অন্তরালের কথা পর্ব ২৭

#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ২৭
.
.
” ও হ্যাঁ, ভালো কথা মনে করেছ। না কাজ শেষ হয়নি তবে ম্যানেজারের উপর আমি সব বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি। আর ব্যাগপত্র দ্রুত গুছিয়ে নাও। ”
” মানে! ব্যাগপত্র গুছাবো কেন, কোথায় যাবো আমরা? ”
” রাতের ট্রেনেই বাড়িতে যাবো। আর সেখান থেকেই তারপরের দিন যাবো গাইবান্ধার পলাশবাড়ী। ”
” কেন? ”
” গতকাল সকালে আমার ছোট ফুপি ফোন দিয়েছিল তার ছোট মেয়ে অর্থাৎ আমার ফুফাতো বোন নদীর বিয়ের দাওয়াত দেয়ার জন্য। আগামী শুক্রবার নদীর বিয়ে আর আজ হচ্ছে শনিবার। তাই ফুপি বলেছে মঙ্গলবারের মাঝেই যেন গাইবান্ধা উপস্থিত থাকি বাবা,মা, তিহান আর তোমাকে নিয়ে। তাহলে আজ আমি না এসে কি করি বলো? বিয়েটা তো দূরের কারো নয় আপন ফুফাতো বোনের বিয়ে না গিয়ে কি থাকতে পারি? তাই চলে এলাম। ”
” ওহ্ ভালো করেছ। কিন্তু… আমার কি যেতেই হবে? ”
” এটা আবার কেমন কথা বললে তানহা? বিয়ের পর এই ৩ টি বছর তোমায় কেউ দেখেনি এখন যদি বিয়েতেও না যাও আমার সম্মান টা কোথায় থাকবে ভেবে দেখেছ? ”
” আচ্ছা, তাহলে তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও এই ফাঁকে আমি কাপড়চোপড় সব গুছিয়ে ফেলি। ”
” এইতো আমার লক্ষী বউ। দ্রুত সব গুছিয়ে ফেলো কেমন? আমরা সন্ধ্যার দিকেই বেরিয়ে যাবো। ”
– ” হুম, আচ্ছা। ”
অতল চলে গেল ওয়াশরুমের দিকে আর তানহা দরজার কাছে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তারপর এগুলো কাপড়চোপড় গুছানোর উদ্দেশ্যে।
.
তিহানের ভেতর আজ অনেক অস্থিরতা কাজ করছে। তবে এই অস্থিরতার আসল কারণ খুঁজে পাচ্ছে না তিহান। এতদিন পর তানহাকে দেখবে সে কারণে নাকি এতদিন পর তানহার মুখোমুখি হবে সেই কারণে! কিছুই বুঝতে পারছে না।
এসব আকাশকুসুম ভাবতে ভাবতে তিহান চলে যায় তাদের বাড়ির সামনের নিজেস্ব বাগানে। কেননা তাদের বাগানে যে আজ বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য ফুল ফুটেছে। লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, গোলাপি নয়নতারা, সাদা নয়নতারা, লাল নয়নতারা, গাঁদা, ময়ূরকণ্ঠী, সকাল সন্ধ্যা, ঘাস ফুল ইত্যাদি। যেগুলো বেলকনি থেকে দেখতেই অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। তাই আর তিহান সামনে থেকে দেখার লোভ সামলাতে পারেনি। আর, ছুটে চলে এসেছে বাগানের এক্কেবারে ভেতরে যেখানে ফুলের সমারোহ। তিহান একে একে সবগুলো ফুল একবার করে ছুঁয়ে যাচ্ছে আর ঠোঁটের কোণে প্রশান্তিময় হাসির রেখা ফুটাচ্ছে। ঠিক সেসময় তিহানদের বাড়ির মেইন গেইট দিয়ে একটি সিএনজি প্রবেশ করে। আর সিএনজি থেকে বের হওয়া মানুষগুলোকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে বিলীন হয়ে যায় তিহানের মুখের সেই প্রশান্তিময় হাসি। হ্যাঁ, সেই মানুষগুলো আর অন্য কেউ নয়, সেই মানুষগুলো যে অতল ও তানহা। তিহানের একমাত্র ভাই ও একমাত্র ভাবি।
এদিকে সিএনজি থেকে নেমে তানহা চারিদিক চোখ বুলাতে দেখে, তিহান বাগানের ভেতর চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। আর এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। অন্যসময় হলে তানহা এই চাহনিকে প্রশ্রয় দিয়ে নিজেও তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে থাকতো তিহানের দিকে। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি একদমই ভিন্ন। এখন যে তানহা কারো দিকে এক দৃষ্টিতে তাকায় না এমনকি তাকাতে চায়ও না। এই দৃষ্টি যে তার অতীত। আর অতীতকে ঘিরে সে কষ্ট পেতে ইচ্ছুক নয়। সে বর্তমানকে নিয়ে সুখে থাকতে চায়। ভালোবাসতে চায় আজীবন অতলকে। তাইতো তিহানের দৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে অতলের হাত ধরে এগুতে থাকে বাড়ির ভেতর।
তবে তানহার সেই আড়াল করার ইচ্ছা তিহানের দৃষ্টিগোচর হলো না। যার ফলে তিহান বেশ ভালো ভাবেই বুঝে গিয়েছে, যে তানহা তিন বছর আগে এ বাড়ি থেকে বের হয়েছিল সে তানহা আজ ফিরে আসেনি। এ যে এক নতুন তানহা। যার জীবনে তিহান নামক যন্ত্রণার কোনো স্থান, অস্তিত্ব নেই। শুধু রয়েছে অতল নামক ভালোবাসার বাস।
অতল ও তানহাকে বাড়ির মেইন দরজা দিয়ে ঢুকতে দেখে মরিয়ম বেগম দ্রুত এসে তানহাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাভেজা কন্ঠে বললেন,
” তানহা, তুমি এসেছ? এতদিনে বুঝি আমাদের কথা মনে পড়ল? অবশ্য আমাদের কথা মনে পড়বে কেন, তুমি তো এসেছ নদীর বিয়ের জন্য আমাদের জন্য না। আমাদের জন্য হলে তো অনেক আগেই আসতে, এখন না। আমরা তো তোমার আপন বাবা-মা হই না তাই এরকম করতে পেরেছ। যদি আপন বাবা-মা হতাম তাহলে কখনোই এভাবে এতদিন না দেখে থাকতে পারতে না। ”
তানহা মায়ের হাত ধরে অপরাধ জনিত কন্ঠে বলল,
“না মা সেরকম কিছু না,আমি আপনাদের পর ভেবে আসিনি সেরকমটা না। আমি তো আসিনি….”
তানহার কথার মাঝে মেইন দরজা দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে পেছন থেকে তিহান স্বাভাবিক কন্ঠে বলল,
” কেন আসেননি ভাবি? ”
তিহানের মুখে ভাবি ডাক শুনে তানহা চমকে উঠল! চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল কিন্তু কেন যেন তানহার মনে কষ্ট কিংবা যন্ত্রণার আভাস পাওয়া গেল না। বরং তানহার ভালোই লাগল তিহানের এই পরিবর্তন বুঝতে পেরে। তাই নিজেও স্বাভাবিক কন্ঠে তিহানের চোখে চোখ রেখে বলল,
” প্রচন্ড ঝড়ের কবলে পড়েছিলাম আর সেই ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার তাগিদেই নিজেকে এখানে আসা থেকে বিরত রেখেছি। যদি নিজের যন্ত্রণায় অন্যদের জর্জরিত করে ফেলি সেই ভয়ে! তবে আজ… সেই ভয় নেই। নেই কোনো যন্ত্রণা, নেই কোনো আহাজারি। সেই ঝড়কে জয় করে নিজের জীবনকে রাঙিয়ে তুলেছি নতুন রঙে। সাজিয়েছি নতুন ভাবে, নতুন রূপে। ”
তানহার একদমে বলা কথাগুলো শুনে তিহান কিছুই বলতে পারেনি। কেবল এক মুচকি হাসি দিয়েই চলে যায় নিজ ঘরে। আর পাশ থেকে আনিস খন্দকার বললেন,
” এটাই যে পৃথিবীর নিয়ম মা। জন্ম নিলে মৃত্যু হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কারো অকালমৃত্যু হয় আর কারো বার্ধক্যজনিত রোগে। তোমার বাবা-মায়ের না’হয় অকালমৃত্যু-ই হয়েছিল কিন্তু তার জন্য তো আর জীবন থেমে থাকবে না। ”
” জ্বি বাবা। তাইতো এ ক’টা বছর এদিক ওদিক ছুটোছুটি না করে গা ঢাকা দিয়েছিলাম। আর আজ দেখুন, মনকে স্থির করে নিজেকে স্বাভাবিক করে তুলেছি। ”
” এটা দেখেই তো এতো অল্প সময়ে এতদিনের জমানো অভিমান ভুলে যেতে পেরেছি। ”
মরিয়ম বেগম তানহার গালে হাত রেখে আদুরে গলায় বললেন,
” হ্যাঁ মা, তোমার বাবা একদম ঠিক বলেছেন। তোমার এই পরিবর্তন দেখে আমরা কতটা খুশি হয়েছি সেটা বুঝানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। যদি পারো কখনো অনুভব করে নিও। এবার যাও নিজেদের ঘরে। অনেক দূর থেকে জার্নি করে এসেছ। তোমাদের এখন একটু বিশ্রাম প্রয়োজন আর তার আগে তো কিছু খেয়ে নিতে হবে। তাই দ্রুত ফ্রেশ হয়ে এসো আমি টেবিলে নাস্তা দিচ্ছি। ”
” আচ্ছা মা। ”
এতক্ষণ তানহার পেছনে দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখছিল অতল। মা, বাবা ও বউয়ের কথোপকথনের জন্য সে নিজে কিছুই বলেনি কিন্তু যখনি সবার কথা শেষ হলো ওমনি ফ্লোরে রাখা দুটো লাগেজ হাতে নিয়ে ঘরের দিক যেতে যেতে অভিমানী গলায় বলল,
” যাকে দিয়ে বউয়ের মতো মেয়ে পেয়েছে তার খবর নেয়ারই মানুষ নেই থুক্কু তার কোনো পাত্তা নেই হুহ…”
অতলের কথা শুনে সেখানে উপস্থিত সকলে জোরে হো হো করে হেসে উঠল।
.

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতে চলল। কিন্তু এখনো অতলের ঘুম ভাঙার নাম গন্ধ নেই। সেই যে দুপুরে খেয়ে ঘুমিয়েছে এখন অবধি ঘুমিয়েই যাচ্ছে। তানহা বিকেল থেকে এতবার ডেকেছে যেটার বলার বাহুল্য কিন্তু কে শোনে কার কথা! অতল তো আছে ঘুমে বিভোর। আর মাঝে মাঝে তানহার ডাকের ফলে বিড়বিড় করে বলছে, ” গতকাল সারা রাত জার্নি করেছি আবার আগামী কাল সকালেও জার্নি করতে হবে প্লিজ বউ আমাকে একটু ঘুমোতে দাও। ”
বারংবার এই একই কথা অতলের মুখে শোনার পর তানহার ইচ্ছে হয়নি অতলের ঘুমটা ভাঙিয়ে দিতে। ইচ্ছে হবেই বা কি করে! অতল এতো আঁকুতি মিনতি করে বলছিল তানহার বড্ড মায়া পড়ে যায় সেই কথায়। তাই তো জানালার গ্রিলে মাথা ঠেকিয়ে ইজিচেয়ারে একা একাই বসে আছে। আর তাকিয়ে আছে উন্মুক্ত গগনে টিকিটবিহীন যাত্রাপথে অসংখ্য মেঘবাসীর ছুটোছুটির পানে। পুরো আকাশ মেঘে ঢাকা। কিছুক্ষণ পর পর বজ্রপাতের বিকট শব্দে পরিবেশটা কেঁপে উঠছে। থমকে আছে পরিবেশ সেই সাথে থমকে আছে আকাশ বাতাস। যেন অপেক্ষা করছে বৃষ্টির ঝুম আওয়াজে মেতে উঠবার।
তানহা মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দৃষ্টিনন্দন করতে এতটাই ব্যতিব্যস্ত ছিল যে, তার সামনে একটি মুখ বসে তাকে চোখের দৃষ্টিতে গ্রাস করে ফেলছে বুঝতে পারেনি। বুঝতে পারলো যখন সেসময় তানহা কারো পাজ কোলে বসে বসে ঝুল খাচ্ছে।চোখ মেলে ভালো করে তাকাতে দেখে সে আর কারো পাজ কোলে নয়,সে যে তারই ভালোবাসার অতলের পাজ কোলে বন্দি। তাই ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটিয়ে নিজের দু’হাত দিয়ে অতলের গলায় জড়িয়ে ধরে বলল,
” এই বুঝি সময় হলো ঘুম ভেঙে বউয়ের কাছে আসার? ”
” হুম গো। ”
” জানো, কিছুক্ষণ আগে মনে হচ্ছিল আমি তোমার বউ না ওই ঘুমটাই তোমার বউ। তাইতো আমার কাছে না এসে ঘুমকে নিজের আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছিলে। ”
” তোমাকে কি সাধে পাগলী বলি আমি? তুমি যে আসলেই আস্ত একটি পাগলী। আমার পাগলী বউ। ”
অতল পাগলী বউ বলতেই তানহা জোরে জোরে হাসতে লাগলো। আর অতল তানহার হাসির সাথে তাল মিলিয়ে তানহার নাকের সাথে নিজের নাক ঘষতে ঘষতে নিজেও হাসতে শুরু করল। এমন সময় বাহির থেকে ঝপ ঝপ আওয়াজ কানে আসতেই অতল ও তানহা জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় বাহিরে মুশলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা যেন তানহার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলছে, ” ঠিক এভাবে অতলের পাজ কোলে থেকেই বৃষ্টিবিলাসী হয়ে উঠতে। ” তানহা আর নিজেকে আটকে রাখতে পারে না। অতলের কানে আলতো করে নিজের নরম ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে অতলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি ফুটিয়ে বলল,
” তোমার বুকে বৃষ্টিবিলাসী হবার সুযোগ দেবে কি তোমার এই অর্ধাঙ্গিনীকে? ”
তানহার দেয়া পরশ ও বলা কথাগুলো শুনে অতলের সারা দেহ শিহরিত হয়ে উঠে। এক অন্যরকম নেশা নেশা ভাব ফুটে উঠে অতলের চোখ মুখ জুড়ে। সেই নেশাকে সঙ্গী করে তানহাকে পাজ কোলে নিয়ে অতল এগুতে থাকে ছাদে যাওয়ার পথে।
.

ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে বাহিরে। তিহান তানহাকে পাজ কোলে নিয়ে মহানন্দে ছাদের এপাশ থেকে ওপাশ হেঁটে বেড়াচ্ছে। উফফ কি যে শান্তি। হুট করে তিহানের ধ্যান ভেঙে গেল এক পশলা বৃষ্টিতে। আর জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে, তিহানের জায়গায় অতল দাঁড়িয়ে। আর পাজ কোলে তানহা। দুজনে মুখ জুড়ে রয়েছে এক অদ্ভুত মুগ্ধতা!
সেই এক পশলা বৃষ্টির সাথে তিহানের চোখের জলও গড়িয়ে পড়লো। আর মনে মনে ভাবলো, ” থাক না! সবকিছু অন্তরালের মাঝে। ” এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ছাদের পাশে থাকা তার রুমের জানালাটি বন্ধ করে মেলে দেয় নিজের শরীর বিছানার মাঝে। চোখ জোড়া বন্ধ করে ঘুমের প্রস্তুতি নেয় কিন্তু ঘুম যে তার সঙ্গ দিতে নারাজ। তাইতো আজ চোখের কোণে ঘুমও ধরা দিচ্ছে না। এতো চেষ্টা করে ঘুমোতে না পেরে দরজা খুলে তিহান চলে যায় নিচে ড্রয়িং রুমে।
ঘন্টা খানেকের উপর হয়ে গিয়েছে তিহান ড্রয়িং রুমে বসে বসে বাবার সাথে কথা বলছে। এর মাঝে অতল একবার এসে বসলেও পরক্ষনে চলে যায় বাহিরে। কিছু খাবার কেনার উদ্দেশ্যে। তিহান এতক্ষণ তার বাবার সাথে কথা বললেও অতল বাহিরে যাবার পর থেকে আর মন চাচ্ছে না কথা বলতে। তার মন যে খুব করে চাইছে একটি বার তানহার সাথে কথা বলতে। তাই অন্যবারের মতো এবার আর মনকে বাঁধা না দিয়ে বাবার থেকে বিদায় নিয়ে এগুতে থাকে তানহার ঘরের দিকে।
তানহা ঘরে বসে লাগেজের ভেতর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গোছাচ্ছিল।সকাল সকালই যে তাদের বেরোতে হবে গাইবান্ধার পথে। ঠিক সেসময় দরজায় কেউ কড়া নাড়তেই মুখ ভরা হাসি নিয়ে তানহা ছুটে যায় দরজার কাছে অতল এসেছে ভেবে। দরজা খুলতেই তানহা অবাক হয়ে যায়! আর গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
” তিহান! তুমি এখানে? ”
তিহান ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলল,
” হ্যাঁ, আমি কেন খুশি হওনি? ”
” এটা খুশি হওয়ার মতো বিষয় বলে তো আমার মনে হচ্ছে না। ”
” কেন প্রতিনিয়ত নিজের সাথে অভিনয় করছ? অভিনয় করলেই কি সুখি হওয়া যায়? ”
” কে বলেছে আমি সুখি নই। যে মেয়ের কাছে অতলের মতো স্বামী আছে সে কি করে অসুখী হতে পারে বলবে কি? ”
” আমি জানি ভাইয়া তোমায় সুখে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে কিন্তু আমি এ-ও জানি তুমি তিহান হীনতায় অসুখী। ”
” তোমার ধারণা ১০০ তে ২০০ ভাগ ভুল। সেই তানহা আর আজকের তানহায় অনেক ব্যবধান।আগের তানহায় তিহান নামক রোগ থাকলেও এ তানহার মাঝে সেই রোগের ছিঁটেফোঁটাও নেই। ”
” আমি সবকিছু সবাইকে বলে দিব তানহা।”
” কিছু কথা অন্তরালে থাকাই ভালো। ”
” জীবন কিন্তু খেলার জিনিস না।”
” সেটা আমাকে না বলে নিজেকে বুঝাও তিহান।জীবনে কাজে লাগবে।”
” অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমায়। দেখলাম, নিজেকে ঠিক কতটা শক্ত করতে পেরেছ । ”
” এ সবকিছুই অতলের ভালোবাসায়। ”
” আসছি তানহা। ”
” হুম এসো। ”
.
.
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here