কতটা চাই তোকে পর্ব ১৩+১৪

#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—15
.
.
🍁
“দরজার কলিং বাজাতেই মামুনি এসে দরজা খুলে দিলো’!!আমরাও হেঁসে মামুনিকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ

———“কেমন আছো মামুনি………

———“হুম ভালো তোরা,,!!

——–“হুম আমরাও ভালো আছি…..

“তারপর আমরাও বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়লাম’!!কাব্য বাড়ির ভিতর ঢুকে সোজা রুমে চলে গেল’!!আর আমি আর মামুনি বসে পরলাম সোফায়’!!এমন সময় দরজার কাছ থেকে চেঁচিয়ে বলে উঠল তানিশাঃ

———“উরে ভাবি,উরে বান্ধুপী,উরে বোইনা তুই আসছোস’!!(দৌড়ে)

“হর্ঠাৎ করে এমন চেঁচানো শুনে আমি অবাক হয়ে সামনে তাকালাম’!!আমি তাকানোর সাথে সাথেই তানিশা দৌড়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরল’!!আমিও খুশি মনে ওকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ

———-“এই তো আসছি বোইন,বান্ধুপী……

———“উম্মা জানু তোরে এওতো মিস করছি……

———“আমিও……

——–“আচ্ছা তুই বস আমি ফ্রেশ হয়ে এক্ষুনি আসছি তারপর এওতো এওতো গল্প করবো’!!

——–“ওকে……..তারপর তানিশা চলে গেল……..

“এর ভিতর মামুনিও বলে উঠলঃ

——–“তুই ও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়…..

——-“ওকে মামুনি..তারপর আমিও চললাম সিড়ি বেয়ে উপরে…….

_____________________

“রুমে ঢুকতেই দেখলাম কাব্যক আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে’!!আমি কোনোকিছু না বলে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম’!!তারপর সারাদিন এটা ওটা করে সময় চলে গেল’!!

“রাতে ডিনার সেরে তানিশার রুমে গল্প করছি আমি আর তানিশা’!!এতদিন কি কি হলো সব বলতে হবে না’!!এই ভেবে গল্প শুরু করে দিলাম’ আমি'”!আর তানিশা অতি আগ্রহের সাথে বসে আমার কথা গুলো শুনতে লাগলো’!!

.

“এদিকে কাব্য রুমের ভিতর পায়চারি করছে’!!কারন মাইশা এখনো রুমে আসছে না’!!না জানি এতক্ষণ কি করছে’!!বোকা মেয়েটা আবার সব বলে দিবে নাকি তানিশাকে’!!এসব না না ভাবনায় ভেবে যাচ্ছে কাব্য’!!

“রাত ১ঃ০০টা…….

“মাইশা এখনো রুমে আসেনি’!!কাব্য এবার প্রচন্ড বেগে রেগে গেছে’!!এতক্ষণ করছি কি তানিশার রুমে’!!এক পর্যায়ে কাব্য রাগান্বিত অবস্থায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে বিছানায়’!!হয়তো মাইশা আর আসবে না রুমে…….

.

“চুপি চুপি করে কাব্যের রুমের দিকে পা বাড়াচ্ছি আমি’!!এই তানিশার সাথে বক বক করতে যে এতটা সময় হয়ে যাবে বুঝতেই পারি নি’!!কখন এতটা বেজে গেল বুঝতেই পারলাম না’!!এসব ভাবনার মাঝেই হেঁটে চলে গেলাম রুমে’!!

“রুমে ঢুকতেই দেখলাম ভাইয়া অলরেডি ঘুমিয়ে পরেছে’!!আমিও আর কোনো কিছু না ভেবে চুপি চুপি কাব্যের পাশে গিয়ে শুয়ে পরলাম’!!কতোক্ষন এপাশ করেও ঘুম আসলো’ না!!আশ্চর্য ঘুম আসছে না কেন??হর্ঠাৎই কেন জানি না এই দশ দিনে কাব্যকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোটা খুব মিস করছি’!!হর্ঠাৎ কাব্যের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম আমি’!!কি সুন্দর লাগছে কাব্যকে’!!আগে কখনো এতটা গভীর ভাবে কাব্যকে দেখা হয় নি আমার’!!অবশ্য দেখবো কি ভয়ে তো আমি ঠিক করে তাকাতামই না’!!তাকে দেখলেই বুকের ভিতর দক করে উঠতো’!!কিন্তু এখন আর ভয় করছে না’!!খুব ভালো লাগছে কাব্যকে’!!আচ্ছা আমি কি কাব্যকে ভালোবেসে ফেলেছি নাকি’!!আচ্ছা বুঝবো কি করে যে কাব্যকে ভালো বাসি আমি’!!এসব আলতু-ফালতু চিন্তা ভাবনা করতে করতে মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল আমার’!!কেন জানি না বার বার শুধু ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে ইচ্ছে করছে আমার’!!কিছুক্ষন বিষয়টা নিয়ে ভেবে মাঝখান থেকে কোলবালিশ সরিয়ে কাব্যকে জড়িয়ে ধরলাম আমি’!!অন্য কাউকে তো জড়িয়ে ধরি নি আমার জামাইরেই তো ধরছি…..’!!এতটুকু ভেবে চোখ বন্ধ করে ঘুম……..

__________________________________________

_____________________

“সকালে আগে ঘুম ভাঙল কাব্যের’!!চোখ খুলে পাশে মাইশাকে দেখে অবাক’!!তার চেয়েও বেশি অবাক হয়েছে মাইশাকে জড়িয়ে ধরাতে’!!বিষয়টা একটু কেমন লাগলো কাব্যের কাছে’!!অবশ্য কাব্য এতে অনেক খুশি হয়েছে’!!হয়তো সে তার ভালোবাসার মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি কাছে পেয়ে যাবে’!!কাব্য মাইশাকে তার বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বললোঃ

——–“তুই যে কবে বুঝবি আমি তোকে কতোটা ভালোবাসি’!!আর #কতোটা_চাই_তোকে!!আমার বিশ্বাস একদিন তুই সত্যি বুঝতে পারবি’!!একদিন হয়তো তুই ও আমায় নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসবি আমাকে’!!শুধু সেদিন আবার খুব বেশি দেরি না হয়ে যায়’!!এই ভেবে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কাব্য মাইশার কপালে একটা চুমু দিয়ে ওকে ছাড়িয়ে চলে যায় ওয়াশরুমে……..

.

“এদিকে কাব্য যেতেই চোখ মেলে তাকালো মাইশা’!!কারন সে কাব্যের বলা সব কথাই শুনতে পেয়েছে’!!আসলে কাব্য যখন মাইশাকে তার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরেছিল তখনি খুব ভেঙে যায় মাইশার’!!তারপর কাব্যের বলা কথাগুলো সবই শুনেছে মাইশা'”!!! তার মানে কাব্য আমায় ভালোবাসে’!!আর ভালোবেসেই কি তাহলে আমায় বিয়ে করেছিল’!!তাহলে কি আপু জানতো এই বিষয়টা’!!তাহলে আমায় কেন বললো না'”! মাথার ভিতর হাজারটা প্রশ্ন এসে মাথায় বাজলো’!” তার সাথে কাব্য বলা শেষের কথাটা” “শুধু সেদিন আবার খুব বেশি দেরি না হয়ে যায়”!!

“হর্ঠাৎই ওয়াশরুমের দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে আবার চোখ বুঝে ঘুমিয়ে পরার একটিন করলাম আমি’!!কেন জানি না এই মুহুর্তে সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে’!!এমন সময় কারো ডাক এসে কানে বাজছে আমার’!!কারন কাব্য ডাকছে আমায়’!!আমিও ওনার ডাক শুনে আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম’!!আমার তাকানো দেখে কাব্য বলে উঠলঃ

——–“উঠ তাড়াতাড়ি ভার্সিটি যেতে হবে না নাকি……..

“আমিও কাব্যের কথা শুনে তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম’!!তারপর বলে উঠলামঃ

——–“হুম যাবো তো…..

——-“ওকে তাড়াতাড়ি তৈরি হ তোদের নামিয়ে দিয়ে আমি অফিসে যাবো’!!

——–“ওকে এই বলে তাড়াতাড়ি চলে গেলাম আমি ওয়াশরুমে’!!হর্ঠাৎই মনে হলো না আজকে ভার্সিটি যাওয়া যাবে না’!!আজকে সব সত্যি জানবো আপুর কাছ থেকে’!!না হলে পরে হয়তো দেরি হয়ে যাবে’!!এই ভেবে তাড়াতাড়ি মুখে পানি দিয়ে হালকা ফ্রেশ হয়ে ভাইয়াকে গিয়ে বললামঃ

———“আজকে আমি ভার্সিটি যাবো…….

“আচমকা আমার এমন কথা শুনে কাব্য বলে উঠলঃ

———-“কেন এই মাএই তো বললি যাবি……

——–“না আসলে কালকে তানিশা বলে ছিল আজকে ভার্সিটি বন্ধ’!!আমি ভুলে গেছিলাম’!!তাই আমাদের আর আজকে ভার্সিটি যেতে হবে না'”!!!

“কাব্য কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলঃ

———-“ঠিক আছে………’!!

“তারপর কাব্য বেরিয়ে গেল’!!আমিও কিছুক্ষন পর নিচে গিয়ে সবার সাথে ব্রেকফাস্ট করতে’!!নিচে নামতেই দেখলাম কাব্য,তানিশা,মামু আর মামুনি বসে ব্রেকফাস্ট করছে’!!আমায় দেখে মামুনি বলে উঠলঃ

——–“আয় তাড়াতাড়ি তারপর খেতে বস’!!

“আমিও আর কিছু না ভেবে খাবার খেতে শুরু করলাম’!!তারপর আমরা সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম’!!ব্রেকফাস্ট শেষে মামু তার রুমে চলে গেল’!!কাব্য অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্য বেরোনোর আগেই তানিশাকে জিজ্ঞেস করলো আজকে তোদের কিসের বন্ধরে ভার্সিটি’!!

———-”আজকে ভার্সিটি বন্ধ ক
……
এই রে খাইছে এখন যদি তানিশা সব সত্যি বলে দেয়’!!আমি তানিশার পায়ে একটা খোঁচা মারলাম’!!সাথে সাথে তানিশা চেঁচিয়ে উঠলঃ

“তানিশার চেঁচানো শুনে কাব্য বলে উঠলঃ

——-“কি হলো তোর…..

——–“না আসলে একটা মশা কামড় দিলো তাই…..

——–“মশার কামড়ে কেউ এতো জোরে চিৎকার দেয়’!!

———“আসলে কি বলো অনেক বড় মশা তো তাই…..

———“মানে….

——–“না কিছু না……

——–“ওসব বাদ দে কিসের বন্ধ তোদের ভার্সিটি……

———“ওই তো ভার্সিটির স্যারেরা বলছে বন্ধ তাই তাই বন্ধ…..

———“কি ওটা কিছু না আর তুমি এতো কিছু জেনে কি করবা তুমি যাও না তোমার কাজে……তোমার অফিসের লেট হচ্ছে না……..

“কাব্য আর কোনো কিছু না ভেবে চলে গেল তার কাজে’!!কারন সত্যি তার দেরি হয়ে যাচ্ছে’!!

“কাব্য বাসা থেকে বেরোতেই একটা শ্বাস ফেললাম আমি’!!এমন সময় তানিশা আমায় মাথায় একটা বারি মেরে বললোঃ

———-“তুই ভাইয়াকে মিথ্যা কেন বলেছিস……..

———-“না আসলে আজকে ভার্সিটি যেতে ইচ্ছে করছিল না তাই আরকি মিথ্যা বললাম’!!

——–“সত্যি বলছিস (সন্দেহ ভাবে তাকিয়ে)

———“আশ্চর্য এভাবে তাকানো কি আছে আর আমি মিথ্যা কেন বলবো তোকে’!!এই বলে পাশ কেটে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে আসলাম আমি’!!তারপর রুমের দরজা বন্ধ করে ফোনটা হাতে নিয়ে সোজা আপুর নাম্বারে ফোন’!!

“প্রথম কলে ধরলো না আপু'”!!!তারপর আরেকবার কল দিলাম আমি’!!

.

“কিচেনে কাজ করছে রিয়া’!!সবাই মিলে ব্রেকফাস্ট করে এখন সেগুলো গোছানোতে ব্যস্ত সে’!!এমন সময় ফোনের কল আসার শব্দ ভেসে আসে রিয়ার কানে’!!তারপর তাড়াতাড়ি তার কাজটা গুছিয়ে চলে যায় তার রুমে’!!রুমে ডুকে ফোনে হাত দিতেই পুরো ১০টা কল করেছে মাইশা’!!হর্ঠাৎ করে মাইশার এতগুলো কল দেখে অবাক হয় রিয়া’!!তারপর তাড়াতাড়ি সে আবার কল বেক করে মাইশা’!!

_____________________

“প্রায় ১০বার কল করছি আপুকে কিন্তু একবারও ধরলো না’!!তাই একরাশ বিরক্ত নিয়ে বসে পরলাম সোফায়’!!কিছুতেই নিজেকে শান্ত করতে পারছি না আমি’!!কাব্য ভাইয়া কি সত্যি আমায় ভালো বাসে’!!আমাকে কি ভালোবেসেই তাহলে বিয়ে করে ছিল’!এসব প্রশ্নের উত্তর শুধু আপুই দিতে পারবে’!!এসব ভাবনার মাঝে হর্ঠাৎ করে ফোন আসাতে কিছুটা কেঁপে উঠলাম আমি’!!তারপর তাড়াতাড়ি ফোনটা হাতে তুলে নিতেই আপুর নাম দেখে তাড়াতাড়ি ফোনটা তুলে বললামঃ

——–“হ্যালো আপু…….

———“হুম বল এতবার ফোন কেন দিয়েছিস তুই…….

——–“আজকে তুমি আমায় সব সত্যি বলবে আপু’!!কাব্য কেন সেদিন আমায় বিয়ে করেছিল শুধুই কি তোমার কথা রাখতে নাকি অন্যকিছু……

“হর্ঠাৎ করে মাইশার এমন কথা শুনে অবাক হয় রিয়া’!!এই মুহূর্তে কি বলবে সে বুঝতে পারছে না’!!

———-“কি হলো আপু চুপ করে আছো কেন??

“মাইশার কথা শুনে কিছুটা ঘাবড়ে যায় রিয়া’!!তারপর মাইশাকে বলে উঠলঃ

———“আসল সত্যি ওটা ছিল না…….

———“মানে……..

———“কাব্য আমার কথা রাখতে তোকে বিয়ে করে নি’!!

———তাহলে……

———“তাহলে শোন আজকে সব সত্যি বলবো তোকে……

———“বলো আমায়…….

———“কাব্য তোকে ভালোবাসে তাই বিয়ে করেছে’!!

“আপুর কথা শুনে রীতিমতো অবাক আমি’!!আপু আবারো বলে উঠলঃ

———“কাব্য তোকে সেই ছোট বেলা থেকে ভালোবাসে’!!কিন্তু কখনো বলে নি কারন ও চেয়েছিল তুই ওর ভালোবাসা বুঝতে পারিস’!!কিন্তু বোঝার আগেই যখন আমরা আমাদের বিয়ের কথা শুনতে পারি যে আমার আর কাব্যের বিয়ে সেই ছোট বেলা থেকে ঠিক করা ছিল’!!তখন আমি কাব্য দুজনেই প্রচন্ড বেগে ভেঙে পড়ি’!!কারন আমি যে ভালোবাসতাম রাসেলকে আর কাব্য তোকে’!!আর আমাদের এই বিষয়টা আমরা তিনজনই জানতাম’!!তারপর কাব্যের প্লান মতোই আমরা সেদিন এমনটা করেছিলাম’! কারন আর যে কোনো উপায় ছিলো না’!!জানি তোর সাথে অন্যায় হয়েছে কিন্তু বিশ্বাস কর ওই মুহূর্তে এমনটা না করলে না কাব্য তোকে পেতো আর না আমি রাসেলকে’!আমাদের তিনজনের লাইফটাই নষ্ট হয়ে যেত তাই বাধ্য হয়ে এমন টা করেছি আমার’!!সরি রে…….এতটুকু শুনেই ফোনটা কেটে দিলাম আমি’!!

“আপুর সব কথা যেন আমার কানে বাজছে’!!তার মানে কাব্য ভাইয়া সত্যি সত্যি আমায় ভালো বাসে তাও আবার সেই ছোট বেলা থেকে…….
!
!
!
!
!
!
!#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—16
.
.
🍁
“চোখে কালো চশমা গায়ে কাব্য ভাইয়ার একটা ব্লাক শার্ট আর তার সাথে প্লাজু পড়া অবস্থায় মিউজিক সিস্টেমে পুরো লাউডস্পিকারে দিয়ে “কুর্তা পাজামা কালা কালা” গানটা ছেড়ে উড়াধুরা নাচতে আছি আমি’!!কেন নাচছি জানা নেই, তবে আমি খুব খুশি’!!ফুল লাউডে গান চলছে বিছানার উপর উঠে উড়াধুরা বালিশ নিয়ে নাচতে আছি আমি’!!এই মুহূর্তে আমি ভুলেই গিয়েছি যে এটা কাব্যভাইয়ার রুম’!!হর্ঠাৎই দরজার নক করলো কেউ সাথে সাথে মিউজিক অফ করে দিলাম আমি’!!এই রে এর ভিতর কাব্য ভাইয়া চলে আসলো নাকি’!এখন আমায় এই অবস্থায় দেখলে কি বলবে তারওপর রুমটারও অবস্থা খারাপ করে দিয়েছি’!!এসব ভাবনার মাঝেই দরজার ওপাশ তানিশা বলে উঠলঃ

——–“মাইশা তুই রুমে মধ্যে বসে কি করছিস……

“ওর কথা শুনে আমি এক শ্বাস ফেলে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিয়ে ওকে ভিতরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম’!!ও আমার এমন অবস্থা দেখে বলে উঠলঃ

———“এগুলো কি করছোস তুই……

——–“আরে চুপ কর তো কিছু হবে “জামাই” আসার আগেই আবার সব আগের মতো করে ফেলবো আর কাব্য আসতে এখনো অনেক দেরি আছে’!!তাই চালো বেবি Let’s dance এই বলে আবার গান ছেড়ে দিয়ে দু’জনেই বিছানার উপর দাঁড়িয়ে উড়াধুরা নাচতে আছি,,প্রথমে তানিশা রাজি হলেও পরক্ষণেই শুরু হলে গেলো দুই বোইনের নাগিন ড্যান্স’!”

“পাক্কা এক ঘন্টা ধরে পুরো বিছানার চাদর থেকে শুরু করে বিছানার উপর থাকা বালিশ নিয়ে উড়াধুরা নাচতে আছি আমরা’!!এই মুহূর্তে বলতে গেলে দু’জনেই পুরো পাগলী হয়ে গেছি একেই বলে পাজামা পার্টি’!!😂এমন সময় তানিশা বলে উঠলঃ

——–”খালি মুখে পার্টি জমে বোইন তুই এখানে থাক আমি গিয়ে ফ্রিজ থেকে কোক – টোক নিয়ে আসি……

———-“ওকে তাড়াতাড়ি আসিস……

“এতটুকু বলতেই তানিশা চলে গেল’!!আর আমি বিছানার উপর দাঁড়িয়ে উড়াধুরা নাচছি’!!

“কিছুক্ষনের মধ্যেই তানিশা চলে আসলো হাতে তার দুটো কোকের বোতল’!!তানিশা রুমে ঢুকেই সোজা বিছানায় এসে একটা বোতল আমার হাতে আর একটা ওর হাতে নিলো’!!তারপর আমি বলে উঠলাম দাঁড়া একটা বাঙালি ডিজে গান ছাড়ি’!!এই বলে তাহেরী আঙ্কেলের গাওয়া ডিজে গানটা ছেড়ে উড়াধুরা হাসি আর সাথে মাইশা তানিশার ডিজে নাচ…😂

“হর্ঠাৎ করে আমাদের নাচের মাঝখানে কেউ এসে গানটা অফ করে দিলো’!!সাথে সাথে আমরা দুজনেই অবাক হয়ে সামনে তাকালাম’!!সামনে কাব্যকে দেখে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার’!!ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে’!!হর্ঠাৎ করে এমন একটা পরিস্থিতিতে পরতে হবে তা আমি কল্পনাও করতে পারি নি’!!দরজাটা খুললো কে??আমি তানিশার দিকে বড় বড় করে তাকিয়ে চুপি চুপি করে বললামঃ

———“তুই দরজা কেন বন্ধ করিস নি কেন???

———“দোস্ত উওেজনায় ভুলে গিয়েছিলাম…..

——–“এখন কে বাঁচাবে আমাদের…??

——–“আমাদের হবে না আমাকে…..

——–মানে???

“এতটুকু বলতেই তানিশা দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল’!!ওর এমন কাজে আমি জাস্ট হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম কি শয়তান মেয়েরে বাবা আমায় একা ফেলে চলে গেল’!!এখন কি করবো আমি’!!এদিকে আমি তো ভাইয়ার জামা পড়ে আছি’!!এটা দেখে ভাইয়া রেগে যায় নি’!!আমি বিছানার উপর দাঁড়িয়ে বললামঃ

———“গুড মনিং জামাই…..হি হি (জোরপূর্বক হেসে)

———-“দুপুর ২ঃ০০টা বাজে এখন তোর জন্য গুড মর্নিং…….

“কাব্যের কথা শুনে রীতিমতো অবাক আমি’!!দুপুর দুটো বেজে গেছে’!!কিন্তু কখন বাজলো বুঝতেই তো পারি নি’!!

——–“ইয়ে না মানে সরি…..

——–“রুমের কি অবস্থা করছিস……বালিশ কোথায় কোথায় ফেলেছিস’!!

——–”সরি সরি আমি এখনি সব ঠিক করে দিচ্ছি এই বলে উওেজনা নিয়ে খাট থেকে নামতে গিয়ে প্লাজুর সাথে পা বেজে হুমড়ি খেয়ে বিছানা থেকে নিচে পড়ে যেতে নিলাম আমি’!!হর্ঠাৎ করে যে এমন কিছু হবে তা বুঝতেই পারি নি’!!ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলেছি আমি'”!!! এখনি হয়তো আমার কোমড় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে’!!হর্ঠাৎ মনে হলো কেউ আমায় ধরে ফেলেছে’!!আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম আমি'”! সামনে তাকিয়ে দেখলাম কাব্য অগ্নি চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে’!!আমি তো ভয়ে অর্ধেক হয় গেছি একি তো রুমের এই অবস্থা তারওপর এক্ষুনি পড়ে গিয়ে কোমড়টা যেত আমার’!! না জানি কাব্য এখন আমার সাথে কি করবে’!!আমি নরম গলায় কাব্যকে বললামঃ

——–“সরি প্লিজ কিছু বলো না আজকে আমি খুব খুশি এই বলে ভাইয়ার গলা জড়িয়ে ধরলাম’!!কারন কাব্য আমায় কোলে তুলে নিয়েছে……

———“খুশি কেন???

———“তোমায় বলবো কেন?নামায় আমায়’!!

“আমার কথা শুনে কাব্য নিচে নামিয়ে দিলো আমায়’!!তারপর কড়া গলায় বললোঃ

——-“খুশি থাক আর যাই থাক এক ঘন্টার মধ্যে পুরো রুম আবার আগের মতো দেখতে চাই আমি’!!

——–“ওকে মাই জামাই এই বলে কাব্যের গালে একটা ছোট্ট কিস করে দিলাম আমি’!!দিয়েই রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম’!!কারন ঝাড়ু আনতে হবে তো নাকি??

.

“এদিকে মাইশার এমন কাজে কাব্য শকট খেলো’!!কি করলো ও’!!মাথাটা খারাপ হয়ে গেল নাকি’!!এই বলে কাব্যও চলে যায় ওয়াশরুমে……

__________________________________________

_____________________

“পাক্কা দেড় ঘন্টা বসে পুরো রুম পরিষ্কার করলাম আমি’!!কোমড় সব ধরে গেছে’!!আর কাব্য এতক্ষণ আরামে বিছানায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছিল’!!আশ্চর্য প্রতিদিন রাতে বাড়ি আসে আর আজকে এত তাড়াতাড়ি চলে আসলো’!!ধুর আমার পুরো পাজামা পার্টিটাই নষ্ট হয়ে গেল’!!এই ভেবে পুরো রুম পরিষ্কার করে চলে গেলাম ওয়াশরুমে’!!তারপর গোসল করে সোজা নিচে গেলাম খাবার খেতে’!!সবাই আজকে আমায় ছাড়াই খেয়ে নিয়েছে অবশ্য দোষটা আমারই ছিলো’!!তাই দেরি হয়ে গেছে’!!নিচে নামতেই দেখলাম তানিশা আছে টেবিলে’!!তারপর আমরা দুজনেই একসাথে খাবার খেলাম তার সাথে বক বক ফ্রী……..
.
.
.
.
.
.
🌼
“মাঝখানে কেটে গেল দু-দিন!!এই দুই দিনে অনেক ভেবে দেখলাম আমি’!!যখন কাব্যের সাথে বিয়ে হয়ে গেছে তাহলে এখন আর কোনো ভেদাভেদ না করে ভাইয়াকে প্রপোজ করে দিবো আমি’!!সত্যি বলতে আমিও ভালোবেসে ফেলেছি কাব্যকে’!!!আর এতদিনে খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছি আমি’!!হর্ঠাৎই ফোনটা হাতে নিয়ে আপুকে ফোন করলাম’!!প্রথম কলেই আপু ধরে ফেললো’!!তারপর বলে উঠলঃ

———-“হুম বল……

——–“আপু আমি ভাবছি আমি নিজেই কাব্যকে প্রপোজ করবো…..

“আপু আমার কথা শুনে অবাক হয়ে চেঁচিয়ে বললোঃ

———“কি???

“আপুর চেঁচানো শুনে মনে হলো আমার কানটাই ফেটে যাচ্ছে’!!

———“আরে এইভাবে ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছো কেন??

———“তুই কি সত্যি বলছিস মাইশা……….

——–“তোমায় মিথ্যা বলে লাভ কি,,আর আমার মনে হয় না কাব্য এ যুগে কোনো দিন আমায় বলবে সে আমায় ভালোবাসে তাই আমি ভাবছি আমি নিজেই বলে দেই……

———“তুই কি ভালোবাসিস কাব্যকে…….

———“সেটা তোমায় বলবো কেন যাকে বলার তাকেই বলবো তুমি শুধু বলো কি করে কি করবো’!”

“আপু কিছুক্ষন ভেবে আমায় একটা জব্বর আইডিয়া দিলো’!!আমিও আপুর কথা মতো প্রথমে নিজ হাতে রান্না করলাম তারপর গিয়ে মামুনির কাছে’!!মামুনি ছাদে দাঁড়িয়ে গাছে পানি দিচ্ছিল আমি মামুনির সামনে দাঁড়িয়ে বললামঃ

——–“বলছি কি মামুনি…..

——–“হুম বল না শুনছি আমি’!!

——–“শুনো না…..

——–“হুম বল…

——-“আসলে মামুনি…..

——-“আসলে বাদ দিয়ে যেটা বলতে এসেছিস চট করে বলে ফেল…’!!

“মামুনির কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ থেকে চট করে বলে উঠলামঃ

———“আমি কাব্য ভাইয়ার জন্য অফিসে খাবার নিয়ে যাই……

“মামুনি আমার কথা শুনে অবাক হয়ে গাছে পানি দেওয়া বন্ধ করে বললোঃ

———“কি ব্যাপার বলতো,,আজকে নিজ হাতে খাবার রান্না করলি এখন আবার কাব্যের জন্য অফিসে খাবার নিয়ে যেতে চাইছিস কারনটা কি??ব্যাপার কি তোর……

“আমি মামুনির কথা শুনে পিছন থেকে মামুনিকে জড়িয়ে ধরে বললামঃ

———-“আরে তেমন কিছু নয় মামুনি আসলে একটু অফিস থেকে ঘুরে আসতে চাইছিলাম’!!

———–“শুধু কি অফিস দেখতে যাবি নাকি অন্য কাউকে…….

———“কি যে বলো না তুমি যাই আমি প্লিজ…….

——–“ঠিক আছে গাড়ি করে যাবি আবার গাড়ি করেই ফিরে আসবি…….

———“ওকে থ্যাংকু মামুনি’!!এই বলে মামুনির গালে একটা চুমু দিয়ে আমি চলে আসলাম নিচে তৈরি হতে হবে তো…….

_____________________

“নিচে এসে একটা সুন্দর লাল রঙের শাড়ি বের করলাম আমি’!!শাড়ি পড়াও শিখে নিয়েছি আমি’!!এখন আর শাড়ি নিয়ে কোনো জামেলা নেই'”!!!সুন্দর করে শাড়ি পড়ে হাতে কিছু কাঁচের চুরি পড়ে নিলাম,চুলগুলো সুন্দর করে বিনুনি করে এক সাইডে রেখে দিলাম,,ঠোঁটে গাড়ো করে লাল লিপস্টিক, কানে এক জোড়া ঝুমকা পড়ে চোখে হালকা কাজল ব্যস মাইশা তৈরি’!!আজকে আমি খুব খুশি লাগছে’!!নিজেকে নিজেই আয়নায় দেখে পাগল হয়ে যাচ্ছি ভাইয়া নিশ্চয়ই হ্যার্টফেল করবে’!!এই ভেবে আনমনে হেঁসে দিলাম আমি’!!তারপর আস্তে আস্তে হাতে মোবাইলটা নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম আমি’!!নিচে নামতেই তানিশা আর মামুনি হা করে তাকিয়ে রইল আমার দিকে’!!আমি মুচকি হেঁসে তাদের বললামঃ

——-“আমায় কেমন লাগছে শাড়ি পড়া ঠিক আছে না মামুনি……..

“দু’জনেই হা হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে’!!তাই আমি আবারো বলে উঠলামঃ

——–“কি হলো মামুনি কথা বলছো না কেন??

“এমন সময় তানিশা বলে উঠলঃ

———“উড়ে দোস্ত তোরে কি সুন্দর লাগছে…….

“আমি তানিশার কথা শুনে একটু ভাব নিয়ে বললামঃ

——–“থ্যাংকু জানু……তারপর মামুনিকে বললামঃ

——-“আমায় ভালো লাগছে তো মামুনি……

——-“হুম খুব সুন্দর লাগছে’!!তাহলে এখন আমি যাই…..’!!

———“হুম যা আর গাড়িতে সব খাবার আমি উঠিয়ে দিয়েছি তুই গিয়ে বস…….

———-“ওকে মাই সুইড মামুনি’!!এই বলে সামনে এগোতে লাগলাম আমি’!!

“হর্ঠাৎই দরজা পর্যন্ত আসতেই তানিশা ডেকে বললোঃ

——-“All the best dosto……..

“বিনিময়ে আমিও মুচকি হাসলাম’!!গাড়ির কাছে আসতেই ড্রাইভার কাক্কু বললোঃ

——–“তোমায় খুব সুন্দর লাগছে মাইশা মামুনি……

——–থ্যাংকু চাচা……..তারপর মুচকি হেঁসে আমি বসে পরলাম গাড়িতে’!!আমি বসতেই ড্রাইভার কাক্কু গাড়ির চালাতে শুরু করল’!!তার আমিও এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চললাম কাব্যের অফিসে’!!কিছু দূর যেতেই সামনে কিছু গোলাপ ফুলের দোকান দেখতে পেলাম আমি’!!তাড়াতাড়ি ড্রাইভার চাচাতে গাড়ি থামাতে বললাম’!!তারপর কিছু লাল গোলাপ ফুল কিনে নিলাম আমি’!!তারপর আবারো চললাম কাব্যের অফিসের উদ্দেশ্যে’!!আজকে কাব্যকে জাস্ট চমকে দিবো…….

_____________________

“আধ ঘন্টা পর ড্রাইভার চাচা বললোঃ

——–“আমরা চলে এসেছি মাইশা মামুনি……
আমিও ওনার কথা শুনে মুচকি হেঁসে খাবারের ব্যাগ গুলো হাতে নিয়ে গাড়ি থেকে বাহিরে বেরিয়ে আসলাম’!!তারপর চাচাকে বললামঃ

———“কিছুক্ষন ওয়েট করো আমার একটু সময় লাগবে তবে গাড়ি ছেড়ে যাবে না কোথাও ঠিক আছে……

———“ওকে মাইশা মামুনি তুমি নিশ্চিতে যাও আমি আছি এখানে……

“তারপর আমিও আর কথা না বারিয়ে সোজা চলে গেলাম অফিসের ভিতরে’!!বুকের ভিতর অস্থিরতা কাজ করছে’!!!কি করে কি বলবো কে জানে’!!ধুর এতো ভাবার কি আছে সোজা গিয়ে গোলাপগুলো হাতে দিয়ে মনে কথা সব বলে দিবি’!!এই ভেবে লিফটে উঠে পড়ালাম’!!

“কিছুক্ষণের মধ্যেই কাব্য ভাইয়ার রুমের সামনে চলে আসলাম তারপর ভিতরে ঢুকেই যা দেখলাম মুহূর্তের মধ্যে সব ভাবনা চিন্তা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল আমার……..’!!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে……………..

❤️❤️❤️[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here