অন্তরালে ভালবাসা পর্ব ১২

#অন্তরালে_ভালবাসা

১২
#প্রজ্ঞা_জামান_দৃঢ়তা_হঠাৎ_বৃষ্টি

আরিশার পা কেটে যাওয়ায় অহিন আর আরিশাকে কোথাও তেমন নিয়ে যায় নি।পাশে ডাক্তার দেখিয়ে মেডিসিন নিয়ে রিসোর্টে ফিরে আসলো। আরিশাকে শুইয়ে দিয়ে অহিন বলে,তুই চুপচাপ বসে থাকবি আমি আসতেছি।
একটুপর অহিন খাবার নিয়ে আসে।আরিশার ততক্ষণে ঘুম চলে আসে। অহিন রুমে এসে আরিশাকে ডাকে আরু এই আরু উঠ না?এই আরু, আরু।এদিকে আরিশার কোন সাড়া নেই।অহিন আরিশাকে দুহাতে ধরে উঠিয়ে বসিয়ে দেয়।আরিশা ঢুলুঢুলু চোখ নিয়ে বলে ওহ অহিন এমন করিস না তো ঘুমাতে দেয় আমাকে।অহিন বলে আচ্ছা ঘুমা তুই সমস্যা নেই শুধু তুই হা করবি আমি খাইয়ে দিবো।আরিশাকে বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসিয়ে দেয়। অহিন নিজের হাতে খাইয়ে দেয় আরিশাকে।আর আরিশা পোষা বিড়ালের মত আধো ঘুম ঘুম চোখে খেয়ে নিচ্ছে।অহিনের মন কোন এক তৃপ্তিতে ভরে যাচ্ছে।একজন নস্বামী বা একজন প্রেমিকের কাছে নিসন্দেহে এমন একটা সময় খুব সুখের!বউ বাচ্চাদের মত করে ঘুমের মধ্যে খাচ্ছে বর তা দেখে নিজের মনকে সুখি করছে।

আরিশার মুখের সামনের কাটা ছোট ছোট চুলগুলো এসে পড়ছে।অহিন বাঁ হাত দিয়ে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে, অহিন পকেট থেকে ফোন বের করে একটা ছবি তুলে নিলো।অহিনের হঠাৎ মনে হয় আচ্ছা সব মেয়েকে কি এমন ঘুম ঘুম চোখে এতোটা মায়াবী লাগে?
এতোটা মায়া কেনো আরু তোর মাঝে?
হয়তো আমাকে খুন করার জন্য, আমাকে শেষ করার জন্য,এটা ভেবেই অহিন একপেশে হাসে।এই ছোট হাসিটাও যেন কেমন স্নিগ্ধ! কেমন প্রানবন্ত!

আরিশাকে শুইয়ে দিয়ে অহিন, খেয়াল করে রুমের বারান্দাটা নীল গ্লাসে আবৃত। বাইরের চাঁদের আলো সে গ্লাস বেধ করে রুমে আসছে।অহিন সতর্কতার সাথে গ্লাস খুলে বারান্দায় যায়।রিসোর্টের চারপাশটা নানা রঙের আলো দিয়ে সাজানো। অদ্ভুত এই সুন্দর চারপাশটা।সমুদ্রের গর্জন শোনা যাচ্ছে এখান থেকে।
অহিন ভেবেছিলো আজ সমুদ্র স্নান করবে কিন্তু আরুর জন্য হলো না।তাই কাল যাবে বলে ঠিল করলো। সবে মাত্র রাত আটটা। আরিশা ঘুমাচ্ছে।আর সে একা।এমন একটা মুহুর্তে কারোই মন চাইবে না একা বসে থেকে সময় নষ্ট করতে।সবাই চাইবে তার প্রেয়সীর হাতে হাত রেখে চাঁদের আলো উপভোগ করতে।আকাশের তারা গুনার ব্যার্থ চেষ্টা করতে।
কিন্তু অহিনের সেই ভাগ্য কই যে তার প্রেয়সী তার হাতে হাত রেখে চাঁদের আলো উপভোগ করবে!

অনেকটা সময় নিকোটিনের ধোঁয়ায় মনের ক্ষত গুলোকে কমানোর চেষ্টা করে।আজকে তাদের কে ফলো করছে তা বুঝার চেষ্টা করে । কিন্তু অনেক ভেবেও কোন কুল কিনারা পায় না।অহিন ভাবে কোনভাবে এই ফলো করা ব্যাক্তি অহিন নয়তো!
এভাবে কেটে যায় কিছুটা সময়। ৯টা বাজতেই আরিশা হঠাৎ করে এসে বসে অহিনের পাশে। অহিন চমকে উঠে। হাত থেকে সিগারেট ফেলতে যাবে এমন সময় আরিশার গায়ের সাথে লেগে অহিনের বোতাম খোলা শার্ট ভেদ করে অহিনের বুকে লাগে জ্বলন্ত সিগারেট।
অহিন একটু টু শব্দ ও করেনি।আরিশা অহিনকে ব্যাস্ত গলায় বলে,এই অহিন তোর বুক জ্বলে গেলো তো তাড়াতাড়াতাড়ি শার্ট খুলে নে।অহিন স্মিত হেসে বলে কিছু হবে না আরু।আরিশা রাগী মুখ নিয়ে বলে,তুই সবসময় নিজেকে শক্ত প্রমাণ করাটা একটু ছাড়বি?বিরক্ত লাগে আমার!

আরিশা বকতে বকতে অহিনের শার্টের বাকি তিনটি বোতাম খুলে। তারপর বারান্দার আলো জ্বেলে। অহিনের লোমশ বুকে জহুরির চোখ নিয়ে খুটে খুটে দেখে কোথায় পোড়া গেছে।বুকের বাঁ পাশে কিছুটা পোড়া গেছে আরিশা ফু দিতে থাকে। আর হাত দিয়ে অহিনের লোমশ বুকের পশম গুলো সরানোর চেষ্টা করে।অহিন সুখী সুখী চোখ করে তাকিয়ে থাকে তার আরুর দিকে।

অহিন যেনো প্রতিদিন আরিশাকে দেখে নতুন করে তার প্রেমে পড়ে।আরিশার নিঃশ্বাস অহিনের বুকে পড়ছে আর সেই নিঃশ্বাসে অহিনের বুকের ভেতরটা তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে।ইচ্ছে করছে আরিশাকে বুকের সাথে লেপ্টে ধরে তার বুকের ব্যাথা দেখায়,যে সামান্য পুড়ে যাওয়ার জন্য আরিশা এতো ব্যাস্ত হচ্ছে,অথচ মনের ভেতর যেভাবে প্রতিদিন আরিশা কলিজাটা পুড়ে পুড়ে খাক করে দিচ্ছে সেটা কলিজাটা ছিড়ে দেখাতে।কিন্তু ওই যে অহিন কারো হকের উপর অধিকার দেখায় না।তাই সে আর এটা ভাবলেও করতে পারে না।
কারণ আরিশা শুধু চিরকাল অহিনের মনে লুকিয়ে থাকবে তা আর কেউ দেখতে পারবে না!স্বয়ং আরিশাও না!

অহিনের ভালবাসা চিরকাল অন্তরালেই থেকে যাবে।যার প্রকাশ ঘটবে না আরিশার কাছে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আসলেই কি তাই?কেউ কি জানবে না এতো বড় একটা সত্য?কেউই না?
সেটাতো সময় বলবে!

আরিশার ব্যাগে সবসময় ফার্স্টএইড বক্স থাকে।সেখান থেকে অয়েনমেন্ট নিয়ে আসে বারান্দায়।অহিনকে বসিয়ে দিয়ে সোফার উপর নিজে ফ্লোরে হাঁটুগেড়ে বসে খুব মনোযোগের সাথে অহিনের পোড়া জায়গায় অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দেয়।আরিশা পশম গুলো সরাতে সরাতে বিরক্ত বোধ করে।বলে দূর তোদের ছেলেদের বুকে কেনো যে পশম থাকে কে জানে!ঠিক করে কিছু করা যায় না!

অহিন বলে তুই জ্বালিয়ে দিস, পুড়িয়ে দিস,আবার সেই জায়গায় মলম লাগাতে আসিস!অদ্ভুত তুই আরু!

আরিশা বোধহয় অহিনের এতো গভীর কথার মর্মার্থ বুঝেনি তাই বলে চুপ করে থাক অহিন।তুই সবসময় বেশী কথা বলিস।অহিন কিছু বলে না, উত্তরে শুধু হাসে, সেই হাসি!যে হাসিতে চোখ হাসে!যে হাসিতে মন কাড়ে!স্নিগ্ধ সেই হাসি!

আরিশা সোফায় বসে বলে দোস্ত আমার একটা ইচ্ছে আছে।অহিন বলে কি?
রাতের সমুদ্র দেখার, চাঁদের আলোয় রাতের সমুদ্র দেখতে কেমন লাগে খুব দেখার ইচ্ছে, নিয়ে যাবি আমাকে প্লিজ?আরিশা আকুতির সুরে বলে।
অহিন কিছু একটা ভেবে বলে চল,আবার বলে না তুই হাটতে পারবি না তো। তোর পায়ে না ব্যাথা?

আরিশা বলে সারাদিন রেস্ট নিলাম।মেডিসিন লাগিয়েছি এখন অনেকটা ঠিক আছি প্লিজ নিয়ে যাবি?প্লিজ প্লিজ প্লিজ?

অহিন বলে,হইছে আর প্লিজের দোকান খুলে বসিস না।চল।এখনো কি এই শাড়ি চেঞ্জ করবি না?সমুদ্রে আসলে সবাই জিন্স, শার্ট,কুর্তি পরে আর তুই শাড়ি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছিস আজিব!এসব তোর দ্বারাই সম্ভব!

আরিশা বলে আরু ইজ আরু!অন্যদের থেকে আলাদা হওয়া মানেই আরু!শাড়ি পরে সমুদ্র দেখার মজাই আলাদা বুঝলি বন্ধু? বলেই চোখ মারে অহিনকে আরিশা।

অহিন বলে, ছিঃ তোর এই অভ্যাস আর গেলো না।ছেলেদের মত চোখ মারা!
আরিশা বলে, তুই গাধা এসব বুঝবি না।এখন চল।
অহিন টেবিলের উপর থাকা তার ডিএসএলআর ক্যামেরাটা হাতে নেয়।আরিশার দিকে তাকিয়ে এক হাত সামনের দিকে দিয়ে বলে চলুন মহারানী!

দুজনে বেড়িয়ে যায় রাতের সমুদ্র দেখতে।
দুজনে সমুদ্রের কাছে চলে এসেছে,
রাতের আলোয় সমুদ্রের মিতালি সাগরের বুকে এক টুকরো আলোর মিছিল।সাগরপাড়ে নোঙর করা শত লাইটার। আলোকিত হয়ে উঠেছে সাগর। ভিন্ন রং ধারণ করেছে সাগরের পানি। দুজনে সমুদ্রের পাড়ে বসে এমন মনোরম দৃশ্য দেখে অহিন আরিশা মুগ্ধ হয়। এতোটা মুগ্ধ যে,যেন মনে হবে কাছাকাছি দাঁড়িয়ে রয়েছে আকাশ ও সমুদ্র ।এই হাজার হাজার মাইল দূরত্বে থেকেও মনে হবে আকাশ আর সমুদ্র যেন একে অপরের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে আছে।

আলোতে ঝল-মল হয়ে উঠছে পুরো সমুদ্রপাড়। বিশেষ করে নোঙর দেওয়া জাহাজের আলোয় যেন আলোকিত হয়ে উঠেছে সমুদ্রেরের মোহনা। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের গর্জন আর আলো-আঁধারের খেলায় মেতে ওঠে কুয়াকাটার এই সাগর কন্যা!

রাতের এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করছে বসে দুই বন্ধু! নির্জনে,নিশব্দে এই চাঁদের আলোয় সমুদ্রের পাড়ে বসে দুটি মানুষের মনের ভেতর তুফান বয়ে চলে।দুজনেই তার ভালবাসার মানুষকে খুব মিস করছে।আরিশার মনে হচ্ছে ইশ যদি এখন রাফিন থাকতো? আর অহিনের মনে হচ্ছে ইশ আরুর সাথে যদি আমার স্বাভাবিক স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক থাকতো? তাহলে এই রাতটি নিসন্দেহে এমন একটা রাত হতো যে রাতের স্মৃতি লিখা থাকতো ভালবাসার অক্ষরে লিখা!যা সারাজীবন মনের মাঝে শুধু সুখ দিতো!
কিন্তু ভাগ্যের ফেরে আজ সব কষ্টের স্মৃতি হয়ে জমা রবে চিরকাল বুকের মাঝে।
আরিশা বলে দেখছিস দোস্ত রাতের সমুদ্র দিনের সমুদ্র থেকে কতটা আলাদা! রাতের আলোয় পুরো আকাশ নীল ও আগুন বর্ণ ধারণ করেছে।

অহিন বলে ঠিক বলেছিস আরু,রাতের সমুদ্র সত্যি মনের মাঝে শিহরণ জাগানোর মত! মনে হয় যেন আকাশ ও সাগরের মিতালি ঘটেছে। সেই সঙ্গে নির্মল বাতাস আর সমুদ্রেরের ঢেউ জুড়িয়ে যায় মন।
রাতে এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করলাম আরু প্রকৃতিই আমাদের আসল সুখ দিতে পারে,একেবারে নিঃস্বার্থ সুখ!

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশটা স্মৃতিতে রয়ে যাবে সারাজীবন। দুজনে হেটে একটু দূরে যায়।সমুদ্রে তাকালে দেখতে পাওয়া যায় সারিবদ্ধ জাহাজগুলো আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে। মনে হচ্ছে যেন সাগরের বুকে এক টুকরো আলোর মিছিল। বাহারি আলোর উঁচু-নিচু দালান।
আরিশা বলে, রাতের সমুদ্র কেমন অদ্ভুত সুন্দর দেখতে!যাকে বলে ভয়ংকর সুন্দর! সমুদ্রের পাড়ে বসে জোৎস্না স্নান করার মত সুখ বুঝি আর হয় না!

অহিন বলে একদম! একটা বিষয় খেয়াল করে দেখেছিস?সমুদ্রের গর্জন দিনের বেলা সাধারণত আশে পাশের শব্দের কারনে শোনা যায় না। সমুদ্রের যে একটা ভয়ংকর রূপ আছে তা বোঝা যাচ্ছে এখন।
অহিন আরিশা হাটতে হাটতে দেখলো কয়েকটি ট্রলবাহী পুলিশের গাড়ি। তারা পর্যটকদের নিরাপত্তা জনিত কোন যাতে না হয় তাই পাহারা দিচ্ছে।

সত্যি কথা বললে রাতের সমুদ্রের গর্জন সত্যিই ভয়ংকর।
আরিশা বলে এতো সুন্দর রাতটা উপহার দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ দোস্ত।রাতের সমুদ্র কতটা সুন্দর দেখতে সত্যি এখানে না আসলে জানতামই না।এই কথাটি বলতেই মনে হলো আরিশা কারো সাথে ধাক্কা খেলো। অদ্ভুত ব্যাপার চাঁদের আলোয় বুঝা গেলো না কে সে!কিন্তু আরিশা পড়ে গিয়ে আবার আগের কাটা জায়গায় ব্যাথা ফেলো।
অহিন লোকটিকে ধরতে যাবে এমন সময় আরিশা বলে অহিন আমার পায়ে আবার লেগেছে।অহিন যেতে লেগে ও থমকে যায়।আরিশাকে দাড় করিয়ে লোকটির দিকে তাকাতেই দেখে লোকটি নেই।কি অদ্ভুত এইমাত্রই তো ছিলো!এভাবে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো কিভাবে?

অহিন দেখলো আরিশা খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটার চেষ্টা করছে।অহিনের কোনদিনও আরিশার কষ্ট সহ্য হয়নি।তাই আজও হলো না।আরিশাকে কোলে নিয়ে রিসোর্টের দিকে হাঁটা ধরে।আরিশা বলে থ্যাংকস দোস্ত। আমি সত্যি হাঁটতে পারছিলাম না।

অহিন বলে তোর ওজন কত রে?
আরিশা ভ্রুকুটি করে বলে,ক্যান?তোর আমার ওজন জানা লাগবে ক্যান?তোর হঠাৎ আমার ওজন জানা লাগতেছে ক্যান?

অহিন বলে,না মানে মনে হচ্ছে আমি ছোট খাটো একটা হাতির বাচ্চা কোলে নিলাম!বলেই অহিন হাসে ভুবন ভোলানো সেই হাসি,যে হাসিতে চোখ হাসে,স্নিগ্ধ সেই হাসি!

অহিন আড় চোখে তাকায় আরিশার রাগী রাগী মুখটার দিকে।কেনো যেন এই রাগী মুখটাও বিষন ভালো লাগে অহিনের।

এমন সময় অহিনের ফোন আসে।আরিশা কোলে থাকায় অহিন ফোন ধরতে পারে না।দ্বিতীয় বার রিং হলে আরিশা হাত দিয়ে অহিনের পকেট থেকে ফোন বের করে।
রিসিভ করে অহিনের কানে ধরে সিহাবের কল।
সিহাব কি যেনো বলে,আর মুহূর্তে অহিনের সুন্দর হাসিটা মুখ থেকে হারিয়ে গিয়ে অন্ধকার ভর করে।

আরিশা বলে, কিরে কি হয়েছে?
অহিন একটু হাসার চেষ্টা করে বলে কিছু হয়নি।আমরা কেমন কাটাচ্ছি সময় তা জানতে কল দিয়েছে সিহাব।
অহিন আরিশাকে বুঝালে ও আরিশা ঠিক ধরতে পারে কিছু তো একটা হয়েছে। নয়তো অহিনকে এমন বিষন্ম দেখাচ্ছে কেনো?

অহিন আরিশার দিকে তাকিয়ে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে!

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here