“অবশেষে_তুমি (পর্ব ০৪)

#অবশেষে_তুমি (পর্ব ০৪)
#Mohua_Afrin_Mim
·
·
·
সকালে ঘুম থেকে উঠে বুঝার চেষ্টা করছি যে আমি কোথায় আছি…..ভালো করে খেয়াল করে দেখি অর্ণব আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।। আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে খুব ধিরে নিজেকে উনার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিলাম।। আর নইতো উনি দেখলে কি না কি ভাববে।।

আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে নিলাম। নামাজ পড়ে বারান্দায় গেলাম।
বারান্দাটা অনেক সুন্দর। একটা দোলনা আছে। আমি দোলনায় বসে বসে বাহিরের প্রকৃতি দেখতে লাগলাম। বাড়ির সামনে অনেক সুন্দর একটা ফুলের বাগান আছে। বসে বসে ভাবছি কাল রাতের কথা। অর্ণব আমাকে এসব কি বললো……কেনো বললো…..কি এমন কারন আছে যার জন্য আমাকে মেনে নিতে পারবে না।।

“মানুষের জীবনটা বড়ই অদ্ভুত……তার থেকেও বড় অদ্ভুত হলো মানুষের ভাগ্য।। কেননা কিছু মানুষ না চাইতেও সব পেয়ে যায়…….অার কিছু মানুষ হাজার চেষ্টার পরেও তার পাওনা জিনিসটা পায় না” হয়ত একেই বলে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস।। আর আমার ক্ষেত্রেও হয়তো তাই হয়েছে।। এসব ভাবতে ভাবতে অনেকটা সময় পাড় হয়ে গেলো।।

বারান্দা থেকে রুম এ এলাম। এসে দেখি উনি এখনো ঘুমাচ্ছেন। ঘুমের মদ্ধেও উনাকে অনেক বেশি কিউট লাগছে। পুরো বাচ্চাদের মতো ঘুমাচ্ছে। ঘুমের মদ্ধেও বুঝি একটা মানুষকে এতোটা সুন্দর লাগে😊😊

নিচে গিয়ে দেখি অনেকেই উঠে গিয়েছে। রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালাম…….দেখি যে আমার শাশুড়ি রান্না করছে। আমি উনাকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কেমন আছেন। আমি উনার সাথে রান্নায় সাহায্য করতে নিলে উনি বলে উঠেন–

— এমা! একি করছো!

— আপনার কাজে একটু সাহায্য করে দেই।।

— না না। তোমার কিছু করা লাগবে না। তুমি নতুন বউ…..তুমি কিছু করতে এসো না।।

— আচ্ছা।।

— মা তুমি রান্না করতে পারো তো!

— জ্বী মা।।

— সারাজীবন তো আমিই রান্না করে গেলাম। এবার আমার ছুটি। এবার থেকে তোমার হাতের রান্না খাবো।

— ঠিক আছে মা।।

–তুমি উপরে যাও। আজকে তোমার বউভাত। গিয়ে রেডি হয়ে নাও। অর্ণবের কাজিনরা তোমাকে পার্লারে নিয়ে যাবে।

— আচ্ছা।।

বাবার রুমের সামনে এসে বললাম

— বাবা আসবো!!

— আসো আসো। ভিতরে আসবে এতে জিজ্ঞাসা করার কি আছে।

— না মানে।।

— এটা এখন তোমারো বাড়ি।। তোমার যেখানে ইচ্ছা যেতে পারো।

— আচ্ছা।। কেমন আছেন বাবা!!

— এতোদিন বেশি একটা ভালো ছিলাম না।। এখন তুমি এসে গেছো তাই ভালো থাকবো।।

— হা হা হা।।

আমার শশুড় শাশুড়ী দুজনই খুব ভালো মানুষ। শুধু যার ভালো হওয়ার কথা সেই অন্যরকম।।

রুমে এসে ওয়াশরুম এ চলে যাই। ঘুম থেকে উঠে দেখি মিম ওয়াশরুম থেকে বের হলো গোসল করে। আমি পলকহীনভাবে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। চুল দিয়ে টুপ টুপ করে পানি পরছে।। ভেজা চুলে নাকি মেয়েদের অনেক সুন্দর লাগে কিন্তু এতটাও সুন্দর লাগে মিমকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।। লাল জামদানী শাড়ি পরেছে ও।। শ্যামলা ফর্সা গায়ের রং।। চোখ দুটো টানা টানা……আর মায়ায় ভরা।। এই চোখে তাকিয়ে থাকলে মনে হয় তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছা করে।। আর লাল শাড়িতে ওকে অনেক মানিয়েছে।। একদম লাল পরীর মতো লাগছে।।

হঠাৎ মিম আমার দিকে তাকালে আমি চোখ নামিয়ে নেই। আর ভাবতে থাকি এ আমি কি করছি….আমি ওর দিকে এতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম….আর আমি এসব কি ভাবছিলাম।। আমি তো মিমকে পছন্দ করি না…….আমার মনে ওর জন্য কোনো জায়গা নেয়। আমি তো শুধু……..

সকালে একসাথে বসে সবাই নাস্তা করি।।নাস্তা শেষে পার্লারে চলে যাই।। স্টেজে বসে আছি।। অর্ণব আজকে নীল স্যুট প্যান্ট আর ব্ল্যাক শু পরেছে।। চোখ ধাঁধানে সুন্দর লাগছে। আর আমি নীল লেহেঙ্গা পরেছি ম্যাচিং করে।।

ফটোগ্রাফার আমাদের কাপল ছবি তুলার সময় অনেক ধরনের পোজে ছবি তুলছিলেন। অনেকগুলো ছবিতে উনাকে আমার ক্লোজে এসে দাড়াতে বলছিলেন কিন্তু উনি আমার সাথে ক্লোজ হতে পারছিলেন না। একটু দূরত্তে থেকে ছবি তুলছিলেন। আমিও কিছু বললাম না।।

অনুষ্ঠান শেষে আমাদের বাসায় চলে আসি আমি আর অর্ণব।। বাসায় এসে আমি আমার রুম এ চলে আসি।। রুমটা দেখে মনে হচ্ছে কতদিন হয়ে গেছে রুমটা দেখি না।। রুমে এসে মনে হচ্ছে প্রাণ ফিরে পেয়েছি অথচ একদিন মাত্র হলো ওই বাসায় গিয়েছি।।

উনাকে দেখি উনি ড্রয়িংরুমে বসে আছে।
আর কিছু না ভেবে ফ্রেশ হতে চলে যাই।। কেননা আর কিছুক্ষণ এই সাজে থাকলে মনে হয় অজ্ঞান হয়ে যাব।।

ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি………
·
·
·
চলবে………………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here