এক ঝাঁক জোনাকির আলো পর্ব ৫

#একঝাঁক~জোনাকির~আলো🍁
#writer~হাফসা~আলম 🍂
.
.
৫.
হৃদয়ে দোলা লাগানো কড়া রোদে সারা শহর ডুবে আছে।রোদ তার সোনালি কিরণে সবাইকে মুগ্ধ করছে।সাফা রিক্সায় বসে আছে।তার সারা শরীর ভিজেঁ চুপচুপ হয়ে আছে।ঘামের সাথে এক স্নিগ্ধ পানির ছিটেতে শরীর চিকচিক করছে।সাদা স্যালোয়ার কামিজের রং হালকা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।কাঠি দিয়ে আটকানো চুলের ভাঁজ থেকে কিছু চুল এলোমেলো হয়ে তার কপালে লেপ্টে আছে।সাফার মনে এখন এক সচ্ছ খুশির ঝিল দিচ্ছে। তার ইচ্ছে করছে।ডানা ঝাপটে উঠে বেড়াতে ঠিক যেমন প্রজাপতিরা উড়ে।আবার ইচ্ছে করছে জোনাকির মত উড়ে উড়ে আলোর বিচরন করতে.. কিন্তু দুঃখের বিষয় তার তো ডানাই নেই..তবুও সে দুহাত প্রশারিত করে এই রোদ বৃষ্টির মিলন মেলায় নিজেকে সামিল করছে।ছোটবেলায় তার মা বলতো রোদ বৃষ্টি একসাথে হলেই শিয়াল মামার বিয়ে হয়।তবে কি আজ শিয়াল মামার বিয়ে??সাফা হাতগুলো আবার প্রশারিত করে চোখবুজে..তার মনে হচ্ছে রোদের এই করুন ব্যবহারকে সামলাতেই বৃষ্টির এমন ঝিড়িঝিড়ি আগমন.. কঠর রোদে বৃষ্টিরা কি সুন্দর দল বেদে ঝাপাং ঝাপাং করে শহরের বুকে বর্ষন হচ্ছে.. যেমন জোনাকিরা অন্ধকারে আলো ছড়ায় ঠিক একুই ভাবে রোদের তীব্রতা কমাতেই বৃষ্টির এমন মিষ্টি আগমন। নিজের মনে এসব ভেবেই সে একটা প্রশান্তির দীর্ঘশ্বাস নেয়।ভার্সিটি থেকে ফিড়ার সময়ও কঠর রোদের তাপে তার মাথা দাপদাপ করছিল কিন্তু এখন কেমন প্রশান্তি লাগছে।ঘামের সেই বিছড়ি গন্ধ আর আগছেনা।সাফার মনে হচ্ছে চলন্ত রিক্সায় তার সাথে কেউ ঠেসে উঠে বসেছে।সাথে সাথে চোখ জোড়া চড়ক করে খুলে সে পাশে তাকাতেই হতভম্ভ…রাগে তার মাথা ফেটে যাচ্ছে। একরাশ রাগ আর বিরক্তি নিয়ে সে বলে উঠে…..

–এই আপনার সাহসতো কম না এভাবে আমার পাশে বসার মানে কি??? এগুলো কোন ধরনের অসভ্যতা??আর কি চোখে রিক্স পরে নি?আমার পাশে কেন বসেছেন নামেন।
.
সাফার এমন ঝাঁঝালো গলা শুনে নিভ্র কিঞ্চিৎ ভ্রু কুঁচকালো.কিন্তু জবাবে কিছু না বলে একটু ঠেসে বসার চেষ্টা করছে।জীবনে প্রথম রিকশায় উঠলে যা হয় আরকি।নিভ্র ভাবতেও পারেনি তার জীবনেও রিকশা চড়ার মত এমন অভিজ্ঞাও হতে পাড়ে।কি আর করার সবই কপালের দোষ।আরিফ তার গাড়ি চেক না করেই রেখেছে যার কারণে গাড়ির তেল শূন্যে হওয়ার পড়েও সে নিয়ে বেড়িয়েছে।কিছুদূর আসার পড়ে তেল যে শূন্যে থেকে মাইনাসে চলে আসছে এটা গাড়ি যখন খটখট করে থেমে গেছে তখনই সে টের পেয়েছে।আফসোস তখন কিছুই করার ছিল না।গাড়ির বাইরে আসতেই মেয়েদের কিছুসংখ্যক ভিড় জমে গেছে তাই না পাড়তেই সাফার চলন্ত রিকশায় আশ্রয় নিতে হয়েছে।বাসা থেকে মাস্কও নিয়ে আসেনি তাই এত বিপদে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু সাফার এমন রগ চটা কথা শুনে সে ভরী অবাকতায় ভুগছে।সে ভাবতেও পারছেনা নিভ্রনীলকে কোন মেয়ে প্রথম দেখেই এভাবে চিৎকার করে উঠতে পাড়ে।প্রথম দেখায় বহু মেয়েকে সেন্সলেস হতে দেখেছে এমন কি চিৎকারও করতে দেখেছে কিন্তু এই মেয়ের মত রেগে যেতে দেখেনি।যদিও একে সে ভালো করেই চিনি।সাত দিন হসপিটালে থাকতে হয়েছে এই মহারাণীর জন্যে।অন্যকোন মেয়ে হলে এতক্ষণে খুন করে দিতো কিন্তু একে কেন যে বকতেও পারছেনা তা নিভ্রের জানা নেই…এর মাঝে সাফা আবার চেঁচিয়ে উঠে…..
.
—এই রিকশাওয়ালা মামা রিকশা থামান.. আর আপনি নামেন..
.
নিভ্র একটু বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলে উঠে…
—–এই রিকশা চৌধুরী ভিলায় যাবো.. যত এমাউন্ট চাও দিব ওও সরি মানে যত টাকা চাও..
.
রিকশাচালক একটা ২৫-২৬বছরের ছেলে তার উপড় নিভ্রনীলের ফ্যান..নিভ্রনীল এখনকার স্টাইল আইকন..তার স্টাইল দেশ ছাড়িয়ে এখন বিদেশও বহু নাম কামিয়েছে কারণ নিভ্র শুধু দেশের না বিদেশেরও নাম করা মডেল।রিকশাচালক দাতঁ কেলিয়ে একরাশ খুশি নিয়ে বলে উঠে….
.
নিভ্রনীল ভাই আমি আপনার অনেক বড় ফ্যান.. আমি কি আমনের লগে একটা সেল্ফি তুলতে পারমু???
.
আচ্ছা তুলিও আগে বাসায় নিয়ে যাও…
.
রিকশাচালক খুশিতে রিকশায় উঠে পড়ে।সাফা এতসময় হা করে এদের কথা শুনছিলো।এবার সে নিভ্রের মুখের দিকে তাকায়।লাল সাদা গায়ের রং মুখে খোঁচা খোঁচা চাপ দাড়ি,চোখগুলো ভাড়ী অদ্ভুত সুন্দর.. একদম ঘাড়ো সবুজ রং এর,চুলগুলো তুর্কি স্টাইলে পিছনে সেট করা,সিল্কি হওয়াই কিছু চুল কপালে ডান চোখের কাছে এসে লেপ্টে আছে।বৃষ্টির পানিতে সাদা গেঞ্জি ভিজেঁ চুপচুপ হয়ে আছে।গেঞ্জির বুতাম খোলা যার মাঝে আবার গোল কালো ফ্রেমের সানগ্লাস ঝুলানো।হাতের বাদামি রং এর পশম গুলোও লেপ্টে আছে।সাদা হাতে কালো একটা দামি ব্যান্ডের ঘড়িও আছে।সাফা এবার মনে মনে বলে উঠে ম্যাগাজিনের চাইতেও বাস্তুবে বেশি সুন্দর। একে প্রথম দেখেইত ক্রাশ খেয়েছে কিন্তু এত শয়তান জানলে কখনো ক্রাশ খেত না যাই হোক একে আজই ক্রাশ থেকে বাদ দিলো সে।কেমন লোক এত কিছু বলার পড়েও বসে আছে।সাফা এবার মুখ কুঁচকে বলে উঠে…..
.
—-আপনি নিভ্রনীল না?? হ্যাঁ হ্যাঁ সেই তো কিন্তু আপনি রিক্সায় কেন??ওওও নিজের গাড়ি বুঝি নাই?? নাকি গার্লফ্রেন্ড বের করে দিছে নিজের গাড়ি থেকে??যে যাই করুক আমি এত শত বুঝি না নামেন আমার রিক্সা থেকে..আর এই রিক্সাওয়ালা আপনি উনার কথায় এত নাচানাচি করছেন কেন বলেন ত?? আপনার সাহসতো কম না। আমি আগে রিক্সা ভাড়া করেছি তাই আমার বাসাই আগে যাবেন বুঝলেন….
.
সাফার চেঁচানিতে নিভ্র ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলে উঠে…
—-ঠিক আছে আগে ওর বাসায় চল.. ওকে নামিয়ে তারপর আমার বাসায়….
.
নিভ্রর এমন কথায় সাফা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে আর বলে উঠে…..
—তবুও আপনি রিক্সা থেকে নামবেন না?? আজব লোকতো স্যালিব্রেটি হইছেন তো কি হইছে।আমি আপনার ফাউল ফ্যান দের মত না বুঝলেন যে আপনাকে দেখেই ফিট হবো নামেন আমার রিক্সা থেকে…
.
নিভ্র এবার প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে…
—-তোমার রিক্সা কিভাবে হলো…
.
—-এই কথায় কথায় তুমি কেন বলেন হুম আপনি করে বলবেন আর আমি যেহেতু আগে উঠেছি তাই এটা আমার রিক্সা..বুঝলেন??আর বুঝলে ফুটেন..
.
রিক্সাচালক এবার পিছনে ঘুড়ে বলে উঠে…
—-আরে মেডাম আপনি ভাইরে চিনেন না উনি নাম করা মডেল আমার তো সবচাইতে প্রিয়।মেয়েরাতো তারে দেখলেই পাগলের মত চিল্লায়।আর আপনি কিনা রিক্সা থেকে নামাই দিতে চাচ্ছেন।আপনি মেয়ে কিনা আমার তো তাই ভাবতাম মন চাইতাছে।
.
সাফার মাথায় হাত এই লোক বলে কি??আল্লাহ কেউ মাইরা হালা।এটা কেমন কথা সাফা মেয়ে কিনা??শালা রিক্সাওয়ালার কপালে আজকে শনিরদশা আছে।সাফা রাগী গলায় চেঁচিয়ে বলে উঠে….
—এই আপনার সাহস তো কম না।আমি মেয়ে কি না?? শালা তুই নিজেইত পোলা না।নিজেরে দেখেন গেয়ের মত স্বভাব। তানা হলে এই ছেলেরে দেখে এত লাফালাফি ধাপাধাপির মানে হয়।শালার রিক্সাওয়ালা মামা আপনারে তো আমি কি করমু এটাই বুঝতাম পারছিনা।এই সবই আপনার জন্যে হয়েছে খুন করে দিমু শালার মডেল ফডেল। আমার রিক্সায় উঠেই আপনি যত ভেজাল লাগানের সব লাগাইলেন আপনারেত আমি…
.
সাফা বলতে বলতেই নিভ্ররের বাম হাতের বাহুতে ইচ্ছা মত কিল দিয়েই চলেছে।রিক্সাচালকের তো সেন্স হারাবে হারাবে অবস্থা।বলে কি এই মেয়ে কখনো মামা আবার কখন শালা আবার একবার আপনি একবার তুই..কথাগুলো শুনেই তার মাথা ঘুড়ছে।তার উপড় সে নিভ্রনীলকে এভাবে মারছে ভাবা যায়??তার জানা মতে নিভ্রনীল প্রচণ্ড রাগি একজন মানুষ।আর এই মেয়ে কি করছে??সে তো মনে মনে দূরূদ শরীফও পড়া শুরু করেছে।নিভ্র তো ভাবতেও পারেনি তাকে কেউ এভাবে মারতে পারে।মেয়েদের নরম হাতের স্পর্শ সে আগে কখনো এভাবে পায় নি।তাই একটু হকচোটিয়ে গেছে।রিক্সাচালকে ইশারায় রিকশা চালাতে বলে সে খপ করে সাফার হাতগুলো নিজের দখলে নিয়ে নিয়েছে।এবার সাফা ভয় পেয়ে পিছনে ঝুঁকে পড়ে।নিভ্র এবার বলে উঠে….
—বেশী কথা বলবে না।চুপকরে বসে থাক তা না হলে তোমাকে ছুড়ে ফেলতে আমার বেশি টাইম লাগবে না।
.
সাফা এবার প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে।তাই চুপটি মেড়ে বসে পড়ে।মনে মনে ভাবছে চুপ থাকাই ভালো তা না হলে এই লোক তাকে টুপ করে তুলে ঠুস করে ফেলে দিতে একবারো ভাববে না।তার উপড় যা বডি তাকে ফেলতে যে এর বিন্দু মাএও কষ্ট হবে না এটা তার জানা হয়েগেছে।নিভ্র একবার আড়চোখে তাকিয়েই আবার চোখ নামিয়ে নিয়েছে।মেয়েটাকে দেখেই তার এখন হাসি পাচ্ছে।ফুলাফুলা গালগুলোকে আরো ফুলিয়ে বসে আছে।গাল গুলো লাল হয়ে আছে।আর ঠোঁটজোড়া উল্টে ফুলিয়ে রেখেছে।ভেজাঁ চুলগুলো কপালে লেপ্টে আছে।ওড়নাটাও গায়ের সাথে লেগে আছে।নিভ্র আবার সাফার উপড় ঝুঁকে পরতেই সে ভয়ে সিটের সাথে হেলান দিয়ে চোখবুজে হাতগুলো মুষ্টি বদ্ধ করে ওড়না খামছে আছে।নিভ্র একবার তাকিয়ে হালকা নিঃশব্দে মুচকি হেসেঁ রিকশার হুটটা তুলে দিয়ে আবার আগের মত বসে পরে।যাতে বৃষ্টির ফোটা গায়ে না পড়ে।যদিও তারা ভিজেঁ চুপচুপ হয়ে আছে।সাফা এবার এক চোখ খুলে নিভ্রকে নিজের জায়গায় বসে থাকতে দেখে সেও উঠে বসে।ভয়ে তার জান পাখি উড়ে যায় যায় অবস্থা। কিছুক্ষণ সব নিরব থাকার পর হুট করে নিভ্র বলে উঠে……..
—-বাসা কোথায়??
—কেন কেন??(চকিতেই জবাব দেয় সাফা)
—-আস্তে বলা যায় না??এত জোড়ে চিৎকার করে বলার মানে হয়(কানে হাত দিয়ে বলে উঠে)
—আস্তেইত বললাম।আপনি কিন্তু কথায় কথায় আমায় আপমান করেন।(করুন সুরে বলে)
—এই তুমি কি প্রতি কথায় ঝগড়া করার মিশন নিয়ে নামো নাকি??আই জাস্ট হেট সাউন্ড পালিউশান..আর তুমি অল টাইম ঝগড়া,চিৎকার… . রাবিশ..
—হোয়াট!!আপনার এত বড় সাহস টুকটুককে অপমান??এই অপমানের প্রতিশোধ টুকটুক নিয়েই ছাড়বে হুম..
—এত হাইপার হয়ে কথা বলা ছাড়া তোমার আর কোন কাজ নেই না??আশ্চর্য জনক মেয়ে।ওয়েট ওয়েট তোমার নাম তো সাফা টাইপের কিছু ,তো এই টুকটুক আবার কে??(ভ্রু কুঁচকে নিভ্র সাফার দিকে তাকিয়ে বলে উঠে)
—ওওও ওটা তো আম্মু আদর করে আমাকে টুকটুক ডাকে তাই মাঝে মাঝে মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়।আমার আসল নাম তো সাফ্রিনা সাফা।সুন্দর না নামটা?? সবাই বলে আমার মতই কিউট হিহি…(ভাব নিয়ে বলে উঠে)
—কিউট আর তুমি??ওওওহহহ্(বলে একটা দীর্ঘশ্বাস নিল।আর মনে মনে বলে উঠে…
—ঝুগরুটে মেয়ে একটা)
.
সাফা তো রেগে আগুন তাকে বার বার অপমান করে এই লোক।সাফা আবার ঝাঁঝালো গলায় আঙুল তুলে চোখ ছোট ছোট করে বলে উঠে…..
—আবার অপমান। এই আপনি এমন কেন??আপনাকেত আমি…ওয়েট আপনি আমার নাম কিভাবে যানলেন??(ভ্রুকুচকে বলে উঠে সাফা)
.
নিভ্র একটু ভড়কে গেল।মনে মনে ভাবছে এই মেয়ে যদি যানে সেই মাস্ক আলা তাহলে নিশ্চিত আবার বাড়িটাড়ি দিবে।এমনেই সে প্রবলেমে আছে এই মেয়ে যদি আরো প্রবলেম ক্রিয়েট করে তবে তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। সে কথা ঘুড়িয়ে বলে উঠে
—তুমিইত বলেছ।আর তুমি আমাকে কি করবে এটা তো আমি জানি না কিন্তু তুমি চুপ না করলে তোমাকে যে আমি রিক্সা থেকে ফেলে দিব এটা আমার জানা আছে।এবার বুঝে থাকলে চুপ কর।আর বলো বাসা কোথায়??রিক্সা আগে তোমাকে তোমার বাসায় নামিয়ে দিবে।তা নাহলে তুমি যে কি করবে আমি জানি না?? আল্লাহ আমাকে এত ধৈর্য কিভাবে দিচ্ছে আই ডোন্ট নো।
.
সাফা কিছু বলতে গিয়েও আর বলল না।আবুলের মত মুখের ভিতরেই বিড়বিড় করে বলে উঠে…..
—আমি বলেছি??(তারপর আবার চুপকরে গেলো এই লোকের বিশ্বাস নেই তাকে যদি ফেলে দেয়??না না থাক চুপ থাকাই বেটার)কিছুক্ষণ পরে বলে উঠে….
—-এই দাড়ান এই বাড়িটাই আমার।
.
রিক্সাচালক রিক্সা থামাতেই সাফা নেমে পড়ে তারপর রিক্সাচালকে জিগ্যেস করে…
—ভাড়া কত??
—-৫৫টাকা..
—-৫৫ টাকা..?? ৫০ থেকে ৫৫ তে চলে গেলেন??আপনার সাথে কথা বলাই বেকার।নেহাত আমি ভালো মেয়ে তাই রিক্সাওয়ালাদের সাথে বার্গারিং করি না।তা না হলে আপনার কপালে শনি ছিল..ফাউল লোক একটা..
.
সাফার কথায় নিভ্রের মুখ হা হয়ে গেছে ৫টাকার জন্যেও এই মেয়ে লেকচার দিয়ে দিলো।আল্লাহ। নিভ্র বলে উঠে….
—তোমাকে ভাড়া দিতে হবে না আমি দিয়ে দিবো।এই ছেলে চল…
.
সাফা লাফিয়ে বলে উঠে…
—চল মানে কি??আমি কি ফকির নাকি?? যে আপনি আমার ভাড়া দিবেন??না কখন না।এটা হতেই পারে না।আপনি আমাকে ফকির মনে করেন নাকি??সব সময় অপমানের ধান্ধা।এই যে বাড়িটা ছোট হলেও নিজেদের বুঝলেন।আমার বাবাও আল্লাহর রহমতে ভালোই ইনকাম করে আর আমিও প্রাইভেট পড়াই নিজের হাত খরচ নিজেই চালাই।আমি আত্ননীর্ভরশীল মেয়ে। বুঝলেন তাই ডোন্ট আন্ডারেস্টিমেট মি…ওকে।এই নেন…৬০টাকা আছে…
—ভাঙ্গতি নেই আপা..
—তাইলে ভাঙতি কই পামু??আপনার কাছে আছে(নিভ্রকে ইশারা করে)
—আমার কাছে টাকা থাকে না কার্ড আছে।
—তাইলে আপনি যে রিক্সায় উঠলেন এর ভাড়া কিভাবে দিবেন??(কৌতুহলি হয়ে বলে উঠে সাফা)
—-বাসায় গিয়ে ম্যানেজ করা যাবে।
—-আচ্ছা রিক্সাওয়ালা মামা সবটাই আপনি রেখে দেন।
.
রিক্সাওয়ালা এবার আর এক নাসর বান্ধ হয়ে উঠল। সে কিছুতেই পাচঁটাকা বেশি নিবে না।শুরু হল সাফা আর রিক্সাওয়ালার তুমুল ঝগড়া।আর এই দিকে নিভ্রর মাথা খারাপ।একেত জীবনে প্রথম রিকশায় উঠেছে তার উপড় আবার এত বকবক শুনেছে আর এখন আবার ঝগড়া।নিভ্র রেগে।সাফার হাত থেকে থাবা মেড়ে টাকাগুলো নিয়ে বলে উঠে…..
—৫০ টাকাই দেও তুমি। বাকি ৫টাকা না হয় আমি দিয়ে দিলাম।আর তুমি (রিক্সাওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে)চালাও তো।
.
সাফার হাতে বাকি দশটাকা ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত রিক্সাওয়ালা রিক্সা চালানো শুরু করে।সাফা তো এখন হা করে আছে।মুহূর্তে চেঁচিয়ে বলে উঠে….
—সাফা কারো ঋণ রাখে না। আপনারটাও শোধ করে দিব।যদি কখনো দেখা হয়।মি.মডেল ফডেল…মনে রাখবেন ৫টা পাবেন….
.
নিভ্র মনের অজান্তেই একবার পিছনে তাকিয়ে সাফার ঠোঁট উল্টে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে হেসেঁ উঠে।তবে সব হাসির মতই তার এই হাঁসিও শব্দ বিহিন……..
.
#চলবে…..🍁
ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন…….🍂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here