অতিরিক্ত চাওয়া পর্ব ১০

অতিরিক্ত চাওয়া { ২ }
১০

তৃষ্ণার শক্ত হাত বেলির ডান গালে লাগতেই, থমকে যায় বেলি! আপনা-আপনি ডান হাত ডান গালে চলে যায় তাঁর! ভিড়ের মাঝে চোখ দু’টো স্থির হয়ে আছে রাস্তায়! কিছু লোকজনের কানাকানি শুনে স্তব্ধ হয়ে রয়েছে সে,
— আল্লাহু বাঁচিয়েছেন! ছেলেটা সময় মতো না এলে ট্রাকটা মেয়ের উপর দিয়ে চলে যেতো একদম ! ট্রাকচালককে ধরে বেঁধে রাখা উচিৎ ছিলো!
— বেটা তো গাড়ি থামালেন না! ভাগ্যিস সময়মত ! বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে চলা মানে, কাল বাড়ি নাও ফিরতে পারা!
–কথা সত্য! আর এভাবেও, এখনকার ছেলে-মেয়েদের জীবনের কোনো মুল্যে নেই! সাবধানে চলে না এঁরা!

কিছুক্ষণ আগের ঘটনা, বেলি কেন কেঁদেছিল সেটা জিগ্যেস করেছে অনেকবার তৃষ্ণা! বেলির উত্তর না পেয়ে রেগে যায় সে ! তাও কিছু বলে নি! কারণ এ-র আগেও কেঁদেছে মেয়েটা! কেনো কেঁদেছে সেটা সে জানে না! তাই বারাবাড়ি করে নি! খাওয়া-দাওয়ার পর হোটেলের বাহিরে বেলিকে দাঁড়িয়ে রেখে বলেছিল,
— এখানে দাঁড়িয়ে থাকবি! এক’পা ও নাড়াবি না! আমি পাশের গ্যারেজ থেকে গাড়িটা নিয়ে আসি!

বেলি মাথা দুলালো! তৃষ্ণা রাস্তা পারাপার হয়ে ওপাশ চলে যায় গাড়ি আনতে! কিন্তু, রাস্তার মাঝে তাঁর রুমাল পড়ে যায়! সেটা তৃষ্ণা খেয়াল না করলেও, বেলি করেছে! সে আড়চোখে চারপাশ তাকিয়ে, দ্রুত তুলতে যেতেই ট্রাক একটা প্রায় তাঁর সামনে! ঝড়ের গতিতে তৃষ্ণা হাত টেনে সাইড না আনলে কি হতো আল্লাহ মালুম!

তৃষ্ণার শরীরের কাঁপা-কাঁপি আর দ্রুত শ্বাস নেওয়ার অভিযান দেখে বেলি আরও ভয় পেয়ে যায়! গালে হাত দিয়ে উল্টো ঘুরে হোটেলের ভিতর যেতে লাগলো! একটা থাপ্পড় তো কিছুই না, তাঁকে আরও মারবে সামনে পেলে! তাঁর থেকে ভালো দ্রুত চলে যাওয়া! বেলির নিজেরই ভাবতে রুহ উড়ে যাচ্ছে, আরেকটু হলেই তাঁর কাম-তামাম হয়ে যেতো!

বিছানায় বসে বেলি রুমালটির ঘ্রাণ নিচ্ছে! ঘ্রাণটি হুবহু তৃষ্ণার শরীরের মতো! শুধু ঘ্রান নিতেই মন চায়! বাম হাতে রুমাল আর ডান হাতে গাল ধরে আছে! গালের চিনচিন ব্যাথা টা বোঝা যাচ্ছে! হালকা জ্বলছেও মনে হচ্ছে! কি শক্তি দিয়েই না মেরেছে! মনে হয় ভুলেই গিয়েছিলো, যে এটা এক বাচ্চা মেয়ের গাল! ধুমধাম পায়ের আওয়াজ পেতেই দ্রুত রুমালটি সরিয়ে, গালে হাত রেখে, জানালার দিক মুখ করে বসলো! কাঁদার মতো করে নাক টেনে যাচ্ছে! বেলি আড়চোখে দেখলো তৃষ্ণা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হাতে বাটি ! সে আরো এগিয়ে জানালার দিক ঘেঁষে বসলো! তার পাশে তৃষ্ণা বসতেই আওয়াজ করে কাঁদতে লাগলো!

তৃষ্ণা দু’হাতে বেলিকে নিজের দিক ঘোরাতে চাইলে, বেলি শক্ত হয়ে থাকে! তৃষ্ণা যখন দু’হাতে ধরে টান মেরে ঘুরায়, এবারও বেলি কাঁদার অভিনয় করে, তৃষ্ণা বেলির গাল চেপে ধরে বলল,
— রাগ দেখাচ্ছিস আমাকে?
~ গা..গাল ছাড়ুন পাষাণ লোক!
তৃষ্ণা দ্রুত গাল হালকা করে ধরে! ডান গালটায় স্পষ্ট হাতের ছাপ,
— থাপ্পড় তুই আরো খাবি! তোকে আমি কি বলেছিলাম?
তৃষ্ণা ধমকানোর চোখে তাকাচ্ছে আর বাটির বরফ গুলো বেলির গালে ছুঁয়ে দিচ্ছে! কিন্তু বেলি? সে তো তৃষ্ণাকে দেখতে ব্যাস্ত! উষ্কখুষ্ক চুলগুলো, ছোট-ছোট বিলাই চোখ দু’টো , রক্ত রঙের ঠোঁট জোড়া, উঁচু নাকটা, চাপা গাল দুটো, অন্যরকম সুন্দর দেখাচ্ছে! ভালোলাগা কাজ করছে বেলির মাঝে! তৃষ্ণার দিক তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে! তৎক্ষণাৎ তাঁর মনে পড়লো, একটু আগে না তাঁকে থাপ্পড় মারা হয়েছে? শুধু তাই না ধমকও মেরেছে আবার গাল দু’টো চেপে ধরেছে! ভাবতেই বেলির বুক অভিমানে দুমড়ে-মুচড়ে গেলো,
— ট্রাক আমার উপর দিয়ে যেতো! আপনার উপর দিয়ে তো যাচ্ছিলো না!
কথাটা বলেও বেলি জিব কাটলো!
— কেন রাগাচ্ছিস?
বেলি আরকিছুই বলল না! তাঁর এখন তৃষ্ণার রাগ ঠেলার শক্তি একদমই নেই! চুপচাপ অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো,
— কৃষ্ণপুর ফিরতে হবে! কাজ পরেছে আমার আর্জেন্ট! বিকেলে বেরিয়ে পড়ব!
তৃষ্ণা রুম থেকে বেরিয়ে গেলো! বেলি ভালোভাবে রুমটায় চোখ বুলালো! জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে রইলো! তৃষ্ণা কে দেখার জন্য তাঁকে আবারও অপেক্ষা করতে হবে! অনেক অপেক্ষা,

বিকেল দিকে আয়েশা মন খারাপ করে তৃষ্ণার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে! তার মন চাইছে না যেতে! সবাই কি ভাববে? তৃষ্ণার মামা ফোন করেছিল আয়েশাকে! তাঁকে বলেছে তৃষ্ণার সাথে আজই কৃষ্ণপুর ফিরতে! কিন্তু, আয়েশার ক্ষুতক্ষুত লাগছে! একদম যেতে ইচ্ছে করছে না,
— মামি উঠে পড়!
আয়েশা পিছনে উঠে বসলো! ম্যানেজারকে সব বুঝিয়ে তারপর যাচ্ছে! যাওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও যেতে হবে!

বেলি টুকটুক পায়ে গাড়ির দিক এগিয়ে এলো! তাঁদের তো আরো ২ দিন বাকি ছিলো? অথচ, তৃষ্ণার কাজ আসায় ফিরতে হচ্ছে! গাড়ি চলছে নিজ গতিতে! বেলি আয়েশার সাথে কথা বলছে! সেও এখন মামি বলে ডাকছে তৃষ্ণার মতো! আয়েশা মিছে মিছে রাগ দেখাচ্ছে মামি ডাকার কারণে, কিন্তু মনের দিক দিয়ে যে তাঁর ভালোলাগা ছুঁয়ে দিচ্ছে অদ্ভুত ভাবে!

তৃষ্ণার চোখ একটু পরপর বেলির দিক যাচ্ছে! সেটা বেলি আড়চোখে দেখেও না দেখার ভান করে রয়েছে,
— চুল বেঁধে ফেল!
বেলি মুখ বেঁকিয়ে খোঁপা করে নিলো!

৩-৪ ঘন্টার রাস্তা অতিক্রম করে রাত ৭: ৩৫ এ-র দিক গাড়ি থেমেছে বাংলা বাজারের দিক! দোকান-পাট প্রায় বন্ধ! মানুষজন তেমন নেই! জিপগাড়ির একটু দূরে আরো দু’টো গাড়ি থেমে! তৃষ্ণার গাড়ি দেখতে পেয়ে কালো রঙের গাড়ি থেকে, সাদা পাঞ্জাবি সুট পড়ে, বেরিয়ে এলো আবির রয়ুশ রয় আবির ! আবিরের পিছন পিছন বেরিয়ে এলো কয়েক গার্ডস! গার্ডস গুলো পিছনে গাড়ির সাথে দাঁড়িয়ে রইলো! আবির এগিয়ে গেলো তৃষ্ণার জিপগাড়ির দিক! আয়েশা আবিরকে দেখেও না দেখার মতো করে অন্যদিক ফিরে রইলো! আবির হালকা হেসে দুষ্টুমি স্বরে আয়েশাকে ইঙ্গিত করে বলল,
— তৃষ্ণা এ-ই জংগী কোথার থেকে ধরে নিয়ে আসছ?
আয়েশা মুখ ফুলিয়ে গাড়ি থেকে নেমে বলল,
— তৃষ্ণা আমাকে গাড়ির ব্যাবস্থা করে দে আমি চলে যাব!
আবির আয়েশার দিক এগিয়ে যেতে যেতে বলল,
— আমি আছি তো !
আয়েশা রাগী চোখে আবিরের দিক তাকাতেই আবির দুষ্টু হেসে ফেলল,
— উপস, ভয় পেয়েছি!
তৃষ্ণা গাড়ি সাইড করে আবিরের দিক এগোতেই দুজন ম্যানলি হাগ করলো! আবির বাঁকা স্বরে, মিনমিন করে বলল,
— কেমন কাটলো ভাগ্নের রোমান্টিক যাত্রা?
— আমার পালা আসবে বুঝিয়ে দেবো!

আবির বেলির দিক মিষ্টি হেসে তাকাতেই বেলি সালাম দিল,
— আসসালামু আলাইকুম মামা!
— ওয়ালাইকুম আসসালাম ডিয়ার! কি নম্রতা-ভদ্রতা ! আর এদিকে দেখ, নিষ্ঠুরতম এক জঙ্গী দাঁড়িয়ে! না সালাম না কথা! গুরুজনদের সালাম দেওয়ার আদব টুকুও নেই!
আয়েশা নাক ফুলিয়ে উত্তর দিলো,
— গুরুজন কে? আমি গুরুজন। আপনি আমার থেকে ২ বছরের ছোট, ভুলে যান কেন। আর হ্যাঁ, যাকে তাকে সালাম দেওয়া বারন!
— আচ্ছা?
আয়েশা অন্যদিকে ফিরে গেলো! আবির বেলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো,
— মাশাল্লাহ! বড় হয়ে গিয়েছ! এবার জেনো কোন ক্লাস?
— নাইনের ফাইনাল এক্সাম দেব!
— বাহ! [ তৃষ্ণার দিক ফিরে ] আমাদের ট্রিট কবে দিচ্ছ?
— আমি জঙ্গীর ফিউচার স্বামীকে ট্রিট দেই না!
আয়েশা ফুসফুস করে তৃষ্ণার দিক তাকাতেই, তৃষ্ণা হাত উঁচু করে সারেন্ডার করে দিলো,
— তোমাকে বলি নি মামী! মামার এক্সদের কথা বললাম! ওই যে রুপালী ছিলো না?
আবির ভ্রু-উঁচু করে বলল,
— তোমার এক্স গুলোর নাম জানো কি? হ্যাঁ, মনে পড়েছে, সীমানা তারপর সূচনা, বাবলী, আর ঢাকাতে যেই মেয়ের সাথে ছিলে তাঁর নাম জেনো কি?
তৃষ্ণা আড়চোখে তাকালো দেখল বেলির মুখ একটুখানি হয়ে গেছে,
— নাউজুবিল্লাহ! মিথ্যে কেনো বলছ? পাপ হবে পাপ!
— তুমি বা কোন যুগের সত্যবাদী?
আয়েশা অন্যপাশ দিয়ে চলে যেতে নিলে, আবির দ্রুত হাত ধরে ফেলে!
~ সরি, সরি! আর কিছু উল্টো পাল্টা বলতাম না, প্রমিজ!

আবির বেলির মুখে হাত ছুঁয়ে, কপালে চুমু দিয়ে দিলো! পিছনের গার্ড একটাকে ইশারা করতে, একটি বাক্স নিয়ে গার্ড হাজির হলো! বাক্সটা বেলির হাতে দিয়ে দিলো,
~ এটা তোমার জন্য! আমার আর জঙ্গীর তরফ থেকে! বড় হয়ে গিয়েছ এটা প্রয়োজন হবে ! আবার দেখা হবে ডিয়ার! দেরি হচ্ছে বাড়ি চলে যাও!
বেলি মাথা দুলালো! আয়েশা আবিরকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো! বেলির দিক তাকাতেই চেহারায় মিষ্টি হাসি তাঁর , বেলির মাথায় চুমু খেয়ে বলল,
— আবার দেখা হবে মাই ফেভারিট!
— অবষ্যই!

আবির তৃষ্ণাকে ইশারা করে, আয়েশার হাত টেনে গাড়ির দিক নিয়ে যাচ্ছে! বেলির ঠোঁটে মিষ্টি হাসি লেগে! সে ধীর আওয়াজে বলল,
— আপনার মামার ব্যাবহার প্রায় আপনার মতো!
— আচ্ছা? আমার ব্যাবহার কেমন?
বেলি আড়চোখে তাকিয়ে দ্রুত গাড়িতে গিয়ে বসলো! তৃষ্ণা বাঁকা হেসে নিজেও উঠে বসলো!
গাড়িতে বসে বেলি বারবার তৃষ্ণার দিক তাকাচ্ছে! তাঁর এখন কেমন জেনো লাগছে, বুঝতে পারছে না! অদ্ভুত লাগছে! কেমন গলা শুকিয়ে যাচ্ছে,
— কাজের জন্য কি ঢাকা যাচ্ছেন?
তৃষ্ণা সামনে তাকিয়েই জবাব দিলো,
— হ্যাঁ!
— কবে ফিরবেন?
~ আমি না ফিরলেই বা তোর কি? তোকে দেখার জন্য আমার মুভি বানাতে হয়! তোর জন্য ১০-১২ জন তোদের বাড়িতে পাঠাতে হয়! তাও তোর নাম-ঠিকানা পাওয়া যায় না!
বেলি অন্যপাশ তাকিয়ে রইলো! তাঁর চোখ জলে চিকচিক করছে! বেলি দ্রুত মুছে নিলো!
— আর এমন হবে না!
— আমি ঢাকা থেকে আর আসবো না! একবারে বিয়ে-শাদি করে সেখানেই স্যাটেল হয়ে যাবো! এভাবেও আমার বয়সী সুন্দর সুন্দর মেয়েদের তো আর অভাব নেই!
এবার বেলির চোখে পৃথিবীর সকল জল এসে ভিড় জমিয়েছে! ধীর গতিতে বেয়ে পড়তে লাগল!
গাড়ি ব্রিজের সামনে থেমে গেলো,
— আংকেল কে বলে দিয়েছে ভাই! ওপাশে পাবি তাঁকে!
বেলি তখনও বসে ,
— যাচ্ছিস না যে?
বেলি ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল ,
— আপনি অন্য কাউকে বিয়ে করবেন না, আমি জানি!
তৃষ্ণা মুচকি হেসে বেলির মুখ অন্ধকারে দেখার চেষ্টা করলো,
— তো কাকে করব?
বেলির উত্তর না পেয়ে তৃষ্ণা হেসে ফেলল! দু’হাতে বেলির মুখ নিজের হাতে নিয়ে চোখের পানি মুছিয়ে দিলো,
— দ্রুত চলে আসবো! হুম্মম?
বেলি মাথা নাড়ালো,
— ও-ই তো আংকেল আসছে যা!
বেলিকে বসে থাকতে দেখে তৃষ্ণা কপালে চুমু খেলো,
— যা!
বেলি কিছুটা যেতেই তাঁর বাবাকে দেখল! দৌড়ে জড়িয়ে ধরে পিছনে ফিরতেই, তৃষ্ণার গাড়ি চলে যাচ্ছে!
— তা কেমন বেরানো হলো আম্মিজান?
–অনেক ভালো আব্বু!
— তোকে ছাড়া ঘরটা পুরো শুন্যে ভেসে যাচ্ছিলো! বাড়ির সদস্য না থাকলে কি ভালোলাগে? বলেছিল ৩-৪ দিন, পরে আবার কল দিয়ে বলল, তোর নাকি আমাদের মনে পড়ছে অনেক!
— হু!
বেলি আদরে বাবাকে চেপে জড়িয়ে ধরলো!
বাড়িতে ফিরতেই টাম্মির ঘেউঘেউ তে বাড়ি সতাজ! বেলিকে চেটেপুটে দিয়েছে! বাবলু মাইক এনাউন্সমেন্ট করলো,
— আর মাত্র ১০ দিন! ফাইনাল পরিক্ষার মাঝে হবে পাউরুটির ১৭ এ-র জন্মদিন!
মা’ আর বিমানের সাথে জড়াজড়ি করে যখন ঘুমানোর সময় হলো! বেলির ঘুম আসছিলো না! স্কুল ব্যাগের মাঝে রাখা রুমালটা বের করে হাতে নিয়ে ঘুমালো!
সেই রাত্রি বেলি তৃষ্ণার রুমালের ঘ্রান শুনে ঘুমিয়েছে!

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here