চিত্তদাহ লেখনীতে : শুভ্রতা আনজুম শিখা পর্ব ২৯

#চিত্তদাহ
লেখনীতে : শুভ্রতা আনজুম শিখা
পর্ব ২৯

🍂🍂🍂

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামছে। মাত্রই ভার্সিটি থেকে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো তিলোত্তমা। ঠিক তখনই তার ফোন কর্কশ শব্দে বেজে উঠলো। এমন অসময়ে কল আশায় অসম্ভব বিরক্ত হলো সে। চাপা স্বরে কয়েকটা গালিও দিলো। ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে স্ক্রিনে কারো নাম দেখতেই চোখ জোড়া তার কপালে উঠে, মুখটা হা হয়ে এলো। যেই মেয়েকে কেউ টেক্সট না করে কল দিলে বকতে বকতে তার কান ঝালাপালা করে দেয় সেই মেয়ে তাকে কল করছে। কোনো অঘটন ঘটেছে কিনা ভাবনায় আসতেই তিলোত্তমা তৎক্ষণাৎ কল রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে শুভ্রতার শান্ত কণ্ঠ,

~আন্টির কাছে ফোনটা দে। আর তুই কোনোমতে নিজের চুল আঁচড়া, রেডী হ।
~কেনো?

শুভ্রতা জবাব দিলো না। তিলোত্তমা ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে চিরুনিটা নিয়েই মায়ের কাছে দৌড়ে গেলো। হাপাতে হাপাতে বললো,

~শুভি কল দিয়েছে। তোমাকে দিতে বললো।

তমা ফোনটা নিয়ে কানে রাখলেন। মনোযোগ দিয়ে শুনলেন শুভ্রতার কথা। কি বলছে টা জানার জন্য উৎসুক চোখে চেয়ে আছে তিলোত্তমা। এতক্ষণে চুল বাঁধা শেষ। ফোনে কথা শেষে তমা শুধু এইটুকুই বললেন,

~আচ্ছা। কিন্তু যত জলদি সম্ভব ওকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে যাস।

ফোনটা তিলোত্তমার হাতে ধরিয়ে বললেন,

~শুভ্রতা বাইরে অপেক্ষা করছে। জলদি যা।

সবকিছু তিলোত্তমার মাথার ওপর দিয়ে গেলো। বেকুবের মতো একবার মা তো একবার ফোনের দিকে তাকাতে লাগলো। তমা ফের তাড়া দিতেই দরজার কাছ থেকে জুতা হাতে নিয়েই দৌড় দিল তিলোত্তমা। বাইরে এসে জুতা পড়তে পড়তে রাস্তার দিকে তাকালো। শুভ্রতার কালো গাড়িটি দাড় করানো। নিশ্চিত ড্রাইভার আনেনি। আনলে অন্য গাড়িতে আসতো। এই গাড়িটা কাউকে চালাতে দেয় না সে। ধুপ ধাপ পা ফেলে গাড়ির কাছে যেতেই ফ্রন্ট সিটের ডোর খুলে দিলো শুভ্রতা। তিলোত্তমা ধপ করে বসে দরজা লাগিয়ে গাল ফুলিয়ে বসে রইলো। শুভ্রতা তার দিকে একবার চেয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে বললো,

~অকারণে গাল ফুলিয়ে আছিস কেনো?
~মাকে কি বলে বুঝ দিস রে তুই? আমি বললে তো এক বলায় জীবনেও রাজি হয় না। দিন ভর ঘ্যানর ঘ্যানর করি দ্যান রাজি হয়। আর তুই বলতে না বলতেই রাজি হয়ে গেল। তোর সাথে কোথাও গেলে তো সে এটাও বলে না “দ্রুত বাড়ি আসিস”।
~আর ইউ জেলাস?
~অবশ্যই আমি জেলাস।

শুভ্রতার ঠোঁটে মুচকি হাসি লক্ষ্য করলো তিলোত্তমা। মেয়েটা হাসছে। এই হাসি দেখে তিলোত্তমার মনটাও ফুরফুরে হয়ে গেলো। সিটে দু পা উঠিয়ে আরাম করে বসে বললো,

~বাই দ্যা ওয়ে, যাচ্ছি কোথায়?
~আমার মামা বাড়ি।
~কেনো?
~গেলেই তো দেখতে পাবি।
_______________________________

শুভ্রতার মামা বাড়িতে বড় ফ্রেমে টাঙ্গানো অরণ্যের ছবি দেখে হা করে তাকিয়ে আছে তিলোত্তমা। অরণ্য শুভ্রতার মামাতো ভাই সে জানতো না। বন্ধুমহলের কারোরই জানা নেই। শুভ্রতা তিলোত্তমা কাধ দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বললো,

~সারপ্রাইজটা কেমন লাগলো?
~এটা মোটেও সারপ্রাইজ নয়। একে শক দেওয়া বলে।

শুভ্রতা খিল খিল করে হাসছে। তিলোত্তমা অবাক হয়ে বললো,

~তুই আর অরণ্য ভাইয়া কাজিন। নুর জানে?
~না(শুভ্রতা)
~কেনো?(তিলোত্তমা)
~ভাইয়া মানা করেছে। একেবারে বিয়েতে সারপ্রাইজ দিবে বললো। আমার থেকে ওয়াদা নিয়ে রেখেছে নয়তো অনেক আগেই বলতাম।

অরণ্য এসে শুভ্রতার মাথায় এক গাট্টা মেরে বললো,

~কিরে বুড়ি? এই সময় আমাদের বাড়িতে কি?

শুভ্রতাও অরণ্যের হাতে এক চিমটি বসিয়ে বললো,

~আমার মামার বাড়ি, যখন ইচ্ছে আসবো তাতে আপনার কি!

অরণ্য কিঞ্চিৎ হাসলো। পাশে তিলোত্তমার দিকে নজর পড়তেই লাফিয়ে উঠলো। সোফার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে বললো,

~ও এখানে? এই তুই না আমাকে ওয়াদা করেছিলি আমি না বলা পর্যন্ত বলবি না কাউকে।
~আমি বলেছিলাম নূরকে বলবো না। ও তো তিলোত্তমা।
~ও যদি নূরকে বলে দেয়?
~আমি বলবো না। (তিলোত্তমা)

অরণ্য সোফার আড়াল থেকে চোখ দুটো বের করে বললো,

~সত্যি? ওয়াদা?

তিলোত্তমা মাথা নাড়াতেই অরণ্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে সোফায় এসে বসলো।

~কি খাবে বলো। শালীকা প্রথম আমাদের বাসায় এলে।
~এসব তামঝাম রাখেন ভাইয়া। আমার কথা শুনুন। বৈশাখের দিন আমরা সব বান্ধবী ঘুরতে যাচ্ছি। ছবি তুলে দিতে লোক লাগবে, আপনি কি যাবেন?
~যাবি কোথায়?
~রমনা, টিএসসি।
~পাগল নাকি? বৈশাখের দিন রমনায় যাবি? ভিড়ের ঠেলায় তোদের খুজে পাওয়া যাবে? যেতে চাইবি ডানে আর ধাক্কা খেতে খেতে চলে যাবি বামে। দেখা যাবে পরে রমনার লেকে তোদের পাওয়া গেলো। অচেনা মানুষ এর গায়ের সাথে গা ধাক্কা লাগবে। ছি! অন্য কোনোদিন প্ল্যান কর।

তিলোত্তমা আর শুভ্রতা একে অপরের দিকে তাকালো। এই এক বিষয় তাদের ভাবনায়ও ছিল না।

~১২ তারিখ চল। আমি ফ্রী আছি।
~আচ্ছা। এখন তাহলে যাই।
~তুই কি এই কথা বলতেই এসেছিলি?
~হ্যা। আর নয়তো কি?
~এই টুকু কথা তো ফোনেও বলা যেতো। কষ্ট করে বাড়ি আসা লাগলো কেনো?
~ফোনে কথা বলতে ভালো লাগে না।
~টেক্সট করতি।
~আপনার টাইপ করতে অনেক সময় লাগে।

অরণ্য বোকা চাহনিতে চেয়ে রইলো বোনের দিকে। কপাল চাপকে শুভ্রতাকে বললো,
~এসেছিস যখন তবে আরো পরে যা।

শুভ্রতা কপাল কুচকালো। জিজ্ঞেস করলো,
~কেনো?
~বাড়িতে মেহমান আসবে। ফুপিও তো আসবে বলেছিলো। তুই যেতে যেতে দেখবি উনি এখানে এসেছে। থাক তুই, ফুপি এলে এক সাথেই যাস।
~আমি তবে রিকশা নিয়ে চলে যাচ্ছি।

তিলোত্তমা যেতে নিলে বাঁধ সাধলো শুভ্রতা। তিলোত্তমার মাকে বলেছে সে নিজ দায়িত্বে বাড়ি দিয়ে আসবে। এখন একা যেতে দেওয়া মানে তার মুখের কথার দাম রইলো না। এমনটা সে হতে দিবে না। কথা দিলে কথা রাখাটা তার জন্য বেশ জরুরী।

~আমি দিয়ে আসবো। আমার সাথেই থাক।
~হ্যা। তুমি যাচ্ছো কেনো? তুমিও শুভ্রতার মতোই আমার বোন। ভাইয়ের বাসায় এসেই কি চলে যাওয়া যায় নাকি? বসো তো!

তিলোত্তমা আর উপায় না পেয়ে বসে রইলো। ফিসফিস করে শুভ্রতাকে বললো বেশি দেরি না করতে। শুভ্রতা চোখ দিয়ে আশ্বস্থ করলো।
__________________________________

অরণ্যের সাউন্ড বক্সে ফুল ভলিউমে গান বাজাচ্ছে শুভ্রতা। বসে থাকতে থাকতে দুই বান্ধবী বোর হয়ে গেছে। এখন মন ভালো করার এই এক পন্থা। কান চেপে রুমের মাঝে পায়চারি করছে অরণ্য। এদের আটকে রাখার জন্য এখন তীব্র আফসোস হচ্ছে তার। ইতিমধ্যে নিজেকে হাজার বার গালি দেওয়াও শেষ। ঐদিকে শুভ্রতা আর তিলোত্তমা অরণ্যের ফোন নিয়ে ইউটিউবে গুতাগুতি করছে। একবার লুঙ্গি ড্যান্স তো একবার ঢিংকা চিকা গান ছেড়ে গানের সাথে তাল মিলিয়ে গান গাইছে। অরণ্য ঘর থেকে যেতে চাইলেও যায়নি। এই মেয়ে যেই পাজি ঘরের ১২ টা বাজিয়ে দিবে নাচতে নাচতে। সে বসে আছে দেখে ওরা এক কোণে ফোন হাতে বসে আছে। তখনই দরজা কিঞ্চিৎ ফাঁক করে ঘরে উকি দিয়ে তাকালো ময়না খালা। অরণ্যের বাড়িতে কাজ করে বছর খানেক। বত্রিশ পাটি দাত বের করে হেসে অরণ্যর কাছে এসে জানালো তার মেহমান এসেছে। অরণ্য বললো তাদের উপরে নিয়ে আসতে। কয়েক মিনিট পরেই ঘরে আগমন ঘটলো চন্দ্র, মাহতাব আর রাত্রির। গানের আওয়াজে ওদের প্রাণ পাখি উড়ে যায় যায় ভাব। বুক খানা দুরু দুরু করছে। চন্দ্র কান চেপে ভ্রু কুঁচকে শুভ্রতাদের দিকে তাকালো। শুভ্রতারা এখনও ওদের খেয়াল করেনি। শুভ্রতা শুয়ে ফোন স্ক্রল করে গান সিলেক্ট করছে আর তিলোত্তমা উকি দিয়ে ওকে গান সিলেক্ট করতে সাহায্য করছে। দুজনই ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে তার ওপর অরণ্যের সানগ্লাস পড়া। ট্রেন্ডিং ভুত সেজেছে। হটাৎ গান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুভ্রতা “এই কে রে!” বলে মাথা ঘুরিয়ে চন্দ্রকে দেখেই হুড়মুড় করে উঠে বসলো। পাশেই মাহতাব দাড়ানো। মাহতাবকে দেখতেই তিলোত্তমা লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে গেলো। তৎক্ষণাৎ চশমা খুলে ওড়না ঠিক মতো গায়ে জড়ালো দুজনে। মাহতাব তিলোত্তমার দিকে ঠোঁট চেপে হাসছে। আর চন্দ্র কপালে ভাঁজ ফেলে শুভ্রতার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। যেভাবে সাউন্ড বক্সের সামনে শুয়ে ছিল। কেউ বলবে এই মেয়ের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে! রাত্রির হাসির আওয়াজে ধ্যান ভাঙ্গে ওদের। শুভ্রতা আর তিলোত্তমা দুজনের মুখ লজ্জায় লাল বর্ণ ধারণ করেছে। চন্দ্র গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

~আপনার না মাইগ্রেইনের সমস্যা? এত জোড়ে গান বাজাচ্ছেন মাথা ব্যাথা করবে না? আর অরণ্য! তুই না নিউরোলজিস্ট! তোর সামনে এভাবে গান ছেড়ে বসে আছে আর তুই হাত পা গুটিয়ে এক কোণে বসে আছিস!
~আহহা ভাইয়া! এত বকছো কেনো? একটু গানই তো শুনেছে। (রাত্রি)
~গান শুনেছে সমস্যা নেই। এতো লাউডে শুনার কি দরকার? মাথা ব্যাথা উঠবে। আর এই মেয়ে তো ওষুধও খায় না। পরে জ্বর উঠবে।
~উঠলে উঠবে তাতে আপনার কি? রাত জেগে কি আপনি আমার মাথায় জল পট্টি দিবেন নাকি? সুযোগ পেলেই খালি বকেন। হিটলার কোথাকার! সরুন সামনের থেকে, যেতে দিন।

বলেই শুভ্রতা হন হন করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। পেছন পেছন তিলোত্তমাও গেলো। আজ একটা বিষয় খেয়াল করেছে শুভ্রতা। মানুষটা সবার সামনে তাকে আপনি করে বলে আর একান্তে তুমি সম্বোধন করে। এমনটা কেনো করে সে? সবার সামনে নিজের ভালোবাসা প্রমাণ করতে ভয় পায় নাকি? সময় পেলে একদিন জিজ্ঞেস করবে।
________________________________

উমা এসেছেন অনেকক্ষণ হলো। অনিকা, উমা আর চিত্রা খোশ গল্পে মশগুল। তিলোত্তমা আর শুভ্রতা এক সোফায় বসে আছে। রাগে গা রি রি করছে। ময়না এসে জানালো শুভ্রতা আর তিলোত্তমাকে অরণ্য ছাদে ডেকেছে। শুভ্রতা গেলো না। গাল ফুলিয়ে বসে রইলো। হাত টেনে তিলোত্তমাকেও পাশে বসিয়ে রাখলো। তখনই চন্দ্রের মেসেজ এলো,

“দ্রুত ছাদে আসো। নয়তো সবার সামনে থেকে কোলে করে নিয়ে আসবো।”

শুভ্রতা ঠোঁট বাকালো। এসব কথার কথা। সত্যিই কি আসবে নাকি কোলে নিতে! এত সাহস কারো আছে নাকি! সাহস এর কথা বাদ মানুষ লজ্জায় পড়েও তো সবার সামনে কোলে নিবে না। এসব ভাবনার মাঝেই হুট করে চন্দ্র এসে শুভ্রতার সামনে দাঁড়ালো। শুভ্রতা মাথা তুলে তাকাতেই সে বিস্তর এক হাসি উপহার দিলো তাকে। কিছু বুঝে উঠার আগেই চন্দ্র শুভ্রতাকে কোলে নিয়ে নিলো। শুভ্রতাসহ সকলের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও ছাড়লো না চন্দ্র।

~কিরে? ওকে এভাবে কোলে তুললি কেনো? (উমা)
~আর বলো না আম্মু। তোমার মেয়েটা আস্ত এক আলসে। উপরে যেতে বলায় বললো কোলে করে নিয়ে যেতে, সে নাকি পায়ে হেঁটে যেতে পারবে না। তাই আমিও বাধ্য ছেলের মতো নিতে আসলাম।

মায়ের অবাক চাহনী। শুভ্রতার এদিকে লজ্জায় মরি মরি অবস্থা। এভাবে এসে সত্যিই কোলে তুলে নিবে তা কস্মিনকালেও ভাবেনি সে।

~তোমরা গল্প করো আমি তোমাদের মেয়ে নিয়ে চললাম।

চন্দ্র শুভ্রতাকে কোলে নিয়েই বড় বড় পা ফেলে সিড়ি ভেঙে উপরে চলে গেলো। এদিকে তিলোত্তমাকে অবাক হয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে মাহতাব তিলোত্তমার কাধ ঘেসে দাড়িয়ে ফিসফিস করে বললো,

~তোমারও কি কোলে চড়ার ইচ্ছে জেগেছে নাকি? নিজে থেকে যাবে নাকি আমিও কোলে নিবো?

তিলোত্তমা বিস্মিত চোখে মাহতাবের দিকে তাকাতেই মাহতাব হেসে ওর দিকে হাত বাড়াতেই তিলোত্তমা লাফ দিয়ে দু কদম দূরে চলে গেলো।

~আস্তাগফিরুল্লাহ! লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।

বলেই সিড়ির দিকে ছুট লাগলো। মাহতাব পারে না এখানেই গড়াগড়ি দিয়ে হাসে।
___________________________________

ছাদে এনে শুভ্রতাকে নামাতেই শুভ্রতা ফুঁসে উঠলো। চেঁচিয়ে বললো,

~আপনি আসলেই একটা নির্লজ্জ ব্যক্তি। এভাবে সবার সামনে কোলে করে নিয়ে আসলেন লজ্জা করলো না! ছি! ছি! বলেও এসেছেন একটা ঢাহা মিথ্যে কথা। আমি এখন মায়ের সামনে কি করে যাবো!

~আম্মু তো জানেই তার মেয়ের জামাই তার মেয়ের জন্য কতটা পাগল। তিনি কিছু মনে করবে না। খবর নিয়ে দেখো গিয়ে আমার শ্বশুড়ও এককালে তাকে এভাবেই কোলে নিয়ে ঘুরেছে।
~আপনি কি পাগল চন্দ্র! মুখে কিছু বাধে না আপনার? আমি আপনার বউ না। আমার পিছু ছাড়ুন দয়া করে প্লীজ।

রাগে গজ গজ করতে করতে রাত্রির পাশে গিয়ে দাঁড়ালো শুভ্রতা। তিলোত্তমা এসে ওদের কাছেই গেলো। তখনই গিটারের টুংটাং ধ্বনিতে সেদিকে তাকালো ওরা। ওদের তাকাতেই চন্দ্র গান ধরলো,

হতে পারে কোনো রাস্তায়
কোনো হুড তোলা এক রিকশায়
আমি নীল ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে, তুমি দেখলে না
রোদে পোড়া এ রোমিও চেহারা
তুমি বুঝলে না আমার ইশারা
মন বলে যদি থামতে, তুমি থামলে না

তোমার জুলিয়েট হাসি হেসে
যদি ডাকতে ভালোবেসে
আমি তোমার চোখে তাকানোর সাহস পেতাম না
আমার জড়সড় এই শরীরে
তোমার হাওয়ায় লাগছে ফুরফুরে
প্রেম নাকি পাগলামি, বলতে পারব না

লোকে পাগল বলুক, মাতাল বলুক
আমি তোমার পিছু ছাড়ব না
লোকে পাগল বলুক, মাতাল বলুক
আমি তোমার পিছু ছাড়ব না
তোমার পিছু ছাড়ব না

পুরোটা গান চন্দ্র শুভ্রতার চোখের দিকে চেয়েই গেয়েছে। গান শেষে শুভ্রতাকে চোখ টিপ মারতেও ভুললো না। চন্দ্রের কাজে সবাই শুভ্রতার দিকে চেয়ে ঠোঁট চেপে হাসছে। শুভ্রতা পড়েছে ফ্যাসাদে। এই লোক আগে দেখা হলেও কথা বলতো না আর এখন রীতিমতো ফ্লার্ট করে। এমন না করলে যেনো তার পেটের ভাত হজমই হয় না।
~~~
চলবে~
(ইদানিং আর লিখতে ইচ্ছা করে না। একবার লেখি আবার কেটে নতুন করে লেখি। মনে হয় আপনাদের গল্পটা পছন্দ হচ্ছে না। কমেন্টস করে অবশ্যই জানাবেন গল্পটা কেমন হয়েছে। হ্যাপি রিডিং~)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here