অন্তঃসন্তা_মেয়েকে_বিয়ে পর্বঃ ০৭

0
1472

অন্তঃসন্তা_মেয়েকে_বিয়ে
পর্বঃ ০৭
লেখকঃ #রাইসার_আব্বু
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .

– হঠাৎ, রমজান মেয়েটাকে ডাক দিলো; এইযে মিস বড় ভাইদের দেখলে যে সালাম দিতে হয় তা কি জানো না?
.
— ওহ! সরি আঙ্কেল, আসসালামু আলাইকুম!
.
— আমাকে আঙ্কেল মনে হয় কি?
.
— আপনার মাথায় একটু চুলও নেই, বলতে গেলে মিনি টুনামেন্ট। ভাবছিলাম আপনাকে জেঠু ডাকবো। কিন্তু বিবেকে কেন যেন বাধঁলো! তাই আঙ্কেল।
.
— ওহ! তাই বুঝি, আচ্ছা এই গোলাপটা ওই যে বসে আছে নাহিদ কাক্কু তাঁকে দিয়ে বলবে তাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছো। ( রমজান)
.
— ঠাস- ঠাস- আজ দু’ইটা দিলাম এর পরে যদি কাউকে রেগিং করতে দেখি। তাহলে কলেজ থেকে রাজটিকিট করবো! .
— রমজান গাল ধরে বসে আছে!
.
— কলেজের সবাই বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
.
— কথা মামনি! তোমার বাসা থেকে আসতে কোন সমস্যা হয়নি ( অধ্যক্ষ)
.
— কিরে, মামা কেমন দিলো?( সজিব)
.
— রমজান গাল ধরে বসে আছে।
.
— এদিকে কথাকে প্রথম দেখায় ভালো লেগে যায়। কথাকে পরে আমাদের ক্ল্যাসে দেখে মন লাফিয়ে ওঠে। ক্ল্যাসের সারাটা সময় কথার দিকে ড্যাপ – ড্যাপ করে তাকিয়ে থাকা। দিনগুলো ভালোই কাটছিল।
.
–প্রতিদিন কথার পিছু – পিছু ভার্সিটি ছুটি হলে যেতাম। অনেক দিন চেষ্টা করার পরও কথাকে মনের কথা বলতে পারিনি।
.
— এই আপনি প্রতিদিন আমার পিছু – পিছু আসেন কেন?
.
— আমি কই নাতো?
.
– তাহলে কে আসে?
.
— আমি আসি!
.
— কথা তোমাকে একটা কথা বলার ছিল! ( আমি)
.
— ওহ্ তাই বুঝি! (কথা)
.
— হুম তাই, আচ্ছা তোমায় যে কি ভাবে বলি কথাটা!
.
— যে ভাবে মন চায় সেভাবে বলো।(কথা)
.
— কথা আমি তোমাকে যেদিন প্রথম দেখি সেদিনই ভালোবেসে ফেলেছি।
.
— এই নাও ভালবাসার প্রথম উপহার, কথাটা বলে একটা গোলাপ এগিয়ে দিল। রাজ আমিও তোমাকে ভালবাসি,বড্ড বেশি ভালোবাসি! তবে একটা ছোট্ট কাজ করতে পারবে আমার জন্য? (কথা)
.
— হুম বলো কী এমন কাজন?
.
— আমি চাই আমাদের ভালবাসার কথা সারা ভার্সিটি জানুক। তুমি কলেজের সবার সামনে হাঁটু গেড়ে প্রপোজ করবে আমায়! পারবে তো? সবার সামনে আমাকে আপন করে নিতে! (কথা)
.
— হুম, অবশ্যই তোমার জন্য সবি পারবো!
.
— সারা রাত আর ঘুম হয়নি। কখন সকাল হবে, কখন কথাকে সবার সামনে আপন করে নিবো।
.
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

— ভাইয়া সকাল- সকাল কোথায় যাচ্ছিস। তাও সেঁজে- গুজে, ভাইয়া কিছুই তো খেলিনা।( কণা)
.
— ভার্সিটি থেকে এসো খাবো। মাই ডিয়ার বনু! এই বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
.
— ভার্সিটির সামনে থেকে, একগুচ্ছ লাল গোলাপ নিলাম। ভার্সিটি গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পরে কথার আগমন মনের মাঝে ঝড় তুলে। নীল শাড়ীতে কথাকে আজ নীল পরীর মতো লাগছে। হাতে বেঙ্গুনি রঙের কাঁচের চুরি, চোখে কাজল মনে হচ্ছে আসমানি পরী। হা করে তাকিয়ে আছি আমার নীল পরীটার দিকে!
.
… রাজ,এমন ভাবে কি দেখ?( কথা)
.
— আমার নীল পরীটাকে দেখছি।
.
– শুধু দেখবেই! আজ না আমাকে প্রপোজ করবে সবার সামনে?এই বলে সবাইকে ডাক দিলো! ভার্সিটির সবাই আমাদের দুজনকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। মনে মনে বলছি কথা আমাকে কত ভালোবাসে।তার জন্য সবার সামনে আপন করে নিতে বলছে!
.
কি হলো কি জানি বলবে তার জন্য সকালে ডেকেছো!( কথা)
.
— হুম আপনার সবাই শুনেন, যে দিন প্রথম কথাকে দেখি, সেদিনই কথাকে ভালবেসে ফেলি। যাকে বলে লাভ এট ফাস্ট সাইড। তার পর যতবারই দেখেছি ততবারই তাঁর কাজল কালো চোখের মায়াজালে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছি। আমার শয়নে স্বপনে শুধু তুমি। কথা আমি তোমাকে ভালবাসি! তুমি হবে কি আমার জোৎসনা দেখার সাক্ষী।
.
— ঠাস- ঠাস – ঠাস তোর কীভাবে সাহস হলো আমাকে ভালবাসি বলার। আয়নাতে নিজের চেহারা দেখেছিস, তুই কিভাবে ভাবলি তোর মতো ক্যাবলাক্যান্ত’কে হাসি পাইলো। তোর এতদিন অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেছি! কিন্তু কাল যখন ভার্সিটি থেকে যাওয়ার পথে তুই যখন প্রপোজ করছিলি তখন-ই মনে মনে ভাবছি তোর একটা উচিত শিক্ষা দেয়া দরকার। তাই তোকে বলেছি কলেজের সবার সামনে প্রপোজ করতে। বাকিটা তো সবাই দেখলো। আশা করি, ভবিষ্যতে আমাকে ভালবাসা তো দূরের কথা আমার নামটাও মুখে আনবিনা। এই বলে হাত থেকে ফুল গুলো নিয়ে পায়ের নিঁচে ফেলে পিষে ফেললো।
.
— কলেজের সবাই হাসতেছে, কেমন করে যেন তাকাচ্ছে আমার দিকে! নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। যাকে পাগলের মতো ভালবাসলাম সেই এমন করলো!
.
— তারপর দু’দিন কলেজ যায়নি! সজিব গ্রামের বাড়ি থেকে এসেই আমাকে নিয়ে ভার্সিটি গেল!
.
— আজ একটি বারও কথার দিকে তাকায় নি!
.
— কিন্তু মন মানছেনা কি করবো তাই একটা চিরকুট লিখলাম,
��� অভিমানী কোনো সন্ধ্যায় ���
জানো মাঝে মাঝে যখন আমার মন খারাপ হয় তোমার জন্য ,, তখন আমি একা একা ভাবি কেন তোমাকে এত ভালবাসতে গেলাম ,,আসলে তুমি যত দিন আমার জীবনে ছিলে আমি ভাবতাম তুমি আমাকে ছেড়ে গেলেও হয়তো ফিরে আসবে ,, ভাবতাম শত কষ্ট এর পরও তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না ,, কিন্তু আমার ভাবনা গুলো ভুল ,, তাই না ,, তুমি ফিরে আসার জন্য চলে যাওনি ,, জানো আমিও কেমন জানি তোমার মত বদলে গেছি ,,তাই তো তোমাকে কাছে পাওয়ার ইচ্ছাটা আমার আর করে না ,, সব স্মৃতিগুলো শুধু ভুলতে চাচ্ছি ,, শুধু কষ্ট হয় এই ভেবে আমার স্বপ্নগুলো কে কেন তোমার স্বপ্নগুলোর সাথে মেলাতে গেলাম ,, আবার মাঝে মাঝে ভাবি আর তুমিই বা কেন তোমার সুখগুলো কে বিসর্জন দিবে আমার জন্য ,, আজ অনেক দিন পর কেন জানি মনে হচ্ছে আমি বলে কিছু ছিলাম তোমার জীবনে ,,হয়তো ছিলাম না,, তাই তো স্বপ্ন আর ভালোবাসার ফল ভোগ করছি ,, শুধু বলবো আমাকে ভুলে যদি তুমি সুখে থাক, তবেই ধরে নিব এটাই আমার প্রাপ্তি,,!! পূরণ না হওয়া আমার স্বপ্নগুলো স্বপ্নই হয়ে থাক
ইতি, অতিথি পাখি”
..চিরকুট’টা লিখার পর টিফিন পিরিয়ড়ে, কথার বইরের ভেতর রেখে দিলাম!
.
কথা বাসায় গিয়ে বই বের করতেই দেখে একটা রঙিন চিরকুট, তার পর লেখা গুলো পড়তেই এক অজানা ভালা লাগা কাজ করে!
.
— কথা প্রতিদিন এমন একটা চিরকুট পায়! কিন্তু কে দেয় চিঠির নিঁচে লেখা অতিথি পাখি! কিভাবে বের করবে! কথা যে চিরকুট পড়েই তার প্রেমে মশগুল হয়ে গেছে!
.
— কথা, প্রতিদিনের মতো আজও ফেসবুকে ডুকলো,। ফেসবুকে তার একটা প্রিয় লেখক আছে! আইডির নাম স্বপ্নীল সন্ধ্যা! প্রফাইলে গল্প পড়তে, পড়তেই একটা পোস্ট দেখে! পোস্টের নিচে লেখা, ‘অতিথি পাখি’। কথা চমকে ওঠে, মনে মনে ভাবতে লাগে তাহলে এই সেই লেখক যে তার হৃদয়টা দখল করে নিয়েছে! কথা অনেক গুলো মেসেজ দেয় আইডিতে । পরের দিন রিপ্লে আসে! কথা এ কয়দিনে হাজার বারের বেশি অতিথি পাখিটা’কে তাকে দেখতে চেয়েছিল!
.
কিন্তু পিক দেয়ার সাহস পায়নি। সে যদি আমাকে প্রতারক ভাবে।
.
— দিন যাচ্ছে কথার পাগলামি বাড়ছে, একদিন কথা প্রোপোজ করে বসে! আমি যদি রাজি না হয় তাহলে সে সিপ্লিং পিল খাবে! ইনবক্সে স্লিপিং পিল এর পিক দিয়েছে!
.
.
— সেদিন আর না করতে পারিনি! তার পর পরের দিন বিকালে কথাকে পার্কে দেখা করতে বলি!

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

.
— কথা এখনো আমাকে দেখেনি! জানিনা দেখলে কী রকম রিয়াক্ট করবে। এসব ভাবতে ভাবতে বাসা থেকে পার্কের উদ্দেশ্যে বের হতেই সজিব এর সাথে দেখা!
.
— কিরে সজিব হাতে ফুল নিয়ে,পাগলের মতো কোথায় যাস( আমি)
.
— দোস্ত তোকে পেয়ে ভালোই হইছে চল ওখানে বসে কথা বলি? (সজিব)
.
— হুম কি বলবি বল! (আমি)
.
— দোস্ত তোকে কীভাবে যে বলি! আমি একটা মেয়েকে ভালোবেসে ফেলেছি! তাঁকে ছাড়া বাঁচবোনা! দোস্ত তুই আমাকে বাঁচা যে ভাবে হয় ওই মেয়েটার সাথে প্রেম করিয়ে দে! আমাকে বাঁচা। ( সজিব)
.
— আরে তোর জন্য আমার জীবনও দিতে পারি! আর তোকে প্রেম করিয়ে দিবোনা! আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো!
.
— দোস্ত প্রমিজ কর আমাকে ওই মেয়ের সাথে প্রেম করিয়ে দিবি?( সজিব)
.
— আচ্ছা তোকে ছুঁয়ে বলছি প্রমিজ বল কোন সে ভাগ্যবতী রাজকন্যা যে আমার কলিজার টুকরা বন্ধুটার মন কেঁড়ে নিয়েছে?
.
— দোস্ত মেয়েটা আর কেউ না! আমাদের কলেজের সেরা সুন্দরী কথা! বল কীভাবে কি করলে আমাকে ভালোবাসবে কথা।( কথা)
.
— সজিবের মুখে ‘কথা’র কথাটা শুনতেই কলিজাটা কেঁপে ওঠলো! সজিবের আড়ালে চোখের পানি মুছলাম। দাঁতে দাঁত চেপে কান্না আকটে রাখছি!
.
— দোস্ত কিভাবে কীরবো প্লিজ বল! কথাকে না পেলে দোস্ত আমি মরেই যাবো হয়তো, সারাদিন তাকে ভেবেই পার করি!
.
— দোস্ত শোন আমার ফেসবুক আইডি এই নে পাস! যদি কথা কিছু বলে বলবি আইডি’টা তোর! কথাকে বলবি তার অতিথি পাখিটাই তুই! আমি আগেই জানতাম তুই কথাকে ভালোবাসিস তাই ফেইক আইডি দিয়ে তোর প্রেম করিয়ে দিলাম! আমার ট্রিটটা যেন পায় ঠিক সময়ে! ( আমি)
.
— দোস্ত তুই সত্যি মহান বলে সজিব আমাকে জড়িয়ে ধরলো!
.
— দোস্ত আর লেট করিস না পার্কে কথা তোর জন্য অপেক্ষা করছে! ( আমি)
.
— আচ্ছা দোস্ত চলিয়ে, এই বলে সজিব পার্কে গিয়ে দেখে কথা বসে আছে! কথাকে সব বলার পর কথা তার অতিথি পাখি ভেবে, শক্ত করে জড়িয়ে ধরে!
.
— এদিকে দূর থেকে নিজের ভালবাসার মানুষটাকে অন্যের বুকে লেপ্টে যেতে দেখি!
.
— ভাইয়া আর কত ঘুমাবি? ( রিও)
.
— রিওের ডাকে স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ফিরলাম!
.
— ভাইয়া মা তোকে ভাবীকে নিয়ে ক্লিনিকে যেতে বললো!
.
— আচ্ছা তুই যাহ্ আমি যাচ্ছি! এই বলে কথা কাছে গেতে’ই দেখি কথা রেডি হয়ে বসে আছে! কলেজের প্রথম দিন যে কথাকে দেখেছি আজও সেই কথাকেই দেখছি!
.
– তোমার কী শরীর খারাপ? মা বললো ক্নিনিকে নিয়ে যেতে।(আমি)
.
-আমরা ক্নিনিকে যাচ্ছি নাহ্! আমি তোর মতো কোন দুশচরিএবান ছেলের সাথে ঘর করতে পারবো না! তাই কোর্টে যাচ্ছি ডির্ভোসের জন্য “””””

#_____________চলবে________________


#কোনো গল্পের পর্ব খুজে না পেলে সর্বশেষ পোস্ট কমেন্ট করে জানাবেন।



#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here