ভ্যাম্পায়ার_বর পর্ব ৮+৯

#ভ্যাম্পায়ার_বর (সিজন ২)
#পার্ট_৮
#M_Sonali

ঘুমের ঘোরে ভীষণভাবে নিজের কপালে চোখে গালে ঠোঁটে গলায় কোন একটা ঠান্ডা কিছুর স্পর্শ অনুভব করছে চাঁদনী। কিন্তু শত চেষ্টা করেও নিজের চোখদুটো খুলতে পারছেনা। ভীষণভাবে মনে হচ্ছে যেন কেউ ওর পাশে বসে থেকে হাত দিয়ে এভাবে স্পর্শ করছে ওর সারা মুখ এবং গলায়। কিন্তু চাইলেও নিজের চোখ দুটো খুলে তাকে দেখতে পারছে না। অসম্ভব অস্বস্তি হচ্ছে ওর। নড়াচড়া করারও যেন ক্ষমতা নেই। হঠাৎ ওর মনে হতে লাগল ওর মুখের ওপর কারো গরম নিঃশ্বাস পড়ছে। কেউ একজন খুব কাছ থেকে ওর মুখটা দেখছে। হয়তো ওর মুখের সামনে মুখ নিয়ে এসে কিছু একটা করার চেষ্টা করছে। এতে যেন ভয়ে ওর নিঃশ্বাস টা আরো ভারী হয়ে গেল। কিন্তু তবুও চোখ মেলে তাকাতে পারলো না। তখন’ই ওর কানে ভেসে উঠলো ফিসফিসানি কিছু কথা। কেউ একজন বলছে,

— এই চাঁদপাখি, তুমি কি করে এত শান্তিতে ঘুমাচ্ছ আমাকে ফেলে? তোমার কি একটিবারও আমার কথা মনে হয় না? আমাকে এভাবে পাশে বসিয়ে রেখে প্রতিদিন কি করে ঘুমাও তুমি? আর কতদিন এভাবে দূরে সরিয়ে রাখবে আমায়? প্রতিদিন কি এভাবে লুকিয়ে চুরিয়ে এসেই তোমাকে দেখতে হবে আমার? চাইলেও তোমায় স্পর্শ করতে পারছিনা। একটু ছুঁয়ে দেখতে পারছিনা নিজের ভালবাসাকে। তুমি জানো এর যন্ত্রনা কত কঠিন। কবে ভালোবাসবে আমায়? কবে ফিরে আসবে আমার কাছে? এই চাঁদপাখি, আমি জানি তুমি জেগে আছো। আর আমার সবগুলো কথাই শুনছো। কিন্তু তুমি কি আমার ভালবাসা গুলো অনুভব করতে পারছো?

এতোটুকু শুনতেই শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে জোর খাটিয়ে এবার চোখ মেলে তাকাল চাঁদনী। তারপর জোরে জোরে হাফাতে লাগলো। এতক্ষণ যেন নিশ্বাস বন্ধ হয়েছিল ওর। ও দ্রুত উঠে বসে জোরে একটা চিৎকার দিলো। তারপর চোখ মেলে চারপাশে তাকিয়ে দেখল। ওর আশেপাশে কেউ নেই। একদম একা রুমে একা বিছানায় শুয়ে আছে। কিন্তু একটা জিনিস দেখে ভীষণ অবাক হল সে। আর সেটা হল ওর গলার সেই লকেট টা থেকে নীল আলো ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। এভাবে লকেটের জ্বলে ওঠার কোন মানেই বুঝতে পারছেনা চাঁদনী। ও অবাক হয়ে লকেটের দিকে তাকিয়ে রইল। সেই সাথে জোরে জোরে হাফাতে লাগলো। তবে স্পষ্ট মনে হচ্ছে এতক্ষণ নিশ্চয় ওর কাছে কেউ একজন ছিল। আর ওর সাথে যা ঘটেছে সবকিছু সত্যি, কোন স্বপ্ন নয়। তখনই হুড়মুড়িয়ে ওর রুমের মাঝে প্রবেশ করল শ্রাবণী। তারপর ওর পাশে এগিয়ে এসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

— কি হয়েছে চাঁদনী! তুমি এভাবে চিৎকার করে উঠলে কেন? এনি প্রবলেম? তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে? নাকি কোন কিছু দেখে ভয় পেয়েছো?

চাঁদনী সাথে সাথে কোনো কথা না বলে শ্রাবণীকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে হাফাতে হাফাতে বলল,

— আপু, আপু আমার রুমে কেউ একজন এসেছিল। সে আমার সারা মুখে গলায় স্পর্শ করেছে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না সে কে? আমার কানের কাছে এসেও কিছু কথা বলল। আমি স্পষ্ট শুনেছি। কিন্তু আমি তাকে দেখতে পারিনি। যখন চোখ খুললাম তখন রুমে কেউ ছিলনা। কে এসেছিল আপু আমার রুমে? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। ভীষণ ভয় করছে আমার।

ওর কথা শুনে শ্রাবণী ওর মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত্বনা দিয়ে বলল,

— এই পাগলি শান্ত হও। এতো অস্থির হলে চলে? আরে দেখো রুমে শুধু তুমি আর আমি ছাড়া অন্য কেউ নেই। আর তাছাড়া জানালা-দরজা সবকিছুই তো ভেতর থেকে বন্ধ ছিল তাই না! আর বাসায় শুধুমাত্র তুমি আর আমি ছাড়া তো অন্য কেউ নেই। তাহলে এখানে কে আসবে বলো? তুমি হয়তো কোনো স্বপ্ন দেখেছো। আর এখন স্বপ্নটাকে বাস্তব এর সাথে গুলিয়ে ফেলেছো। এসব নিয়ে ভেবনা এখন শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। আর এসব টেনশন করো না তোমার শরীর খারাপ করবে। কিছু হয়নি আমি আছি তো। তুমি শুয়ে পড়ো আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।

— না আপু আমি কোনো স্বপ্ন দেখি নি। আমি যা বলছি সব সত্যি। তুমি আমার কথা বিশ্বাস করছ না কেন? সত্যিই আমার রুমে কেউ এসেছিল। আর সে আমার মুখ এবং গলায় স্পর্শ করেছে। আমার একদম মুখের কাছে মুখ নিয়ে আমার কানে কানে কিছু কথা বলেছে। সে আমাকে চাঁদ পাখি বলে ডাকছিল। বিশ্বাস করো আপু আমি কোন কিছুই মিথ্যে বলছি না। এসব কিছু আমার সাথে ঘটেছে এখন।

— আচ্ছা ঠিক আছে আমি মেনে নিলাম তুমি যা বলছ সব সত্যি। কিন্তু আমি যখনই রুমে ঢুকলাম তখন তো তোমার কথার কোন মিলই খুঁজে পেলাম না চাঁদনী। রুমের মাঝে তো তুমি ছাড়া অন্য কেউ ছিলো না। আর তাছাড়া জানালা-দরজা সবকিছুইতো ভেতর থেকে লাগানো ছিল। এখানে আসার মত কারো ক্ষমতা নেই। তাহলে তুমি বলো তোমার এটা সত্যি হয় কিভাবে? যদি সত্যিই কেউ আসতো তাহলে অবশ্যই আশেপাশে বা বাসার মধ্যে কেউ থাকতো তাই না?

ওর কথায় কিছুক্ষণ চুপ থেকে কিছু একটা ভাবল চাঁদনী। তারপর আবারও উত্তেজিত কণ্ঠে জোরে করে বলে উঠলো,

— আপু তোমাকে আর একটা কথা বলা হয়নি! আমার গলার লকেট টা দেখছো যেটা আমাকে আব্বু দিয়েছিল? জানিনা এই লকেটের মাঝে কি রহস্য আছে। এটা মাঝে মাঝে আলোকিত হয়ে পড়ে। এই লকেট এর মধ্য থেকে নীল রঙের এক আলোকরশ্মি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। যেটা একটু আগেও ঘটেছে আমার সাথে। আমি যখন ঘুম থেকে উঠে বসি, তখন এই লকেট টার দিকে তাকিয়ে দেখি এর মধ্যে থেকে নীল রঙের আলকরশ্মি ছড়িয়ে পড়েছে পুরো রুমে। পুরো রুমে আলোকিত হয়ে গেছে নীল রঙে। এরকম এর আগেও হয়েছিল। যেদিন আব্বু মারা যায় আর আমাকে ঐ নীল চোখওয়ালা ছেলেটা বাঁচিয়ে নিয়ে আসে সেই সময়।

ওর কথায় বেশ কিছুক্ষন চুপ করে থেকে শ্রাবণী কিছু একটা ভাবলো। তারপর শান্ত স্বরে ওর মাথার চুলগুলো কানের পেছনে গুঁজে দিয়ে বললো,

— দেখো চাঁদনী তুমি হঠাৎ ঘুম থেকে উঠেছ তাই হয়তো ভুলভাল কিছু দেখেছ। এমনটা হওয়া কি সম্ভব বল! দেখতো তোমার এই লকেট টায় তো এমন কোন কিছুই নেই যেটা লাইটের মত আলো ছড়াবে। হয়তো তুমি স্বপ্ন দেখেছো। তাই এসব উল্টোপাল্টা বকছো। তুমি এসব নিয়ে ভেবো না, শুয়ে ঘুমিয়ে পরো অনেক রাত হয়ে গেছে। আমারও ভীষণ ঘুম পাচ্ছে আমি রুমে যাচ্ছি।

কথাটা বলে উঠে দাড়ালো শ্রাবণী। সাথে সাথে চাঁদনী ওর হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে নিজের পাশে বসিয়ে বলল,

— আপু তুমি আমার কথা কেন বিশ্বাস করছ না? ওই ঘটনা গুলো হয়তো আমার স্বপ্ন হলেও হতে পারে। কিন্তু এই লকেটের ব্যাপারে এটা কোন স্বপ্নই নয়। আমি তোমাকে সত্যি বলছি আপু। আমি তোমাকে কিভাবে বিশ্বাস করাই যে লকেটের মাঝে কোন রহস্য আছে। আচ্ছা দাড়াও তুমি যখন বিশ্বাস করছো না, আমি লকেটটা খুলে এটা ভেঙে তোমাকে দেখাবো। নিশ্চয়ই এটা ভাঙলে এর মাঝে থেকে কোন একটা কিছু বের হবেই। যার জন্য এমনটা হচ্ছে।

কথাটা বলেই গলা থেকে লকেট টা খুলতে নিল চাঁদনী। সাথে সাথে উত্তেজিত হয়ে ওকে থামিয়ে দিলো শ্রাবণী। তারপর লকেট টা ওর গলায় পরিয়ে দিয়ে বেশ রেগে ঝাঝালো কণ্ঠে বলল,

— এই মেয়ে পাগল হয়ে গেছো তুমি? তোমাকে কে বলেছে লকেট খুলতে? আমি তোমাকে একবারও বলেছি লকেট খুলে ভেঙে দেখাতে? বিশ্বাস যখন করছি না, তখন করছি না। এত বাড়াবাড়ি করার কি দরকার? এত বেশি বুঝলে নিজের কত বড় ক্ষতি করে ফেলবে তুমি! তুমি সেটা নিজেও জানো না। ভুলেও কখনো এই লকেট টা নিজের গলা থেকে খুলবে না। তাহলে সেটাই হবে তোমার জন্য সবচাইতে বিপদের কারণ। তুমি কি ভুলে যাচ্ছ তোমার আব্বু তোমাকে কী বলেছিলেন? এই লকেট টা সব সময় নিজের সাথে রাখতে। তাহলে কেন এখন তুচ্ছ প্রমাণের জন্য এটা খুলছো? দ্বিতীয়বার এমন ভুল আর কখনো করো না। তাহলে এর চাইতে বড় ভুল তোমার জীবনে দ্বিতীয় কিছু আর হবেনা চাঁদনী!

এতোটুকু একনাগাড়ে বলে রাগে ফুঁসতে লাগল শ্রাবণী। তখনই ওর চোখের রঙ বদলে হালকা নীল রঙ হয়ে গেল। ব্যাপারটা খেয়াল করার সাথে সাথে ওকে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা পিছিয়ে গেল চাঁদনী। তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,

— আপু এটা কি হচ্ছে, তোমার চোখের রং পাল্টে নীল হয়ে গেল কিভাবে? কে তুমি?

কথাটা বলার সাথে সাথে শ্রাবনীর চোখ আবার আগের মত স্বাভাবিক হয়ে গেল। ও শান্ত স্বরে নিজেকে শান্ত করে বলল,

–তুমি কি সত্যিই পাগল হয়ে যাচ্ছ চাঁদনী? কি বলছো এসব আবোল-তাবোল? কোথায় আমার চোখের রং বদলেছে? ভালো করে দেখো, আমার মনে হচ্ছে তোমার ঘুমের কোন সমস্যা হয়েছে। আর তাই তুমি এমন আবোল তাবোল বলছ আর উল্টোপাল্টা জিনিস দেখছো। আমার চোখের রং বদলায় নি আর না এখানে তোমার সাথে কিছু ঘটেছে। এখন এসব চিন্তা বাদ দিয়ে চুপ করে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।

কথাগুলো বলার সময় এক নজরে চাঁদনীর চোখের দিকে তাকিয়ে ছিল শ্রাবণী। চাঁদনী ও যেন ওর চোখের মাঝে ডুবে গিয়েছিল। তাই ওর কথাগুলো শুনে চুপচাপ ছোট বাচ্চার মত শুয়ে পড়ল। তারপর চোখ বন্ধ করে ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো। ও ঘুমিয়ে পরতেই শ্রাবনীর চোখদুটো আবারও সেই আগের মতো নীল রঙ ধারণ করলো। আর সেইসাথে চাঁদনীর গলায় থাকা লকেট টা থেকে আলোকরশ্মি ছড়াতে লাগলো চারিদিকে। তখনই ওর চোখের উপর হাত রেখে মনে মনে কিছু একটা বললো শ্রাবণী। সাথে সাথে ওর চোখের রং এবং গলার লকেট এর কালার চেঞ্জ হয়ে আগের মত স্বাভাবিক হয়ে গেল। তারপর চাঁদনীর চোখের উপর থেকে হাত সরিয়ে শ্রাবণী আস্তে করে বললো,

— সরি চাঁদনী, এটা না করলে তুমি আমায় সন্দেহ করতে। অ্যাকচুয়ালি তোমার মনের মাঝে অনেক বেশি সন্দেহ ঢুকে গিয়েছিল আমায় নিয়ে। তাই আজ রাতের সকল ঘটনাগুলো তোমার মন থেকে মুছে দিলাম আমি। তুমি চাইলেও আর আজ রাতের কোন কিছুই মনে করতে পারবে না। আমাকে তুমি ক্ষমা করো এটা করার জন্য। কিন্তু এটা না করলে যে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেত তোমার। যেটা কখনোই চাই না আমরা।

কথাগুলো বলে চাঁদনীর কাছ থেকে উঠ আরেক রুমে চলে গেল শ্রাবণী। সেখানে হুডিওয়ালা জ্যাকেট পরা একটি লোক দাঁড়িয়ে আছে। যে চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে হাতের মুঠো শক্ত করে আছে। ওর পাশে গিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়াল শ্রাবনী। ওকে দেখেই সেই লোকটি ধমকের সুরে বলে উঠল,

— এটা তুমি কি করলে শ্রাবণী? এটা করার কি খুবই প্রয়োজন ছিল?

লোকটির কথার উত্তরে শ্রাবণী মাথা নিচু করে রেখে আস্তে করে বলল,

— এটা না করলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে চাঁদনী আমাদের কথা সব মনে করতে পারতো। আর যার কারনে ওর মনের মাঝে আমাদের নিয়ে সন্দেহ জাগ্রত হতো। কিন্তু সেটা হওয়া তো এখন খুবই মারাত্মক হবে ওর জন্য তাই না? ও যদি আমায় সন্দেহ করে ভুল বুঝে এখান থেকে চলে যায় তাহলে ওকে যে আমরা বাঁচাতে পারবো না। আর ও না বাঁচলে কত বড় ক্ষতি হয়ে যাবে আমাদের সেটা তো তুমি ভালো করেই জানো! তাই এটা বাধ্য হয়ে করতে হয়েছে আমায়!

— আমি তোমাকে জাদু করে ওর স্মৃতি মুছে দেওয়ার কথা নিয়ে কিছু বলিনি। আমি তোমাকে এটা বলছি যে তুমি কোন সাহসে ওর সাথে ধমকের সুরে কথা বললে? কোন সাহসে ওর সাথে খারাপ আচরণ করলে? তুমি কি ভুলে যাচ্ছ ও কে?

— না আমি ভুলিনি! আর কোন কিছু ভুলিনি বলেই ওর সাথে না চাওয়া সত্ত্বেও এমন আচরণ করতে হলো আমায়। নইলে ও কোনো কথা শুনতো না। উল্টো আরো বেশি প্রশ্ন করত। হয়তো নিজের গলার লকেট টাও খুলে ফেলতো। আর তুমি তো জানো লকেট খুলে ফেললে কি হবে। আচ্ছা বাদ দাও এসব, এখন শোনো আমার কথা! তোমার আর এখানে থাকা উচিত হবে না। তুমি ফিরে যাও আমি এখানে আছি ওর পাশে। ওকে নিয়ে ভেবনা। এখন ওর ঘুম ভেঙে গেলে সমস্যা হবে।

ওর কথার উত্তরে আর কোন কিছুই বলল না হুডিওয়ালা লোকটা। চুপ করে সেখান থেকে একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে জানালা দিয়ে বেরিয়ে পাখির মত উড়ে চলে গেল। শ্রাবণীও জানালাটা আটকে দিয়ে চাঁদনীর পাশে এসে বসলো।
#ভ্যাম্পায়ার_বর (সিজন ২)
#পার্ট_৯
#M_Sonali

সকালের মৃদু রোদ এসে চোখে লাগায় মিটিমিটি করে চোখ মেলে তাকাল চাঁদনী। তাকাতেই নিজের মাথায় অসম্ভব ব্যথা অনুভব করলো সে। সেইসাথে মাথাটা অনেক ভারী হয়ে আছে। হঠাৎ এমন হওয়ার কোনো কারণ’ই বুঝতে পারল না সে। সারা রাত তো অনেক ভালোই ঘুমিয়েছে। সেই রাতে ঘুমানোর পর একবারের জন্যেও জাগেনি সে। এক ঘুমে সকালে উঠলো। তাহলে এভাবে মাথা ব্যথা হওয়ার কারণটা কী? কোন কিছুই বুঝে আসছেনা তার। মাথাটাকে দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে উঠে বসলো সে। আর তখনই সামনে তাকিয়ে দেওয়াল ঘড়িতে দেখল সকাল 9.45 মিনিট বেজে গেছে। এটা দেখতেই মাথাটাকে ছেড়ে দিয়ে চোখ বড় বড় করে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো চাঁদনী। আর তখনই ওর রুমের মাঝে 1 মগ কফি হাতে প্রবেশ করল শ্রাবণী। তারপর ওর পাশে এসে দাঁড়িয়ে ওর হাত ধরে বললো,

— কি ব্যাপার চাঁদনী তুমি এভাবে উঠে দাঁড়ালে কেন? বসো বসো এখন তোমার দাঁড়িয়ে থাকা ঠিক নয়। এই কফিটা খাও মাথাব্যথায় একটু আরাম লাগবে।

শ্রাবনীর এমন কথায় ঘড়ির দিক থেকে চোখ সরিয়ে ওর দিকে তাকাল চাঁদনী। তারপর উত্তেজিত গলায় বলল,

— না আপু এখন আমার বসে থাকলে চলবে না। আমার এখনই অফিসে যেতে হবে। দেখো কত বেজে গেছে! আমি কখন অফিসে যাবো? আজকে অফিসের দ্বিতীয় দিন, আজকে যদি এভাবে অফিসে লেট করি তাহলে তো আমার চাকরিটা থাকবে না বল? আমি চাইনা আমার জন্য তোমার মান-সম্মান চলে যাক। এই চাকরিটা আমায় পাইয়ে দিতে এমনিতেই তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে।

কথাগুলো বলেই শ্রাবণী কে পাশ কাটিয়ে ওয়াশ রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো চাঁদনী। তখনই ওর হাত ধরে ওকে থামিয়ে দিয়ে বিছানায় বসিয়ে শ্রাবণী বলল,

— এই মেয়ে আমি কি তোমাকে বলেছি এখন অফিসে যেতে? এখানে চুপচাপ বসে এই কফিটা খেয়ে নাও। তোমার শরীর এখন ভালো না, তোমার না প্রচন্ড মাথাব্যথা! এটা খাও ভালো লাগবে। আর আজকে অফিসে যেতে হবে না তোমায়। আমি ফোন করে তোমার বসের সাথে কথা বলে নিয়েছি কোন প্রবলেম হবে না।

শ্রাবণীর কথা শুনে কিছু বলবে তার আগে কোন একটা কিছু ভাবলো চাঁদনী। তারপরও কিঞ্চিৎ পরিমাণ ভ্রু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে গম্ভির গলায় বলল,

— আচ্ছা আপু তুমি কিভাবে জানলে যে আমার মাথাব্যথা? আমিতো তোমাকে একবারের জন্যও বলিনি যে আমার মাথা ব্যথা হয়েছে। তাহলে তুমি কিভাবে জানলে? আর আমি তো ঘুম থেকে উঠলাম এইমাত্র। অথচ তুমি আমার জন্যে কফিও বানিয়ে আনলে?

চাঁদনীর এমন প্রশ্নের কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছেনা শ্রাবণী। কিছুটা অস্বস্তি বোধের মধ্যে পড়ে গেল সে। এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে চট করে উত্তর দিলো,

— তুমি কি ভুলে গেছো তুমি না ঘন্টা খানেক আগে ঘুমের মধ্যে মাথা ধরে বলছিলে যে, “আপু আপু আমার খুব মাথাব্যথা করছে অসম্ভব মাথাব্যথা করছে।” তখন তোমার মাথা ব্যথার কথা শুনেই তো আমি তোমার জন্য কফি করে নিয়ে আসলাম। তোমার হয়তো খেয়াল নেই। ঘুমের ঘোরে বলেছো তো তাই হয়তো।

ওর কথায় কিছুক্ষণ চুপ থেকে কিছু একটা ভাবল চাঁদনী। তারপর আবারো গম্ভীর গলায় বলে উঠলো,

— কিন্তু আপু আজ অব্দি আমি তো কখনই ঘুমের মাঝে কোনো কথা বলিনি। ছোটবেলা থেকে আব্বুর সাথে বড় হয়েছি। আব্বু কোনদিন বলেনি আমি ঘুমের মাঝে কখনো কথা বলি। তাহলে আজকে আমি ঘুমের মাঝে মাথাব্যথার কথা বললাম কি করে? কেমন যেন ঠেকছে আমার ব্যপারটা!

— তুমি কি আমায় সন্দেহ করছো চাঁদনী? আমি কি তাহলে মিথ্যা কথা বলছি তোমার কাছে? এমন বিশ্বাস তোমার আমার ওপর? আর তাছাড়া তুমি বলো তোমার কাছে মিথ্যা কথা বলে আমার লাভ টা কি? তুমি যদি নাই বলতে তোমার মাথা ব্যথার কথা তাহলে আমি কফি বা কেন বানিয়ে নিয়ে আসতাম? আসলে তুমি আমাকে এখনো আপন বলে মানতে পারো নি। আমি কিন্তু তোমাকে নিজের বোনের মতোই দেখি চাঁদনী। এটা খাবার হলে খাও নাহলে না খাও। আমি চলে যাচ্ছি।

কথাটা বলেই রাগ করার ভান করে সেখান থেকে উঠে যেতে নিল শ্রাবণী। তখনই ওর হাতটা শক্ত করে দুহাতে চেপে ধরল চাঁদনী। তারপর অসহায় গলায় বলল,

— সরি আপু, প্লিজ এভাবে চলে যেও না। আমি তোমাকে সন্দেহ করছি না। আসলে আমি কখনো ঘুমের মাঝে কথা বলেছি বলে আব্বুর কাছে শুনিনি। তাই তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম। তাই বলে এভাবে রাগ করে চলে যাবে? আমার তুমি ছাড়া দুনিয়াতে কে আছে বলো? প্লিজ আপু যেওনা। আমাকে ক্ষমা করে দাও। আর কখনো তোমাকে এভাবে প্রশ্ন করব না প্রমিস।

ওর কথার উত্তরে শ্রাবণী মুচকি হেসে ওর পাশে বসলো। তারপর ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,

— আমি রাগ করিনি চাঁদ। আচ্ছা তুমি কফিটা খেয়ে নাও আমি তোমার জন্য ব্রেকফাস্ট রেডি করি।

কথাটা বলেই চাঁদনীকে রেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেল শ্রাবণী। তারপর বাইরে এসে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মনে মনে বললো,

— বাপরে বাপ কি বুদ্ধি এই মেয়েটার। একটুর জন্য ধরা পড়ছিলাম ওর কাছে। যাকগে কোনভাবে কথাটা কাটানো গেছে এটাই অনেক।

কথাগুলো বলে খাবার রেডি করতে চলে গেল শ্রাবণী। ওদিকে চাঁদনী কফির মগটা হাতে নিয়ে কয়েক চুমুক কফি খাওয়ার সাথে সাথে মাথা ব্যথাটা যেন ম্যাজিকের মতো হাওয়া হয়ে গেল। একদম ফ্রেশ লাগছে নিজেকে। ও বুঝতেই পারছেনা কখনো মাথাব্যথা ছিল। আর কফিটার টেষ্টও যেন কেমন একটু অন্যরকম। ও বেশ অবাক হলো কফিটা খেয়ে। তাই কফির মগটা হাতে করে নিয়ে শ্রাবণীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তারপর মগটা শ্রাবনীর সামনে এগিয়ে দিয়ে বললো,

— আপু এই কফিটা তুমি কি দিয়ে বানিয়েছো? আসলে এটার টেস্ট কেমন যেন লাগছে। এর আগে যতবার কফি খেয়েছি কোনও বার’ই এমন লাগেনি’। আর এটা খাওয়ার পর ম্যাজিকের মত আমার মাথা ব্যথা সেরে গেল। কি ব্যাপার বলতো?

ওর কথার উত্তর দিতে এক মিনিটও সময় নিলোনা শ্রাবণী। যেন উত্তরটা আগে থেকেই ভেবে রেখেছে সে। তাই মুচকি হেসে বলে উঠলো,

— আসলে ওটা তোমাকে আমি কোন কফি দেইনি। ওটা একটা গ্রাম্য টোটকা। আমি যখন গ্রামে থাকতাম আমার মায়ের সাথে তখন মায়ের কাছ থেকে শিখেছিলাম। এই টোটকা মাথা ব্যথার জন্যে ভীষণ কার্যকরী। সেটাই তোমাকে বানিয়ে দিয়েছি।

— তাহলে তুমি তখন এটাকে কফি বললে কেনো?

— আসলে কি হয়েছে জানো তো! ছোটবেলা যখন আমার মাথা ব্যথা হতো আর আমি মায়ের কাছে মাথাব্যথার কথা বলতাম, তখন মা এই টোটকা বানিয়ে আমাকে খেতে দিত। আমি একদমই রাজি হতাম না নাক ছিটকে দৌড়ে পালাতাম। তখন মা একটা মজার কাজ করতো, সে আমাকে কফি বা চা এগুলোর লোভ দেখিয়ে এটা খাইয়ে দিত। আর আমিও সেটা কফি ভেবে ঢকঢক করে খেয়ে নিতাম। আর আমার মাথা ব্যাথা সেরে যেত। তাই তোমার সাথে আমি সেটাই করেছি। যদি টোটকার কথা শুনলে এটা না খাও। তাই তোমাকে কফির কথা বলে খাইয়ে দিলাম।

ওর কথা শুনে শব্দ করে একটা হাসি দিল চাঁদনী। তারপর চুপচাপ চেয়ারে বসে খেতে শুরু করল। খেতে খেতে বলল,

— সত্যিই আপু তোমার মায়ের এই টোটকাটা ভীষণ কার্যকরী। খাওয়ার সাথে সাথে একদম ম্যাজিকের মত আমার মাথা ব্যথা সেরে গেল।

———————-

সকাল 10.30 মিনিট

অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে চাঁদনী। বুকটা ধুকপুক করছে তার ভয়ে। এতটা লেট করে অফিসে এসেছে না জানি কপালে আজ কি আছে তার। চাকরির দ্বিতীয় দিনে এভাবে লেট করা একদমই উচিত হয়নি, সেটা ভালো করেই জানে সে। তবুও ভয়ে ভয়ে গিয়ে অফিসের মধ্যে ঢুকলো। কিন্তু কেউই কিছু বলল না। সবাই যার যার মতো কাজে ব্যস্ত। যেন কেউ দেখেইনি ওকে। মনে মনে খুশি হল চাঁদনী। তারপর এগিয়ে যেতে লাগল নিজের ডেস্কের দিকে। ডেস্কের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বুকে একটু থুথু দিয়ে নিল। কারণ ভয়টা এবার দ্বিগুণ হয়ে গেছে তার। দরজা খুললেই ভিতরে বস কি অবস্থায় আছে সেটা ভাবতেই বুকটা কেঁপে উঠল তার। কারন সে আগে থেকেই জানে শ্রাবণ বস হিসেবে ভীষণ রাগী। যদিও কালকে প্রথম দিন ছিলো বলে তার রাগটা হয়তো দেখা হয়নি। তবে আজকে যে রাগ টা তারওপর ঝাড়বে না, সেটা ভাবা টাই বোকামি ছাড়া কিছু নয়। তবুও দুরু দুরু বুকে দরজা খুলে ভয়ে চোখ বন্ধ করে বলল,

— May i come in sir?

— আমি ভিতরে বসে গোসল করছি না, বা নিজের পোশাক চেঞ্জ করছি না। অথবা এমনভাবে বসে নেই যে তোমাকে চোখ বন্ধ করে ভিতরে আসতে হবে। চোখ খুলে তারপর ভিতরে আসো মিস চাঁদনী।

শ্রাবণের এমন উত্তর শুনে চট করে চোখ খুলে সামনে তাকাল চাঁদনী। তাকিয়ে দেখে টেবিলের সাথে হেলান দিয়ে দুই হাত প্যান্টের পকেটে গুঁজে রহস্যময় হাসি নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে শ্রাবণ। ওকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বুকটা কেঁপে উঠল ভয়ে। গুটিগুটি পায়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থেকে সামনে এগিয়ে গিয়ে নিজের ডেস্কে বসতে নিল চাঁদনী। আর তখনই ওকে থামিয়ে দিয়ে শ্রাবণ ওর পাশে গিয়ে গম্ভির গলায় বলল,

— ও হ্যালো তোমাকে আমি ভেতরে আসার অনুমতি দিয়েছি। কিন্তু নিজের ডেস্কে বসার অনুমতি কি একবারও দিয়েছি?

ওর এমন কথায় থমকে দাঁড়ালো চাঁদনী। তারপর অসহায় দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,

— ইয়ে মানে আসলে স্যার, ঠিক আছে আমি বসবো না। বলুন আমাকে কি শাস্তি দেবেন?

ওর কথা শুনে আর ওর এমন ভয় পাওয়া ফেস দেখে মনে মনে হেসে দিল শ্রাবণ। তারপর ওকে আরো একটু ভয় দেখাতে রাগি গলায় বলল,

— আমি কি তোমাকে শাস্তির কথা একবারও বলেছি? তুমি কি সব সময় এক লাইন বেশি বুঝো নাকি হুহহ?

ওর এমন কথা শুনে এবার যেনো চাঁদনীর কান্না করে দেওয়ার মতো অবস্থা হলো। ও কাঁদো কাঁদো গলায় বলল,

— সরি স্যার আসলে আমি,,,

এতোটুকু বলতেই ওকে থামিয়ে দিয়ে শ্রাবণ ওর আর একটু কাছে এগিয়ে এসে বলল,

— তোমার মাথা ব্যথা কমেছে! নাকি এখনো মাথাব্যথা আছে? আর তোমাকে আজকে অফিসে আসতে কে বলেছিল? শ্রাবণী বলেনি বাসায় থাকতে?

— হ্যাঁ আপু আমাকে বাসায় থাকতে বলেছিল, কিন্তু আজকে তো অফিসে আমার দ্বিতীয় দিন। অফিসে না আসলে যদি চাকরিটা হারিয়ে ফেলি, তাই আপুর বারণ সত্যেও এসেছি। আর মাথাব্যাথাও একদম সেরে গেছে এখন। কোনো মাথাব্যাথা নেই আমার।

ওর কথায় কিছুক্ষণ ওর দিকে এক নজরে তাকিয়ে থাকলো শ্রাবণ। তারপর কিছু একটা ভেবে গম্ভীর গলায় বললো,

— আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে তুমি বসে কাজ করো আমি যাচ্ছি।

কথাটা বলেই নিজের জায়গায় চেয়ারে গিয়ে বসে পড়লো। তারপর ল্যাপটপে কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। চাঁদনীও আর কোন কিছু না ভেবে দ্রুত চেয়ারে বসে কাজ করতে শুরু করলো। যদিও বেশ কষ্ট হচ্ছে কাজ করতে, কারণ জীবনে কখনো এভাবে কোনো কাজ করেনি সে। তবে কালকে শ্রাবণ এমন ভাবে ওকে কাজগুলো বুঝিয়ে দিয়েছে যে ওর কাজ করতে তেমন একটা অসুবিধা হচ্ছে না। কাজ করতে করতে হঠাৎ চাঁদনী কাজের দিক থেকে চোখ সরিয়ে শ্রাবণের দিকে একবার আড়চোখে তাকায়। তাকিয়ে দেখে ও মনযোগ দিয়ে ল্যাপটাপে কাজ করছে। বাতাসে ওর গোল্ডেন কালার চুলগুলো উড়ছে, এতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে ওকে। চাঁদনী কি মনে করে কাজ ফেলে মুগ্ধ নয়নে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো। এভাবে বেশ কিছুটা সময় পার হওয়ার পর শ্রাবন হালকা কেশে নিয়ে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই বললো,

— আমি জানি আমাকে অনেক কিউট অ্যান্ড হ্যান্ডসাম দেখতে। তাই বলে কাজ ফেলে এভাবে তাকিয়ে দেখতে হবে না আমায়। যদি এতই দেখার শখ হয় তাহলে একটা কাজ করতে পারো। তাড়াতাড়ি অফিসের সব কাজ শেষ করে আমাকে সামনে বসিয়ে নিয়ে মন ভরে দেখো। কিন্তু অফিসের কাজ ফেলে এভাবে বসে থেকে আমাকে দেখলে সেটা কিন্তু আমি একদম মেনে নিবোনা চাঁদনী। নিজের কাজে মন দাও।

হঠাৎ এমন কথা শোনায় অনেকটাই লজ্জা এবং ঘাবড়ে যায় চাঁদনী। সে তাড়াতাড়ি ওর দিক থেকে চোখ সরিয়ে শুকনো ঢোক গিলে আবারো নিজের কাজে মন দেয়। ওর এমন অবস্থা দেখে শ্রাবণ মনে মনে হাসে। তারপর একটা ছোট করে নিঃশ্বাস নিয়ে আবারও কাজে মন দেয়।

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

আজ থেকে গল্পটা কন্টিনিউ করব ইনশাআল্লাহ। কেমন হচ্ছে জানাবেন সবাই। ধন্যবাদ
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

গল্পটা আগামি পরশুদিন থেকে প্রতিদিন পোস্ট করব ইনশাআল্লাহ। এতদিন দুটি গল্প একসাথে রানিং ছিল বলে প্রতিদিন এটা পোস্ট করতে পারেনি। তবে এখন থেকে শুধু এটাই পোস্ট করব প্রতিদিন ইনশাআল্লাহ। কেমন হচ্ছে গল্পটা জানাবেন সবাই। ধন্যবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here