অশ্রুসিক্ত নয়নে তুমিই আছো পর্ব ৪+৫

#অশ্রুসিক্ত_নয়নে_তুমিই_আছো
#সুবহী_ইসলাম_প্রভা
#পর্ব – ৪

রনিত আবিরের বিষয়টা বুঝতে পেরে আবিরের পায়ে পারা মারে।আবির এতোটাই বিভোর ছিলো যে পারা মারায় চিল্লাই উঠে।

“আহহহহ……”

নিথু অবাক হয়ে বলে,,,, “কি হলো?”

রনিত কথা এড়াতে বলে,,,,, “কই কিছু হয় নি তো।আবির হাতটা মিলা অনেকক্ষন ধরে হাত বাড়িয়ে আছে মেয়েটা।”

আবিরের হুস ফিরে রনিতের কথা শুনে একটু লজ্জা পায়।তারপর হাত বাড়িয়ে পরিচিত হয়। নিথু ওদের সবার সাথে পরিচিত হয়ে ভালো লাগে।

ইতিমধ্যে গেস্টদের ডিনারের জন্য নেওয়া হয়।ইসরা বলে,,,,,

“নিথু, তুই যা খেয়ে নে। আর ভাইয়া আপনারাও যান।”

“তুই যাবি না।আর ভাইয়া কই? আসার পর তো একবারও দেখলাম না।”

ইসরা কোন কথা বলে না। অহনা প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলে,,,,

“নিথু চলো না অনেম রাত হয়েছে আর সায়েদ এদিক ওদিক কোথাও আছে।”

অহনা নিথুকে নিয়ে যাওয়া ধরলে নিথু অহনাকে থামিয়ে বলে,,,,

“উহুহু,,,,,ইসরা তোর মুখ এমন ফ্যাকাসে কেন রে?আর ভাইয়া কোথায়?বিয়ের দিনও তো দেখা হয় নি আমার তাড়ার কারণে। আর ভাইয়া যদি আশেপাশে থাকতো তাহলে ঠিকই দেখা হতো।”

ইসরা বুঝেছে নিথু সব বুঝে গেছে তাই ইসরা কথা না বাড়িয়েই বলে,,,,,,

“উনি সকাল থেকেই বাড়ি নেই।হয়তো কোন কাজে গেছে। ”

নিথু এই কথা শুনে খুব রেগে যায়।ছোটবেলা থেকেই ইসরার মা-বাবা মারা গেছে তাই নিথুই ওকে সামলায় ওকে গার্ডিয়ানের মতো গাইড করে। ইসরার কোন কষ্ট হলে নিথুরও হয়।নিথু রেগে বলে,,,,

“কাজ আছে মানে?কিসের কাজ তাও আবার আজকের মতো একটা ইম্পর্টেন্ট দিনে?তার কাছে কাজ বড় নাকি তুই?”

নিথুকে এমন রেগে যেতে দেখে অহনা ওকে শান্ত হতে বলে কিন্তু নিথু শান্ত হওয়ার বদলে আরো রেগে যায়। আবির আর রনিত তো বার বার নিথুকে নিয়ে খেতে যেতে চাইছে আর শান্ত করতে চাইছে। পরে ইসরা চোখের ইসরায় বুঝালো যে নিথুকে ও সামলাবে।আর ওদের যেতে বলল।

রাত ১১ টা বেজে গেছে। সব গেস্টরা চলে গেছে আর যাদের বাসা দূরে তাদের গেস্ট হাউজে থাকতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো সায়েদের কোন হুস নেই। মিসেস পারভীন আর মিস্টার সাফোয়াত আরফানকে ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।ইসরা আর নিথু এখনো খায় নি। আবির নিথুকে খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু নিথু নারাজ কারণ ইসরাও এখানো খায় নি আর ইসরাকে রেখে ও খাবে না। আবির আর রনিত অনবরত সায়েদকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোন সুইচটপ।

অহনা বলে,,,, “ভাবি অনেক তো রাত হলো সায়েদ কখন আসবে আপনি ওর জন্য ওয়েট করবেন না যান খেয়ে নিন আর নিথুও তুমিও যাও।”

“না,আপু। উনি আগে……”

কথা শেষ হওয়ার আগেই দরজায় কলিংবেলের আওয়াজ হলো।

আবির দুষ্টুমি করে বলে,,, “ওই যে ভাবি তোমার উনি এসে গেছে।”

কথা বলে দরজা খুলেই দেখে সায়েদ ড্রিংক করে এসেছে আর রিয়ার উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। সায়েদকে এভাবে রিয়ার সাথে দেখেই ইসরার চোখ পানিতে পূর্ণ হয়ে গেলো যেনো পলক ফেললেই শ্রাবণ ধারা বেড়িয়ে আসবে।আর নিথু তো সায়েদকে দেখে অবাক। সে ভাবতেও পারে নি রাস্তার ওই ছেলের সাথে তাদের আবার দেখা হবে আর ইসরা ওকে বিয়ে করবে।

আবির সায়েদকে এভাবে দেখে অবাক হয়ে বলে,,,,

“সায়েদ, তুই ড্রিংক করেছিস?”

সায়েদ মাতলামো গলায় বলে,,,,, “হে আমি ড্রিংক করেছি। তোর কোন সমস্যা?”

এবার আবির রেগে গিয়ে বলে,,,, “আমার সমস্যা মানে আজকের মতো একটা দিনে তুই সারাদিন বাড়িই ছিলি না আর আসলি তো রাত করে তাও আবার ড্রিংক করে আর এখন বলছিস এতে কোন সমস্যা থাকবে না।”

সায়েদ আবিরকে পাত্তা না দিয়ে বলে,,,”না সমস্যা থাকবে না। এখন সর তো সামনে থেকে।”

এই বলে আবির রিয়া কাধঁ ছেড়ে আবিরকে পাশ কাটিয়ে যেতে লাগলে পড়ে যায়।আবির ধরার আগেই ইসরা সায়েদকে ধরে নেয়।সায়েদ ইসরার দিকে তাকিয়ে দেখে টলমল চোখে ইসরা তার দিকে তাকিয়ে আছে।ইসরাকে দেখেই সায়েদ রাগে ইসরাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।

“আহহহ……”

ইসরাকে পড়ে যেতে দেখে নিথু এগিয়ে এসে ইসরাকে ধরে উঠায়।

সায়েদ রাগী গলায় ইসরাকে বলে,,,,

“ওই তোর তো সাহস কম না যে এই সায়েদ আরফানকে টার্চ করতে আছিস।”

ইসরা কিছু বলে না নিরবে চোখের পানি মুছে আর নিথুসহ সায়েদের সকল ফ্রেন্ড সায়েদের এমন ব্যবহারে অবাক।সায়েদ আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই সাফোয়াত আরফান সায়েদকে ধমক দেয়।

“সায়েদদদদ…..”

কথার আওয়াজ শুনে উপস্থিত সবাই সেদিকে তাকায়। সায়েদ তো তার ড্যাডকে দেখে ভিজে বিড়াল হয়ে গিয়েছে। সাফোয়াত আরফানের সায়েদের জন্য চিন্তা হচ্ছিল আর বাহিরে আওয়াজ পেয়ে সেদিকে ছুটে আসে।এসে দেখে সায়েদ ইসরাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে এসব কথা বলছে।

মিস্টার সাফোয়াত আরফান সায়েদের সামনে দাড়িয়ে গম্ভীর স্বরে বলে,,,,,,”এতো রাত অবধি তুমি কোথায় ছিলে?”

সায়েদ মাতলামো ছেড়ে আমতা আমতা গলায় বলে,,,, “ড্যাড,মামে আমি আসলে……”

সাফোয়াত আরফান আবার গম্ভীর স্বরে বলে,,, “তুমি এভাবে ঢলছো কেন?আর মুখ থেকে এসব কি দুর্গন্ধ বের হচ্ছে?তুমি কি ড্রিংক করেছো?”

সায়েদ আবার আমতা আমতা করে বলা শুরু করল,,,,”আসলে ড্যাড আমি…..”

“কি আসলে আসলে তুমি কি ড্রিংক করেছো হে কি না?”

কথাটা সাফোয়াত আরফান জোরেই বলল।সায়েদ ভয়ে বলে,,,,,

“হে।”

“কি?তুমি এতো রাতে ড্রিংক করে বাসায় এসেছো সাথে তুমি আবার ইসরার সাথে খারাপ ব্যবহার করছো তোমার লজ্জা করছে না এসব করতে।”

সায়েদ ভাবলেশহীন ভাবে বলে,,,, “লজ্জা করবে কেন যে যেটার যোগ্য সেটাই করেছি?”

“কি তোমার এতো বড় স্পর্ধা তুমি আমার কাছে এই কথা বলছো তোমাকে তো আমি…..”

এই বলে সাফোয়াত আরফান সায়েদের গায়ে হাত তুলতে গেলে ইসরা এসে হাত আটকায়।

“বাবা,উনি তো ড্রিংকস করে এসেছে কি বলতে কি বলছে ওনার হুস নেই। প্লিজ বাবা উনাকে ছেড়ে দিন আমি ওনাকে ঘরে নিয়ে যাচ্ছি।”

সাফোয়াত আরফান ইসরাকে বলে,,,, “এই ছেলেটা তোমাকে এখানে অপমান করল তারপরও তুমি এই কথা বলছো।”

ইসরা ছলছলে চোখে বলে,,,,,, “থাক না বাবা উনি তো এখন নিজের হুসে নেই ছাড়ুন আমি ওনাকে নিয়ে যাচ্ছি।”

বলেই ইসরা সায়েদকে নিয়ে ঘরে চলে যায়। সায়েদ ইসরার থেকে দূরে যেতে চেয়েছে কিন্তু ইসরা জোর করে নিয়ে গেছে।

ইসরা সায়েদকে নিয়ে চলে গেলে সায়েদের ফ্রেন্ডরা বিদায় নেওয়ার জন্য সাফোয়াত আরফানের কাছে যায় সাথে নিথুও যায়।

আবির বলে,,,,, “আংকেল এবার তো আমাদের যেতে হবে। ”

“তা বাবা তোমরা তো আজ থাকতে পারতে।”

অহনা প্রতিউত্তরে বলে,,, “না আংকেল আমাদের যেতেই হবে। ”

নিথুও সাথে বলে,,,”আংকেল আমাকেও যেতে হবে এমনিতেই অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। ”

সাফোয়াত আরফান নিথুকে দেখে বলে,,,, “রাত তো অনেক হয়েছে, তুমি একা যাবে কিভাবে? রনিত বাবা কিছু মনে না করলে ওকে একটু বাড়ি পৌছে দিতে পারবে।”

রনিত সাথে সাথেই বলে,,,,”আংকেল আমি তো অন্য রাস্তায় যাবো আবির বরং নিথুকে পৌছে দিবে।”

আবির তো শুনে শকর্ড।আবির কিছু বলার আগেই নিথু বলে,,,,

“আংকেল আমার জন্য কাউকে ব্যস্ত হতে হবে না।আমি একাই যেতে পারবো।”

“না নিথু মা আমি তোমাকে একা ছাড়তে পারি না যতই হোক তুমি ইসরার বান্ধুবী। আমার কাছে ইসরা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি তুমিও।”

আবির বলে,,,, “আংকেল আমার কোন সমস্যা নেই।চলুন নিথু।”

নিথুও আর কথা না বাড়িয়ে আবিরের সাথে বেরিয়ে পড়ে।#অশ্রুসিক্ত_নয়নে_তুমিই_আছো
#সুবহী_ইসলাম_প্রভা
#পর্ব – ৫

ইসরা সায়েদকে নিয়ে রুমে চলে আসে।এসেই খাটে শোয়ায় আর সায়েদের জুতা খুলে লেবুর রস আনতে যাবে তখনই সায়েদ ইসরার হাত ধরে এক ঝাটকায় তার বুকের উপর ফেলে দেয়। সায়েদ ইসরাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,,

“ওই তোর তো সাহস কম না আবার আমাকে জড়িয়ে ধরেছিস?”

ইসরা অবাক হয়ে বলে,,,, “আরে আমি আপনাকে কখন জড়িয়ে ধরলাম আপনিই তো এখন আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন।”

সায়েদ মাতলামো গলায় বলে,,, “না আমি তোকে টার্চও করবো না।”

তারপর কি মনে করে ইসরাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে বসে ভ্যা ভ্যা করে বাচ্চাদের মতো কান্না শুরু করে। ইসরা তো পুরাই শকর্ড।

ইসরা ব্যস্ত গলায় বলে,,,”একি কাদঁছেন কেন?কি হয়েছে?”

“কি হয়নি তাই বলো।”

“আচ্ছা তাহলে কি হয়নি শুনি?”

“সেদিন তুই আমাকে রাস্তায় অপমান কেন করেছিলি?জানিস এই সায়েদ আরফানের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাতে পারে না সেখানে তুই এই এই গালটায় চড় মেরেছিলি।” (বাম গালটা দেখিয়ে হাত দিয়ে বলে)

“ওটা তো আমি ভুল করে দিয়েছি তার জন্য তো সর‍্যিও বলেছি তার জন্য আপনি এই রাতে কাদঁছেন?”

“হুম,তোকে আমি ছাড়বো না। আমাকে অপমান করা শাস্তি তোকে দিবো আর বিয়ে করে আরও লাভ তোকে সারাজীবন ধরে শাস্তি দিবো।তোকে জ্বালিয়ে মারব”

“আচ্ছা শাস্তি দিবেন, জ্বালিয়ে মারবেন কিন্তু এখন আগে আপনি ঘুমাবেন।”

“হুম তোকে সেটা বলতে হবে না।”

এই বলে সায়েদ আবার ইসরা জড়িয়ে ধরে ঘুমালো।এবার ইসরা আর উঠার জন্য ব্যস্ত হলো না। ইসরা মনে মনে ভাবছে,,, “মানুষটা আসলে যত খারাপ দেখতে ততোটা আসলে নয়। একটু আগে কিভাবে ভ্যা ভ্যা করে কাদঁছিলো। ইসরা সায়েদকে দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে তা টেরও পায় না।

~~~~~~~~~~~~

সকালে, পাখির কিচিরমিচিরে ইসরার ঘুম ভাঙে। ঘুম ভেঙে সায়েদের মুখটা দেখে ইসরার কাল রাতের সব কথা মনে পড়ে।

ইসরা মনে মনে বলে,,,,,” মিস্টার সায়েদ আরফান আপনি তো আমাকে শাস্তি দিতে চান কিন্তু শাস্তিটা যদি এমন হয় যে আপনি নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলেন তাহলে কেমন হবে? ”

এই ভেবেই ইসরা শয়তানি হাসি দিলো।তারপর আস্তে আস্তে উঠে মেকআপ বক্স এনে সায়েদের মুখে মেকআপ করিয়ে দেয়।

মেকআপ করানো শেষ হলে ইসরা জোরেই বলে,,,, “পারফেক্ট।”

তারপর মুখ চেপে নিজের কাজ বুঝতে পেরে রুম ছেড়ে পালায়।

সায়েদ ঘুম ঘুম চোখে দেখে সকাল ১০ টা বেজে গেছে। সায়েদ উঠেই নিচে চলে যায়।

সায়েদ সিড়ি দিয়ে নামছে আর সবাই তাকে দেখছে মনে হচ্ছে কোন সেলিব্রেটি নামছে। সায়েদ এগুলো পাত্তা না দিয়েই সোজা গিয়ে সোফায় বসে। কিছুক্ষন পরে দেখে সার্ভেন্টরা তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। মিসেস.পারভীনের তো চোখের পলকই পড়ছে না, বুঝার চেষ্টা করছে এই কি তাদের ছেলে। মিস্টার সাফোয়াত আরফান বাড়িতে নেই থাকলে যে ছেলেকে দেখে ছোটখাটো একটা শকর্ড খেতো তা বুঝাই যাচ্ছে।

সায়েদের যেন বিষয়টা খুব বিরক্তিকর লাগছে তাই একজন সার্ভেন্টকে ধমক দিয়ে বলে,,,,, “বাড়িতে কি সার্কাস চলছে যে আমাকে এভাবে দেখা হচ্ছে।”

সার্ভেন্ট মুখ ফসকে বলে দেয়,,,,”সার্কাসও এতো মজার হইতো না যতটা না মজা আপনারে দেইখে পাইতাছি।”

সায়েদ অবাক হয়ে বলে,,,,,,, “মানে?”

সার্ভেন্ট খুব উৎসাহ নিয়ে বলে,,,,, “স্যার আপনি কবে থেকে ফেসিয়াল, মেকআপ শুরু করলেন আমারেও কন,আমিও করমু।”

সায়েদ বিরক্তির সুরে বলে,,,, “হোয়াট ইজ দিস? কি আবোল তাবোল বলছো?”

এবার মিসেস পারভীন বলে,,,,”ও আবোল তাবোল বলছে না বরং সকাল সকাল তুমি আবোল তাবোল কাজ করছো।”

“মানে?”

“মানে, এই একটা আয়না নিয়ে আসো তো।”

তারপর সেই সার্ভেন্ট একটা আয়না নিয়ে আসলো।সায়েদ নিজের মুখটা দেখে আয়নায়।আয়নায় নিজেকে দেখে সায়েদ এক চিল্লান দেয়,,,,

“আয়ায়ায়ায়ায়া,,,,,,,এটা কে?”

সায়েদকে ইসরা ঠোঁটে লিপস্টিক, চোখের নিচে কাজল আর পুরো মুখে পাউডার দিয়ে দিয়েছে। কালো গেঞ্জি পড়ায় কোন অংশে সায়েদ কে ভুতের থেকে কম দেখতে লাগছে না।

মিসেস পারভীন হাসতে হাসতে বলে ,,,,,, “আমার ছেলে মিস্টার সায়েদ আরফান, হাহাহা”

সায়েদ এবার রাগী গলায় ইসরাকে ডাকে,,,,,,, “ইসরা, ইসরা”

ইসরা কিচেনে কাজ করছিলো সায়েদের এতো জোরে জোরে ডাকায় ইসরা ওখানে যেতে বাধ্য হয়।ইসরার মনেই নেই যে সকালে সে সায়েদের কি অবস্থা করেছিল।

ইসরা সায়েদকে না দেখেই বলে,,,,,”কি হয়েছে এমন গরুর মতো চেচাঁচ্ছেন কেন?”

“কেন চেচাচ্ছি তুমি জানো না।”

“আজব তো,আমি কি করে জান……”

এই বলে ইসরা সায়েদের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে যায়।সে বেশ বুঝতে পারছে যে সায়েদ সব বুঝে ফেলেছে এখন আর তার পালাবার পথ নেই।

সায়েদ রাগী গলায় বলে ,,,,, “কি হলো এখন মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না।”

“না মানে আসলে আমি কিছু করি নি।”

“আমি কি একবারও বলেছি তুমি কিছু করেছো?”

ইসরা এখন পড়েছে বিপদে না পারছে কথা শিকার করতে না পারছে কথা ঘুরাতে।

ইসরা কিছু বলতেই যাবে তার আগেই মিসেস পারভীন সায়েদকে বলে,,,, “সব হিসাব পরে হবে আগে গিয়ে তোমার মুখটা ধুয়ে আছো।নিজেকে তো পুরো হিরো সাজিয়ে ফেলেছো।”

সায়েদ আর কিছু বলল না শুধু ইসরার দিকে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চলে গেল।সায়েদ চলে যেতেই ইসরা যেন নিশ্বাস ফিরে পেল।
মনে মনে ভাবছে,,,,,,

“কি ছেলেরে বাবা,এতো সুন্দর করে সাজালাম কিন্তু তার কোন তারিফই করলো না উল্টো আমার উপর রাগ দেখানো হলো।”

ইসরার ভাবনায় মিসেস পারভীন ইসরার কাধে হাত রাখলে ইসরা ভয়ে কেঁপে উঠে।

“এ যাত্রায় তো আমি বাচাঁলাম কিন্তু সায়েদ কিন্তু তোমায় ছেড়ে দিবে না।”

“ও আম্মু আমি ঠিক সামলে নিবো।”

~~~~~~~~~~~

সায়েদ ওয়াসরুমে এসে ঘষে ঘষে মুখ ঢলছে,মেকআপ যেন উঠছেই না। ঢলতে ঢলতে সায়েদের মুখ লাল হয়ে গেছে। অবশেষে সে মেকআপ উঠাতে সফল হয়। সায়েদ রাগে বলছে,,,,

“ইসরা কাজটা তুমি ঠিক করলে না।বাড়ির সকলের কাছে আমাকে জোকার বানানো তো এর হিসাব তোমাকে দিতেই হবে।”

বলেই রাগে সাওয়ার নিয়ে বের হয়।ইসরা একবারও রুমে যায় নি। সে জানে রুমে গেলে আর আস্ত ফিরবে না। তাই কিচেনেই কাজ করতে লাগল।

অনেকক্ষন ধরে ইসরা আসছে না দেখে সায়েদ ওকে ডাকলো,,,,

“ইসরা আমার টাই টা কোথায় রেখেছো?ইসরা এই ইসরা”

সায়েদের এভাবে ইসরাকে ডাকতে দেখে ইসরা অবাক হলো। কারণ যতোদুর মনে পড়ে ইসরা সায়েদের কাপড়ে হাত দেয় নি তাহলে টাই ও রাখবে কোথায়?

মিসেস পারভীন সায়েদের এমন ডাক শুনে অনেক খুশি হয়।সে ঠেলে ইসরাকে কিচেন থেকে বের করে রুমে যেতে বলে।

ইসরা সুরা পড়তে পড়তে রুমে যায়।আজ আল্লাহ জানে তার কি হয়। ইসরা আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে সায়েদের একদম পিছে গিয়ে দাঁড়ায়।ইসরা কিছু বলার আগেই সায়েদ বলে,,,,

“এসেছেন তাহলে মহারানি।আমি তো ভেবেছিলাম আসবেনই না।”

ইসরা অবাক হয়ে বলে,,,, “আপনি জানলেন কিভাবে? ”

সায়েদ উত্তর দিলো না সোজা তার দিকে ঘুরে। ইসরা সায়েদকে দেখে ভয় পায় মুখে রাগ স্পষ্ট না জানি তার সাথে কি করে।

ইসরাকে অবাক করে দিয়ে সায়েদ বলে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here