আলো আঁধার, পর্ব:২+৩

#আলো_আধাঁর
লেখা- জেসিয়া জান্নাত রিম

২.
একটু আগে ওর ননদরা ও বাড়ির অন্য মেয়েরা হিয়াকে বাসর ঘরে রেখে গেছে। বলে গেছে ফ্রেস হয়ে নিতে।রাজিবের আসতে অনেক দেরি হবে ও মুরুব্বিদের সাথে কথা বলছে। হিয়া দরজা লাগিয়ে রুমের মাঝে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে রুমটাকে পর্যবেক্ষণ করল। খুব সুন্দর সাজানো গোছানো রুম। রুমের প্রতিটা জিনিসে হালকা বৈদেশিক ভাব লক্ষ করা যায়। রুম এবং বারান্দার মাঝের দেয়ালটা কাচেঁর। নীল পর্দা ঝুলছে তাতে। পর্দা সরিয়ে ভিতর থেকেই বারান্দাটা দেখে নিল হিয়া। বারান্দাটা আরও সুন্দর। খুব বড় এবং অনেক রকম ফুলগাছে ভর্তি। একসাইডে বড় একটা দোলনা। অন্য সাইডে একটা গোল টেবিল ও একজোড়া বেতের চেয়ার। হিয়ার মনে হচ্ছে মানুষটা বেশ সৌখিন। তাছাড়া ও শুনেছে রাজিব এস এস সি দিয়েই বিদেশে পড়াশোনা করতে চলে গেছিল। ফিরেছে এম বি এ শেষ করে একবছর হলো। তাই রুমের সবখানে বিদেশি ছোয়া। বারান্দার দরজা খুলে একবার ভাবলো গিয়ে ভালো করে দেখে আসে পরে কি ভেবে আর ওদিকে না গিয়ে নিজের জিনিসপত্র খোজায় মনোযোগ দিল ও। রুমের এককোণায় ওর লাগেজগুলো রেখে গেছে এ বাড়ির কাজের ছেলেটা। বড় লাগেজটা খুলে সুতির একটা লাল শাড়ি বের করে নিল হিয়া। টয়লেট্রিজের ব্যাগটা নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকল সে। অনেক্ষণ সময় নিয়ে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে এসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসল ও। এখন ক্লান্তি ভাবটা অনেকটা কমেছে ওর। আয়নায় নিজেকে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে নিয়ে নিজেকে সাজাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল ও। চোখে মোটা করে কাজল দিল হিয়া। হিয়ার চোখটা এমনিতেই অনেক সুন্দর। মোটা করে কাজল দিলে আরো সুন্দর লাগে। ঠোটেঁ গাঢ় করে লাল লিপস্টিক দিল। চুলটা হাত খোপা করে মাথায় একহাত ঘোমটা টেনে বিছানার মাঝে বসে পরল হিয়া। এতেই হিয়াকে অপরুপ লাগছে। মেক আপের প্রয়োজন নেই ওর। ফর্সা মুখে ঠোঁটের নিচের তিলটা এখন বোঝা যাচ্ছে। একটু আগের ভারি মেক আপে এই তিলটা হারিয়ে গেছিলো যদিও এটিই ওর রুপ বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ। বসে বসে অপেক্ষা করছিল ও রাজিবের জন্য কিছুটা নার্ভাসনেস ভালোলাগা ভয় এসব সহ একধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া হচ্ছে ওর ভিতর। এসবের মাঝে হঠাৎ ওর দিয়ার মুখটা মনে পরে গেল। মুখে হাসি রেখে বিদায় দিলেও চোখদুটি ছলছল করছিল ওর। হিয়ারও কান্না পাচ্ছে। না জানি এখন দিয়া কি করছে? হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে সচকিত হলো হিয়া। আজ থেকে ওর নতুন জীবনের শুরু। মানুষটা কেমন হবে? ওর মনের মতো কি? নাকি…..
বেশি কিছু ভাবতে পারলো না হিয়া সম্পর্কের শুরুর মূহুর্তটা দুশ্চিন্তা দিয়ে শুরু করতে চায়না ও। ঘোমটাটা ঠিকঠাক করে আরষ্ট হয়ে বসে রইল হিয়া। ঘোমটার‌ ফাক দিয়ে খুব সাবধানে রাজিবকে লক্ষ করছে ও। দরজা দিয়ে ঢুকে রাজিব ওর দিকে না এসে আলমারির কাছে গেল। আলমারি খুলে একটা টি-শার্ট আর ট্রাউজার বের করে সোজা বাথরুমে ঢুকে পড়ল। হিয়া ওভাবেই বসে রইল। প্রায় আধঘন্টা পর বেরিয়ে এল রাজিব। মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করে নিল হিয়া। রাজিব এবার ওর পাশে এসে হাত দিয়ে ফুল সরিয়ে শুয়ে পরল। ওকে দেখে বলল,
এখনো এভাবে বসে আছেন কেন? টায়ার্ড লাগছে না শুয়ে পরুন। আমার তো খুব ঘুম পাচ্ছে আমি তো ঘুমাচ্ছি।
বলেই আর একমুহুর্ত দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পরল ও। কিছু সময় পর ধীরেধীরে নিজের ঘোমটা সরালো হিয়া। অপলক দৃষ্টিতে রাজিবের দিকে চেয়ে রইল কিছুক্ষন। মনের ভিতর থেকে কেউ জানান দিল এই ঘুমন্ত রাজপুত্রটা আজ থেকে ওর। শুধুই ওর। কিন্তু আসলে কি তাই? এক অজানা আশংকা এসে আবারও ঘিরে ধরল ওকে। কিন্তু রাজিবের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে সমস্ত দুশ্চিন্তা আবারও দুর হয়ে গেল ওর। ফর্সা লম্বাটে মুখ,জোড় ভ্রু,বা চোখের পাশে ছোট্ট একটা তিল,চাপ দাঁড়ি সব মিলিয়ে অসাধারণ সুন্দর রাজিব। তবে বাইরের সৌন্দর্যের সাথে কি ভেতর টাও সুন্দর তার। ভাবতে ভাবতেই একবার রুমের রেডিয়াম ঘড়ির দিকে তাকালো হিয়া। ২:১০ মিনিটের জানান দিচ্ছে ওটা। ঘড়ির উপর থেকে চোখ সরিয়ে রাজিবের মুখের দিকে তাকিয়ে ওভাবেই কখন যে ঘুমিয়ে পরল তা টেরই পেলনা হিয়া।

ভাইকে বাসরে ঢুকিয়ে কিছুক্ষন আত্মীয় বন্ধুদের সাথে গল্প করে নিজের রুমে ঢুকল রিয়াদ। সব মিলিয়ে ভিষন ক্লান্ত ও। কোনোরকমে ড্রেস চেন্জ করে বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিতেই তন্দ্রা এসে ঘিরে ধরল ওকে। বন্ধ চোখের সামনে ভেসে উঠলো ছাদের সেই পরিটার মুখ। সাথে সাথে সমস্ত ঘুম কর্পূরের মতো উবে গেল। থেকে থেকে ছাদের সমস্ত কিছু ওর কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করতে থাকলো। ওর প্রচন্ড কৌতুহল হচ্ছে পরিটার সম্পর্কে জানার জন্য। কাল তো আসবেই সে আর ও ওতো যাবে ওর ভাইয়ের সাথে‌ ঐ বাড়িতে। কি করে পরিটার সাথে কথা বলবে এখন সেটাই চিন্তা করছে। পরিটা কি আদৌ ওর সাথে কথা বলবে। ছাদ থেকে নামার পর ও তো কারো সাথে কথা বলেনি। সারাক্ষণ ওর ভাবীর আচলের একটা কোণা ধরে ঘুরছিল মেয়েটা। ওদের আসার সময় আস্তে করে আচল টা ছেড়ে দিয়েছিল ও। ওর ভাবী গিয়ে যখন মেয়েটার কপালে আলতো করে তার ঠোঁট ছুয়িয়েছিল তখন চোখ দুটি ছলছল করে উঠেছিল কেবল এছাড়া একফোটাঁ পানিও চোখ থেকে পরেনি ওর না বলেছে একটাও কথা। মেয়েটা এখন কি করছে? মেয়েটা কি জানে তার কথা ভেবে পুরো রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিচ্ছে কেউ? আর রিয়াদ ইবা এত কেন ভাবছে ওর কথা? একবার মাত্র দেখেছে ওকে কথাও হয়নি। তাছাড়া যেভাবে দেখেছে সেভাবে দেখলে যে কারোরই মেয়েটাকে নিয়ে খারাপ ধারণা জন্মাবে। তাহলে ওর কেন এমন ধারণা হচ্ছেনা? কেন মনে হচ্ছে মেয়েটার কথা এত? হয়তো ওর প্রফেশনের কারণে। কিন্তু না তাও না। আগে কখনোই কাউকে দেখে এমন অনুভূতি হয়নি ওর। তবে কি এটাই লাভ এ্যাট ফার্স্ট সাইট? শুয়ে শুয়ে এমন নানা কথাই ভাবছিল রিয়াদ। ও কি জানে যার কথা ভেবে ও রাত পার করে দিয়েছে ওর সেই পরি এখন কি করছে? চারিদিকে সিগারেটের ধোয়া দিয়ে এক রহস্যময় ইন্দ্রজালের রচনা করে চলেছে ওর পরি। আর এভাবেই রাতটা শেষ করবে ও।

ঘুম থেকে উঠেই নিজের পাশে ঘুমন্ত মেয়েটার দিকে চোখ গেল রাজিবের। কিছুক্ষণ মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল ও। লাল সুতির শাড়ি , চোখের কাজল একটু লেপ্টে গেছে, ঠোঁটের লিপস্টিকটা বালিশের ছোয়াঁয় লেপ্টে প্রায় মুছে গেছে আর লম্বা একরাশ কালো চুল বুকের ওপর ছড়িয়ে আছে। সবকিছুই যেন মেয়েটার সৌন্দর্য কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।আর ঠোটেঁর নিচের তিলটা যেনো ওকে টানছে। এত মিষ্টি একটা মেয়ের সাথে ওর বিয়ে হয়েছে দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল রাজিবের। ও কি করে এই মেয়েটাকে কষ্ট দিবে? কি দোষ মেয়েটার? এই ঘুমন্ত দুটি চোখে হাজারো সপ্ন নিয়ে মেয়েটা ওর কাছে এসেছে। কি করে নিজের হাতে সেই সপ্ন গুলো ভাঙবে ও। নিজের চুল টেনে ছিড়তে ইচ্ছা হচ্ছে ওর। বিয়ের আগে একবার যদি দেখে নিত ওকে। উফ্ কি ভুলটাই না করে ফেলেছে ও। অবশ্য দেখে নিলেই কি বিয়েটা ভাঙা যেতো? কিন্তু এই ভুলের প্রায়াশ্চিত্ত করতে যদি ওকে এই মেয়েটার সাথে সারাজীবন কাটাতে হয়, ওকে দুনিয়ার সমস্ত সুখ এনে দিতে হয় তাহলে তা……
ফোনের রিংটনে চিন্তাটা সম্পূর্ণ করতে পারলনা রাজিব। স্ক্রিনে চিরচেনা একটা নাম দেখে দ্রুত ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে গেল ও। ততক্ষনে হিয়ার ঘুম ভেঙে গেছে। চোখ মেলে নিজের বর্তমান অবস্থা বুঝতে কিছুটা সময় লাগল ওর। অচেনা একটা রুম দেখে প্রথমে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও মুহুর্তে নিজেকে সামলে নিল হিয়া। তাড়াতাড়ি পাশ ফিরে তাকালো কিন্তু রাজিবকে দেখতে না পেয়ে একটু লজ্জা পেল। ইস মানুষটা ওর আগেই উঠে পরেছে। বিছানা হাতড়ে নিজের ফোন খোজার চেষ্টা করল। হঠাৎ মনে পরল সেটা ওর হ্যান্ড ব্যাগে রয়েছে। তাই রুমের রেডিয়াম ঘড়ির দিকে তাকালো ও। ৮-৪৫ মিনিট। বেশ বেলা হয়ে গেছে। পাশের ড্রেসারের আয়নায় চোখ পরতেই লজ্জায় মাথা নিচু করে নিল ও। কি অবস্থা ওর আর এভাবেই মানুষটা দেখেছে ওকে ইস্। তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে লাগেজ থেকে একটা শাড়ি বের করে বাথরুমে ঢুকে পরল ও। যাবার আগে একবার বারান্দার দিকে তাকালো ও। কাচেঁর দরজা লাগানো। কারো সাথে কথা বলছে রাজিব কিন্তু কাচেঁর দেওয়াল ভেদ করে রুমে সে শব্দ আসছে না। ভাবভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে কারো কাছে অনুনয় করছে। কিন্তু কার কাছে। হয়তো কোনো বন্ধু। নিজের মনের আশংকা গুলো নিজের মনেই চেপে বাথরুমে ঢুকে পরল হিয়া।
চলবে……..

#আলো_আধাঁর
লেখা: জেসিয়া জান্নাত রিম

৩.
ফোনে কথা শেষ করে রুমে এলো রাজিব। ড্রেসিং টেবিলের সামনে হিয়াকে দেখে ওর খারাপ হয়ে থাকা মুড মুহুর্তে ভালো হয়ে গেল। ভেজা চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে হিয়ার। এ যেনো এক অন্য রুপ। রাজিবের ইচ্ছা করছে টাওয়েলটা দিয়ে চুলগুলো মুছিয়ে দিতে। তারপর সেই চুলের মাঝে ডুব দিতে। এভাবে এক পলকে রাজিবকে তাকিয়ে থাকতে দেখে একটু অপ্রস্তত হয়ে গেল হিয়া আচল টেনে ঘোমটা দেওয়ার চেষ্টা করল। হঠাৎ রাজিবের হুস হলো। তাড়াতাড়ি ওকে পাশ কাটিয়ে ওয়াসরুমে ফ্রেস হতে চলে গেল ও। ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে হিয়াকে ওই একই অবস্থায় দেখে নিজের মনে একটু হাসল রাজিব। হিয়ার পাশে দাড়িয়ে পান্জাবীর হাতা ফোল্ড করতে করতে আস্তে করে হিয়ার উদ্দেশ্যে বলল,
রুমে থাকলে এভাবে ঘোমটা দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনার এত সুন্দর চুলগুলোকে এভাবে লুকিয়ে রাখলে একজনের সাথে যে অন্যায় করা হবে ম্যাম।
রাজিবের কথায় অবাক হলো হিয়া। সেই সুযগে আচলটিও মাথা থেকে নেমে ওর চুলগুলো উন্মুক্ত করে দিল। হিয়া যেনো এতটা আশা করেনি এমন ভাবে সেখানেই দাড়িয়ে রইল। রাজিব সময় নিয়ে চুল গুলো ঠিক করে, গায়ে বডি স্প্রে দিয়ে , ঘড়িটা পরে নিল। বেরোনোর সময় হিয়ার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
এখন তো নিচে যাবেন। নিচে সবাই নানা রকম বিব্রতকর প্রশ্ন করবে আপনি একটু চুপকরে সহ্য করে নিবেন লজ্জা লাগলেও কিচ্ছু করার নেই। এটা সব বিয়েতেই কমন। অবশ্য আপনার যা লজ্জা।
বলেই একটু শব্দ করে হেসে বেরিয়ে গেল রাজিব। হিয়ার বুঝতে একটু সময় লাগল এতক্ষণ কি হলো ওর সাথে। কাল রাতে মানুষটা তো নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিল আর আজ। ভাবতেই লজ্জায় সারা গাল লাল হয়ে গেল ওর। কিন্তু শেষের বলা কথাগুলো এখনো মাথায় ঢুকছে না। কে কি বলবে ওকে? তাড়াতাড়ি চুলটাকে ভালোকরে মুছে নিল হিয়া। হেয়ার ড্রায়ার খুজতে লাগেজের কাছে যেতেই ওর ছোট ননদ এসে বলল,
ভাবী নিচে চলো।
চুলটা শুকিয়ে আসি?
আরে না দরকার নেই চুলটাকে একসাইডে করে ঘোমটা দিয়ে নাও সমস্যা নেই। সবাই অপেক্ষা করছে।
আচ্ছা।
বলে ইমির কথামতো সবঠিক করে ওর সাথে নিচে নেমে এল হিয়া। নিচে মহিলাদের মেলা বসেছে। নানান বয়সের মেয়েদের মাঝখানে বসে আছে রাজিব। খুব হাসাহাসি হচ্ছে ওখানে। ইমি নিয়ে রাজিবের পাশে বসিয়ে দিল হিয়াকে। এবার শুরু হলো কথার ঝড়। পাশ থেকে মাঝবয়েসি একজন মহিলা বলল,
ও বউ ঘুম হইছে তোমার।
পাশ থেকে অন্য একজন বলল,
কি যে বলো আপা আমাদের ছেলে কি ওকে ঠিক করে ঘুমাতে দিয়েছে নাকি?
এসব শুনে ইমি বলল,
আহা বড় ফুপু চাচী তোমরা কি শুরু করলে ভাবীকে আগে একটু ইজি হতে দাও।
এই শুনে বড়ফুফু বলল,
আরে মাইয়া তারে তো আমরা ইজিই করতাছি। বরের লগে যহন ইজি হইছে আমাগো লগেও হইবো। তাইনা বউ? তা আমাদের নবাব পু্ত্তুর বেশি জ্বালায় নাই তো আবার?
একথায় সবাই একসঙ্গে হেসে উঠলো। হিয়া লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এসবের কথা বলেই ওকে ওয়ার্ন করেছিল রাজিব। ইস কিসব ভাবছে এরা। এদের কিভাবে বলবে সেরকম কিছুই হয়নি। হিয়ার অবস্থা বুঝতে পেরে রাজিব আস্তে করে ওর কানে কানে বলল,
এটা একটু অড বাট এদের কাছে স্বাভাবিক তাই লজ্জায় মরে যাওয়ার মতো কিছু হয়নি বি নরমাল এন্ড রিল্যাক্স।
রাজিবকে এভাবে কানে কথা বলতে দেখে চাচী বলল,
দেখো আপা এখনো বউয়ে কানে কথা বলছে। কিরে রাজিব রাতে কথা হয়নি নাকি।
একথা শুনে পাশ থেকে আরেকজন বলল,
কি যে বল কথা বলার সময় পাইছে নাকি সারা রাত তো…..
আবার হাসির ফোয়ারা। এমন সময় মাঝবয়সী এক ভদ্রমহিলা এসে দাড়ালো। এনাকে হিয়া চেনে কাল রাতে ইনিই বরণ করেছিলেন হিয়াকে। মানে রাজিবের মা ইনি। রাজিবের মা অর্থাৎ রাজিয়া এসে ইমি কে বলল,
এই রিয়াদ কই উঠছে ও?
নাতো মা ছোট ভাইয়া তো এখোনো ঘুমায়।
ডাক ওরে ভাইয়ের বউভাত কতকাজ আর উনি ঘুমায়। আর তোমরা আমার বউমারে একটু বিশ্রাম নিতে দাও একটু পরে পার্লারের লোকজন এসে পরলে আর সুযোগ হবেনা। ইলমা ওই ইলমা।
মায়ের চিৎকারে তাড়াতাড়ি বসার ঘরে এলো ইলমা অর্থাৎ রাজিবের বড় বোন। এসে মায়ের উদ্দেশ্যে বলল,
কি মা ডাকো কেন?
তোর ছেলে কই?
সে তার বাবার সাথে রান্নার কাছে গেছে।
ও ভালো তুই এককাজ কর বউমারে আর রাজিবরে ঘরে নিয়ে যা আমি খাবার পাঠায় দিচ্ছি। আর বউমারে সব বইলা দিস। আর তুই থাকিস না বেশিক্ষণ নিচে অনেক কাজ আছে।
আচ্ছা ঠিক আছে।
মায়ের কথামতো ভাই ও ভাইয়ের বউকে তাদের ঘরে নিয়ে আসল ইলমা। ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বলল,
তুই তো সবই জানিস তুই ই তোর বউকে বলে দে। আমি যাই আর হ্যা নিয়মটা যেনো ঠিকভাবে হয়। তোদের আমি স্পেস দিয়ে যাচ্ছি ঠিকই তবে এই জন্য যে আমার সামনে তোর বউ যেনো লজ্জা না পায়।
রাজিব মুচকি হেসে সম্মতি জানালো। বুয়া খাবার দিয়ে গেল। একটাই প্লেটে করে। ইলমা সব ঠিক করে দিয়ে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার সময় দরজা চাপিয়ে গেল। হিয়া রাজিবের দিকে একবার তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে ফেলল। রাজিব তা লক্ষ করে বলল,
এই যে লজ্জাবতী লতা আপনার লাজ কি ভাঙবেনা। এখনোতো আপনার কন্ঠ শুনতে পেলামনা নাকি বোবা আপনি?
এবার হিয়া তাড়াতাড়ি বলল,
না না ঠিক তা নয় আসলে…
হিয়ার চেহারার মতই ওর কন্ঠস্বরেও মুগ্ধ হয়ে গেল রাজিব। এত মিষ্টি গলা ওর বউয়ের। রাজিবকে চুপ থাকতে দেখে হিয়া সাহস করে বলল,
আপু কি নিয়মের কথা বলে গেলেন?
এ্যা হ্যাঁ মানে…
মানে আপু কিসের কথা বলে গেলেন?
ওহ নিয়ম না । তোমা… মানে আপনার যা লজ্জা আপনি পারবেন পালন করতে?
আমাকে তুমি করেই বলুন না। আর আপু যেহেতু বলেছেন আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
তুমি করে বললে আমার ক্ষেত্রে সুবিধাই হতো তবে..
তবে?
তবে আপনি যদি তুমিতে না আসেন তাহলে আমিও যে আসবো না?
না মানে আমি…
বুঝেছি কিন্তু আমার কাছ থেকে যদি তুমি ডাক শুনতে চান তাহলে আপনাকেও তুমিতে আসতে হবে।
আচ্ছা সেটা পরে ভাবি আপু কি করতে বলে গেছে সেটা আগে বলুন?
উমম আমাদের বাড়িতে একটা নিয়ম প্রচলিত আছে। বউভাতের দিন বর বউ একসাথে খায়। মানে বর বউকে এবং বউ বরকে হাতে তুলে খাইয়ে দেয়। এতে স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা নাকি বেড়ে যায় আর ঝগড়া কম হয়। আসলে আমার দাদার দাদা তার বউ ভাতের দিন তার বউকে খাইয়ে দিয়েছিল। তারা অনেক বছর সংসার করেছে। কখোনো ঝগড়া বাধেঁনি। তাই তাদের কে ফলো করে এরপর থেকে আমাদের বংশের রীতি হয়ে দাড়ালো এটা।যদিও আমি এসব মানিনা তবুও বড়দের মন রক্ষার্থে বলেন আর যে জন্যই বলেন আমার আপনাকে খাইয়ে দিতে তেমন আপত্তি নেই। আপনার যদি থাকে তাহলে বলুন আই উইল ম্যানেজ।
হিয়া কোনো কথা না বলে সম্মতিসুচক মাথা নাড়ল। যার অর্থ ওর আপত্তি নেই। হিয়া হাত ধুয়ে খাবার প্লেট তুলে নিল। রাজিব হাত ধুতে ধুতে বলল,
আগে আমার আপনাকে খাওয়ানোর কথা কিন্তু আমার কাউকে খাইয়ে দেওয়ার এক্সপেরিয়েন্স নেই।
আমি ভাতটা মেখে রাখছি। আমার অবশ্য খাইয়ে দেওয়ার এক্সপেরিয়েন্সের অভাব নেই।
হুম বাড়ির বড় মেয়ে তো।
হুম
হিয়া ভাত মাখিয়ে প্লেটটা তুলে ধরল রাজিবের দিকে। রাজিব এক লোকমা ভাত উঠিয়ে তুলে ধরল হিয়ার দিকে কিন্তু খাওয়াতে গিয়ে ওর ঠোটেঁর চারিপাশে মাখিয়ে ফেলল আর শাড়িতেও ফেলে দিল কিছুটা। হিয়া মুচকি হেসে বলল,
আসলেই এক্সপেরিয়েন্স নেই। আমাকে তো ছোট বাচ্চা বানিয়ে দিলেন।
রাজিব কিছু না বলে হেসে ফেলল। এবার হিয়া রাজিব কে খাইয়ে দিল। রাজিব আর খাওয়ালোনা হিয়াকে। প্লেটের বেশি খাবার হিয়ার জন্য রেখে অল্প একটু খেয়ে হিয়াকে বলল,
বাকিটুকু আপনি খেয়ে নিন। সন্ধার আগে বোধহয় না খাওয়ার সুযোগ পাবেন।
হিয়া প্রতিউত্তরে কিছুই বলল না। ওর মনের আশংকা গুলো অলরেডী দুর হয়ে গেছে। রাজিবকে ওর ভীষণ ভালো লাগতে শুরু করেছে। হঠাৎ দরজায় টোকা পরায় চিন্তার জগৎ থেকে বেরিয়ে এল হিয়া। রাজিব গিয়ে দরজা খুলে দিল। বাইরে রিয়াদ‌ দাড়িয়ে আছে। ভাই ভাবীর দিকে তাকিয়ে বলল,
সরি ফর ইন্টারপ বাট ভাইয়া কাজটা ইমপর্টেন্ট।
বলেই মুখ টিপে হাসল রিয়াদ। রাজিব বলল,
কি কাজ??
ছোটমামার নাম্বারটা দাও তো আমার কাছে নেই।
এটা তোর ইমপর্টেন্ট কাজ?
হ্যা অবশ্যই ইমপর্টেন্ট আজকের ফাংশনের লিস্ট ছোটমামার কাছে আর এত লোকজনের মধ্যে ছোটমামাকে খুজে পাচ্ছিনা। তাই তোমার কাছে এসেছি।
অন্য কেউ ছিলনা?
তাদের ও তো পাচ্ছিনা। এতো কথা না বাড়িয়ে নাম্বারটা দাও চলে যাই।
আর কিছু না বলে পকেটে ফোনের জন্য হাত দিল রাজিব। কিন্তু ফোনটা তো পকেটে নেই। তাড়াতাড়ি ফোন খোজা শুরু করল রাজিব। রুমের ভিতর গিয়ে বিছানার চারিপাশে খুজল। কারো হাতে পরে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। যদিও লক দেওয়া কিন্তু ফোন চলে এলে। রাজিব পুরো রুমে ফোন খুজতে লাগল। এমন সময় ইলমা এসে রিয়াদের কান ধরে বলল,
কিরে এখানে কি, সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফাজলামি শুরু চল এখান থেকে।
ফাজলামি কই আমি তো ছোটমামার নাম্বার নিতেই….
ছোটমামার নাম্বার না আচ্ছা এককাজ করবো তোর বিয়ের পরেরদিন এভাবেই আমরা সবাই ছোটমামার নাম্বার নিতে আসবো ঠিকআছে।
এই না না আমি এখনি যাচ্ছি সরি ভাইয়া সরি ভাবী।
বলেই দৌড়ে চলে গেল রিয়াদ। ইলমা আর হিয়া ওর এই কান্ড দেখে হেসে উঠল। ইলমা আবারও দরজা ভিরিয়ে চলে গেল। ওদিকে রাজিব পুরো রুম তন্ন তন্ন করে খুজেও নিজের মোবাইল পেলনা। হিয়া খেয়াল করে বলল,
ফোন খুজছেন?
হ্যা দেখেছেন কোথায় দেখলে তাড়াতাড়ি দিন। নাকি আপনার কাছে আছে। তাড়াতাড়ি দিন না‌ প্লিজ।
রিল্যাক্স। আপনার ফোন আমার কাছে নেই। তবে সকালে আপনার হাতেই তো ছিল। তারপর…
ওহ হ্যা তাইতো। বলেই আর একমুহুর্ত না দাড়িয়ে ক্লোজেটটা খুলল রাজিব। সকালে ড্রেস নিতে গিয়ে ফোনটা ওখানেই থেকে গেছিল। ফোন খুজতে গিয়ে ক্লোজেট এলোমেলো করে ফেলল ও। অবশেষে ফোনটা পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল ও। ফোনটা হাতে নিতেই একটা ম্যাসেজ এল। একই নম্বার থেকে আরো ১২৫ টা মেসেজ এবং ৯৫ টা মিসড্ কল দেখে আর একমুহুর্তও না দাড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল রাজিব। ও যেন ভুলেই গেছে রুমে আরো একজন বসে আছে। আর হিয়া তো পুরো শকড্। কাল রাতের মানুষটা একটু আগের মানুষটা আর এই মানুষটাকে কিছুতেই মেলাতে পারছেনা ও। কিছুতেই না।

বড় মেয়ের বৌভাতে বাড়ির সব ছোটদের পাঠিয়ে দিয়ে রুমের বারান্দায় এসে বসে আছেন দিদার চৌধুরী।তিনি এ বাড়ির কর্তা। এ বাড়িতে তার কথা অমান্য করে সে সাহস কারো নেই। মুখ ভার করে খুবই গভীর চিন্তায় মগ্ন তিনি। না চিন্তাটা তার মেয়েকে নিয়ে নয় যার আজ বিয়ে হয়েছে। চিন্তাটা তার মেজো ভাইয়ের বড় মেয়ে দিয়াকে নিয়ে। মেয়েটা দিনে দিনে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। খেয়াল না দেওয়ার কারণে একটু বেশিই খারাপ‌ হয়ে গেছে। মাথাটাও ঠিক নেই। ভেবেছিল মেন্টাল এসাইলামে পাঠাবে কিন্তু মেজো ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আর সে সিদ্ধান্তে অগ্রসর হতে পারেন নি তিনি। পরিবারের মান সম্মান ঠিক রাখার জন্য উপর দিয়ে যতই শক্ত হোন না কেন ভিতরে ভিতরে ঠিকই একটা নরম মন আছে তার। অনেক সময় ছেলে মেয়ের ভালোর জন্য বাবামায়েদের এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয় যা আপাত দৃষ্টিতে অন্যায় কিন্তু সেটা ছেলেমেয়েদের ভালোর জন্যই। দিয়ার ব্যাপারে সিন্ধান্ত গুলোও তেমনই ছিল। কিন্তু সেগুলো নিতে বেশ দেরি করে ফেলেছেন তিনি। এখন দিয়া হাতের বাইরে চলে গেছে। একবার ভাবেন ওর পকেটমানি বন্ধ করে দেবেন কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। ওর ব্যাপারে যতই ভাবেন ততই তার নিজের চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে যায়। এখন বোধহয় আর কিছুই করার নেই। কালও যখন রাতে দিয়া কাউকে কিছু না বলে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গেছিল তখনও তিনি চুপ ছিলেন। তার এবং মেজো ভাইয়ের স্ত্রী কেদে কেদে বলেছিল দিয়াকে ফিরিয়ে আনতে কিন্তু তিনি কিছুই করেননি। উল্টো সবাইকে চুপচাপ ঘুমিয়ে পরতে বলেছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই দিয়ার হোস্টেলে ফোন করে বলে দিয়ে ছিলেন দিয়া যাচ্ছে তারা যেনো গেট খোলা রাখে। সংসারের সব কিছু দেখতে দেখতে আলাদা করে কারো উপর নজর দেওয়া হয়ে ওঠেনি তার। বাড়ির সবাই ওনাকে ভয় পাওয়ার কারণে কেউ আগে থেকে দিয়ার ব্যাপারে বলেও নি। যখন উনি জানতে পারেন তখন সবকিছু হাতের বাইরে চলে গেছে। তারপর উনি দিয়ার বিয়েও দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরো খারাপ করে দিয়েছিল। এখন একজন ভালো মাপের সাইকাট্রিস্টের খোজ করার চিন্তা ভাবনা করছেন। কিন্তু বড়মেয়ের বিয়ের কারণে তা কিছুদিন স্থগিত রাখতে হয়েছিল। এখন আবার শুরু করতে হবে। হিয়ার দেওর যে সাইকাট্রিস্ট তা তিনি জানেন এবং অনেকটা এ কারণেই হিয়ার বিয়েটাও হয়েছে। রিয়াদের সাথে যোগাযোগের সুত্র ধরেই রাজিব এবং ওদের পরিবারের খোজ পেয়েছেন উনি। বড় মেয়ের জন্য ঠিক এরকম একটা পরিবারই চেয়েছিলেন তাই দিয়ার কথাটা বাদ রেখে হিয়ার বিয়ের ব্যাবস্থা করেছেন তিনি। ও বাড়িতে দিয়ার কথা শুধু হিয়ার শ্বশুর আজিজুর রহমান ই জানেন। কারণ দিদার চৌধুরী চেয়েছিলেন দুই পরিবারের মধ্যে কোনোকিছু গোপন না রাখতে। তিনি বলেছেন বিয়ের পর রিয়াদের সাথে কথা বলবেন। দিদার চৌধুরী ও সময় নিয়ে অন্যভাবে ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করতে চাইছেন যাতে পরিবারে মধ্যেই সবকিছু সিমাবদ্ধ থাকে।
বড়ভাই?
মেজো ভাই দিনার চৌধুরীর কন্ঠে চিন্তায় ছেদ পড়ল তার। সেদিকে না ফিরেই তিনি বললেন,
কিরে দিনু কোথায় গেছিলি আমি আরো ভাবলাম তুই বৌভাতে গেছিস?
আমি দিয়ার ওখানে গেছিলাম ওকে আনতে।
এলনা?
নাহ।
বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন তিনি। তারপর ভাইয়ের পায়ের কাছে বসে ধীর গলায় বললেন,
ও আমার সাথে কথা তো দূ্র দেখা পর্যন্ত করেনাই বড়ভাই। কেমনে বোঝাই ওরে আমরা কত ভালোবাসি। কাল সারারাত তোমার মেজো বৌমা বালিশে মুখ গুজে কান্নাকাটি করছে।তারেইবা দোষ কেমনে দেই সে তো তার সব চেষ্টা করছে দিয়াই তো……আমি আমার সেই ছোট্ট দিয়ারে ফেরত চাই বড়ভাই। আমি ওরে…..
বলেই ভাইয়ের পা জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন তিনি। ভাইয়েরা দিদার চৌধুরীকে যেমন ভয় করে তেমন শ্রদ্ধা ও করেন। মা-বাবার মৃত্যুর পর ছোট দুই ভাই কে নিজ সন্তানের মতোই বড় করেছেন তিনি। এখনো তার ভাইয়েরা কিছু হলেই তার কাছে ছুটে আসেন। তিনি আদরের ভাই দের কষ্ট দেখতে পারেন না। তাই ভাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে শান্ত করতে বললেন,
চিন্তা করিস না দিনু সব ঠিক হয়ে যাবে। ওকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করব আমরা।
আমি ওর মধ্যে ওর মার ছায়া দেখি ভাই ও যদি আবার ও…….
ধুর এসব আর মাথায় আনিসনা তো। আজ হিয়া আসতেছে দেখিস ও ঠিক দিয়ারে নিয়ে আসবে।
হিয়ার কথা শুনে নিজেকে সামলে নিয়ে দিয়ার বাবা বলল,
দেখেছো ছোট মেয়ের চিন্তায় বড় মেয়ের কথা মাথায় ই নেই। ওদিকে ওরা কি করছে কে জানে। আমি দেখি গিয়ে।
হুম যা ওরা এলে জানাস।আর দিয়ার ব্যাপারটা আমি দেখছি তুই ভাবিস না।
ঠিক আছে।
বলেই বেরিয়ে গেলেন তিনি।
চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here