না_চাইলেও_তুমি_আমার পর্ব ১৩+১৪

#না_চাইলেও_তুমি_আমার💞
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পার্ট_১৩




আজ বিকেলে আমি আর মা, সাথে কাব্য আর কাব্যের মা চারজন মিলে শপিংমল গেলাম,আজ বিয়ের কিছু কেনা কাটা করব। একটা কালো খয়েরী লেহেঙ্গার দিকে চোখ পড়লো, খুবই সুন্দর দেখতে। কিন্তু কিছু বললাম না উনাদের সাথে অন্য কাপড় গুলো দেখতে লাগলাম, এর মাঝে কাব্য হঠাৎ বলে উঠলো,,,আর কাউকে কিছু দেখতে হবে না।কাব্যের মা বলল,,,কেন পছন্দ করেছিস কিছু।কাব্য বলল,,,হ্যা। কাব্য গিয়ে ওই কালো খয়েরী লেহেঙ্গা টা নিয়ে আসলো, সবাই খুব পছন্দ করলো।

রাতের দিকে বিছানায় শুয়ে আছি এর মাঝে ফোন বেজে উঠলো তাকিয়ে দেখি কাব্য, মুখে অটোমেটিক হাসি চলে আসলো ফোন রিসিভ করে বললাম,,,হ্যালো।ওই পাশ থেকে মিষ্টি কন্ঠে বলল,,,,
– কি করছো
– ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি
– তুমি কিভাবে ঘুমাচ্ছো আমার তো খুশিতে ঘুমই আসছে না আর কিছু দিন পর তুমি আমার পাশে থাকবে
– হয়েছে তোমার, এবার বল তুমি কি করছো
– কি আর করব তোমার কথা ভাবছি
– আহা কি রোমান্টিক কথা
– আমি যে কতটা রোমান্টিক তোমার কোনো ধারণাও নেই
– ওকে বায় বায় বায় বায় বায়
– আরে তুমি রোমান্সের কথা শুনলে শুধু বায় বায় কর কেন
– বায় বায় বায় বায়

বলেই ফোন কেটে দিলাম।পাগল ছেলে পুরো।এভাবে কেটে গেলো আর কিছু দিন, সব কিছু খুব ভালো চলছে, এক সুন্দর রাজ্যে আমি ঘুরছি আজ কাল যেখানে ভালোবাসা আর ভালো লাগারা আমাকে ঘিরে ধরে, এতো আনন্দ কি বেশী দিন ঠিকবে আমার,যদি কাব্যকে হারিয়ে ফেলি ভাবলেই ভিতরটা কেপে উঠে না আমার পক্ষে সম্ভব না কাব্যকে ছাড়া থাকার।

নদীর পাড়ে আমি আর কাব্য বসে আছি, আমি কাব্যের কাধে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছি আর সামনের এই সুন্দর নদীর বাতাস অনুভব করছি। কাব্য হঠাৎ বলে উঠলো,,, ইতি।আমি শুধু বললাম হুম।তারপর কাব্য বলল,,,তোমার কি হয়েছে মন খারাপ এমন চুপ হয়ে আছো।আমি বললাম,,, না ভয় করছে।
– কিসের ভয়
– তুমি কি কখনো আমাকে ছেড়ে অন্য কারও সাথে চলে যাবে
– কি হঠাৎ এমন কথা বলছ কেন
– বল তুমি কি আমাকে কখনো ছেড়ে চলে যাবে আমি একদম সহ্য করতে পারব না,তোমার যদি অন্য কাউকে ভালো লাগে আমাকে বলে দেও তবু আমার ফিলিংস এর সাথে খেলা কর না
– চুপ আজে বাজে কথা বলা বন্ধ কর আমি কখনো এমন কিছু করব না, যদি এমন কাজ তুমি কর
– হুম করতে পারি, বাট আই এম নোট সিইওর, দেখা যাক

কাব্য আমার কথা শুনে রেগে তাকালো, আর বলল,,,,কি বললা মেরে একবারে আধমরা করে ফেলব আমাকে ছেড়ে যাবা তাই না, আমি যেতে দিলে তো যাবা।উনার এমন সিরিয়াস রিয়েক্ট দেখে খিলখিলিয়ে হেসে উঠলাম আর বললাম,,,তুমিও না এত সিরিয়াস হয়ে যাও মাঝে মাঝে যে কি বলব সরি মজা করেছি।উনি বলল,,,,আর কখন এমন মজা করবা না।আমি হেসে বললাম,,,,ওকে আর করব না।বলেই আবার কাব্যের কাধে মাথা রাখলাম।

রাতের দিকে কাব্যের সাথে কথা বলছি বায় বলে বললাম রেখে দিলাম বলেই রাখতে গিয়ে ফোনের ওপাশ থেকে একটা আওয়াজ ভেসে এলো কেউ বলল,কাব্য বেবি,,,,কথাটা শুনে আর ফোন কাটলাম না, কাব্য বলল,,রিদি।তারপর আর শুনতে পেলাম না ফোনটা কেটে দিল কাব্য।
ভিতরটা মনে হয় কেপে উঠলো, মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, ওই মেয়েটার কন্ঠ রিদি আপুর মনে হলো আর কাব্যও তো বলল রিদি। তার মানে কি। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ১১ টা বেজে ৪৯ মিনিট এতে রাতে রিদি কাব্যের রুমে কি করছে। উল্টাপাল্টা চিন্তায় মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে, আহ আর পারছি না একবার ফোন করব জিজ্ঞেস করব রিদি আপু ওখানে কি করছে, না ইশশ কি করব আমার তো আর শান্তি লাগছে না।

অনেক খন ধরে রুমে এদিক থেকে ওদিকে হাটছি, ফাইনালি আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে দেখে বললাম,,,,অফফফ ইতি রিলেক্স তুমি যা ভাবছো তেমন কিছু না হুম এমন কিছু না সব কিছু ঠিক আছে সব কিছু ঠিক আছে। নিজেকে ঝাড়া দিয়ে ঠিক করে নিলাম তারপর বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম চোখ বন্ধ করলাম মনে মনে শপথ নিলাম আর এই সব ভাববো না, কিন্তু না এই সব ভাবনা ঘুরে ফিরে চলে আসছে, সারাটা রাত ঠিক মতো ঘুমাতে পারলাম না।শরীরটাও খারাপ লাগছে।

সকালে খাবার টেবিলে গিয়ে বসলাম মা খাবার এগিয়ে দিল, খাবার নেড়েচেড়ে উঠে পড়লাম, মা আমার এমন অবস্থা দেখে বলল,, আরে কি হয়েছে তোর খাচ্ছি না কেন।আমি বললাম,,,ইচ্ছে করছে না মা।মা আমার কাছে এসে কপালে গালে হাত দিয়ে বলল,, তোর আবার এত জ্বর আসলো কেন হঠাৎ।
– জানি না
– চল রুমে চল
– না আমি ভার্সিটি যাব
– না আজ যাওয়ার দরকার নেই
– না মা আমি যাব
– আরে তোর জ্বর আরো বাড়তে পারে

মাকে বলে কোনো ভাবে ভার্সিটি গেলাম, কাব্যকে সামনে পেলেই কালে রাতের কথা জিজ্ঞেস করব, ওর মুখে না শোনা পযন্ত শান্তি পাচ্ছি না।তাই কাব্যকে সাত তলায় একটা ক্লাস রুমে ডাকলাম ওখানে আবার মানুষ কম থাকে, সাত তলা টা নতুন করা হয়েছে তাই মানুষ থাকে না।তাই কাব্যকে ওই ক্লাস রুমে আসতে বলেছি,আমি ক্লাসটার সামনে আসলাম এসে দরজা হালকা ধাক্কা দিতেই নিজের চোখে যা দেখলাম তা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না,দুই চোখ যেন বিশ্বাসই করতে চাইছে না।রিদি আপু কাব্যকে জরিয়ে ধরে রেখেছে আর কাব্য তার মাথায় হাত দিয়ে রেখেছে,ব্যসসস আর না আর সম্ভব না আর কিছু দেখার শক্তি আমার মাঝে নেই, রুমে না ঢুকে বাহিরের দিকে হাটা দিলাম চারপাশ মনে হয় ঝাপসা হয়ে আসছে, ভিতর টা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে, শ্বাস নিতে পারছি না, সামনে হিয়াকে আমাকে দেখে আমার কাছে এসে কি যেন বলছে কিন্তু কোনো কথাই আমার কানে আসছে না কিছু শুনতে পারছি না, হঠাৎ চোখ ঝাপসা হয়ে চোখ বন্ধ হয়ে গেল।

চোখে খুলে নিজেকে, নিজের রুমে আবিষ্কার করলাম।পাশে মা বসে আছে তার পাশে কাব্য।মা আমাকে দেখে বলল,,,তোর চোখ খুলেছে কতবার বললাম দরকার নেই যাওয়ার আমার কথা তো শোনার প্রয়োজন বদ্ধ করিস না কখন।মাকে বললাম,,,মা আমি ঠিক আছি এখন চিন্তা কর না।মা বলল,,,দেখতেই পাচ্ছি, ডাক্তার মেডিসিন দিয়ে গেছে আমি সুপ রান্না করছি খেয়ে ঔষধ খেয়ে নিবি থাক আমি আসছি।বলেই মা চলে গেল, এখন আমি কাব্যের দিকে তাকালাম চোখ দুইটা লাল হয়ে আছে মুখে গম্ভীর ভাব, উনি এবার আমাকে বলল,,,তুমি এমন কেন নিজের একটু খেয়াল রাখতে পার না নাকি আমাদের চিন্তায় ফেলতে তোমার ভালো লাগে।

উনার দিকে তাকিয়ে তখনকার কথা ভাবতে লাগলাম আদৌও কি এই মানুষটা আমাকে ধোঁকা দিচ্ছে, না উনার এই চোখে যে ভালোবাসা ছাড়া আমি আর অন্য কিছু দেখতে পাই না। উনি আমাকে বললেন,,,কি হলো কি ভাবছো।
– না কিছু না
– তোমার এমন হঠাৎ এত জ্বর আসলো কিভাবে
– জানি না
– যখন এত জ্বর ছিল তাহলে ভার্সিটি যাওয়ার কি দরকার ছিল
– আমি ভেবে ছিলাম সবার সাথে থাকলে ভালো লাগবে
– কিন্তু আমাকে তো জানাতে পারতে, আচ্ছা তুমি আমাকে ওই ক্লাস রুমে ডেকে ছিলে কেন, আমি তো ওখানেই ছিলাম কিন্তু তুমি আসলে না, তারপর হিয়া আমাকে ফোন করে বলে তুমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছো।
– তেমন কিছু না এমনি কথা বলার জন্য ডেকে ছিলাম,তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করেছিল

উনি সামান্য হেসে উনার হাতের মুঠোয় আমার একটা হাত নিলো,নিয়ে হাতে আলতো করে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিল।আমিও উনার ভালোবাসার স্পর্শ টা চোখ বন্ধ করে অনুভব করলাম।

রাত ৯ টা বাজে আমার এই ডেভিলটা এখনো আমার পাশে বসে আছে, আমি উনার থেকে চোখ সরিয়ে ফেসবুকিং করছি উনি হঠাৎ রেগে বললেন,,,ফোনে কি করছো তুমি।আমি বললাম
– ফেসবুকে আছি
– ও ফোনটা দাও
– কেন
– যখন দিতে বলেছি এত কথা বলছো কেন ( ধমকে)

আমিও আর কিছু না বলে ফোনটা দিলাম, আমার ফোনে টিপাটিপি করে ফোনটা দিয়ে বলল,
– এখন তুমি খাবে তারপর ঔষধ খাবে তারপর ঘুমাবে।

বলেই বাহিরে চলে গেল, আমি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে আমার চোখ চড়কগাছ হয়ে গেছে।আমার ফেসবুক আইডির রূপই বদলে গেছে, আমার সব গুলো ক্লাসমেট যারা ছেলে ছিলো সবাইকে আনফ্রেন্ড করে দিয়েছে শুধু মেয়েরা আছে।আর আইডিতে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস ম্যারিড দেওয়া।উনি কিছুখন পর খাবার নিয়ে আমার কাছে এসে বসলেন, আমি উনার দিকে রেগে তাকালাম আর বললাম,,,,তুমি এটা কি করলে আমার ক্লাসমেট গুলোকে আনফ্রেন্ড কেন করে দিলে। উনি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলল,,, আমার ইচ্ছে করেছে তাই, এখন খাবার খাও।রাগ দেখিয়ে বললাম,,, খাব না।

উনি রাগ দেখিয়ে বলল,,,আমাকে রাগীও না চুপচাপ খাও,আমি অন্য দিকে থেকে উনার দিকে ঘুরে বলতে গেলাম,,, আমি খা। বলার আগেই আমার মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিল আমি পুরো বেকুব হয়ে তাকিয়ে আছি।উনি আমার এমন তাকানো দেখে মুচকি হেসে দিলেন।
#না_চাইলেও_তুমি_আমার💞
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পার্ট_১৪




এখন রাত ১২ টা বাজে, উনি ১০ টার দিকে চলে গেছেন, শুয়ে থাকতে থাকতে আমি ক্লান্ত তাই উঠে বারান্দায় গেলাম,, বাহিরে আকাশে এক টুকরো চাঁদ তার আলো দিয়ে চার পাশের অন্ধকার কাটিয়ে দিয়েছে আকাশ সচ্ছ কাচের মতো পরিষ্কার, আকাশে আজ তারাদের আসর জমেছে, আর বাতাসে কিছুটা শিতলতা, অসম্ভব সুন্দর একটা পরিবেশ।

মনে মনে ভাবতে লাগলাম আজ ক্লাস রুমে যা দেখে ছিলাম তা কি আদৌও সত্য ছিল, হয় তো অন্য কোনো কারণে, হয় তো আমি যা ভাবছি তা ভুল। না কাব্য এমন করতে পারে না।এর মাঝে ফোন বেজে উঠলো খুশি হয়ে ফোন হাতে নিলাম ভাবলাম হয় তো কাব্য কিন্তু না আমি নাম্বার টা চিনি না, রিসিভ করলাম ওপাশ থেকে বলল,,,
– হ্যালো
– জ্বি কে বলছেন
– আমি রিদি
– আপনি কেন এত রাতে আমাকে ফোন করেছেন
– আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে কাল অন্য কোনো জায়গায় দেখা করতে পারি
– না সরি আমি কোনো জায়গায় আপনার সাথে দেখা করতে চাই না
– প্লিজ ইতি প্লিজ একবার দেখা কর আমার জীবনের ব্যাপার
– কি, কি বলবেন এমন
– কাল আসলেই বলব
– ঠিক আছে।

রিদি আপু এমন কি বলবেন, ওফফফ আবার টেনশন কিছুখন আগেই একটা চিন্তা ভাবনা ভুলে গিয়ে ছিলাম ।

পরের দিন আর ভার্সিটি যায়ই নিই, মা অফিসে যাওয়ার পর আমিও বেড়িয়ে পড়লাম, ওই জায়গায় গিয়ে দেখি রিদি আপু দাড়িয়ে আছে, আমি উনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম,,
– বলুন কি বলবেন
– ইতি প্লিজ তুমি কাব্যকে বিয়ে কর না প্লিজ
– কি???? কেন
– কাব্য তেমাকে বিয়ে করলে আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে

উনার কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, উনার দিকে রেগে তাকিয়ে বললাম,,,
– কেন আপনার জীবন নষ্ট হবে কেন, আমি জানি আপনি কাব্যকে পছন্দ করেন তাই বলে কি আমি কাব্যকে বিয়ে করব না ও আমাকে ভালোবাসে আর আমি ওকে। আমার আর কোনো কথা বলার ইচ্ছে নেই আপনার সাথে
– প্লিজ এমন কর না আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে
– কি বলতে চান আপনি

উনি কিছু ছবি আমার দিকে এগিয়ে দিলেন, ছবি দেখে আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।নিজের চোখকে বিশ্বাসই করাতেই পারছি না, আমার হাত কাপতে লাগলো হ্রদপিন্ড মনে হয় হ্রদপিন্ডের জায়গায় নেই জায়গাটা শূন্য হয়ে গেছে। ছবিতে উনারা এতটা কাছাকাছি আর দেখতে পাচ্ছি না। রিদি আপু বলে উঠলেন,,,,,
– দেখেছো কাব্য আর আমি শুধু বন্ধু ছিলাম না কাব্য এখন আমাকে ছেড়ে তোমাকে বিয়ে করতে চলেছে আমার জীবনটা নষ্ট কর না

উনাকে আর কিছু না বলে উনার সামনের থেকে চলে আসলাম, কেমন যেন লাগছে,কে যেন ধারালো ছুরি দিয়ে ভিতরটাকে কেটে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে।শ্বাস নিতে পারছি না গলায় কিছু একটা আটকে গেছে।

আজ তিন দিন যাবৎ ভার্সিটি যাই না, সারাক্ষণ রুমে দরজা আটকে রুমের লাইট অফ করে বসে থাকি এই অন্ধকারকে আর ভয় লাগে না, এই আধার একাকিত্বই যেন আপন হয়ে গেছে, এই কিছু দিন ধরে কাব্যের সাথে দেখা হয় নিই আর কথাও হয় নিই।

কিছুখন আগে মা খেতে ডেকে গেছে আমি যাই নিই।মা যদি জানতে পারে তাহলে কি হবে। কাব্য কিভাবে এমন টা করলো।

পরের দিন মা অফিসে গেল আমি আজও বাড়ীতে। রুমে কখন থেকে একা বসে আছি এর মাঝে কলিং বেল বাজলো, গিয়ে দরজা খুলে দেখি কাব্য বাহিরে দাড়ানো কাব্যকে দেখে সাথে সাথে দরজা আটকে দিতে গেলাম আর ও ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল।তারপর দরজা আটকে দিয়ে আমার সামনে এসে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,,,,
– কি হয়েছে তোমার
-,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
– কিছু বলছি তোমাকে এই কয়েক দিন ধরে ভার্সিটি আসছো না আমার ফোন কল রিসিভ করছো না আর আমি এস এম এস দিচ্ছি তাও সিন করছো না সমস্যা কি তোমার
– সমস্যাটা হলেন আপনি

উনি আমার কাছে এসে হাত ধরতে গেলেন আমি সরিয়ে ফেললাম, উনি অসহায় চোখে তাকিয়ে বললেন,,,,কি হয়েছে তোমার এমন করছো কেন আমাকে বল।
– আপনার দিকে তাকাতে আমার ঘৃণা হয় আপনি কিভাবে এমন একটা কাজ করলেন
– কি বলছো তুমি আমি কি করেছি
– আমি আর আপনার সাথে কোনো কথা বলতে চাই না, আরেকটা কথা আমি আপনার কাছ থেকে ডিভোর্স চাই

উনি আমার কথাটা শুনে আর ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন,আমার কাছে এসে আমার হাতের দুই বাহু ধরে ঝাকাচ্ছে আর বলছে,,,কি চাও টা কি তুমি আমাকে মেরে ফেলতে চাও আর যদি তোমার মুখে আমি এমন কথা শুনে একদম মেরে ফেলব।উনার কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে কান্না করে চিৎকার করে বলতে লাগলাম,,,মেরে তো ফেলেছেন আমাকে আর কি মারবেন
আরও কিছু বলতে চাইলাম মুখ দিয়ে আর কোনো কথা বের হচ্ছে না গলায় আটকে গেছে হুট করে চোখের সামনে সব ঝাপসা দেখতে লাগলাম আর কিছু মনে নেই।

চোখে খুলে দেখি বিছানায় শুয়ে আছি ঘড়িতে ৪ টা বেজে ৪৯ মিনিট পাশ তাকাতেই দেখলাম কাব্য বসা।আমাকে চোখ খুলতে দেখে তাড়াতাড়ি ঘাবড়িয়ে বলতে লাগল,,,তোমার কেমন লাগছে এখন কতটা ভয় পেয়ে গিয়ে ছিলাম জানো। আমি বললাম,,,প্লিজ আমাকে এক ছেড়ে দিন প্লিজ।উনি বললেন,,,ঠিক আছে কিন্তু আমি আবার আসবো

চলবে,,,,,,,

ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
চলবে,,,,

ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন

/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here