল করতে গেল রাহা।
পুকুরে অবগাহন করে ভেজা শরীরে তোয়ালে পেঁচিয়ে বাগানের দিকে যাচ্ছিলো রাহা, সাথে ওর ভাবীও ছিল।
তখনি পিছন থেকে কারো ডাকে সম্পুর্ন স্তব্ধ হয়ে যায় রাহা। যে তুহিন সেদিন কথা বললো না, আজকে এখানে এই অবস্থায় ডাক দিল?
রাহা কিছু না বলে চোখ-মুখ কোনোরকমের বন্ধ করে কাপড় পরিবর্তনের জন্য চলে গেল। তুহিন ঠায় দাঁড়িয়ে দেখছে। তিশা এসে গলায় খাকড়ি দিলে তুহিন পিছু ফিরে তাকায়।
এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? বাড়ির ভেতরে যাবে না?
তিশার কথায় তুহিন খানিকটা হেসে বললো,
আজকে যাবো না। আরেকদিন যাবো তিশু।
তুহিনের কথায় তিশা কপাল কুঁচকে তাকায়, তুহিন কথার জালে তিশাকে আবারো রাস্তায় নিয়ে যায়।
(দক্ষিণ পাশে মানুষের সমাগম খুব কম দেখা যায়, তার জন্য তিশা তুহিনের সাথে এদিকটাতেই দেখা করতে আসে। ভাগ্যক্রমে রাহাও দক্ষিণ পাশের পুকুরে গোসল করতে আসে। সেখানেই দেখা মিলে তুহিনের সাথে।
রাহার সে ভাবী বলে,
ছেলেটা কি বেহায়া। মেয়েদের দেখেই এভাবে ডাক দিল। এতক্ষণ ছিল কোথায়? আল্লাহ মাবুদ জানে। আজকেই এখানে আসতে হল, আর আজকেই আমরা গোসল করতে গেলাম।
তার কথায় রাহা চোখ মুখ খিঁচিয়ে চোখ দিয়ে পানি ফেলে দিল।
অনেক কান্নাকাটি করে তুহিনের সাথে দেখা করে তিশা আজকে। সেই সূত্র ধরেই বাড়িতেও তাসলিমা বেগমের সাথে কথা বলতে বলে তুহিনকে। কিন্তু পুকুরের কাহিনীর পরে তুহিন ভেতরে আসলো না।)
রাস্তায় গাছের আড়ালে যেয়ে ছায়ায় বসলো দুজনে। তুহিন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
বিয়ে করবে আমায়? তিশু।
তুহিনের কথায় খুশি হয়ে কেঁদে দেয় তিশা। তুহিন ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, কান্না করছো কেন?
তিশা বলে, সত্যিই বিয়ে করবে আমাকে?
হ্যাঁ! করবো তো। তবে শর্ত আছে।
তুহিনের কথায় অবাক হয়ে তাকায় তিশা। তুহিন ডেভিলমার্কা হাসি দিয়ে বলে,
শর্ত মানলে বিয়ে করবো। নাহলে সম্পর্কের ইতি টানবো, আর বাকিগুলো জানোই তো তিশা।
তুহিনের কথায় অবাক হয় তিশা। কিন্তু বিয়ের কথা ভেবে রাজীও হয়ে যায়। অতঃপর তুহিনের কথাশুনে আবারো খানিকটা ঢোক গিলে তিশা। তুহিন হেসে চলে যায়, তিশা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে।
বিকেলের দিকে ভুলিয়ে ভালিয়ে তাসলিমা বেগমকে বেড়াতে পাঠায় তিশা। সেখানে নাকি তাসলিমা বেগমের বড় বোন অসুস্থ হয়ে গেছে, সম্পর্কে তিশার বড় খালা হয় সে। বোনের অসুখ শুনে তাসলিমা বেগম যাচাই না করেই ছুটে যায়, সাথে মাহতাব খন্দকার তো আছেই। তিশা বলে রাহার সাথেই থাকতে পারবে, তাছাড়া রাতে বাড়ির কোনো ভাবীকে নিয়ে ঘুমালেই হবে তাই তাসলিমা বেগমকে চিন্তা করতে নিষেধ করছে।
তাসলিমা বেগমও সম্মতি দিয়ে চলে যান। রাহা কিছু বুঝে উঠতে পারছেনা তিশা আজকে এত ভাল আচরণ করছে কেন?
রোহানের সাথে এখনো কথা হয়নি রাহার। বিকেলে অফিস থেকে আসার পরে বরাবর কল দেয়, কিন্তু আজকে কোনো খোঁজ খবর নেই রোহানের। প্রায় সন্ধ্যার পরে রাহাকে কল দেয় রোহান। সে বাড়িতে আসছে নাকি, রোহানের এমন কাণ্ডে অবাক হয়ে যায় রাহা। বুঝতে পারে গতকালের ঝামেলার পরেই হয়তো বাড়িতে আসতে চাইতেছে। তবে খুশিও লাগছে রোহান কাছে থাকবে আবারো।
রাত ১২ টা ছুঁইছুঁই
তিশা অন্য রুমে আর রাহা ওর রুমে শুয়ে আছে। তিশা ঘুমাচ্ছে কিনা জানা নেই রাহার। আগের সব ঘটনার পরে তিশার সাথে কথা বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই রাহার। রোহান পথে থাকায় রাহাকে কল দেয় এত রাতেও। রোহানের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে ঘুমের জগতে পা দেবে রাহা, তখনি পাশের ঘর থেকে রাহার ডাক পরলো।
– ও রোহানের বউ! একটু আমাগো ঘরে আইতে পারো মা।
– পাশের ঘরের চাচীর কথা শুনে তড়িঘড়ি করে উঠে রাহা। এত রাতে কি হলো তাঁর!
কিন্তু ঘর থেকে নামার সময়ে তিশাকে কোথাও দেখা গেল না। রাহা চিন্তিত হয়ে খুঁজলো তিশাকে, কিন্তু ঘরের কোথাও দেখছেনা। পরক্ষণেই ভাবে হয়তো তিশাকেও ডাকছিল তাই ও পাশের ঘরে যেতে পারে। দরজা বাইরে থেকে যেভাবে চাপিয়ে দিয়েছিল তিশা রাহাও সেভাবে রেখে পাশের ঘরে যায়।
– চাচী কি হয়েছে?
-দেখো তো সাহেলের বউ কেমন করতেছে। আমি বুড়া মানুষ আমি তো আর এখন কিছু করতে পারমুনা। তোমরা একটু দেখো।
সাহেলের বউ প্রেগন্যান্ট, তবে ডেট কয়েকদিন পরে। কিন্তু ব্যাথায় ছটফট করছে সে, এসব ব্যাপারে রাহা’র ধারণা কম থাকলেও অন্যদের পাশাপাশি ও নিজেও বসে আছে। যদি কোনো সাহায্য করতে পারে, সেটাই অনেক।
তিশার কথা ভুলে গেছে প্রায়।
এই ঘরের সামনের বারান্দার দিকের আলো বন্ধ থাকলেও এই ঘরে মোটামুটি অনেকেই সজাগ আছে। তবে অন্যান্য ঘরের কয়েকজন মহিলা, মেয়ে, বউরা যারা সাহেলের ঘরেই আছে তাঁরা ছাড়া অন্যরা প্রায় ঘুমের জগতে পারি জমিয়েছে।
রাত ১ টা বেজে ৩৭ মিনিট
সাহেলের বাবার ডাকে সবাই বাগানের দিকটায় ছুটে যায়। রোহানের ঘর থেকে বাগানের দিকটায় নাকি কারো পায়ের শব্দ পেয়েছে। যারা মাত্রই মানুষের উপস্থিতি পেয়ে দৌঁড়ে গেছে।
তাঁর কথাশুনে সবাই ভাবে হয়তো চোর আসছিলো। রাহা দৌঁড়ে ঘরের ভেতরে যায়, সাথে কয়েকজন মহিলাও ছিল।
তিশার এমন অবস্থা দেখে রাহা বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। সাথে অন্যরাও।
কেউ যে ঘরে এসে তিশাকে ভোগ করে গেছে তা স্পষ্ট। প্রায় অচেতন অবস্থায় তিশা শুয়ে আছে।
তিশার জামা-কাপড় ঠিক করে চোখেমুখে পানির ছিটে দেয়। বাড়ির মুরব্বিদের মধ্যে অনেকে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। এই ভরা বাড়িতে এমন এক কাজ কিভালে হলো! তাছাড়া বাড়ির মান-সম্মান জড়ানো আছে। হয়তো কেউ জানছে এই ঘর খালি, তাই চুরির ধান্দায় আসছে।
#চলবে