এক মুঠো কাঁচের চুরি পর্ব -২৯+৩৯

#এক_মুঠো_কাঁচের_চুরি
#পর্ব_২৯
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

তানহাকে হসপিটালে দেখে বিনা মেঘে বজ্রপাত হলো,ইফাদ তানহার ওপরে চিৎকার দিয়ে উঠলো।ইফাদের রাগার কারন খুঁজে পেল না তানহ।ইফাদের প্রশ্নে ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসলো।

–তোমার লজ্জা করে না।লজ্জা-আত্মসন্মাস সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ফেলছো।

–তুমি এসব কি বলছো?

–যে,মেয়ে তোমাকে কালকে এতগুলো কথা শোনালো।তোমাকে যা-নয় তই বলে অভিশাপ করল।আজকে নির্লজ্জের মতো তাকে দেখতে চলে এলে,একটা স্বার্থপর মেয়ের জন্য এতটা দরদ দেখানো ভালো মনে করছি না।যতই নিজের বোন হোক না কেনো?

–ইফাদ এসব তুই কি বলছিস।চৈতালি তোর নিজের বোন হয়।

–তুমি চুপ থাকো আম্মু।চৈতালি আমার বোন হলে,তানহা-ও আমার বউ হয়।তুমি নিজের মেয়ের দিকটা দেখছো।তানহার কথা একবার ভেবেছিলে,
মেয়েটা কাল সারারাত ঘুমোয় নাই।কান্না করেছে।আমি চোখের সামনে সবকিছু দেখেছি।ওর মাথায় ভরসার হাত রাখতে পারি নাই।কিভাবে রাখবো বলো।নিজেকে অযোগ্য স্বামী বলে মনে হয়েছে।তানহা আমার থেকে ভালোকিছু ডিজার্ভ করে,কালকে নিজের বোনের কথা চিন্তা করে,আমি’ও স্বার্থপর হয়ে গিয়ে ছিলাম।চৈতালি তানহাকে এতগুলো কথা বলল আমি চুপ করে সবকিছু সহ্য করলাম।তুমিও মেয়েকে একটা কথাও বললে না।তানহা চৈতালির ভালোই চেয়েছিল।চৈতালির ভালো করতে গিয়ে তানহা হয়ে গেল,সবার চোখের বিষ।চৈতালি যেমন আমার কলিজার টুকরা।তানহা-ও তেমন আমার অস্তিত্ব।তানহার মধ্যে আমি নিজেকে খুঁজে পাই।আমার মনের মধ্যখানিতে তানহার বসবাস।চৈতালি কালকে সেখানে আঘাত করেছে।চৈতালি শুধু তানহাকেই না।কালকে আমাকে-ও টুকরো টুকরো করে ফেলছে।মেয়ের হয়ে সাফাই গাইতে আসবে না।

–ইফাদ শান্ত হ ভাই।

–এই মেয়ে বলো না কেনো?তুমি এখানে কেনো এসেছো।যার কাছে তোমার দুই পয়সার মূল্য নেই।তার মূল্যও তোমার কাছে এক পয়সার থাকা যাবে না।কোনো স্বার্থপর মেয়ের কথা তুমি ভাব্বে না।যাও বাসায় চলে যাও।তুমি না ফোন ব্যবহার করতে ভালোবাসো।আজকে সারাদিন ফোন ব্যবহার করবে,কোথাও ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করলে ঘুরতে যাবে।টাকা লাগলে আমাকে বলবে,আমি তোমাকে টাকা পাঠিয়ে দিব।তোমার ফ্রেন্ড নেই।আজকে সারাদিন তাদের সাথে ঘুরবে।

–তানহা চৈতালির কাছে থাকতে পারবে না।তাহলে তুই আছিস কেনো?

–চৈতালি আমার বোন হয় না আম্মু।আমার রক্ত।একটা টান আছে না।কিন্তু তানহার টান থাকা যাবে না।ওকে আরো কঠিন হতে হবে।যতটা কঠিন হলে,কেউ তানহাকে কথা শোনাতে পারবে না।এই পৃথিবীতে কেউ কাউকে জায়গা দেয় না আম্মু।নিজের জায়গা নিজে তৈরি করে নিতে হয়।তানহা প্রথম থেকে শক্ত হলে,চৈতালি এতদূর আসতে পারতো না।এই মেয়ে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?রিয়াদ যা তানহাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আয়।তানহা আর কোনো কথা বলল না।বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলো।

আজকে একমাস পরে চৈতালিকে বাসায় নিয়ে আসা হলো।মেয়েটা শুকিয়ে কঙ্কালের মতো হয়ে গেছে।ফর্সা চেহারায় কালচে দাগ পড়ে গেছে।চোখের নিচে গাঢ় কালো দাগ পড়েছে।আগের মতো চেহারায় উজ্জ্বলতা নেই।মেয়েটা কেমন জানি চুপচাপ থাকে।আস্তে আস্তে সবকিছু উপলব্ধি করতে পারছে।কার জন্য নিজেকে শেষ করতে যাচ্ছিল।যে,কি না নিজের নতুন জীবন নিয়ে,সুখে আছে।আমি কেমন আছি কখনো জানতে চায় নাই।একবারের জন্য খোঁজ নেয় নাই।আর ভাবি সে কি আমাকে কখনো মাফ করবে।আমি তাকে যে কথাগুলো বলেছি,তা কিভাবে ফিরিয়ে নিব।আমি তো কথার আঘাতে তাকে শেষ করে ফেলছি।ভাইয়াও আমার সাথে ঠিকমতো কথা বলে না।দরকার পড়লে আসে,বিনা কারনে আসে না।একমাসে তানহার দেখা পায়নি চৈতালি।ইফাদ তানহাকে চৈতালির সামনে যেতে নিষেধ করেছে।কড়া আদেশ সে,যেনো চৈতালির সাথে কথা না বলে।বাসায় আসলে দেখা করতেও যেনো না যায়।হাসিখুশি পরিবারটা নিমিষেই এলোমেলো হয়ে গেল।সবকিছু আমার জন্য হয়েছে।ভাবি একটা কথা ঠিক বলতো।মায়া কখনো সারাজীবন থাকে না।একমাস আগে যে,পাগলামিটা ভেতর থেকে আসছিল।এখন ভেতর থেকে কোনো অনুভূতি আসছে না।দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের রুমের দিকে গেল চৈতালি।

ইফাদ রুমে প্রবেশ করে হাত তোয়ালে নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল।এই একমাস ইফাদ তানহার থেকে কেমন পালিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে।যতদূর চেষ্টা করেছে,
তানহার থেকে দূরে দূরে থেকেছে।সেদিনের পরে তানহার চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস হয় নাই।নিজেকে হতভাগা স্বামী মনে হয়।লজ্জায় তানহার সামনে দাঁড়িয়ে মন খুলে দু’কথা বলতে পারে না।তানহা ঘুমিয়ে গেলে,পরম আদুরে ভাবে বুকে টেনে নেয় ইফাদ।তানহা-ও কেমন চুপচাপ হয়ে গেছে।কাউকে নিয়ে কোনো অভিযোগ করে না।অনুভূতি শূন্য হয়ে গেছে তানহা।কাউকে আর কিছু বলতে ইচ্ছে করে না।রাত হলে,কান্না গুলো চোখের কোণে এসে হামলা দেয়।নিজেই নিজেকে শান্তনা দেয়।

চৈতালি ফ্রেশ হয়ে তানহার রুমের দিকে আসছিল।ইফাদ চৈতালির পথ আঁটকে দাঁড়াল।

–কোথায় যাচ্ছিস।

–ভাবির কাছে,,

–কেনো আরো কথা শোনানোর বাকি আছে।দেখ তুই আমার নিজের বোন হস।তাই ভালোই ভালোই বলছি মনের ভুলেও তানহাকে দু’কথা শোনানোর চেষ্টা করিস না।তাহলে তোর মুখ আমি ভেঙে দিব।বড় হয়েছিস।এতটাও অবুঝ নেই।মা যদি তোকে শাসন করতে না পারে,পিটিয়ে তোকে সোজা করবো।তানহার সাথে তুই দেখা করতে পারবি না।নিজের রুমে গিয়ে বিশ্রাম কর।

–আচ্ছা”।বলেই চৈতালি মাথা নিচু করে চলে গেল।চৈতালির বিধস্ত চেহারা দেখে ইফাদের মায়া হলো।কিন্তু মেয়ের কথা শুনলে মায়া লাগে না।একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়াল।

এর মাঝে আরো পনেরোটা দিন কেটে গেল।চৈতালি এখন মোটামুটি সুস্থ।বাড়িটা একদম মরা বাড়িতে পরিনত হয়েছে।চৈতালি ঠিক করল।নিজের সবটুকু দিয়ে বাড়িটা আবার আগের মতো করে তুলবে।

তানহা সেলাই করছিল।ইফাদ দরজার কাছে এসে বলল।

–আসবো।

–কোনোদিন অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করো না।আজকে হঠাৎ কি মনে করে,অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন মনে করলে।

ইফাদ গিয়ে তানহা পায়ের কাছে ফ্লোরে বসে পড়ল।

–নিচে বসলে কেনো?উপরে এসে বসো।

–তোমার জন্য একটা জিনিস নিয়ে এসেছি।

তানহা ইফাদের দিকে তাকালো।ইফাদের দৃষ্টি নত।কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে,একগুচ্ছ লাল গোলাপ বের করে তানহার সামনে ধরে বলল।

–তোমার জন্য।

তানহা মলিন হেসে ফুল গুলো নিয়ে বলল।

–খুব সুন্দর।

–শুধু সুন্দর।

–হুম।ইফাদ হতাশ হয়ে বসে রইল।বউয়ের মনে বেশ অভিমান জমা হয়েছে।বউয়ের মন গলাতে হলে,প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে।ইফাদ সেখানেই আসে রইল।

রোকেয়া বেগম মেয়ের রুমের এসে দাঁড়িয়ে গেল।মেয়ে এখন কিসের নামাজ পড়ছে।সন্ধ্যার আজান তো এখনো দেয় নাই।চৈতালির কান্নার আওয়াজে সেদিকে মন দিলেন রোকেয়া বেগম।দু’হাত তুলে মোনাজাত করছে চৈতালি।দু-চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে।

–হে আল্লাহ আপনি আমার সবকিছু জানেন।আমি একটা হাসিখুশি পরিবারকে নিমিষেই শেষ করে দিয়েছে।কষ্ট দিয়েছি পরিবারের সকলকে আর যাকে সব থেকে কষ্ট দিয়েছি।সেটা হলো আমার ভাবি।নিজেকে আমার অমানুষ বলে মনে হচ্ছে,যে ভাবি আমাকে মায়ের মতো বুকে আগলে রেখেছিল।সে ভাবিকে কথার আঘাতে শেষ করে ফেলছি।সবাই বলতো প্রেম মানুষকে অন্ধ করে দেয়।আমি’ও প্রেম অন্ধ হয়ে সবাইকে কষ্ট দিয়েছি।আপনি হয়তো বিচ্ছেদের যন্ত্রনা বোঝেন।তাই প্রেমকে হারাম করে দিয়েছেন।আমার অবুঝ মনটাকে বোঝাতে পারি নাই।ঠিক ভুল না বুঝে মরিচীকার পেছনে ছুটেছি।আমি জানিনা ভাবি আমাকে কখনো মাফ করবে কি না।আমি জানি ভাবির মনের ক্ষতটা কখনো ঠিক করে দিতে পারবো না।কিন্তু দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা তার কাছে মাফ চাইতে থাকবো।হে আল্লাহ আমি যে-সব ভুল জেনে-বুঝে করেছি।আর সে-সব ভুল না জেনেছি করেছি।সবগুলো ভুলের জন্য আপনার কাছে মাফ চাই।অনুতপ্ত বান্দার চোখের পানি নাকি আপনার খুব প্রিয়।আজ আমি খুব করে অনুতপ্ত আল্লাহ।ভেতর থেকে শেষ হয়ে যাচ্ছি।কাউকে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছি না।আপনি আমাকে মাফ করে দিয়ে আমার পরিবারটাকে আগের মতো করে দিন।পৃথিবীর সমস্ত সুখ আমার পরিবারে এনে দিন।পরিবারের সবার কষ্ট উপলব্ধি করার পরে নিজেকে বড্ড অপরাধী আর স্বার্থপর মনে হচ্ছে,আমি কি করে এতটা স্বার্থপর হয়ে গেলাম।

প্রায় এক ঘন্টা চৈতালি মোনাজাত আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছে।অঝোরে কান্না করেছে।মনের সব কথা আল্লাহর কাছে জানিয়েছে।এখন নিজেকে হালকা লাগছে।মেয়েকে অনুতপ্ত হতে দেখে রোকেয়া বেগম-ও খুশি।

নামাজ শেষ করে চৈতালি বাহিরে আসলো।তানহাকে খুঁজছে।আজকে সাহস করে ভাবির সাথে কথা বলেই ছাড়বে সে’।লজ্জায় আর ভয়ে কথা বলা হয়ে উঠে না।বিষয়টা ইফাদ খেয়াল করেছে বেশ কিছুদিন।ইফাদ এটাই চেয়েছিল।চৈতালি তানহাকে ভয় পাক।

তানহা রাতের রান্না করছিল।চৈতালি তানহাকে কাঁপা কাঁপা হাতে পেছনে থেকে জড়িয়ে ধরলো।তানহার কাঁধে থুতনি রেখে চোখের পানি বিসর্জন দিচ্ছে।হঠাৎ কারো স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠলো তানহা।ইফাদ সবে মাত্র বাসায় ফিরেছে।চৈতালিকে তানহার কাছে দেখে চিৎকার দিয়ে উঠলো।

–চৈতালি তোকে নিষেধ করেছি।তানহার আশেপাশে না আসতে।আমার বউটাকে পুরিয়ে মারার ধান্দা করছিস নাকি।বলেই চৈতালিকে তানহার থেকে সরিয়ে দিল।

–এসব তুমি কি বলছো ভাইয়া।

তানহা দু’জনের কান্ড দেখছে।কিছু বলছে না।কান ধরেছে।তাদের বিষয়ে কখনো কোনো কথা বলবে না।তারা যদি হ্যাঁ বলে,তাহলে হ্যাঁ।তারা যদি না বলে,তাহলে না।ইফাদ চৈতালিকে কিছু কথা শুনিয়ে রুমে পাঠিয়ে দিল।

–এই দেখো তোমার জন্য কি নিয়ে এসেছি।বলেই ঝালমুড়ি বের করে দিল।

–রাখো পরে খেয়ে নিব।

–তুমি আমার সাথে এমন করছো কেনো?কালকে ঘুরতে যাবে।

–না।

–এখনো রেগে আছো আমার ওপরে।

–না।

–আমাকে ভালোবাসো।

–না।একটু জোরেই বলল।

–বাবা রে কি রাগ।এখন সে,আমাকে ভালোও বাসে না।এই কথা পাড়া প্রতিবেশিরা জানলে লজ্জায় আমি কারো সামনে মুখ দেখাতে পারবো না।সবার সামনে দাঁড়াতে আমার কতটা শরম করবে।

–তাহলে ঘর থেকে বের হবে না।তাহলেই আর শরম করবে না।মানুষটা কতদিন পরে তার শরমের কথা বলল।তানহা মনে মনে হাসলো।কিন্তু বাহিরে প্রকাশ করলো না।তানহার মুখে গম্ভীর্য ভাব বিদ্যমান।

–আমি তোমাকে আলু কেটে দেই।

–না।

–তাহলে পেঁয়াজ কেটে দেই।

–এই আমি তোমাকে বলেছি আলু,পেঁয়াজ কেটে দিতে।নিজের কাজ করো গিয়ে,আমাকে একদম বিরক্ত করবে না।এতদিন পরে নাটক করতে আসছে।

–আমার কোনো কাজ নেই।আমার তোমাকে কাজ করে দিতে ইচ্ছে করছে।

–এতই যখন কাজ করতে ইচ্ছে করছে।পুরো সপ্তাহের কাপড় জমা করে রেখেছো।পারলে সেগুলো ধুইয়ে ফেলো যাও।

–আচ্ছা বলেই ইফাদ চলে গেল।তানহা নিজের কাজে মনযোগ দিল।আধাঘন্টা পরে ওয়াশরুম থেকে কাপড় কাঁচার শব্দ ভেসে এলো।তানহা দৌড়ে ওয়াশরুমের দিকে গেল।ইফাদ সত্যি সত্যি কাপড় ধুইতে শুরু করেছে।তানহার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।মানুষটার মাথায় সমস্যা আছে নাকি।না হলে এই রাত করে কেউ কাপড় কাঁচে।তানহা ওয়াশরুমে গিয়ে সবকিছু নেড়েচেড়ে দেখতে লাগলো।সবকিছু দেখে তানহার মাথায় হাত।দৌড়ে রুমে গেল।রুমে কয়টা কাপড় বাদে সবগুলো ইফাদ ভিজিয়ে দিয়েছে।তানহা হাত দিয়ে নিজের কপালে দু’বার বারি মারলো।রেগে মুখ দিয়ে বলল।ইফাদের বাচ্চা।আমার কাজ কমিয়ে দেওয়া বদলে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।বলেই ওয়াশরুমের দিকে আসলো।এক বালতি পানি পুরোটাই ইফাদের মাথায় ঢেলে দিল।এবার তানহার শান্তি।ইফাদ বোকা বোকা মুখ করে তানহার দিকে চেয়ে রইল।

–এত কাপড় আমি কোথায় মেলে দিব।

–কেনো ছাঁদে।

তানহা রাগী দৃষ্টিতে ইফাদের দিকে তাকালো।ইফাদকে সরিয়ে দিয়ে কাপড় গুলো ধুইতে শুরু করলো।তানহার দিকে তাকিয়ে ইফাদ নিজের ওপরে রাগ হলো।বউয়ের কাজ কমাতে গিয়ে বাড়িয়ে দিলাম।বলে সে-ও তানহার সাথে কাপড় ধুইতে শুরু করলো।ভেজা কাপড় ফেলে রাখা যায় না।ভিজিয়ে রাখলে,সকাল হতে হতে গন্ধ হয়ে যাবে।তানহা মুখ ভার করে রেখেছে।

চলবে…..#এক_মুঠো_কাঁচের_চুরি
#পর্ব_৩০
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

তানহা মুখ ভার করে আছে।ইফাদ তানহার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।মাঝে মাঝে কাপড়ে দু’একটা বারি দিচ্ছে।রাত করে কাপড় কাঁচার শব্দ পেয়ে,রোকেয়া বেগম বাহিরে আসলেন।ওয়াশরুমের কাছে আসতেই চোখ গুলো গোল গোল হয়ে গেল।অবাক দৃষ্টিতে ছেলে আর ছেলের বউয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন।

–তানহা তোমার কোনো কান্ড জ্ঞান নেই।তুমি রাত করে কাপড় ধুইতে আসছো।আমরা কি এতটাই খারাপ মা।যে,তুমি কাজ না করলে,আমরা তোমাকে কথা শোনাবো।কাপড় গুলো কালে-ও পরিষ্কার করতে পারতে।

–আম্মা আমি কিছু বলবো না।আপনার গুনধর ছেলেকে বলেন।রান্নাটা মাত্র শেষ করেছি।এসে দেখি এই কাজ করে বসে আছে।

–ছেলে মানুষের এই একটা স্বভাব নিজে তো’ কাজে সাহায্য করবে না।উল্টা আরো কাজ বাড়িয়ে দিবে।ইফাদের বাবা টাও এমন ছিল।ছেলে ঠিক বাপের মতোই হয়েছে।সারাদিন মেয়েটা কাজ কাম করে।মেয়েটাকে একটু শান্তি দিস।কাজের লোক পেয়েছিস।আমি’ও এতটা কাজ করাই না তানহাকে দিয়ে।

–আম্মু আমাকে বকছো কেনো?আমি তো’ তানহার ভালোই করতে চেয়ে ছিলাম।

রোকেয়া বেগম কিছু বললেন না।চৈতালির রুমের দিকে গেল।চৈতালি বই পড়ছিল।মাকে আসতে দেখে মায়ের দিকে তাকালো।রোকেয়া বেগম মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল।

–বিকেলে কিসের নামাজ পড়ছিলি মা’।চৈতালির মায়ের কথায় চমকে উঠলো।মা কি সবকিছু শুনে,ফেলল।

–আসলে আম্মু নফল নামাজ পড়ছিলাম।

–আছরের ওয়াক্ত থেকে মাগরিবের আগ পর্যন্ত কোনো নফল নামাজ আদায় হয় না মা’।আমার রুমে হাদিসের বই আছে।সেখানে সবকিছু সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।সঠিকটা জেনে নিস আচ্ছা মা।

–আমি তো জানতাম না আম্মু।এখন জানলাম।এখন থেকে এমন ভুল আর হবে না।আমি ঘুমানোর আগে তোমার রুম থেকে হাদিসের বইটি নিয়ে এসে পড়ব।রোকেয়া বেগম মেয়ের কপালে আদর করে দিলেন।মেয়েটাকে দেখলে আজকাল বড্ড মায়া হয়।

–আম্মু ভাবিকে বলো না।ভাবি যেনো আমাকে মাফ করে দিয়ে,আমার সাথে কথা বলে।

–তুই ভুল করেছিস।তুই মাফ চাইবি।আমার তানহার মন অনেক ভালো।ও তোকে ঠিক মাফ করে দিবে।আগের মতো ভালোবাসতে পারবে কি না জানি না।তবে তোকে ফেলেও দিবে না।চৈতালি মাথা নিচু করে ফেলল।

–মন খারাপ করিস না মা।সবকিছু আগের মতো হয়ে যাবি।তোর ভাইটা একদম বাবার মতো হয়েছে।কাজ কমিয়ে দেওয়া বদলে বাড়িয়ে দিয়েছে।মেয়েটাকে রাত করে কাপড় ধুইতে হচ্ছে,বলেই রোকেয়া বেগম চলে গেল।কাপড় ধুইতে গিয়ে তানহার অনেকটা সময় চলে গিয়েছে।ইফাদকে মসজিদে পাঠিয়ে দিয়েছে।নিজের কাজ শেষ করে,কাপড় বদলে নিজেও নামাজে দাঁড়িয়ে গেল।

অনেক দিন পরে রাতে সবাই একসাথে খেতে বসেছে।চৈতালি তানহার সাথে একটু কথা বলার জন্য ছটফট করছে।ইফাদের ভয়ে কিছু বলতে পারছে না।সবাই চুপচাপ খাচ্ছে।খাওয়া শেষ করে সবাই রুমে চলে গেল।

ইফাদ তানহার সামনে কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কিছু একটা বলবে,তানহার গম্ভীর মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারছে না।তবুও নিজেকে ঠিক করে,নরম কণ্ঠে বলল।

–বউজান একটা কথা বলবো।

তানহা তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ইফাদের দিকে তাকালো।

–এমন ভাবে বলছো।আমি তোমার বউ না প্রেমিকা।

–আমি একটু বাহিরে যাব।বেশি দূরে না।পাড়ার মোড়ে যাব।চা খেয়েই চলে আসবো।

তানহা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো দশটা বাজে,রেগে বলল।

–রাত করে তুমি আমার সাথে মজা করছো।রাত দশটার সময় কেউ চা খেতে যায়।

–হরি দাদার দোকান রাত বারোটা পর্যন্ত খোলা থাকে।

–তুমি কি করে জানলে,সত্যি করে বলো।এত রাতে কি করতে যাবে।অন্যদিন তো কোথাও যাও না।এই তুমি প্রেম-ট্রেম করছো না তো’।এত রাতে কার সাথে দেখা করতে যাবে।

–আস্তাগফিরুল্লাহ ঘরে বউ রেখে আমি কেনো পাপ কাজে,লিপ্ত হব।

–ছেলে মানুষ বিশ্বাস নেই।আজকাল তুমি আমার সাথে ভালো করে কথা বলো না।আমাকে কেমন এড়িয়ে এড়িয়ে চলো।তোমার হাবভাব সুবিধার ঠেকছে না।জীবনের মায়া থাকলে,মাথা নিচু করে যাবে।দশ মিনিটের মধ্যে চা খেয়ে চলে আসবে।

–এর নামই বউজাতি খালি সন্দেহ আর সন্দেহ।হালকা করে হুমকি দিয়ে দিল।

–কিছু বললে,,

–না রাত হয়ে যাচ্ছে।আমি আসছি।বলেই ইফাদ চলে গেল।তানহা একটা ছোট কাঁথা সেলাই করছে।ক’দিন আগেই সেলাইয়ের ভুত মাথায় চেপে বসেছে।সময় পেলেই কাঁথা সেলাই করতে বসে যায়।আজকে-ও তার ব্যতিক্রম নয়।

চৈতালি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।একবার ভাবছে কথা বলবে,আরেকবার ভাবছে চলে যাবে।দ্বিধা-দন্ড নিয়ে বলেই ফেলল ভাবি আসবো।তানহা একবার চৈতালির দিকে তাকালো।আবার নিজের কাজে মনযোগ দিল।ভাই নেই।এটাই সুযোগ ভাবির সাথে কথা বলার।চৈতালি রুমের মধ্যে এসে তানহার পাশে বসলো।

–ভাবি আমার সাথে কথা বলবে না।মাথা নিচু করে আছে চৈতালি।দু’জনেই নিরব।তানহা চৈতালির দিকেই তাকিয়ে আছে।মেয়েটার মুখের দিকে তাকালেই মায়া হচ্ছে,তবুও মুখে কিছু বলছে না।চুপ করে আছে।হঠাৎ করেই চৈতালি তানহার দু’হাত ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দিল।অপরাধবোধ মেয়েটাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে।কান্না করতে করতেই বলে উঠলো।

–ভাবি আমি জানি আমি অনেক বড় অন্যায় করে ফেলছি।আমি তোমাকে মনে আঘাত দিয়ে অনেক কথা বলেছি।আমি সেসব কথা ফিরিয়ে নিতে পারবো না।তোমার কষ্টগুলো মুছে দিতে পারবো না।কিন্তু বিশ্বাস করো।আমি শপথ করতে পারি।আজকের পর থেকে,তোমাকে আর কখনো কষ্ট দিব না।আমি আর এই অপরাধের বোঝা বইয়ে নিয়ে বেড়াতে পারছি না।ভেতর থেকে শেষ হয়ে যাচ্ছি।ও ভাবি নিজের বোন মনে করে আমাকে মাফ করে দাও না।আমি আর কখনো তোমাকে কষ্ট দিব না।তুমি কষ্ট পাও।এমন কোনো কাজও আমি করবো না।ভাবি রে’ ভাবি প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও।তুমি না বড় ভাবি।ছোটরা কতো ভুল করে,সেই ভুলগুলো বড়রাই মাফ করে তাই না ভাবি।

চৈতালির চোখের পানি দেখে,তানহা-ও কান্না করে ফেলল।দু-চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।মুখ দিয়ে কথা আসছে।এভাবে বললে,কেউ রাগ করে থাকতে পারবে না।তানহা-ও চৈতালির সাথে কথা বলতে চাচ্ছে,কিন্তু কথাগুলো গলায় এসে আটকে যাচ্ছে।তানহা নিজের চোখের পানি আড়াল করার জন্য উঠে অন্য দিক হয়ে দাঁড়াল।চোখের পানি মুছে,সামনে দিকে ঘুরতেই চৈতালি তানহার দু’পা আঁকড়ে ধরলো।

–আমাকে মাফ করে দাও না ভাবি।আমি আর তোমাকে কষ্ট দিব না।আমি আমার সব কথা ফিরিয়ে নিচ্ছি।তুমি আমার সাথে কথা বলো না।আমার খুব কষ্ট হচ্ছে,বিশ্বাস করো।আবির স্যারের জন্য আমার কোনো অনুভূতি কাজ করছে না।আমার সব থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে,তুমি আর ভাইয়া আমার সাথে কথা বলছো না।আমার জন্য তোমাদের মাঝে দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।আমি একটা সাজানো গোছানো পরিবারকে শেষ করে ফেলছি।ও’ ভাবি মানুষ কত বড় বড় ভুল করে,কেউ খুন করে।কেউ অন্যের সম্পদ আত্মসাত করে খায়।তারাও তাদের প্রিয়জনের কাছে ক্ষমা পায়।আমি না হয় একটা ভুল করেছি।এর জন্য আমাকে তোমরা মাফ করবে না।আমাকে মাফ করে দাও না।আমি আর কখনো তোমাদের কষ্ট দিব না।বলছে আর কান্না করছে।তানহা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।চৈতালি তুলে নিজের বুকে জড়িয়ে নিল।দু’জনেই শব্দ করে কান্না করছে।

আড়াল থেকে ননদ ভাবির মিলন দৃশ্য দেখে,রোকেয়া বেগমর চোখে পানি চলে আসলো।ইফাদের মুখে হাসি বিদ্যমান।রোকেয়া বেগম আর ইফাদ দু’জন মিলে,পরামর্শ করেছিল।কিভাবে দু’জনকে মেলানো যায়।অবশেষে দু’জন সফল হলো।দুজনের মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠলো।

তানহার কান্নার গতিবেগ কমে এসেছে।চৈতালি তানহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।তানহা চৈতালির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,মেয়েটা সত্যি ভেতর থেকে অনুতপ্ত।মেয়েটার চোখের পানি বুঝিয়ে দিচ্ছে,সে তার বলা কথা গুলোর জন্য কষ্ট পাচ্ছে।ইফাদ হঠাৎ করেই ধমকে দিয়ে উঠলো।

–কিরে তোকে নিষেধ করেছি না।আমার বউয়ের কাছে আসবি না।হঠাৎ ধমক দেওয়াতে চৈতালি চমকে পেছনে ঘুরে ইফাদের দিকে তাকালো।চোখ দু’টো লাল হয়ে আছে।চোখে দিয়ে পানি গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে।চৈতালি ভাইয়ের পা ধরতে যাবে।তার আগেই ইফাদ চৈতালি ধরে বুকে আগলে দিল।

–বোকা মেয়ে তোর স্থান পায়ে নয়।তোর স্থান আমার বুকে।তুই আমার একটা মাত্র বোন।

তানহা ইফাদের কাছে থেকে চৈতালিকে কেঁড়ে নিয়ে একহাতে জড়িয়ে নিল।

–খুব তো’ বোন বোন করছো।বোনকে তো ঠিকি কষ্ট দিয়েছো।তুৃমি জানো না।ও ছোট।আর ছোটরা ভুল করতেই পারে।আর সেই ভুল মাফ করে দেওয়া,বড়দের দায়িত্ব।তুমি চৈতালির অবস্থা জানতে না।আমি না হয় চৈতালির কেউ হই না।তুমি নিজের ভাই হয়ে,কিভাবে চৈতালিকে কষ্ট দিতে পারলে।যখন চৈতালিকে কিছু বলার দরকার ছিল।তখন কিছু বলো নাই।অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটার মাথায় চাপ দিয়েছো।

–চাপ দিয়েছি জন্যই তোমার ননদ তোমার কাছে এসেছে।যার জন্য করলাম চুরি।এখন সেই বলে চোর।আমি যদি চৈতালিকে এমন চাপের মুখে না রাখতাম।তাহলে চৈতালি আমাদের কথা ভাবতো বলো।ধরো তুমিও চৈতালিকে মাফ করে দিয়েছো।আমিও মাফ করে দিয়েছি।এখন চৈতালির মাথা ফাঁকা আছে।চৈতালির যা মনের অবস্থা।চৈতালি উল্টা-পাল্টা চিন্তা করবে।এতে চৈতালি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়তো।আমি ওর সাথে কথা বলি নাই।তোমার কাছে আসতে দেয় নাই।এতে চৈতালির মনে বাহিরের চিন্তা মাথা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল।চৈতালির মনে পরিবারের চিন্তা প্রবেশ করেছিল।ভাই আমার সাথে কথা বলে না।ভাবির সাথে কথা বলতে দেয় না।কিভাবে সবকিছু ঠিক করা যায়।সেসব ভাবছিল।অনুতপ্ত হয়েছে।নিজের করা ভুলের জন্য।আমি যদি খারাপ ব্যবহার না করতাম।তাহলে এসব করতো।উল্টা-পাল্টা চিন্তা করতো।তাই কখনো কখনো কিছু ভালোর জন্য খারাপ করতে হয়।চৈতালি আমার নিজের বোন হয় না।ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করতে আমার কষ্ট হয় নাই।তোমার সাথে কথা বলি নাই।কারন এটা তোমার শাস্তি।চৈতালির অনেক বড় বড় ভুল তুমি লুকিয়ে গিয়েছো।একজনের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে,আরেকজন মন খারাপ করবে।তাই দু’জনকেই শাস্তি দিয়েছি।এখন চৈতালি তানহাকে ভয় পাচ্ছে।নিজের ভুলের জন্য অনুশোচনা করছে।তানহা এখন সব কথা আমাকে বলে,কোনো কিছু লুকায় না।আমার খারাপ ব্যবহারের জন্য কাদের ভালো এবার বলো।

–ভাইয়া তুমি কিন্তু খুব চালাক।আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।আমার ভাইয়া আমার সাথে এমন ব্যবহার করছে।আমি তো এটাই ভুলে গিয়ে ছিলাম।আমার ভাইয়া ঠান্ডা মাথার মানুষ।

ইফাদ আবার ধমকে উঠলো।এই তুই আবার আমার বউয়ের কাছে গিয়েছিস।আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন।

চৈতালি অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো।রোকেয়া বেগম ইফাদের দিকে তাকিয়ে বলল।

–আহ ইফাদ মেয়েটাকে আর ভয় দেখাস না।মেয়েটা এমনি অনেক কষ্ট পেয়েছে।আর চৈতালি কথায় কথায় কারো পায়ে হাত দিবি না।আল্লাহ ছাড়া কারো সামনে মাথা নত করবি না।এক কথা কতদিন বলতে হয়।জেনেশুনে এই ভুলগুলো আমরা অনেকেই করি।এসব ভুল আর কখনো করবি না।মনে থাকবে।

চৈতালি মাথা নাড়িয়ে সন্মতি জানালো।কতদিন পরে মেয়েটার মুখটা হাসোজ্জল হয়ে উঠলো।খুশি হয়ে বলল।

–আম্মু আমি আজকে আমার বউকে আমার রুমে নিয়ে যাব।আর সারারাত মাফ চাইবো।

ইফাদ ভ্রু কুঁচকে চৈতালির দিকে তাকালো।গম্ভীর কণ্ঠে বলল।

–তানহা তোর বউ মানে,তোর সাহস কম না।আমার বউকে নিজের বউ বলে দাবি করছিস।দেখ বোন।তুই আমার কলিজার বোন।তোকে সবকিছু দেওয়ার চেষ্টা করি।আমাকে মাফ কর।আমার বউয়ের ভাগ দিতে পারবো না।

–তোমার বউ মানে,আমার বউ।আমাদের বউ।এই বাড়ির বউ।তার মানে ভাবি এই বাড়ির সবার বউ।

চৈতালির কথা শুনে সবাই হেসে দিল।ইফাদ মুখটা গম্ভীর করে রাখলো।ইফাদের গম্ভীর মুখের দিকে তাকিয়ে সবাই শব্দ করেই হেসে দিল।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here