আসমানী ও জ্বীন পর্ব -০৭+৮+৯

#আসমানী_ও_জ্বীন
#৭+৮+৯
#ইসরাত_জাহান_এশা
কিছুক্ষন পর মুশলধারে বৃষ্টি শুরু হলো আস্তে আস্তে চারদিকে বাতাস এসে লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে পুরো তিন দিন বৃষ্টি শেষে পুরো গ্রাম সবুজে ছেয়ে গেছে নতুন একটা গ্রামের জন্ম হয়েছে। নতুন নতুন মানুষ জনের আনাগোনা শুরু হয়েছে মনে হয় এতোদিন এই গ্রামের লোক গুলো ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছিল।
পাশ থেকে একজন বলল তুমি কি আসমানী?

—হ্যাঁ
— তোমার জন্য আমরা আজ মায়াজাল থেকে মুক্তি পেয়েছি আমি জানতাম তুমি আসবে।
— আপনি কে?
— আমি জিন্নাত এখানেই একটা মসজিদের ইমাম ছিলাম। ঐ তান্ত্রিক তার মায়া জাদু দিয়ে আমাদের বন্দি করে রাখে। আর এই যে লোক গুলো দেখছো এদের কারো কিছুই মনে নেই কারন এরা ঘুমান্ত একটা স্বপ্নের মধ্যে ছিল।
— ওহহ আচ্ছা। এখন দয়া করে আমাদের একটা উপকার করবেন??
— কি উপকার বলো?
— শিমুলতলী গ্রামটা কোথায়? ঐ খানে আমার ভাইকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
—- তুমি আমার সাথে আসো আমি তোমাকে পৌছে দিবো।

আসমানী আর নুহা জিন্নাতের পিছনে হাটতে লাগল। হাটতে হাটতে তারা একটা জঙ্গলের সামনে গেলো।

নুহা— এতো বড় জঙ্গলের ভিতরে তো অনেক সাপ বিচ্ছু আছে মনে হয়।
জিন্নাত— হ্যা, তবে এটা পেরুলেই তোমরা তোমাদের জয়গায় পৌছে যাবে। আর তোমরা যদি তাদের মন জয় করতে পারো তাহলেই তারা তোমাদের সাহায্য করবে। তাবে তারা কিন্তু কোনো ধর্মের লোক না তবে তোমার ধর্মের সুন্দর্য যদি ঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পারো তবে তারা তোমাকে অনুসরণ করবে।
আসমানী—আচ্ছা আপনাকে ধন্যবাদ আমাদের উপকার করার জন্য।

জিন্নাত— শোনো আসমানী তুমি এই বইটা রাখো এখান থেকে তুমি তাদের কিছু বলতে পারবে আর আমার মনে হয় তারা তোমাকে মেনে নিবে আর সাহায্য করবে।

— আচ্ছা।

আসমানী আর নুহা দুজনেই জঙ্গলের দিকে আগাতে থাকে যখন জঙ্গলের ভিতরে আসলে তখন খুব জোরে কারো কান্নার আওয়াজ আসছে। নুহা শোনার সাথে সাথে বুঝতে পারে এটা আসলে কোনো মানুষের কান্নার আওয়াজ না। এটা কোনো একটা জ্বিনের কান্না যে মানুষকে শুধু শুধু ভয় দেখায়।
আসমানী আর নুহা সামনে আগাতেই কান্নার আওয়াজ আরো বেড়ে যায়। তখন নুহা প্রচুর রাগ নিয়ে ধমকের সুরে বলে উঠে।

— কে রে বেয়াদব!জ্বিন হয়ে মানুষের বাচ্চার মত কান্না করো।
নুহা ধমক দিতেই জ্বিনটা বেড়িয়ে এসে আসমানীর কপাল বরাবর একটা ঠিল ছুড়ে মারে। আসমানী ওমাগো বলে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। নুহা রাগে ঐ জ্বীন ঠাস করে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে বলে উঠে এতোবড় সাহস তুই কোথায় পেয়েছিস? ওকে তুই ঢিল মারলি?

— তুই কে?
নুহা— আবার তুইতুকারি করছিস? আমি কে ভালো করে দেখ।
—- নুহা জ্বীন আপনি এখানে? আমাকে মাফ করবেন আসলে আমি ঐ মেয়েটাকে ভালোভাবে দেখতে পাচ্ছিলাম না। তাই আর কি ঠিল ছুড়ে মেরেছি। মাফ করুন আমাকে আমি এখুনি সব ঠিক করে দিচ্ছি।
ঐ জ্বিন আসমানীর কপালের উপর জাদুর মাধ্যমে কাপর ছুড়ে মারে যেটা আসমানীর কপালে অটো ব্যান্ডিজ হয়ে যায়। তবে আসমানী বেহুশের মত মাটিতে পড়ে আছে।

নুহা— এখন বল তোর নাম কি?
—- আমার নাম রাইয়ান৷
নুহা— ওহহ আচ্ছা। তো এখানে এভাবে সবাইকে ভয় দেখাচ্ছ কেনো?
রাইয়ান— আসলে আমার এই মুহুর্তে কোনো কাজ কাম নেই তাই একটু মানুষকে ভয় দেখাচ্ছি। তবে আপনারা কোথায় যাচ্ছেন?

নুহা সব কিছু রাইয়ান কে খুলে বলে। রাইয়ান সবটা শুনে বলে উঠে আমিও যাবো নিবেন আপনাদের সাথে।
নুহা— তোমাকে বিশ্বাস নেই বাপু আমি জ্বীন সুতরাং জ্বীন জাতিকে ভালোভাবেই চিনি। যেকোনো সময় তুমই আমাদের ক্ষতি করে দিবে।

কারন আমরা মানুষের থেকে নিজেদের শ্রেষ্ঠ মনে করি আর অহংকার আসলে তাদের কষ্ট দেই যেমন আল্লাহ কুরআনে বলেছেন,,,,

অনেক মানুষ অনেক জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জিনদের আত্নম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।
—আল জ্বিন – ৬
রাইয়ান— না দেখো বিশ্বাস করো আমি তোমাদের কোনো কষ্ট দিব না। আমি আল্লাহর শাস্তি সম্পর্কে জানি। আমি একদম ভালো হয়ে যাবো আর তোমাদের সাহায্য করব নিয়ে যাও না তোমাদের সাথে আমাকে।
নুহা— আচ্ছা যাও তোমাকে নিবো এখন তাহলে তুমি কোনো মানুষের রূপ ধরে সামনে চলে আসো। আসমানী তোমার এইরকম কদাকর ভয়ংকর রূপ দেখলে ভয় পাবে।

রাইয়ান মানুষের রূপে নুহার সামনে আসে। নুহা আসমানীর মুখে হালকা পানি ছিটা দিয়ে হুশ ফিরিয়ে আনে।
আসমানী রাইয়ান কে দেখে বলে উঠে উনি কে?
রাইয়ান— আমি রাইয়ান আপনাদের সাথী বলতে পারেন।
আসমানী— ওহহ আচ্ছা।

আসমানী নুহা আর রাইয়ান সবাই মিলে শিমুলতলী গ্রামের উদ্দেশ্যে হাটাঁ শুরু করে।
গ্রামে পৌঁছে আসমানী অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এতো সুন্দর দৃশ্য আগে কখনো দেখোনী এতো সুন্দর গ্রাম।

একজন লোক আসমানীকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে
— কে তুমি মা?
— চাচা আমি আসমানী।
—- আর ওনারা কারা?
—- আমি নুহা ও রাইয়ান। আপনি কে চাচা?
— আমি এই গ্রামের প্রধান রানুর বাদশা।
আসমানী— ওহহ আচ্ছা। চাচা আমরা বিশেষ একটা প্রয়োজনে এই গ্রামে এসেছি যদি আমাদের কিছুদিন থাকতে দিতেন।
বাদশা—- কোনো সমস্যা নেই মা তবে একটা কথা আমার গ্রাম সুশৃঙ্খল। তোমরা কোনো হট্টগোল করলে কিন্তু দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়ে যাবে।
রাইয়ান কথাটা শুনে চোখ দু’টো আগুনের ফুলকির মতো জ্বলে উঠে কি সাহস আমাদের দেহ থেকে মাথা আলাদা করবে।
আসমানী— না চাচা আমরা এমন কিছু করব না যাতে আপনাদের ক্ষতি হয়।
বাদশা— তাহলে যাও ঐখানে যে বাড়িটি দেখছ তোমরা সেখানে আশ্রয় নিতে পারো।
আসমানী— ধন্যবাদ চাচা। আসসালামু আলাইকুম।

বাদশা — দাড়াও এটা তুমি কি বললে?
আসমানী— সালাম দিলাম চাচা। যার অর্থ হলো আপনার উপর শান্তি বর্সিত হোক।
বাদশা— তুমি কি কোনো ধর্ম পালন করো?
আসমানী— জ্বী চাচা। আমি একজন মুসলিম নারী। আমার ধর্মের নাম ইসলাম যার অর্থ শান্তি। যেখানে পুর্নাঙ্গ একটা জীবন ব্যবস্থার কথা বলা আছে।
বাদশা— আচ্ছা তোমরা যাও আমি তোমাদের খাবারের ব্যবস্থা করছি। পড়ে এসে তোমাদের ধর্ম সম্পর্কে জানব।
আসমানী— চাচা আপনারা কোন ধর্মের লোক?
বাদশা— সেটার উত্তর পড়ে পেয়ে যাবে।

<>
নিশিকাল শিমুলতলী গ্রামে পৌঁছে ষোলো বছরের যুবতী খুঁজতে শুরু করল।কিন্তু কোনো মেয়েই খুঁজে পাচ্ছে না। একজন বৃদ্ধ লোক সেজে সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে যাতে কেউ তাকে পিশাচ ভেবে সন্ধেহ না করে। কিন্তু না চোখে কোনো মেয়ে পড়ছে না।

নিশিকাল একটা বট গাছের নিচে ধ্যান মগ্ন ভাব নিয়ে বসে আছে। তাকে শিমুলতলী গ্রামের একজন লোক দেখে গ্রাম প্রধানের কাছে খবর পৌঁছায়।

বাদশা ভাই বাদশা ভাই,,,
—- কে রে ওখানে?
—- আমি রতি।
—- এই সময় কি খবর?
—- এই মাত্র একজন লোক দেখে আসলাম বড় বট গাছের নিচে ধ্যান মগ্ন হয়ে বসে আছে।

বাদশা মনে মনে ভাবে ঐ সময় যে ৩ জন এসেছে তাদের মধ্যে কেউ নাতো? আচ্ছা দেখতে কেমন রে?
— বৃদ্ধ লোকের মতো মনে হয় অনেক কিছু জানে।
—- আচ্ছা বিষয়টা পড়ে দেখছি তোরা গিয়ে ভালোভাবে দেখে আয়।

গ্রামের লোকজন হুরমুর খেয়ে সেই বট গাছের কাছে যায়। নিশিকাল সবাইকে তার জাদু দেখিয়ে বসে নিয়ে এসেছে। চোখের সামনে ছাগল, গরু, হাতি স্বর্ন, হিরা, টাকা পয়সা বানিয়ে দেখাচ্ছে।
গ্রামের সবাই নিশিকালের ভক্ত হয়ে গেছে নিশিকাল যা বলছে তাই শুনছে।
ওরা নিশিকালকে গুরু মানতে শুরু করে।

নিশিকাল — তোমরা কি আরো ধন সম্পদ পেতে চাও?
গ্রামের লোক সবাই খুশিতে হ্যা বলে উঠে।
নিশিকাল— তাহলে তোমাদেরকে আমি যা বলব তাই করতে হবে। তাহলে তোমরা সব পেয়ে যাবে।
গ্রামের লোক গুলো সবাই বলে উঠে গুরু এতোদিন আপনি কোথায় ছিলেন আপনি যা বলবেন আমরা সবাই তাই করব।
নিশিকাল— তাহলে শোনো গ্রামের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী একটা ষোলো বছরের যুবতী কে আমার কাছে উৎসর্গ করতে হবে তার সাথে আমি রাত্রীযাপন করব আর তার গর্ভে যে সন্তান আসবে সেই তোমাদের দুঃখ কষ্ট দূর করে দিবে।

এদিকে সবাই তাদের ঘরের মেয়েকে নিশিকালের কাছে তুলে দিতে ইচ্ছুক। তারা মনে করে যদি নিশিকালের সন্তানের মা তাদের মেয়ে হয় তাহলে তো কোনো কথায়ই নেই ।

সবাই তাদের মেয়েকে সিরিয়ালে নিশিকালের সামনে নিয়ে আসে কিন্ত সমস্যা হলো কারো ষোল বছর ১মাস কারো ষোল বছর ৫,৬,৭ এরকম আবার এর থেকে ছোটো।
নিশিকাল মনে মনে চিন্তা করে এটা তো কখনো হওয়ার কথা না। এই গ্রামে একদম ষোল বছরের মেয়ে অবশ্যই আছে না হলে গুরুজী এখানে আসতে বলত না। তবে সেই মেয়ে কোথায়?

এদিকের ঘটনা সব গ্রাম প্রাধানের কানে গেলে উনি বিষন্ন মনে বলে উঠে তিন জন কে থাকতে দিয়েছি বলে তারা এইসব করে বেড়াবে এখনি আমি ওদের কাছে যাবো বলব ওরা কি চায় কেনো গ্রামে এসেছে।

গ্রাম প্রধান আসমানীর সাথে কথা বলার জন্য বের হয়।

এদিকে রাইয়ান রাগে টগবগ করে ফাটছে আর পায়চারী করছে।
নুহা— কি হলো তোমার এমন করছ কেনো?
রাইয়ান— আপনি কি কোনো পিশাচের গন্ধ পাচ্ছেন না? আমি তো আর সহ্য করতে পারছি না । ওকে পেলে জায়গায় শেষ করে দিব।
নুহা— হুৃৃমম পাচ্ছি আমি ভেবেছিলাম আমার মনের ভুল।

ওমনি গ্রাম প্রাধান বাদশা এসে বলতে শুরু করল এই তোমরা কি শুরু করেছো?

আসমানী— মানে কি?
বাদশা সব ঘটনা খুলে বললে আসমানী বলে উঠে কই আমরা তো এখানেই আছি আমরা তো আপনাদের কোনো ক্ষতি করতে আসিনি। রাইয়ান বলে উঠল আমার ধরনা তাহলে ঠিকি আছে।

বাদশা— কি ধরানা??

রাইয়ান— এই যে শুনেন আমি হলাম জ্বিন। (কথাটা শুনে বাদশা ঢোক গিলতে থাকে) আপনাদের ঐ জঙ্গলে ছিলাম শুনেন এই গ্রাম থেকে একটা যুবতী মেয়েকে নিয়ে যাওয়া হবে যার বয়স সামনে অমাবস্যায়র দিন ১৬ বছর পূর্ন হবে। তাকেই ধরে নিয়ে যাবে ঐ পিশাচ নামটা মনে আসছে না।

নুহা— তুমি জানো কিভাবে?
রাইয়ান— আমি এর জন্যই আপনাদের সাথে এসেছি। পিশাচরা আমার বাবা মাকে বন্দি করে রেখেছে। আর আমি জানি আপনাদের সাথে থেকে আমি তাদের উদ্ধার করতে পারব।

বাদশা মনে মনে বলে উঠে আমার মেয়েরই তো অমাবস্যার দিন ১৬ বছর পূর্ণ হবে। এবার বিশ্বাস করবে কি করবে না দ্বিধায় পরে যায়।
বাদশা কথা ঘুরানোর জন্য বলে উঠে আচ্ছা তোমাদের ধর্ম সম্পর্কে বলো। আর তোমাদের কথা বিচার করবে এই যে পাশে বৃদ্ধ লোকটিকে দেখতে পাচ্ছো উনি।

আসমানী বলতে শুরু করে। আমাদের ধর্ম হচ্ছে ইসলাম।

ইসলাম হচ্ছে আত্মসমর্পণ করা এবং বাধ্যতা, অস্বীকৃতি ও হটকারিতা ত্যাগ করা।

এখানে আত্মসমর্পণ করার অর্থ হচ্ছে, এক আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করা, একমাত্র আল্লাহই স্থায়ী বাকি যা কিছু আছে সবই ক্ষণস্থায়ী, ভঙ্গুর।

সব কিছুই সাবেক হবে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া-এই বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে অন্তরে ধারণ করতে হবে এবং বাধ্যতা হচ্ছে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে যে পদ্ধতিতে জীবন যাপন করতে বলেছেন সেই সীমানার মধ্যে থেকে জীবন যাপন করা।

আল্লাহর বন্ধু, শেষ নবী,সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) এর জীবন যাপন পদ্ধতিতে যা রয়েছে তাই ইসলাম।

আল্লাহ’র রাসূলের জীবন, আচার, আচরণ, চলাফেরা, খাদ্য, কথা, পোশাক, স্ত্রী-পরিজন, সমাজ, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, হারাম, হালাল সব কিছুই এক আল্লাহতে সমর্পিত।

পবিত্র কোরআন ও ওহির মাধ্যমে প্রাপ্ত নির্দেশের বাধ্য বাধকতায় থাকার এক অপূর্ব নিদর্শন।

রাসুলকে (সা.) মানা, তিনি যেভাবে সব ক্ষেত্রে এক আল্লাহতে আত্মসমর্পণ করে এবং আল্লাহর নির্দেশিত সীমানা মেনে চলেছেন তাই ইসলাম। রাসুলের (সা.) সমগ্র জীবন এক ব্যবহারিক কোরআন।

মাওলানা রুমী (র.) বলেছেন “আল্লাহ তা’য়ালার বক্তব্য অবিকল রাসুলের (সা.) কণ্ঠে প্রকাশ পেয়েছে”। মহান আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর পবিত্র কোরআনে বলেছেন, “বহু রাসুল তোমার পূর্বেও প্রেরণ করিয়াছি, দিয়াছিলাম তা দিগকে স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততি এবং কোনো রসুলের এমন সাধ্য ছিল না যে আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোনো নিদর্শন উপস্থিত করে। প্রত্যেকটি ওয়াদা লিখিত আছে।
সুরা রা’আদ আয়াত ৩৮।

এ আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে রাসুল (সা.) নিজ থেকে কখনো কিছু বলেন নি। যা কিছু আল্লাহর রাসুল (সা.) করেছেন তার সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছার অধীন, এ কথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত।

সুরা আল-হাক্কাহতে মহান আল্লাহ বলেছেন, “তোমাদের দৃশ্যমান বস্তুর কসম করেছি এবং অদৃশ্যমান বস্তুর, নিশ্চয়ই এই কোরআন একজন সম্মানিত রসূলের আনীত। এবং এটা কোনো কবির কালাম নয়; তোমরা কমই বিশ্বাস কর। এবং এটা কোনো অতীন্দ্রিয়বাদীর কথা নয়; তোমরা কমই অনুধাবন কর। এটা বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ। সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত, তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা। তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না। এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ। সুরা আল হাক্কাহ আয়াত (৩৮-৪৮)।

এই আয়াতগুলোতে মহান আল্লাহ কসম করে বলেছেন যে এই কোরআনে বর্ণিত সব কিছুই তাঁর বাণী যা তিনি তাঁর সম্মানিত রাসুল (সা.) মারফত প্রেরণ করেছেন। এটা কোনো কবি বা কাহিনীকারের দ্বারা রচনা করা সম্ভব নয়।

পবিত্র কোরআনের আয়াতগুলো অবশ্যই মহান রব্বুল আ’লামিনের বাণী এবং আল্লাহর রাসুল (সা.) যদি এতে কোনো রকম পরিবর্তন করতেন তবে আল্লাহ তাঁর রাসুলকে (সা.) কঠোরভাবে ধরতেন এবং কণ্ঠশিরা কেটে দিতেন যাতে মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়। এবং আল্লাহ এও বলেছেন যে তোমরা সল্পসংখ্যক তা অনুধাবন করো যা একান্তই মোত্তাকিদের জন্য উপদেশ। তাহলে আল্লাহ যে বিষয়ে নিজে তাঁর রাসুলের (সা.) ব্যাপারে সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, রাসুল (সা.) যা বলেছেন তা আল্লাহর কথা, রাসুল (সা.) যা করেছেন বা করেননি সবই আল্লাহর নির্দেশ।

আল্লাহর রাসুল (সা.) এক আল্লাহতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন এবং আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলেছেন।

মহানবীর (সা.) পর তাঁর উম্মতদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব তারা যারা চর্মচক্ষে মহানবী হযরত মোহাম্মাদকে (সা.) দেখেছিলেন এবং তাঁর পবিত্র সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। তারা সবাই ছিলেন মহানবীর (সা.) জীবনাদর্শের প্রধানতম উদাহরণ।

তাঁদের জীবন ছিলো রাসুলের (সা.) মহব্বতে পরিপূর্ণ। পরবর্তীকালে সাহাবারা (রা.) আল্লাহর নির্দেশিত ও তাঁর রাসুলের (সা.) দেখানো পথে জীবন যাপন করেছেন। এটাই ইসলাম।

ইসলাম এমন একটি পথ যা দেখে আপনার সম্পর্কে অন্যদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে। মুসলমানের আচার-আচরণ এমন হতে হবে যা দেখে অন্যরা ইসলামের প্রতি আগ্রহ বোধ করবে। বোখারি শরিফের প্রথম খণ্ড হাদিস নম্বর ৯ এ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সা.) বলেছেন, মুসলমান ওই ব্যক্তি যার কোনো কথা বা কাজের দ্বারা অন্য মুসলমানের কষ্ট না হয়। মুহাজের ওই ব্যক্তি যে আল্লাহর ঘোষণা করা নিষিদ্ধ বিষয়গুলো বর্জন করেছে।

ইসলাম একটি ধর্ম। পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের ওপর ইসলাম ধর্মের ভিত্তি স্থাপিত। তার মধ্যে সর্বপ্রধান হচ্ছে ঈমান। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ও তাঁর রাসুলের (সা.) হাদিসের মাধ্যমে যা কিছু মানবজাতির জন্য প্রেরণ করেছেন তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করা এবং মৌখিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়াকে ঈমান বলে। আরবীতে ঈমান শব্দের অর্থ বিশ্বাস।

ঈমান আসলে একটা ব্যাপক বিষয়। সন্দেহজনক কার্যাবলী ত্যাগ করা হচ্ছে ঈমান। আল্লাহর সিফাতের সঙ্গে শরীক না করা, আল্লাহর রাসুলের বিরুদ্ধতা না করা, সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজ হতে নিষেধ করা হচ্ছে ঈমান, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার নাম ইমান, নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করা ঈমান। আর একজনের হক, হালাল, হারাম, মোনাফেকি, ওজনে কম দেওয়া থেকে বেঁচে থাকা ঈমান। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে যেসব বিষয় মেনে চলতে বলেছেন তা মেনে চলা, আল্লাহ যা ত্যাগ করতে বলেছেন তা ত্যাগ করা, আল্লাহর রাসুল (সা.) যা করেছেন তা মেনে চলা, আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের তরিকার বাইরে কোনো নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন না করা হচ্ছে ঈমান। এমন কি রাস্তা থেকে ক্ষতিকারক বস্তু সরিয়ে ফেলাও ঈমানের অঙ্গ।

অনৈসলামিক কাজের প্রতিবাদ করাও ঈমান। যথাসময়ে নামাজ পড়া, রোজা রাখা, অর্থ থাকলে যথাসময়ে যাকাত দেওয়া, হজ করা, এতিম মিসকিনকে খাবার দেওয়া, আল্লাহর রাস্তায় নিজের ধন সম্পদ ব্যয় করা ইত্যাদি। এক কথায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও পরকাল, সব আসমানি কিতাব, সব নবী ও রাসুলের প্রতি বিশ্বাস, অন্তরে দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করার নাম ঈমান।

আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, ঈমানের শাখা-প্রশাখা ষাটের বেশি এবং লজ্জাও ঈমানের অন্যতম শাখা। (বোখারি শরীফ, হাদিস নম্বর ৮, খণ্ড-১,পৃষ্ঠা-৩২)

আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সুরা নিসার ৮০ নম্বর আয়াতে বলেছেন,
“যে লোক রসুলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করলো। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করলো, আমি আপনাকে (হে মুহাম্মদ), তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি। ’’

আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন স্বাধীন চিন্তা ও বিবেক দিয়ে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়েত করেন। কোরআনই মহান আল্লাহ প্রেরিত শেষ কিতাব। এতে কোনো সংযোজন বা বিয়োজন করার কোনও অধিকার কারো নেই। এ জন্যই আল্লাহ তাঁর রাসুলকে (সা.) বলেছেন, ‘‘আপনার দায়িত্ব শুধু আমার বিধি বিধানগুলো পৌঁছে দেওয়া। কেউ মানলো কি মানলো না তার দায়ীত্ব আপনার নয়। ’’

কারণ আল্লাহর রাসুল (সা.) আল্লাহর মাধ্যমে যাই বলেন তা ভালো কথা, হেদায়েতের কথা। যার ইচ্ছা সে হেদায়েত হবে, যার ইচ্ছা হবে না। কারণ একজনের কাজের জন্য অন্যজন জবাবদিহি করবে না।

আসুন আমরা শুধু মুসলমানের ঘরে জন্ম হয়েছে বলে মুসলিম না হয়ে আল্লাহ যে রকম বান্দা চান সে রকম হই। ঈমান মজবুত করার জন্য মেহনত করি। নিয়মিত কোরআন বুঝে পড়ি, নামাজ পড়ি, রাসুল (সা.) এর শেখানো পথে চলি। আল্লাহর রাসুলের প্রতি দরুদ শরীফ পাঠ করি যার তাগিদ আল্লাহ নিজে পবিত্র কোরআনে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি দরুদ পাঠান, হে মুমিনরা, তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠাও”। (সূরা আহজাব, আয়াত ৫৬)

আমরা আল্লাহ নির্দেশিত পথে চললে হানাহানি বন্ধ হবে। সমাজে শান্তি ফিরে আসবে।

আসমানী নুহাকে বলে আপনি ওনাদের পবিত্র কুরআন শরীফটা দেখান।
নুহা কুরআন টা হাতে নিয়ে বলে এই হলো সেই পবিত্র কুরআন৷

বাদশা— আমাদের হাতে দাও।
নুহা — নাহ এটা ধরতে হলে আগে আপনাকে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।
বৃদ্ধ লোকটি বলে উঠল দেখো বাবা আমি তোমাদের ধর্মের প্রতি বিশ্বাস আনলাম আর কালিমা পাঠ করলাম এটাই সত্য ধর্ম।
বাদশাও একই কথা বলল।

বৃদ্ধ— তবে তোমরা আমাদের গ্রাম প্রধানের মেয়েকে বাচাও তার মেরেই ষোল বছর পূর্ন হবে অমাবস্যার দিন।

এদিকে বাদশার মেয়ে রুশা হাঁটতে হাঁটতে বট গাছের পাশে একটা বিল থেকে শাপলা তুলতে যাবে এমন সময় রুশাকে দেখতে পেলো নিশিকাল। নিশিকাল বলে উঠল পেয়ে গেছি ঐ সেই মেয়ে যার বয়স ষোল পূর্ন হবে অমাবস্যার দিনে।

পাশ থেকে গ্রামের লোকজন বলে উঠল ওর দিকে নজর দিও না অন্য মেয়ে খুঁজো এটা আমাদের গ্রাম প্রধানের মেয়ে।

নিশিকাল কোনো কথা না বলে ওর আসলে রুপে ফিরে এসে রুশাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাত টেনে ধরে।

গ্রামের সবাই হইচই ফেলে দেয়। আসমানী, নুহা, রাইয়ান,বাদশা আর বৃদ্ধ লোকটি গ্রামের লোকগুলোর চিৎকার শুনে সবাই বট গাছের কাছে উপস্থিত হয়।

বাদশা বলে উঠে এই পিশাচ শয়তান আমার মেয়েকে ছেড়ে দে আমি তোকে শেষ করে ফেলব।

নিশিকাল— কিছু করতে পারবে না। ওকে আমি নিয়ে যাবো ওকে পেলে আমি আরো শক্তিশালী হবো হা হা হা। বলেই নিশিকাল রুশাকে নিয়ে ভেনিস হয়ে গেলো।

বাদশা — আসমানী তোমরা আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও যা চাইবে তাই তোমাদের দিবো। দয়া করো তোমরা আমার উপর।

রাইয়ান জাদু দিয়ে নিশিকালের পথ আটকে দেয়৷ কোনোভাবেই গ্রামের বাইরে যেতে পারছে না।

নুহা আর রাইয়ান তাদের সব টুকু চেষ্টা দিয়ে নিশিকালকে সবার সামনে টেনে নিয়ে আসে। নিশিকালের ভয়ংকর রূপ দেখে গ্রামের লোকেরা ভয়ে অনেকেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

নুহা আর রাইয়ানের সাথে নিশিকালের প্রচুর যুদ্ধ হয়। আসমানী মাঝখান থেকে রুশার হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে আয়তুল কুর্সি পড়ে শরীর বন্ধ করে ছেরে দিল। এবার নিশিকাল আর রুশাকে স্পর্শ করতে পারছে না। যতবার রুশারকে স্পর্শ করতে যাচ্ছে ততবার ছিটকে দূরে চলে যাচ্ছে।

আসমানী চিন্তা করল রুশাকে তো বের করলাম কিন্তু নিশিকাল কে কিভাবে দমাবো। নুহা আর রাইয়ান মনে হচ্ছে আটকা পড়ে যাবে। আসমানী দ্রুত একটা বৃত্ত তৈরি করে নিশিকালকে আটকে দেয় কিন্তু দূর্ভাগ্য ক্রমে রাইয়ান আর নুহাও বৃত্তে আটকে যায়।

নুহা— এটা কি করলে আসমানী আমাদের কেনো আটকে দিলে তোমার আকাঁ এই বৃত্ত থেকে আমরা তো বেড় হতে পারব না। আমারা তো জ্বীন তোমার বৃত্তের কাছে আমাদের জাদুশক্তি কিছু না।

আসমানী — এখন বৃত্ত মুছাও তো সম্ভব না। তাহলে নিশিকাল বেড়িয়ে যাবে। তুমি এক কাজ করো ওস্তাদজীর সাথে যোগাযোগ করো তিনি একটা ব্যবস্থা নিবেন।

নুহা ওস্তাদের সাথে যোগাযোগ করে। ওস্তাদজী পরামর্শ দেন আমি কিছু করতে পারব না। আসমানীকে ভাবতে বলো ও সব পারবে।

নুহা— আসমানী ওস্তাদজী কিছু করতে পারবেন না তোমাকেই যা করার করতে হবে।
আসমানী অনেক চিন্তা ভাবনা করে সেই বৃত্তের মাঝে লম্বা করে দাগ কাটে রাইয়ান আর নুহা আলাদা হয়ে যায়। নিশিকালও আলাদা হয়ে যায়। নুহা আর রাইয়ানের সামনের দাগ মুছে দিয়ে ওদের বেড় করে আনে রাইয়ান বেড় হয়ে সাথে সাথে নিশিকাল বন্দী করে।

রাইয়ান— বল আসমানীর ভাই কোথায়?
নিশিকাল— বলব না।
রাইয়ান— তোকে কিন্তু এরচেয়ে বেশি শাস্তি দিবো।
বলেই রাইয়ান নিশিকালের গায়ে আগুন ছুড়ে মারে।
নিশিকাল সহ্য করতে না পেরে বলে উঠে আমাকে ছেড়ে দাও আমি সব বলছি।
আসমানীর ভাই জঙ্গলের মধ্যে একটা কালো গোলাপ ফুল গাছ আছে ঐ গাছে একটা ফুলে বন্দী করা আসমানী গাছ স্পর্শ করলেই ওর ভাইকে পেয়ে যাবে।
নিশিকালের কথা শেষ হতেই নুহা ওকে শেষ করে ফেলে।

<>

অধরা— মায়া আয়না এই মায়া আয়না বল আমার ভাই নিশিকাল কোথায়?
উষা— আমার নাম উষা আমাকে উষা বলে ডাকবে বুঝেছো?
অধরা— চুপ! যা প্রশ্ন করেছি তার উত্তর দে।
উষা আয়নার মাধ্যমে দেখায় নিশিকালকে মেরে ফেলা হচ্ছে। এটা দেখে অধরা চন্ডিকে জানায়। চন্ডি ভয়ে আতকে উঠে।
চন্ডী— তাহলে কি সেই মেয়ে এসে গেছে।
অধরা— কে মা?
<>

আসমানী, নুহা,রাইয়ান ওরা আবারো সবার মাঝে বলতে শুরু করে কখনো লোভ করবেন না। জাদুবিদ্যা এটা যথেষ্ট খারাপ যার মাধ্যমে আমারা ধংস হয়ে যেতে পারি। আপনারা সব সময় সত্যের উপরে থাকবেন আর অল্পতে তুষ্ট হবেন। কোনো জাদুকর বা গনক বিশ্বাস করবেন না।
তখন বাদশা বলে উঠে,,,

মা আসমানী তোমাদের দেড়ি হয়ে যাচ্ছে তোমরা তোমার ভাইকে খুঁজতে যাও আমি আমার গ্রামের লোকদের বুঝিয়ে বলছি। তোমার জন্যই আমরা সত্যিটাকে চিনতে পেরেছি।এতোদিন অপেক্ষায় ছিলাম।আমি সবার কাছে আল্লাহর বানীকে পৌঁছে দিবো।

আসমানী,নুহা,রাইয়ান দ্রুত জঙ্গলে চলে যায়,,,,,,,,

চলবে,,,,,

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here