একজীবনে শুধু তুমি পর্ব ৩+৪

#একজীবনে_শুধু_তুমি
,
৩য় পর্ব
,
লেখনীতেঃ #রাফিজা_আখতার_সাথী
,
,
যখন জ্ঞান ফিরলে নিজেকে চেয়ারে বাধা অবস্থায় আবিষ্কার করলাম।
কোথায় আছি সেটাও বুঝতে পারছিনা।
অন্ধকার কোনো ঘর হবে হয়তো। নেহাল আমাকে কিডন্যাপ করেনিতো!
,
হঠাৎ আলো জ্বলে উঠলো। সামনে চোখ পড়তেই দেখলাম লম্বা একটা লোক। উচ্চতা বডিফিটনেস সব তো নেহালের মতই। তাহলে এটা নেহাল??
,
কি চান আপনি আমাকে এভাবে বেধে রেখেছেন কেন? দেখুন মিস্টার নেহাল আমি কিন্তু আপনাকে চিনতে পেরেছি।
,
আমি কোনো নেহাল টেহাল না।
,
‘আমি প্রথমে ভেবেছিলাম লোকটা নেহাল হবে হয়তো। কিন্তু কথা শুনে সিওর হলাম যে ওটা অন্যকেও। তবে এই কণ্ঠটাও চেনা চেনা।
,
যদি বলি তোর জীবনটা চাই। তাহলে কি দিবি?
,
দেদেখুন আমি আপনাকে চিনিনা। আমাকে মেরে আপনার কি লাভ হবে?
,
লাভ লোক শানের হিসাব পরে।
তোর বাবা আমাকে তার অফিস থেকে ঘাড় ঢাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিলো। তাকে তো মারতে পারিনি এখন তোকে মারবো। এটাই আমার শান্তি।
,
নিশ্চয়ই আপনি কোনো অন্যায় করেছিলেন। না হলে আমার বাবা বিনা দোষে কাওকে কোনোদিন শাস্তি দেয়নি।
,
মৃত্যুর মুখে দাড়িয়ে বাবার গুণগান করা হচ্ছে।
আর কিছুক্ষনের ভিতর যে তোর জীবনটা যাবে সেটা কি ভেবে দেখেছিস।
মরার জন্য তৈরি তো?
,
কথাটা বলেই। বন্দুকটা আমার দিকে ধরলো।
ভয়ে আমি চোখ বুঝেনিলাম।
এই মূহুর্তে মাকে আর নেহাল কে একবার দেখতে মন বলছে। মরার আগে নেহালকে শেষ বারের মত বলে যেতে ইচ্ছা করছে।
“তোমাকে ভালোবাসি নেহাল।
যতভালো বাসলে তোমার সুখের জন্যে নিজেকে বলি দিতে পারি ততটাই ভালো বাসি। ”
,
আমি মারা গেলে আমার মায়ের কি হবে!
কে দেখেশুনে রাখবে আমার মাকে।
টাকা দিয়ে হয়তো জীবন পার করে দেওয়া যায় কিন্তু আমার মায়ের সুখ যে আমি।
আমি না থাকলে আমার মা যে বেচে থেকেও মরে যাবে।
,
হঠাৎ গুলির শব্দে চেচিয়ে ঊঠলাম।
আমাকে কি গুলি করেছে!
,
কই না তো। আমি তো বেচেই আছি তাহলে কি হলো।
,
আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখলাম। দারজার পাশে। নেহাল দাড়িয়ে আছে সাথে তিন জন পুলিশ।
,
মুখোশধারি যে লোকটা ছিলো তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম নিজের হাতটা ধরে কাতরাচ্ছে।
,
তার মানে গুলিটা করেছে ওই পুলিশ গুলোর একজন। আর ওই লোকটার হাতেই গুলি করেছে।
,
একজন পুলিশ সামনে এগিয়ে এসেছে লোকটার মুখোশটা খুলে নিলো মুখ থেকে। লোকটার মুখ দেখে যেন আকাশ থেকে পড়লাম।
এতো আমার আর নেহালের ভার্সিটি লাইফের ফ্রেন্ড “রবি”। তাইতো বলি কথাটা কেমন চেনা চেনা লাগছিলো।
,
রবি তুই??
তুই এই জঘন্য কাজটা করেছিস আমি ভাবতেও পারছিনা। আমার বাবা কবে তোকে তার অফিস থেকে বের করে দিয়েছিলো?
আর যদি করেও থাকে তার জন্যে একজনকে মেরে ফেলতে চাইতে পারিস কি করে? কোথা গেলো তোর বন্ধুত্ব।
,
কিসের বন্ধুত্ব তোরা কোনোদিন আমার বন্ধু ছিলি না।
,
নিজেরা যখন প্রেম শুরু করলি আমাকে ভুলেই গেছিলি। তাই রাগে রাগে তোর বাবার কাছে নেহালকে নিয়ে উল্টা পাল্টা কথা বলি যাতে করে তোদের রিলেশন ব্রেক হয়ে যায়।
কিন্তু না, তোর বাবা গার্ড দিয়ে আমাকে মেরে অফিস থেকে বের করে দেই। আর বলে “আমার মেয়ের জামাই নেহালই হবে। আমি জানি ছেলেটা কেমন আশা করি ওদের থেকে দুরে থাকবে”।
তাই তোর বাবাকে মার‍তে চেয়েছিলাম। কিন্তু পারিনি। পরে তোকেও মারতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তোর আগের ঠিকানায় আর তোকে খুজে পাইনি।

গতকাল তোকে হঠাৎ ফাইল নিয়ে কোথাও যেতে দেখি তারপর থেকেই ফলো করা শুরু।
আজকে হয়তো বেচে গেলি।
কিন্তু মনে রাখিস সুযোগ আমার হাতেও আসবে একদিন। সেদিন দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবি তুই।
,
নেহাল এসে ঠাস করে রবিকে চড় লাগালো,
,
আরে তুই কি মানুষ নাকি জানোয়ার। সাইকোর থেকে গেলি সারাজোবন?
ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে একজনকে মেরে ফেলতে চাস?
কি শিক্ষা নিয়েছিস সারাজীবন?
তোকে বন্ধু বলতেও ঘৃণা হচ্ছে। আর হ্যা কি বলছিলি যেন, সুযোগ তুইও পাবি তো!
হাহা।
সেই দিন আর কখনো আসবে না।
সারাজীবন তোকে জেলে কিভাবে রাখতে হয় সেই ব্যবস্থায় আমি করবো। ওকে নিয়ে যান স্যার।
,
পুলিশ রবিকে নিয়ে চলে গেলো।
নেহাল আমার চেয়ারের সামনে হাটু গেড়ে বসে ধীরে ধীরে বাধনগুলো খুলে দিতে লাগলো।

,
আমার মাঝে মাঝে মনে হতো নেহাল আমাদের সম্পর্কটা শেষ করেদিয়েছে এর পিছনে হয়তো বাবার কোনো হাত থাকতে পারে। কিন্তু একি শুনলাম আমি!
মায়ের মত বাবাও রাজি ছিলো নেহালের সাথে আমার বিয়ে দিতে। তাহলে কি এমন কারণ ছিলো যে জন্য নেহাল আমাকে ছেড়েদিলো! তাহলে কি নেহাল ধোকাবাজ?
না। আমার নেহালকে আমি এত খারাপ উপাধি দিতে পারবোনা। যত কষ্টই পাইনা কেন।
,
আজকে তোমার ফোন ট্র‍্যাক না করলে কি একটা অঘটন ঘটে যেত ভাবতে পারছো?
,
কিন্তু আমার নাম্বার আপনি কিভাবে জানলেন।
,
ইন্টারভিউ দেওয়ার আগে অনলাইনে যে এপ্লিকেশন করেছিলে সেখান থেকে।
,
কিন্তু আমার স্পষ্ট মনে আছে যখন আমি ঘরের দরজা খুলি মানে যখিন কেও আমার মুখে রুমাল ধরে আমার হাতে আমার মোবাইলটা ছিলো না।
তার মানে মোবাইল আমার ঘরেই পড়ে আছে। তাহলে ট্র‍্যাক করলেন কিভাবে। তাও আবার এতো রাত্রে।
,
আমার কথা শুনে নেহাল কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে গেল। পরেক্ষণে আবার হাসি মুখে বললো,
,
এখন এসব জেরা করে কি লাভ তার থেকে বরং বাসায় চলো। আর হ্যা মোবাইল্টা এই রুমের বাইরে পেয়েছি। তা না হলে আমি এখানে আসবো কিভাবে।
,
মিস্টার নেহাল আপনি কিন্তু আমাকে আবার তুমি বলছেন। এটা ভুলে যাবেন না আশা করি।
আর হ্যা এতো রাতে একটা মেয়েকে বাচাতে এসেছেন আপনার স্ত্রী কিছুই বললো না??
,
সে কখনো আমাকে সন্দেহ করে না।
আমার প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস।
,
বাহ নেহাল বাহ! কিভাবে পারো?
আমার সামনে জোর গলায় নিজের স্ত্রীর প্রসংশা করছো যে! তাকে করা তোমার এই প্রসংশা আমার এই ছোট্ট হৃদয়টাকে যে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে সেটা কি তুমি দেখতে পাচ্ছো না? তোমাকে তো অভিনয় জগতে যাওয়া উচিত ছিলো। (মনে মনে)
,
ভাবনা থেকে বের হলে চলো সরি, চলেন, বাসায় যাওয়া যাক।
,
আমি একলা চলে যেত পারবো।
,
এখন জীবন বাচালাম নাহলে তো এতখনে স্বর্গে চলে যেতেন। আর এখনি ইগো দেখাচ্ছেন?
,
আপনাকে কেও দাওয়াত দেয়নি আমাকে বাচাতে আসতে। মরে গেলেই তো ভালো হতো।
,
রাত্রি!!
,
নেহাল তুমি আমার দিকে এই করুণ দৃষ্টিতে তাকিও না। আমি যে নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনা। তোমার বুকে ঝাপিয়ে পড়তে মন বলে। কিন্তু আপসোস দেখো তুমি অন্য কারো স্বামী। তোমার সংসার আছে, আছে একটা মেয়েও আছে। আর আমার?
আমার আছে একবুক কষ্ট।
তোমার এই তাকানোর ভিতর এতো আবেগ কেন বলতে পারো? (মনে মনে)
,
এই রাতে নিজের জেদ ধরে রাখা ঠিক না রাত্রি। প্লিজ চলুন আমার সাথে।
,
,
নেহাল ড্রাইভ করছে আমি পাসের সিটে বসে আছি।
,
আচ্ছা মিস্টার নেহাল। আপনি কিভাবে বুঝলেন আমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে।
,
একটা মেয়ের মোবাইলে লোকেশন এতো রাতে নিজের বাসাতে না থেকে অন্য কোথাও থাকলে এমন কিছুই তো মাথায় আসবে নাকি?
,
হম।
,
চুপচাপ সিটে হেলান দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি। জায়গাটা কোথা আমার জানা নেয়। শহর থেকে দুরেই হবে কারণ আশে পাশে কোনো ল্যাম্পপোস্ট ও দেখা যাচ্ছে না। না দেখা যাচ্ছি কোনো অট্টালিকা। ঘুটঘুটে অন্ধকার চার পাশে। ঠিক আমার মনের মত।
,
,
চলবে
,
,
বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
,
বিঃদ্রঃ আমি গল্পের প্রতিটি পর্ব একজায়গায়তেই শেষ করি। এটা আমার একটা বৈশিষ্ট্য বলতে পারেন। তবে যদি খুব ছোট কাহিনি হয়ে যায় তাহলে দুইটা প্লট দিয়ে একটা পর্ব লিখি। ধন্যবাদ।

,
আমার গ্রুপে জয়েন হওয়ার আমন্ত্রণ।

#একজীবনে_শুধু_তুমি
,
৪র্থ পর্ব
,
লেখনীতেঃ #রাফিজা_আখতার_সাথী

,
,
খুব জানতে ইচ্ছা করছে নেহালের মেয়ের নাম টা কি। তাই লজ্জা রাগ অভিমান লুকিয়ে রেখে জিজ্ঞাসা করলাম,
,
আপনার মেয়ের নামটা কি জানতে পারি?
,
হ্যা নিশ্চয়। রুহিনি।
কাওকে কথা দেওয়া ছিলো যে আমাদের মেয়ের নাম হবে রুহিনি। তাই ওটাই ফিক্স আছে এখনো।
,
এখনো ফিক্স আছে মানে পরে আবার পাল্টে দিবেন নাকি?
,
না, ও কিছু না। আপনি বুঝবেন না মিস রাত্রি।
,
এখন নিজেকে খুব শক্ত মনে হচ্ছে।
নাহলে নেহালের সন্তানের কথা শুনে কষ্ট হচ্ছে ঠিকই কিন্তু নিজেকে ঠিক রাখতে পেরেছি।
“রুহিনি”।
কথাতো ছিলো আমার আর তোমার ভালোবাসার প্রতিক টার নাম হবে রুহিনি।
তুমি তো রুহিনিকে পেয়েছ ই। পেলাম না আমি। না তোমাকে আর না আমাদের ভালোবাসার চিহ্নকে। ( মনে মনে)
,

নেহাল বাসার সামনে আমাকে নামিয়ে দিলো। সাথে নিজেও নামলো।
,
কলিং বেইল চাপতেই সাথে সাথে দরজা খুলে দিলো মা। আমাকে জড়িয়ে ধরে হাওমাও করে কাদতে লাগলো। পাশে নেহাল ছিলো এটা মা খেয়ালই করেনি।
,
মা রে কি হয়েছিলো?
কিছুপড়ার শব্দ শুনে বাইরে বের হই। একটু দেরিতে বের হয়েছিলাম।
কিন্তু বের হয়ে দেখি তোর ঘরের দরজা খোলা।
গিয়ে তোকে পাইনি।
আশেপাশে কোথাও খুজে পাইনি তোকে।
কোথায় গিয়েছিলি মা?
তুই কি জানিস না এই বয়সে তুই ছাড়া আমার খুব কষ্ট হয়?
,
মা, আমি একদম ঠিক আছি আমার কিছুই হয়নি।
,
কিন্তু এতো রাতে……
,
কিডন্যাপের বিষয়টা মাকে লুকালাম। নাহলে খুব টেনশন করবে। তাই মায়ের খারাপ ভাবনা শুরু হওয়ার আগেই থামিয়ে দিয়ে বললাম,
,
দিয়ার বাসায় গিয়েছিলাম মা। ও একটু অসুস্থ তাই!
,
কিন্তু এতো রাতে গেছিলি কিভাবে আর আমাকে না জানিয়েও গেছিলি?
,
এই বলে মা আমার পাশের ব্যাক্তিটাকে দেখেই যেন শক খেলো।
,
নেহাল বাবা!!!!
,
আসসালামু আলাইকুম আন্টি। কেমন আছেন আপনি?
,
ওয়ালাইকুম আসসালাম বাবা। আমি তো ভালো আছি। কিন্তু রাত্রির সাথে তোমার কিভাবে দেখা। তাছাড়া এতো বছর কোথায় ছিলে বাবা? আর রাত্রির সাথেই বা কিভাবে দেখা?
,
রাস্তায় দেখা হয়েছিলো তাই নামিয়ে দিতে আসলাম।
,
খুব ভালোকরেছো বাবা। তা এখন কি রাগারাগি মিটেছে?
,
মানে বুঝলাম না আন্টি।
,
মানে রাত্রি যে তোমাকে………
,
মা জানে আমি নেহাল কে ছেড়ে দিয়েছি।
কিন্তু এসব নিগে কথা উঠলে নেহাল আমাকে ছেড়ে দিয়েছে এটা মা জেনে যাবে।
আর নেহালকে ঘৃণা করবে। যেটা আমি কখনো চাইনা।

,
মা ওসব বাদ দাও তুমি আগে আমাদের ভিতরে যেতে দাও।
,
আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম।
নেহাল ফ্রেস হওয়ার নাম করে কমন ওয়াসরুমে না গিয়ে আমার রুমে গেলো।
মাকে জিজ্ঞাসা করতে মা আমার রুম দেখিয়ে দিয়েছিলো।
,
তুমি জাননা মা, তোমার মেয়ের জন্য তুমি যাকে রাজপুত্র বলতে সেই রাজপুত্রের মনের ঘরে অন্য কেও বাস করে।
শুধু মনের ঘরের না নিজের থাকার ঘরেও অন্য কেও থাকে।
,
হবেই তো নিজের দোষে সব হারালি।
,
হুম।
,
কিছুক্ষণের ভিতর নেহাল ফিরে এলো।
,
ওহ, রাত্রি আপনার ফোনটা দিতেই ভুলে গেছিলাম। এই নিন।
,
আপনি বলতে শুনে মা বললো,
কি ব্যাপার নেহাল। তুমি রাত্রিকে আপনি বলে কথা বলছো কেন?
,
আপনার মেয়েই চাইনা আন্টি যে আমি ওকে তুমি বলি।
,
জানেন মিস্টার নেহাল, সব কিছুরই একটা এক্সপাইরি ডেইট আছে। তেমন আপনার তুমি ডাকেরও ডেইট ওভার হয়ে গেছে অনেক আগেই।
যায়হোক। আপনি আর মা কথা বলুন আমি ফ্রেস হয়ে আসি।
,
ফোনটা নেহালের হাত থেকে নিয়ে ঘরে গেলাম।
,
,
ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমের দিকে গেলাম।
,
মা আর নেহাল গল্প করছে। নেহালের হাতে কফি।
কফিতে চুমুক দিচ্ছে আর মায়ের সাথে নিজের জীবনের চড়াই-উতরাই এর গল্প করছে। ভাগ্য ভালো যে আমাদের সম্পর্ক শেষ কিভাবে হয়েছিলো সেটা বলেনি না হলে….. থাক আর বলতে পারছিনা।

,
কথা বার্তা শেষে নেহাল চলে যেতে চাইলো।
কিন্তু অনেক রাত হওয়ায় মা যেতে দিতে চাচ্ছিলো না।
রাতটা এখানে কাটিয়ে যাওয়ার জন্য বলছিলো। কিন্তু নেহাল বললো যে তাকে এখন যেতেই হবে। বাসা থেকে নাকি টেক্সট মেসেজ এসেছে।
,
তিতলির শরীরটা খারাপ। ১ বছর বয়সতো ওর মা একা দেখাশোনা করতে পারবেনা। আমাকে এখন ফিরতেই হবে আনটি আপনি আমার ফোন নাম্বারটা রাখুন যেকোনো প্রয়োজনে কল দিবেন দয়া করে।
,
কিন্তু এতো রাতে তোমাকে ছাড়তে আমার মনটা ভালো বলছেনা।
,
সমস্যা না থাকলে আমি চলে থেকেই যেতাম। কিন্তু এই অবস্থায় আমার যেতেই হবে। আজকে আসি। আবার দেখা হবে ইনশাল্লাহ।
,
নেহাল বিদায় নিলো। কিন্তু আমার মাথায় কিছুই ঢুকলোনা নেহালের মেয়ের নাম রুহিনি হলে এই তিতলিটা আবার কে।
,
,
কতবার বলেছিলাম তোকে যে। ছেলেটাকে ছেড়ে দিস না। পরে পস্তাবি। এখন তো আর ওর কাছে ফিরে যাওয়ার কোনো পথও খোলা নেয়।
,
মা আমার ঘুম লাগছে আমি ঘুমাতে গেলাম। তুমিও ঘুমিয়ে পড়। দাত অবেক হয়েছে।

,
,
শুয়ে থেকে আমার হঠাৎ মনে হলো। আমাকে যখন মুখে রুমালটা চেপে ধরে সেই সময় তো ওরা আমার ঘরের ভিতর প্রবেশ করেনি।
বাইরের দিকেই নিয়ে যাচ্ছিলো। যতটুকু হুশ ছিলো এটাই মনে আছে। তাহলে ফোন কোথা থেকে গেলো ওই জায়গায়। নাকি পরে কেও নিয়ে গেছিলো?
,
আমার পরিষ্কার মনে আছে শব্দ শুনে যখন আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় তখন ছিলো রাত ১১ঃ৪৫ টা।
তার মানে আমাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে ১২ঃ০০ টার আগেই।
,
কি মনে হলো জানিনা। সারাকে কল দিলাম।
,
কিরে চুন্নি। রাত কয়টা বাঝে জানিস?
,
৩ঃ২০টা বাজে।
,
তাহলে এতো রাতে কল দিস কেন? ফোন রাখ, আমার ঘুমের ডিস্টার্ব করিসনা।
,
দোস্ত প্লিজ হেল্প কর। তুই তো সিম কোম্পানিতে কাজ করিস এখনি আমার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সাহায্য লাগবে।
,
বল কি করতে পারি।
,
রাত ১২ঃ০০ টা থেকে এই পর্যন্ত আমার ফোন কোন কোন লোকেশনে ছিলো জানা প্লিজ।
,
এক মিনিট অপেক্ষা কর। আমি বলছি। আগে ল্যাপটপ অন করে নিই।
,
,
,
তোর নাম্বার তো তোর বাসার লোকেশনেই ছিলো আর আছে দেখাচ্ছে।
,
আমি যেই টাইম বললাম, তার তখন কোথায় ছিলো।
,
১২ঃ০০টা থেকে তিনটা পর্যন্ত তোর বাসার লোকেশনেই ছিলো। এখনে তাই দেখাচ্ছে।
,
এই ভিতর অন্য কোথাও ছিলো না?
,
না।
,
আচ্ছা ঠিক আছে রাখি।
,
কি হয়েছে কিছু বলবিতো নাকি?
,
কালকে জানাবো এখন ঘুমা তুই।
,
,
কলটা কেটে দিয়ে ভাবলাম। ফোনটা তো এখানেই। বাসায় এসেই আমার ঘরের ওয়াসরুমে আসার মানে আমার ফোন নিয়ে নেওয়া। যাতে করে আমার মনে হয় ফোনটা ওর কাছেই ছিলো।
তাহলে নেহাল আমাকে বোকা বানালো। তার মানে কিডন্যাপ কি ও নিজেই করেছিলো? রবিও ওর সাথে ছিলো? কিন্তু এসব করে ওর লাভটা কি?
,
,
,
,
চলবে…
,
,
বিঃদ্রঃ কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না।
বানান ভুল হলে মাফ করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here