#আমার_গল্পে_তুমি🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#৬_পর্ব
,
দেখো আমার কোনো পিএ প্রয়োজন নেই আমি একাই একশো তবে তোমার জবটা হলো,, পিএ এর মতোই,,এই যেমন সকালে আমি উঠি আবার কোনো কোনো দিন ঠিক পাই না তাই উঠতে দেরি হয়ে যায় আর আমাকে কেউ ডাকেও না,, তো তোমার প্রথম কাজ হলো আমাকে প্রতিদিন সকাল সকাল ফোন করে জাগিয়ে দেওয়া,, তারপর অফিসে এসে আমি যে কাজগুলি তোমাকে দেবো সেগুলি করা,,, সব সময় আমার পিছে পিছে থাকতে হবে আমার কখন কোথায় কয়টায় মিটিং সেটা মনে করিয়ে দিতে হবে,, ক্লাইন্ট এর ফোন রিসিভ করে তার সাথে কথা বলতে হবে,, আবার আমার কাজের জন্য বাহিরে যাওয়া লাগলে তোমাকেও আমার সাথে যেতে হবে,, তোমাকে নয়টার মধ্যে অফিসে আসতে হবে আর ওদিকে পাঁচটার মধ্যে তুমি বাড়ি চলে যাবে কেননা ছয়টা থেকে আবার চাম্পকে পড়াতে হবে,, আর এর জন্য প্রতিমাসে আমি তোমাকে বেতন ও দেবো এই ধরো ত্রিশ হাজারের মতো,, আর যদি তোমার কাজ ভালো হয় তাহলে এক দু হাজার বাড়তেই পারে,, আবার চাম্পকে পড়ালে ওখান থেকে হাজর খানিক পাবে, এবার বলো তুমি রাজি??
আমি ওনার কথাগুলো মন দিয়ে শুনলাম তারপর বললাম,,, আপনি ভাবলেন কি করে আমি আপনার এই প্রস্তাবে রাজি হবো,, আর তাছাড়া আমি একটা প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে এভাবে আপনার সাথে হুটহাট বাইরে যেতে পারবো না,, আর তাছাড়া আমার ভার্সিটি আছে,, আমার এতো টাকার লোভ নেই যে আপনি লোভ দেখালেই আমি রাজি হয়ে যাবো,, আমার নিজের উপর বিশ্বাস আছে আমি চেষ্টা করলে একটা না একটা জব ঠিকি পেয়ে যাবো,,, আসছি, এই বলে আমি বেরিয়ে আসতে যাবো তখনি ওনি বললেন।
দাঁড়াও মিস ইয়ানা,, তুৃমি কি বললে?? তুমি চেষ্টা করলে জব পেয়ে যাবে?? আরে তুমি জানো তোমার এই যোগ্যতা দিয়ে এই বাজারে একটা ভালো চাকরি পাওয়া কতটা দুঃসাধ্য,,, আর তুমি যদি অন্য কোথাও জব করো তাহলেও তুমি ভার্সিটিতে যেতে পারবে না,,, আর কি এমন বলেছি যে তুমি জবটা করতে পারবে না,,, আমার পরিবার আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে একটা মেয়েকে সম্মান দিতে হয়, আর আমি তো একবারো বলিনি যে তোমায় একা আমার সাথে যেতে হবে,, আরে ভাইয়া কি একা গেছে ওর সাথে আরো দু একজন গেছে, তেমনি আমার সাথে তুমি সহ আরো কয়েক জন যাবে,,, আর আমি তোমাকে যে জবটা অফার করলাম সেটা তোমার আকসেপ্ট করা উঠিত কেননা তোমার উচিত তোমার মা কে সুখে রাখা।
ওনার কথা শুনে আমি ওনার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই ওনি বললেন।
আরে এভাবে দেখছো কেনো?? এটা ভেবো না যে আমি তোমার উপর নজর রাখছি তুমি মা আর ভাবিকে বলেছিলে যে তোমার বাসায় তুমি আর তোমার মা থাকে, সেখান থেকেই জেনেছি,,, আর শুধু তোমার কেনো আমাদের সবারি উচিত বাবা মা কে সুখে রাখা খুশি রাখা কেননা মা বাবা আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করেন,, আমাদের পিছনেই তাদের অর্ধেক জীবন ব্যায় করে ফেলেন আর আমাদের উচিত বাকি অর্ধেক জীবনে তাদের সুখে রাখা মাথায় তুলে রাখা,, এবার দাখো তুমি কি করবে।
দয়া করছেন??
না আমি তোমাকে দয়া করছি না শুধু সাহায্য করছি,, যাতে আমাদের দেশ থেকে একজন বেকার কমে,,, তোমার কাজটা অনেকটা ফ্রিল্যান্সি এর মতো আমি তোমাকে সবকিছু বুঝিয়ে দেবো আর তুমি কাজ করবে,, বলো রাজি??
আমার একটু সময় লাগবে,, ভেবে দেখতে হবে।
ভাবো তবে বেশি সময় নয়,, সন্ধ্যাই উত্তরটা দিতে হবে,, ওকে এখন তুমি যেতে পারো।
তারপর আমি ওখান থেকে চলে আসলাম৷,,, বাইরে এসে রিক্সা নিয়ে সোজা বাড়ি চলে গেলাম, ফ্রেশ হয়ে খেয়ে আম্মুর কাছে বসে আম্মুকে সব বললাম।
দেখ আমি তোর উপর কিছু চাপিয়ে দেবো না তোর যা ভালো মনে হয় তুই কর,,, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল আম্মু ,, আমি ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেই পারিনি।
,,,,,সন্ধ্যায়,,,,,
আস্তে আস্তে দিন আগের তুলনায় অনেকটায় ছোট হয়ে গেছে,, ছয়টা নাই বাজতে সূর্যের আলো কমে যায়, আমি পরশদের বাসায় গিয়ে কলিং বেল চাপতেই আপু দরজা খুলে দিলো,,
ভিতরে আসো,, ফিসফিস করে বলল আপু।
এতো ফিসফিস করে বলার কি আছে জোরে বললেই তো হয়,,, আমি কিছু না বলে ভিতরে চলে গেলাম দেখলাম পুরো বাড়ি কেমন চুপচাপ,, পরশ ঠোঁটের উপর হাত রেখে বসে আছে,, আমি গিয়ে পরশের সাথে বসে জোরেই বললাম,,, কি হয়েছে এভাবে বসে আছো কেনো।
হিসসসস কিউটিপাই আস্তে কথা বলো নয়ত বিপদে পরবে। ফিসফিস করে বলল পরশ।
কেনো?? পরশ কিছু বলবে তার আগেই কলিং বেল বেজে উঠল,, আপু রান্না ঘরে আর পরশও ছোট ডয়িং রুমে কেউ না থাকায় আমিই গিয়ে দরজাটা খুললাম, দেখলাম আর্দ্র এসেছে।
কি ব্যাপার তুমি দরজা খুললে কেনো বাড়িতে কেউ নাই নাকি।
পরশের মতো আমিও ফিসফিস করে বললাম,,, আছে কিন্তু ডয়িং রুমে নেই তাই আমি খুললাম।
আর্দ্র ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,, মাথাটা কি গেছে?? এতো আস্তে কথা বলছো কেনো??
কেনো বলুন তো??
সেটা আমি কীভাবে জানবো?? রেগে বলল আর্দ্র।
আমিও তো জানিনা বাড়ির সবাই এভাবে কথা বলছে তাই আমিও বললাম,,,। আমার কথাশুনে আর্দ্র কিছু একটা ভেবে বলল,, ওহ শিট সরো সামনে থেকে এই বলে আমার পাশদিয়ে হেঁটে ভিতরে চলে গেলো।
কি হলো ব্যাপারটা?? সবাই এমন করছে কেনো আর আর্দ্র এভাবে চলে গেলো কেনো?? ওনার সাথে তো আমার কথা আছে সেটা না শুনেই চলে গেলো,, আমিও ভিতরে গিয়ে পরশকে নিয়ে ওর রুমে গিয়ে ওকে পড়াতে বসালাম,, পরশের রুমে আসার পথে দেখলাম আর্দ্রের রুমের দরজা বন্ধ,, কি হলো ওনি তো প্রতিদিন আমার সাথে ঝগড়া করার জন্য একদম উৎ পেতে থাকে তাহলে আজকে রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছে কেনো??
আচ্ছা পরশ কি হয়েছে বলোতো?? তোমরা সবাই এতো আস্তে কথা বলছো কেনো?? আর তোমার চাচ্চু ওভাবে রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছে কেনো??
পরশ আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বলল,, চাচ্চু বাইরে বেরোবে না তো?? কেননা বাইরে বেরোলে তো চাচ্চুকে ধরে বিয়ে দিয়ে দেবে।
কে??
রাগি দীদুন।।
এই রাগী দীদুন টা আবার কে??
আরে তুমি জানো না?? রাগি দীদুন ভীষণ রাগি তাই ওনি রাগী দীদুন,,, কেউ জোরে কথা বললে ওনি ভীষণ রেগে যান।
ওনি তোমার কেমন দীদুন হন??
তখনি অন্তরা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলল,,আরে তোমাকে তো বলায় হয়নি আসোলে আমার ফুপি শাশুড়ী এসেছেন ওনি একটু রাগি কিন্তু মনটা অনেক ভালো,, ওনি এখন ওনার রুমে আছেন ওনার কথায় বলছে পরশ,,,, এই নাও মিষ্টি খাও।
সেটা তো বুঝলাম, কিন্তু ওনার আসা দেখে আর্দ্র কেনো দরজা বন্ধ করে রেখেছে??
আর বলো না ,, আসোলে কি বলোতো ওনি এসেই শুধু বলেন আর্দ্র বিয়ে করছিস না কেনো বয়স তো আর কম হলো না আর কয়েকদিন পর তো চুলে পাক ধরবে তখন মেয়ে পাবো কই,, এই সব বলে আর বিভিন্ন মেয়েদের ছবি দেখায়,,, যেহেতু ওনি বাবা মানে আমার শশুরেরও বড় তাই আর্দ্র কিছু বলতেও পারে না আবার সয্য করতেও পারে না, শুধু রাগে কড়মড় করে,, এই জন্যই রুমে দরজা বন্ধ করে বসে আছে,, বিছানায় বসে বলল অন্তরা।
আপনার ফুপি শাশুড়ী তো ঠিকি বলেছেন আসোলেই ওনার বয়স হচ্ছে বিয়ে করা উচিত ওনার।
হুমম তুমিও বলো তারপর দেখো ও কি করে আচ্ছা তুমি পড়াও আমি গেলাম,, এই বলে অন্তরা চলে গেলো।
এই তো পাইছি একটা বুদ্ধি আমার পিছে লাগা এবার দেখাবো মজা,,, মনে মনে এটা বলে ইয়ানা পরশকে বলল,,এই পরশ একটা মজার গেম খেলবা পড়ার পরে??
গেম?? কি গেম আমি খেলবো।
আচ্ছা আগে পড়া শেষ হোক তারপর আমরা দুজনে মিলে গেমটা খেলবো ওকে??
ওকে ডান।
এবার বুঝবে আর্দ্র চান্দু এই ইয়ানা কি জিনিস,, একটা মিষ্টি মুখে দিয়ে মনে মনে কথাগুলি বলে হাসলো ইয়ানা।
#আমার_গল্পে_তুমি🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#৭_পর্ব
,
পড়ানো শেষে ইয়ানার কথামতো পরশ আর্দ্র রুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,,কিউটিপাই আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই কিছু হলে সব তোমার দোষ,, আমি কিন্ত বলে দেবো যে এই সব তোমার প্ল্যান।
পরশ চাচ্চুর চাম্প তুমি না সাহসী এতো ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই তুমি শুধু দরজায় টুকা দিয়ে বলবা যে চাচ্চু দরজা খোলো দেখ আমার হাতে কি এটা বলে জেদ করবে , এটা না করলে ওনি কিছুতেই দরজা খুলবে না,,জানি এটা ভুল পদ্ধতি তবুও ওনাকে কেস খাওয়ানোর জন্য এমনটা করায় যায়।
সাহসী না কচু চাচ্চু একবার রেগে গেলে আমার সাহস ফুস, পাপ্পার থেকে চাচ্চুকে বেশি ভয় লাগে,, এটা বলে পরশ আস্তে করে আর্দ্রর রুমের দরজায় টুকা দিয়ে বলল,,,চাচ্চু দরজাটা একটু খোলো না দেখো আমার হাতে কি,,,,
দীদুন নয়ত তোমার মাম্মামকে দেখাও চাম্প আমি কাজ করছি ,, ভিতর থেকে বলল আর্দ্র।
দেখেছো চাচ্চু কাজ করছে চলো চলে যায় ডিস্টার্ব করলে রাগ করবে,, ফিসফিস করে বলল পরশ ইয়ানাকে।
আরে ওনি ব্যাস্ত নাহ,, ওনি তো কেবল অফিস থেকে ফিরল তাই না?? তাহলে এখন কীসের ব্যাস্ত বলো,, আবার ডাকো।
তুমি একটুও কথা শোনো না,,, এটা বলে পরশ আবার আর্দ্র কে ডাকতে লাগল এভাবে বার বার ডাকায় আর্দ্র বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে বাইরে এসে বলল,, কি হয়েছে?? ততক্ষণে ইয়ানা লুকিয়ে পরেছে।
পরশ আর্দ্র কে বাইরে আসতে দেখে পাশে তাকিয়ে দেখলো ইয়ানা নেই,, পরশ চোখ বড় করে আর্দ্রের দিকে তাকিয়ে বলল,,, এই দাখো আমার হাতে বল।
এটা তো আমি দেখেছি চাম্প তুমি এটা দেখানোর জন্য আমায় ডাকলে?? তোমার পড়া শেষ না?? তাহলে যাও নিচে গিয়ে খেলো ওকে,, এটা বলে কেবলি আর্দ্র রুমে ঢুকতে যাবে তখনি পাশের একটা রুম থেকে আর্দ্রের ফুপি বেরিয়ে এদিকেই আসলো,,,আসলে ইয়ানা জানত যে আর্দ্রের ফুপি এখনি বেরোবে,, কেননা তখন অন্তরা বলেছিলো যে ওনি মাগরিবের নামাজ পড়ে তারপর কিছুক্ষণ জায়নামাজ এর উপর বসে জিকির করেন তারপর নিচে আসবে আর ইয়ানাও সেই সুযোগটাই কাজে লাগালো।
আরে আর্দ্র তুই এসেছিস আমি সেই কখন এসেছি তোকে একবার এর জন্যও দেখলাম না, চল নিচে চল কথা আছে,, এই বলে আর্দ্রের ফুপি শরীফা বেগম নিচে চলে গেলো।
হয়ে গেলো যেটার জন্য রুমে ছিলাম সেটাই হলো,, আর্দ্র বিরক্ত হয়ে ওর ফুপির পিছনে যেতে গেলে দেখলো ইয়ানা পরশের রুমের দরজার পিছনে দাঁড়িয়ে আর্দ্র কে দেখে হাসতেছে।
তারমানে এটা ওনার কাজ হুমম, একরাব হাতে পাই তারপর দেখাবো মজা।
ডয়িং রুমে শরীফা বেগম সহ কবির,, আশা ও অন্তরা সবাই বসে ছিলো তখনি পরশের হাত ধরে আর্দ্র নিচে নামলো,, আর্দ্র কে নিচে নামতে দেখে বাড়ির সবাই তো হা করে তাকিয়ে আছে।
আয় বস আমার কাছে,,, তা কবির ছেলের বয়স তো আর কম হইলো না আর কতদিন ছেলেকে বিয়ে না দিয়ে এভাবে বসায়ে রাখবি,, অন্তরার মতো একটা লক্ষী মেয়ে দেখে বিয়ে দিয়ে দে।
আমি কি করবো আপা ওই তো বিয়ে করে না।
সেকিরে আর্দ্র এসব কি৷ তুই জানিস না বিয়ে করা ফরজ,, এভাবে আরো নানা কথা বলে আর্দ্র কে জ্ঞান দিতে লাগল, আর এদিকে আর্দ্র পারছেনা এখান থেকে ছুটে চলে যেতে চুপচাপ দাঁড়িয়ে কথাগুলো হজম করছে,, ইয়ানা এককোনায় দাঁড়িয়ে ছিলো আর্দ্রের করুন মুখ দেখে ওর খুবি হাসি পাচ্ছে তবুও দাঁতে দাঁত চেপে কোনোমতে হাসিটা দামিয়ে রেখেছে, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো কই মুখ ফসকে একটু জোরেই হেসে ফেলল,, ইয়ানার হাসি শুনে সবার চোখ ইয়ানার দিকে গেলো অন্তরা ইশারায় ওকে চুপ থাকতে বলছে আর্দ্র রেগে লাল হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে যেনো কাঁচা চিবিয়ে খাবে।
ওই মাইয়া এদিকে আসো,,
শরীফা বেগমের কথা শুনে ইয়ানা হাসি বন্ধ করে হেঁটে ওনার সামনে এসে দাঁড়াল।
তুমি কে? তোমাকে তো চিনলাম না আর এতোক্ষণ কই ছিলে??
আসোলে ফুপি ও হলো ইয়ানা পরশের টিউশন টিচার, কয়দিন হলো ও পরশকে পড়াচ্ছে।
ওহ মাস্টারনী,, তা আর্দ্র বাড়িতেই এতো সুন্দর একটা মেয়ে থাকে তবুও তোর পছন্দ হয় নাহ?? এতো সুন্দর মেয়ে পছন্দ হলে নিঃসংকোচে বলবি, তুই কি বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিস নাকি??
শরীফা বেগমের কথা শুনে ইয়ানা চোখ বড় বড় করে আর্দ্রের দিকে তাকালো দেখলো আর্দ্র বিরক্তি নিয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।
শরীফা বেগম আরো কিছু বলতে যাবে তখনি পরশ বলে উঠল মাম্মাম আমি মিষ্টি খাবো ,, অন্তরা কেবলি উঠতে যাবে তখনি ইয়ানা বলল,, আরে আপু তোমাকে উঠতে হবে না তুমি থাকো আমিই পরশকে কিচেনে নিয়ে যাচ্ছি,, এই মহুর্তে এখান থেকে সরতে হবে নয়ত এই মহিলা না জানি ধরে বেঁধে আবার ওই গোমরা মুখো লোকটার সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়,, মনে মনে বলল ইয়ানা।
দেখেছো আমি তোমাকে বললাম না চাচ্চু রাগ করবে,,, মিষ্টি খেতে খেতে বলল পরশ।
হুমম তাতো দেখলামই,
,, কি গো পেয়েছো নাকি মিষ্টি?? কিচেনে এসে বলল অন্তরা।
হুম আপু, আচ্ছা আপু আমি এখন আসি বেশি রাত হলে আম্মু আবার রাগ করবে।
আচ্ছা ঠিক আছে যাও,,,
অন্তরার থেকে বিদায় নিয়ে কেবলি কিচেন থেকে বেরোতে যাবে তখনি সামনে আর্দ্র এসে দাঁড়াল।
কি হলো এভাবে সামনে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো??
তা তোমার উত্তর কি কাল থেকে অফিস জয়েন করছো তো??
হুম আমি রাজি।
গুড,, ওকে এখন যাও।
কি হলো ওনি কিছু বললেন না কেনো ওনাকে এতোগুলা ভাষণ শুনালাম তবু ওনি এমন চুপচাপ আছেন,, কি জানি ওনার মনের ভিতর কি চলছে,, মনে মনে এটা বলে বেরিয়ে গেলো ইয়ানা।
কাল থেকে বুঝবে কাজ কি, আর্দ্র এর সাথে লাগতে আসলে পস্তাতে হয় সেটা তুমি খুব ভালো করেই টের পাবে মিস ইয়ানা,, মনে মনে বলল আর্দ্র।
,,,,,রাতে,,,,,
শোনোনা আম্মু আমি ভেবেছি যে টাকা গুছায়ে একটা স্কুটি কিনবো তারপর তোমাকে পিছনে বসায়ে সারা ঢাকা শহর ঘুরাবো,,, খেতে খেতে বলল ইয়ানা।
হুমম এখনো অফিসে গিয়ে কাজই করলো না তার আগেই কতশত ভেবে বসে আছে। ইয়ানাকে খাইয়ে দিতে দিতে বলল ওর মা।
ভাবতে তো হবেই, তুমি দেখো আম্মু আমি তোমার কোনো কষ্ট পেতে দেবো না, একদম রাণীর মতো করে রাখবো।
আচ্ছা রাখিস পাগলি একটা,, এখন চুপচাপ খেয়ে নে তো, অনেক রাত হয়েছে কালকে আবার অফিস আছে।
হুম ঠিক বলেছো আজকে সকাল সকাল শুয়ে পড়তে হবে কাল তো আবার অফিস আছে,, দাও যলদি খাইয়ে দাও,,,
,,,,সকালে,,,
ঢাকা শহরে যে জ্যাম তাই একটু তারাতারিই বেরিয়ে পড়েছি নয়ত দেরি হলে আবার ওই গোমরা মুখো টা কি বলবে কে জানে,,, অবশেষে অফিসে আসতে পারলাম যাক বাবা টাইমের মধ্যেই এসেছি তবে আমি বসবো কোথায়?? হায় হায় এটা তো আমি জানি না এখন কি করবো,, আশেপাশে তাকিয়ে দেখি এরি মধ্যে প্রায় অনেকেই চলে এসেছে আর তারা তাদের ডেস্কে বসে পড়েছে,, সবাই সবার কাজ নিয়ে ব্যাস্ত কেউ আমার দিকে তাকাচ্ছেই না,, উফফ কি যে করি,,, কিছুক্ষণ ভেবে মাথায় একটা বুদ্ধি এলো,, কালকে যে রুমে ইন্টারভিউ হয়েছিলো সেই রুমে গিয়ে বসে থাকি তারপর ওনি আসলে ওনার থেকে জেনে নেবো যে আমার ডেস্ক কোনটা,, সকালে ফোন করে ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলাম তাও এতো লেট হুমম?? সে আবার বড় বড় কথা বলে।
আজকে একটু দেরি হয়ে গেলো,, তারাহুরো করে আর্দ্র অফিসে ঢুকে সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিজের কেবিনে চলে গেলো গিয়ে দেখলো সোফায় ইয়ানা বসে আছে।
তুমি?? এখানে কি করছো??
চলবে,,,,,???
চলবে,,,,,,??