চিত্তদাহ লেখনীতে : শুভ্রতা আনজুম শিখা পর্ব ২৮

#চিত্তদাহ
লেখনীতে : শুভ্রতা আনজুম শিখা
পর্ব ২৮

🍂🍂🍂

মিটিং শেষ হতেই ক্লান্ত হয়ে চেয়ারে গা এলিয়ে বসে রইলো আবসার। মিটিং রুম একদম খালি। সে চোখ বন্ধ করে কয়েকবার লম্বা শ্বাস নিলেন। ইদানিং বুকটা তার ভার হয়ে থাকে। মেয়ের হাসি দেখে না আজ সপ্তাহ খানেক। এক বাড়িতে থাকলেও চোখের দেখাটাও দেখতে পায় না সে। কি এমন ভুল করেছে সে বুঝে উঠতে পারে না। ভালোবাসা কি ভুল? তার ভেতর থেকেই তৎক্ষণাৎ জবাব এলো “ভালোবাসা ভুল নয় তবে কাউকে ধোঁকা দেওয়া ভুল। তুই একজনকে ভালোবাসার নাম করে অন্যজনকে ধোঁকা দিয়ে চলেছিস বছরের পর বছর তাই তোর মেয়ে রাগ”। দরজায় কড়া নড়তেই আবসার চোখ মেলে তাকালেন সেদিকে। সামনেই তার অ্যাসিস্ট্যান্ট দাড়িয়ে আছে। গায়ে লাল শাড়ি, মুখে প্রসাধনীর প্রলেপ। তার অন্য পরিচয় সে আবসারের দ্বিতীয় বউ। সব সময় হাসি হাসি থাকলেও আজ ইতির চেহারার রং কেমন ফ্যাকাশে হয়ে আছে। চোখে মুখে লেগে আছে অসন্তুষ্টির ছোঁয়া। আবসার এর কারণ জানতে চাইলেন না। মন তার ভীষণ খারাপ।

~আপনার বড় মেয়ে শুভ্রতা এসেছে। আপনার কেবিনে অপেক্ষা করছে।

হন হন করে রুম ত্যাগ করলেন ইতি। আবসার তার যাওয়া দেখে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। উমা বা শুভ্রতা অফিসে এলেই ইতির মুখের দিকে তাকানো যায় না। তার চোখে মুখে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। মনে মনে খুশি হলেন আবসার। আজ এতদিন পর তার মেয়ে নিজ থেকে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছে। চেয়ারে ঝুলিয়ে রাখা কোর্টটা কোনোমতো হাতে নিয়ে ছুট লাগলেন নিজ কেবিনের দিকে। মেয়ের রাগ হয়তো কমে এসেছে।
___________________________________

জানালার ধারে দাঁড়িয়ে আছে শুভ্রতা। চোখে মুখে গম্ভীরতা বিরাজ করছে প্রবল ভাবে। রাস্তার দিকে তার দৃষ্টি স্থির। আবসার এসে কেবিনে প্রবেশ করলেও তার মধ্যে কোনোরূপ হেলদোল দেখা দিলো না। সে যেনো টেরই পায়নি কিংবা সেদিকে তাকানোর ইচ্ছা তার নেই। শুভ্রতার মনোযোগ নিজের দিকে টানার জন্য গলাখাকারি দিতেই শুভ্রতার শান্ত কণ্ঠ,

~ডিভোর্স পেপার রেডী হয়েছে?

আবসার চুপ করে করুন দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন মেয়ের দিকে। ভেবেছিলো শুভ্রতা এতদিন পরে দেখা করতে এসেছে মানে সে তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে আর ডিভোর্স এর কথাও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেছে। আবসারের জবাব না পেয়ে শুভ্রতা বাবার দিকে তাকালো। বুকে হাত গুজে জানালায় হেলান দিয়ে বিচক্ষণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দাড়িয়ে রইলো।

~এতদিন পর দেখা। অন্তত “কেমন আছি” তাও জানতে চাইলি না?

শুভ্রতা হাসলো। এ হাসিতে তাচ্ছিল্যভাব স্পষ্ট। টেবিলের থেকে পেপার ওয়েটটা হাতে নিয়ে ঘুরাতে ঘুরাতে বললো,

~দিব্যি নিজের দু পায়ে দাঁড়িয়ে আছেন, কথা বলছেন, এমনকি দুপুরে যে আয়েশ করে আমার মায়ের রান্না করা খাবার খেয়েছেন তার চিহ্ন আপনার হাতের হলদে ভাবটা জানান দিচ্ছে। জানান দিচ্ছে আপনি ভালো আছেন। এসব দেখেও অকারণে কেউ কেনো জিজ্ঞেস করবে আপনি ভালো আছেন কি না?

শুভ্রতার কথায় থতমত খেয়ে গেলেন আবসার। মেয়ে তার খুব শান্ত হলেও বেশ কঠোর মনের। রেগে গেলে মানুষটার পরোয়া সে করেনা বললেই চলে। মাথা নুয়ে কিছু একটা ভেবে বললেন,

~সব সময় তো এসে আমার চেয়ারে বসো। আজ বসলি না যে মা?
~এই কোম্পানিতে আম্মুর ভাগ ৬০%। আপনার ৪০%। আম্মুর স্বামী বলে এই চেয়ারে আপনি বসেন। আপনার অ্যাসিস্ট্যান্টকে ডিভোর্স না দিলে আমার আম্মুর পক্ষ থেকে আমি ডিভোর্স পেপার পাঠাবো। আম্মুর সাথে আপনার ডিভোর্স হলে এই চেয়ারটা আমার আম্মুরই হবে। তখন আমি চাইলেই যখন তখন বসতে পারবো। আপনি ইতিকে ডিভোর্স না দিলে আম্মুকে আর এই চেয়ারকে হারানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিবেন।
~শুধু কি তোর আম্মুকে হারাবো? তোকে হারাবো না? তুই তবে আমার সাথে থাকবি?

আবসার হাসি মুখে বললো। এখনও আশা করছে মেয়ে তার সাথেই থাকবে। দুনিয়া ওলোট পালোট হলেও মেয়েরা তার বাবার বিপক্ষে যেতে চায় না। শুভ্রতা পুনরায় জানালার দিকে ঘুরে দাঁড়াতেই বিকেলের রোদ তার চোখে মুখে লুটিয়ে পড়লো। সে চোখ পিটপিট করে আকাশের দিকে চেয়েই চোখ বন্ধ করে নিলো। বলল,

~আপনি আমাকে তখনই হারিয়েছেন যখন আপনি আমার আম্মুকে ছেড়ে পর নারীতে আসক্ত হয়েছেন। আফসোস তখন সেসব আমার চোখে পড়েনি। তবে এখন পড়েছে।

আবসার মনঃক্ষুণ্ণ হলেন। সে ভুলেই গিয়েছিলো মেয়ে তার মা পাগল। অন্য সব মেয়েদের মত সব পরিস্থিতিতেই বাবার সাথে থাকবে না। বাবা বা মা ভুল করলেও তার বিপক্ষে যাবে। শুভ্রতা একটা পেপার আবসারের দিকে এগিয়ে দিলো। আবসার তা নিয়ে প্রশ্ন করলেন,

~কি এটা?
~ডিভোর্স পেপার। আপনার আর ইতির। এটা সাইন না হলে আপনার বিবাহ বার্ষিকীতে আরেকটা পেপার পাবেন। আপনার আর আম্মুর ডিভোর্স পেপার।

আবসারের হাত থেকে পেপারটা পড়ে যেতেই শুভ্রতা সেদিকে তাকালো। কাগজ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে বাবার দিকে দৃষ্টি স্থির করলো। দেখলো আবসার বিস্মিত দৃষ্টিতে তার দিকেই চেয়ে আছে। সে দৃষ্টি উপেক্ষা করে শুভ্রতা বললো,

~যত দ্রুত সম্ভব সিগনেচার করে দিবেন।

দরজা খুলতেই ইতি হুড়মুড় করে শুভ্রতার ওপর পড়তে নিতেই শুভ্রতা সরে দাঁড়ালো। যার দরুন সে ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেল। কানে ভেসে এলো তার আর্তনাদ। আবসার হকচকিয়ে সেদিকে তাকালো। ইতি কোমড়ে হাত দিয়ে ব্যাথায় কুকিয়ে উঠছে। তার বুঝতে দেরি হয় না ইতি দরজায় কান লাগিয়ে তাদের কথা শুনার চেষ্টা করছিল। হটাৎ দরজা খুলায় পড়ে গেছে বুঝতেই সে লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো। দরজার হাতল ধরে দাড়িয়ে শুভ্রতা ইতির দিকে শান্ত দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। এক কথায় পর্যবেক্ষণ করছে ইতিকে। আবসারের দিকে চেয়ে তাচ্ছিল্যপূর্ণ হাসি দিয়ে ইতিকে ডিঙিয়ে বেরিয়ে এলো অফিস থেকে। ইতি বেশ মডার্ন মেয়ে। মুখে তার ভারী মেকআপ থাকেই। অন্যদিকে উমা সিম্পল একটা মেয়ে। তার দীর্ঘ তেইশ বছরের জীবনে সে তার মা কে কখনো প্রসাধনী ব্যবহার করতে দেখেনি। কারণ আবসারের পছন্দ না। সে উমাকে কড়াভাবে নিষেধ করেছে সে যেনো কোনো প্রসাধনী ব্যবহার না করে। স্বামীর খুশির জন্য সে কখনো চোখে কাজলের ছোঁয়া পর্যন্ত দেয়নি। আর সেই স্বামী আজ এমন নারীতে আসক্ত যে কিনা মেকআপ ছাড়া চলতেই পারে না। মানুষের মন আসলেই অদ্ভুত।
_______________________________

~তোর কি হয়েছে? ইদানিং দেখি বেশ চুপচাপ থাকিস।

তিলোত্তমার চিন্তিত স্বর। শুভ্রতা ফোন থেকে মাথা তুলে তার দিকে তাকালো। ঠোঁটে তার মন ভুলানো হাসি। তিলোত্তমার এই হাসিতে মন ভুললো না।

~হাসবি না শুভি। তোর রাগ, হাসি, কষ্ট সবই আমি বুঝি। বল না কি হয়েছে।

শুভ্রতা রেনুকে জিজ্ঞেস করলো,
~রেনু আপা, আম্মু কি বাসায়?
~না। জরুরী কাজে বাহিরে গেছেন।
~আজ পাস্তা খেতে ইচ্ছে করছে। বানিয়ে দিবে?

রেনু পাস্তা বানাতে চলে গেলো। যাওয়ার আগে দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে গেলো। আগামী এক আধ ঘণ্টা সে এদিকে আসবে না। শুভ্রতার পাস্তা খেতে চাওয়া মানেই সে একান্ত সময় চাইছে। এ কথার মানে শুধু রেনু আর শুভ্রতাই জানে। এটা তাদের কোড ওয়ার্ড।

~বাবা আরেকটা বিয়ে করেছে।

রেনুর যাওয়ার দিকে চেয়ে ছিল তিলোত্তমা। শুভ্রতার কথা কর্নপাত হতেই ফট করে তার দিকে তাকালো। বিস্ময়ে চোখ তার রসগোল্লার মত বড় হয়ে আছে। সে জানে শুভ্রতা তার সাথে এসব বিষয় নিয়ে মজা করবে না। একটু এগিয়ে বসে শুভ্রতার হাত ধরতেই শুভ্রতা ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো। এতোদিনে সে যেনো একটু ভরসার হাত পেলো। কি করছে, কি হচ্ছে সে জানে না। যা করছে তাতে তার হৃদয় ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। এক বিষাক্ত দহনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সে। কাঁদতে কাঁদতে সব জানালো শুভ্রতা তিলোত্তমাকে। তিলোত্তমা ছলছল চোখে শুভ্রতার দিকে চেয়ে আছে। এভাবে কান্না করতে সে শুভ্রতাকে কখনোই দেখেনি। সেদিন যখন শ্রেয়ার মা তাকে থাপ্পড় দিয়েছিলো তখন তার গাল লাল হয়ে ছিল কিন্তু তখনও কাদেনি শুভ্রতা। গায়ের আঘাতের থেকেও বেশি কষ্ট হয় যখন মানুষ মনে আঘাত পায়। গায়ের ঘায়ে মলম লাগালে, তার একটু যত্ন নিলে খুব শীঘ্রই শুকিয়ে যায়। তবে মনের ঘা এর ব্যাপারটা আলাদা। এই ঘা কোনো মলমেই শুকায় না। এই ঘায়ের যন্ত্রণা কখনো বয়ে চলতে হয় বছরের পর বছর আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে বয়ে চলতে হয় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।

~এখন কি করবি শুভ্রতা? আন্টিকে জানাবি?

আতকে উঠলো শুভ্রতা। চোখে তার স্পষ্ট ভয় দেখা যাচ্ছে। কি করে জানাবে সে এই কথা? মা সহ্য করতে পারবে? এই কষ্ট সইতে পারার মত?

~মাকে আমি এখন জানাতে চাইছি না তিলো। মা ভেঙে পড়বে।
~আন্টি যদি অন্য কোনো ভাবে জানতে পারে? যদি এই ফাইলটা তার হাতে পড়ে যায়? কিংবা আংকেল যদি আন্টিকেই ডিভোর্স পেপার দিয়ে বসে? কি করবি তখন?
~জানি না।

আবারো চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো তার। দরজায় খটখট আওয়াজ। রেনুর মিহি কণ্ঠ,

~আপামনি, খালাম্মা আইছে।
~আচ্ছা, ধন্যবাদ রেনু আপা।

রেনু হাসার চেষ্টা করলো। সে চলে যেতেই শুভ্রতা তিলোত্তমাকে বললো,

~বন্ধুমহলের কেউ যেনো এখন এই ব্যাপারে না জানে।
~কিন্তু…
~একটু সময় দে তিলো। আমি সব ঠিক করার চেষ্টাটা করতে চাই।
তিলোত্তমা সায় দিলো। তার মন বলছে আর কিছুই ঠিক হবে না। শুভ্রতাও জানে। তবে মনের শান্তির জন্য এই চেষ্টা। যদি ভুলক্রমে হলেও সব ঠিক হয়ে যায়?
___________________________________

~আপামনি জলদি নিচে আহেন। অচেনা কতগুলা বেডা বেডি বাড়ির ভিতরে ঢুকছে।

রেনুর কথায় অবাক হলো তিলোত্তমা আর শুভ্রতা। দৌড় দিলো নিচে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। গিয়ে দেখলো চারজন মেয়ে আর বেশ কয়েকজন গার্ড দাড়িয়ে। মেয়েগুলোর গায়ে একই রকম দেখতে শাড়ি আর ছেলেরা সব একই রকম দেখতে পোশাক পরিহিত।

~এরা কি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছে নাকি? সব এক ধরনের জামা পড়ে আছে যে?

তিলোত্তমার প্রশ্নে বিরক্ত হলেও প্রত্যুত্তর করলো না শুভ্রতা। সে বুঝতে পেরেছে এরা গার্ড। মেয়ে চারজনের হাতে শুভ্রতার পাঠানো সেই ব্যাগ এর মতো চারটি ব্যাগ। সে সকালে ২ টা পাঠিয়েছিল এখন তা চারটা হলো কি করে তাই ভাবছে সে। সোফার দিকে চোখ যেতেই দেখলো উমা আর চন্দ্র বসে আড্ডা দিচ্ছে। শুভ্রতার দিকে নজর পড়তেই উমা বললো,
~অবশেষে মেয়ের জামাইকে দেখতে পেলাম। যে কিনা এত বছর যাবত আমার মেয়ের জন্য পাগল হয়ে বসে আছে।

শুভ্রতা ভ্রু কুচকে মায়ের দিকে তাকালো। এত শীঘ্রই রাজি হয়ে গেলো! অন্য সব মা হলে তো মেয়েকে ডিস্টার্ব করার জন্য এই ছেলেকে বেধর কেলানি খাওয়াতো।

~শোনো বাবাজি, চিত্রার ছেলে বলে আমি সাথে সাথে রাজি হয়েছি। আমার মেয়েকে মোটেও কষ্ট দিবে না বলে দিচ্ছি।

চন্দ্র লাজুক হেসে ঘাড় কাত করলো। একটা মানুষ কতটা নির্লজ্জ হলে মেয়ের মাকে এসে সরাসরি জানায় যে সে তার মেয়েকে ভালবাসে? লোকটার সাহস আছে তা মানতেই হবে। উমা চন্দ্রের জন্য নাস্তা আনতে রান্না ঘরে গেলেন। যাওয়ার সময় রেনুকেও সাথে টেনে নিয়ে গেলেন। এই মেয়ে থাকলে নির্ঘাত উল্টা পাল্টা কিছু একটা বলে বসবে না তার বিশ্বাস নেই। উমা যেতেই চন্দ্রের ইশারায় মেয়েগুলো তাদের হাতের ব্যাগটা গুলো খুলে শুভ্রতার সামনে সাজিয়ে রাখলো। ব্যাগ ভর্তি শাড়ি দেখে শুভ্রতা অবাক হলো।

~এসব কি? এত শাড়ি এনেছেন কেনো?
~সকালে তুমিই তো শাড়ি, গিফটস আর লাস্ট গিফটের টাকা পাঠিয়েছো। ভাবলাম আরো শাড়ি চাই। এইটুকুতে মন ভরেনি। তাই এসব নিয়ে এলাম।
~আপনি কি পাগল চন্দ্র!
~এখানে পাগলামির কি আছে? তুমিই বলো শালীকা! বউকে ভালোবেসে কিছু দিলে এটাকি পাগলামির মধ্যে পড়ে বলো?

চন্দ্রের প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেল তিলোত্তমা। প্রথমে হ্যা বলতে নিয়েও সাথে সাথেই বললো,

~না, একদমই না। এটা তো ভালোবাসা।

শুভ্রতা চোখ গরম করে তাকালেই চুপ করে গেলো তিলোত্তমা। চন্দ্র হেসে বললো,

~এইগুলা আবার ফেরত দিলে আবারো ২ গুন বেশি করে ফিরিয়ে দিবো। এখন তুমি বলো, আরো লাগবে?

শুভ্রতা তৎক্ষণাৎ জবাব দিলো,

~এত শাড়ি দিয়ে আমি কি করবো? এইগুলা নিয়ে কি আমি কবরে যাবো?
~ইশ বউ! এসব কি ধরনের কথা? কষ্ট হয়তো আমার।

শুভ্রতা ধমক দিয়ে বললো,

~কি বউ বউ করছেন? কোন জন্মের বউ আমি আপনার?
~এই জন্মের বউ।
~বালের বউ। আমি আপনার বউ না। কখনো হবোও না।

চন্দ্রের রাগ হলো। চোখ দিয়েই যেনো শুভ্রতাকে ভষ্ম করে দিবে। শুভ্রতাকে টেনে নিজের পাশে বসিয়ে বললো,

~বউ তুমি আমারই হবে। এতে সন্দেহ নেই। অন্য কেউ আমাদের মাঝে আসার চেষ্টা করলে তার খবর আছে।

শুভ্রতা কেপে উঠলো। মানুষটা রেগে গেলে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। শুভ্রতা অনেকটা সাহসী হলেই এই লোকের রাগ দেখলে মুহূর্তেই মিইয়ে যায়। চন্দ্র উঠে দাড়ালো। শুভ্রতাকেও টেনে দাড় করালো। কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে বললো,

~আমার একটু পর একটা অপারেশন আছে। হাসপাতালে যেতে হবে। আসছি। নিজের খেয়াল রেখো।

তিলোত্তমার উদ্দেশ্যে বললো,

~এইযে হবু শালীকা আর ছোট ভাইয়ের বউ! আমার বউয়ের খেয়াল রাখবেন। সে যেনো নিজের প্রতি কোনো অযত্ন না করে।

চন্দ্র যেতেই তার পিছু পিছু সব গার্ডস চলে গেলো। তিলোত্তমা আর শুভ্রতা দুজনেই হা করে সোফায় বসে পড়লো। ছোট ভাইয়ের বউ মানে! মাহতাবের বউ! অন্যদিকে শুভ্রতা অবাক হয়ে আছে চন্দ্র তার কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়েছে বলে। দিন দিন লোকটা অসভ্য হয়ে যাচ্ছে। এত গুলা মানুষের সামনে তার কপালে চুমু দিয়ে গেলো। একটা মানুষ এতটা অসভ্য হয় কি করে? সে মনে মনে আওড়ালো,

~মিস্টার অসভ্য প্রো ম্যাক্স!

~~~
চলবে~
(গল্পে কার চরিত্রটা বেশি ভালো লাগে? অবশ্যই জানাবেন। হ্যাপি রিডিং~)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here