অদ্ভুত মুগ্ধতা-২ পর্ব ৬

অদ্ভুত মুগ্ধতা-২
পর্ব ৬
মিশু মনি
.
মর্ম ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসল।
বাসার সামনে বেশ সুন্দর একটা বাগান। এখানে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করবে। কিছুদূর এগোতেই হঠাৎ পিছন থেকে একটা মেয়েলি কণ্ঠস্বর ভেসে আসলো “দাঁড়ান ”
মর্ম পিছনে তাকিয়ে দেখলো মুগ্ধতা! ওর মনেই ছিলোনা রাতে একটা মেয়েকে সাথে করে নিয়ে এসেছিলো। অনেকটা মুগ্ধ হয়েই চেয়ে রইলো ওর দিকে।
মুগ্ধতা দৌড়ে এসে মর্ম’র সামনে দাঁড়িয়ে বললো, “গুড মর্নিং”
– “ভেরি গুড মর্নিং”
– “কেমন আছেন? ”
মর্ম মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, “হুম বেশ ভালো আছি। আপনি?”
– “আমিও।”
এরপর দুজনেই পাশাপাশি হাটতে লাগলো কিছুক্ষণ। একটু সময় পরেই মর্ম বললো, “আপনি বাসায় ফিরবেন কখন? ”
মুগ্ধতা নিঃসংকোচে বললল, “না ফিরলে হয়না?”
– “মানে!”
– “না কিছুনা”
মর্ম মুচকি হেসে বলল, “এই বাড়িটাকে কেমন লাগছে আপনার?”
মুগ্ধতা বাড়িটার দিকে তাকালো। রাতের ঝড় বৃষ্টি আর অন্ধকারের মাঝে বাড়িটার সৌন্দর্য কিছুই বোঝা যায়নি। কিন্তু এখন সত্যিই অসাধারণ লাগছে! এরকম জায়গায় এরকম পুরনো আমলের একটা বাড়ি পাওয়া যাবে ভাবাই যায়না!
ও মুগ্ধ হয়ে বলল, “বাড়িটা দেখলেই কেমন যেন মায়া মায়া লাগে।”
মর্ম হেসে ফেললো ওর কথায়-“বাড়ি দেখে কখনো মায়া মায়া লাগে নাকি?”
– “হ্যা লাগে। সবকিছুর মধ্যেই মায়া থাকতে পারে। এই বাড়িটা অনেক করুণ দেখাচ্ছে। সাধারণ বাড়িগুলো এরকম দেখায় না।”
মর্ম হেসে বলল, “বাহ! বেশ আর্ট বোঝেন দেখছি! আমি চাচ্ছি এখানে একটা ফিল্মের শ্যুট করতে। অর্ধেক শ্যুট হবে এখানে, আর বাকি অর্ধেক হবে ঢাকায়।”
মুগ্ধতা অবাক হয়ে বললো, “সত্যি বলছেন! সিনেমার জন্য একদম পারফেক্ট একটা বাড়ি। শুনুন না,আমি না কখনো শুটিং করা দেখিনি। আপনারা কাজগুলো কিভাবে করেন আমার কাছ থেকে দেখার খুব ইচ্ছে। আমি কি কয়েকটা দিন এখানে থাকতে পারি?”
মর্ম রীতিমত অবাক বনে গেছে। কোনো ছেলে এটা বললে স্বাভাবিক মনে হতো। কিন্তু একটা মেয়ে এভাবে বলতে পারে ওর জানা ছিলোনা। তাও আবার চেনা শোনা নেই,একদম অচেনা অজানা একজন মানুষ! রাস্তায় দেখা তারপর দুম করে সাথে চলে এলো। মেয়েটা এমন অদ্ভুত কেন?
মুগ্ধতা বললো, “কি ভাবছেন আপনি?”
– “ভাবছি আপনি এলিয়েন কিনা?”
মুগ্ধতা হেসে বললো, “নাহ। আমি এই গ্রহের ই একজন মানবী। কেন বিশ্বাস হয়না? বিশ্বাস না হলে ছুঁয়ে দেখুন।”
মুগ্ধতা এক হাত বাড়িয়ে দিলো মর্ম’র দিকে। এবার মর্ম’র আরো অবাক হবার পালা। এ কেমন মেয়ে! সত্যিই দুনিয়ায় কত রহস্যময় নারী যে আছে তার ইয়ত্তা নেই। মেয়েটাকে প্রথম থেকেই ওর খুব অদ্ভুত অদ্ভুত লাগছে। এখন ওর কথার ধরণ দেখে আরো বেশি।
মুগ্ধতা কিছুক্ষণ হাত বাড়িয়ে থাকার পর হাতটা নামিয়ে নিয়ে বললো, “কিছু বললেন না যে? আমাকে কয়েকটা দিন কাছ থেকে শুটিং দেখার অনুমতি দিবেন?”

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন



– “কিন্তু আপনার ফ্যামিলি? বাসায় কিভাবে ম্যানেজ করবেন?”
– “সেটা আমার উপর ছেড়ে দিন না।”
– “মিথ্যা বলে এখানে এনজয় করার ব্যাপার টা আমি সাপোর্ট করতে পারছি না।
মুগ্ধতা হেসে বলল, “আমার বাবা মা কেউই নেই। আমি চাচার কাছে মানুষ। ওরা আমাকে ততটা ভালোবাসে না। কাজেই ওদেরকে বানিয়ে বানিয়ে কিছু বলে কোথাও ভালো থাকলে কিছুই যায় আসেনা। চাচী আমাকে প্রায়ই মারধোর করে। তারচেয়ে এখানে কটা দিন ভালো থাকতে চাইলে খুব কি ক্ষতি হবে?”
এবারে মর্ম’র মনটা কেমন যেন হয়ে গেলো। মুগ্ধতার এই অসহায়ত্বের কথা শুনে ওর একটু মায়া লাগছে মেয়েটার জন্য। কারো বাবা মা নেই শুনলে এমনিতেই মনে তার প্রতি এক ধরণের সহানুভূতি চলে আসে। সেখানে এত সুন্দর মেয়েটাকে যদি মারধোর করে খারাপ তো লাগবেই।
মর্ম বললো “ঠিকাছে আপনি যতদিন ইচ্ছে ততদিন থাকুন এখানে। আজই আমাদের টিম চলে আসবে। তারপর আশাকরি আর খারাপ লাগবে না। অনেক মেয়েও আছে, তাদের সাথে দিব্যি গল্প করতে পারবেন। একদম ফ্রেন্ডশিপ হয়ে যাবে।”
মুগ্ধতা খুশি হয়ে বললো, “আর আপনার সাথে?”
মর্ম একটু চমকে গেলো। ভ্রু কুঁচকে বলল, “আমার সাথে আবার কি?”
মুগ্ধতা মুচকি হেসে বললো, “আপনার সাথে গল্প হবেনা?”
– “হ্যা, অবশ্যই হবে। সবসময় তো আর কাজে ব্যস্ত থাকবো না। ফ্রি টাইমটায় কফি আড্ডা দেয়া যেতেই পারে।”
মুগ্ধতা মনে মনে দারুণ খুশি হলো। আসলে ওর কেন যেন ইচ্ছে করছে সবসময় মর্ম’র সাথে সাথে থাকতে। আর কোথাও যেতেই ইচ্ছে করছে না। ও মনে মনে ভাবলো, “নির্ঘাত মর্ম’র প্রেমে পড়ে গেছি।এবারে তো আমি শেষ।”
দুজনে পাশাপাশি হাটতে হাটতে গল্প করতে লাগলো।

মিশু ঘুম ভাংলে চোখ মেলে দেখলো মৈত্রীকে জাপটে ধরে ঘুমিয়ে আছে! মৈত্রীও ওকে দুহাতে ধরে অঘোরে ঘুমোচ্ছে। মিশুর কেমন যেন লজ্জা পেয়ে গেলো। এরকম তো কখনো হয়নি আগে। বুক থেকে একটু নড়তেও ইচ্ছে করছে না। মন চাইছে এভাবেই অনন্তকাল শুয়ে থাকতে। ওর বুকে মাথা রাখলে এত প্রশান্তি লাগছে কেন? মিশু কান পেতে শোনার চেষ্টা করলো, মৈত্রীর বুকের ভিতর শব্দ হচ্ছে- ঢিপ ঢিপ… অনেক্ষণ চুপ করে সে শব্দ শুনলো মিশু। মিশুর নিজেরও বুকের ভিতরটা কেমন যেন করছে। অস্থির অস্থির লাগছে ভীষণ। মৈত্রীর জন্য আরো অনেক অনেক মায়া জন্ম নিচ্ছে বোধহয়। এই মুহুর্তে ওর মনে হচ্ছে, “মৈত্রীকে ছাড়া একটা সেকেন্ডও বুঝি আমি থাকতে পারবো না। সত্যিই অনেক ভালোবেসে ফেলেছি!”
মৈত্রীর ঘুমন্ত চেহারাটা অনেক সুন্দর দেখতে! একবার সেদিকে তাকিয়ে মিশুর মনটা আরো কেমন কেমন করতে লাগলো। ধুর,এমন হচ্ছে কেন? এমন তো হয়নি আগে কখনো। ও ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলো মৈত্রীর মুখের দিকে। এভাবে অনেক্ষণ কেটে যাওয়ার পর মৈত্রী চোখ মেললো হঠাৎ। মিশু লজ্জা পেলেও চোখ সরালো না। তাকিয়েই রইলো। মৈত্রী ঘুম ভাঙার পর এরকম বুকের উপর মিশুর মুখটা আর ভয়ংকর ওই দৃষ্টির পাল্লায় পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলো। মিশুর ঘুম ঘুম চেহারাটা কি অপূর্বই না লাগছে! তারচেয়েও বেশি মায়া লাগছে ওর এই মায়াবী চোখ দুটো দেখে। এই চোখের দিকে তাকিয়ে একটা যুগ কাটিয়ে দেয়া যায়। বাচ্চা মেয়েটা হঠাৎ করেই এমন বড় হয়ে গেলো কেন!
মিশু মৈত্রীকে অবাক করে দিয়ে বলল, “আই লাভ ইউ”
মৈত্রী এবারে সবচেয়ে বেশি অবাক! বিস্ময়ে ওর কথা বেরোচ্ছে না মুখ দিয়ে। অনেক চেষ্টা করার পরও কিছু বলতে পারলো না।
মিশু একটু ক্ষেপে গিয়ে বলল, “দুইবার বললাম।”
মৈত্রী লজ্জা পেয়ে বলল, “তুমি বড় হয়ে গেছো মিশু।”
– “আমাকে কি আপনার ছোট মনেহয়?”
– “আগে মনে হতো। খুবই বাচ্চাবাচ্চা লাগতো। কাল সন্ধ্যার পর থেকে আর বাচ্চাবাচ্চা মনে হচ্ছেনা।”
– “বিয়ে হলেই এক বছরের মাথায় একটা ফুটফুটে বাচ্চা হবে আমাদের। আমি যদি এখনো বাচ্চাবাচ্চা থাকি তাহলে আমাদের বাচ্চাকাচ্চার যত্ন নিবো কি করে?”
মৈত্রী হেসে বললো, “ওরে আমার পাক্না বুড়ি রে। একদম সবকিছুই বুঝে গেছো দেখছি। সত্যিই অনেক বড় হয়ে গেছো বাবা। এবারে বিয়ে দিতে হবে।”
মিশু একটু অভিমানী সুরে বলল,”বিয়ে দিতে হবে?”
মৈত্রী হেসে বলল, “সরি, বিয়ে করতে হবে। আর শোন, আমাদের বাচ্চাটা একটু বড় হয়ে যাওয়ার পর তুমি কিন্তু ট্রাভেলিং এ বের হবা। তখন ওকে আমি মানুষ করবো। আম্মু আর খুজিন্তা তো আছেই।”
মিশু একটু চিন্তিত হয়ে বলল, “মেয়েকে রেখে আমি ট্রাভেলিং এ বের হবো?”
– “হ্যা,তুমি না ভাস্কো দা গামা হবা, রবীনসন ক্রুশো হবা?”
– “না,আমি মিশু। মিশু তো মিশুই, অনলি ওয়ান পিস ইন দা ওয়ার্ল্ড”
মৈত্রী হেসে বলল, “বাব্বাহ! ইদানীং বেশ ডায়ালগ ও শিখে গেছো দেখছি।”
– “বড় হয়ে গেছিনা?”
– “কতটা বড় হয়েছো শুনি? একটু বড়গিরি দেখাও দেখি।”
কথাটা বলা শেষ হতেই আচমকা মিশু ওর একটা পা মৈত্রীর পায়ের উপর তুলে আলতো করে স্পর্শ করে পা টা মৈত্রীর হাটু অব্দি নিয়ে আসলো। শিহরিত হয়ে উঠলো মৈত্রী! আবেশে চোখ বুজে ফেললো। এরকম অনুভূতি জীবনে প্রথম অনুভব করলো ও।এ কেমন ফিলিংস! এ কি সত্যিই আমাদের মিশু? মিশু কতটা বড় হয়ে গেছে সেটা বোঝার জন্য এটুকুই যথেষ্ট ছিলো।
মিশু খেয়াল করে দেখলো মৈত্রীর মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে উঠেছে! ও চোখ খুলছে না। ওর চোখের পাতা কাঁপছে। মিশু বেশ বিস্ময় নিয়ে ব্যাপার টা উপভোগ করতে লাগলো। ছেলেরাও লজ্জা পায় তাহলে! ও খিলখিল করে হেসে উঠলো। ওর হাসির শব্দে চোখ মেললো মৈত্রী। কিন্তু কিছু বলতে পারলো না। মিশুর চোখে মুখে দুষ্টুমি ভরা হাসি!
মৈত্রী একটু সময় নিয়ে বলল, “সত্যিই তুমি অনেক বড় হয়ে গেছো মিশু। একেবারে পেকে পাক্না বুড়ি!”
– “মানুষ পাকলে বুড়ি হয় সেটা জানতাম না। অনেক মানুষ কিন্তু বুড়ি হওয়ার পরেও কাঁচাই থাকে, পাক্না হয়না।”
মৈত্রী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, “বুঝছি। বাবা তোমাকে আর এভাবে রাখা যাবেনা। যত দ্রুত পারি বিয়েটা করে ফেলতে হবে।”
মিশু এতক্ষণে লজ্জা পেলো মনেহচ্ছে। মৈত্রী হেসে বলল, “এতক্ষণ লজ্জা পায়নি, ভালোবাসি বলতে লজ্জা পায়নি আর বিয়ের কথা শুনে লজ্জায় লজ্জাবতী লতিকা হয়ে গেলো!”
মিশু লাজুক লাজুক স্বরেই বলল, “হুম হুম হুম। এবার উঠুন তো।”
– ” তুমি তো আমার বুকের উপর শুয়ে আছো। তুমিই ওঠো আগে।”
– “আমি শাড়ি পড়ে কখনো ঘুমাই নি।আমার শাড়ি খুলে গেছে।”
মৈত্রী এবারে এত লজ্জা পেলো যা ছিলো দেখার মত। মিশু হা করে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে। লজ্জায় মৈত্রীর চোখের পাতা ঘনঘন কাঁপছিল। মিশুর বেশ মজা লাগছে আবার কেমন যেন অস্থিরতাও কাজ করছে। মৈত্রী আস্তে করে মিশুকে ছেড়ে দিয়ে চাঁদরের নিচ থেকে বের হয়ে এলো। তারপর কোনোদিকে না তাকিয়েই সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলো।
মিশু কিছুক্ষণ বালিশটাকে ধরে শুয়ে রইলো। তারপর উঠে শাড়িটা নতুন করে পড়ে চুলগুলো আচড়ে নিলো। মৈত্রী বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এসেও ওর দিকে তাকালো না। বললো, “তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাও। অনেক বেলা হয়েছে। নাস্তা করে বাংলোটা ঘুরে ঘুরে দেখাই তোমাকে”
– “ঠিকাছে”
মিশু মুখ টিপে হাসতে হাসতে বাথরুমের দিকে চলে গেলো। ওর নিজেকে দেখে নিজেরই অবাক লাগছে! দুদিন আগেও কত অবুঝ ছিলাম! এত অল্প সময়েই এত ম্যাচিউরিটি চলে আসলো কোথ থেকে? আসলে প্রকৃতি সময়মত সবকিছু বুঝিয়ে আর শিখিয়ে দেয়। নয়ত এত সুন্দর একটা সময় আর এমন সুখের কিছু অনুভূতি অগোচরেই থেকে যেতো!
খাওয়াদাওয়া করেই ইফতি ও তানিন রওনা দিয়েছে।
মর্ম’র নতুন ফিল্মটাতে এরাই অভিনয় করবে।যদিও ফিল্মে ইফতির রোল খুবই অল্প।তবুও ইফতি’র মনে খুব আনন্দ। সম্প্রতি ফেস্টিভালে যে ফিল্মটা ফার্স্ট হয়েছে তার প্রধান চরিত্রে ছিলো ইফতি। সারাদেশে ব্যপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ফিল্ম সম্পর্কে অজ্ঞ হওয়ার কারণে আপাতত পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমায় নায়কের পার্ট ওকে দেয়া হয়নি। যেহেতু এটা মর্ম’র প্রথম ছবি,কাজেই দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করতে হবে তো। সেজন্য একজন ভালো অভিনেতাকে নায়কের পার্ট দেয়া হয়েছে। আর ইফতি সাইড নায়কের একটা পার্ট করবে।
তানিন বলল,”আচ্ছা ইফু তুমি সবসময় হাসো কেন?”
– “কই না তো। আসলে আমার মুখটাই এমন মোনালিসা টাইপের।”
তানিন হাসলো ওর কথা শুনে। মুখ আবার মোনালিসা টাইপ হয় নাকি! বেশ ভালো।
ইফতি বললো, “জানো তানিন আমার বেশ অবাক লাগে ভাবলে। আমি আমার জন্মের পর কল্পনা তো দূরের কথা, কখনো স্বপ্নেও ভাবিনী আমি কোনোদিনো ফিল্মে কাজ করবো। তুমি কিভাবে যে কোথ থেকে আমাকে ফিল্মে নিয়ে এলে, আমিও কাজটা করলাম আর ফার্স্ট ও হয়ে গেলাম। এখনো বিশ্বাস করতে পারিনা।”
তানিন বললো, “আসলে তুমি যেদিন প্রথম আমাদের বাসায় এসেছো, সেদিন ই তোমাকে আপাদমস্তক দেখেই আমার মনে হয়েছিল তোমাকে দিয়ে কাজটা করা যেতে পারে।”
– “এ জন্যই ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে ছিলে? আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। মেয়েটা এমন নির্লজ্জের মত তাকিয়ে আছে। তখন তো আর জানতাম না তুমি কেন ওভাবে চেয়ে আছো?”
তানিন হাসলো।
ইফতি বললো, “আংকেল সেদিন বললেন ওনার মেয়েকে বিজনেসের সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবেন। তুমি যে যশোরে যাচ্ছো? অফিসে বসবে না?”
– “আব্বু তার মেয়ে বলতে মিশুকে বুঝিয়েছে। মিশুর হাতে সব দায়িত্ব দিয়ে দিবে। মিশু সাথে খুজিন্তাকেও নেবে। মিশুর আবার ট্রাভেলার হওয়ার শখ, ও খুজিন্তাকে কাজ দিয়ে ট্রাভেলিং করতে যাবে।”
ইফতি অবাক হয়ে বললো, “তোমাদের ফ্যামিলির মত ফ্যামিলি যদি প্রত্যেকের হতো! লাইফটা সবাই নিজেদের মত করে উপভোগ করতে পারতো। এরকম একটা বাবা কেন যে সবার হয়না!”
তানিন হেসে বলল, “হুম। আব্বু তার জামাইকেও ছেলের মত অধিকার দিবেন মেয়বি।”
– “তাই নাকি! তোমার আরেকটা বোন থাকলে আমি জামাই হওয়ার চেষ্টা করতাম।”
তানিনের খুব ইচ্ছে করছিলো বলতে “আমিতো আছিই”। কিন্তু বলতে পারলো না। শুধু জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে হাসলো।ইফতি কে এখনো ও একজন আদর্শ বন্ধু হিসেবে ভাবে। এরচেয়ে বেশি কিছু ভাব্বার সময় এখনো আসেনি। সবকিছুর আগে নিজের ক্যারিয়ার।
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here