কাব্য গোলাপ পর্ব -০৭

#কাব্য_গোলাপ

#Neel

হঠাৎ ধুম করে পিঠে একটা কিল পড়লো, কিলে ঘুম তো ছুটে গেছে ,দু চোখ বড় বড় হয়ে গেছে, পিঠ বেঁকে গেছে, মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল – ও মাগো…কেডা রে।
এই বলে তাকাতেই চোখ মুখ কুঁচকে গেল। সামনে তাকাতেই দেখি শিপু, নয়ন হাসান রাহি দাঁড়িয়ে ৩২ পাটি দাঁত বের করে হাসতেছে।
ওদের ৩২ পাটি দাঁত দেখে আমার রাগ ৪৪০° বেড়ে গেল।

বললাম – নয়নার জামাই নান্নু মিয়া, তোর কি খেয়ে দেয়ে কাজ নেই, সারাদিন মাথায় অথবা পিঠে কিল দিয়ে বারোটা বাজিয়ে দেস।আর তোরা হাসতেসিস কেন?

রাহি – তোদের ছাদ ভেঙে পানি পড়ছে। (এই বলে রাহির সাথে বাকিরা ও হাসতে লাগলো)

শিপু- ঐ ছেমরি, তোর কি মনে নেই আজ নবীন বরণ? এতো মরা মানুষের মতো বেটকাইয়া ঘুমাচ্ছিস কেন? তোর জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করতে করতে বুইরা হইয়া গেছি, (মাথায় হাত দিয়ে)বাল বি পাক গেয়া।

শালা শকুন্না কয় কি?ইরেএ সত্যি ই তো ভুলে ই গেছিলাম আজ তো নবীন বরণ। তাড়াতাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। বললাম – তোরা যা আমি দশ মিনিট এ রেডি হয়ে আসছি।
ওরা যেতেই আমি ঝটপট রেডি হতে লাগলাম।(রাইটার -নীল)

___

কলেজে এসেছি। খুব সুন্দর করে আমাদের কলেজ সাজানো হয়েছে। আমরা সিনিয়র রা জুনিয়র দের ফুল দিয়ে বরন করলাম। এখন পর্যন্ত কাব্য কে কোথায় দেখিনি। জানি না কাল কী হয়েছিল আমার যাওয়ার পর।যাই হোক আমার কি ,হে হে 😅।

রাহি কে আমার সাথে কতবার ডাকলাম ওয়াসরুমে যাওয়ার জন্য। কিন্তু বেচারি স্যারের দেওয়া কাজে ফেঁসে গেছে। আমার হাতে ময়লা লেগেছে এটা পরিষ্কার করতে ওয়াসরুমের দিকে যাচ্ছিলাম তখন ই কেউ একজন হাত টান দিয়ে একটা রুমে নিয়ে এলো। মূলত ওয়াসরুমের আগে ছিল বন্ধ রুম যেখানে ভাঙ্গা জিনিস পত্র রাখা হয়।

রুমটা পুরো অন্ধকার। আমি দেওয়ালের সাথে চেপে দাঁড়িয়ে আছি।আছি নয় ,বরং আমাকে কেউ তার হাতের সাথে আমার হাত দেওয়ালে চেপে ধরে আছে। আমার ঘাড়ে উষ্ণ নিঃশ্বাস পড়ছে। আমি ভয়ে জমে গেছি। হঠাৎ ফিসফিস করে কানে বলল- গোলাপ ফুল, তুমি কী লাগো আমার? বললে না তো?

আমার শরীরের ভেতর বিদ্যুৎ খেলে উঠলো। হচকচিয়ে উঠেছি ঠিক কিন্তু অস্ফুট স্বরে বলে উঠলাম – কা কাব্য, আপনি?

কথা টা বলতে নেই হঠাৎ ঘাড়ে একটা উষ্ণ ঠোঁটের ছোঁয়া পেলাম। কিশোরী বয়সের আবেগ শরীরে রন্ধে রন্ধে মাদকতার আভাস বয়ে বেড়াচ্ছে। আমার হৃৎপিণ্ডের বিট জোরে জোরে উঠানামা করছে।

আবার ও সেই একই ভাবে কানের কাছে ফিসফিস করে বলল- কাব্য নয় ! বলো #কাব্য_গোলাপ।এক কাব্য অধির আগ্রহে এক নির্জন বাগানে অপেক্ষরত আছে তার ফুলের জন্য। কখন সেই কলি গোলাপ ফুল পরিনত গোলাপ ফুলে পরিনত হবে।নির্জন সেই বাগানের গোলাপ ফুল ফুটে গেছে , অসংখ্য ভোমর হানা দিয়েছে, বাতাস, প্রকৃতি,পাখির দল ঝাঁকে ঝাঁকে কাব্যের কাছে বার্তা প্রেরন করছে , কাব্য তো এসে গেছে।এবার না হয় কাব্য_ গোলাপ এর প্রনয় নামা শুরু হোক??

কাব্যের এই কাব্য কথা আমাকে আরো অপ্রস্তুত করে দিয়েছে। কাব্যের হাতের বাঁধন আলগা হতেই কাব্য কে ধাক্কা দিয়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে চোখ মুখ বন্ধ করে দিলাম দৌড়। দৌড়ে হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলাম। এখন ও বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছি। সামনে তাকিয়ে দেখলাম মিতু দাঁড়িয়ে আছে।

মিতু- ঐ তুই বন্ধ রুম থেকে এভাবে দৌড়ে বের হলি কেন?আর এভাবে নিঃশ্বাস নিচ্ছিস কেন?

মিতুর কথায় চমকে উঠলাম। সত্যি ই তো এখন কি বলবো। নিচ থেকে উঠে হাত পা ঝাড়া দিয়ে বললাম – ও কিছু না ভয় পেয়েছি তাই।
এই বলে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে আসলাম।(রাইটার -নীল)

অন্যদিকে মিতু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে, না,রৌজী ভয় পাওয়ার মেয়ে নয়। নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে কিন্তু কী ? হঠাৎ সেই বন্ধ রুম থেকে কাব্য কে বের হতে দেখে মিতুর চোখ বড় বড় হয়ে যায়। মিতু এখন বুঝতে পারলো কী হয়েছে। মিতু মুখে ভয়ংকর হাসি ফুটে উঠলো।

অন্যদিকে কাব্য মনে মনে ভাবছে – ইশ্ আজ গোলাপ ফুল কে সে এভাবে কাছে পাবে ভাবতেই পারে নাই। তখন গোলাপ ফুল কে এদিকে আসতে দেখে নিজেকে ঐ রুমে লুকিয়ে ফেলে তারপর…(মুখে মুচকি হাঁসি ফুটে ওঠে)

নবীন বরণ অনুষ্ঠান এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু আমি আর থাকতে পারছি না। কান্না পাচ্ছে। তাছাড়া হঠাৎ করে কাব্য এরকম কেন করলো বুঝতে পারছি না। আমার মাথা কাজ করা যেন বন্ধ করে দিয়েছে। আমি আমার গ্রুপের কেউকে না বলে চলে এলাম।

বাসায় এসে ই নিজেকে রুম বন্ধ করে ফেললাম। ওয়াসরুমে যেয়ে নিজের উপর ঝর্নার পানি ছেড়ে দিলাম। কাব্যের স্পর্শ করার স্থান টা বারবার সাবান দিচ্ছি। জানি না কতক্ষণ ওয়াসরুমে ছিলাম। হঠাৎ দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ শুনে আর মায়ের চিৎকার শুনে ধ্যান ভাঙল।

মা – রৌজী দরজা খুল । কতক্ষন ধরে বাসায় এসেছিস কিন্তু দরজা বন্ধ করছিস কেন? কিরে তোর কোন শব্দ নেই কেন?

অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে মাকে উত্তর দিয়ে বললাম – মা আমি গোসল করছি।বের হয়ে আসছি।

মা মনে হয় চলে গেছে। তাড়াতাড়ি গোসল করে বাইরে বের হলাম। কিন্তু শরীর টা কেমন যেন খারাপ লাগছে। দরজা টা খুলে দিলাম। খাটে শুইয়ে পরলাম কাঁথা গায়ে দিয়ে।

সন্ধ্যা কখন হয়ে গেছে জানি না। রাত ভাইয়া আমার রুমে এসেই বলল – কী রে তুই যে আজকে বাইরে বের হলি না। মা ডাকছে চল। তুই নাকি দুপুরে এসে ঘরে ঢুকছোস আর বের হস নি। খাবার ও নাকি খাস নাই ।কি হয়েছে রে।

রৌজীর কোন সাড়াশব্দ নেই। রাত ভুরু কুঁচকে তাকালো রৌজীর দিকে। অদ্ভুত লাগছে রাতের কাছে , রৌজী তো এমন চুপচাপ থাকার মেয়ে নয়।রাত একটু ঘাবড়ে গেল তার প্রান প্রিয় বোনের কিছু হলো না তো?
রাত রৌজীর দিকে এগিয়ে গেলো। কাঁথা টা সরাতেই রাত চমকে গেল। দ্রুত মা মা বলে ডাক দিলো। রাতের মা হুরমুরি করে দৌড়ে রৌজীর রুমে ঢুকলো।

রাত মাকে দেখে বলল….

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here