প্রেম তুফান পর্ব -০১

কলেজ ছুটির পর যখন তারাতাড়ি বাড়ি ফিরছি। হঠাৎ করে মনে হলো পিছনে কেউ আসছে। পিছনে তাকিয়ে দেখি সত্যি যা ভেবেছি তাই। পিছনে কুকুর আসতেছে। আমি কুকুর দেখে ভিষন ভয় পাই বাড়ি ফিরবো কিভাবে ভাবছি আর এক কদম করে এগুচ্ছি। আমাদের এলাকার গলিও ভালো না বিকেল সময় কিছু বখাটে ছেলে বসে থাকে। আমি ছোট বেলা থেকেই ভিতু প্রকৃতির।
আজ কলেজে ল্যাব ক্লাস ছিল, তাই গিয়েছিলাম। কিন্তু কে জানতো এই অবস্থা হবে ।
ভয়ে ভয়ে এগুচ্ছি গলির সামনে এসে দেখি সত্যি সেই ছেলে গুলো বসে আছে। আমাকে কিছু না বললেও আমার বান্ধবি মনি কে অভি নামের এক ছেলে পছন্দ করে। আমার বান্ধবি ভয় পেলেও প্রকাশ করে না, কিন্তু আমি ভিষন ভয় পাই ওদের। আজ যে আমাকে ওরা কথা শুনাবে তা আমি নিশ্চিত। মনে মনে দোয়া দরুদ পড়ছি যাতে কিছু না বলে। এমন সময় সুমন নামের এক জন বলে কি গো হিমা এমন কাচুমাচু করতেছো কেন। কি হইছে মামুনি৷
আমি ভয়ে সিটিয়ে এগুচ্ছি। যখনি ওদের কে ক্রস করে সামনে গিয়েছি ওমনি আরেক জন বলে ওঠে মামা সস।মামুনির কাছে তো দেখি সস আছে।
কি হিমা মামুনি তুমি কুকুর দেখে ভয় পাও। চলো তোমারে আগাই দিয়াসি। কুকুরে তো আর মানুষ চিনে না। চলো চলো মামুনি। এই কথা বলে সবাই হাসতে লাগলো।
ঠিক তখনি পেছন থেকে কেউ কঠিন কন্ঠে বলে ওঠে কি হচ্ছে এখানে।
তার কথা শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখি এক সুদর্শন যুবক দাড়িয়ে আছে। দেখেই আমি ক্রাশ খেয়েছি এমন অবস্থা । সাদা শার্ট তার উপড়ে কালো কোর্ট কালো পেন্ট। হাতে সিলভার কালারের ঘড়ি। চুল গুলো ন্পাইক করা।দেখেই আমি ফিদা।
আমি যখন তার দিকে তাকিয়ে আছি তখন একজন বলে ওঠে কি ভাই নতুন নাকি এলাকায় আগে তো কখনো দেখি নাই। তা এলাকার নিয়ম জানো না। আমাো এই এলাকার বড় ভাই। সবাই সম্মান দিয়া কথা বলে। তোমার কি আদব কায়দা নাই। যানো আমরা কার লোক তা জানবা কেমনে আগে তো দেখি নাই, আমরা হইলাম চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান এর ছেলের বন্ধু।
তার কথা পুরোটা শেষ হওয়ার আগেই কষে একটা চ*র পড়লো ছেলেটার গালে, যেনো সাক্ষাত জম। এমন রূপ ধারন করলো যুবক টি।আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে দিলাম এক দৌড় যদি আমাকে আবার কিছু করে বসে। গালে হাত দিয়ে এক দৌড়ে বাড়ির গেটের সামনে এসে হাপাতে লাগলাম। এমন সময় আমার বড় মা বের হয়ে বলে কিরে হেমা এতো দেরি হলো কেন। তাড়াতাড়ি ঘরে যা আর তোর ঘর গুছিয়ে ফেল। আমি কিছু বলবো তার আগেই ফুপি এসে বলে আরে হেমা তুই এখনো দাড়িয়ে আছিস। জানিষ না আজকে বাড়িতে হিমেষ আসবে। যা মা তৈরি হয়ে নে। জানিষই তো হিমেষ কেমন ছেলে।
হিমেষ ভাইয়ের নাম শুনতেই আমার কলিজার পানি শুকিয়ে গেলো, যদিও আমার মনে নেই। ছোটবেলার কথা। হিমেষ ভাই অনেক রাগি ছিলো। একবার তার একটা কলম নিয়েছিলাম বলে সে কি রাম ধমক, তখন থেকেই আমি হিমেষ ভাইকে ভয় পেতাম। এর পড়ে সে বিদেশ চলে যাওয়ায় আমার ছোট মনের ভয় কাটতে শুরু করে৷। বিদেশ যাওয়ার পড়ে আমার আর হিমেষ ভাইয়ের সাথে কোনো কথা হয় না। কোনো কারন বশত সে আমার সাথে কথা বলতো না। আর বাকি সবার সাথে যাও বলতো, আমার সাথে কখনই বলে নি। তাই তো আজকে আমি তার চেহারা মনে করতে পারছি না।
আমার এসব ভেবে লাভ কি আমি ঘরে গিয়ে ওয়াশ রুমে গিয়ে গোছল করে নেই। কারন শরিরের যা না তাই অবস্থা। এই অবস্থায় আমি মোটেও ঘরের বাহিরে বের হতে পারবো না। রুমে এসে টপস আর জিন্স নিয়ে ডুকে পড়ি ওয়াশ রুমে। আধা ঘন্টার মতো গোছল করে বের হয়ে আসি। নিচে সবার কথা শোনা যাচ্ছে। হিমেষ ভাই মনে হয় চলে এসেছে। কিন্তু আমি তো এখন ঘর থেকে বের হবো না। কৌতুহল থাকা সত্বেও নিচে না গিয়ে আমি দরজা বন্ধ করে দিলাম। আমার এখন একটু ঘুম দরকার। সারা দিন অনেক খাটা খাটনি গেছে।
*****************★******************★***************
হিমা, এই হিমা ওঠ মা সেই কখন থেকে ঘুমোচ্ছিস। তোর হিমেষ ভাই সেই কখন এসেছে। দেখাও করলি না। মায়ের চিৎকার চেচামেচিতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দরজা খুলতেই মা রাগি চোখে আমার দিতে তাকিয়ে বলতে লাগলো, কলেজ থেকে এসেই ঘরে ডুকে বসে আছিস। দুপুরের খারাবর টা পযন্ত খেলি না। তোর হিমেষ ভাই যে এসেছে জানিষ তুই৷ ছেলে আমার কত দিন পড়ে এসেছে, আর তুই নিচেই গেলি না।
মা আমি অসুস্থ, কলেজ থেকে আসার পথে দেখি ককুর দেখে ভয়ে দৌড়াতে গিয়ে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাইছি, তাই রুমে এসে গোছল করে ঘুমিয়েছি। তুমি তো জানই আমি কেমন। আমার বাইরে বের হতে ভালো লাগছে না।
তাই বলে তুই আমাকেও বলবি না, দুপুরের খাবার টাও খাসনি। শরির এমনি খারাপ আরো খারাপ হবে। সেই দিকে কি খেয়াল আছে। আমার হয়েছে যত জ্বালা।
এই বলে মা বের হয়ে গেলো।
ওহ্ আপনাদের তো বলতে ভুলেই গেছি, আমি হেমা। এবার কলেজে উঠেছি। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। আমরা যৌথ পরিবার। আমার মা আর কাকি মা মোট তিন জন। আমার ছোট এক ভাই আছে।ও ক্লাস ফাইবে পড়ে। আমার বাবা চাচা তিন ভাই আর এক ফুপু। সবাই এক বাড়িতে থাকি। হিমেষ ভাই আমার বড় ফুপুর ছেলে। বড় ফুপুর এক মেয়েও আছে তুলি। আমারা সম বয়সি। আজ ও কলেজে যাই নি।কাজিন দের মধ্যে আমি আর তুলি বড়। আমাদের বড়ো হিমেষ ভাই। আর ছোট দুই চাচার এক মেয়ে এক ছেলে। মেজো চাচার মেয়ে হৃদি। আর ছোট চাচার ছেলে হৃদয় ওরা ক্লাস সেভেনে পড়ে।
মা খাবার নিয়ে আসলে সাথে আমার ভাই হিমেল চকলেট খেতে খেতে রুমে ডুকে।
ওকে দেখেই আমার আবার মনে পড়ে যায় যে হিমেষ ভাই এসেছে।
ও এসেই বলে কি রে বনু চকলেট খাবি, দিবো না। তুই সেই যে রুমে ডুকেছিস। যানিস এগুলো কে দিয়েছে হিমেষ ভাই। বাড়ির সবাই কে দিয়েছে। তুলি আপুকেউ, হিমেষ ভাই বলেছে তোকে দিবে না কারন তুই এখনো তার সাখে দেখা করিস নি।
এই তুই আমাকে চকলেট দিবি না। দে বলছি। এই বলে আমি হিমেল কে দৌড়াতে লাগ লাম সারা রুম জুরে।
মা আমাদের কান্ড দেখে দিলেন জোরে এক ধমক। মনে হচ্ছে আমার কান ফেটে যাবে।
আম্মু তুমি বনু কে কিছু বলবে না, আমার চকলেট নিতে আসে। আমি দিবো না। হিমেষ ভাই যা বলেছে আমি তাই বলেছি। এখানে আমার কি দোষ।
মা হিমেলের কান মলে দিয়ে বলে যা এখান থেকে। বড় বোনের সাথে মজা করা হচ্ছে। আর তুইও হেমা এমন করিস কেন ওর সাথে। আজ তোর শরির খারাপ বলেই ছেরে দিলাম। নইলে আজ বুঝতি।
ওমনি হিমেল বলে মা আপুর কি হয়েছে। বনু তোর কি হইছে।
আমার ভাইটা এমনি ছোট হলেও আমাকে অনেক ভালো বাসে। শোন বনু হিমেষ ভাই চকলেট না দিলে তুই আমার থেকে নিয়ে নিবি।
মা হিমেল কে বললো হইছে বাবা এবার যাও তোর বোন কিছু খাবে।
হিমেল বের হয়ে গেলে মা আমাকে খেয়ে নিচে যেতে বলে।
আচ্ছা মা।
মা বের হয়ে গেলে খাবারের ডাকনা তুলে দেখি বিরানি। দ্রুত খাচ্ছি কারন নিচ থেকে আমাকে বড় মা ছোট মা আর ফুপি ডাকছে। খেয়ে কাপড় বদলে নিচে নামতে সিড়ির কাছে গিয়ে ডয়িং রুমের দিকে তাকিয়ে আমার চোখ যেনো কোটর থেকে বের হয়ে আসতে চাইছে। এ আমি কাকে দেখছি,,,,,

চলবে,,,,

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here