“অবশেষে_তুমি (পর্ব ০৩)

#অবশেষে_তুমি (পর্ব ০৩)
#Mohua_Afrin_Mim
·
·
·
গাড়ি থেকে নেমেই দেখি বাড়িটা অনেক সুন্দর করে সাজানো। নিয়ন বাতিতে বাড়িটা জ্বলজ্বল করছে।
বাড়ির ভেতর ঢুকে দেখি বাড়ির ভেতরটাও অনেক সুন্দর।

রুম এ গিয়ে দেখি রুমটা অনেক সুন্দর করে সাজানো। ফুল দিয়ে পুরো রুম সাজানো। ফুলের গন্ধে রুমটা মো মো করছে।

উনার কিছু কাজিন এসে আমার সাথে কথা বলছে…..গল্প করছে। আর আমি শুধু ওদের কথায় হু হা করছি😒😒 কি আর করব এতো ভারি সাজে বসে থাকা যায়😞😞

ওরা মজা করে বলছে ভাবি আজকে তোমাদের বাসর রাত। আবার আমার ভাইকে রেখে যেন ঘুমিয়ে না যাও। আমি তো ওদের কথায় লজ্জায় শেষ। আর ওরা ওদের মতো মজা করেই যাচ্ছে। হঠাৎ একজন বলে উঠলো এই তোরা থাম আমাদের নতুন ভাবি তো লজ্জায় শেষ। এবার মজা করা বন্ধ কর। আর তোরা এখন সবাই এখান থেকে চলে আয়। নতুন ভাবিকেকে রেস্ট নিতে দে। ওরা যাওয়ার পর যেন আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম।

অনেক্ষন ধরে বসে আছি। উনার আসার কোনো নাম নেই। এদিকে আমার কোমর বাকা হয়ে যাচ্ছে। একা একা অনেক বোর হচ্ছি। তাই ভাবলাম বসা উঠে একটু হাটাহাটি করি। বসা থেকে উঠে রুমটা দেখতে লাগলাম। রুমটা অনেক সুন্দর করে সাজানো । সব জিনিস অনেক পরিপাটি করে গুছানো।আমার রুমটা অনেক পছন্দ হয়েছে। হঠাৎ খেয়াল করলাম রুমে একটা বড় বুক সেল্ফ আছে। সেখানে অনেক ধরনের বই আছে। সেখান থেকে একটা বই নিয়ে পরা শুরু করলাম। বলে রাখা ভালো আমার বই পড়তে অনেক ভালো লাগে। বই পড়তে আমি ভালোবাসি। যেকনো ধরনের বই হলেই হয় আমি পড়া শুরু করে দেই।

১১ টা বাজে। হঠাৎ দরজায় কারো আওয়াজ শুনে বই রেখে একটু নড়েচড়ে বসি। হালকা চোখ তুলে দেখি উনি এসেছেন। এবার ভালো করে তাকিয়ে আমি পুরাই অবাক। মেরুন কালারের শেরোওয়ানীতে অনেক সুন্দর লাগছে। ফর্সা চেহারা সিল্কি চুলগুলো কপালে পরে আছে। আমি তো চোখ ই ফেরাতে পারছিনা। একটা মানুষ এতটাও সুন্দর হয়। কে বলেছে উনাকে এত সুন্দর হতে। আমি তো double crush খেলাম।

আমার ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে উনি বললেন
– এইভাবে হা করে কি দেখছো!
– আমি লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলাম। এ আমি কি করছি! এইভাবে নির্লজ্জের মতো তাকিয়ে ছিলাম! এখন উনি কি মনে করবেন! (মনে মনে)
– কি হয়েছে! চুপ হয়ে আছো কেনো!
– জ্বি। না মানে।
– কি না মানে করছো।

অহ্ আমার পরিচয় দিতেই তো ভুলে গিয়েছি- আমি অর্ণব চৌধুরী। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। টপ বিজনেস ম্যানদের একজন। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর আমি সব সামলাচ্ছি।

মিম আমি তোমাকে কিছু ইম্পরট্যান্ট কথা বলতে চাই। মন দিয়ে শুনবে।
– জ্বি বলেন।
– মিম আমি তোমাকে কখনো মেনে নিতে পারব না।
– আমি উনার দিকে অবাক চখে তাকালাম।
– দেখো আমি তোমাকে বাবা মায়ের চাপে পরে বিয়ে করেছি। আমি বিয়ে করতে চাইনি। বাবা মার জোরাজোরিতে বিয়ে করতে বাদ্ধ হয়েছি। তুমি এই বাড়িতে থাকবে খাবে সব করবে। তোমার সব প্রয়োজন মিটানো হবে। কিন্তু আমার কোনো ব্যাপারে বা কোনো কিছু তে থাকবা না। আমার কাছে স্ত্রীর অধিকার ফলাতে আসবা না। আর আমার কাছ থেকে কখনো স্বামীর অধিকার আশা করবে না……আশা করি আমার কথাগুলো বুঝতে পেরেছো।
– আমার চোখ ছলছল করছে। কিন্তু নিজেকে শক্ত করে নিয়েছি।

কথাগুলো বলেই উনি ওয়াশরুম চলে গেলো ফ্রেশ হতে। আর আমি উনার যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছি আর কান্না করছি। উনি ওয়াশরুম থেকে বের হতে দেখে চোখ মুছে ফেলি।

উনি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আমাকে ফ্রেশ হয়ে নিতে বলে। আমি উঠে ফ্রেশ হওয়ার জন্য চলে যাই। ফ্রেশ হয়ে এসে বালিশ নিয়ে নিচে শুতে গেলে উনি বলে উঠেন
– কোথায় যাচ্ছো?
– নিচে শুতে।
– দেখো আমি ফিল্মের নায়কের মতো না যে তোমাকে বলব নিচে শুতে। বিছানায় এসে শুয়ে পড়ো।
– আচ্ছা।

বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম যে কি থেকে কি হয়ে গেলো। এমনটা তো চাইনি আমি। তবে কেনো আমার সাথেই এমনটা হলো। বিয়ে নিয়ে সব মেয়েদেরই অনেক স্বপ্ন থাকে…..আমারো ছিলো। উনি তো আমার সব স্বপ্ন নিমিষেই ভেঙ্গে চুরমার করে দিলো। উল্টা পাশে শুয়ে ভাবছি এসব। হয়তো উনি ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু আমার চোখের সব ঘুম যেনো পালিয়ে গিয়েছে। আর চোখ দিয়ে শুধু পানি ঝরছে। আজ যেনো চোখের পানির বাঁধ মানছে না। শুধু আপন মনে পরেই যাচ্ছে। কান্না করতে করতে এক সময় ঘুমিয়ে পরি।
·
·
·
চলবে……………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here