অদ্ভুত সুখানুভূতি পর্ব ১০

#অদ্ভুত_সুখানুভূতি
#সাদিয়া_আহমেদ_রোজ
#পর্ব_১০

মাস দেড়েক আগের কথা। মেঘ তখন টোটালি মেন্টালি সিক। মেঘের রোগের লক্ষনগুলো এমন, যখন তখন রোজ রোজ বলে চিৎকার করে। গভীর রাতে অথবা ভোরে নদীর পাড়ে এসে বসে থাকে। বাংলো তে গিয়ে কান্নাকাটি করে। ব্রিজ থেকে যাকে তাকে ধরে এনে রোজের কথা জিজ্ঞেস করে। মেরে ফেলার ভয় দেখায়। একা একা হেসে ওঠে।

আরাভ মেঘকে নিয়ে সেদিন নদীর পাড় দিয়ে হাটছে। ওপারে একটা অনাথ আশ্রম আছে। আরাভ এখানে বহুবার এসেছে ডোনেশন দিতে। ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে। কিন্তু সেদিন কোনো এক কারনে মেঘ হুট করে নদীতে ঝাপ দেয়। আরাভ কোনো মতে মেঘকে তুলে বাড়ি নিয়ে আসে।

রাতে মেঘের জ্ঞান ফিরতেই মেঘ রোজ রোজ বলে চিল্লাতে থাকে । আরাভ মোহনা ছুটে আসে মেঘের কাছে।

মোহনা : মেঘ কি হয়েছে তোর..? এমন করছিস কেন..? শান্ত হ বাবা। এমন করিস না শরীর খারাপ হবে।

মেঘ :আমি রোজকে দেখেছি। ওই আশ্রমের ছাদে।আমার মন বলছে ওটা রোজই ছিলো। আমি যাবো ওখানে। আমি এখুনি যাবো।

মোহনা :ওটা রোজ না। রোজ মারা গেছে। এই কঠিন সত্যিটা তোকে মানতেই হবে মেঘ। রোজ আর নেই,, নেই,,নেই

মেঘ :আছে। আমার রোজ আছে। তোমরা যদি আমাকে রোজের কাছে যেতে না দাও তাহলে আমি,, আমি নিজেকে শেষ করে দিবো।

আরাভ : আচ্ছা আচ্ছা কাল সকালে যাবো। কিন্তু তার আগে তোকে কিছু খেয়ে ঘুমাতে হবে।

মেঘ : ঘুমাবো না আমি। আমাকে তাড়াতাড়ি রোজের কাছে যেতে হবে।

আরাভ : সকাল সকাল না ঘুমালে ভোরে উঠতে পারবি না। আর ভোরে না উঠলে রোজের কাছে যাবি কিভাবে ..?

মেঘ : আচ্ছা ? তাহলে আমি এখনি খাবো আর এখুনি ঘুমাবো।

পরদিন আরাভ আলিজা আর মেঘ যায় সে আশ্রমে। কিন্তু আশ্রমের কোথাও রোজকে পায় না । ফেরার পথে ওদের নজর যায় নদীর পাড়ে, পানিতে পা ডুবিয়ে পেছনে একরাশ চুলে ছেড়ে দিয়ে বসে থাকা একটা মেয়ের দিকে। আলিজারা মেয়েটির দিকে এগিয়ে যায়।

মেয়েটিঃ
কবে তুমি নাম ধরে ডাকবে
কবে তুমি হাতে হাত রাখবে,,,,,

আলিজাঃ
কবে তুমি নাম ধরে ডাকবে
কবে তুমি হাতে হাত রাখবে।

আরাভঃ
সেই আশাতে দিন কাটাতে
মন শুধু চায়,,,,,

আলিজাঃ
সেই আশাতে দিন কাটাতে
মন শুধু চায়।

মেয়েটিঃ
এই ভালোবাসা তোমাকে পেতে চায়
এই ভালোবাসা তোমাকে পেতে চায়,,,,,
ওই দুটি চোখ যেন কিছু বলে যায়।
ওই দুটি চোখ যেন কিছু বলে যায়।

মেঘঃ
কেন তুমি আছো বহুদুরে
দাও ধরা এসে বাহুডোরে,,,,,
কেন তুমি আছো বহুদুরে
দাও ধরা এসে বাহুডোরে।

মেয়েটিঃ
এই কবিতা সেই পারতা
লিখে দিয়ে যাই,,,,,
এই কবিতা সেই পারতা
লিখে দিয়ে যাই।

মেঘঃ
এই ভালোবাসা তোমাকে পেতে চায়

মেয়েটিঃ
এই ভালোবাসা তোমাকে পেতে চায়,,,,,

আরাভঃ
ওই দুটি চোখ যেন কিছু বলে যায়

আলিজাঃ
ওই দুটি চোখ যেন কিছু বলে যায়।

মেয়েটি এতোক্ষনে আনমনে গাইছিলো ওর খেয়ালই ছিলো না যে গানের সুর গুলো আরো তিনটা ভিন্ন মানুষের গলা দিয়ে শোনা যাচ্ছে। মেয়েটি গান শেষ হতেই নদীতে ঝাপ দেয়। মেঘের সামনে রোজের প্রতিবিম্ব ভেসে ওঠে । ও নিজেও পানিতে ঝাপ দিয়ে মেয়েটার কোমর ধরে উচু করে তুললো।

মেয়েটি : বাঁচাও আমাকে ভুতে নিয়ে যাচ্ছে।

মেয়েটি মুখের সামনে থেকে চুল সড়াতেই আলিজা কেঁপে ওঠে। প্রায় সাড়ে তিনবছর পর রোজের সেই চেনা মুখটা সামনে থেকে দেখছে আলিজা। রোজ উঠে পাড়ে বসতেই মেঘ রোজকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে,, রোজের চোখে মুখে চুঁমু খেতে লাগে।

মেঘ : কেন মরতে যাচ্ছিলে,, আমার ওপর রাগ করে,, আমি তোমার সব কথা শুনবো তবুও আর রাগ করো না। তোমাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না তুমি কেন এখানে আছো। তুমি আজই আমার সাথে বাড়ি যাবা।

মেয়েটি : ছাড়ুন,, ছাড়ুন আমাকে। আমি আপনার সাথে যাবো না । আর আমি মরতে যাচ্ছি এটা কে বলেছে..? আমি তো গোসল করতে যাচ্ছিলাম। অনেকদিন ধরে ভাবছি নদীতে সাতার কাটবো আর কোথেকে এক পাগল এসে টানাটানি শুরু করছে। ধুর সরুন ইশ

মেঘ : ছাড়বো না। তুমি আমার সাথেই যাবে।

মেয়েটি : আমি যাবো না। ওই আপনারা কারা.?

আরাভ : আমি ওর ভাই।

মেয়েটি : তো নিজের ভাইকে সামলান। টানাটানি করছে কেন.? আমি কি দড়ি.? উফফ এই ছাড়ুন ছাড়ুন। মিস মিস বাঁচানননন

মেঘ : চুপ। কোনো কথা বলবে না। আরাভ গাড়ি ঘুড়িয়ে আন। আমরা এখুনি বাড়ি যাবো।

দূর থেকে মেঘদের দেখে আশ্রমের মিস ছুটে আসলেন।

মিস : কি হচ্ছে এখানে। একি রোজ তুমি আবার নদীতে নেমেছো.? যাও তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে আসো। নাহলে ঠান্ডা লাগবে। আর আপনারা কারা.?

মেঘ :আমি ওর হাসবেন্ড।

রোজ : নো মিস। আমি এই লোকটাকে চিনি না। গোসল করতে নেমেছি আর এই লোকটা আমাকে টেনে তুলছে। তারপর বেয়াদবি করছে।

আলিজা : রোজ এমন করছিস কেন.? ও তোর হাসবেন্ড হয়। আমি তোর আপিলা দেখ আমাদের ওপর রেগে থাকলে আমাদের বল তবুও এমন করিস না। মেঘ অনেক কষ্ট পেয়েছে ওকে আর কষ্ট দিস না…

রোজ : মিস দেখুন এরা কি বলছে। মিস এরা আমাকে কিডন্যাপ করতে চায় আমাকে বাঁচান মিস। আমি যাবো না ওদের সাথে আমি এখানে থাকবো। ( কাঁদতে কাঁদতে বললো )

মিস : রোজ তুমি ভেতরে যাও। আর আরাভ আপনি প্লিজ চলে যান। রোজ আমাদের আশ্রমেরই মেয়ে তাই ওকে আর বিরক্ত করবেন না।

কথাটা বলেই চলে গেলো মিস। আলিজা মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে। কারন রাগে মেঘের চোখ লাল হয়ে আছে। হাত মুঠোবন্দি করে আশ্রমের গেটের দিকে চেয়ে আছে।

আরাভ : মেঘ চল। ও আমাদের রোজ না।

আলিজা : ও আমাদেরই রোজ। এই গানটা আমি ছোটবেলায় রোজকে গেয়ে শোনাতাম। ও মাঝে মাঝেই এটা গায়। এই সূর এই গলা রোজের ছাড়া কারোর হতে পারে না।

আরাভ : গান সবাই শোনে আর গাইতে পারে। হয়তো এই মেয়েটাও গায়। ( মেঘের সামনে এসব বলো না। ও হাইপার হয়ে যাবে। আমরা পরে আবার এসে রোজের সব খবর নিয়ে যাবো। এখন চলো মেঘকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। )

আলিজা : হুম। মেঘ ভাইয়া চলো।

মেঘ : আমি যাবো না। এখানেই থাকবো। রোজ আমাকে চেনে না বলেছে। ও কেন বললো এটা। কেন.? ও যতক্ষন না বলবে ও আমাকে চেনে ততক্ষন আমি এখানেই থাকবো। যাবো না আমি কোথাও যাবো না।

আরাভ : মেঘ পাগলামি করিস না। বাড়ি চল কাল আবার আসবো।

আলিজা : হ্যা। আর তারপর রোজকে তুলে নিয়ে যাবো। এখন চলো। আরাভ গাড়ি আনো এখানে। আমি আর হাটতে পারবো না।



পরদিন মেঘ আবার আশ্রমে যায়। রোজ মেঘকে দূর থেকে দেখেই এক ছুটে নিজের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়।

রোজ : আল্লাহ গো আজ আবার আইছে। সব পাগল কি আমার কপালে এসে জোটে.? দরজা খুলবো না। কিছুতেই না।

মেঘ : ওটা রোজ ছিলো আমাকে দেখে পালিয়ে গেলো কেন..? মিস শুনুন।

মিস : আপনি আবার এসেছেন.? বলেছি না আসবেন না।

মেঘ : মিস রোজকে কি নদীতে পেয়েছেন.?

মিস : এবিষয়ে কথা বলতে চাইনা আমি। আপনি চলে যান। আর কখনো আসবেন না এখানে।

মেঘ : রোজকে আমার সাথে যেতে দিন মিস। ওকে একটু বুঝিয়ে বলুন প্লিজ আমরা ওর পরিবার। আমরা ওর ভালো চাই। আপনি বললে ও বিশ্বাস করবে।

মিস : দেখুন শেষবারের মতো বলছি চলে যান। নাহলে পুলিশ ডাকতে বাধ্য হবো।

মেঘ : আপনার গলার লকেটটা নিশ্চই রোজের.?

কথাটা শুনেই ঢোক গিললো মিস। কারন তার গলার লকেটটা আসলেই রোজের। রোজকে যেদিন অজ্ঞান অবস্থায় নদীর তীরে পায় সেদিও রোজের গলায় এই লকেটটাই ছিলো কিন্তু মেঘ জানলো কিভাবে.?

মিস : আপনি জানলেন কিভাবে.?

মেঘ : কারন এই লকেটের নিচে মুন আর উপরে রোজ লেখা আর এটা হাফ লকেট। লকেটের আরেকটা অংশ আমার কাছে এইযে।

মেঘ পকেট থেকে লকেট বের করে মিসকে দেখায়। মিস লজ্জা পেয়ে নিজের গলা থেকে লকেটটা খুলে মেঘের হাতে দেয়।

মিস : আসলে আমি কাউকে জানতে দিতে চাইনি। সেদিন বোম ব্লাস্টের কথাটা নিউজ পেপারে দেখেছি। যদি রোজের পরিচয় ওর বিপদ ডেকে আনে তাই ওকে নিজের কাছে রেখেছি। আর রোজ নিজের অতিত ভুলে গেছে সেজন্য আরাভ আর আপনাদের চলে যেতে বলেছি। আরাভের কাছে শুনেছি আপনি মেন্টালি সিক আর রোজ আপনাকে ভয় পায়।

মেঘ : আসলে আমি নিজেও জানি না আমি কি করি,, কখন করি। বুঝে উঠতে পারি না কিছু কিন্তু চিন্তা করবেন না রোজ আমাকে ভয় পাবে না। আমি ঠিক হয়ে যাবো। নিজেকে আবার আগের মতো বানিয়ে তারপর আসবো এখানে। ততদিন রোজকে দেখে রাখুন। প্লিজ।

মিস : চিন্তা করবেন না। ও ভালো থাকবে।



বিয়ের আগের দিন। মেঘ একা গিয়েছিলো আশ্রমে। রোজ তখন বাচ্চাদের সাথে খেলছিলো। মেঘ রোজের হাত চেপে ধরতেই রোজ চিৎকার দিয়ে ওঠে।

মেঘ : রোজ আমি। তোমার মেঘরোদ্দুর।

রোজ : আপনি সেদিনের পাগলটা না.? ছাড়ুন আমি ঘরে যাবো।

মেঘ : হ্যা যাবে তবে নিজের ঘরে। আমার সাথে যাবে তুমি।

রোজ : আমি যাবো না। মিস মিস এদিকে আসুন। দেখুন আমাকে জোর করে

কথা শেষ হবার আগেই মেঘ খুব জোরে রোজের গালে চর দিলো। রোজ ভয়ে সেন্স হারিয়ে ফেলে। মেঘ রোজকে কোলে তুলে গাড়িতে বসায়। তারপর বাড়ি চলে আসে।

রাতের বেলা
রোজ রুমের মধ্যে বসে কাঁদছে আর দেওয়ালে মাথা ঠুকছে। কিছুক্ষন আগে মেঘ এসে জোর করে ওকে ভাত আর কিছু ট্যাবলেট গিলিয়ে গেছে।

রোজ : থাকবো না এখানে। পালিয়ে যাবো। আল্লাহ পালানোর একটা রাস্তা দেখিয়ে দাও। আমি ফিরে যেতে চাই।

রোজ চোখের পানি মুছে করিডোরে আসলো। আর দেখলো কাছেই সানসেট। রোজ কোনো দিকে না তাকিয়ে সানসেটের ওপর লাফ দিয়ে বাগানে লাফ দিলো। শব্দ পেয়ে মেঘের ঘুম ভেঙে যায়। মেঘ জানালা দিয়ে উঁকি দিতেই ওর মাথায় রক্ত চড়ে যায়। রোজ রাস্তা দিয়ে দৌড়াচ্ছে।

ভোর ৫টা। মেঘ এখনো রোজকে খুজে চলেছে। ওদিকে রোজ মেঘের থেকে লুকানোর জন্যই ভুল করে মেঘদের বাড়ির পেছনের ফার্মহাউজে গিয়ে দরজা লাগিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকে।

মেঘ চারদিকে তাকিয়ে দেখে রোজের ওরনা ওদের ফার্মহাউজের দরজার নিচ থেকে কিছুটা বেরিয়ে আছে। মেঘ রেগে গিয়ে দরজা ভেঙে ফেলে তারপর রোজকে টানতে টানতে বাড়ি নিয়ে আসে।

মেঘকে এভাবে দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়। মেঘ রোজকে নিজের ঘরের বিছানায় ছুরে ফেলে দিলো।তারপর গিয়ে একটা লাঠি নিয়ে আসলো।

মেঘ : পালিয়ে যাওয়ার অনেক শখ তোমার তাইনা। এই পা দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাইরে গেছিলো আজ এই পা টাই আর রাখবো না।

মেঘ লাঠি দিয়ে রোজের পায়ে বাড়ি দিতে লাগলো। প্রথমে ব্যাথা লাগলেও পরে অবশ হয়ে আসে রোজের পা। রোজের পা কেটে রক্ত বের হচ্ছে তবুও রোজ টু শব্দ করছে না। কিন্তু মোহনা হুট করে চলে এসে এসব দেখে চিল্লিয়ে রোজকে জরিয়ে ধরে।মোহনার চিৎকার শুনে মৃন্ময়ও মেঘের রুমে আসে আর এসব দেখে মেঘকে ঠাস ঠাস করে থাপ্পড় দিয়ে বকাবকি করে রুম থেকে বের করে দেয়।

মেঘ বিকালে কাজি নিয়ে আসে। দুপুরে রোজের জুসে আগেই ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে দিয়েছিলো তাই রোজ ঘোরের মধ্যেই কবুল বলে দেয়। মেঘ কিছু প্রেসের লোক এনে বিয়েটা লাইভ টেলিকাস্ট করে যেন পরে রোজ কোনো ঝামেলা না করে।
♠♠♠

সম্রাট : তুমি আমার বোনকে মেরেছো এর শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে মেঘ। আর সেটা হলো রোজকে আবার ওর অতিত মনে করাবা তুমি আর নীলাদ্রিকে খুজে এনে রোজের প্রতিশোধ পুরণ করতে দেওয়ার সব দায়িত্ব তোমাকে নিতে হবে।আর যতটা কষ্ট দিয়েছো আমার বোনকে তার ডাবল ভালোবাসা দিয়ে ওকে আগলে রাখবে।

হঠাৎ আদ্র কেঁদে ওঠে। রোজ আদ্রর কান্না শুনে মৃদুলকে নিয়ে আলিজার রুমে আসে। রোজ মৃদুলকে পাশে রেখে আদ্রকে কোলে নিতেই আদ্র থেমে যায়। আরাভ সেটা দেখে মেঘকে কনুই দিয়ে খোচা মারে। আদ্র চুপ করলে রোজ আদ্রকে শুইয়ে দিয়ে মৃদুলকে কোলে নেয়। তখনই আদ্র আবার চিল্লিয়ে কেঁদে ওঠে। রোজ মৃদুলকে নিচে বসিয়ে দিলো। আদ্র এবার হাসছে। রোজ টেস্ট করার জন্য মৃদুলকে আবার কোলে নিলো। আদ্র আবার কেঁদে উঠলো। সেটা দেখে বাকিরা জোরে জোরে হাসছে।

আলিজা : কি ছেলেরে বাবা। রোজ ওকে নিয়ে যা আমি একটু ঘুমাবো। সারাদিন খালি কান্নাকাটি করে। মিমি ছাড়া চলে না। জন্ম দিলাম তাও খাওয়ার সময় ছাড়া মায়ের কাছে আসে না।

রোজ : আমি রক্ত দিয়েছিলাম নাহহ..?? রক্ত কথা বলছে। আসো আদ্র চলো আমরা ঘুমু ঘুমু দেই। মৃদুল তুমিও আসো।

রোজ দুকোলে দুজনকে নিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো।সম্রাট সুমির দিকে তাকিয়ে বললো,,

সম্রাট : দেখো কিভাবে বাচ্চা সামলায়। তুমি তো ভয়েই মরে যাচ্ছো। আমার বোনকে দেখো এই বয়সে একসাথে দুটো করে সামলায়। ভাবছি ইনি বের হওয়ার পর আরেকজনকে এনে তোমাকে জ্বালানোর আশাটা পূরণ করবো।

সুমি : অসভ্য। এখানে ছোটরা আছে ভুলে গেছো.?

আরাভ : ছোট হলে কি হবে তোমাদের আগে ছক্কা মেরেছি আমরা। এবার মেঘের পালা। কি মেঘ আসবে কবে আমাদের জুনিওর.? দেখলি তো টুইন সামলানোর ক্ষমতা রাখে তোর বউ।

নীলয় : বেচারা রোম্যান্স করার চান্স পাচ্ছে কই.? একে তো বউ দুরে দুরে থাকে তারওপর আমাদের গুলোও রোজের সাথে লেগে আছে।

নিভি : আহা রে বেচারা দুলাভাই। মৃদুলকে এখানে রেখে যাই কি বলো.?

মেঘ : তোমাদেরই তো দিন। করো আরো লেগফুল করো। আজ বউটা আমাকে চিনতে পারছে না বলে এতোকিছু সহ্য করতে হচ্ছে। ছোট মানুষ কিছু বলতেও ভয় লাগে। করবো কিভাবে,,,

আরাভ : এটা রেকর্ড করার দরকার ছিলো। ওরে কেউ ফোন বের কর। ভাই আরেকবার রিপিট কর কথাটা।

আলিজা : নির্লজ্জ।

আরাভ : আমি কি করছি.? ভাই কে শেখানো কি ভুল.? তোমরা বউরা সবসময় স্বামিদের এসব বলে অপমান করো এসব ঠিক না।

সম্রাট & নীলয় : ঠিক।

নিভি : ঠিক..?? কি ঠিক.? এই তোমাকে কি বলেছি আমি। আজ যদি বলতে না পারো তো তোমার কি হাল করি দেখো।

সম্রাট সুযোগ বুঝে পা টিপে টিপে দরজার দিকে যেতে লাগলো

সুমি : তুমি কোথায় পালাচ্ছো..?? আগে বলে যাও কি বলেছি।

মেঘ ওদের এভাবে দেখে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। কিএক্টাবস্থা।

চলবে..?

[ ৭টার পর আরেকটা পার্ট দিবো। হ্যাপি রিডিং। এবং ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here